তুমি অন্য ধর্মের,পর্ব -৩
রোমান্টিক থ্রিলার
-শাহরিয়ার আবিদ
আবিদ পার্কে হাটছিল। তার মন টা খারাপ হাঁটছিল একমনে। তারপর সামনে তার চোখ যায়। সে দেখল তার সামনে আবির আর প্রিয়ন্তি বসে আছে। তার দুজুনে গল্পে করায় ব্যস্ত ছিল। এটা দেখে আবিদ তার নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না। সে বার বার তার চোখ কঁচলালো।না সে ঠিক দেখছে। আবিদ আরেকটু সামনে এগিয়ে গেল। তাদের কথা শুনতে লাগল।
-প্ল্যানটা একেবারে সঠিক হয়েছে।(আবির)
– হুম। দেখতে হবে না কে করেছে।(প্রিয়ন্তি)
-সব কাজ এক্কেবারে প্ল্যান মোতাবেক হচ্ছে।
– হুম আর কোনো রকম ২ টা দিন এভাবে চললে হয়।
আবিদ আর তাদের কথা শুনতে পারল না। আবিদের কাছে ছোট একটি মেয়ে এসে জানতে চাইল মালা কিনবে কিনা। আবিদ সরাসরি না বলে দিল।তারপর আবার কি ভেবে মেয়েটাকে ডাক দিল আবিদ।
-তোমার নাম কি?
– ফারিয়া।
-আচ্ছা আমাকে একটা কাজ করে দিতে পারবে? যদি পারো তাহলে তোমাকে আমি ৫০ টাকা দেব?কি পারবেতো।
– হুম।
– তাহলে ওদের(আবিরদের দেখিয়ে বলল) একটা ছবি তুলতে হবে সামনে থেকে। কিন্তু সাবধান যাতে ওরা বুঝতে না পারে।
-পারব।
আবিদ নিজের মোবাইলটা দেয়। তারপর মেয়েটি সুন্দর করে ছবিটি তুলে দেয়।
(আবিদের শখ কিন্তু গোয়েন্দা হওয়া। তাই সে গোয়েন্দাতে কাজ করে। শখের বসে গোয়েন্দা সে।)
আজকে সকাল থেকে আবিরকে কেন জানি সন্দেহ হচ্ছে। তারপর সে প্রিয়ন্তির কথাগুলো কেন জানি তার কটকা লাগছে।সে ভাবতে ভাবতে বাইকের কাছে চলে আসে।তারপর বাসার দিকে যায়।
তখন রাত হয়ে গেছে। বাসায় চলে গেল। দেখল আবির ও এসেছে। আবিরের চোখ গুলো হাল্কা ঘোলাটে। কিন্তু এখন তার চোখ সম্পূর্ণ কালো।আবিদ লক্ষ্য করল। আবিদ জিগ্যেস করতে গিয়েও করল না।
তারপর আবিদ আবিরকে আরেকটু ভালো করে পরীক্ষা করার জন্য। আবিদ দোকান থেকে কোকা কোলা নিয়ে এল। আবির কিন্তু কোকা কোলা খায় না।কিন্তু এখন আবিরকে দেয়ার সাথে সাথে খেয়ে নিল।
তারপর তারা গোসল করে খেয়ে দেয়ে গুমিয়ে পরল। আবির কিন্তু মোটেও শান্ত শিষ্ট নই। সে কখনো রাত বারোটার আগে ঘুমাই না। আজ ১০.৩০ টায় খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। আবিদ আবিরের এমন আচরন দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছে। তার মনে সন্দেহ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
রাতে আবিদের ঘুম ভেঙ্গে গেল।আসলে সে প্রিয়ন্তির এমন আচরণ, হঠাৎ বদলে যাওয়া আবিদ কিন্তু মেনে নিতে পারছে না।
তখন হঠাৎ তার চোখ যায় তার পাশের কাঠে শুয়ে থাকা আবিরের দিকে। আবির কোলবালিশ ছাড়া ঘুমাতে পারে না। একবার আবিদ আবিরের কোলবালিশ নিয়ে ফেলে। ঐ দিন আবির পুরা রাত ঘুমাতে পারে নি। কিন্তু আবির এখন কোলবালিশ ছাড়া দিব্যি ঘুমিয়ে আছে। আবিরের নাক ডাকার অব্যাস আছে। কিন্তু আজকেতো সে নাক ডাকছে না।
আবিদ চিন্তায় পড়ে গেল। আবিরের হঠাৎ বদলে যাওয়া, প্রিয়ন্তির এমন আচরণ। আবিদ কিছু বোঝে ওঠতে পারল না।
আবিদ গিয়ে এক কাপ কফি বানালো সেটি নিয়ে সে বেলকনিতে গেল। দাঁড়াল। তারপর পুরা ঘটনা একবার চিন্তা করল। তারপর সে তার মোবাইলে তোলা ছবিটি দেখল (আবিদের মোবাইল দুটি একটি ভেঙ্গে যায় আরেকটি আছে)। সেখানে ছবিতে আবিরের হাসিটা কেমন রহস্য ময়ী আর অপরিচিত লাগল। মনে মনে বলল আবিরের হাসিতো এমন নই। কোথাও কোনো গন্ডগোল রয়েছে।
সকালে ওঠে আবিদ কলেজে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল।আবির ওয়াশরুমে তখন আবিরের মোবাইলে মেসেজ আসে। আবিদ কৌতহল বসত আবিরের মোবাইলটি হাতে তুলে মেসেজটি দেখে।
-MISSION COMPLETE. YOU COME FRANCE.
TAKE CARE.
634892″‘-+$.
আবিদ মেসেজের মানেটা বুঝতে পারল না। হঠাৎ এ ধরনের মেসেজ তাকে কে পাঠাবে। আবিদ পুনরায় মোবাইলটি নিয়ে মেসেজটির নাম্বারটি দেখে চিনতে পারে। এটি আমেরিকান নাম্বার।
আবিদ ব্যাপারটা ভালো ভাবে বুঝতে পারলো না।তবে তার মনের সন্দেহটা ঠিকি রয়েছে। আবির ওয়াশরুম থেকে বের হয়। আবির মেসেজটি লক্ষ্য করে। আবিদ লক্ষ্য করল মেসেজটি দেখার পর আবিরের চেহারা কেমন একধরনের হয়ে গেল। আবিদ বলল
-কিরে ভার্সিটিতে যাবি না?(আবিদ)
-না। আজকে কেমন জানি খারাপ লাগছে?(আবির)
-এতক্ষন তো ভালো ছিলি এখন আবার মত পাল্টালি যে।
-না রে খারাপ লাগতেছে।
আবিরের ভার্সিটির না যাওয়া ব্যাপারটি আবিদের কাছে ভালো মনে হল না। সন্দেহ হচ্ছে। সে এখানে রহস্যের ঘন্ধ পাচ্ছে।
আবিদ আজ ভার্সিটিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।কিন্তু তা আবিরকে জানাল না। আবিদ ভাবল একটু বাইরে গিয়ে দেখি।বাইরে এল খেয়াল এদিকে প্রিয়ন্তির বাবা আসছে। আবিদ প্রিয়ন্তির বাবা কে এফ বি তে দেখেছে।
প্রিয়ন্তির বাবা আবিদকে চিনে না। প্রিয়ন্তির বাবা আবিদের থেকে এসে জিগ্যেস করল
-এখানে আবিদ নামের কেউ আছে?(প্রিয়ন্তির বাবা)
-হ্যাঁ আন্কেল আমি। (আবিদ)
-তুমি জানো। আমার মেয়ে কোথায় আছে? আমি প্রিয়ন্তির বান্ধবির থেকে শুনেছি ও নাকি কাল বিকেলে তোমার সাথে দেখা করে। তারপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সে কাল রাতে বাড়ি ফিরেনি।বাবা আমার মেয়েটি তুমি জানো বল?
– কাল প্রিয়ন্তি বাড়ি ফেরেনি।
(তারপর প্রিয়ন্তির সাথে কালকের সব ঘটনা বলে আবিদ। শেষে জানতে চাই প্রিয়ন্তির ঠোঁটের নিচে তিল আছে নাকি। প্রিয়ন্তির বাবা বলে আছে।)
আবিদ কাল প্রিয়ন্তিকে দেখা সম্পূর্ণ বর্ণনা করে প্রিয়ন্তির বাবাকে। এটি শুনে প্রিয়ন্তির বাবা স্তব্দ হয়ে যায়। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
আবিদ এতক্ষনে যা বুঝে ফেলেছে। সে দৌঁড়ে তার রুমে গিয়ে সে অবাক হয়ে গেল। সে থমকে দাঁড়াল।
চলবে
(আবিদ কেন অবাক হল?প্রিয়ন্তি কি সত্যি এধরনের ব্যবহার করতে পারে?আবির বদলানোর কারণ কি?)