ভিনদেশি_তারা পর্ব-৭

0
2011

ভিনদেশি_তারা
পর্ব-৭
#লেখনীতে-ইশরাত জাহান ফারিয়া

১৭.
‘ না জানিনা, আই মিন বুঝতে পারছি না।!’

আমি অভিমানী গলায় বললাম, ‘ আমরা সবাই একসাথে গল্প করছি তুমি সেখানে যাচ্ছোনা কেন? তুমি সবার সাথে দেখা করো, কথা বলো আমার সাথে বলছোনা কেন? আমি কি করেছি?’

‘ রিল্যাক্স চিটটরা! আমি যাচ্ছিলামই নিচে। টায়ার্ড ফিল করছিলাম তাই এখানে বসেছিলাম।’

‘ আমার সাথে এতোদিন দেখা করোনি কেন? সবার সাথেই তো করলে!’

‘ আসলে আমি একটু বিজি ছিলাম। একটা প্রজেক্ট নিয়ে আটকে গিয়েছিলাম সেটাই সাতদিন ধরে কমপ্লিট করলাম। মাঝেমধ্যে বাইরে গেলে ওদের সাথে দেখা হতো কিন্তু তখন তুমি থাকতে না।’

‘ বুঝলাম।’

‘ কি বুঝলে?’

‘ আমি তোমার ফ্রেন্ড নই!’

বলে চলে আসতে নিলেই ক্লেভ আমার হাত ধরে কাচুমাচু মুখ করে বললো, ‘ তুমি আমার খুব ভালো বন্ধু। আমি সত্যি বলছি। গড প্রমিজ!’

‘ ওকে। এবারের মতো মাফ করলাম। নেক্সট টাইম আর কথাই বলবোনা।’

ক্লেভ আমার গাল টেনে দিলো। তারপর কিছুক্ষণ আমাকে আগাগোড়া পরখ করে বললো, ‘তোমাকে বার্বিডল লাগছে। হা হা!’

‘ মজা করছো?’

‘ না। সত্য বলছি।’

‘ ভালো। বাই দ্যা ওয়ে, আমরা কি রাতে এই তাবুতে থাকবো নাকি?’

‘ হ্যাঁ। ক্যাম্পিংয়ে গেলে আমরা তাবুই ব্যবহার করি। এখানে তো আর বাড়িঘর বানাতে পারবোনা।’

‘ খাবো কি?’

‘ আমি সব নিয়ে এসেছি।’

‘ আচ্ছা চলো নিচে যাই।’

‘ হুম চলো।’

আমি আর ক্লেভ নিচে নেমে এলাম। অনেকক্ষণ কথাবার্তা বলার পরে ঠিক করলাম আশপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখবো। সেজন্য তাবুতে সবার ব্যাগপত্র রেখে জামাকাপড় পাল্টে নিলাম। তারপর দল বেঁধে বেরুলাম জায়গাটা ঘুরে দেখার জন্য। আশপাশে অনেক পাহাড়। গাছ-গাছালি, ঝোপঝাড়ের স্তূপ পেরিয়ে চোখে পড়লো সুন্দর স্বচ্ছ একটা ঝরণা। টলটলে পানি পাহাড়ের গা বেয়ে নিচে সমতলে পড়ছে, ফলে জায়গাটা একটা ছোটখাটো পাহাড়ি নদীর আকৃতি ধারণ করেছে। পানি বরফের ন্যায় ঠান্ডা। পানির নিচে দেখা যাচ্ছে স্বচ্ছ পাথরের টুকরো। আমি কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গিয়েছি প্রকৃতির এই স্নিগ্ধ, মোহনীয় রুপে। সুন্দরের কারিগর এই সৌন্দর্য আমাকে দেখার সুযোগ করে দিলেন। জেনিফাররা সবাই হইহই করে পানিতে নেমে পড়লো। আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ক্লেভ জিজ্ঞেস করলো, ‘তুমি নামবেনা?’

‘ এখানে কি সাপ নেই? যদি কামড়ে দেয়?’

‘ ধুর বোকা। এখানে সাপ আসবে কোত্থেকে। চলো। মজা হবে।’

আমি ভয়ে ভয়ে নামলাম। কোমড় পর্যন্ত পানি, বরফের মতো ঠান্ডা। আমি কেঁপে উঠলাম। ক্লেভ হেসে বললো, ‘ তোমার অবস্থা তো দেখছি খুব খারাপ।’

‘ মোটেও না।’

আমি মারোলাদের সাথে পানি দিয়ে ছিঁটাছিঁটি কর‍তে লাগলাম। এক পর্যায়ে আলিয়া আমার দিকে পানি ছিঁটিয়ে দিতেই গিয়ে পড়লো বেচারা প্যাটিসনের উপর। সে মাত্র শুকনো কাপড় পরে কিনারে দাঁড়িয়েছিলো। ব্যস, শুরু হয়ে গেলো ঝগড়া। সবাই হাসতে লাগলাম। অমন সময় ক্লেভ তার টি-শার্ট খুলে ফেললো আর ঝাঁপিয়ে পড়লো পানিতে, সাথে একটানে প্যাটিসনকেও নামালো। বেচারা প্যাটিসনের রাগে নীল হয়ে যাওয়া মুখটা দেখে আরও একদফা সবাই হেসে দিলাম। ক্লেভ প্যাটিসনকে বললো, ‘এখানে এসেছি মজা কর‍তে। আর তোমরা ঝগড়া করছো? ভালোভাবে মিলে না চললে আজই ফিরে যাবো।’

আলিয়া বললো, ‘স্যরি।’

প্যাটিসন রাগটা গিলে নিলো। বললো, ‘আমিও স্যরি।’

১৮.
রাতেরবেলা আমরা মুরগী পুড়িয়ে বার্বিকিউ করলাম। সাথে আরো অন্যান্য খাবার, কিন্তু সেগুলো খাওয়া আমার জন্য নিষিদ্ধ। যাইহোক, খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই গোল হয়ে বসলাম। উদ্দেশ্য সবাই মিলে একটু গানবাজনা করা। প্রথমে জেনিফার গান গাইলো,

Ellie Goulding lyrics—-

“Love Me Like You Do”
You’re the light, you’re the night
You’re the colour of my blood
You’re the cure, you’re the pain
You’re the only thing I wanna touch
Never knew that it could mean so much, so much.
You’re the fear, I don’t care
‘Cause I’ve never been so high
Follow me to the dark
Let me take you past our satellites
You can see the world you brought to life, to life.
……….
What are you waiting for?
Fading in, fading out
On the edge of paradise
Every inch of your skin is a holy grail I’ve got to find
Only you can set my heart on fire, on fire
Yeah, I’ll let you set the pace
‘Cause I’m not thinking straight
My head’s spinning around I can’t see clear no more
What are you waiting for?

জেনিফার খুব সুন্দরভাবে গানটা শেষ কর‍্তেই সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লো ক্লেভের উপর। ও নাকি খুব ভালো গান করে। কিন্তু সে গো ধরেছে গান গাইবেনা মানে গাইবেনা। সবাই ওর জেদের কাছে হার মেনে নেওয়ার পরে আমি নড়েচড়ে বললাম, ‘একটু গাইলে কি অমন ক্ষতি হবে তোমার?’

ক্লেভের মুখটা চকচক করে উঠলো। বললো, ‘তুমি শুনবে?’

‘ হুম।’

‘ আমি অতো ভালো গান গাইনা।’

জেনিফার মুখ ভেঙিয়ে বললো, ‘জানি জানি। ফাঁকি দেওয়ার মতলব!’

‘আমি মুখ টিপে হাসলাম। বললাম, ‘গাও না প্লিজ।’

এলক্লেভ গিটার হাতে নিলো। ওদের ইংরেজি গান আমি অতো পছন্দ করিনা। তবে ওর গলায় এই গানটা সত্যিই দারুণ লাগলো। আমি যেন ফিল করতে পারলাম।

Elvis lyrics –
“Can’t Help Falling In Love”

Wise men say
Only fools rush in
But I can’t help falling in love with you
Shall I stay?
Would it be a sin
If I can’t help falling in love with you?

Like a river flows
Surely to the sea
Darling, so it goes
Some things are meant to be
Take my hand,
Take my whole life, too
For I can’t help falling in love with you

Like a river flows
Surely to the sea
Darling, so it goes
Some things are meant to be
Take my hand,
Take my whole life, too
For I can’t help falling in love with you
For I can’t help falling in love with you.

ক্লেভ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার স্পষ্ট মনে হচ্ছে ও যেন আমার জন্যই গানটা গাইছে। আশেপাশে যেন আর কেউ নেই। কি আশ্চর্য! আমার হঠাৎ অমন লাগছে কেন? পাহাড়ের উপর আগুন জ্বালিয়ে গোল হয়ে বসে থাকা একদল আমেরিকান বন্ধুদেরকে তো আমার চোখে পড়ছেনা? শুধু নীল চোখের যুবকটির উপর আমার বেহায়া চোখ দুটো আটকে আছে। থালার মতো গোল চাঁদটা উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছে। আশেপাশে বুনোগন্ধী হাওয়া।

১৯.
গান গাওয়ারত অবস্থায় আমি চকিতে একবার তাকালাম ক্লেভের দিকে। চাঁদটা ঠিক ওর মাথার পেছনে রুপোলি আলো ঝরাচ্ছে! ওর কপালের কাছে ছোট ছোট চুল লেপ্টে আছে! আমি রুপো রঙা আকাশের পানে তাকিয়ে রইলাম শুধু।গায়ে লাগছে ঠাণ্ডা হিমেল হাওয়া। আমি বেশ জড়োসড়ো হয়ে বসে রইলাম। ক্লেভ গান গাওয়া শেষ করলো। সবাই হাততালি দিলাম। রবার্ট হুইস্কি নিয়ে এসেছে সাথে করে। গ্লাসে ঢেলে সবাইকে খেতে দিলো। মারোলা আর আমি নিলাম না। এসব খাওয়া আমাদের ধর্মে মানা। ক্লেভ নিলো, তবে সে খাচ্ছে আস্তে আস্তে, একটু একটু চুমুক দিচ্ছে। দুটো তাবু খাটানো হয়েছে। একটাতে মেয়েরা, অন্যটাতে ছেলেরা। যাইহোক, সবাই আধমাতাল হয়ে ঘুমাতে গেলো। মারোলাও বেশ ক্লান্ত, সেও চলে গেলো। আমার বেশ ভালো লাগছিলো, তাই গেলাম না। আসলে আমার কাছে সবকিছু নতুন, তাই একটু নীরবে সবকিছু অনুভব করতে চাই।

একটা ঠাণ্ডা মৃদু হাওয়া ছুঁয়ে গেল পুরো শরীর জুড়ে। কুয়াশা নেমে আসছে পাহাড়ের বুকে। সবুজ রঙা উঁচু উঁচু পাহাড়চূড়ার উপরে ভেসে বেড়াচ্ছে ধোঁয়া ধোঁয়া মেঘের কুণ্ডলী। আকাশে ছুটে চলা নিশাচর পাখিরা ডানা ঝাপটে উড়ে যাচ্ছে সূদুরে,বিস্তৃতির আড়ালে! ঘন সাদা কুয়াশার আড়ালে চলে যাচ্ছে সবকিছু। কেমন অদ্ভুত আবহাওয়া, তার উপর ঠান্ডা হাওয়া!গা শিরশির করে উঠে! এমন কেন রাতটা?

কুয়াশা আর মেঘ মিলে রাতের আকাশটাকে ধোঁয়াটে করে রেখেছে। হঠাৎ বেশ ক্লান্তবোধ করলাম। হাত-পা মেলে শুয়ে পড়লাম, বড্ড ভালো লাগছে। এই মাতাল করা বাতাস ভীষণ ভালো লাগছে! পিঠের নিচে চাপা পড়া খোলা চুলগুলো সুড়সুড়ি দিচ্ছে গালে,চোখে! হঠাৎ কে যেন আমার চুলগুলো সরিয়ে দিল,গুজে দিল কানের পেছনে। আমি ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলাম। তাকাতেই দেখি ক্লেভ, হাসছে ও। আমার এতো ভয় কর‍তে লাগলো যে এক্ষুনি মরমর দশা। বললাম, ‘ ক ক কি হয়েছে? তুমি ঘুমাওনি?’

‘ না। তোমাকে কোম্পানি দিতে এলাম।’

কেমন জড়ানো গলা ওর। আমি ভয়ে দূরে সরে গিয়ে বললাম, ‘দূরে থাকো প্লিজ!’

ক্লেভ ভ্রু কুঁচকে তাকালো। নীল চোখগুলো কেমন চকচক করে উঠলো। বললো, ‘মানে?’

‘ তুমি ড্রাংক! তোমার নিজের উপর কন্ট্রোল নেই হয়তো।’

ক্লেভ শব্দ করে হাসলো। বললো, ‘আমি ফিট আছি। রিল্যাক্স, আমি আপাতত নেশায় বুদ হয়ে নেই।’

‘ রিয়েলি?’

‘ গড প্রমিজ!’

‘ওয়েল। তো ঘুমাওনি যে?’

‘ তোমার সাথে গল্প করতে ইচ্ছে করছিলো।’

আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘কেন?’

‘ কারণ তোমাকে আমার ভালো লাগে। আই মিন টু সে তুমি খুব ভালো মেয়ে।’

থতমত খেলো ক্লেভ। আমার হাসি পেলো এবং সঙ্গে সঙ্গে হেসে দিলাম। ও বোকার মতো আমার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘কি?’

‘ কিছুনা। কি যেন বলছিলে তখন?’

‘ গল্প করবো তোমার সাথে।’

‘ কি গল্প?’

‘ উমম…জানিনা।’

আমি কিছুক্ষণ ভেবে ক্লেভকে বললাম, ‘প্রথমদিন যখন তোমার সাথে আমার দেখা হয়, তখন মারোলা হাত নাড়িয়ে তোমাকে ডাকলেও তুমি কোনো রেসপন্স না করে বেয়াদবের মতো বাড়ির গেইট লাগিয়ে ভেতরে চলে গিয়েছিলে তখন আমার তোমার প্রতি এতো রাগ হচ্ছিলো, ইচ্ছে করছিলো খুন করে ফেলি।’

ক্লেভ অবাক হয়ে বললো, ‘ তাই?’

‘ হুম। কিন্তু তুমি অমন করেছিলে কেন?’

ও একটা হতাশ নিঃশ্বাস ফেলে বললো, ‘তখন দাদী সামনে ছিলো। যদি দেখতো হাত নাড়িয়ে কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বলছি নির্ঘাত ওর পোষা কুকুরটা আমার পেছনে লেলিয়ে দিতো।’

‘ এরকম করবে কেন?’

‘ জানিনা। এটা দাদীর অভ্যাস, এমনকিছু দেখলেই কুকুর দিয়ে আমাকে ধাওয়া করায়, তুমি বিশ্বাস করবেনা।’

আমি বললাম, ‘হয়তো ওনার মানসিক সমস্যা আছে।’

‘ হুম। বয়স হয়েছে তো, তাই। এমনিতে অনেক ভালো, যাকে ভালো লাগবে তাকে নিজের সবকিছু দিয়ে দেবে।’

আমি মনখারাপ করে বললাম, ‘ আমাকে মনে হয় ওনার ভালো লাগেনি।’

ক্লেভ বললো, ‘মোটেও না। সেদিন তোমরা চলে আসার পর তোমার রুপের বর্ণনা দিতে দিতেই বেচারি কাহিল৷ তোমাকে নাকি ওর বেশ ভালো লেগেছে।’

‘ সত্যিই? কিন্তু অমন রেগে থাকে কেন সারাদিন?’

‘ রাগ থেকেই ওর ভালোবাসা খুঁজে নিতে হয়। তোমাকে কিন্তু বেশ পছন্দ করেছে। নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াবেও বলেছে!’

আমি বেশ কৌতূহল নিয়ে ওর দাদীর গল্প শুনতে লাগলাম। ও খুব সুন্দর করে কথা বলতে জানে।
এইরকম একটা দিন তার জীবনে আসবে সেটা আমার বিষণ্ণ মস্তিষ্ক কোনোদিন ভাবতেই পারেনি!এই রাত! উঁচু পাহাড়ের উপর বসে থাকা। যেন নেই কোনো পিছুটান। জীবন বুঝি এইজন্যই।
জীবন সুন্দর! তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ছোট্ট পৃথিবীটাতে ছোট্ট একটা জীবন কিন্তু খুব দামী।তাই জীবনে কোনো আক্ষেপ,খেদ রাখা উচিৎ নয়।বুক ভরে প্রকৃতির গন্ধ নিলাম,মন্দ না!

এখান থেকেই সবকিছু দেখা যাচ্ছে। পাহাড়ের ঢালের ওপাশে, গ্রামের শেষমাথায় ছোট্ট পাহাড়ি ঝরণার কলকল ধ্বনি বেশ জোরালো শোনাচ্ছে। আমি এককথায় মুগ্ধ। মনে হচ্ছে এত মুগ্ধ এ ছোট্ট জীবনটাতে কখনোই হইনি। আমার আফসোস হলো, কেন কবি হলাম না? কবিদের মতো ভাবতে শিখলাম না! সত্যিকারের একজন কবি হলে এই পাহাড়িয়া পরিবেশে বসে এতক্ষণে কবিতার খাতা ভরে ফেলতো!”
আমি আবৃত্তি করলাম,

‘ আকাশে জমেছে শীতরাতের
কুয়াশা/ সবুজ ঘাসে আছে একবুক
মুগ্ধতা /মেঘেরা রেখেছে লুকিয়ে আরো কিছু
শুভ্রতা।’

?” যারা দন্ডায়মান, উপবেশন ও এলায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি বিষয়ে চিন্তা-গবেষনা করে এবং বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি এসব বৃথা সৃষ্টি করেননি; আপনিই পবিত্রতম! অতএব আমাদেরকে জাহান্নাম হতে রক্ষা করুন!”

~ [ সূরা : আল-ইমরান, আয়াত – ১৯১]

চলবে….ইনশাআল্লাহ! ভুল ত্রুটি মাফ করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here