খুব_ভালোবাসি_তোকে পর্বঃ- ১৮-১৯-২০

0
4537

খুব_ভালোবাসি_তোকে পর্বঃ- ১৮
#লেখকঃ- Tamim

,,
,,
,,
,,
তামিম আর নীলা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আছে ঠিক এমন সময় রুমের দরজা ঠেলে কেউ একজন রুমে এসে ঢুকলো।। দরজা খোলার আওয়াজ শুনে তামিম দরজার দিকে তাকাতেই দেখলো নীলার আম্মু দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।। নীলার আম্মুকে দেখার সাথে সাথেই তামিম নীলাকে ছেড়ে দিল।।

নীলার আম্মুঃ নীলা মা দেখ তো আমার চোখে কি পরেছে (চোখ কচলাতে কচলাতে)।।

নীলার আম্মুর এমন কথা শুনে তামিম আর নীলা দুজনেই অবাক হয়ে গেল।। কোথায় তারা দুজন ভেবেছিল তাদেরকে এইভাবে দেখে উনি হয়তো বাড়িতে হৈচৈ শুরু করে দিবেন।। কিন্তু না উনি তো দেখছি এই বিষয়ে কিছু না বলে অন্য কথা বলছেন।।

নীলার আম্মুঃ কিরে নীলা কোথায় তুই, দেখ না আমার চোখে কি পরেছে (রুমের ভিতরে ঢুকে)।।

নীলার আম্মু কথাটা শুনে তামিম মনে মনে ভাবলো, চাচির চোখে হয়তো কিছু একটা পরেছে তাই তিনি চোখ মেলে তাকাতে পারছেন না।। যদি এটাই হয় তাহলে চাচি নিশ্চয়ই আমরা দুজনকে জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় দেখতে পাননি।। নাহলে তো চাচি এতক্ষণে হৈচৈ শুরু করে দিতেন।।

নীলার আম্মুঃ এই নীলা কোথায় তুই, ডাকছি যে শুনতে পাচ্ছিস না (চেঁচিয়ে উঠে)।।

তামিম এবার নীলাকে ইশারায় বললো তার আম্মুর কাছে যেতে।। তামিমের ইশারায় নীলা তাড়াতাড়ি করে তার আম্মুর কাছে গিয়ে দাড়ালো।।

নীলাঃ হে আম্মু আমায় ডাকছ বল কি লাগবে.?

নীলার আম্মুঃ কিছু লাগবে না, কোথায় ছিলি এতক্ষণ.? দেখ তো আমার চোখের মধ্যে কি পরেছে।।

নীলাঃ কই কি পরেছে দেখি (বলেই তার আম্মুর চোখ দেখতে লাগলো)।।

নীলার আম্মুঃ ডান চোখে দেখ।।

নীলাঃ কিছুক্ষণ দেখার পর, কই কিছুই তো পরেনি।।

নীলার আম্মুঃ পরেনি.? হয়তো বেরিয়ে গেছে (বলেই উনি চোখ খুললেন)।।
আরে আব্বু তুমি এইখানে কখন এলে.? (তামিমকে উদ্দেশ্য করে)

তামিমঃ এইতো একটু আগে।।

নীলার আম্মুঃ ওহহ কোনো দরকারে এসেছিলে বুঝি.?

তামিমঃ হ্যাঁ না মানে আসলে নীলুর জন্য আইসক্রিম এনেছিলাম, সেটা দেওয়ার জন্যই এইখানে আসলাম।।

নীলার আম্মুঃ ওহহ আচ্ছা তাহলে তোমরা বসে গল্প কর আমি এখন যাই।।

তামিমঃ চাচি আপনার চোখে পোকা কীভাবে পরলো.?

নীলার আম্মুঃ দেখতে এসেছিলাম নীলা পড়তে বসেছে কি না।। তো হঠাৎ কোথা থেকে জানি একটা পোকা উড়ে এসে চোখের মধ্যে পরে গেল।। এখন হয়তো বেরিয়ে গেছে।।

তামিমঃ ওহহ, আচ্ছা নীলু এখন তাহলে আমি যাই তুই আইসক্রিমটা খেয়ে নিস নাহলে পরে গলে যাবে।।

নীলাঃ আচ্ছা

তারপর তামিম নীলার রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে আসলো।।

নীলার আম্মুঃ আইসক্রিমটা খেয়ে পড়তে বসিস কিন্তু, আমি তাহলে এখন যাই (বলেই উনি রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন)।।

নীলার আম্মু চলে যাওয়ার পর নীলা একটা স্বস্থির নিশ্বাস ছাড়লো আর বিছানার উপর বসে আইসক্রিমটা খুলে খাওয়া শুরু করলো।।

এদিকে তামিম তার রুমে এসে একটু আগের ঘটনাটা ভাবতে লাগলো।।
তামিমঃ চাচি কি তাহলে কিছুই দেখেন নি, নাকি দেখেও না দেখার ভান করেছেন.? চাচি যদি সত্যিই কিছু দেখতেন তাহলে তো উনি আমাদের কে কিছু একটা অবশ্যই বলতেন।। উনার চোখে যদি সত্যিই পোকা পরে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই উনি কিছু দেখেন নি।। কিন্তু পোকা তো এক চোখে পরেছে তাহলে উনি দুই চোখ বন্ধ করে ছিলেন কেন.? কিছুই তো বুঝতে পারছি না, নিশ্চয়ই এইখানে কোনো গন্ডগোল আছে।। যাইহোক উনি যদি আমাদের কে ওই অবস্থায় না দেখে থাকেন তাহলেই ভালো, আর এখন থেকে বাসায় থাকাকালীন নীলার কাছাকাছি বেশি থাকা যাবে না, নাহলে যেকোনো সময় যে কারো কাছে ধরা পরে যেতে পারি।।

দেখতে দেখতে একসময় রাতের খাবারের সময় হয়ে আসলো।। তামিমের আম্মু এসে তামিমকে খাবার খাওয়ার জন্য ডাক দিয়ে গেলেন।। তামিমও সাথে সাথে রুম থেকে বেরিয়ে নিচে চলে আসলো আর ডাইনিং টেবিলে এসে একটা চেয়ার টেনে বসে পরলো।। খাওয়া দাওয়া করে তামিম আবার নিজের রুমে চলে আসলো।। রুমে এসে তামিম মনে মনে ভাবলো…

চাচি তো অন্য দিনের মতো সবার সাথে স্বাভাবিক আচরণই করেছেন, তাহলে নিশ্চয়ই চাচি আমাদের কে ওই অবস্থায় দেখেন নি আমি শিওর।। যাক এতক্ষণ যে ভয়টা মনের মধ্যে ছিল সেটা এখন দূর হয়ে গেল।। এবার একটা ঘুম দেই তাহলে মাথাটাও ফ্রেশ হয়ে যাবে।। তারপর তামিম রুমের দরজাটা ভিতর থেকে লাগিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।।

পরেরদিন সকালবেলা প্রতিদিনের মতো তামিম নীলাকে তার ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে অফিসে চলে গেল।। অফিসের কাজ করতে করতে যখন দুপুর হয়ে আসলো তখন তামিম আবার নীলাকে নিতে তার ভার্সিটিতে চলে আসলো।। কিছুক্ষণ নীলার জন্য অপেক্ষা করার পর নীলা ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে এসে গাড়িতে উঠে বসলো।।

নীলাঃ গতকাল কিন্তু আমাকে ফুচকা খাওয়াও নি তাই আজ আমাকে ফুচকা খাওয়াতেই হবে।।

তামিমঃ সরি জানপাখি তোমাকে আর বাহিরের এইসব পঁচা খাবার খাওয়াতে পারবো না।। সন্ধ্যার সময় আমি তোমার জন্য রেস্টুরেন্ট থেকে ফুচকা আর আইসক্রিম এনে দিব তখন ইচ্ছামতো খেও কেমন।।

নীলাঃ কিন্তু আ (নীলাকে থামিয়ে)

তামিমঃ আমি কি বলেছি শুনতে পাওনি.? (রাগী চোখে)

নীলাঃ সরি (মাথা নিচু করে)।।

তামিমঃ চুপচাপ বসে থাক আর একটা কথাও বলবে না।।

তারপর তামিম গাড়িটা স্টার্ট করে সোজা বাসায় চলে আসলো।। বাসায় এসে দুজনে খাওয়া দাওয়া করে যার যার রুমে চলে গেল।। তামিম রুমে এসে ভাবতে লাগলো, অনেকদিন ধরে তো বন্ধুদের সাথে দেখা হচ্ছে না।। আজ একটু সবাইকে ফোন দিয়ে বলি দেখা করার জন্য।। যেই ভাবা সেই কাজ, তামিম পকেট থেকে ফোনটা বের করে একে একে তার সব বন্ধুদেরকে ফোন দিয়ে বললো আজ বিকালে তারা সবাই যেন তাদের পুরোনো আড্ডায় চলে আসে।। সবাইকে দেখা করার কথা বলে তামিম মোবাইলটা রেখে একটু ঘুমিয়ে পরলো।।

বিকালবেলা…

তামিম ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিল।। তারপর তার আম্মুকে বলে বাসা থেকে বেরিয়ে তাদের পুরোনো আড্ডায় চলে আসলো।। আড্ডায় এসে তামিম দেখলো তার বন্ধুরা আগে থেকেই সেখানে এসে আড্ডা দিচ্ছে।। তামিমও তাদের কাছে গিয়ে আড্ডায় যোগ দিল।।

তামিমঃ কিরে কি খবর তোদের.?

শুভঃ এইতো আল্লাহর রহমতে ভালো আছি তোর কি খবর.?

তামিমঃ এইতো আলহামদুলিল্লাহ।।

রনিঃ তা আজ এতোদিন পর আমাদের কথা মনে হলো তোর.?

তামিমঃ সরি রে আসলে এখন খুব বিজি থাকি তাই এতোদিন তোদের সাথে দেখা করতে পারি নি।।

হাসিবঃ কি কাজ করিস সারাদিন যে এতো বিজি থাকিস.?

তামিমঃ আসলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আব্বুর অফিসে গিয়ে একটু বসতে হয় এই আর কি।।

হাসিবঃ ওহহ আচ্ছা, তা বল হঠাৎ আমাদেরকে এইখানে আসতে বললি কেন.?

তামিমঃ হুম বলছি শুন, কলেজে থাকাকালীন তোদেরকে বলেছিলাম না যে আমি একটা মেয়েকে মনে মনে ভালোবাসি কিন্তু তাকে কখনো এই কথাটা বলতে পারিনি।।

শুভঃ হুম তো এখন কি হয়েছে সেটা বল।।

তামিমঃ হয়েছে টা কি আমি ওই মেয়েটাকে আমার মনের কথাগুলো বলে দিয়েছি আর সেও রাজি হয়ে গেছে।।

রনিঃ বলিস কি.! কে সেই মেয়ে নাম কি তার.? কবে বলেছিস মেয়েটাকে এইসব কথা.?

তামিমঃ অনেক আগেই বলেছি আর মেয়েটাকে তোরা ভালো করেই চিনিস, সে আর কেউ নয় আমার ছোট চাচ্চুর মেয়ে নীলা।।

শুভঃ কিহহ.! তুই নীলাকে ভালোবাসিস.! কিন্তু সে না তোর চাচাতো বোন, আর সে কীভাবে তোকে মেনে নিল.?

তামিমঃ চাচাতো বোন হয়েছে তো কি হয়েছে.? নিজের আপন বোন তো আর নয়।। আর আজকাল চাচাতো ভাই-বোনদের মধ্যেও প্রেম ভালোবাসা এমনকি বিয়েও হয়।। আর নীলু প্রথমে আমায় ফিরিয়ে দিলেও কিছুদিন পর ঠিকই আমায় মেনে নিয়েছে।।

হাসিবঃ হে এটা ঠিক যে, আজকাল চাচাতো ভাই-বোনদের মধ্যেও প্রেম ভালোবাসা এমনকি বিয়েও হয়।। কিন্তু তোদের এই সম্পর্কের ব্যাপারে কি পরিবারের কেউ কিছু জানে বা তোদের এই সম্পর্কটা কি পরিবারের লোকজন মেনে নিবে.?

তামিমঃ না এই বিষয়ে বাসার কেউ কিছু জানে না।। তবে সময় হলে আমি নিজেই বাসার সবাইকে এই বিষয়ে জানাব।।

হাসিবঃ ওকে তুই যেটা ভালো বুঝিস সেটাই কর, তবে কোনো প্রকার হেল্প লাগলে কিন্তু আমাদেরকে বলবি ওকে।।

তামিমঃ ওকে বলবো, আর চল আজ তোদেরকে এই উপলক্ষে একটা ট্রিট দিব।।

শুভঃ তাই নাকি মামা, তাহলে চল আর দেড়ি কীসের।।

রনিঃ হুম তোর তো শুধু খাই খাই।।

তারপর তামিম তাদেরকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে আসলো আর সবাইকে বলবো যে যা খেতে চায় তা অর্ডার দিতে।। সবাই যার যার মতো অর্ডার দিল।। তামিমও নিজের জন্য কিছু খাবার অর্ডার দিল আর ওয়েটারকে এক প্লেট ফুচকা আর ২টা আইসক্রিম প্যাক করে দিতে বললো।। কিছুক্ষণ পর ওয়েটার এসে সবাইকে যার যার খাবার দিয়ে গেল।। খেতে খেতে সবাই মিলে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করলো।। একসময় সবার খাওয়া শেষ হলে তামিম খাবারের বিলটা দিয়ে প্যাক করা খাবারটা নিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে আসলো।।

এরপর তামিম তার বন্ধুদের থেকে বিদায় নিয়ে সেখান থেকে সোজা বাসায় চলে আসলো।। বাসায় এসেই তামিম সোজা নীলার রুমে চলে গেল।। নীলার রুমে এসে দেখলো নীলা টেবিলে বসে পড়ছে।।

তামিমঃ আমার জানপাখিটা কি করে.? (রুমে ঢুকে)

নীলাঃ মাথা তুলে তাকিয়ে দেখলো তামিম, দেখছ না কি করছে (বলেই আবার পড়ায় মনোযোগ দিল)।।

তামিমঃ হুম দেখছি তো, আমার জানপাখি টার নিশ্চয়ই পড়তে পড়তে খিদে লেগে গেছে তাইনা.?

নীলাঃ নাহ লাগেনি, তুমি এখন যাও তো আমি পড়বো।।

তামিমঃ তাহলে এই ফুচকা আর আইসক্রিমের কি করবো.? (পিছন থেকে সামনে এনে)

নীলাঃ কি ফুচকা আর আইসক্রিম.! (বলেই দৌড়ে এসে তামিমের হাত থেকে প্যাকেটটা নিতে যাবে তার আগেই তামিম প্যাকেটটা পিছনে নিয়ে নেয়)।।

তামিমঃ আরে সোনা দাড়াও এতো অস্থির হচ্ছ কেন, এগুলো তো তোমার জন্যই এনেছি তুমিই তো এগুলো খাবে।।

নীলাঃ তো আমার কাছে প্যাকেটটা দিচ্ছ না কেন প্যাকেটটা দাও।।

তামিমঃ হুম দিব তো তার আগে আমাকেও যে তোমার একটা জিনিস দিতে হবে।।

নীলাঃ কি দিব তোমায়.?

তামিমঃ উম বেশি কিছু না, শুধু আমায় একটা কিস করলেই হবে।।

নীলাঃ এহহ আমি এটা পারবো না।।

তামিমঃ তাহলে এগুলোও পাবে না।।

নীলাঃ কিছুক্ষণ ভেবে, আচ্ছা দিচ্ছি তার আগে তোমার চোখ বন্ধ কর।।

তামিমঃ আচ্ছা এই নাও করলাম এবার দাও।।

তারপর নীলা তামিমের গালে একটা চুমু খেয়ে তার হাতের প্যাকেটটা ঝাপটা মেরে নিয়ে নিল।। প্যাকেটটা নিয়েই নীলা প্যাকেট ছিড়ে ভিতরে থাকা ফুচকা খেতে শুরু করলো।।

তামিমঃ কি একাই খাবে আমাকে দিবে না নাকি.?

নীলাঃ আবার ফুচকা আমি কাউকে দিব না যাও ভাগ এখান থেকে (খেতে খেতে)।।

তামিমঃ তোমার ফুচকা হলো কীভাবে.? ফুচকা গুলো তো আমি কিনে এনেছি।।

নীলাঃ হুম আর এটার পাওনাও একটু আগেই পরিশোধ করে দিয়েছি সো এখন এইগুলো সব আমার।।

তামিমঃ তো আইসক্রিমের পাওনাটা যে রয়ে গেল তার কি হবে.?

নীলাঃ ওইটার পাওনাও দিয়ে দিয়েছি আর দিতে পারবো না।।

তামিমঃ আচ্ছা ঠিক আছে লাগবে না, সময় হলে আইসক্রিমের পাওনাটা আমি নিজেই নিয়ে নিব (আস্তে আস্তে)।।

নীলাঃ কিছু বললে.?

তামিমঃ না কই কি বললাম তুমি খাও।।

নীলাঃ আর কিছু না বলে একে একে বাকি ফুচকা গুলো খেয়ে ফেললো।।

ফুচকা খাওয়া শেষ হলে নীলা এবার আইসক্রিমের প্যাকেটটা ছিড়ে আইসক্রিম খেতে শুরু করলো।। নীলা প্রায় অর্ধেক আইসক্রিম খেয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে।। খেতে খেতে তার মুখের চারপাশে আইসক্রিম লেগে একাকার হয়ে গেছে।। নীলার এমন আইসক্রিম মাখা মুখ দেখে তামিম এবার নীলার কাছে গিয়ে বসলো।। এরপর নীলাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আস্তে আস্তে নীলার মুখের কাছে তার মুখ নিয়ে যেতে লাগলো।। এরপর তামিম নীলার গালে আলতো করে হাত রেখে নীলার ঠোঁটের সাথে তার ঠোঁট জোড়া এক করে দেয়।। তামিমের এমন কাজে নীলা তো অবাক।। নীলা শুধু চোখ বড় বড় করে তামিমের দিকে তাকিয়ে আছে।। নীলা হয়তো ভাবতেও পারেনি যে তামিম তার সাথে এমন কিছু করে বসবে।।
.
.
.
.
.
Loading…….

কেউ তাহলে গতকাল সঠিক উত্তর দিতে পারেন নি, কারণ নীলার আম্মু তো কিছুই দেখেন নি ?।। ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আর গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই একটা কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।। আর হে গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক সো গল্পকে গল্প হিসেবে দেখবেন বাস্তবতায় নিবেন না।। গল্প ভালো না লাগলে ইগনোর করবেন তবুও কেউ খারাপ মন্তব্য করবেন না প্লিজ।। হেপি রিডিং ?

~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~

#খুব_ভালোবাসি_তোকে
#লেখকঃ- Tamim
#পর্বঃ- ১৯
,,
,,
,,
,,
প্রায় অনেক্ষণ ধরে তামিম নীলার ঠোঁট জোড়া নিজের ধকলে করে রেখেছে।। নীলা নিজেকে তামিমের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু তামিম তাকে ছাড়ছেই না।। এদিকে নীলার শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে, যেন এক্ষুণি তার দম বন্ধ হয়ে আসবে।। নীলা তামিমের এমন রোমান্টিক অত্যাচার আর সহ্য করতে না পেরে তামিমের ঠোঁটের মধ্যে জোরে একটা কামড় বসিয়ে দিল।। কামড় খেয়ে তামিম সাথে সাথে নীলাকে ছেড়ে দিল।।

তামিমঃ ও মা গো আমার ঠোঁট, আহ্ কি ব্যাথা।। এই তুমি আমার ঠোঁটে কামড় দিলে কেন.?

নীলাঃ কামড় দিয়েছি বেশ করেছি, এ ছাড়া আর কি করবো আমি.? যেভাবে ধরেছিলে আরেকটু হলেই তো আমার দম বন্ধ হয়ে আসতো।।

তামিমঃ আমি থাকতে তোমার দম বন্ধ হবে না জানপাখি (নীলার কাছে বসে)।।

নীলাঃ হবে কি হবে না আমার ভালো করেই জানা আছে।। এবার বল হঠাৎ আমায় কিস করলে কেন.?

তামিমঃ আইসক্রিম খাওয়ার জন্য।।

নীলাঃ আইসক্রিম খাবে এতে আমায় কিস করার কি আছে.?

তামিমঃ তোমাকে কিস না করলে আইসক্রিম কীভাবে খেতাম.?

নীলাঃ মানে.?

তামিমঃ মানে হলো তুমি যেভাবে বাচ্চাদের মতো আইসক্রিম খাচ্ছিলে এতে তোমার মুখের চারপাশে আইসক্রিম লেগে একাকার হয়ে গেছিল।। তাইতো তখন তোমায় কিস করলাম আর এর সাথে আইসক্রিমও খেয়ে নিলাম (দুষ্টু হাসি দিয়ে)।।

নীলাঃ শয়তান একটা।।

তামিমঃ হিহি

নীলাঃ হাসবে না একদম, যাও এখন আমার রুম থেকে বের হও আমি পড়তে বসবো।।

তামিমঃ তুমি তোমার পড়া পড়বে এর জন্য আমাকে রুম থেকে যেতে হবে কেন.?

নীলাঃ কারণ তুমি আমার সামনে থাকলে আমার পড়ায় মন বসবে না।।

তামিমঃ আরে বসবে না কেন অবশ্যই বসবে তুমি পড় তো।।

নীলাঃ উফফ তুমি কি যাবে.? (রাগ দেখিয়ে)

তামিমঃ আচ্ছা জান যাচ্ছি তুমি পড় (বলেই তামিম নীলার রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে আসলো)।।

এইভাবেই তাদের দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে কেটে গেল বেশ কিছুদিন।। প্রতিদিন নীলাকে ভার্সিটিতে দিয়ে আসা আর নিয়ে আসা যেমন তামিমের কাজ, ঠিক তেমনি প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় নীলাকে ফুচকা আর আইসক্রিম এনে দেওয়াও তামিমের একটা দায়িত্ব হয়ে গেছে।। যদি কোনোদিন ভুল করেও তামিম নীলার জন্য ফুচকা আর আইসক্রিম না আনে তাহলে ওইদিন আর নীলা তামিমের সাথে কোনো কথাই বলে না।। তামিম আবার নীলার সাথে কথা না বলে এক মূহুর্তও থাকতে পারে না, তাই সে নীলাকে খুশি রাখতে কখনো তার জন্য ফুচকা, আইসক্রিম আনতে ভুলে না।।

তো আজ দুপুরের ঠিক পরন্ত বিকালে তামিম আর নীলা ছাদে বসে বসে গল্প করছিল, এমন সময় নীলা তামিমকে বললো…

নীলাঃ আমার না ভিষণ ভয় করছে।।

তামিমঃ কীসের ভয় কলিজা.? (নীলার এক হাত তার দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে)

নীলাঃ আমাদের সম্পর্কটা নিয়ে।।

তামিমঃ মানে.?

নীলাঃ এই যে আমাদের সম্পর্কটার ব্যাপারে বাসার কেউ এখনো কিছুই জানে না।। কিন্তু বাসার সবাই যখন আমাদের সম্পর্কটার ব্যাপারে জানবে তখন কি হবে.? বাসার সবাই কি আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিবে.? (তামিমের দিকে তাকিয়ে)

তামিমঃ কেন মানবে না অবশ্যই মানবে।। এই বিষয়ে তোমাকে এতো চিন্তা করতে হবে না।। বাসার সবাইকে ভালো করে বুঝিয়ে বললে তারা অবশ্যই আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিবে।। কারণ চাচ্চু, চাচি আর আম্মু-আব্বু তো আমাদেরকে ভালোবাসেন তাইনা.? তাহলে ওরা নিশ্চয়ই চাইবে যে আমরা জীবনে সুখে থাকি।।

নীলাঃ কিন্তু বাসার সবাই যদি আমাদের সম্পর্কটা মেনে না নেয় তখন কি হবে.? আর আম্মু-আব্বু যদি আমাকে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয় তাহলে.? আমি তো তোমাকে ছাড়া থাকতেই পারবো না আর তোমাকে না পেলে আমি ম (নীলাকে থামিয়ে)

তামিমঃ এই চুপ ভুলেও এইসব কথা মুখে আনবে না।। বাসার সবাইকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার, আমি সবাইকে রাজি করিয়েই ছাড়বো।। দেখবে সবাই আমাদের সম্পর্কটা ঠিকই মেনে নিবে।।

নীলাঃ তাই যেন হয় (তামিমের বুকে মাথা রেখে)।।

তামিমঃ তাই হবে দেখিও (বলেই নীলার কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে নীলাকে নিজের বুকের মধ্যে শক্ত করে চেপে ধরলো)।।

নীলাঃ বাসার সবাই যদি আমাদের সম্পর্কটা মেনে নেয় তাহলে আমাকে সারাজীবন তোমার এই বুকে আগলে রাখবে তো.?

তামিমঃ হুম সারাজীবন তোমাকে আমার বুকের মধ্যেই রাখবো, কথা দিলাম (নীলাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)।।

নীলাঃ সন্ধ্যা তো হয়ে আসছে যাও এবার আমার জন্য ফুচকা, আইসক্রিম নিয়ে আস।।

তামিমঃ আরেকটু পরে যাই.?

নীলাঃ নাহ তুমি এক্ষুণি যাবে নাহলে

তামিমঃ আচ্ছা কলিজা আমি এক্ষুণি যাচ্ছি।। তুমি গিয়ে তোমার রুমে বস আমি তোমার জন্য ফুচকা, আইসক্রিম নিয়ে আসছি।।

নীলাঃ আচ্ছা যাও আর তাড়াতাড়ি আসিও।।

তামিমঃ আচ্ছা বলে তামিম ছাদ থেকে নেমে বাসা থেকে বেরিয়ে নীলার জন্য ফুচকা, আইসক্রিম আনতে চলে গেল।।

তামিম চলে যাওয়ার পর নীলাও ছাদ থেকে নেমে নিজের রুমে চলে আসলো।। এদিকে তামিম একটা রেস্টুরেন্ট থেকে নীলার জন্য ফুচকা আর আইসক্রিম নিয়ে কিছুক্ষণ পর বাসায় আসলো।। এরপর সেগুলো নিয়ে সোজা নীলার রুমে চলে গেল আর নীলার কাছে সেগুলো দিয়ে তামিম নিজের রুমে চলে আসলো।।

–কাল তোমাদের ফুপি কিছুদিনের জন্য বাংলাদেশে আসছেন।। তামিম তুমি তোমার চাচ্চুর সাথে কাল এয়ারপোর্টে চলে যেও তোমার ফুপিকে পিক করতে।।

রাতেরবেলা ডাইনিং টেবিলে বসে বাসার সবাই খাবার খাচ্ছিল ঠিক তখনই তামিমের আব্বু উপরোক্ত কথাটা বললেন।। তামিম তার আব্বুর কথা শুনে অনেকটাই অবাক হয়ে গেল সাথে নীলাও।। তাদের ফুপি কাল দেশে আসছেন আর এই কথাটা তাদেরকে আজ জানানো হচ্ছে, এর জন্যই হয়তো।।

তামিমঃ ফুপি দেশে আসছেন এই কথাটা তুমি আমাদেরকে আজ জানাচ্ছ.! এতোদিন ধরে বল নি কেন যে ফুপি দেশে আসবেন.?

তামিমের আব্বুঃ এই কথাটা আমি আজ সকালেই জানলাম তাহলে তোমাদেরকে জানাবো কি করে.?

তামিমঃ মানে.?

তামিমের আব্বুঃ তোমার ফুপি আজকেই আমাকে ফোন করে বলেছেন যে উনি কাল দেশে আসছেন।।

তামিমঃ ওহহ কিন্তু হঠাৎ ফুপি দেশে আসছেন কেন.?

তামিমের আব্বুঃ বেড়াতে আসবেন আর কি।।

তামিমঃ ওহহ তা ফুপি কি একাই আসবেন.?

তামিমের আব্বুঃ নাহ তোমার রাফি ভাইয়াও (ফুপির ছেলে) সাথে আসবে।।

তামিমঃ আর ফুফা.?

তামিমের আব্বুঃ উনি আসলে ওদের অফিস কে সামলাবে.? তাই উনি আসবেন না।।

তামিমঃ ওহহ

তামিমের আব্বুঃ নীলা মামনি কাল তোমায় ভার্সিটিতে যেতে হবে না।। তোমার ফুপি যেহেতু কাল দেশে আসছেন তাই কালকে আর ভার্সিটিতে যেও না কেমন।।

নীলাঃ আচ্ছা চাচ্চু।।

তামিমের আব্বুঃ আর তুমি (তামিমকে উদ্দেশ্য করে) কাল সকাল ৯ টায় তোমার চাচ্চুর সাথে এয়ারপোর্টে চলে যেও ওকে।।

তামিমঃ ওকে আব্বু।।

তারপর আর কেউ কোনো কথা বললো না, সবাই যার যার খাবার খেয়ে উঠে পরলো।।

পরেরদিন সকালবেলা তামিম ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে তার ছোট চাচ্চুর সাথে এয়ারপোর্টে চলে এলো।। প্রায় আধা ঘন্টা এয়ারপোর্টে দাড়িয়ে থাকার পর তামিমের ফুপির প্লেন এয়ারপোর্টে এসে লেন্ড করলো।। তামিম প্রথমে গিয়ে তার ফুপিকে সালাম দিয়ে উনার সাথে ভালো-মন্দ কিছু কথা বললো আর সাথে তার ফুফাতো ভাইকেও ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করলো।। নীলার আব্বুও উনার সাথে ভালো-মন্দ কথা বলে ভাগিনা কেও ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করলেন।। তারপর তারা তাদের ব্যাগপত্র নিয়ে গাড়িতে উঠাল আর তাদেরকে নিয়ে সোজা বাসায় চলে আসলো।।

বাসায় আসতেই রাহিমা বেগমকে (তামিমের ফুপির নাম) তামিমের আম্মু আর নীলার আম্মু এসে সালাম করে উনার সাথে কুশল বিনিময় করলেন।। তারা দুজন রাফিকেও ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করলেন।। রাফিও তাদেরকে সালাম দিয়ে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করলো।। এর মধ্যে নীলাও তার রুম থেকে বেরিয়ে এসে তার ফুপিকে সালাম করে তাকে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করলো।।

নীলাঃ আসসালামু ওয়ালাইকুম, কেমন আছেন ফুপি.?

ফুপিঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম, এইতো মা ভালো তুমি কেমন আছ.?

নীলাঃ জি আমিও ভালো আছি।।

ফুপিঃ কতো বড় হয়ে গেছে আমার আম্মুটা, আর কতো সুন্দর হয়েছে এখন (নীলার গালে হাত বুলিয়ে দিয়ে)।।

নীলাঃ তার ফুপির কথা শুনে লজ্জায় তার চেহারা একেবারে লাল হয়ে গিয়েছে।।

এরপর তামিমের আম্মু তাদের দুজনকে ২টা রুম দেখিয়ে বললেন তারা যেন ফ্রেশ হয়ে নেয়।। তারা দুজন ফ্রেশ হতে চলে গেলে তামিমের আম্মু আর নীলার আম্মু মিলে দুপুরের খাবার রেডি করতে রান্নাঘরে চলে গেল।।

দুপুরবেলা…

বাসার সবাই ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে, তাদের সাথে আজ তাদের বড় বোন আর উনার ছেলেও রয়েছে।। সবাই বেশ আনন্দের সাথে গল্প করতে করতে খাবার খাচ্ছে।। রহিমা বেগম তো শুধু নীলার খাবার খাওয়া নিয়েই কথা বলে যাচ্ছেন।। মেয়েটা এতো কম খায় কেন.? তাইতো এতো শুকনা হয়ে গেছে, ইত্যাদি ইত্যাদি।। নীলাও উনার কথার উত্তরে কিছু বলতে পারছে না।। এইভাবেই তাদের দুপুরের খাবার খাওয়ার পর্বটা শেষ হয়ে গেল।।

এইভাবেই কেটে গেল ১ সপ্তাহ।। তামিমের ফুপিরা ২ সপ্তাহের জন্য দেশে এসেছেন।। এর মধ্যে তাদের হাতে রয়েছে আর মাত্র ১ সপ্তাহ।। এদিকে আজ নীলার আব্বুর অফিসের সাথে ইংল্যান্ডের একটা অফিসের বড় এক ডিল হয়েছে।। নীলার আব্বু আজ অনেক খুশি তাই উনি উনার অফিসের ম্যানেজারকে অফিস দেখে রাখার কথা বলে একটা ভালো রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু মিষ্টি কিনে সোজা বাসায় চলে গেলেন।।

নীলার আব্বু বাসায় যাওয়ার আধা ঘন্টা পর তামিমের আব্বুর মোবাইলে একটা কল আসলো, কলটা নীলার আব্বু ই দিয়েছেন।। তিনি কলটা রিছিভ করতেই নীলার আব্বু তাকে তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে বললেন।। তামিমের আব্বুও আসছি বলে কলটা কেটে দিলেন।।

তামিমের আব্বুঃ আমি এখন বাসায় চলে যাচ্ছি তুমি কিছুক্ষণ পর অফিস বন্ধ করে বাসায় চলে এস ওকে।।

তামিমঃ আচ্ছা আব্বু।।

তারপর তামিমের আব্বু অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা বাসায় চলে গেলেন।। সময়টা এখন সন্ধ্যার, এই সময় প্রতিদিনই অফিস বন্ধ করে তামিমের আব্বু বাসায় চলে যান।। তামিমও আজ এর ব্যাতিক্রম করলো না, সেও অফিস বন্ধ করে তাদের গাড়িটা নিয়ে সোজা বাসায় চলে আসে।। বাসায় ঢুকে তামিম ড্রয়িংরুম থেকে কার বিয়ের কথা শুনতে পায়।। ড্রয়িংরুমে যাদের গলার আওয়াজ শুনা যাচ্ছে তারা আর কেউ না তার আব্বু, চাচ্চু আর ফুপির।। তামিম এবার কৌতুহল নিয়ে ড্রয়িংরুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।। এরপর তামিম ভিতর থেকে এমন একটা কথা শুনতে পেল যা শুনে তামিমের মাথা ঘুরতে শুরু করলো।। তামিমের মনে হচ্ছে তার চারপাশে যেন শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার বিরাজ করছে।।
.
.
.
.
.
Loading…….

তামিম কি এমন শুনলো কেউ বলতে পারবেন.? যদি পারেন তাহলে কমেন্টে বলবেন।। আর এখন থেকে আবার নিয়মিত গল্প পাবেন ইনশাআল্লাহ।। গল্পের মধ্যে ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আর গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই একটা গঠনমূলক কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন, হেপি রিডিং ?

~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~

#খুব_ভালোবাসি_তোকে
#লেখকঃ- Tamim
#পর্বঃ- ২০
,,
,,
,,
,,
–আচ্ছা আপা ঠিক আছে তুমি যখন এতো করে বলছ তাহলে আমি রাফি সাথে নীলার বিয়ে দিতে রাজি।। কিন্তু রাফি আর নীলা কি এই বিয়েতে রাজি হবে.? এখনকার যুগের ছেলে-মেয়েরা তো আবার নিজের কাজিনদেরকে বিয়ে করতে চায়না (নীলার আব্বু)।।

ফুপিঃ এ নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবে না, রাফিকে আমি বুঝিয়ে বলবো দেখবি ও ঠিকই মেনে নিবে।। তুই গিয়ে নীলা মামনিকে রাজি করা তাহলেই হবে।। আমরা আরও ১ সপ্তাহ দেশে আছি এর মধ্যে যদি রাফির সাথে নীলার বিয়েটা হয়ে যায় তাহলে নীলাকেও কয়েক মাসের মধ্যে আমাদের কাছে আমেরিকায় নিয়ে যাব।।

ড্রয়িংরুমের ভিতর থেকে তার ছোট চাচ্চু আর তার ফুপির মধ্যে এইসব কথা শুনে তামিমের মাথা পুরো চক্কর দিয়ে উঠলো।। সে কি শুনলো এইসব.! যা শুনেছে তা কি ঠিক শুনেছে.? তামিমের মনে হয়না সে ভুল কিছু শুনেছে।। তামিম কি তাহলে নীলাকে হারাতে বসেছে.? সে কি তাহলে নীলাকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে পাবে না.? রাফির সাথে নীলার বিয়ে হবে এটা ভাবতেই কষ্টে তামিমের বুক ফেটে যাচ্ছে।।

তামিম আর ওইখানে এক মূহুর্তও দাড়ালো না সোজা নীলার রুমে চলে গেল।। নীলার রুমে এসে তামিম দেখলো নীলা টেবিলে বসে বসে পড়ছে।। এদিকে নীলা তামিমকে তার রুমে দেখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বসা থেকে উঠে তামিমের সামনে এসে দাড়ালো।।

নীলাঃ আমার ফুচকা আর আইসক্রিম কোথায় গো.? (আদুরে গলায়)

নীলার এমন কথা শুনে তামিম মনে মনে ভাবে, নীলু হয়তো এখনো বিয়ের ব্যাপারে কিছুই জানে না, নাহলে সে এইসময় আমার কাছে এইসব চাইতো না।।

নীলাঃ কি হলো চুপ করে আছ কেন.? আর আমার (নীলাকে থামিয়ে)

তামিমঃ নীলু তুমি কি বিয়ের ব্যাপারে কিছুই জান না.?

নীলাঃ বিয়ের ব্যাপারে মানে.! কার বিয়ের কথা বলছ.?

তামিমঃ তোমার বিয়ের কথা বলছি তাও

নীলাঃ কিহহ তার মানে বাসার সবাই আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিয়েছেন.! ইয়াহু কি মজা (বলেই তামিমকে জড়িয়ে ধরলো)।। কিন্তু তারা এতো তাড়াতাড়ি আমাদের বিয়ে দিতে চাচ্ছেন কেন গো.?

তামিমঃ আরে এইসব কি বলছ তুমি, আগে আমার পুরো কথাটা শুনবে তো নাকি.? আমার পুরো কথা না শুনেই উথলে পরছ কেন.? দেখি ছাড় আমায় আর আমার পুরো কথাটা শুন (বলেই নিজের থেকে নীলাকে ছাড়িয়ে নিল)।।

নীলাঃ কি কথা শুনবো বল.?

তামিমঃ চাচ্চু আর ফুপি মিলে ঠিক করেছেন রাফি ভাইয়ার সাথে নাকি তোমার বিয়ে দিবেন।। ফুপিরা তো আরও ১ সপ্তাহ দেশে আছেন, এর মধ্যে যদি তোমাদের বিয়েটা হয়ে যায় তাহলে কয়েক মাসের মধ্যে ওরা তোমাকেও ওদের কাছে আমেরিকায় নিয়ে যাবেন।।

তামিমের মুখ থেকে এইসব কথা শুনে মুহুর্তের মধ্যেই নীলার পুরো পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে গেল।। তামিম তাকে এইসব কি বললো.! যা বলেছে তা কি সত্যি বলেছে নাকি সে তার সাথে মজা করছে.?

নীলাঃ এএইসব ততুমি কি বলছ.! তুমি আমার সাথে মজা করছ তাইনা.? (কাঁপা কাঁপা গলায়)।।

তামিমঃ নীলু আমি তোমার সাথে মজা করছি না, আমি যা শুনেছি তাই তোমাকে বলছি।। চাচ্চু আর ফুপি মিলে ঠিক করেছেন রাফি ভাইয়ার সাথে তোমার বিয়ে দিবেন আর এটাই সত্যি।।

তামিমের কথাটা শেষ হতে না হতেই নীলা তামিমকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো আর বললো…

নীলাঃ কিন্তু আমি রাফি ভাইয়াকে বিয়ে করতে পারবো না, কারণ আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি আর বিয়ে করলে শুধু তোমাকেই করবো।। প্লিজ তুমি কিছু একটা কর নাহলে কিন্তু আমি নিজের কোনো (কথাটা বলার আগেই তামিম নীলার মুখ চেপে ধরলো)।।

তামিমঃ এই চুপ ভুলেও এইসব কথা মুখে আনবে না, তাহলে কিন্তু খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।। আমি তো আছিই তোমার সাথে (নীলার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)।।

নীলাঃ কিছু না বলে তামিমকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে রইলো।।

নীলা তামিমকে জড়িয়ে ধরে আছে আর তামিম নীলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, এমন সময় হঠাৎ তামিম কারও জুতার আওয়াজ শুনতে পেল।। তামিম বুঝতে পারলো কেউ একজন নীলার রুমে আসছে তাই তামিম নীলাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিল।।

নীলাঃ কি হলো এইভাবে ছাড়িয়ে নিলে কেন.?

তামিমঃ চুপ থাক কেও হয়তো তোমার রুমে আসছে, আর কেউ এসে আমাদেরকে ওইভাবে দেখলে বাসায় হৈচৈ পরে যাবে।।

নীলাঃ তাহলে তো ভালোই হবে বাসার সবাই মিলে আমাদের বিয়ে দিয়ে দিবে।।

তামিমঃ উফফ তুমি একটু চুপ থাক তো।।

তামিমের কথায় নীলা এবার চুপ হয়ে গেল।। এর একটু পরেই রুমের দরজা খুলে নীলার আব্বু এসে রুমে ঢুকলেন।।

নীলার আব্বুঃ আরে তামিম তুই এইখানে.!

তামিমঃ হে না মানে এমনিই দেখতে এসেছিলাম নীলা পড়তে বসেছে কি না।।

নীলার আব্বুঃ ওহহ আচ্ছা এখন তাহলে একটু রুম থেকে যা তো, আমি নীলার সাথে কিছু কথা বলবো।।

তামিমঃ আচ্ছা চাচ্চু (বলেই তামিম রুম থেকে বেরিয়ে যেতে লাগলো)।।

নীলার আব্বুঃ কি হয়েছে আমার আম্মুটার, তোমার চোখে পানি কেন.? (নীলাকে উদ্দেশ্য করে)

নীলাঃ পানি.! না মানে আসলে

তামিমঃ আমি বলছি, আসলে চাচ্চু ওর চোখে একটা পোকা না কি যেন পরেছিল তাই হয়তো চোখে পানি চলে এসেছে।।

নীলার আব্বুঃ ওহহ

তামিমঃ হুম আমি তাহলে গেলাম তোমরা কথা বল (বলেই তামিম রুম থেকে বেরিয়ে গেল)।।

নীলার আব্বুঃ আম্মু (নীলাকে উনি প্রায়ই এই নামে ডাকেন) আমি যে তোমাকে না জানিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।। তুমি তো আজ পর্যন্ত কখনো আমার সিদ্ধান্তের দ্বিমত পোষণ কর নি, আশা করি আজকেও তুমি আমার সিদ্ধান্তের দ্বিমত পোষণ করবে না।।

নীলাঃ কি সিদ্ধান্ত আব্বু.?

নীলার আব্বুঃ আসলে তোমার ফুপি চাইছেন তোমাকে রাফির বউ বানাতে।। তাই উনি রাফির সাথে তোমার বিয়ে দিতে চাচ্ছেন।। আর আমিও তোমার ফুপির কথায়

নীলাঃ রাজি হয়ে গেছ তাইতো.? বাহ্ আব্বু বাহ্, বিয়ে হবে আমার আর রাজি হলে তুমি.! এই বিয়েতে আমি রাজি হব কি না এটা তুমি একবারও আমাকে জিজ্ঞেস করলে না।। আর রাফি ভাইয়া তো বয়সে আমার অনেক বড়, উনার সাথে আমার কীভাবে কি।।

নীলার আব্বুঃ এবার তিনি সাথে সাথে নীলার হাত চেপে ধরেন আর বলেন, দেখ আম্মু আমিও প্রথমে তোমার ফুপির কথায় রাজি হইনি কিন্তু তোমার ফুপি আমাকে বাধ্য করেছেন রাজি হতে।।

নীলাঃ বাধ্য করেছেন মানে.!

নীলার আব্বুঃ আসলে আজ আমার অফিসের সাথে ইংল্যান্ডের একটা অফিসের সাথে বড় এক ডিল হয়েছে তাই আমি আজ খুশি হয়ে বাসার সবার জন্য মিষ্টি নিয়ে বাসায় ফিরি।। বাসায় এসে সবাইকে আমার খুশির কারণটা জানালাম তখন তোমার ফুপি আমাকে আলাদা ডেকে নিয়ে বলেন, আজ তোর কাছে আমি একটা জিনিস চাইবো তুই কি দিবি.? আমি তখন এতোই খুশি ছিলাম যার কারণে তোমার ফুপির কথার উত্তরে বলে দেই, তুমি আজ যা চাইবে তাই দিব কথা দিলাম।। তখন তোমার ফুপি রাফি আর তোমার বিয়ের ব্যাপারে আমায় বলেন।। আমি প্রথমে না করলেও পরে উনি বলেন আমি যেহেতু উনাকে কথা দিয়েছি তাহলে উনার কথা আমায় রাখতেই হবে।। আমি অনেক্ষণ ভেবেও রাজি হতে না পেরে তোমার বড় চাচ্চুকে ফোন করে বাসায় আনলাম আর উনাকে সব বললাম।। তারপর উনিও তোমার ফুপির কথায় সায় দিলেন আর আমাকে বললেন রাজি হতে যেতে।। এরপর আমিও আর উপায় না পেয়ে তোমার ফুপির কথায় রাজি হয়ে গেলাম।। এখন তুমিই বল এইখানে আমার কি দোষ.?

নীলাঃ তোমার কোনো দোষ নেই, সব দোষ ফুপির।। কিন্তু যাইহোক আমি রাফি ভাইয়াকে বিয়ে করতে পারবো না এটাই আমার শেষ কথা।।

নীলার আব্বুঃ কিন্তু আমি যে তোমার ফুপিকে কথা দিয়ে ফেলেছি।।

নীলাঃ কিন্তু আমি রাফি ভাইয়াকে কিছুতেই বিয়ে করবো না।।

নীলার আব্বুঃ আম্মু একবার ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখ।।

নীলাঃ ভাবার কিছু নেই আমি যেটা বলেছি এটাই ফাইনাল, আমি রাফি ভাইয়াকে বিয়ে করতে পারবো না তো পারবো না ব্যস (রেগে গিয়ে)।।

নীলার আব্বুঃ তোমায় রাফিকে বিয়ে করতেই হবে আর এটাই আমার শেষ কথা।। আমার কথার উপরে যদি আর একটা কথাও বল তাহলে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।। আগামী শুক্রবারে তোমাদের বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছে, বিয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নাও (কথাগুলো বলেই নীলার আব্বু রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন)।।

নীলার আব্বু চলে যাওয়ার পর নীলা বিছানার মধ্যে ধপাস করে বসে পরলো আর মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো এখন সে কি করবে।। তার আব্বু এর আগে কখনো তার সাথে এইভাবে কঠোর হয়ে কথা বলেন নি।। এই প্রথম তার আব্বু তার সাথে এতো কঠোর হয়ে কথা বললেন।। নীলা এখন ভালো করেই বুঝতে পেরেছে বিয়েতে তার মত না থাকলেও তাকে এই বিয়েটা করতেই হবে।।

এদিকে রাহিমা বেগমও উনার ছেলেকে অনেক বোঝাচ্ছেন বিয়েতে রাজি হয়ে যাওয়ার জন্য।।

ফুপিঃ দেখ বাবা নীলা অনেক ভালো একটা মেয়ে।। নীলার মতো ভালো মেয়ে এমন ২য় কোথাও খুজেও পাবি না।। প্লিজ তুই এই বিয়েতে রাজি হয়ে যা।। আমি মা হয়ে তোর কাছে একটা রিকুয়েস্ট করছি তুই কি তা মানবি না?

রাফিঃ But Mom নীলা কি আমায় বিয়ে করতে রাজি হবে.? হতেও তো পারে ওর কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে।। First নীলার মতামত নাও, সে যদি রাজি হয় তাহলে আমিও রাজি, আর সে যদি রাজি না হয়

–নীলা রাজি আছে বাবা, তুমিও এবার রাজি হয়ে যাও (নীলার আব্বু তাদের রুমে ঢুকে বললেন)।।

রাফিঃ সত্যি নীলা রাজি এই বিয়েতে.! (কিছুটা খুশি হয়ে)

নীলার আব্বুঃ হে বাবা ও রাজি।।

ফুপিঃ দেখলি তো নীলা রাজি হয়েছে, এবার তুইও রাজি হয়ে যা বাবা।।

রাফিঃ Okay Mom আমিও রাজি।।

ফুপিঃ আলহামদুলিল্লাহ, যাক তাহলে তুইও রাজি হয়ে গেলি।। শুন আমরা চাচ্ছি সামনের শুক্রবারে তোদের বিয়ের কাজটা কমপ্লিট করে ফেলবো, তোর কি আর কিছু বলার আছে.?

রাফিঃ No Mom

নীলার আব্বুঃ আচ্ছা তাহলে আপা আমি এখন আসি।।

ফুপিঃ শফিক দাড়া তোর সাথে একটু কথা আছে।।

নীলার আব্বুঃ হ্যাঁ আপা বল.?

ফুপিঃ আয় আমার সাথে (বলেই উনি নীলার আব্বুকে টেনে রুমের বাহিরে নিয়ে আসলেন)।। আচ্ছা নীলা কি সত্যি রাজি হয়েছে নাকি তুই

নীলার আব্বুঃ না আপা আসলে নীলা রাজি হয়নি কিন্তু ও কোনোদিন আমার কথা অমান্য করেনি, আমি ওকে বলে দিয়েছি ওকে বিয়েটা করতেই হবে।।

ফুপিঃ আচ্ছা ঠিক আছে তাদের বিয়েটা হোক তাহলে নীলাও সব মেনে নিবে।।

নীলার আব্বুঃ আপা বিয়েতে তো তারা কেউ-ই রাজি নয়, আমরা জোর করে তাদেরকে রাজি করিয়েছি, এটা কি আমরা ঠিক করছি.?

ফুপিঃ আমরা তো তাদের ভালোর জন্যই এমনটা করছি তো এইখানে ঠিক আর বেঠিকের কি আছে.? শুন এইসব নিয়ে তুই অযথা চিন্তা করিস না।। একবার তাদের বিয়েটা হোক তারপর দেখবি দুজন দুজনকে একে অপরের সাথে ঠিকই মানিয়ে নিয়েছি।।

নীলার আব্বুঃ তাই যেন হয়।।

ওইদিনের মতো রাতটা কেটে গেল।। কিন্তু তামিমের রাতটা অনেক কষ্টে কেটেছে।। সারা রাত তামিম বসে বসে এটাই ভেবেছে রাফির সাথে নীলার বিয়ে হয়ে গেলে তার কি হবে।। যদিও নীলা এখন বিয়েতে রাজি না কিন্তু বিয়েটা হয়ে গেলে তো নীলা তাকে সারাজীবনের জন্য ভুলে যাবে, তখন নীলাকে ছাড়া তামিম থাকবে কি করে.?

সকালবেলা…

তামিম আর নীলা ছাড়া বাসার সবাই আজ অনেক খুশি।। অনেক আনন্দের সাথে সবাই মিলে ডাইনিং টেবিলে বসে একসাথে নাস্তা করছে।। সবার মুখেই হাসির চাপ শুধু তামিম আর নীলা ছাড়া।।
নাস্তা খাওয়া শেষ হলে রাহিমা বেগম রাফি, তামিম আর নীলাকে নিয়ে বিয়ের শপিং করতে চলে গেলেন।। নীলা প্রথমে যেতে চায়নি কিন্তু তার ফুপি তাকে জোর করে নিয়ে গেছেন।। তামিমকেও সাথে নিয়ে গেছেন কারণ তারা শহরের কোনো শপিংমল ভালো করে চিনেন না তাই।।

সারাদিন কেনাকাটা করার পর একেবারে সন্ধ্যাবেলায় তারা সবাই বাসায় ফিরলো।। বাসায় এসে সবাই যার যার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল।।

এইভাবেই আরও একটা দিন কেটে গেল।। আজ বৃহস্পতিবার, কাল শুক্রবার মানে কাল রাফি আর নীলার বিয়ে।। বিয়েতে নীলার মত না থাকলেও রাফির মত আছে।। কারণ নীলাকে রাফির একটু একটু ভালো লাগে।। যদিও নীলা বয়সে তার থেকে ৬-৭ বছরের ছোট তারপরও সে নীলাকে বিয়ে করতে রাজি।।

বিয়ের উপলক্ষে বাসাটা হালকা বিয়ের সাজে সাজানো হয়েছে।। বাসার একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা, না সাজিয়ে তো হয়না।।

রাতেরবেলা…

ঘড়িতে তখন ১টা ছুই ছুই, এমন সময় নীলা তার রুম থেকে বেরিয়ে তামিমের রুমে এসে ঢুকলো।। তামিম তখন জেগেই ছিল আর বিছানায় শুয়ে শুয়ে নীলাকে হারানোর কষ্টে মনে মনে কান্না করছিল।। এমন সময় তামিম হঠাৎ নীলাকে তার রুমে দেখে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়।। তামিম উঠে দাড়াতেই নীলা দৌড়ে গিয়ে তামিমের বুকের মধ্যে ঝাপিয়ে পরলো।।

তামিমঃ আরে তুমি এতো রাতে আমার রুমে কি করছ.! কেউ দেখে ফেললে তো পরে সমস্যা হতে পারে।। দেখি ছাড় আমায় এইভাবে জড়িয়ে ধরেছ কেন.? (নীলাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে)

নীলাঃ দেখলে দেখুক তাতে আমার কি আমি তোমাকে ছাড়বো না (বলেই তামিমকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো)।।

তামিমঃ নীলু এইসব কেমন পাগলামি করছ তুমি.?

নীলাঃ এইসব তোমার কাছে পাগলামি মনে হচ্ছে তাইনা.? আমার বিয়ে হলে কি তুমি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে.? (তামিমের দিকে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

তামিমঃ থাকতে না পারলেও থাকার চেষ্টা করবো।।

নীলাঃ কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।। প্লিজ তুমি কিছু একটা কর আমি রাফি ভাইয়াকে কিছুতেই বিয়ে করবো না।। উনার সাথে যদি আমার বিয়ে হয় তাহলে আমি নিজেকে

তামিমঃ এই চুপ কি উলটা পালটা কথা বলছ এইসব.? ভুলেও এইসব কথা আর মুখে আনবে না।।

নীলাঃ তাহলে আমাকে নিয়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাও যেখানে শুধু আমি আর তুমি থাকবো আর কেউ থাকবে না।।

তামিমঃ আমি এটা পারবো না নীলু।।

নীলাঃ কেন পারবে না.?

তামিমঃ কারণ (পুরোটা বলার আগেই কেউ একজন তামিমের রুমে এসে ঢুকলো)।।

তামিম ওই মানুষটাকে দেখে সাথে সাথে নীলাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে একটু দূরে গিয়ে দাড়ালো।। কারণ ওই মানুষটা হলো নীলার আম্মু।। নীলার আম্মুকে তামিমের রুমে দেখে তামিম আর নীলা দুজনেই কিছুটা চমকে উঠলো।। এদিকে নীলার আম্মু তাদের কাছে এসে কিছুক্ষণ তাদের দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন…

নীলার আম্মুঃ বাহ ভালোই তো প্রেম চলছে দুজনের মধ্যে।। কাল নীলার বিয়ে আর তুমি আজ তার সাথে ছিঃ ছিঃ।।

তামিমঃ চাচি আসলে (তামিমকে থামিয়ে)

নীলার আম্মুঃ চুপ কর তোমাকে তো আমি নিজের ছেলের মতো ভাবতাম আর তুমি আমার মেয়ের সাথে ছিঃ ছিঃ।।

তামিমঃ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলো।।

নীলাঃ আম্মু আমি উনাকে ভালোবাসি (নিচু গলায়)।।

নীলার আম্মুঃ চুপ ভুলেও এই কথাটা আর মুখে আনবি না নাহলে খুব খারাপ হবে।।

নীলাঃ তার আম্মুর কথায় সেও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।।

নীলার আম্মুঃ তুমি কি সত্যিই নীলাকে ভালোবাস.? (স্বাভাবিক গলায়)

তামিমঃ নিশ্চুপ।।

নীলার আম্মুঃ কি হলো কথা বল.? (হালকা রেগে)

তামিমঃ মাথা উপর নিচ করে হ্যাঁ সূচক জবাব দিল।।

তারপর নীলার আম্মু কিছুক্ষণ চুপ থেকে তামিমকে এমন একটা কথা বললেন যা শুনে তামিম অবাক হয়ে নীলার আম্মুর দিকে তাকালো আর সাথে সাথে কয়েক পা পিছিয়ে গেল।। তামিমের ভাবতেও অবাক লাগছে যে নীলার আম্মু তাকে এই কথাটা বলেছেন।। নীলার আম্মু তো তাকে ছেলের মতোই ভাবেন তাহলে উনি কীভাবে এই কথাটা বলতে পারলেন.? এই কথাটা বলতে কি উনার একটুও খারাপ লাগলো না.?
.
.
.
.
.
Loading…….

নীলার আম্মু তামিমকে এমন কি বলেছেন কেউ কি বলতে পারবেন.?
গতকাল গল্প দেইনি তাই আজকে পর্বটা বড় করে দিলাম আশা করি এতে আপনাদের গতকালের কষ্টটা একটু হলেও কমেছে।। আর কালকে একটা ধামাকা হতে চলেছে, সবাই ধামাকার জন্য অপেক্ষা করেন।। গল্পের মধ্যে ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আর গল্পটা কেমন হয়েছে অবশ্যই একটা গঠনমূলক কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন, হেপি রিডিং ?

~~ সবাই নিয়মিত নামায কায়েম করবেন আর অন্যদের নামাযের লাভ জানিয়ে দাওয়াত দিবেন প্লিজ ~~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here