স্ত্রীর অধিকার,পর্বঃ০৩

0
3016

স্ত্রীর অধিকার,পর্বঃ০৩
লেখিকাঃফারহানা_ইসলাম
২য় পর্বের পর থেকে,,,,,,,,,,,,,,,,,

তখন অর্নব আমাকে বলতে শুরু করলো ভাইয়া আমাদের সবার বড়।কিন্তু ভাইয়ার একটা সমস্যা আছে।তাই ভাইয়া বাসার মধ্যে ই থাকে।আমি তো ভাইয়াকে খুব ভালোবাসি।কিন্তু জানি না তবুও কেনো বাবা আমাকে জানালো না ভাইয়ার বিয়ের কথা।
অর্নবের কথা শোনে আমি বললাম হয়তো এটার পেছনে অন্য কোনো কারন আছে।তাই বাবা এমনটা করেছে।তোমরা প্লীজ বাবার ওপর রাগ করো না।
আমার কথা শোনে অর্নব আর অধরা বললো না ভাবী আমাদের কোনো রাগ নেই।।
,
,
হঠাৎ নিচতলা থেকে দাদীর কণ্ঠস্বর ভেসে আসলো।দাদী বলছে অনু অভ্রকে নিয়ে নিচে॥খাওয়ার সময় হয়ে গেছে।তাড়াতাড়ি আয়।
অভ্রকে বললাম অভ্র চলুন।নিচে সবাই ডাকছে।তখন অভ্র বললো আপনি যান।আমি খাবো না;;আমার ক্ষিদে নেই।
কথাটা শোনে আমি অভ্রের হাত ধরে বললাম কী বলছেন আপনি?প্লীজ চলুন।কথাটা বলে আমি অভ্রকে নিয়ে গেলাম।
আমি আর অভ্র নিচে পৌঁছে দেখি কেউ নেই।বোধ হয় এতক্ষণে সবার খাওয়া হয়ে গেছে।আমি কোনোমতে অভ্রকে ধরে চেয়ারে বসালাম।
প্লেটে ভাত বেড়ে তরকারি নিতে গিয়ে আমি হতবাক হয়ে অভ্রের মুখের দিকে রইলাম।আমাকে এইরকম দেখে অভ্র বললো কী হয়েছে অনু।আপনি এইভাবে কী দেখছেন??
তখন আমি বললাম অভ্র দেখুন না বাটিতে তো ডাল ছাড়া আর কিছু ই নেই।সব বাটি একেবারে ফাঁকা।
আমার কথা শোনে অভ্র বললো কী বলছেন অনু।দেখি আমি।কথাটি বলে ই অভ্র বাটিগুলো এগিয়ে নিয়ে দেখলো সত্যি ই বাটিতে ডাল ছাড়া আর কিছু ই নেই।
তখন অভ্র সুমি সুমি বলে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে কাউকে ডাকতে লাগলো।
সুমি এসে জিজ্ঞেস করলো কী হয়েছে বড় ভাইজান??

আজ কী তরকারি রান্না হয়নি??এইখানে শুধু ডাল কেনো??বাকি তরকারি গুলি কোথায়??(অভ্র)

আজ তো খাসির মাংস,চিংড়ি মাছ,ডাল আর সবজি রান্না করা হয়েছে।কিন্তু আম্মা বললো ওনারা খেয়ে যা বাকি থাকে সব বাহিরের ডাস্টবিনে যেনো ফেলে দিই।আমি তাই ই করেছি।।(সুমি)

সুমির কথা শোনে অভ্র আরো জোরে চেঁচাতে লাগলো।।অভ্রের চিৎকার শোনে বাড়ির সবাই সেখানে জড়ো হয়ে গেলো।দাদী অভ্রকে জিজ্ঞেস করলো কী হয়ছে ভাই??এত চিৎকার কেনো করছিস??
তখন অভ্র বললো দেখো দাদী এইবলে সুমিকে ইশারা করলো।তখন সুমি দাদীকে বাটিগুলো নিয়ে দেখালো।।
দাদী বললো আমি কিছু বুঝতে পারছি না।অনু তুই বলতো কী হয়েছে??
তখন আমি বললাম আসলে আমি আর অভ্র খেতে এসে দেখি বাটিতে ডাল ছাড়া আর কিছু ই নেই।
তখন দাদী বললো রিয়া আজ তো বাড়িতে অনেক কিছু ই রান্না হয়েছিলো।আর আমরাও খেয়েছি।তাহলে বাকি খাবারগুলো কোথায় গেলো??

হঠাৎ আমার জা পাশ থেকে বলে উঠলো তোমার মতো বস্তির মেয়ে এর থেকে উত্তম খাবার আর কী পাবে বলো??

কথাটা শোনে আমার খুব রাগ হলো।ইচ্ছা করছিলো রিয়াকে কিছু উত্তম-মধ্যম কথা শুনিয়ে দিই।কিন্তু তাও চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।

দাদী বললো চুপ করো রিয়া।অনু সম্পর্কে তোমার বড় জা হয়।আর বড়দের সাথে কীভাবে কথা বলতে হয় সেটা কী তুমি জানো না।নাকি ভুলে গেছো।

দাদীর কথা শোনে রিয়া চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ আমার শ্বাশুড়ি বলে আমি সুমিকে বলেছি আমাদের খাওয়ার পর বাকি খাবারগুলো যেনো ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।
তখন দাদী বলে কী বলছো বউমা।অভ্র আর অনু কী তাহলে না খেয়ে থাকবে??
আমার শ্বাশুড়ি মা বললো অভ্র আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করেছে।তাই এটা ওদের দুজনের শাস্তি।
মায়ের কথা অভ্র একটা চিৎকার দিয়ে বললো আপনি কী মানুষ।নাকি অন্যকিছু।কেনো আপনি আমার সাথে এমন অন্যায় করছেন??

অভ্রের কথা শোনে অভ্রের মেজো ভাই অভ্রকে মারতে চলে এসেছিলো।তখন আমি ওর সামনে গিয়ে বলি খবরদার।কোনোরকম অশান্তি করার চেষ্টা করবে না।
আমার কথা শোনে ছেলেটি(অভ্রের মেজো ভাই)এই কে তুমি??তুমি তো একটা বস্তির মেয়ে।তোমার এত বড় সাহস হয় কী করে আমাকে অপমান করার।
ওর কথা শোনে আমি বললাম মুখ সামলে কথা বলো।আমি বস্তির মেয়ে এইটা এখন আমার আর পরিচয় নয়।আমার এখন পরিচয় হলো আমি এই বাড়ির বউ।বড় বউ।আমাকে যোগ্য সম্মান দিয়ে কথা বলো।
আমার মেজো দেবর কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি দাদী বললো অনেক হয়েছে।অরূপ এইবার চুপ কর।আর অর্নব তুই অভ্রকে ওর ঘরে নিয়ে যা।আর সবাই সবার ঘরে চলে যাও।
,
,
সবাই সবার ঘরে চলে গেলো।আর আমিও নিজের ঘরে চলে গেলাম।হয়তো আজকে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে।রুমে ব্যালকোণিতে গিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি।হঠাৎ করে রবীন্দ্র সংগীত কানে ভেসে আসলো,,,,,,,,,,
ভালোবাসি,,,,,,ভালোবাসি
এই সুরে কাছে দূরে
জলে স্থলে বাজায় বাঁশি
ভালোবাসি,,,,,,,ভালোবাসি।
একটু পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলাম অভ্র গান গাইছে।অভ্র এত সুন্দর করে গান গাইতে পারে।অভ্রের দিকে এগিয়ে গিয়ে,,,,,,,,,,

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here