তোর ছায়ার সঙ্গী হব,পর্ব ৩

0
2419

তোর ছায়ার সঙ্গী হব,পর্ব ৩
লেখক-এ রহমান


–ইভান তুই আমাদের বাসাতেই থেকে যেতে পারিস। অযথা আলাদা বাড়ির কি দরকার? আমাদের নিচ তলার ভাড়াটিয়া দেরকে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলে দেই। তোরা ওখানে শিফট হয়ে যা।
ঈশার বাবা আজহার মাহমুদ কথাটা বলে উত্তরের জন্য ইভানের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। ইভান একটু ভেবে বলল
–না বড় বাবা। আমি আলাদা থাকতে চাই।
ঈশার মা এগিয়ে এসে বললেন
–তোর কথা না হয় বাদ দিলাম। তোর মা আর ইলহামের কথা ভেবেছিস? এখানে থাকলে সবাই এক সাথে থাকতে পারতাম। রাজি হয়ে যা বাবা।
সবাই ইভানের কথার অপেক্ষায় তার দিকে তাকিয়ে আছে।আর ইভান তার সামনে ঈশার দিকে তাকিয়ে আছে। ঈশা আনমনে সামনে থাকা ছুরি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। ইভান বেশ বুঝতে পারছে সে ছুরির দিকে তাকিয়ে থাকলেও তার মন অন্যদিকে। কোন কিছু নিয়ে গভীর ভাবছে। যে কোন সময় তার হাত ছুরি লেগে কেটে যেতে পারে। তাই সে কিছুক্ষন ছুরিটার দিকে তাকিয়ে থেকে ঈশার হাত থেকে টান দিয়ে ছুরিটা নিয়ে নিলো। ঈশা সহ সবাই ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ঈশার দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
–আমি ভেবেছি বাবা। ৫ বছরে জিবনের থেকে এতো টুকু শিক্ষা নিতে পেরেছি যে দূরে থাকলে কষ্ট কম হয়। তাই দূরে থাকাই ভালো। তুমি ভেবনা। আশে পাশেই একটা বাড়ি নিবো।
ইভান কথা শেষ করে নিজের প্লেটে মনোযোগ দিয়ে খাবার খাচ্ছে। ঈশা চোখ তুলে ইভানের দিকে তাকাল। সবার দৃষ্টি এখন তাদের দুজনের উপর। ঈশা একটু ভেবে তার চাচির দিকে তাকিয়ে বলল
–চাচি তুমি আর ইলহাম এখানেই থাকবে। বাবা তুমি ভাড়াটিয়া দেরকে বলে দাও। চাচি কোথাও যাবেনা। দুই একজনের জেদের জন্য এতো মানুষের কষ্ট পাওয়ার কোন কারন হয়না।
ঈশার কথা শেষ হতেই ঈশার বাবা বলল
–আমি কালই বলে দিচ্ছি তাদেরকে সামনে মাসে বাড়ি ছেড়ে দিতে। ততদিন সবাই এই বাড়িতেই থাকবে।
সবাই ঈশার কোথায় স্বস্তি পেলো। কারন সবাই জানে তার কথা পছন্দ না হলেও ইভান কখনও না করবেনা। ইভান খাবার বন্ধ করে প্লেটের দিকে তাকিয়ে থাকলো। তার খুব রাগ হচ্ছে। কারন তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথা বলা ইভানের পছন্দ না। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস আর অধিকার দুইটাই শুধু ঈশাই রাখে। ইচ্ছে করছে এই মুহূর্তে খাবার ছেড়ে উঠে যেতে। কিন্তু টা সে করতে পারবেনা। কারন সে উঠে গেলে ঈশাও আর খাবেনা।আর ঈশার শরীর এমনিতেই খারাপ। না খেয়ে থাকলে আরও খারাপ হয়ে যাবে। তাই সে চোখ বন্ধ করে নিজের রাগ দমন করতে চেষ্টা করছে। সবাই ইভান কে দেখে ভালভাবে বুঝতে পারছে যে সে তার রাগ দমন করেত চেষ্টা করছে।পরিস্থিতি সামলাতে ইলহাম বলল
–কি মজা আমরা এখানেই থেকে যাব। আপির সাথে!
তার কথা শুনে ইভান তার দিকে রাগি চোখে তাকালে সে আর কিছু না বলে চুপসে যায়।ঈশা খাবার শেষ করে উঠে গেলো।
মাঝরাতে ইভান ফ্রিজ খুলে আইস্ক্রিম খাচ্ছিল আর বাটিতে ভালো করে ডেট চেক করে দেখছিল। আন্দাজ করতে চেষ্টা করছে কবে আনা হয়েছে।ইরাকে দেখে বলল
–আইসক্রিমটা কবে আনা হয়েছে রে?
ইরা বলল
–তোমরা আসার আগের দিন আপু এনেছে।
কথাটা বলে ইরা রান্না ঘরে গেলো। ইভান বাটিটা ফ্রিজে রেখে ঈশার রুমে দরজায় গিয়ে দারাল।ইশা বারান্দায় দরজার সাথে হেলানি দিয়ে বসে সামনে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে। সে বুঝতে পারলনা যে ইভান এসেছে। ইভান তার পাশে এসে বসে সামনে তাকিয়ে বলল
–আমার জন্য আইস্ক্রিম তুই এনেছিস?
ঈশা ইভানের কথা শুনে চমকে উঠলো। একটু ঘুরে ইভানের দিকে তাকাল। সে সামনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। ঈশা মাথা নিচু করে বলল
–বাসায় সব সময় আইস্ক্রিম আনা থাকে। শেষ হয়ে গিয়েছিল তাই এনেছি।
–সিরিয়াসলি! ৫ বছরে আমাকে এতোটা মিস করেছিস যে আমার পছন্দ গুলোকে নিজের পছন্দ ভাবতে শুরু করেছিস।
ইভানের কথা শুনে ঈশা একটু বিরক্ত হয়ে বলল
–ওটা একটা সামান্য আইস্ক্রিম। এভাবে ভাবার কিছু নেই।
ইভান এবার ঈশার দিকে ঘুরে তার চুলের কাঁটাটা খুলে দিলো। ঈশার অবাধ্য চুলগুলো সব সামনে এসে তার মুখে পড়লো। ঈশা বেশ বিরক্ত হল। কিন্তু ইভান হাসল। ঈশা চুলগুলোকে হাত দিয়ে ঠিক করতে গেলে ইভান তার হাত ধরে ফেলে। আর এক হাতে এক পাশের চুল গুলো কানে গুঁজে দিয়ে একটু কাছে আসে। নেশা ভরা কণ্ঠে বলে
–তুই কি সেই ঈশা যে জীবনেও এই বাড়িতে কোনদিন স্ট্র বেরি ফ্লেভার উঠতে দিস নি। ছোট বেলা থেকে তো তাই দেখে এসেছি। ৫ বছরে কি এমন চেঞ্জ হল যে স্ট্র বেরি ফ্লেভার তুই নিজে কিনে আনলি? বিষয় টা একটু অদ্ভুত না?
ইভানের কথা শুনে ঈশা একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। কারন ইভান যা বলেছে একদম ঠিক। স্ট্র বেরি ইভানের পছন্দ কিন্তু ঈশার একদম পছন্দ না। ইভানের জন্য সব সময় এই বাড়িতে স্ট্র বেরি আইস্ক্রিম থাকতো। কিন্তু ঈশা সব সময় টা ফেলে দিত কারন এর গন্ধটা সে সহ্য করতে পারেনা। ঈশার কাছ থেকে একটু দূরে গিয়ে বলল
–আমি তো জানি তোর অপছন্দের কোন জিনিস এই বাড়িতে রাখিস না। তাহলে কেন সবাইকে এই বাড়িতে থাকতে দেয়ার ডিসিশন নিলি।
ইভানের কথা শুনে ঈশা কড়া গলায় বলল
–তোমার জেদ আমার সাথে কিন্তু এসবের মাঝে সবাইকে কেন জড়াচ্ছ? অযথা সবাইকে কেন কষ্ট দিতে চাইছ?
ঈশার এক গুচ্ছ চুল হাতে নিয়ে নাকের কাছে এনে তার ঘ্রান নিতে নিতে বলল
–আমি তো সব সময় তোমাতেই বিভোর থাকি বাকি সব কিছু ভাবার সময় আছে আমার?
ইভানের এসব কথা শুনে ঈশার এবার বিরক্ত লাগছিলো। ঈশা তার চুল ইভানের হাত থেকে ছেড়ে নিয়ে বলল
–তুমি কি এসব বলতে এসেছ?
–না। আমি যা জানতে এসেছি তার উত্তর পাইনি। তাই যতক্ষণ পাইনি আমি এখানেই বসে থাকব আর তোকে এসব সহ্য করতে হবে।
ঈশা একটু বিরক্ত হয়ে বলল
–কি জানতে চাও?
ইভান ঈশার একটু কাছে এসে বলল
–জানতে তো অনেক কিছুই চাই কিন্তু তুই তো এখন বলবি না। তাই আপাতত আইস্ক্রিম কেন এনেছিস সেটা জানতে চাই।
–বললাম তো শেষ হয়ে গিয়েছিলো তাই এনেছি।
–টা বুঝলাম কিন্তু সেটা স্ট্র বেরি কেন?
ঈশা এবার বিরক্ত হয়ে ইভানের দিকে তাকাল। ঈশার বিরক্তি দেখে ইভান তার এক হাত ঈশার চুলের ভাজে ঢুকিয়ে দিলো। হাতের আঙ্গুলের ভাজে চুলগুলো নিয়ে হাত টা চুলের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত নিয়ে গেলো। তারপর এক আঙ্গুল দিয়ে ঈশার থুতনি ধরে মুখটা উপরে উঠিয়ে নিজের মুখটা তার কাছে নিয়ে গিয়ে বলল
–ছোট বেলায় তোকে সব সময় চুল বেধে রাখতে বলতাম কেন জানিস? কারন তোর এই খোলা চুল আমাকে খুব করে কাছে টানে।
ইভানের এমন কথা শুনে ঈশা একটু ভয় পেয়ে যায়। ইভানের হাতটা সরিয়ে দিয়ে বলে
–আসা করি তুমি তোমার উত্তর পেয়ে গেছো এখন এখান থেকে চলে যাও।
ঈশার কথা শুনে ইভান মাথা নিচু করে একটু হাসল। তারপর নিচের দিকে তাকিয়েই বলল
–তুই কি সত্যিই চাস আমি এই বাড়িতে থাকি। আমি এই বাড়িতে থাকলে আমার অত্যাচার থেকে তুই বাঁচতে পারবিনা। ভেবে দেখিস।
বলেই ইভান উঠে গেলো। ঘরের দরজা পর্যন্ত গিয়েই ঈশার কথা শুনে থেমে গেলো
–তোমার অত্যাচার থেকে আমি বাচতেও পারবোনা। যতদিন বেঁচে ছিলাম সেটাই অনেক।
ইভান ঈশার দিকে ঘুরে তাকাল। ঈশা আড় চোখে ইভানের দিকে তাকাল। বুঝতে পারল না সে রাগ করেছে না খুশি হয়েছে। ইভান আবার ঈশার কাছে চলে এলো। হাঁটু গেড়ে বসে এক হাতে ঈশার গাল আলতো করে ধরে বলল
–যেটা তোর কাছে অত্যাচার সেটা আমার কাছে ভালোবাসা। আর আমার এই ভালোবাসা শুধু তোর জন্য। আমার এই হৃদয়ে শুধু তুই থাকিস। আর কারও জায়গা নেই। আমার নিজের জন্যও না।
বলেই ঈশার গালে আলতো করে চুমু দিলো। ইভানের উষ্ণ ছোঁয়ায় ঈশা কেঁপে উঠলো। ঈশাকে ছেড়ে দিয়ে দরজার কাছে গিয়ে সানে তাকিয়েই বলল
–ঈশা অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পড় জান।
বলেই ইভান চলে গেলো। কিন্তু এই শব্দটা ঈশার ভেতরে ঝড় তুলে দিলো। কত বছর পর ইভানের মুখ থেকে এই শব্দটা শুনল ঈশা। না চাইতেও তার মুখে আজ হাসি ফুটে উঠলো।


ঈশা আর তার ফুপুত বোন সিমানা মার্কেটে গিয়েছিলো। বাড়ির সামনে রিকশা থেকে নেমেই দেখে ইভান দাড়িয়ে আছে। সিমানা ইভান কে দেখে বলে
–আরে ভাইয়া তুমি কই যাও?
ইভান একটু দাড়িয়ে তাদের দিকে ভালো করে দেখে বলে
–একটু বাইরে যাচ্ছিলাম। তোরা কই গেছিলি?
–মার্কেটে গিয়েছিলাম। তুমি তো আসার পর থেকে কোন খবরই নাই। এদিকে আসইনা।সারাদিন ওই বাড়িতে।
ইভান একটু হেসে ঈশার সামনে থাকা ছোট চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে বলল
–জানিসি তো ওই বাড়িতে আমার জানটা পড়ে থাকে। ওটাকে ছেড়ে কোথাও যেতে ইচ্ছা হয়না।
সিমানা মুখ চেপে হেসে বলল
–তা জানি। কিন্তু তাই বলে আমাদেরকে ভুলে গেলে চলবে?
–আসবো। এখন তো এখানেই আছি। পরে কোন এক সময় আসবো।
বলেই চলে গেলো। সিমানা ঈশাকে বলল
–তুই আগে আমাদের বাসায় চল। তারপর বাসায় যাবি।
সিমানার জেদ রাখতে না পেরে ঈশা তার সাথে ফুপুর বাসায় গেলো। অনেকটা সময় সেখানে থাকলো ঈশা। সিমানাকে তার সব জিনিস পত্র বুঝে দিয়ে ঈশা বলল
–আমি বাসায় যাচ্ছি। খুব টায়ার্ড লাগছে।
ফুপু ঈশাকে দুপুরে খেয়ে যেতে বলল। কিন্তু ঈশা বলল সে বাসায় গিয়ে গোসল করে তারপর খাবে। তাই আর কথা বাড়ালনা তার ফুপু। কারন জানে এখন যত কথাই বলুক ঈশা শুনবেনা। তার যেটা ঠিক মনে হয় সে সেটাই করে। ঈশা বাসায় আসার জন্য রাস্তায় হাঁটছে। বাসার কাছাকাছি চলে আসতেই হঠাৎ তার সামনে একটা বাইক দাঁড়ালো। ইশা একটু চমকে গেলো। বাইক থেকে একজন নেমে বলল
–কেমন আছো ঈশা?
তাকে দেখে ঈশা যেন শক খেলো। এতদিন পর আবার আরাফ কে দেখবে এভাবে সে ভাবেনি। তার মুখ থেকে কথা বের হচ্ছেনা। আরাফ আবার বলল
–কি হল ঈশা? কথা বলবে না আমার সাথে?
ঈশা খুব স্বাভাবিক ভাবেই বলল
–না বলার কোন কারন নেই তো? আপনি কবে এসেছেন?
–এই তো কিছুদিন হল। কিন্তু এভাবে তোমার সাথে যে দেখা হবে তা ভাবিনি? তুমি ভালো আছো তো?
ঈশা একটু ভেবে বলল
–হুম। ভালই আছি। আপনি কেমন আছেন?
আরাফ একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল
–ভালই আছি। তবে এর থেকেও ভালো থাকার কথা ছিল।
ঈশা তার কথার কোন উত্তর দিলনা।মাথা নিচু করে তাকিয়ে আছে। আরাফ ঈশার দিকে তাকিয়ে বলল
–অনেক বছর হল দেশের বাইরে ছিলাম। কিন্তু আসার পর এভাবে তোমার সাথে দেখা হবে এটা ভাবতেই অবাক লাগছে। যাক গে এখন কি করছ তুমি?
–কিছু না। বাসায় বসে আছি।
–কেন? এতো ব্রাইট একটা স্টুডেন্ট ছিলে তুমি। পড়ালেখা শেষ করে বাসায় বসে আছো কেন?
ঈশা একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল
–সবই আমার ভাগ্যের দোষ।
আরাফ একটু ভ্রু কুচকে ঈশার দিকে তাকিয়ে বলল
–এভাবে ভাগ্যের দোষ দিয়ে কি সব ঠিক হয়ে যাবে? যা হয়েছে তাতে তোমার কোন দোষ ছিলোনা। আরেক জনের দোষ নিজের ঘাড়ে কেন নিচ্ছ? এখান থেকে বের হও ঈশা। এই সম্পর্কের কোন ভিত্তি নেই। জোর করে কোন সম্পর্ক হয়না।
ঈশা আর কোন কথা বলল না। মাথা তুলে বলল
–আমি খুব টায়ার্ড বাসায় যাব।
তার কথা শুনে আরাফও আর কিছু বলল না। চলে গেলো। আরাফ যাওয়ার পর ঈশা উপরে তাকাতেই দেখল ইভান বারান্দায় দাড়িয়ে তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ইভানের দৃষ্টি কিছু বলতে চাইছে। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে ইভানের। ইভান ঈশাকে দেখে একটু বাকা হেসে ভিতরে চলে গেলো। ঈশাও চোখ নামিয়ে বাসার দিকে তাকাতেই তার বুকের ভিতরে এক অজানা ভয় গ্রাস করে নিলো। সে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। সে আবার ইভানের দাড়িয়ে থাকা দোতলা বেল্কুনিতে তাকাল। কিন্তু ভিতর থেকে সেটা বন্ধ। সে আর কিছু না ভেবে এক দৌড়ে বাড়ির দিকে গেলো। খুব তাড়াতাড়ি সিঁড়ি বেয়ে উঠছে। কিন্তু ভয়ে তার হাত পা কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে। সিঁড়ি ভেঙ্গে দোতলায় উঠতে যেন আজ অনেক সময় লাগছে। কিন্তু তাকে উঠতেই হবে। সে কোন রকমে উঠে কলিং বেল বাজাতে লাগলো। কেউ দরজা খুলছেনা। ঈশা বারবার সুইচ টিপেই যাচ্ছে। ঈশার বাবা দরজা খুলে দিলো। ঈশা হাপাতে হাপাতে বাবাকে জিজ্ঞেস করলো
–ইভান কোথায়?
ঈশার এভাবে অস্থির হয়ে ইভান কে খোঁজার কারন বুঝতে পারলনা কেউ। সবাই এসে দরজার সামনে দাড়িয়ে ঈশা কে দেখছে। ঈশার এভাবে ইভানের নাম নেওয়াটাও জেন তাদের কাছে অপ্রত্যাশিত। ইলহাম বলল
–ভাইয়া ঘরে।
ঈশার হাত থেকে সমস্ত ব্যাগ পড়ে গেলো। সবার পাশ কাটিয়ে সে ইভানের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। খোলার চেষ্টা করতেই বুঝল ভিতর থেকে লক করা। দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে চিৎকার করে বলল
–ইভান দরজা খোল। প্লিজ ইভান। আমার কথা শোন।
সবাই ঈশার দিকে তাকিয়ে তার পাগলামো দেখছে।কারন বোঝার চেষ্টা করছে। ঈশা তার বাবার দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল
–দরজা ভেঙ্গে ফেলতে হবে বাবা। ইভান কে ঘর থেকে বের কর।
তার কথা শুনে সবাই ভয় পেয়ে গেলো। একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে থাকলো।

চলবে…।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here