মন গহীনে,পর্ব_৮

0
2386

মন গহীনে,পর্ব_৮
সামান্তা সিমি

পড়ার টেবিলে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছি। সামনে অঙ্কে ভর্তি খাতায় এখানে সেখানে কাটাছেঁড়া। কয়েক জায়গায় লাল কালি দিয়ে গোল বৃত্ত আঁকা যেগুলো দেখতে ছোটখাটো আলুর মত লাগছে।
আমার মুখোমুখি টেবিলের অপর প্রান্তে বসে আছেন দ্যা গ্রেট তুষার ভাইয়া।উনার চোখে শান্ত দৃষ্টি। দেখতে শান্ত হলেও সেই চোখ দিয়ে অদৃশ্য গোলাবর্ষণ হচ্ছে। আর তাতে আমার শরীর জ্বলেপুড়ে ছারখার।
কিছুক্ষণ আগেই উনি আমায় দুটো ম্যাথ করতে দিয়েছিলেন।আর আমি একটা অঙ্কের চার-পাঁচ জায়গায় ভুল করে বসে আছি।

ঘুমের যন্ত্রণায় আমার খুব হাই উঠছে।কিন্তু তুষার ভাইয়া সামনে থাকার কারণে চেপে বসে থাকতে হচ্ছে।হাই চেপে রাখা যে এত কষ্টের তা জীবনে এই প্রথম বুঝতে পারলাম। সবই আমার ভাঙাচোরা কপালের দোষ!

আজ সকাল সাতটার দিকে এসেই তুষার ভাইয়া আমায় ঘুম থেকে উঠিয়ে দিয়েছেন।ঘুমের ঘোরে ভেবেছিলাম মা ডাকছে।তাই খুব জোরেসোড়ে চিল্লিয়ে বলে উঠলাম,

” দয়া করে ঘুমুতে দাও আমায়।প্লিজ যাও এখান থেকে।”

তারপরেই সব চুপচাপ। কিন্তু পরক্ষণেই টের পেলাম আমার হাতের আঙুলে গরম উত্তাপ লাগছে।ক্রমেই তা গভীরভাবে শিরায় শিরায় পৌঁছে যাচ্ছে।
আর সহ্য করতে না পেরে চিৎকার দিয়ে উঠলাম।চোখ মেলতেই দেখি পাশের সোফায় তুষার ভাইয়া গরম কফির মগ হাতে বসে আছেন।

আঙুলের জ্বলুনি অনুভব হতেই আমার কাছে সব পরিষ্কার। উনিই তাহলে আমার আঙুল কফির মগে চুবিয়ে দিয়েছেন।কি নির্দয় লোক!আমাকে সুন্দর ভাবে ডাকলেই তো পারত। আজব প্রাণীতে দেশটা ভরে গেছে।চোখে মুখের বিরক্তি লুকিয়ে বই খাতা নিয়ে বসে গেলাম।আর তারপরেই তো এই অঘটন ঘটল।

দীর্ঘক্ষণ গোলাবর্ষণ শেষে তুষার ভাইয়া বলে উঠলেন,

” তোর কি পড়ালেখা করতে ভালো লাগে না?”

আমি চোখ তুলে তাকিয়ে আবার নামিয়ে নিলাম।সত্যি কথা বলতে আমার তো পড়ায় মনই বসে না।বই খুলে বসলে কল্পনায় সাজানো হাজারো রূপকথায় ভেসে যাই আমি।তারপর একসময় প্রচুর ঘুম পায়।

মাথা নেড়ে ‘হ্যাঁ’ বলতেই উনি বললেন,

” তোর মত এমন গেছো বাঁদর আমি আর দুটো দেখিনি।মুখে হ্যাঁ বললেও মনে অন্যকিছু চলছে।তোকে কাল যাওয়ার সময় বলে গেছিলাম এই চাপ্টারের অঙ্কগুলো দেখে রাখবি।তুই কি তা করেছিস?”

দারুণ অস্বস্তিতে ডানে বামে তাকাতে লাগলাম।কাল তো ঘুমের যন্ত্রণায় আমি অন্ধ হয়ে গেছিলাম যার জন্য বই নিয়ে বসা হয় নি।রাতে ভাতও খাওয়া হয়নি।

” তোর কপালে দুঃখ আছে নীল!তুই ভাবিস না পড়া না পারলে তোকে ছেড়ে দিব।আমি যে কাজে হাত দিই তা সফল না হওয়া পর্যন্ত দম নেই না।তুই তো দেখি পড়ালেখায় গাধার থেকেও অধম।আমার টার্গেট তোকে গাধা থেকে মানুষ বানানো। এরজন্য যা করা লাগে করব।তোকে আগেভাগেই রেড এলার্ম দিয়ে রাখলাম কিন্তু। এই যে আমি এত গুলো কথা বললাম তুই এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য কান দিয়ে বের করছিস তা আমি ভালোই বুঝতে পারছি।হোমাওয়ার্কও করিস নি।এমনটা যাতে আর কখনো না হয় তাই হাত পাত এখন।”

আমি চমকে উঠলাম।চেয়ে দেখি উনার মুখ রাগে থমথম করছে। হাতে কাঠের স্কেল।তার মানে ভাইয়া আমাকে এখন মারবেন!প্রথম দিন পড়াতে এসেই মারামারি! তাহলে বাকি দিনগুলোতে তো মাথায় তুলে আছাড় মারবেন।এ কেমন শিক্ষক উনি?হার্টলেস! হৃদয়হীন! অমানুষ!
শুকনো গলায় ঢোক গিলে বলতে চেষ্টা করলাম,

” ভা..ভাইয়া স..সরি।কাল থেকে…!”

” হাত পাত নীলাশা।”

উনার ধমকে কেঁপে উঠলাম আমি।ভাইয়া হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক রেগে গেছেন।এই মুহূর্তে কথার পিঠে কথা বলা মানেই বিপদ।
ধীরে ধীরে কম্পিত হাত টা সামনে বাড়িয়ে দিলাম।উনি সর্বশক্তি দিয়ে পরপর দুটো আঘাত করলেন।হাতটা জ্বলে গেলো আমার।শুধু রক্ত বের হওয়ার বাকি আছে।আর একটা বারি দিলে নিশ্চয়ই স্কেলটা ভেঙে দু টুকরো হয়ে যেত।
হাতের যন্ত্রণায় চোখে প্রায় পানি এসে গেল। ঠোঁট কামড়ে কান্না চাপতে গিয়েও ব্যর্থ হলাম।অবাধ্য চোখের জল গড়িয়ে পড়ল খাতার উপর।
কিন্তু আমার চোখের মুল্যবান পানি উনার মন টলাতে পারল না।আগের চেয়ে দ্বিগুন জোরে ধমক দিলেন।এবার তো কান্নার চোটে হিঁচকি উঠে গেল।
ভুল করা অঙ্কগুলো বুঝিয়ে দিয়ে আবার করতে বললেন।ভাগ্যিস এবার আর ভুল হয় নি।নাহলে আরো মার খেতে হত।
আরো কিছুক্ষণ ম্যাথ করিয়ে তুষার ভাইয়া চলে গেলেন।
আমি অসহায় ভঙ্গিতে হাতটা দেখতে লাগলাম।ফর্সা হাতটা কেমন লাল হয় হয়ে আছে।নিষ্ঠুর লোকটার মনে দয়া মায়া নেই একফোঁটা। মনে মনে অভিশাপ দিলাম ঘুমের মধ্যে উনি যেন খাট থেকে ধুপ করে নিচে পড়ে যায়।এই অবলা মেয়েটার মনের বাসনা পূরণ করে দিও আল্লাহ।



সন্ধ্যা হতেই বই নিয়ে বসে গেলাম।তুষার ভাইয়ার হোমওয়ার্ক গুলো একের পর এক শেষ করছি।নাহলে কাঠের স্কেলটা কাল আমার মাথায় ভাঙবেন।
দরজার দিকে চোখ পড়তেই দেখি মা দাঁড়িয়ে আছেন।চোখে মুখে রাজ্যের বিস্ময়।কেসটা কি?মা’য়ের আবার কি হলো!
ফোঁড়ন কেটে বললাম,

” কি হলো মা?আজ কি আমার রূপ এক ছটাক বেড়ে গিয়েছে?না মানে তুমি যে এমন ভাবে তাকিয়ে আছো আমার দিকে।”

বিস্ময় কাটতেই মা বলে উঠল,

” থাম তো!সারাক্ষণ শুধু অর্থহীন কথাবার্তা। তোর রূপ বাড়বে কোনদিক দিয়ে বুঝা আমায়।তোর দিকে তাকালে আমার সর্বপ্রথম রাস্তার ধারের ওই পাগলি টার কথা মনে পড়ে।সবসময় বলি একটু পরিপাটি হয়ে থাক।কিন্তু তুই…আচ্ছা যাই হোক।আমি যে কারণে অবাক হয়েছি সেটা হলো তুই তো দেখি একদিনেই পড়ার প্রতি ভালোই মনযোগী হয়েছিস।প্রথমদিনেই এত উন্নতি।ইস!তুষারকে যদি আরো আগে থেকে পড়াতে বলতাম।ওই ছেলেই পারবে তোর মত ত্যাঁদড় মেয়েকে সোজা করতে।কাল তুষার আসলে অনুরোধ করে দেখব তোকে আরো একবেলা পড়াতে পারবে কিনা।তাহলে ফাইনাল পরীক্ষা আসতে আসতে প্রিপারেশন ভালোভাবে নিতে পারবি।এভাবে হা করে তাকিয়ে আছিস কেনো?নে পড়া শুরু কর। ”

মা চলে গেল।আমি তব্দা মেরে বসে রইলাম।গতকাল সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্ত একের পর এক ঝটকা খেয়েই চলেছি।একবেলা পড়তে গিয়েই তুষার ভাইয়ার হাতের মার খেলাম।তাহলে দুইবেলা পড়তে গেলে আমার অবস্থা কি হবে।

কিছুক্ষণ পর মা আবার রুমে আসল।

” যে জন্য এসেছিলাম সেটা বলতেই ভুলে গেছি।তোর ফুপি ফোন করে বলল ওঁদের বাসায় যেতে।যা দেখে আয় কি জন্য ডেকেছে।”

” এখন পারব না যেতে।প্লিজ মা।আমি এখন ম্যাথ করছি।”

মা এসে জোড় করে বই খাতা বন্ধ করে দিলেন।আমার গায়ে উড়না জড়িয়ে দিতে দিতে বলল,

” বড়দের কথা না শোনা খুবই খারাপ নীলাশা।জলদি গিয়ে শোনে এসো কি কারণে ডেকেছে।”

মুখ গোমড়া করে চলে গেলাম পাঁচ তলায়।সবাই আমাকে শাসন করে।মা করে,তুষার ভাই করে,বাবা মাঝেমধ্যে করে।কি পেয়েছে টা কি সবাই!আমার মতামত কেউ শুনে না।আমি পরাধীন। আমার আকাশে স্বাধীনতা নেই।হায়!

ডোরবেল বাজাতেই ফুপি দরজা খুলল।আমাকে দেখতে পেয়ে জড়িয়ে ধরে হাসিমুখে বলল,

” এত দেরি লাগে আসতে?কখন ডেকেছি!চিকেন নুডুলস্ বানিয়েছি। খাবি আয়।”

আমি ড্রয়িংরুমে সূক্ষ্মভাবে নজর বুলিয়ে নিলাম।মনে মনে যার অনুপস্থিতি কামনা করছি সে নেই।যাক বাঁচা গেল।তুষ্টি আপু বোধ হয় নিজের রুমে পড়া নিয়ে ব্যস্ত।তাই ওখানে না যাওয়াই সঠিক কাজ।
ফুপি আমার হাতে নুডুলসের বাটি দিয়ে বলল,

“মন খারাপ করিস না নীল মনি।তুষার নাকি আজ মেরেছে তোকে?বেয়াদপ ছেলেটাকে ইচ্ছামত বকে দিয়েছি।এগুলো কোন অভ্যাস!এত বড় মেয়ের গায়ে হাত তুলে কেউ?দাঁড়া না তোর ফুপা আসুক বাসায়।তখন দেখবি ওঁর খবর ছুটাব আমি।”

ফুপির কথা শুনছি আর গপাগপ নুডুলস মুখে ভরছি।ফুপি কি আর জানে তাঁর ছেলের চোখে আমি একটা নবজাতক শিশু ছাড়া কিছু নই।এজন্যই তো ঠাস ঠাস দিয়ে আমার সফট গাল ফাটিয়ে দেয়।

ফুপি কিচেনে যাওয়ার পাঁচ মিনিটের মাথায় তুষার ভাই হাজির।আমার সামনের সোফাটায় হাত পা ছড়িয়ে বসে পড়লেন।
আমার নুডুলস খাওয়া মাঝপথেই আটকে গেল।উনি গভীর চোখে তাকিয়ে আছেন।খুবই অস্বস্তিকর ব্যাপার।
মুখের নুডুলসটা কোনোমতে গিলে বললাম,
” ভাইয়া…”

আমাকে থামিয়ে উনি বলে উঠলেন,
” তোর হাতে এক মিনিট সময়।খাবারটা শেষ করে আমার রুমে আয়।”

যেভাবে দমকা হাওয়ার মত এসেছিলেন সেভাবেই তিনি চলে গেলেন।সকালে মেরে টেরে ভর্তা বানিয়ে দিয়ে এখন রুমে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যাচ্ছে কেনো!
ধুর এটা নিমন্ত্রণ হলো কোথায়?উনি তো আমাকে হুমকি দিয়ে গেলেন।হুমকির কথা মনে পড়তেই তাড়াতাড়ি নুডুলসের বাটি খালি করলাম।

গুটিগুটি পায়ে হেঁটে হাজির হলাম তুষার ভাইয়ার রুমের সামনে।দরজা নক করতেই উনি বললেন,

” আয়।”

ভেতটে ঢুকতেই কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম।উনি নিজের রুমকে সবসময় ভুতুরে বানিয়ে রাখে কেনো বুঝি না।সেদিন এসে দেখলাম অন্ধকার।আর আজকে বেডের কাছে একটা টেবিল ল্যাম্প জ্বালানো। আবছা আলোয় রুমটা ছেয়ে আছে।

” দাঁড়িয়ে না থেকে আমার কাছে এসে বোস।”

তুষার ভাইয়ার আওয়াজ পেতেই সাবধান হয়ে গেলাম।বেড থেকে কিছুটা দূরে একটা সোফায় উনি বসে মোবাইল ঘাটছেন।

আমি উনার থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখে বসলাম।
ফোন থেকে চোখ না সরিয়েই বললেন,

” তোর চুলগুলোকে সবসময় পাখির বাসা বানিয়ে রাখিস কেনো বলতো!এগুলো আঁচড়ানো যায় না?কোনোদিন দেখবি পাখি এসে ভুল করে তোর মাথায় ডিম পেড়ে চলে গেছে।”

আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।উনি কি চুল প্রসঙ্গে কথা বলার জন্যই রুমে আসতে বলেছেন?চারতলা থেকে পাঁচতলায় আসতে হলে কি কেউ চুল আঁচড়িয়ে সেজেগুজে আসে?বাসায় যে অবস্থায় ছিলাম সেভাবেই তো চলে এসেছি।হঠাৎ উনি আমার চুল নিয়ে গবেষণা শুরু করল কেনো।উফ্! আমিই পাগল হয়ে গেছি নাকি আমার চারপাশের মানুষ গুলো পাগল?এটা নিয়ে আমি কনফিউজড।

গলায় বিনয়ী ভাব এনে জিজ্ঞেস করলাম,

” ভাইয়া..শুধু এজন্যই ডেকেছেন?”

উনি ফোন রেখে এবার মুখোমুখি সোজা হয়ে বসলেন।কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর আমার ডান হাতটা টেনে সামনে আনলেন।আমি রোবটের মত বসে ভাইয়ার কীর্তি- কলাপ দেখে যাচ্ছি।
হঠাৎ আমাকে অবাক করে দিয়ে তুষার ভাইয়া আমার হাতের তালুতে পরপর চারটে চুমো খেলেন।
চরম বিস্ময়ে আমার মুখ কিঞ্চিৎ হা হয়ে গেল।
আবুলের মত তাকিয়ে থেকেই জিজ্ঞেস করলাম,

” এটা কি করলেন ভাইয়া?”

উনি আামর হাত উল্টে পাল্টে কি যেন দেখছেন।হাতের তালুতে খুব আলতো করে স্পর্শ করে যাচ্ছেন।
তুষার ভাইয়া কি পাগল হয়ে গেল নাকি।আমার হাতে কি কোনো গুপ্তধন লুকানো আছে?নাকি উনি ইদানীং জ্যোতিষিবিদ্যা আয়ত্ত করছেন?আর সেটা আমার উপর প্রয়োগ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

” তোকে সকালে এই হাতেই মেরেছিলাম না?তাই চেক করছি হাতে কোনো জখম হয়েছে কিনা। নাহলে তো পড়ে আবার বলবি তুষার ভাইয়া মেরে মেরে রক্তাক্ত করে দিল।এখন দেখছি হাতে কিছু হয়নি।তাই তোরও আমার নামে বদনাম রটানোর কোনো চান্স নেই।”

” কিন্তু ভাইয়া একটু আগেই যেটা করলেন….”

উনি মুচকি হেসে বললেন,

” বাচ্চাদের মারলে আদর করতে হয়।তাই তোকে আদর করে দিলাম।স্কেল দিয়ে দুইবার আঘাত করেছি না?তাই এর ডাবল আদর করে দিলাম।”

তুষার ভাইয়ার মুখে বাচ্চা শব্দটা শুনতেই আমার দুই ভ্রু বিরক্ততে কুঁচকে গেল।রাগে মাথা দপদপ করছে।সোফা থেকে লাফ দিয়ে উঠে উনার দিকে আঙুল তুলে বলতে লাগলাম,

” আপনার আজাইরা আদরের আমার কোনো দরকার নেই। শুনে রাখুন! আমি বাচ্চা না।আমি যথেষ্ট বড় হয়েছি।আর কখনো যদি আমাকে বাচ্চা বলেছেন তো..”

” এই ফাজিল মেয়ে! তোর সাহস তো কম না।আমার দিকে আঙুল তুলে কথা বলছিস?দেই এখন আঙুল টা মট করে ভেঙে?

তুষার ভাইয়ার ধমক শুনতেই চুপসে গেলাম।আঙুল তুলে কথা বলা একদম ঠিক হয় নি।উনি আমার বড়।এটা একধরনের অভদ্রতা হয়ে গেল।মায়ের কানে এই খবর পৌঁছালে আমায় চুলের গোছা ধরে টান মারবে।

” সরি.. ভাইয়া!”

তুষার ভাইয়া আবারো ধমকে উঠে বললেন,
” কাল যদি সবগুলো পড়া ঠিকমত না পাই তাহলেই না বুঝবি কত ধানে কত চাল। সারাদিন বসে বসে মটু পাতলু দেখিস তাই না?পড়ায় যদি কোনো ফাঁকি দিস তাহলে তোকে আমি পিটিয়ে পিটিয়ে একবার মটু বানাব। এরপর মটু থেকে আবার পাতলু বানাব।রূপান্তর প্রক্রিয়া এভাবে চলতেই থাকবে।যা বাসায় গিয়ে পড়তে বস এখন।”

কোনো দিকে না তাকিয়ে একদৌড়ে ড্রয়িংরুমে চলে এলাম।বুকটা এখনো ধড়ফড় করছে।কি ডেঞ্জারাস লোক! কবে যে উনার হাত থেকে মুক্তি পাব আমি।কষ্টে আমার কেঁদে ফেলতে ইচ্ছে করছে।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here