তুমি অন্য ধর্মের,পর্ব-৫

0
1817

তুমি অন্য ধর্মের,পর্ব-৫
রোমান্টিক থ্রিলার।
শাহরিয়ার আবিদ

আবিদ অনেক চেষ্টা করল মেয়েটির চেহারা দেখার জন্য।অবশেষে দেখল। মেয়েটিকে দেখে চিনে ফেলল।

এটাতো তানিয়া। তানিয়া কেন এখানে। (তানিয়া হলো আবিরের গার্লফ্রেন্ড।)। আবিদ কেমন যেন গুলিয়ে ফেলছে।

তানিয়ার সাথে তো আবিরের ব্রেকআপ হয়ে গেছে একমাস আগে। তাহলে তানিয়ার এখানে জড়ানোর কি কারণ। নিজেকে নিজে প্রশ্ন করল আবিদ।

-আচ্ছা জিহাদ এখন কটা বাজে?(আবিদ)

– ৪.১৯ স্যার।(জিহাদ)

– ও।

-চল যাওয়া যাক।

তারা সব কিছু চেক করার পর যখন বিমানে ঢুকল। আবিদ আর জিহাদ যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল। কারণ তাদের সাথে রিভলবার গুলো ধরতে পারেনি।

রায়হান আর তানিয়ার প্রতি নজর রয়েছে আবিদের। জিহাদতো প্লেন ছাড়ার কিছুক্ষন পর ঘুমিয়ে পড়ল। আবিদ ভাবতে লাগল সব ঘটনা। কেমনে কি হল? কোনটার সাথে কোনটার যোগসূত্র? আর সে আবির আর প্রিয়ন্তিকে কিডন্যাপ করার কোনো কারণ খুজে পেল না। এখন আপতত তার কাজ রায়হান আর তানিয়াকে ফলো করা।

অনেক্ষন পর বিমানটি ফ্রান্সের মাঠিতে ল্যান্ড করল।
ইউরোপ কান্ট্রির দেশ এটি। ঠান্ডাও রয়েছে হাল্কা।

-স্যার এখানে কোথায় থাকব আমরা?(জিহাদ)

– ওটা নিয়ে তোমাকে টেনশন করতে হবে না। আমরা কাজ যেটা করতে আসছি তা নিয়ে ভাবো।(আবিদ)

-জ্বি আচ্ছা।

কিছুক্ষন পর স্যার ওরা কই যাচ্ছে । ওইতো কালো গাড়ি করে। তখনি একটি ছেলে আবিদের বয়সি তাদের ডাক দিল। তাদের দিকে এগিয়ে এল। (আবিদের এক বন্দ্বু শফিউল থাকে ফ্রান্সে। সে এখানে এক বড় ব্যবসায়ী। আবিদ ফ্রান্সে আসার কথা তার বন্দ্ধুকে জানাই। সব ঘটনা খুলে বলে। শফিউল তাকে আশ্বাস দেয় যে তাদের সাহায্য করবে এই কেসের ব্যাপারে।

একে অপরকে জড়িয়ে ধরল। তারপর আবিদ বলল

-তোর নিজস্ব গাড়ি আছে না।(আবিদ)

– হ্যাঁ।(শফি)

-চল্ কালো গাড়িটাকে ফলো করতে হবে। তারাতারি।

এটা বলে তারাও গাড়িতে ওঠে পরল। ড্রাইভিং সিটে বসল শফি।তার পাশে আবিদ এবং পেছনে জিহাদ।

তারপর তারা কালো গাড়িটাকে অনুসরণ করতে লাগল।
তারা গাড়িটার পিছনে কিছুক্ষন যাওয়ার পর দেখল তারা একটা মধ্যম মানের হোটেলের সামনে এসে থামল কালো গাড়িটা। তাদের দেখাদেখি আবিদদের গাড়িটাও কালো গাড়িটার চেয়ে কিছুটা দূরে পার্কিং করিয়ে। আবিদরা হোটেলের ভিতর গেল।

ওদিকে রায়হান আর তানিয়া তাদের জন্য দুটি রুম বুকিং করে ফেলল। রুম দুটি আবিদরা দেখে নিল ২০২ ও ২০৩ এ দুটি রুম।
শেষে আবিদরা শফির বাসায় ফিরে এল। বাসায় তারা ফ্রেশ হয়ে খেতে খেতে শফি বলল

– এখন কি করবি আবিদ?(শফি)

-ওদের অনুসরণ করতে হবে।(আবিদ)

-তুই এভাবে ওদের কতক্ষন অনুসরণ করবি?

-যতক্ষন না মূল মানুষটির খোঁজ না পাচ্ছি।

-ওও।

-তোর থেকে একটা সিমকার্ড দিতে পারবি যোগাযোগ করতে হবে তো।

-হ্যা হবে তো।

– ঠিক আছে খেয়ে ওটে দিস।

তারপর জিহাদ বলে ওঠল।

-স্যার এখন যদি ওরা আমাদের ফাঁকি দেয়ার জন্য অন্য কোথাও চলে যায় তখন কি হবে। আমরাতো ওদের আর খুজে পাবোনা। (জিহাদ)

-তুমি চিন্তা করো না জিহাদ। আমি রায়হানের চুলে একটা পিন লাগিয়ে দিয়েছি। যার মাধ্যমে ওরা কোথায় আছে লোকেশনটা দেখতে পারব আমার মোবাইলে। (আবিদ)

-তাহলে তো ভালো।

তারা খাওয়া শেষ করে কিছুক্ষন গল্প করে যে যার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরল।

সকালে শফির ডাকে ঘুম ভাঙলো আবিদের। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে গেল। দেখল জিহাদ আগে থেকে এসে বসেছে। আবিদও গিয়ে বসল। নাস্তা করে নিল তারা।

তারপর আবিদ তার মোবাইল বের করে দেখল ওদের অবস্থান এখনও ওই হোটেেল আগের জায়গায় দেখাচ্ছে।

– ওরা তো কোথাও যাচ্ছে না দেখি।(আবিদ)

-স্যার আমার মেয়েটার ওপর কেমন সন্দেহ হচ্ছে। (জিহাদ)

-কেন?

-স্যার মেয়েটাকে আমি এয়ারপোর্ট থেকে দেখে আসছি কেমন জানি প্রচন্ড মানসিক চাপে আছে বলে মনে হয়। তার হয়ত কোন একটা জটিল কাজ তার করতে হবে। কেন জানি মেয়েটি অস্বস্তিতে ছিল। আর এদিকে রায়হান ও এতক্ষন হোটেলে বসে রয়েছে। আমরা তো জানতে পেরেছিলাম একদিনের জন্য ভাড়া নিয়েছে হোটেল রুম গুলো। এতক্ষনে চলে যাওয়ার কথা।

-হুম।তোমার কথায় যুক্তি আছে। একবার যাওয়া যাক দেখে আসি কি অবস্থা।

-আমারো তাই মনে হয়। (শফি)


তারা তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ল রায়হানদের ওঠা হোটেলর উদ্দেশ্যে। যথা সময়ে পৌঁছে গেল তারা। তারা গিয়ে রায়হানের রুমের উদ্দেশ্যে গেল। দেখল দরজা বন্দ্ধ হালকা ধাক্কা দিতেই দরজা খোলে গেল। ভেতরে দেখেই শফি নাক সিটকে রুম থেকে বেরিয়ে এল। আবিদ আর জিহাদের চোখ কপালে ওঠার অবস্থা হলো।

-(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here