ভিলেন অফ দিওয়ানাপান,পর্ব_০২_০৩_০৪_০৫_০৬

0
5656

ভিলেন অফ দিওয়ানাপান,পর্ব_০২_০৩_০৪_০৫_০৬
লেখিকা: তামান্না(আল রাইয়ান)
পর্ব_০২

—“নাজিয়া তুমি কাল থেকে নাহিলের সাথে কলেজে যাবে।
আব্বুর কথায় যেনো আমার মাথায় আসমান ভেঙ্গে পড়ল। এমনেই ঐ লোফার বেডার কারণে দিনের বারোটা বেজে আছে। সেখানে খাওয়ার সময়ও শান্তি নেই। আমি রাগে ফুসতেই আছি কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছি না। আব্বুকে যে ভীষণ ভয় পাই। এখন যদি আব্বুর কথা না শুনি তাহলে তো আরো এক ব্যাগ পরিমাণ বকা শুনতে হবে। এই ভেবে আমি নিজের মাথা নাড়ায়।

খাবার আর হজম হলো কই আব্বুর কথা শুনে গলায় খাবার আর নিচে যাচ্ছেই না। তাই অর্ধেক খেয়েই হাত ধুয়ে রুমে চলে এলাম। আসার সময় আম্মু জিগ্গেস করেছিল খাবার পুরা শেষ কেন করলাম না? কিন্তু এখন কি আর বলি!

—-“কিছু না আম্মু এমনেই। খাবার হজম হয়ে গেছে কথা শুনে।
লাস্টের কথাগুলি আস্তে বললাম। আম্মু ভ্রু কুঁচকে বলে।
—-“কি বললি?

—-“এ্যাহ হে ধরা খেয়ে গেলাম না তো। মনে মনে বলে।
নিজের মাথা ডানে বামে নেড়ে দৌড় দিয়ে রুমে এসে দরজা বেঁধে দেই।

বেডে গিয়ে বসলাম। না বের হতে পারছি,, না কিছু করতে পারছি। এই নাহিলের বাচ্চা তো বডিগার্ডের মত পিছে পড়ছে।
কোন জম্মের শাস্তি দিতাছে আল্লাহ জানে?

হঠাৎ ফোনে কল আসায় ধ্যান ভাঙ্গল। ফোন হাতে নিয়েই দেখতেই বিরক্তির চরম লেভেলে হাত দিলাম!
চোখজোড়া গরম করে ফোন শক্ত করে চেপে ধরে আছি। আর ফোন বেজেই যাচ্ছে।

—” শালা লোফার গলির মাল বস্তা। সকালেই শান্তি দিলি না এখন রাতেও কি শান্তি দিবি না? মন তো চাচ্ছে এই ফোনটাকেই ভেঙ্গে ফেলি। গলির মাল কুনাইকার! উগান্ডার মাল তুই। শালা ধরব না তোর ফোন।
বির বির করে ফোনটা বালিশের নিচে রেখে চেপে ধরে। বসে থাকলাম।

বেশ কিছুক্ষণ পর ভাবলাম ফোনটা একবার চেক করে দেখি। ফোন হাতে নিয়ে ওপেন করতে না করতেই হাজারটার মতো মেসেজের নোটিফিকেশন এসে ভর করল।
ভুলে একটা মেসেজ নোটিফিকেশন এ চাপ পড়ায়। মেসেজটা পড়লাম।
মেসেজটায় যা লিখা ছিল তা দেখেই এক ঢোক গিললাম।

—-“নাজু ডালিং আমার কল না ধরার ফল তোমায় ভোগতে হবে! আজ পর্যন্ত এই নাহিল ইয়াদিসের কল কেউ রিসিভ না করে থাকে নি সেখানে তুমি ! আমার কল ধরলে না। ডালিং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো চমক পাবে। ওয়েট উম্মামমমমহ।

তার এইটাইপ মেসেজ দেখে মনে মনে ভাবি।

—-“একটু বেশি হয়ে গেলো নাকি? সকালেও কল দেওয়ায় ধরলাম না আর এ…..খন ও ধরিনি। কোনো মুসিবত তো আসবে না…..
ঠুং………
বেলকনির দরজায় আওয়াজ হওয়ায় ভয় পেয়ে যায়। চুপটি করে কম্বল ঝাপিয়ে মুখের উপর নিয়ে নি।
লাইট অফ করে দিলাম। যাতে ঐ কারুশ লোফার গলির বস্তা আমাকে জাগনা না পাই !

রাত ১.০০টা বাজল।

ঘুমের ঘোরে ভাবতেছি যেনো কেউ আমায় দেখছে।
হ্যাঁ কেউ ত আমায় দেখছে কারো নিশ্বাস যেনো আমার মুখের উপর পড়ছে।
গরম নিশ্বাসটা যেনো আমার হার্টবিট তেজ করে দিচ্ছে।

ঘুমের ঘোরে কোলবালিশকে চেপে ধরি। আহা কি আরামটাই পাচ্ছিলাম।

নাজিয়াকে এমন করতে দেখে নাহিল মুচকি মুচকি হাসছে। সেও নাজিয়ার কোমর চেপে ধরে কাছে টেনে নে।
নাজিয়া পরম আবেশে ঘুমাতে থাকে।
—-“ইচ্ছে করছে তোর গালটায় কামড় বসিয়ে দেই।
কিন্তু ব্যর্থ ফলাফল পাবো। এখন যদি কামড় লাগায় তুই ঘুম থেকে জেগে যাবে ! সাথে সুন্দর গলার সুর শুনিয়ে বাকিদের ও জাগিয়ে দিবি তার চেয়ে ভালো তোকে এভাবে বুকে জড়িয়ে রাখি।
নাহিল ভেবে নাজিয়াকে সেভাবেই চেপে ধরে রাখে।
কিছুক্ষণের মাঝে নাহিলেরও চোখ বন্ধ হয়ে যায়।

ভোরবেলা হতেই নাহিল দেখল নাজিয়া এখনো ঘুম !
সে আস্তে করে তাকে শুয়ে দিয়ে কম্বল মুড়ে দিল। যাওয়ার আগে একটু পিছে ঘুরে দেখল নাজিয়ার ঘাড়ে তিল দেখা যাচ্ছে।

—-“আজব এবার কি করব? রাতে চুমু না দিয়ে থাকছি এখন তিল দেখে তো নিজেকেই সামলাতে পারছি না।
না না থাক আজকে না কিস ডে কিসের জন্যে আসে?
সেদিন তোকে দেখবো জান। এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে নিজেকে সামলিয়ে বেরিয়ে যায়।

বাহিরে কাউকে না দেখতে পেয়ে বুঝলো সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। এই সুযোগে নাহিল নিজের বাইক এর হেলমেট পড়ে গেটের অন্য সাইড দিয়ে নিজের বাসায় চলে যায়।

বাইক রেখে ভেতরে ঢুকতে না ঢুকতেই নিজের ড্যাডকে দেখে দাঁড়িয়ে যায়।
মাফুজ নায়ামান চৌধুরী দুই হাত পিছে রেখে গম্ভীরভাবে তাকিয়ে থাকল নাহিলের দিকে।

—-“আ….আব ড্যাড আসলে আমি একটু বাহিরে গিয়ে ছিলাম।

—-“কেনো গিয়ে ছিলে? আর গেলে একটু না পুরা রাত তুমি বাহিরে কাটিয়েছো এর মানে কি?
ড্যাডের গাম্ভীর্যতা দেখে বুঝতে বাকি রইলো না যে তিনি আমার রুমে গিয়ে ছিলেন।

নাহিল মাথার চুল নাড়তে নাড়তে বলে।

—-“আসলে ড্যাড ক্লাইন্টের সাথে মিটিং ছিল।

—-“আবারো মিথ্যে !?? ধমকির সুরে বলেন।

—-“ওকে ড্যাড আইম সরি। আমি নাজিয়াকে দেখতে গিয়েছিলাম আর……
বাকিটুকু বলার আগেই মাফুজ নিজের হাত দেখিয়ে চুপ করিয়ে দিলেন।
—-“আমিও চুপ হয়ে গেলাম।

আচমকা উনি এসেই আমায় জড়িয়ে ধরলেন। আমি ভাবতে থাকি।
—“হয়তো ড্যাড ভাবছে আমি আঙ্কেলের সাথে কাজ করছিলাম।

—-“বাহ্ আমার ছেলে কতো দায়িত্ববান হয়ে গেছে আমার বন্ধুর বাসায় গিয়ে তাদের কতো কেয়ার করল। আই প্রাউড অফ ইউ মাই সান।

আমি শুনে সাত আসমান থেকে বাঁচলাম ভেবেই খুশিতে নিজের মাথা নেড়ে রুমে চলে গেলাম।
মাফুজ নাহিলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ভাবেন।

—-“আমি জানি তুমি সারারাত নাজিয়ার সাথে ছিলে। আই হোপ ভালো সময় কাটিয়েছো। খারাপ কোনো কিছু তুমি করতেই পারো না আই নো দ্যাট।

তিনি সোফায় গিয়ে বসলেন।
রুমে এসে নাহিল জুতা খুলে ঠিকভাবে রেখে একটা টি-শার্ট গায়ে দিয়ে বেডে শুয়ে পড়ল।
গতকাল রাত দিন কি কি করল নাজিয়ার জন্যে ভাবতে থাকল।

—-“নাজু তুমি বুঝো না কেন? বড় তো হলে কিন্তু একবারও আমার হার্টের কথা ভাবলে না।
আমি তোমায় ইচ্ছে করে মারি না। তোমায় মারলে আমি তোমার চেয়েও বেশি কষ্ট পাই। তোমায় থাপ্পড় মারার পর নিজের গালে কয়টা মেরেছি জানা নেই।
তবে যাই হোক গতকাল আমার যদি আসতে লেইট হতো তাহলে না জানে তোমার সাথে কি হয়ে যেতো।

ফ্লাশব্যাক?

—-“নাজু বেবি আজ খুব মজা করে ডান্স করব কেমন!
নাজিয়ার বান্ধবী তৃশা বলে।
তৃশার কথা শুনে নাজিয়া কিছুটা লজ্জা মাখা ফেস করে পেলে।
তার লজ্জিত ফেস দেখে সবাই মুচকি হেসে হাসিঠাট্টা করতে শুরু করে।

তৃশা তার বফ খায়েরকে নিয়ে ডান্স স্টেজে গিয়ে কাপল ডান্স করতে থাকে।
সে নাজিয়াকে বসতে বলে ইন্জয় করতে।
তারা যেতেই খায়ের এর এক ফ্রেন্ড অনেকক্ষণ নাজিয়াকে দেখতে থাকে। পুরো বডি যেনো সে নিজের চোখে স্কেন করছিল।
নাজিয়া দেখে বসা থেকে উঠে অন্য সাইডে যায় যেখানে মানুষ বেশ ভীড় করে বসে আছে। সে সাইডেই বসল।

ছেলেটাও উঠে ঠিক নাজিয়ার পিছে বসল। নাজিয়া একবার সেই ছেলেটার দিকে তাকাতেই দেখল সে সেখানে নেই। চলে গেছে ভেবেই সে শান্তির নিশ্বাস নিল।

সবাই কে ইন্জয় করতে দেখে সে আর কি করবে ফোন বের করে হোর্টসপট অন করে এফবি দেখতে লাগে।
ছেলেটা একটা স্পেইন সার্ভওয়েটারকে ডাকে।

—-“একটা স্ফট জুস আন।
ওয়েটার নিজের মাথা নাড়িয়ে হ্যা জানায়। সে একটা গ্লাসে ম্যানগো জুস ঢেলে ছেলেটার কাছে আনে। ছেলেটা দেখে বাঁকা হেসে ওয়েটারকে ৫০০টাকা ধরিয়ে দিল।
ওয়েটারের সামনে একটা ঘুমের ওষুধ গ্লাসে ঢেলে নেড়ে নিল। সে গ্লাসটা তাকে দিয়ে বলে।

—-“ওই ব্লেক কালার ড্রেস পরা মেয়ে কে দে আর নিজ থেকে দিচ্ছিস বলবি কোনো টাকা লাগবে না।
ওয়েটার মুচকি হেসে গ্লাসটা নিয়ে নাজিয়ার কাছে আসে।

—-“ম্যাম…..
কারো ডাকে নাজিয়া সে দিকে তাকায়। ওয়েটারকে জুস সার্ভ করতে দেখে সেও নিল টাকা দিতে চাইলে ওয়েটার ফ্রি অফার বলে চলে যায়।
নাজিয়াও দুই চার না ভেবে গ্লাসটা নিয়ে এক চুমুক মুখে দিবে তার আগেই কে যেনো তার হাত চেপে ধরে গ্লাসটা ছুঁ মেরে নিয়ে ফ্লোরে ফেলে দে।

আচমকা এমন হওয়ায় গান ডান্স সব বন্ধ হয়ে যায়। সবাই হা করে সেদিকে তাকায়।
নাহিলের রাগী লুক আর এতো জোরে হাত চেপে ধরা দেখেই নাজিয়া বুঝতে পারল তার সাথে আজ বিপদের সংক্রমণ হবে।
নাহিল তাকে কিছু বলতে না দিয়ে টেনে টেনে বার করে গাড়ির সামনে এনেই জোরে গাড়ির দরজায় ধাক্কা দে। তার বাহুডোরা ধরেই সে তার গালে চড় বসিয়ে দিল।

কিন্তু এতে নাহিল কোনো পাওা না দিয়ে নাজিয়াকে বাসায় পৌঁছে অফিসে যাওয়ার আগে বারে আসে।
যারা কলেজ এর স্টুডেন্টস তারা কেউই নাহিলকে ঠিকভাবে চিনেনা সে আসলে কে?
নাহিল বাইক নিয়ে বারে এসে ভেতরে গিয়ে ম্যানেজারকে ডাক দিয়ে নিজের আইডি কার্ড দেখায়।
আইডি কার্ড দেখতেই ম্যানেজার চরম অবাক হয়। এতো বড় বিজনেস ম্যান তিনি তো খুশিতে উতলে পড়েন কিন্তু নাহিল ধমকের সুরে বলে।

—-“এই বারটা সাধারণ ক্লাইন্ট ক্লাব বানিয়ে ফেলেন যাতে সকলের উপকার হোক যদি কারো ক্ষতি হয় তাহলে আপনার চাকরী আর এই বার দুইটাই হারাবেন।
এখনই বার খালি করেন স্টুডেন্টসকে বাসায় চলে যেতে বলেন। না হলে পুলিশ আনতে আমার একমিনিটও লাগবে না।
ম্যানেজার ভয়ে নিজের মাথা নেড়ে পুরা বার খালি করে দে। নাহিল সেখানেই বসে একটা স্পট ড্রিংক নিয়ে খেতে থাকে।
তৃশার বফ এর বন্ধু যে কিনা নাজিয়াকে কুনজর দিয়ে ছিল সে ম্যানেজারের সাথে তর্কে যায়।

—-“দেখেন এটা কেমন কথা? আপনি আমাদের বের করছেন আর উনি যে শান্তি করে ড্রিংক করতেছে উনাকে কেন বের করছেন না? উনি তো একটা মেয়েকে জোর করেও নিয়ে গেল।
ম্যানেজার আস্তে করে বলে।
—-“দেখেন উনার ব্যাপারে কিছু বলিয়েন না। না হলে আমাদের চাকরী যাবে।

—-“বাহ্ তার মানে উনি দোষ করবেন উনার শাস্তি হবে না আর আমরা দোষ না করলেও শাস্তি পাবো! এই বদ ছেলেকে তো আমিই দেখতেছি।
বলেই সে নিজের কলার ঠিক করে নাহিলের সামনে এসে কুকুরের মত বকতে শুরু করে।
নাহিল কিছুই পাওা দিল না কিন্তু এরই মাঝে তার মনে পড়ে গেল এই ছেলেটা সেই যে কিনা নাজিয়ার গ্লাসে ওষুধ মিক্স করে ছিল। তৎক্ষণাৎ তার চোখজোড়া রাগে লাল হয়ে যায়। সে গ্লাসটা শক্ত করে চেপে ধরে। এতোটা চাপ লাগায় গ্লাস তার হাতেই ভেঙ্গে যায়। ছেলেটা এ দৃশ্য দেখে ভয় পেয়ে যায়। নাহিল জট করে গ্লাসের ভাঙ্গা টুকরা ছেলেটার হাতে লাগিয়ে দে। এতে ছেলেটার হাত কেটে যায়।
নাহিল রক্তমাখা হাতে ছেলেটার মুখ চেপে ধরে বলে।

—-“দোস্ত তোর সাথে পার্টি করতে মন চাচ্ছে। চল আমার সাথে……ছেলেটা নাহিলের রাগান্বিত নজর দেখে খুব ভয় পেতে থাকে। নাহিল ফোন বের করে গার্ডসকে কল করে ছেলেটাকে ধরতে বলে।গার্ডস তখনই চলে আসে তারা ছেলেটাকে ধরে নাহিলের গোডাউনে নিয়ে যায়।

দরজা নক করাতে নাহিল বেড থেকে উঠে দরজা খুলতেই দেখে রহিম চাচা দাঁড়িয়ে আছেন।
সে মুচকি হেসে আসতে বলে।
—-“দে বাবা তোর হাতের ব্যান্ডেজ বদলে দেই। গতকালের ব্যান্ডেজ পুষে গেছে এখন নতুন লাগিয়ে দেই।

নাহিল প্রশান্তির হাসি দিয়ে বলে।

—-“এগুলো তো কিছুই না চাচু নাজিয়ার জন্যে হাজার ব্যথা পেতে রাজি। তার সাথে থাকলে ব্যথা কিভাবে মিটে যায় নিজেই বুঝতে পারি না।

—-“অনেক ভালোবাসো নাজিয়া মামুনি কে?
নাহিল মুচকি হেসে বলে।

—-“চাচু শুধু ভালোবাসি না তার ভালোবাসায় ভিলেনও হতে পারি।

—-“যেমন কি বাবা?

—-“#ভিলেন_অফ_দিওয়ানাপান। ভিলেনি লুক করে ডেভিলমার্কা স্মাইল দিল।

…………চলবে……..

(ভুলএুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

পর্ব_০৩

—“স্যার প্লিজ আমায় ছেড়ে দেন আমি সত্যিই আপনার সম্পর্কে জানতাম না। জানলে কখনোই আপনার মতো ক্ষমতাশালী ব্যক্তির মুখ লাগতাম না।
নাহিল স্বাভাবিক পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে।
তার ডান হাতের গার্ন দিয়ে কপালে নাড়ছে।
ছেলেটা ভয়ে হাটুগেড়ে বসে আছে।

—-“তোকে ছেড়ে দিতাম কিন্তু তুই একটা না দুই দুইটা ভুল করেছিস। ফাস্ট তো আমার মুখ লাগছিসই সেকেন্ড এ আমার কলিজার ড্রিংক এ ওষুধ মিশিয়েছিস।
নাহিলের শান্ত সুরে বলা কথাগুলো শুনে ছেলেটা ঘেমে একাকার হয়ে যায়।
তার পরক্ষণেই মনে পড়ে যায়। সে বারে নাজিয়াকে ঘুমের ওষুধ দিতে চেয়েছিল।
সে হাতজোর করে বলে।
—-“স্যার জীবনে এটাই সবচেয়ে বড় ভুল করেছি আ….আর করব না এমনকি সব মেয়েদের বোনের নজর দেখবো….
তার শেষ কথায় কড়া নজরে তাকায় নাহিল।
সে উঠে ছেলেটার গাল চেপে ধরে বলে।

—-“এখন তো তুই থার্ড ভুল করেছিস! তুই ফাস্ট সেকেন্ড ছাড়াও আমার কলিজাকে তোর এই….দুইহাত দিয়ে ছেলেটার চোখের পাপড়ি উপড়ে করে ধরে। তোর এই বাজে নজর দিয়ে দেখেছিস তোর তো ক্ষমা নাই রে ভাই তোর ক্ষমা নেই।
গার্ডসসসস….
ছেলেটা কেঁপে উঠে।

—-“ইয়েস স্যার ! স্যালুট করে নাহিলের সামনে দাঁড়াল।

নাহিল ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে।

—-“আমার স্পেশাল ব্যাগটা আন। যেখানে আমার আসল রুপের সামগ্রী লুকিয়ে আছে।
ডেভিল স্মাইল দিয়ে ছেলেটার সামনে টেবিলে হাত রেখে হেলান দিল।

ছেলেটা বুঝতে পারছে তার সাথে কি ঘটতে চলেছে!
এখন যে তার হাতজোড় করলেও কিছু হবে না তা সে মেনে নিয়েছে।
গার্ডস ব্যাগটা এনে টেবিলের উপর রাখে। নাহিল ব্যাগটা খুলে হাতে প্লাস্টিকের গ্লাভস পড়ে নিল।

সে গার্ডের দিকে তাকিয়ে ইশারা করে টেবিলে রাখা ছোট কালো কাপড়ের টুকরায়। গার্ড মাথা নেড়ে কাপড়টা নিয়ে ছেলেটার চোখে পড়িয়ে দে।
ছেলেটা তাও কান্নার সুরে আকুতি মিনুতি করতেই থাকে।
কিন্তু নাহিল এতে কোনো পাওা দিল না।

সে তার কাছে আসে ধারালো প্লাস নিয়ে সেটা নিয়ে র্বাঁকা হেসে গার্ডকে বলে ছেলেটাকে শক্ত করে চেপে ধরতে।
তারা চেপে ধরে ছেলেটা ছড়াছড়ি করতে থাকে। কিন্তু লাভ হলো না নাহিল ছেলের বাঁ হাতের বুড়া আঙুল কেটে ফেলল।
গার্ড তখনই তার মুখ চেপে ধরে ছেলেটা ব্যথায় চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকার রুমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে রইল। নাহিল হাতের গ্লাভস রেখে ফ্রেশ হয়ে নে। নাজিয়ার বাসার নিচে চলে আসে গাড়ি নিয়ে।

আরভী খান নাহিল কে দেখে মুচকি হেসে ভেতরে আসতে বলেন। কিন্তু আজ তার কোচিং ক্লাসের শেষ দিন বলে নাজিয়াকে তাড়াতাড়ি আসতে বলল।
আরভী খানও দেরি করলেন না নাজিয়াকে ডাক দিলেন।

—-“নাজিয়া…..নাজিয়া মা…..

আমি চুল খোঁপা করে হিজাব পড়লাম। আব্বুর ডাক শুনে ব্যাগ কাঁধে জড়িয়ে নিচে এলাম। হাসি খুশি থাকা মনে হয় আমার কপালে লেখাই নেই!
সকাল সকাল পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গলেও কলেজ যেতে লোফারের মুখ দেখা লাগবে। শালা লোফার গলির মাল।
আমার সরু নয়নে রাগী লুক দেখে নাহিল পাওা না দিয়ে মুচকি হাসছে। এতে তো আরো রাগে জ্বলছি কিন্তু কি করবো এই লোফার বস্তার সাথে তো পেরে উঠব না। ভেবে আমি চোখ ঘুরিয়ে নিলাম।
—“আমার বেব…….মনের মধ্যে নাহিল বলে।

আব্বু আম্মুর থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ির কাছে এসে পিছের সিটের জন্যে দরজা খুলব ওমনিই নাহিল সে দরজায় গা ঠেসে দাঁড়িয়ে যায়।
আমি ভ্রু কুঁচকে বলি।

—-“কি সমস্যা? আটঁকাছেন কেন?

—-“আমি কারো ড্রাইভার না ফন সিটে এসে বসো।

—-“আপনি ড্রাইভারই কোজ আব্বু বলেছে সবসময় আপনার সাথে কলেজে যেতে।

—-“হুম জানি আমিই বলেছি আঙ্কেলকে এমন বলতে।
এই কথা শুনে রাগে মন চাচ্ছে উনার গালে চড় লাগিয়ে দেই। কিন্তু লাগালে আমার গালে আরো লাগবে ভেবে দাঁতে দাঁত চেপে বলি।

—-“কেন বলছেন? কি চাই আপনার?

—-“তোমাকে।
হঠাৎ উনার মুখে আমার চাই শুনে চোখ গোল করে তাকায়। উনি গলা ঝেড়ে নেড়েচেড়ে বলে।

—-“তোর মত বলদনী কে কে চাইবে? সারাক্ষণ তো আবলামি পারিস ভালো কাজ জীবনেও করতে পারছিস কিনা সন্দেহ।
আমি কোমরে হাত রেখে উনার দিকে হয়ে বলি।

—-“এক্সকিউজ মি আমি সবসময় ভালো কামই করি আপনার মতো এরাগেরা পাবলিক না যে কিনা ক্লাবে গিয়ে মিটিং মারে। আরো আমি করলে দোষ!
নাহিল বুঝছে এখন কথা বাড়ালে নাজিয়া কথা কোন দিক থেকে কোন দিকে টানবে। সে জট করে নাজিয়ার কোমর চেপে ধরে কাছে নিয়ে আসে।

নাহিল ভাইয়ার এহেন কান্ডে ভয় পেয়ে যায়। উনার এতো কাছে জীবনেও আসি নি। সারাক্ষণ তো আসলেই গালে চড় নইতো কানের নিচে লাগাবো এই সেই আজাইরা বকানি দিতো আজ ফাস্ট টাইম এভাবে আনলো কেন? কোনো অসভ্যতামি করতে চাইতেছে না তো! না না ভরসা নাই ছাড়া পাওয়া লাগবে।
এই সেই চার-পাঁচ ভেবে আমি উনার হাত সরাতে লাগি। কিন্তু এতো শক্ত করে ধরছে যে মনে হচ্ছে কোনো রাখাল ছাগলকে চেপে ধরল।

এবার মুখ ফুটে বলেই দেই।
—-“রাস্তার মধ্যে এসব কি ধরনের অসভ্যতামি করছেন?

—-“কিসের রাস্তা কিসের অসভ্যতামি! আমি তো এখনো গাড়ি চালিয়ে রাস্তায়ই গেলাম না। আর অসভ্যতামি কি জানো নাকি? মাএ তো কোমর টেনে কাছে চেপে ধরছি এখন যদি আমার পাশে ফন সিটে না বসো তাহলে…….উনি নেশাভরা চাহনি নিয়ে আমার ঠোঁটজোড়া দেখতে লাগেন।

উনার কথায় কিছু হয়ে যাবে এই ভয়ে চট করে হ্যাঁ বলে দেই। উনিও চট করে ছেড়ে দিলেন কিন্তু ছাড়ার পর উনি বললেন।

—-“কি ভাবছিলি তোকে কিস করব? তোর মতো আবুলকে কিস করব হাহ। বাঁকা হেসে নাহিল গাড়ির মধ্যে বসে যায়।
কেনো যেনো খারাপ লাগল নাহিল ভাইয়ের কথায়।
আমাকে পছন্দও করেন না কিন্তু সবসময় এইভাবে কাছে আছেন যেটায় ফিল হয় উনি আমায় ভালোবাসেন!
মনের মধ্যে ভেবে উনার মুখের দিকে তাকায়।
এই নিষ্পাপ চেহারার মধ্যে না জানি কত রহস্য লুকিয়ে আছে! কখনো উনার মুখে কাউকে ভালোবাসতে শুনেনি জানিনা উনি কাউকে সত্যি পছন্দ করেন নাকি না!

নাহিল মুচকি হেসে গাড়ি চালানো অবস্থায় বলে।

—-“এভাবে কি দেখছিস আমি সুন্দর জানি এই বলে তাকায় থেকে ক্রাশ খেয়ে বিয়ে করবি?

আমি রেগে চেঁচিয়ে বলি।
—-“এ্যাহ ঠেঁকা পড়েনি আপনার মতো ডেভিল বেডাকে বিয়ে করব।

—-“আমারও সাধে আসে নি তোকে বিয়ে করব! আমার একজন পছন্দের লাভার সে থাকতে তোকে কেন বিয়ে করবো?

—-“ভালা হয়ছে দূরে গিয়ে ফুটপাতে বিয়ে করেন উহ। বলেই আমি জানালার বাহিরে মুখ করে বাহিরের প্রকৃতি দেখতে থাকি।

নাহিল বুঝলো নাজিয়ার জ্বেলাস ফিলিং হচ্ছে। এই ভেবে সে আড়চোখে নাজিয়ার দিকে তাকায়।
—-“আমার ডেভিলটাইপ লাভই তোমায় আমাকে নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে কলিজা।

কলেজে এসে গাড়ি পার্ক করল।
দুইজনই নিজেদের ক্লাসে ঢুকে পড়ল।

—-“আচ্ছা নাজু তোর কাছে কি নাহিলের নাম্বার হবে?
নিহা আচমকা নাহিলের ফোন নাম্বার চাইতেছে ভেবে যেনো ইচ্ছে করছে বেডির নাক ফাটিয়ে দেই।
আমি সরু নয়নে বলি।

—-“কেন তোর কি কাম?

—-“উহ চেঁতিস কেন বেডি? তুই যখন আমার থেকে রেসাল এর নাম্বার চাইছিস তখন কি আমি দেই নি? দিসিলাম আর তুই আমার বেস্টু হয়ে একটু সেটআপ ও করে দিতাছিস না।

আমি শুনে চোখ পাকিয়ে বলি।
—-“ওই ওই কি বলিস? কিসের কার সেটআপ !

—-“লে বেডি কিছু বুঝে না। আরে তোর আব্বুর বন্ধুর ছেলে নাহিল তোর ভাই আমি উনার বউ তোর ভাবি।

—-“চুপ কর কুওি তোরে আমি ভাবি বানাতে যামু কেন পাগল কুওাই কামড়াই নি।

—-“ওহ তোর জন্যে রেসাল আছে এজন্যই জ্বলবে দেখে আমারটা সহ্য হবে না।

আমি তাকে মাঝখানে থামিয়ে বলি—“রেসাল রেসাল কেন করছিস? আমি কি বলেছি ওই বেডার লগে রিলেশন করব? হুদাই পাম জমাইতে আছিস!

নিহা হেসে বলে—“রেসাল তোর কাছেই আসতেছে ঐ দেখ।

আমি শুনে চট করে পিছে থাকায়। রেসাল হলো ভার্সিটির সেকেন্ড ক্রাশবয়। ক্রাশ বললে ভুল হবে সে আগে ছিল নাহিল ভাইয়া আসার পর থেকে সব মেয়েদের নজর শুধু নাহিল ভাইয়ের উপর চলে আসে। রেসালের উপর তাও একটু আধটু মেয়েদের নজর আছেই।
সে এসেই আমার আর নিহা পাশে চেয়ার টেনে বসে।
আমি চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিলাম যদি নাহিল ভাই দেখে ফেলে এখানেই হাঙ্গামা শুরু করতে পারে।

আমাকে এদিক ওদিক তাকাতে দেখে রেসাল বলে।

—-“হেই মিস কি খুঁজছো?

ধ্যান ফিরে তার দিকে তাকিয়ে বলি।

—-“নাহ কিছু না। আহ আব নিহা তোমরা কথা বলো আমি অাসছি।
কেনো জানি রেসালের সাথে বসে থাকতে আমার অস্বস্তিকর লাগছে। আমি উঠে চলে যেতে লাগলেই রেসাল আমার হাত ধরে ফেলে।

আমি পিছে ঘুরে বলি।
—-“কি হয়ছে হাত কেন ধরলেন?
রেসাল তখনই ছেড়ে দিল।
—-“নাহ মানে আপনি আমি আসতে না আসতেই চলে যাচ্ছেন তাই থামিয়ে……

রেগে জোরে শ্বাস ফেলে বলি।

—-“এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনার থেকে আজাইরা নাক ঢুকাতে হচ্ছে না।
যতসব বলে আমি রেসালের সামনে থেকে সরে আসলে সে জোরে সবার সামনে বলে।

—-“নাজিয়া একটা কথা শুনে যাও।
আমি থেমে পিছে ঘাড় ঘুরিয়ে বলি।
—-“কি কথা?

—-“তোমার লিপস আর গেটআপ খুব হট দেখাছে।

তার কথায় রাগ চড়ে বসল নিহা তো ভাবতেই পারছে না রেসাল কিনা কোনো মেয়ের সাথে এভাবে পাবলিক প্লেসে টিজ করবে।
আমি এসেই তার গালে চড় মেরে দিলাম।সে গালে হাত দিয়ে রাগান্বিত চোখে আমার দিকে তাকায়।

—“এটাই হলো তোর জন্যে উচিৎ শিক্ষা বালছাল আজাইরা গুন্ডামিখোড়।
রেসাল কিছু বলল না আমিও আর থাকলাম না চলে গেলাম ক্যান্টিন থেকে ক্লাসের মধ্যে।

—-“তোকে তো আমি দেখে নেবো মিস নাজিয়া। জাস্ট ওয়েট।
সেও তার বন্ধুদের সাথে বেরিয়ে যায়।
নাহিল ক্যান্টিনে আসলে তার বন্ধু সিয়াম পিঠে থাপ্পর মেরে বলে।
—-“কি রে দোস্ত কই ছিলি এতোক্ষণ?

—-“কিছু না রে নাজিয়াকে দেখতে গেছিলাম।

—-“ওহ আই থিংক এখন ঠিক আছে আজ নাজিয়াকে সেই লাগতেছিল।
সে চোখ গরম করে সিয়ামের দিকে তাকায়।
সিয়াম হালকা কেশে বলে—“আরে ভাবির নজরে বলছি বেশি কিছু না। বাই দ্যা ওয়ে ভাবিকে প্রপোজ কবে করবি?
এখানে তো কাপলস এর কমতি নেই যেই সুন্দর সুন্দর দিন যাইতাছে তুই কি কিছু দিছিস নাজিয়াকে?

—-“নাহ্।
স্বাভাবিকভাবে বলে আমি চেয়ার টেনে সিয়ামের সাথে টিফিন খেতে বসি।
সিয়াম নিজের কপাল থাপ্পড় মেরে বলে।
—-“হায় রে কি আনরোমান্টিক রে তুই নাজিয়া ভাবি তাই তো তোরে পছন্দ করে নাহ।

—-“হু সে করে কিন্তু ফিল করতে পারে না। আজকাল যুগের গিফ্টসিফ্ট দিয়ে গফ বানিয়ে ফেলা এসব ভালোবাসা না। জানি সব মেয়েরই ইচ্ছে থাকে তার প্রিয়জন থেকে স্পেশাল ডে গুলোতে কিছু না কিছু পাওয়ার। তবে আমি যে নাজিয়াকে কিছু দিবো না তাও কিন্তু না ?

—-“তার মানে তুই দিবি? কবে দিবি!
—-“সঠিক সময়ে। এখন ভ্যালেন্টাইন ডে আসতেছে সেই দিনের অপেক্ষায় আছি। আমি চাই না নাজিয়াকে নিজের আসল রুপ দেখাতে আমি চাই সে আমার মনোভাব যেন বুঝে। আমার হিংস্র দুনিয়া সম্পর্কে আমি কখনো তাকে বলতে চাই না।

—-“Best of luck bro…
এই কিছুক্ষণ নাহিল সিয়ামের সাথে কথাবার্তা বলছে তখন এক কল আসে।
কল হাতে নিয়ে দেখল।
নাহিল কল কানে ধরল।

—-“হ্যালো?
—-“মৃত্যুর পথ কেমন চলছে?
—-“কে বলছেন?
—-“তোর সুখের পথে বিপদ।
কল কেটে দিল নাহিল হতদন্ত হয়ে গেল সে রিটার্ন কল করে কল আর ধরে না অপর সাইডের মানুষটা।
কে হতে পারে?

..চলবে…?

পর্ব_০৪

ক্লাস শেষ করে করে গেইটের কাছে দাঁড়িয়ে আছি নিহার সাথে। নাহিল ভাইয়া আগেই ধমক দিয়ে গেলো কারো সাথে বাসায় যাবে না সোজা গাড়ি পাঠালে সেই গাড়ি করে বাসায় যাবে।
—-“উহ ঠেঁকা লাগছে উনার কথা শুনবো আমি তো আমিই। শুনবো কেন গলির মালের কথা!
আমারটা আমি বিরবিরিয়ে কথা বলছি। নিহা আমার বিরবিরানি দেখে হালকা নাড়া দেই।

—-“কি রে বফ ছাড়াই দেখি হাসতেছিস! কি তলে টেম্পু চালাছিস?

—-“আমার না হাত চুলকাচ্ছে ইচ্ছে করছে কারো গালে কষে লাগাইয়া দেই।

নিহা শুকনো ঢোক গিলে আমতা আমতা করতে লাগে।
—-“আরে আমি বলছিলাম কি আমার না যেতে হবে।

—-“তো যাহ দাঁড়িয়ে আছিস কেন ভাগ ।
আমি নিহাকে তাড়িয়ে দিলাম আর সেখানেই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম।
কিছুক্ষণের মধ্যে একটি BMW গাড়ি চলে আছে। এতো হাই লেভেলের গাড়ি তাও আমার জন্যে।
নিজের চোখে বিশ্বাস হচ্ছে না।

—-“এটা কি আদৌও স্বপ্ন! যে BMW কারে চড়ার জন্যে আমি আব্বুর কাছে আবদার করতাম সেই কার আমার চোখের সামনে এসে থামল।
ভার্সিটির কয়েকজন ছেলেমেয়ে দূর থেকে হা করে তাকিয়ে বলাবলি করছে।
এসব দেখে তো নিজের মনেই লাড্ডু ফুটছে। আমি গাড়িতে হেলান দিয়ে তাড়াতাড়ি ফোন বের করে একটা সেলফি তুললাম।
ছবিটা দেখে নিজেই বলি।
—-“আহ ফাস্ট টাইম নাহিল ভাইয়া একটা ভালো কাম করল। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার উনি আমার জন্যে কেন BMW কার পাঠাইল আর কিনলোই বা কবে?
সবচেয়ে বড় কথা তো এটা যে উনিই বা জানলো কি করে আমার BMW কার পছন্দের কার!
যাহ পরে জানমু নে।

গাড়িতে উঠে বসলাম। কিন্তু ড্রাইভারের কথা শুনে কিছুটা সন্দেহ হলো।

—-“হেই মামা আপনে কেডা হুমম?
কথা শুনে তো নাহিল ভাইয়ার মতো লাগছে। উনার বসার কথাটা কেনো যেনো সন্দেহের লাগে তাই এমনটা জিগ্গেস করে বসি।

—-“তো আমিই তো হবো চড় খাওয়ার আগে ফন সিটে এসে বস।
নাহিল ভাইয়া এতোক্ষণ কারের মধ্যে বসা ছিল আর আমি কিনা উনার সামনে বাহিরে কি কি কান্ড করলাম।এক ঢোক মেরে পিছের সিট থেকে সামনের সিটে এসে বসলাম।
নাহিল ভাইয়া চোখ গরম করে আমার দিকে তাকায়।

—-“তোকে না বলছি বেশি সাজগুজ করে ভার্সিটিতে আসবি না তাহলে কেন এতো সাজছিস?
উনার কথায় মনের মধ্যে ভয় নাড়া দিল কোনো নাহিল ভাই কি রেসালের কথা জানছে?
আমি তো প্রতিকার করেছি তাহলে চড় খাওয়ার তো প্রশ্নই আছে না!

—-“কি বলছিস না কেন?

—-“আব না আজ সবাই একটু আধটু সাজ করেছে আমিও তাই!

—-“তারা যদি সাগরে ডুব মারে তুই ও কি তাদের মতো ডুব মারবি?
নাহিল ভাইয়ার কড়া কথাগুলো আমার গা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে। মন চাচ্ছে মুখ খুলে বলেই দেই। আমার লাইফ আমার ইচ্ছা আপনি কে? উহ কতই না ভালো লাগতো তখন! যাহ তাও বলি কি করে ! বালডা তো গলির এক নাম্বারের ক্রাশমার্কা বাঁশ।
নিজেই সব কথা ভেবে যাচ্ছি।

—-“এই মেয়ে চুপ করবি!

আমি ভ্রু বাঁকিয়ে বলি।
—-“আজিব আমি তো চুপই আছি। কথা বলতেছি কই সব কথা তো আপনিই বলতেছেন।

—-“বাহ্ মিথ্যে বলাও শিখে গেছিস। মনের মধ্যে যতগুলা গালি দিচ্ছিস ততগুলা ব্যথা আমার জিহ্বা সহ্য করতেছে বুঝছিস আবুল টাইপ মেয়ে।

—-“ওওও হ্যালো আপনাকে কবে গালাইছি? গালাইছি তো গালাইছি ভালো হয়ছে তোর জিহ্ব ফেটে মরুক। মনের মধ্যে কথাটা বলে বিজয় এর প্রশান্তি পেলাম।

—-“মুরব্বিদের একটা কথা আছে “সামনে না বলিলেও মনে মনে গালাগালি করলে সামনের জনের জিহ্বা ব্যথা সহ্য করে।”

আমি উনার কথাটা আগেও আম্মুর থেকে শুনেছি। তাই নিজেই জানি।
চুপ করে বাহিরের দিকে তাকাইলাম।
নাহিল বাঁকা হেসে গাড়ি টান মেরে বাসায় চলে আসে।

নাজিয়া গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে চলে যায়।
নাহিল সানগ্লাস পড়ে গাড়ি টান মেরে গোডাউনে যায়।
গোডাউনে এসেই তার গার্ডস তাকে ভেতরের সিক্রেট রুমে নিয়ে যায়।
সে নিজের ডার্ক সিক্রেট সিকিউরিটি রুমে এসে লিডার চেয়ারে বসল।
তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকজন ক্লাইন্ট বিদেশি তারা।
USA থেকে এসেছে। কথাটা জানায় তার পিএ মিস কাজল।
সে অফিসে থেকে লেপটপের মাধ্যমে কানেক্ট হলো নাহিলের সাথে। কাজল প্রসেসর এর মাধ্যমে লাইটস অন করে তার প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠল।

—-“হুম বলো কে কি অফার দিয়েছে?
—-“স্যার ক্লাইন্টদের মধ্যে রেসাল নামক এক বিজনেস ডিলার আপনার সাথে ড্রাক ডিল করাতে চাচ্ছে।
সে আপনার সামনের সিটেই বসে আছে।
নাহিল ভ্রু কুঁচকে তাকায় কিন্তু কিছু বলে না। নেক্সট?
কাজল নাহিলের কথায় এক এক করে সব ক্লাইন্টদের বিভিন্ন অফারের কথা বলে।
খারাপ -ভালো সব অফারই তারা দিল।
নাহিল তার সামনে থাকা একটা সবুজ কালারের গোল ছোট বল হাতে নিয়ে দুই হাতে খেলার মতো নাড়তে থাকে।

নাহিল ভেবে রেসালের দিকে একবার তাকিয়ে নে।
সে বাকিদের কে বলে।
—-“আপনাদের অফার রিজেক্টেড আর মিস্টার রেসাল আপনার অফার একসেপ্টেড হলো।

রেসাল কথাটা শুনে খুশিতে আত্নহারা হয়ে যায়। সে ভাবে নি নাহিল ইয়াদিস যে কিনা সততার পথে চলে সে কিনা তার ড্রাক নামক বিষপানের প্রস্তাবে রাজি হবে।
সব ক্লাইন্টস হতাশ হয়ে মন খারাপ করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
রেসাল নিজের কোর্ট ঠিক করে নাহিলের পাশে চেয়ার টেনে বসে। সে তার হাত নাহিলের দিকে এগিয়ে দেই।

—-“স্যার হ্যান্ডসিপ করতে তো পারবেন তাই না?
নাহিল বাঁকা হেসে তার পকেট থেকে গ্লাভস হাতে পড়ে তার সাথে হাত মিলাই।
রেসাল সরু নয়নে তার দিকে তাকিয়ে বলে।

—-“হঠাৎ গ্লাভস পড়লেন যে?
—-“ওহ এটা আমার অভ্যাস নিজেকে ক্লিন রাখা। এমনেই করোনা কন্ডিশন সেখানে কার না কার মধ্যে করোনা আছে তা কি বলা যায়?
নাহিল হাত ছেড়ে দিয়ে বল নিয়ে খেলতে খেলতে বলে।
রেসালের কাছে তার কাজটা ইনস্লার্টের মতো লাগল। সে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে।

—-“ওকে দ্যাটস ফাইনাল উই আর বিজনেস পার্টনার।
নাহিল গম্ভীর কন্ঠে হুমম। বলে মাথা নাড়িয়ে হ্যা জানায়।
রেসাল রুম থেকে বেরিয়ে যায়। সে বেরুতেই নাহিল নিজের চোখ তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ডেভিল স্মাইল দিল।

রেসাল বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে লেপটপ খুলে একটা ছবি আনলো।
ছবিটা ছিল নাজিয়ার। যখন নাজিয়া ক্যান্টিনে গল্প করছিল নিহার সাথে তখনই দূর থেকে একটা ছবি তুলে ফোনে আবদ্ধ করে নে। সেই ছবি লেপটপে ট্রান্সফার করে আনে।

—-“চড় এর কথা ভুলেনি মিস নাজিয়া। আমি সব জানি তোর ব্যাপারে। তাই তো নাহিল এর সাথে ডিল করলাম। এই ডিল সাধারণ ডিল নয় মিস্টার নাহিল। নাজিয়াকে নিজের প্রেমের জালে ফাঁসানোর জন্যে আমার তৈরিকৃত ডিল। নাহিল তুই না একবার বিদেশ যাহ। তার পর আমার রাস্তা ক্লিয়ার হবে ফুসসসস।
হাহাহাহা
রেসাল গ্লাসের মধ্যে ওয়াইন এর বোতল নিয়ে ওয়াইন ঢেলে খেতে লাগে।

নাহিল ভার্সিটি যেতে নরমাল শার্ট আর চুলগুলো এলোমেলো ভাবে এলিয়ে দিতো দেখতে একদম রকস্টার নাহিল লাগে। আর যখন অফিসে যায় তখনই চুলগুলো হাত দিয়ে নেড়ে পিছে করে কিলার লুক দে গায়ে শার্ট এর উপর কোর্ট পড়ে একদম বিজনেস ম্যান এর মতো লুক করে ফেলে।

কাজল নাহিলের দিকে তাকিয়ে হাবার মত কথাগুলো ভাবছে।
নাহিল ফাইল দেখে কাজলকে দেখল।

—-“Any thing wrong ms kajol?

কাজলের ধ্যান ফিরতেই সে এদিক ওদিক তাকিয়ে নাহিল এর ফেস বরাবর তাকায়।

—-“What?
কর্কষ কণ্ঠে বলে।

—-“নো নো স্যার আমি আপনার পিছের ছবিটা দেখছিলাম।

—-“বাই দ্যা ওয়ে রেসালের আইডেন্টিফাই ডকুমেন্ট ফাইলটা দাও।

কাজল ফাইলটা নিয়ে নাহিলকে দিল। নাহিল ফাইলটা খুলে কিছুক্ষণ ঘাঁটতে থাকে। কাজল কে সে নিষেধ করেছিল রেসালের ফাইলটা খুলে চেক করতে। সেই ফাইল কাজলকে এনে দিয়েছিল নাহিলের গার্ড। যাকে নাহিলই বলেছিল রেসালের খোঁজখবর সব বের করে আনতে।
কাজল এর সামনে সে ঘাঁটার ভান করে বলে।

—-“গুড তুমি যাও। ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে আমন্ত্রিত ক্লাইন্টদের আসার জন্যে অফিসের সব স্টাফদের বলে দাও। সবাই যেনো সুন্দর ভাবে সব ক্লাইন্টদের মিটিং কনফারেন্সের নিয়ে আছে। তোমার সাথে দুইজন স্টাফ কে নিতে পারো। বাকিরা অফিসের কাজ করবে।

কাজল সব শুনে ওকে স্যার বলে বেরিয়ে যাবে তখন নাহিল আবারো থামিয়ে বলে।

—-“সিনসিয়ালরি কাজ চাই কোনো ধরনের ডে পালনের ধারণা যেনো কোনো স্টাফ মাথাও না আনে!
ইজ দ্যাট ক্লিয়ার?
ফাইল নিয়ে চেয়ারে বসে টেবিল থেকে খাতা নিয়ে সই করতে করতে বলে।

কাজল মন খারাপের সাথে রাগও করে কিন্তু প্রকাশ করে না।

—-“এক নাম্বারের খাচ্চর বস ! একটু বিনোদনও দিবে না জীবনে। উনার ওয়াইফ যে হবে তার লাইফ তো তেজপাতাই বানিয়ে দিবে।
বিরবিরিয়ে সে নিজের কেবিনো এ চলে যায়।

কাজল চলে যেতেই সে রেসালের ফাইল খুলল। তৎক্ষণাৎ তার নজরে পড়ল।

চলবে……?

পর্ব_০৫

-আর সইছে না বদ ফরেইন মিয়ার কারণে এতো কড়া গার্ড দেওয়ার মানে কি? এদিকেও যেতে পারিনা ওদিকেও যেতে পারি না।
এতোই গার্ড দেওয়ার উনি কে? সবসময় জোর খাটানো উনার রগে রগে লেখা আছে কি?
আজ আব্বুকে বলবই বলব।

আমি সোজা আব্বুর রুমে গিয়ে দরজা নক করলাম।আব্বু টেবিলে বসে কয়েকটা খাতায় সই করছিলেন। আমি আসছি সেটা মনে হয় খেয়াল করল না। যখন দরজায় সাউন্ড করে নক দিলাম। তখন আব্বু পিছে ফিরে তাকান।
আব্বুর ফেস দেখে স্বাভাবিক লাগছে এতেই আমি আমার মনের কথা বানিয়ে পুষিয়ে নিতে পারব।

—-“কি মা কিছু বলবি?
—-“হ্যা আব্বু একটা কথা বলার ছিল! যদি অনুমতি দাও তাহলে…..আমতা করে বললাম যাতে আব্বু সহজে আমার মনের কথা বুঝে যাক।

—-“কাছে আয় বস। আমি গিয়ে আব্বুর টেবিলের পাশে সোফায় বসলাম। আব্বু চেয়ার টেনে আমার দিকে হয়ে জিগ্গেস করল।
—-“হ্যা এখন বল কি বলতে চাস?
—-“আব্বু আমি তো তোমার কথা সবসময় শুনি কখনো না করি নি তাই আজ একটা কথা বললে রাখবে প্লিজ প্লিজ……করুন নয়নে আব্বুর দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম।

—-“হ্যা বল তোর কোনো কথা কি আজ পর্যন্ত রাখিনি? সব কথাই রেখেছি এবারও রাখব। বলো কি বলবে?

আমি এবার বিনা হিমশিম খেয়ে বললাম।
—-“আব্বু ১৪ই ফেব্রুয়ারি কলেজের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান হবে। সেখানে অনেক কম্পিটিশন ও আছে সব স্টুডেন্টস পার্টিসিপ্টে করবে। আমিও যদি করতাম।

—-“তাহলে তো ভালো কথা আমার মেয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী এতে তো আমিও খুব খুশি। তবে হ্যাঁ তুই যাই করবি নাহিল যেনো সাথে থাকে।

—-“এ্যাহ হে যার জন্যে আম পাড়তেছি তার নামেই সুনাম। না এটা তো হতে দেবো না। আব্বু নাহিল ভাইয়ার এতে কি কাজ? উনি তো খুব বিজি মানুষ। উনার না আসলেও চলবে।

আরভী খান বুঝতে পারলেন নাজিয়া আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছে। তিনি না চাইতেও মেনে নিলেন নাজিয়ার কথা। যত হোক মেয়ে আবদার করেছেন বলে ফেলতে পারলেন না।

নাজিয়া রুমে এসে তড়িঘড়ি ফোন হাতে নিয়ে তার বন্ধু নিহা আর মিহু কে তৈরি হয়ে থাকতে বলে। একসাথে শপিং করতে যাবে।
তারা কলের মধ্যেই জিগ্গেস করল তাদের সাথে কি নাহিলও যাবে? নিহা তো যেনো নাহিল ভাইয়া আসলেই ভালো হবে সেই নিয়ে দোয়া করতে লাগল।
তার কথায় যেনো চরম লেভেলের রাগ মাথায় উঠতেছিল। তাও কিছু বলছি না। আমি সোজাসাপ্টা বলে দিলাম আমাদের ইভেন্ট এ নাহিল নামক বিষ একদমই থাকবে না। গট ইট?
তার ফ্রেন্ডস হতাশ হয়ে ওকে বলল।
নাজিয়া তো কল কেটে লুঙ্গি ডান্স গানটা চালু করে দিয়ে ডান্স করতে লাগল।
কিন্তু সুখ থাকে কতক্ষণ কপালে?
সে আর জানে না তার দিওয়ানা যে তাকে চোখে চোখে রাখছে।

নাজিয়া রুমের মধ্যে উড়না হাতে নিয়ে লুঙ্গি ডান্স করতে থাকে। আবার নিজেই বিরবিরিয়ে বলে।
—-“লুঙ্গি ডান্স লুঙ্গি ডান্স আহাহা আহাহা ওহ না না আমি তো লুঙ্গি পড়ি নি উড়না নিয়ে এনা ডান্স দিচ্ছি। তাহলে তো……গালে হাত দিয়ে ভাবার ভঙ্গিতে। পেয়ে গেছি উড়না ডান্স উড়না ডান্স……বলে বলে ডান্স করে করে সে কাবার্ড থেকে কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।

সে চলে যেতেই নাহিল লেপটপ অফ করে চেয়ারে হেলান দিল। রেসালের ফাইলটা নিজের লকার এ রেখে দিল। ফাইলটা দেখে প্রথমে বিস্মিত হলো সে ভেবেছিল রেসাল শুধু বিজনেস করে কিন্তু না সে তার সাথে সেইম ইয়ারে কোর্স করছে। এই নিয়ে সে তার খোঁজ নিতে গার্ডসকে পিছে লাগায়।

এখন হেলানরত অবস্থায় নাজিয়া আরভী খানের সাথে কি কি বলল রুমে এসে কি করল সব দেখল আর শুনল।

—-” নাজুপাখি খুব শখ আকাশে উড়ার। এখন তো দেখছি আকাশে উড়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
বাঁকা হেসে সে একটা কলে ডায়ল করল।
সাথে সাথে কল রিসিভ হলো।

—-“হ্যালো শুন ইভেন্ট পার্টিতে যে যে কম্পিটিশন হবে সবগুলোর পরিদর্শক হিসেবে বিশেষ অতিথি আনার ব্যবস্থা কর।

—-“ওকে স্যার কিন্তু কাকে নিবো?
যে কিনা সব কম্পিটিশনের ফলাফল বিবেচনা করবে?

—-“তুই যার সাথে কথা বলছিস সেই হবে।
—-“ওহ ওকে স্যার বুঝতে পারছি। কাজ হয়ে যাবে স্যার।
নাহিল ফোন কেটে দিল।
সে ডেভিল স্মাইল করতে করতে বলে।

—-“নাজুপাখি তুমি চলো ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায়।
ইটস বেরি ডেঞ্জারাস টু হাইড উইড মি!
যার দিওয়ানায় আমি মগ্ন তাকে কিভাবে সাড় দিতে পারি? তোর জন্যে ভিলেন যেমন হতে রাজি তেমন তোর প্রেমেতে পাগল হতেও রাজি।
তুই চাইলেও আমার না চাইলেও আমার।
ভিলেনের দিওয়ানাপান স্টার্টিং নাজুপাখি।

সেভাবে বসেই রকিং চেয়ারে মাথা হেলিয়ে প্রশান্তির নিশ্বাস ছেড়ে হেলতে লাগে।

—-“আহ আজ কতদিন পর নিজে গাড়ি চালাচ্ছি এতোদিন ডেভিল গলির বস্তার কারণে তো শান্তি ভাবে গাড়িও চালাতে পারতাম না। শালা গলির মাল।

আমার কথায় নিহা মিহু শব্দ করে হাসতে লাগল। আমি ভেংচি মেরে স্টেয়ারিং ছেড়ে দুহাত বুকের উপর গুঁজে বললাম।

—-“কি হ্যাঁ বেশি হাসি পাচ্ছে বুঝি? তোদের কপালে যখন আমারটার মতো ডেভিল জুটবে তখন জিগামু কেমন লাগে?
বলে সে গাড়ি স্টার্ট দিল।

নাজিয়া গাড়ি চালাতে লাগে।
নিহা মিহু তার কথায় হা হয়ে যায়।
নিহা মিহুকে চোখ মেরে নাজিয়াকে কুঁচা দিতে লাগে।
নাজিয়া ফিরে না সে মনযোগ দিয়ে সামনে তাকায় থাকে। নিহা কয়েকবার কুঁচা গুতা মারতে থাকে। এতে নাজিয়া বিরক্তকর ভাব নিয়ে বলে।

—-“কিরে বালের দোস্ত গাড়িও কি শান্তিভাবে চালাতি দিবি না?
কি চাই!

—-“আমারটা মানে কি? নিহা সরু নয়নে নাজিয়ার দিকে তাকায়।
নাজিয়া না বুঝে বলে।

—-“কি আমার মানে?
—-“আবে তোর না। তুই তো নাহিল ভাইয়ার কথা বললি। তোরটার মতো আমাদের কপালে জুটলে ইত্যাদি ইত্যাদি……
হুম হুম মানে কি হ্যাঁ?

এবার আমি কিছুটা ইস্তবোধ করলাম। তাদের কথার কি উওর দিবো ভাবতে থাকি।

—-“নিহা কিছু বুঝেছিস নাজুর চুপমার্কা ফেস দেখে?
মিহুর কথায় তাল মিলিয়ে নিহাও বলে।

—-“ডালমে কুচ পিলা হে।

নাজিয়া শুনেও কিছু বলল না কিন্তু গাড়ি শপিংমলে এসে থামল।
নিহা মিহু এবার মন খারাপের ভান করে বলে।

—-“জিজু হবে আরকি বুঝতে পারছি আমাদের ক্রাশ আর ক্রাশ রইলো কই?

আমি তাদের দিকে ভাব দেখিয়ে বলি।

—-“তুম দোনো কো মিরচি লাগে তো মে কিয়া কারু?

এবার তারা দুইজনই মুখ কালা করে ফেলে। নাজিয়া হেসে বলে চল।
তারা গাড়ি পাকিং প্লেসে রেখে শপিংমলে ডুকল। তাদের দেখে অনেক ছেলেপেলে হা করে তাকায় থাকে। বিশেষ করে নাজিয়াকে। নাজিয়ার সিম্পল গেটআপেই যে জোস লাগছে সবার কাছে।
তারা তিনজন মিলে একে একে অনেককিছু কিনল। আগামী ফাংশনের জন্যে।
তাদেরই পিছু নিচ্ছে এক হুডী পরা লোক। তারা শপ শেষ করে একটা ক্যাফে ঢুকল আইসক্রীম ফুসকা খেতে। নাজিয়া তো ভ্যালেনা মিক্সড উইঢ চকলেট ফেলেবার আগে থেকেই বলে দিলো। ওয়েটার আসলে অর্ডার করে তারা গফসফ মারতে থাকে।

ক্যাফের ঠিক বিপরীতে অন্য সিটে বসে আছে হুডী পরা লোকটা। সে তিন মেয়েটার সাথে বাকিদের খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল।
সে ফোন বের করে একটা মেসেজ দিল তার গ্রুপে।

নাহিল অফিসে এসে মিটিং কনফারেন্সে স্টাফদের সাথে কথা বলছে।

—-“স্যার ১৪ই ফেব্রুয়ারি সিঙ্গেলদের জন্যে বড় দিন কিন্তু আপনি সেদিনও কাজ…….
নাহিল চুপ করে শান্ত নজরে ছেলে স্টাফের দিকে তাকায়।

—-“সিঙ্গেল মিঙ্গেল বলতে কি বুঝো?

—-” স্যার যেমন আমি বউ গফ ছাড়া সিঙ্গেল আছি।

নাহিল এক হাত টেবিলের উপর রেখে আরেক হাতের বুড়ো আঙল দিয়ে কপাল কুঁচান দিল। কাজল দূরে দাঁড়িয়ে নাহিলের কপাল কুঁচলানো দেখে বুঝতে পারল স্যার রাগ দমন করার চেষ্টা করছে।

—-“দেখো আজ কিছু কথা বলি মনে রেখো সেগুলো।
আল্লাহ কাউকে একা পাঠায় নি। তোমার জন্যে যাকে পাঠিয়েছেন সে আসবে শতবছর পর হোক কিন্তু সে আসবেই। সিঙ্গেল মিঙ্গেল কথাগুলো শুনতে কি বুঝায় জানো?
সিঙ্গেল মানে সি এর অর্থ দেখা,,ঙ্গেল এর অর্থ দিক তার পুরো মানে হলো দেখার দিক। আপনি যেটা সবাইকে নিজ ইচ্ছায় দেখাবেন সে তাই দেখবে পরে সে ব্যাপারেই সবখানে ভাইরাল হবে।

মিঙ্গেল মানে মি অর্থ আমি ঙ্গেল অর্থ দিক। ইটস অলসো মিন আমার দিক। নিজের দিকে আকর্ষণ করা।
সিঙ্গেল মিঙ্গেলের চেয়ে বিয়ে করে নাও সুখে থাকতে পারবে।

নাহিলের কথায় স্টাফসহ বাকি সবাই চোখ গোল করে তাকিয়ে থাকল। তারা একে অপরের দিকে তাকাতাকি করছে সাথে কানে কানে বলে।

—-“স্যারের কাছে সিঙ্গেল মিঙ্গেল এর বর্ণনাও আছে। আজ পর্যন্ত পাবলিক সিঙ্গেল মিঙ্গেল মানে তো একা একা না পার্টনার আছে এটা বুঝতো। এখন তো উনার কথা শুনে সব উল্টো লাগছে।

নাহিল চোখ ঘুরিয়ে নিজের কলার ঠিক করে সবার দিকে কড়া নজরে তাকিয়ে সাইলেন্সসসস হুংকার দিয়ে চুপ করিয়ে দিল।
সে মিটিং এ বিভিন্ন গ্রুপ অফ ইনড্রাস্ট্রির পরিবহনকৃত পেকেজ সযত্নে কোম্পানির গোডাউনে নিয়ে আসার দায়িত্বে রাখলো দক্ষ ব্যক্তি সাইফুল।
সে সাথে বাকি কিছু স্টাফ মিলে ফাংশন এর জন্যে কাজে লেগে যায়।

নাহিল নিজের কেবিনে এসে বসল।
লেপটপ অন করে দেখল নাজিয়া বাসায় নেই। তার ফোনে মেসেজ আসছিল দুইঘন্টা আগের। দারোয়ান মামা নাজিয়া বের হতেই নাহিলকে মেসেজ করেছিল।
নাহিল নাজিয়ার ফোনের লোকেশন ট্রেগ করতে লাগে।
কিন্তু লোকেশন ডিসকানেক্ট দেখায়।

সে ভাবল হয়তো নাজিয়ার ফোন বন্ধ চার্জ শেষ বা নেট নেই। কিছুক্ষণ পর কল আসে সে ফোন কানে ধরল।

—-“হ্যালো স্যার আসসালামুয়ালাইকুম আমি কমিশনার এম এ আসাদ বলছি।

—-“ওহ ওয়ালাইকুমাসালাম স্যার বলুন কি সাহায্য করতে পারি।

—-“স্যার মিশনা রোডের মোড়ে হোলিং নামে এক বড় শপিংমল আছে সেখানে বোম ট্রান্সফার করার জন্যে কিছু লোক শপিংমল এর মধ্যে গিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ এ তাদের ফেস দেখা যাচ্ছে না কিন্তু চেকারস এর সন্দেহ অনুযায়ী আমাদের জানাল।
এখন বাকিটা আপনি বুঝতেই পারছেন!

—-“স্যার ডোন্ট ওয়ারি নাহিল ইয়াদিস পাক্কা খেলোয়াড়। দেখতে থাকেন কি করি তাদের!
এই বলে কল কেটে দিল। সে নিজের গোডাউনে এসে গার্ডসকে প্রস্তুতি নিতে বলে।

—-“নাজু লোকটাকে দেখ !
নিহা নাজিয়াকে সন্দেহবানীর ভঙ্গিতে বলে। আমি নিহার কথায় পিছে ঘুরে তাকিয়ে দেখি। এক হুডি পরা লোক ছোট ব্যাগ টেবিলে রেখে খুলে কি যেনো করছে। আমি কৌতূহলী উনার কাছে আসতেই……..

……….চলবে………

পর্ব_০৬

—“শুনো যে যার মতো পজিশনে স্ট্যান্ড নিয়ে থাকবা। যখনই আমার সিগন্যাল পাবা তখনই এ্যাটাক করবা।
কিন্তু সাবধান পাবলিকের উপর আচঁ কোনোভাবেও যেনো না হয়।
শতের উপর মানুষ এই শপিংমলে।
নাহিল শার্টের হাতা ফোল্ড করে গার্ন ডান হাতে নিল। কমিশনারের দিকে তাকিয়ে ইশারা করে।

নাহিলের ইঙ্গিত পেয়ে কমিশনার মাইক নিয়ে জোরে জোরে বলতে শুরু করে।

—“দেখেন সবাইকে ছেড়ে দেন কেউ আপনাদের সাথে কিছু করবে না। এই সামান্য মানুষেরা আপনার কি ক্ষতি করেছে যে আপনারা তাদের আঁটকে রেখেছেন।

উপর থেকে বেলকনি দিয়ে কোনো কথার উওর আসলো না।
নাহিল ইশারা করে আবারো বলতে। তার কথা অনুযায়ী কমিশনার আবারো বলে। তবে হঠাৎ করেই এক মেয়ের চিৎকার শুনা গেলো।
তাদের বুঝতে বাকি রইলো না সেই হাইজ্যাক পারমাণবিক বোমা ট্রান্সফার এর লোকের মধ্যেই কেউ কোনো এক মেয়েকে ধরেছে।

—-“তোর বেশি পাখা গজায়ছে তাই না? দাঁড়া তোর পাখা কাটার ব্যবস্থা নিবো।
লোকটা নাজিয়ার চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে জানালার ধারে দাঁড় করায়। সাথে তার মাথায় গার্ন ট্রেগ করে বাহিরের সবাইকে দেখিয়ে বলে।

—-“স্যার সালাম। আপনারা যাই বলেন আমরা আমাদের কাজ শেষ না করে কাউকেও যেতে দিবো না।
যদি আপনারা আমাদের কাজে বাঁধা দেন তাহলে এই…..নাজিয়াকে দেখালো এই মেয়ের মাথা ফাটিয়ে দিবো।

—-“না না আপনি এমন কিছুই করবেন না প্লিজজ আমরা শুধু আমাদের মানুষদের জন্যে বলছি তাদের যেতে দেন বাকিটা আপনাদের যা ইচ্ছা করেন।
কমিশনার মাইক নিয়ে চিন্তিত হয়ে বলল।

—-“স্যার এতোটা বোকা তো আমরা হয়নি। সবাইকে ছেড়ে দিলে তো আপনাদের রাস্তা ক্লিয়ার হয়ে যাবে। তার চেয়ে ভালো সবাইকে বন্দী রেখে নিজেদের কাম শেষ করা। এটাই হলো বুদ্ধিমানের কাজ।

নাজিয়া ভয়ে ফ্রিজড হয়ে আছে। লোকটা পুলিশদের সামনে তার বাহুডোরা ধরে টেনে দেখালেও পরক্ষণে লোকটা তার কোমরে হাত রেখে চেপে ধরে।

—“আল্লাহ লোকটা এমনেই ডেঞ্জারাস সাথে খুব বাজে বুঝায় যাচ্ছে। আজ কেনো যে নাহিল ভাইয়ার সাথে আসলাম না। আব্বু ঠিকিই বলে আমি এক নাম্বারের গাধী। লোকটা ক্রমশ তার হাত নাজিয়ার পেটের কাছে বাড়াতে থাকে।
এতে নাজিয়া লোকটার বাজে মাইন্ডের ব্যাপারে বুঝতে পেরে জোরে ধাক্কা দিল। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ায় লোকটা রেগে নাজিয়ার কপালে গার্ন দিয়ে বারি দে।
বারি খেতেই তার কপাল এঁচে যায়। হালকা রক্ত বেরিয়ে আছে। গার্নের নিচের মোটা জায়গা দিয়ে তার মাথায় বারি দেওয়ায় সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। লোকটা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দে। নিহা মিহু কাঁদছে তারা নাজিয়ার কাছে আসতে চাইলে বাকি লোকেরা তাদের দিকেও গার্ন ট্রেগ করল।

নিহা মিহু মিলে আকুতি মিনতি করতে লাগে নাজিয়াকে তাদের কাছে দেওয়ার জন্যে কিন্তু তাদের দলের লিডার উল্টা নাজিয়াকে নিজের পাশে চেয়ারে বসিয়ে হাত পা বেঁধে দে।

—-“শুন এই মেয়েটাকেই আমরা হাতিয়ার বানাবো। এই আমাদের কে বাঁচাবে যদি মরি তাহলে এরেও মেরে ফেলব।

লিডারের কথায় বাকিরা সম্মতি দিল। লিডার গিয়ে টেবিলের মধ্যে রাখা ব্যাগটা নিয়ে পুনরায় কাজ করতে লাগে।

—-“ব্রেকিং নিউজ আজকের সবচেয়ে আতঙ্ক ভয়াবহ ঘটনাটি আপনাদের জানাছি। রোল রোডের মোড়ে হোলিং শপিংমলে হলো হাইজ্যাক।
জ্বী হ্যাঁ আপনারা ঠিকিই শুনতে পারছেন হাইজ্যাক হলো। সেই মলে কয়েকজন সন্ত্রাসী নিজেদের কোনো এক কার্য সংলাপ সম্পন্ন করতে এসেছে। কিন্তু জানা গেছে সেখানে অনেক মানুষজনকে তারা বন্দী করে রেখেছে। কারো ক্ষতি করেন নি বলে জানান কমিশনার এম এ আসাদ।
তবে ক্ষতি করার সম্ভাবনা 70%।
বাকি খবর জানতে আমাদের সাথেই থাকুন আরটিভি চ্যানেল নিউজ।

টিভিতে নিউজটা দেখেই মিসেস রাসনা আরভী খানকে ডাক দেন।
আরভী খান এসে বলে।
—-” কি হয়ছে কান্না করছো কেন?

—-“আমাদের নাজু বিপদে পড়েছে গো।
—-“মানে কিসের বিপদ কি বলছো তুমি?
—-“টিভির মধ্যে নিউজে দেখিয়েছে একটা শপিংমল হাইজ্যাক হয়েছে। আর যেই শপিংমলে হাইজ্যাক হয়েছে সেখানে আমাদের নাজুও বন্দী।

—“নাজিয়া সেখানে তোমাকে কে বলছে? আমাদের নাজিয়া হইতো অন্য শপিং মলে গেছে। তু…..
—-“না গো নাজিয়া শপিংমলে গিয়ে আমায় কল করে ছিল তার সাথে কথা হয়ছে আর সে যে মলের নাম বলল সে মলেই সন্ত্রাসী ঢুকে পড়েছে।
কান্নায় আরভী খানকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি।
আরভী খান রাসনাকে জড়িয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছেন। এরই মাঝে মনে পড়ল এই কথা নাহিলকে বলার।
আরভী রাসনাকে শান্ত্বনা দিতে দিতে বলে,
—“চিন্তা করো না নাহিল কে আমি বলে দেই। সে সব ঠিক করে দিবে আমার বিশ্বাস আছে।

আরভী খানের কথায় রাসনা কিছুটা সাহস পেলেন। উনি কান্না থামিয়ে নিলে আরভী খান উনাকে পানির গ্লাস এগিয়ে দেন। উনি পানি খেয়ে সোফায় বসে থাকলেন।
আরভী খান নিজের রুমে এসে ফোন নিয়ে নাহিলকে কল দিল।

—-“স্যার আমার লাগছে এ্যাটাকার কাউকে না কাউকে আঘাত করেছে। আমাদেরকে সর্তকভাবে সব কাজ করতে হবে। যাতে বাকিদের কোনো সমস্যা না হয়।

নাহিলের কথায় সকলে ইয়েস স্যার বলে।
—-“পজিইইইশান। নাহিলের বলার সাথে সাথে সবাই স্ট্যান্ড নিয়ে বিল্ডিং চারপাশ ঘেরে ফেলে।

ব্যাগটায় বোমার সামগ্রী ঠিকঠাক করে নে হুডীপরা লিডার। পুরো বোমটা বানিয়ে লাগিয়ে ফেলে। তারপর যখন বোমের ট্রান্সলেট ঠিক করল তখন বিজয়ের হাসি দিল।
তার হাসিতে বাকিরা ভয়ে হিমশিম খেতে লাগে।
তার সহপাঠিদের তো বলে।

—-“প্রস্তুত হয়ে গেলো বোমা। এবার এটা ট্রান্সফার করলেই আমাদের হাতে মালামাল টাকা চলে আসবে।
এরপর আমরা হবো কোটিপতি।

নাহিল পিছের দরজা নকল চাবি দিয়ে খুলে ভেতরে ঢুকে।
আরভী খান অনেকক্ষণ কল দিতে লাগে যখন দেখলো নাহিল ফোন ধরছে না তখন তিনি মাফুজকে কল করে সব বলেন। শুনার সাথে সাথেই তিনিও নাহিলকে কল দিতে লাগে।
নাহিল পিছের দরজা দিয়ে ঢুকছিল বলে তার ফোনে কানেক্টিং কল আসছিল না। যখনই সে ভেতরে এসে দেখল টেরেস্ট গার্ন নিয়ে মানুষদের পাশে ঘুরাঘুরি করছে তখন সে লিডার কে খুঁজতে থাকে।
তার নজর পড়ল বেলকনির ধারে দাঁড়িয়ে টেরেস্ট দলের লিডারের উপর।
ব্যাগ বন্ধ করে কাকে যেনো কল করছে।

সে তার পিছে বাকি গার্ডসকে ইশারা করে আস্তে।
সে আগাতে গেলেই কল চলে আসে। টেরেস্টস এদিক ওদিক তাকিয়ে কার ফোন বাজছে খুঁজতে লাগে।

—-“এই এই কার ফোন বাজতেছে?
ওই দেখ তো কার ব্যাগের মধ্যে কার ফোন বাজতেছে।

টেরেস্টস সবার পকেট ব্যাগ চেক করতে থাকে।
নাহিল ফোন বের করে সাইলেন্ট করে ফেলে। তারাও থেমে যায়।

—“হেই স্টপ কল কেটে গেছে। নিজেদের কাজে ধ্যান দে।

নাহিল ফোন কানে ধরে
—-“হ্যালো ড্যাড আমি মিশনে আছি।

—-“নাহিল খুব জরুরি কথা আছে।

—-“ড্যাড পরে আগে মিশন কম্পিলিট হোক তারপর আমি নিজেই আপনাকে কল দেবো।

—-“বাবা শুন আগে; নাজিয়ার কথা বলতে চাচ্ছি। সে বিপদে……নাহিল কল রাখতে যাচ্ছিল যখনই নাজিয়ার কথা শুনলো তখন ফোন কানে ধরে।

—“কি বলেছো ড্যাড?
—-“হ্যা এখনই নাজিয়ার বাবা কল করে আমাকে জানিয়েছে।

—-“কি জানিয়েছে?
মাফুজ আরভীর বলা কথাগুলো রিপিট করে বলে।
নাহিল শুনে ফোনটা পকেটের মধ্যে রাখল।
তার পিছেই গার্ড নাহিলকে নাড়া দে। কিন্তু নাহিলের হেলদুল নেই। এ দেখে গার্ড নাহিলের কিছুটা পাশে এসে দেখে তার মুখের রং উড়ে গেছে চোখজোড়া টকটকে লাল হয়ে গেছে নাহিল হাত মুঠো করে।
দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলে।

—-“দিস মিশন ইজ নোট অনলি সেভ দ্যা পিপল বাট অলসো এনকাউন্টার। গার্নের মোড়া চেপে ধরে……..

…….চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here