তোর ছায়ার সঙ্গি হব_২,সূচনা পর্ব

0
7334

তোর ছায়ার সঙ্গি হব_২,সূচনা পর্ব
লেখক-এ রহমান

–আমি তোর ছায়ার সঙ্গি হব জান। তোকে আগলে রাখবো সারাজীবন। তোর সব স্বপ্ন পুরন করবো আমি। আজকে আমার ইচ্ছাটা পুরন করে প্লিজ!

ইভানের আবেগ মিশ্রিত কথাগুলো ঈশার কানে আসতেই সে অবাক চোখে তাকাল তার দিকে। ইভান তার উত্তরের অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে। ঈশা জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বলল
–কি বলছ তুমি? তুমি কি পাগল?
–তোর জন্য!

ঈশার কথার প্রেক্ষিতে ছোট্ট করে উত্তর দিলো ইভান। ঈশা এবার একটু ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল
–এতদিন তোমার সব পাগলামি আমি মেনে নিয়েছি বলে এটাও মেনে নিবো বোকার মতো তা ভেবনা। এটা নিছক পাগলামি ছাড়া আর কিছুই না। এতদিন পর্যন্ত সব ঠিক ছিল কিন্তু বিয়ে? এটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।

ঈশার ঝাঁঝালো কথা গুলো ইভানের মাথায় রাগ চেপে দিলো। সে ঈশার এক হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলল
–কোনটাকে পাগলামি বলছিস? আমার ভালোবাসা? ছোটবেলা থেকে তোর প্রতি আমার অনুভুতি গুলো তোর কাছে নিছক পাগলামি মনে হয়? আমার এতো বছরের জমানো ভালোবাসার অধিকার থেকেই তোকে বিয়ে করতে চেয়েছি সেটা বাড়াবাড়ি বলছিস? আমি ভাবতাম তুই আমার মনের কথা সব বুঝতে পারিস। কিন্তু আমি ভুল। তুই কিছুই বুঝিস না। আমি মুখে ভালোবাসার যকথা বলিনি বলে কি আমার ভালোবাসার কোন মুল্য তোর কাছে নেই?

কথা শেষ করেই ঈশাকে গাড়ির সাথে চেপে ধরল ইভান। তার দিকে একটু ঝুকে খুব শান্ত গলায় বাঁকা হেসে বলল
–অনেক হয়েছে নাটক। আমার হাতে নষ্ট করার মতো এতো সময় নেই। আমি তোর প্রতি রুড হতে চাইনা কিন্তু তুই আমাকে বাধ্য করছিস। আমি তোর সব অন্যায় আবদার মেনে নিয়েছি। নিজেকে কষ্ট দিয়েও তোর কথাই আগে ভেবেছি। তোর প্রয়োজন হওয়ার আগেই তোর কাছে এসেছি। কিন্তু এসবের এই মুহূর্তে তোর কাছে কোন মুল্য নেই। অনেক ভেবেছি আমার ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে তোকেই যদি হারিয়ে ফেলি তাহলে সেই ভালোবাসার দিয়ে কি করবো আমি? শুধু আজকের জন্য তুই আমার এমন রুপ দেখবি যেটা মনে করে বাকি জীবনটা আঁতকে উঠবি।

উত্তপ্ত কথা গুলো ঈশার দিকে ছুড়ে দিয়েই তাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে সিট বেল্ট বেধে দিলো। তারপর নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো। ঈশা ইভানের দিকে একবার দেখে নিয়ে নেমে যেতে চাইলো। ইভান এক হাত দিয়ে শক্ত করে ঈশাকে ধরে ফেললো। স্মানে তাকিয়েই বাঁকা হেসে বলল
–আমার কাছ থেকে পালান এতো সহজ নয়। এক মাত্র আমি চাইলেই তুই মুক্তি পাবি। তার আগে নয়।

ঈশা ইভানের দিকে তাকিয়ে অসহায় দৃষ্টি নিয়ে বলল
–পাগলামি করোনা প্লিজ! এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত এভাবে নেয়া ঠিক হবে না। বাসায় জানাতে হবে। সবার সাথে কথা বলে আমরা ঠিক করবো।

ইভান সামনে তাকিয়েই খুব শান্ত ভাবে বলল
–আমার হাতে এতো সময় নেই জান। যা হচ্ছে চুপচাপ মেনে নে। তোর জন্য এটাই ভালো।

ঈশার চোখ ভরে এলো। সে ফিকরে ফিকরে কাঁদছে। ইভান তার দিকে না তাকিয়েও বেশ বুঝতে পারছে তার অবস্থা। কিন্তু এই মুহূর্তে তার যে কোন উপায় নেই। সে বাধ্য। আজ যদি ঈশার উপর জোর না করে তাহলে হয়ত অনেক দেরি হয়ে জাবে। আর ঈশা তার কাছ থেকে হারিয়েও যেতে পারে। কিন্তু ইভান কোন ভাবেই তাকে হারাতে পারেনা। কাজি অফিসের সামনে এসে গাড়ি দাঁড়ালো। ইভান গাড়ি থেকে নেমে ঈশাকে নামিয়ে টেনে ভিতরে নিয়ে গেলো। ঈশা ভিতরে গিয়ে অবাক হয়ে গেলো। সব কিছুই সাজানো গোছানো। তার মানে অনেক আগেই সব কিছু গোছানো হয়েছে। ঈশাকে শুধু আনার অপেক্ষায় ছিল। ইশাকে ছেড়ে দিয়ে ইভান কাজিকে উদ্দেশ্য করে বলল
–বিয়ে পড়াতে শুরু করুন।

ঈশা নিসচুপ হয়ে বসে আছে। মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছেনা। ইভান ঈশাকে ভালো করে দেখে নিয়ে তার পায়ের কাছে বসে চোখের দিকে তাকাল। তার দুই হাত নিজের মুঠোয় ধরে বলল
–প্লিজ জান পাখি যা হচ্ছে হতে দে। আমার উপরে দয়া কর। আমি তোর কাছে আমার জান ভিক্ষা চাচ্ছি। তোকে হারিয়ে বাঁচতে পারব না। তুই আমার অস্তিত্ব। তুই আমার সব।

ইভানের কণ্ঠের অসহায়ত্ব বুঝতে ঈশার দেরি হল না। কিন্তু সে কোন ভাবেই বুঝতে পারছে না ইভান আজ এমন আচরণ কেন করছে। সে জেদ করে বলল
–তুমি জোর করবে আমার উপরে? তুমি তো এমন ছিলে না?

ইভান এবার উঠে দাঁড়ালো। চোখ মুখ শক্ত করে এক হাতে ঈশার মুখ চেপে ধরে বলল
–করবো। প্রয়োজন হলে জোর করবো। তুই আমাকে এমন হতে বাধ্য করলি। আমি তো ভালবেসে বোঝাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুই তো আমার ভালোবাসার কথাই বুঝতে পারিস না। এবার এই রূপটাও দেখে রাখ।

বলেই ঈশাকে ছেড়ে দিলো পকেট থেকে বন্দুক বের করে নিজের মাথায় তাক করে বলল
–আমার হাতে বেশি সময় নেই। কবুল বলবি নাকি আমি শুট করবো?

ঈশা অসহায় হয়ে ইভানের দিকে তাকিয়ে আছে। সে ভালভাবে বুঝতে পারছে আজ কবুল না বললে যে কোন ধরনের অঘটন ঘটে যাবে। তাই আর অপেক্ষা না করে বলে দিলো। বিয়ে শেষ করে ইভান শুধু একটা কথাই বলল
–ঘৃণাই কর আর ভালোবাস তোকে আমার সাথেই থাকতে হবে।

————

বাড়ি ভর্তি লোকজন সবাই সোফার উপরে বসে আছে। সবার দৃষ্টি এক জায়গাতে স্থির। ইভান ঈশার হাত ধরে দাড়িয়ে আছে। ঈশা যেন বাক্রুদ্ধ হয়ে গেছে। তার চোখের পানি শুকিয়ে গালে দাগ হয়ে গেছে। সে অসহায় ভাবে নিজের দৃষ্টি সামনে মেঝেতে স্থির রেখেছে। ইভানের বাবা আফজাল সাহেব উঠে এসে ইভান কে সজোরে একটা থাপ্পড় দিলেন। এতে ইভানের হাত থেকে ঈশার হাত ছুটে গেলো। ঈশা আঁতকে উঠলো। থাপ্পড় টা ইভানের গালে পড়লেও ঈশার বুকের ভিতরে ক্ষত সৃষ্টি করলো। সে না চাইতেও চোখ দিয়ে নোনা পানি গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়লো। তবুও সে চোখ তুলে তাকাল না। কারন যেই মানুষটার জন্য সে কষ্ট পাচ্ছে। সেই মানুষটা আজ তার জীবন বদলে দিয়েছে। অথচ সে তার কারন জানেনা। ইভানের বাবা তার কলার চেপে ধরে বলল
–কেন এমন করলি? মেয়েটার জীবন নষ্ট করলি কেন বল?

ইভান নিজের দৃষ্টি নামিয়ে খুব শান্ত ভাবে উত্তর দিলো
–আমি ওর জীবন নষ্ট করিনি। নিজের জীবন বাচাতেই বিয়ে করেছি। আমি ঈশাকে ভালোবাসি। ওকে ছাড়া আমি বাচবনা।
–আমরা কি মরে গেছি? আমাদের বলতে পারিস নি? আমরা বিয়ে দিতাম তোদের।
ইভানের বাবার উত্তপ্ত কথা শোনার পর ইভান দাতে দাঁত চেপে বলল
–তোমাদের কি চোখ আছে?
তার কথা শুনে সবাই অবাক চোখে তাকাল। এই মুহূর্তে এই ছেলে মজা করছে এটাও কি সম্ভব?
–না মানে তোমরা কি আসলেই দেখতে পাও? সেটা নিয়ে কিন্তু আমার সন্দেহ আছে।
–ইভাননন……।

ইভানের কথার উত্তরে তার বাবা চিৎকার করে তাকে থামিয়ে দিলেন। ইভান তার বাবার দিকে তাকিয়ে ছল ছল চোখে বলল
–আজ না বাবা। আজ আমাকে মাফ করে দিও। আমি বলব। কারন আজ আমি চুপ করে থাকলে জীবনের অনেক বড় একটা জিনিস হারিয়ে ফেলব। এতো বছর ধরে ঈশার প্রতি আমার অনুভুতি গুলো কি তোমাদের চোখে পড়েনি? আমি ঈশাকে কতটা ভালোবাসি টা কি তোমাদের বলতে হবে তারপর বুঝতে পারবে? না বললে কি ভালোবাসা যায়না? আমি এতো বছরের ভালোবাসার অধিকার থেকে ঈশাকে বিয়ে করেছি। সবাইকে জানিয়ে বিয়ে করার মতো সময় এবং অবস্থা কোনটাই আমার ছিল না। থাকলে আমি অবশ্যই তোমাদের জানাতাম। আমি কোন কারন ছাড়া কোন কাজ করিনা এটা সবাই জানে। তাই ভরসা কর। আমার এতো বড় সিদ্ধান্তের পিছনেও কারন আছে।

ইভানের বাবা ঈশার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো
–তুইও কি একি কথা বলবি?
ঈশা কোন কথা বলল না। চোখ বন্ধ করে দুই ফোটা পানি ফেললো। ইভান ঈশার দিকে না তাকিয়েও বুঝতে পারল। কিন্তু সে ঈশার আচরনে অবাক হল না। হয়ত সে জানতো ঈশা কোন উত্তর দিবে না। তাই তো সে একটু ম্লান হাসল। মাথা তুলে বাবার দিকে অসহায় দৃষ্টি রেখে বলল
–আজ ঈশাকে কোন প্রশ্ন করোনা প্লিজ! জা জানার আমাকে জিজ্ঞেস কর। আমি তোমাদের সব কথার উত্তর দিবো।

কথা শেষ করেই ঈশার উদ্দেশ্যে তার দিকে তাকিয়ে বলল
–তুই উপরে জা। আমি দেখছি।
ইভানের কথা কানে আসতেই ঈশা দেরি করলো না। এক দৌড়ে উপরে চলে গেলো। ইভান ঈশার যাওয়ার অপেক্ষা করছে। ঈশা চোখের আড়াল হতেই সে তার বাবার দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে বলল
–কি জানতে চাও?
তার বাবা বলল
–ঈশার কিএই বিয়েতে মত ছিল?
ইভান মুখে হাসি নিয়েই একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ল। খুব শান্ত ভাবে বলল
–এখনো বুঝতে পারছ না? আমি ঈশাকে জোর করে বিয়ে করেছি। ওর মত ছিলোনা।
–ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেন এমন করলে?

–আমি ঈশাকে ভালোবাসি বাবা। আর আমি মনে করি ঈশার উপরে আমার জোর করার অধিকার আছে। আমার ভালোবাসার অধিকার। তোমরা মানো আর না মানো আমার কিছুই যায় আসেনা।
ইভানের কথা শুনে তার বাবা আবার তার উপরে হাত তুলতে উদ্দত হলেই ঈশার বাবা থামিয়ে দেয়। এতক্ষন সবাই চুপ করে বাবা ছেলের কথা শুনছিল মনোযোগ দিয়ে। কিন্তু এবার ঈশার বাবা আশরাফ চুপ করে থাকতে পারেনা। ইভানের বাবাকে সরিয়ে দিয়ে ইভানের সামনে দাড়িয়ে খুব শ্নাত ভাবে জিজ্ঞেস করে
–এই জোর করে তৈরি হওয়া সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি?

ইভান এবার চোখ তুলে তাকায়। তার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। কিন্তু নিজেকে সামলে নেয়। কারন তার দুর্বলতা সে কাউকে দেখাতে চায়না। আসলে এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সেও ভেবে দেখেনি তাদের এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি? ঈশা কি আদৌ সহজ ভাবে মেনে নিয়ে তার সাথে বাকি জীবন কাটাতে পারবে? নাকি সারাজীবন এই ঘটনার জন্য তাকে দোষারোপ করতেই থাকবে। সে কাপা কাপা গলায় বলল
–আমি জানিনা বড় বাবা।

ঈশার বাবা এবার ভয় পেলেন। তাহলে কি ইভান ভুল করে বসলো। কিন্তু ইভান তো ভুল করার মতো ছেলে না। সে তো না ভেবে কোন কাজ করেনা। তাহলে আজ কেন করলো। তাও আবার ঈশার সাথে যাকে সে কোন দিন কোন কষ্ট পেতে দেয়নি। তিনিও কাপা কাপা গলায় বললেন
–কেন করলে?

অবিশ্বাসের সূরে বলা কথাটা ইভান কে খুব আঘাত করলো। এই অবিশ্বাসটা মনে হয় তার পাওনা ছিল না । সে চেয়েও কিছু বলতে পারল না। অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকলো। মাথা নামিয়ে নিঃশব্দে হেসে বলল
–ঈশা আমার। আমি ওকে হারাতে পারব না। আমি অপরাধ করেছি তোমাদের সব শাস্তি আমি মেনে নিবো।

ইভানের কথা শেষ হতেই ইভানের বাবা খুব শান্ত গলায় বলল
–আমার বাড়িতে তোমার আর কোন জায়গা নেই।
–ভেব না বাবা। আমি তোমার সামনে আসবো না।

ইভান মাথা নিচু করে কথাটা বলতেই ইভানের মা সালেহা ডুকরে কেঁদে উঠলেন। এক মাত্র ছেলেকে এভাবে বাড়ি ছাড়া হতে দেখে তার কষ্ট যেন বাধ মানছে না। পারছেনা নিজেকে সামলাতে। ইভানের বাবা তার স্ত্রির দিকে তাকিয়ে বলল
–ও জা অপরাধ করেছে সেটার শাস্তি হিসেবে এটা খুবই নগন্য।

কেউ কোন কথা বলছে না। সবাই ইভানের শাস্তি মেনে নিয়েছে। ইভান বলল
–আমি শেষ বারের মতো একবার ঈশার সাথে কথা বলতে চাই।

বলেই কারও উত্তরের অপেক্ষা না করে সোজা উপরে গেলো। ঈশার রুমের দরজা খুলতেই দেখল রুম অন্ধকার। ঈশা বিছানায় বসে আছে সামনে জানালার দিকে তাকিয়ে। ইভান ধির পায়ে ঈশার পাশে নিচে হাঁটু গেড়ে বসলো। মাথা নিচু করে মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে। তার ভিতরে অসীম কষ্ট জমে গেছে। এই কষ্ট এক মাত্র ঈশাই দূর করতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে ঈশাও বুঝতে চাইছে না। তাই সে ঈশার চোখের দিকে তাকিয়ে তার কষ্টের সাগরে ভেসে যেতে চাইছে না। নিজেকে যথেষ্ট সামলে নিয়েই খুব শান্ত গলায় বলল
–আমি অনেক বড় অপরাধ করেছি তোর কাছে। কিন্তু বিশ্বাস কর জান পাখি আমার এই ছাড়া কোন উপায় ছিল না। আমি তোকে কখনো জোর করিনি। কিন্তু আজ না করতে চেয়েও বাধ্য হয়েছি। আমি সত্যিই নিরুপায়। জানি আমার উপরে তোর অনেক অভিমান জমে আছে। একদিন তুই ঠিকই বুঝতে পারবি। কিন্তু সেদিন আমি থাকবো কিনা জানিনা। জানিস তো পাখি তোর মুখ থেকে না ‘ভালোবাসি’ কথাটা শোনার আমার খুব ইচ্ছা। বেঁচে থেকে শুনতে পাব কিনা জানিনা। তবে মরে গেলেও একবার বলিস প্লিজ। তুই আমার অস্তিত। তোকে আমি অন্য কারও হতে দিতে পারিনা।

ইভানের কথা শুনে ঈশার খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু অভিমানটাও তো কম না। তাই চোখ বন্ধ করে দুই ফোটা চোখের পানি ফেলে বলল
–চলে যাও প্লিজ।

ইভান উঠে দাঁড়ালো। দরজার দিকে দ্রুত হেঁটে গিয়ে দরজা খুলেও দাড়িয়ে গেলো। সামনে তাকিয়েই বলল
–আমি যাচ্ছি। তোর সামনে আর আসবো না।

ঈশা চিৎকার করে বলল
–এসনা প্লিজ। আমি তোমার মুখ দেখতে চাইনা।

–সরি জান। পারলে মাফ করে দিস।

কথাটা বলেই ইভান দ্রুত পায়ে ঘরে থেকে বের হয়ে গেলো। আর ঈশা জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো। সবার সামনে দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো। গাড়ি স্টার্ট দেয়ার আগ মুহূর্তেই ইভানের ফোন বেজে উঠলো। পকেট থেকে ফোন বের করে নাম্বার টা দেখতেই চোখমুখ শক্ত করে ফোনটা ধরল। ওপাশ থেকে সশব্দে হাসির আওয়াজ আসলো। হাসি থামিয়ে ওপাশের ব্যাক্তিতা বলল

–প্রেমিকাকে জোর বিয়ে করার অপরাধে ঘর ছাড়া হল শহরের মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলর ইভান মাহমুদ। কাল সকালের নিউজ পেপারে এটা আসবে। এখন কি করবি? দূর থেকে কিভাবে সামলাবি সব? পারবি তো রক্ষা করতে তোর পাখিকে?

চলবে……?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here