ভালোবাসার রাত Season_2,পর্ব (৪)

0
3529

ভালোবাসার রাত Season_2,পর্ব (৪)
রোকসানা_রাহমান

রাত গভীর পর্যবেক্ষনে কলম খুচিয়ে দেখায় যেইনা ডুব দিয়েছে তখনি সন্ধ্যা বলে উঠলো,,

“” তুমি কি সিগারেট খাও?””

রাত নিজের মনোযোগ খাতাতে রেখেই ছোট্ট করে বললো,,

“” না।””
“” তাহলে আমি সিগারেট কোথায় পাবো?””

এবার রাতের টনক নড়ে উঠলো। সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে বললো,,

“” তুই সিগারেট দিয়ে কি করবি?””
“” দরকার আছে। তুমি আমাকে এনে দাও!””
“” তোর কি এখন আমাকে সিগারেটের ধোয়া খাওয়ানোর ইচ্ছে জেগেছে নাকি?””
“” তোমাকে খাওয়াবো কেন? আমি ছেকা খাইছি। আমি খাবো!””

সন্ধ্যার কথাতে রাত চমকে উঠলেও সেটা প্রকাশ পাচ্ছেনা। শান্তস্বরেই বললো,,

“” ছ্যাকা খেয়েছিস মানে?””
“” উফ! তুমি ছ্যাকা খাওয়াও বুঝোনা? তুমি তো খুব বাহাদুরী দেখাও আমার থেকেও কত বড় অথচ ছ্যাকার মানেই বুঝোনা!””
“” এতো বকবক না করে আসল কাহিনি বল।””

সন্ধ্যার বিরক্তিমাথা মুখটা নিমিষেই লজ্জায়মেখে যাচ্ছে। যেমন তেমন লজ্জা না,মহিমায়নী লজ্জা যাকে বলে! লজ্জাতে সন্ধ্যা খাতাতে আকিবুকি আঁকতে আঁকতে চোখের চাহনি লুকোনোর চেষ্টা করছে। মুখে কোনো কথা নেই। এমনই এক ভাব যে,তার লজ্জা দেখেই রাত সব বুঝে নিবে।

রাত সন্ধ্যার হাত থেকে খাতাটা টেনে সরিয়ে বললো,,

“” চুপ করে আছিস কেন? আমার দিকে তাকাতো!””

সন্ধ্যা এক পলক তাকিয়ে সাথে সাথে আবার চোখ নামিয়ে নিয়েছে। এমন সন্দেহআশ্চর্য আচরনে রাতের ভেতরটা তখন ঢিপঢিপ করে উঠছে। ও কি তাহলে কচি বয়সের প্রেমে ডুবেছে?? কিন্তু কি করে সম্ভব??

রাত কিছুটা জোর গলায় আবার বললো,,

“” বলবি কিছু??””

সন্ধ্যা মাথা উপর নিচ করে হ্যা বুঝাতেই রাত নিজের দমটা বন্ধ করে আবার বললো,,

“” তাহলে বল!””

এবার হুট করেই সন্ধ্যার সব লজ্জা ভাগ করে নিজ থেকে আলাদা করে নিয়েছে। অনেকটা ঢিল মেরে ফেলে দিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো,,

“” পরশুদিন..””

রাত তাড়াহুড়োতে বললো,,

“” পরশুদিন কি?””
“” উফ! আমাকে বলতে দিবে তো। চুপ করে শুনো।””
“” ওকে বল।””
“”পরশুদিন ক্লাস শেষে গেইটে দাড়িয়ে তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম ঠিক তখনি…””
“” তখনি কি?””
“” ধুর বলবোইনা।””
“” কেন?””
“” তুমি মাঝখানে প্রশ্ন করে আমার লাভস্টোরিকে অপমান করছো।””
“” তোর লাভস্টোরি? তোর লাভস্টোরিও হয়ে গেছে?””
“” কেন আমার লাভস্টোরি হওয়া নিষেধ নাকি? বুঝেছি তুমি আমার লাভস্টোরির সাথে আমাকেও অপমান করছো। তোমাকে আর কিছু বলবোনা।””

সন্ধ্যা রাগ দেখিয়ে উঠে যেতে নিলে ওর হাতটা চেপে ধরে রাত। অসহায়গলায় বললো,,

“” করবোনা।””
“” কি?””
“” অপমান। প্রশ্নও করবোনা। বল না পরশুদিন কি হয়েছিলো!””
“” ঠিক তো?””
“” হুম।””

সন্ধ্যা এবার বেশ আরাম করে বসলো। পা দুটো চেয়ারের উপর তুলে ভাজ করে নিয়েছে। জ্ঞানী জ্ঞানী ভাব নিয়ে বললো,,

“” ঠিক তখনি দুটো ছেলে আমার সামনে দিয়ে হেঁটে গেলো। একটা ফর্সা তোমার মতো। আরেকটা কালোবর্নের। যে ছেলেটা কালো সে একটা কালো শার্ট পড়ে ছিলো,গলায় মোটা শিকলচেইন,চোখে কালো সানগ্লাস,হাতে প্লাস্টিক ফিতে,পায়ে কালো চামড়ার চিকন ফিতের জুতো। উফ! কি যে সুন্দর লাগছিলো না রাত ভাইয়া। আমিতো হা করে তাকিয়ে রইলাম। আর সাথে সাথে ক্রাশ এবং প্রেম একসাথে খেয়ে বসলাম। প্রথমে ক্রাশটা বেশি পার্সেন্ট থাকলেও এখন মনে হচ্ছে প্রেমটা বেশি ছিলো।””

সন্ধ্যার কথাতে রাত হা করে তাকিয়ে রইলো। এমন কালো পাহাড়ের প্রেমে পড়ে গেলো??

“” এক দেখায় তোর এতো কিছু হয়ে গেলো?””
“” হুম হলোইতো।””
“” তো,এটার সাথে ছ্যাকা কি করে আসলো??””
“”এসেছেইতো। আমি যে কাল সারাদিন ক্লাস না করে গেইটের সামনে দাড়িয়ে আমার কালা প্রেমের অপেক্ষায় ছিলাম সে কেন এলোনা?? তুমি জানো আমি কত আশা নিয়ে দাড়িয়ে ছিলাম? চিঠিও তো লিখেছিলাম। কিন্তু সে আমার সব আশা,সব প্রেম,আমার প্রেমময় চিঠি সব অক্ষরগুলোকে ভেঙে গুড়ো গুড়ো করে দিয়েছে। তুমিই বলো আমি এইটুকু মেয়ে হয়ে এতোবড় কষ্ট,এতো বড় ছ্যাকা কি করে সইবো?””
“” একদিন আসলোনা বলে তুই ছ্যাকা খেয়ে ফেললি?””
“” হুম। একদেখায় যদি প্রেম হয় তাহলে একদিন দেখা না হলে ছ্যাকা হবেনা কেন? অবশ্যই হবে।””

রাতের রাগে হাত-পায়ে জ্বলন শুরু হয়ে গেছে। ইচ্ছে করছে সন্ধ্যাকে কষে দুটো চড় মেরে বুঝিয়ে দিতে প্রেম আর ছ্যাকা মিলেমিশে এক হয়ে গেলে কেমন হয়।

“” এখন বলো,আমার সিগারেট কখন এনে দিবে?? আমার কিন্তু কালো কালার সিগারেট চাই।””
“” কালো লাগবে কেন?””
“” ওমা,আমার কালা প্রেমের শোক পালন করতে হলে তো কালোই লাগবে। আর আমি কি এমনি এমনি প্রেমে পড়ছি নাকি? তুমি জানোনা কালো আমার ফেবারিট কালার? কালো দেখলেই আমার খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে।আচ্ছা রাত ভাইয়া,তুমি কেন কালো হলেনা? তাহলে আমি তোমাকেও খেয়ে নিতাম।””
“” আমাকে খেয়ে নিতি?””
“” হুম। তবে তোমাকে খেতে আমার অনেক কষ্ট করতে হতো। তুমি যে সুঠামদেহির অধিকারি। এখন থেকে তুমি না খেয়ে থাকবে।””
“” কেন?””
“” যাতে তুমি চিকন ফিনফিনে হয়ে যাও। তাহলে আমার খেতে সুবিধা হবে।””
“” আমাকে খেয়ে কি করবি?””
“” পেটে নিয়ে ঘুরবো। আর সবাইকে বলে বেড়াবো,আমার রাত ভাইয়া আমার পেটে থাকে।””

হু! এসবি পারবি। আমি যা চাই তা পারবিনা। বুকে না রেখে পেটে রাখার প্লেন করে ফেলেছিস। কয়দিন পর বলবি রাতভাইয়া,তুমি পুচকি লাল পিপড়ে হলেনা কেন? তাহলে আমি তোমাকে পায়ে পিষে দিতাম। তুমি জানোনা লাল রঙ আমার কত অপছন্দের??? কিন্তু আমি যে অপেক্ষায় আছি তোর ভালোবাসায় পিষে যেতে। মিশে যেতে তোর মনের হাজারও রঙের রংধনুটাতে! রাত ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,,

“” সন্ধ্যা রুমে যা।””
“” কেন?””
“” আমার ঘুম পাচ্ছে।””
“” কিন্তু আমার সিগারেট?””

সিগারেটের কথা শুনতেই রাতের চোখদুটো অগ্নিলিলায় লিলায়িত। একটা কেন হাজারও সিগারেট ওই লিলাতে জ্বলে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। কিন্তু রাগটাকে চোখের পাতায় আড়াল করে বললো,,

“” আমি এনে দিতে পারবোনা।””
“” কেন?””
“” আমার কাছে টাকা নেই।””
“” টাকা নেই মানে? তুমি এতো দামড়া ছেলে অথচ সামান্য একটা সিগারেট কেনার টাকা নেই?””
“” না নেই।””
“” তাহলে মামির কাছ থেকে নাও,আম্মু-আব্বুর কাছ থেকে নাও। আমার কাছ থেকেও নিতে পারো।””
“” আমি কারো কাছ থেকে নিতে পারবোনা। তুই কি এখন যাবি?””
“” তুমি এমন চোখ বন্ধ করে কথা বলছো কেন?””
“” ঘুমাচ্ছি তাই।””

সন্ধ্যা রাতের চোখের সামনে হাতটা নাড়িয়ে বললো,,

“” দাড়িয়ে দাড়িয়ে ঘুৃম?””
“” হুম।””
“” তোমার এখনি ঘুমাতে হচ্ছে? তোমার জন্য আমি আমার কালা প্রেমের শোকটাও পালন করতে পারলাম না। তুমি একটা পচা-পচা-গন্ধপোকার মতো পচা!””

সন্ধ্যা বিরবিড় করতে করতে বের হয়ে গেলো।

~~

তীব্র নিকোটিনের গন্ধ ঠেকছে রাতের নাকে। ঘুমের ঘোরে গন্ধটা বারবার মাথাটা নাড়িয়ে দিলেও তখনো বুঝে উঠতে পারছিলোনা রাত। এপাশওপাশ করে ঘুমের মাঝেই বিভোর। কিন্তু কারো লাগাতার কষ্টায়িত কাশির চটে রাত লাফিয়ে উঠলো। কি হচ্ছে বুঝার জন্য চারপাশে চোখ বুলাচ্ছে। সজাগ থাকায় গন্ধটা এবার ব্রেনে প্রচন্ড চাপ লাগিয়েছে। বিছানা ছেড়ে চটজলদি লাইটটা অন করতেই রাতের মাথা নষ্ট হওয়ার উপক্রম। নিজের রুমের এককোনে বসে আছে সন্ধ্যা। কালো কাপড়ে নিজেকে মুড়িয়ে নিয়েছে। কালো ঝলমলে কাধছাড়া খোলা চুল,চোখে কাজল,ঠোঁটেও কি কালো লিপস্টিক লাগিয়েছে? নাহলে এতো কালচে রঙ হেসে উঠে আছে কেন?? কিন্তু তা নিখুতভাবে বুঝার সময় নেই রাতের। কালোরাঙা ঠোঁটদুটোতে চারআঙুলে চেপে আছে কালো জ্বলন্ত সিগারেট। রাত দৌড়ে সিগারেটটা ধরতে যাবে তার আগেই সন্ধ্যা দ্বিতীয় দফায় কেঁশে উঠেছে। কাঁশতে কাঁশতে দম যায় যায় অবস্থা। রাত ওর পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বললো,,

“” তুই সিগারেট কই পেলি?””
“” আমি কিনে এনেছি। তোমার মতো আমি দামড়ি না হলেও আমার কাছে অনেক টাকা আছে। তুমি আমার লাভস্টোরির শোক পালন করতে না দিলে কি হবে? আমি তো পালন করবোই। আমার পেহেলা পেহেলা পেয়ার!””

সন্ধ্যা কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসতেই ওর হাত চেপে ধরলো রাত। সিগারেটটা শক্তমুঠোতে চেপে ধরে আছে সন্ধ্যা।

“” সন্ধ্যা,ওটা আমাকে দে বলছি। তোর হাতে লেগে যাবে।””
“” দিবোনা। আমি আমার কষ্ট ভুলবো। আমার কালা প্রেম কেন এলোনা? কেন ছ্যাকা দিলো আমাকে? কেন কেন কেন????””
“”তোর কেন এর উত্তর পরে দিচ্ছি,আগে এটা ছাড়!””
“” কেন ছাড়বো? আমিতো এখনো ভালো করে খাইনি। পেটে ঢুকার আগেই কাশির সাথে সব বেড়িয়ে আসছে,সব যদি বেড়িয়ে আসবেই তাহলে এগুলো কেন খায়?””

এই মুহুর্তে সন্ধ্যার কথার উত্তর দেওয়ার অবস্থায় নেই রাত। রাতের হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে সিগারেটটা পুনরায় মুখে পড়লো সন্ধ্যা। এবার বেশ ক্ষেপে গেলো রাত। কিছুটা জোরপুর্বক সিগারেটটা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। দুজনের দস্তাদস্তিতে সিগারেটের অগ্নিমুখটা গিয়ে রাতের হাতে লেগেছে। রাত নিচু শব্দে আহ! করে উঠতেই সন্ধ্যা নিজের হাতটা সরিয়ে নিয়েছে। তাতে যেন রাতেরও সুবিধা হলো, সিগারেটটা নিয়ে মেঝেতে ফেলে দিয়েছে। সন্ধ্যা বেশ ভয় ভয় নিয়ে রাতের ঝলসে যাওয়া জায়গায় হাত দিতে গেলে রাত ওকে আটকে দিলো।

“” তোর মুখে বিশ্রী গন্ধ করছে সন্ধ্যা। যা দাঁতটা ব্রাশ করে শুয়ে পড়।””

সন্ধ্যা কাদুকাদু কন্ঠে বললো,,

“” তোমার বুঝি খুব লেগেছে? সরি রাত ভাইয়া।””
“” কোথায় যে লেগেছে সেটা যদি বুঝতি!””
“” বুঝবোনা কেন? আমি কি কানা? এইতো আমি দেখতে পারছি,তোমার হাতে লেগেছে।””
“” হুম। যা রুমে যা।””

সন্ধ্যা চলে যেতেই রাত উঠে দাড়ালো। মেঝেতে পরে থাকা আংশিক বেঁচে থাকা জ্বলন্ত সিগারেটটা উঠিয়ে নিলো। এই সিগারেটটার মতো আমার ভেতরটাও কি তুই এভাবে জ্বালিয়ে শেষ করে দিতে চাচ্ছিস,স্বপ্নবধু?? এদিকে আমি তোকে আমার বউ বানানোর স্বপ্ন নিয়ে প্রতিটা রাতে চোখ বন্ধ করছি একটি নতুন আশার দিনের জন্য আর তুই কি করছিস?? তোকে এতো এতো আগলে রেখেও কেন আমার মাঝে বন্দী করতে পারছিনা?? যত বড় হচ্ছিস তত আমার জালকে ছিড়ে ছিড়ে বের হয়ে আলগা হয়ে যাচ্ছিস। তুই কবে আমার ভেতরটা বুঝার চেষ্টা করবি?? আমি পাগল হয়ে গেলে???

সিগারেটের শেষ অংশটুকু শেষ হওয়ার আগেই নিজের হাতে চেপে ধরলো রাত। সন্ধ্যার বেখেয়ালির জ্বালিয়ে দেওয়া জায়গাটার ঠিক পাশে। পাশাপাশি দুটো ঝলছে যাওয়া বৃত্তের দিকে তাকিয়ে বললো,আমি তোর পাশে ঠিক এভাবে সারাজীবন থাকার জন্যে অপেক্ষীয়মান অনলে জ্বলছি আর তুই এক পলকের কালা পাহাড়কে দেখে প্রেমে ধসে পড়ছিস,আবার ছ্যাকা খেয়ে সিগারেট খেয়ে শোক পালন করছিস,সাথে আমাকেও পুড়িয়ে মারছিস। আমাকে এতো জ্বালাচ্ছিস তো এর সব শোধ আমি তুলবো- তুলবো-ঠিক তুলবো। শুধু সময়ের অপেক্ষায় আছি।

~~
আজকে সন্ধ্যার এসএসসি পরীক্ষা শুরু। সারারাত নির্ঘুমে কাটিয়েছে রাত। সন্ধ্যার পরীক্ষা নিয়ে নয়,যেখানে সন্ধ্যার সিট পড়েছে সেইখানটার জন্য। ছেলেদের থেকে দুরে দুরে রাখার জন্য যত কৌশল আছে সব ঢেলে দিয়ে অতিরিক্ত থাকলে সেটাও প্রয়োগ করেছে সন্ধ্যার উপর। তবুও মনের ভেতরে ভয়েরা কুকড়িয়ে উঠে। পরীক্ষা গার্লস স্কুলে নয় অন্য স্কুলে দিতে হবে। আবার না জানি কোন ছেলের উপর ক্রাশ খেয়ে কোন ভয়ংকর ঘটনা ঘটায়!

পরীক্ষা শেষে রাত সন্ধ্যাকে নিয়ে বাসায় ফিরছে। এনিয়ে বিনিয়ে বারবার জানার চেষ্টা করছে নতুন কিছু ঘটিয়েছে নাকি। কিন্তু ওকে তো স্বাভাবিকই লাগছে। তাহলে কি এবার একটু সুস্থির নিশ্বাস নেওয়া যায়??

~~

মুখের মধ্যে নরম ভারী কিছুর চাপ পড়াতে রাতের ঘুম ভেঙে গেলো। চোখ মেললেও কিছু দেখতে পারছেনা। মুখের উপরে খসখসে কিছু একটা বারবার ঘষা লাগছে। বারবার নড়ে উঠাতে বুঝতে পারলো সন্ধ্যার পেট ছুয়ে আছে রাতের নাক।

রাত দম বন্ধ করে বলে উঠলো,,

“” নিশ্বাস আটকে মারবিতো,বালিশ চেপে ধরে মেরে ফেলনা। পেট দিয়ে চেপে ধরে আছিস কেন? একটু শান্তিতে মরতে দে।””
“” উফ! তোমার ফোনটা কোথায়? খুজে পাচ্ছিনা।””
“” ফোন খুজার জন্য এভাবে মেঝেতে পা ঠেকিয়ে উপুত হতে হবে? তাও আমার মুখের উপর দিয়ে? বুদ্ধী কি তোর হবেনা?? তুই কি এখনো ছোটটি আছিস রে সন্ধ্যা? তোর বড় হওয়ার সাথে সাথে যে আমার অনুভূতিগুলোও জড়তা কাটিয়ে উঠতে চাচ্ছে,সেটা বুঝছিস না?””
“” তুমি কি বিড়বিড় করছো রাত ভাইয়া? আমার সুড়সুড়ি লাগছে। চুপ করে থাকতে পারোনা? মোবাইলটা কোথায় রেখেছো?””

রাত সন্ধ্যার কোমড়টা পেচিয়ে ধরে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলো। উঠে বসে হাপাতে হাপাতে বললো,,

“” এতো রাতে আমার ফোন দিয়ে কি করবি?””
“” আমার একটা কল আসবে।””
“” তোর কল? আমার নাম্বারে? তাও এতো রাতে?? কে করবে?””
“” রিমান!””

রাত আতংকভরা কন্ঠে বললো,,

“” রিমানটা কে?””
“” ঐ যে আজ এক্সাম হলে আমার পাশে যে বসেছিলো সে!””

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here