স্ত্রীর অধিকার,পর্বঃ০৭

0
3234

স্ত্রীর অধিকার,পর্বঃ০৭
লেখিকাঃফারহানা ইসলাম

এতটুকু বলে অভ্র থামলো।তারপর চোখ মুছে আবার বলতে শুরু করলো।
এইভাবে শুরু হলো আমার দুঃখের ইতিহাস।একবছর পর বাবা আমার কথা ভেবে আবার বিয়ে করে।যাতে আমি একটা মা পেয়ে যাই।
বাবার নতুন বিয়ের পর শুরু হয় আমার নতুন যন্ত্রণা।বাবা তো ব্যবসায়ের কাজে বাইরে ৬থাকতেন আর দাদী তো নিজের ঘরে ই বেশি থাকতেন।এই সুযোগে আমার সৎ মা আমার ওপর অনেক অত্যাচার করতেন।কিন্তু তিনি বাবা আর দাদীর সামনে এমন ভান করতেন যাতে তারা বিশ্বাস করেন যে উনি আমাকে খুব ভালোবাসেন।
,

,
এইভাবে কেটে গেলো দুই বছর।
একদিন রাতে যখন আমি ঘুমের ঘোরে ছিলাম তখন আমি দেখতে পাই আমার মা আমার মাথার পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আমি হঠাৎ করে মা বলে চিৎকার দিয়ে উঠি।তারপর আমার চিৎকার শোনে আমার দাদী আমার রুমে আসে।দাদী এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে কী হয়েছে রে অভ্র।আমি তখন উত্তর দেয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না।আমার পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছিলো।আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।
,

,
জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করি।দাদী আর বাবা আমার পাশে বসে আছে।বাবার চোখের কোণে পানি দেখতে পাই।
আমার জ্ঞান ফেরার পর বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো।আমি যখন উঠতে যাবো তখনি আমি আর আমার পা জোড়া দুটো নাড়তে পারি না।
তখন বাবা কাঁদতে কাঁদতে বলে অভ্র রে বাবা তুই আর আগের মতো হাঁটতে পারবি না।বন্ধুদের সাথে আর খেলতে পারবি না।
কথাটা শোনার পর আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না আমার কী হয়েছে।সেই থেকে শুরু হলো আমার অভিশপ্ত জীবন।
,

,
কথাগুলো বলে অভ্র থামলো।তখন আমি আমার শাড়ির আঁচল দিয়ে অভ্রের চোখের পানি মুছে দিতে দিতে বললাম আমি তোমার পাশে চিন্তা করিও না।আমি তোমাকে আগের মতো করে তুলবো কথা দিলাম।
আমার কথা শোনে অভ্র হঠাৎ করে আমাকে জড়িয়ে ধরে ফেললো।অভ্রের এমন কান্ড দেখে আমি নিজেও আবেগপ্রবণ হয়ে গেলাম।আমিও অভ্রকে জড়িয়ে ধরে বললাম আমি তোমাকে ঠিক করে তুলব ই।এটা আমার প্রতিজ্ঞা তোমার কাছে।
,

,
দুইদিন পর,,,,,,,
বাবা আমাদের সবাইকে নিচে ডেকে পাঠাইলেন।আমরা সবাই নিচে গিয়ে দেখলাম বাবা আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছেন।সবার উপস্থিতি পেয়ে বাবা বললেন,,,,,,,,,,,

শোন তোমাদের সবার সাথে আমার কিছু কথা আছে।।(বাবা)

কী কথা বাবা।।(রিয়া)

আসলে আমি অর্নবের বিয়ের ব্যাপারে তোমাদের সবার সাথে কিছু কথা বলতে চাই।।(বাবা)

মানে!!অর্নবের বিয়ে মানে!!কী বলছো এইসব??(শ্বাশুড়ি মা)

অর্নব একটা মেয়েকে ভালোবাসে।আর আমি চাই অর্নবের পছন্দের মেয়ের সাথে ওর বিয়ে দিতে।।(বাবা)

এইসব কী সত্যি অর্নব।।(মা)

জ্বী মা।(অর্নব)

কী বলছিস অর্নব??আমি তো তোর জন্যে আমার বোনের মেয়ে মিমিকে ঠিক করে রেখেছি।আমি চাই মিমির সাথে তোর বিয়ে হোক।।(মা)

শোন বৌ মা এই বাড়িতে আমার সিদ্ধান্ত ই শেষ সিদ্ধান্ত।আমি চাই অর্নবের পছন্দের মেয়ের সাথে ই ওর বিয়ে হোক।।(দাদী)

কী বলছেন মা আমার চাওয়ার কোনো মুল্য ই নেই।অভ্রকে তো আপনারা আমার থেকে কেড়ে নিয়েছেন।আর এখন অর্নব কে ও কেড়ে নিতে চাইছেন।।(মা)

বৌ মা তুমি বুঝার চেষ্টা করো!!(দাদী)

কিন্তু কে শোনে কার কথা!!আমার শ্বাশুড়ি অরূপ আর রিয়া তিনজনে ই দৌড়ে ওপরের ঘরে চলে গেলো।।
এর মধ্যে বাবা শুনিয়ে দিলেন সামনের সপ্তাহে অর্নবের বিয়ে।আর তিনি এটা ও বললেন সব দায়িত্ব কিন্তু অনু তোমাকে ই সামলাতে হবে।
,

,
রাত প্রায় বারোটা বাজতে চলেছে আমি বাড়ির সব কাজ শেষ করে উপরে যাচ্ছিলাম।হঠাৎ করে শোনতে পেলাম কেউ গুনগুন করে কথা বলছে।মানে ফোনে কারোর সাথে কথা বলছে।অাওয়াজটা পেয়ে আমি উৎসাহমূলকভাবে আওয়াজটাকে অণুসরন করতে লাগলাম।অনেকটা এগুতে দেখলাম আওয়াজটা অধরার ঘর থেকে ই আসছে।

এত রাতে অধরা ফোনে কার সাথে কথা বলছে।এই প্রশ্নটা মনের ভেতর ঘুরপাক করছে।একবার ভেবেছিলাম,,,,,,,,,,

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here