রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ৬,৭

0
2419

রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ৬,৭
লেখিকা: সুলতানা তমা

কাব্য ল্যাপটপে কি যেন কাজ করছে আর আমি ওর কাধে মাথা রেখে বসে আছি। আজ নিজেকে আর একা মনে হচ্ছে না, কাব্য’র উপর ভরসা করতে ইচ্ছে হচ্ছে। কাব্য’র কাধ থেকে মাথা তুলে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ওর দিকে আর ভাবছি একটা মানুষ এতোটা ভালো কিভাবে বাসতে পারে।
কাব্য: এইযে মেম কি দেখছেন (আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে কাব্য ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো)
আমি: ভাবছি আপনি আমাকে এতোটা ভালো কিভাবে বাসেন।
কাব্য: একদিন তুমিও আমাকে ঠিক এতোটাই ভালোবাসবে যতোটা ভালো আমি তোমাকে বাসি। (সে দিনটা বেশি দূরে নয় খুব কাছেই, আমি আপনাকে ভালোবাসি আর এই ভালোবাসা প্রতিটা মুহূর্তে বেড়ে চলেছে)
কাব্য: আবার কোথায় হারালে।
আমি: কোথাও না আমি তিশাকে দেখে আসছি।
কাব্য: কি দেখবে ও তো ঘুমিয়ে আছে।
আমি: আপনি তো কাজ করছেন আমি একবার দেখে আসি এখানে বসে থেকে কি করবো।
কাব্য: কাজ তো তোমার জন্যই করছি, এখন কাজ শেষ করে সারা রাত গল্প করবো তোমার সাথে।
আমি: হুহ সখ কতো।

তিশার কেবিনে এসে দেখি সেই সিস্টারটা কি যেন করছে, আমাকে দেখেই মুখ ফিরিয়ে নিলো। আমি তিশার পাশে এসে বসলাম, ও ঘুমিয়ে আছে। দেখে তো আগের চেয়ে অনেক সুস্থ মনে হচ্ছে তারমানে সকালে বাসায় নিয়ে যেতে পারবো। তিশার একটা হাত আমার দুহাতের মুঠোয় এনে ধরে বসে আছি। কেন যে পাগলীটা বার বার আমার জন্য নিজেকে কষ্ট দিতে যায়।
সিস্টার: পেসেন্ট আপনার কি হয়…? (বাব্বাহ্ যে আমাকে দেখে রাগে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে নিজের ইচ্ছায় কথা বলছে)
আমি: বোন।
সিস্টার: আর কাব্য স্যার..?
আমি: প্রশ্নটা নাহয় ওকেই করবেন।
সিস্টার: এতো ভাব কিসের হ্যাঁ জিজ্ঞেস করছি বলে দিলেই তো হয়।
আমি: আস্তে চেঁচামেচি করুন তিশার সমস্যা হবে। আর আগে তো কাব্য বলেই দিয়েছে আমি ওর বউ।
সিস্টার: হুহ বউ। স্যার আসার পর থেকে উনার পিছনে আঠার মতো লেগে আছি পাত্তাই দিচ্ছে না আর এদিকে এই মেয়েকে বউ বানিয়ে বসে আছে। কি আছে এই মেয়ের মধ্যে যা আমার মধ্যে নেই, আমি তো এই মেয়ের চেয়ে যথেষ্ট সুন্দরী। (কথাগুলো খুব আস্তে আস্তে বলছে, আমি শোনেও না শোনার ভান করে ওকে জিজ্ঞেস করলাম…)
আমি: কিছু বলছেন..?
সিস্টার: না।
কাব্য: শুভ্রা একটা কথা মনে রেখো শুধু সুন্দরী হলেই হয় না ভালোবাসা পেতে হলে আরো অনেক যোগ্যতা থাকতে হয়। আর কি যেন বলছিলে তিলোর মধ্যে কি এমন আছে যা তোমার মধ্যে নেই..? উত্তরটা আমিই দিচ্ছি, তোমার মধ্যে অনেক বেশি অহংকার আছে যা তিলোর মধ্যে নেই। আর অহংকারীদের আমি জাস্ট ঘৃণা করি। (কাব্য আবার চলে আসলো কেন, ও তো দেখছি খুব রেগে যাচ্ছে)
সিস্টার: এই মেয়ের সামনে আমাকে অপমান করছেন।
কাব্য: অপমান কোথায় করলাম তুমি ওকে প্রশ্ন করেছ উত্তরটা আমি দিলাম।
আমি: ডাক্তারবাবু ছাড়ুন না অজতা কথা বাড়াবেন না প্লিজ।
সিস্টার: এই অপমানের শাস্তি আপনি পাবেন।
মেয়েটা রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। সামান্য বিষয় নিয়ে এতো রেগে যাওয়ার কি আছে, হ্যাঁ ও হয়তো কাব্য’কে ভালোবাসে তাই বলে কাব্য’কেও কি ওকে ভালোবাসতে হবে নাকি। মেয়েটি যদি কাব্য’কে পছন্দ করে তাহলে কাব্য’রও তো মেয়েটিকে পছন্দ হতে হবে তারপর নাহয় একটা সম্পর্ক তৈরি হবে। মেয়েটি তো দেখছি জোর করে কাব্য’কে পেতে চাইছে, জোর করে তো কখনো ভালোবাসা পাওয়া যায় না।
কাব্য: তমা চলো।
আমি: প্লিজ শান্ত হন এতো রেগে গেলে হয় নাকি..?
কাব্য: কি করবো গতকাল রাতে আসছি আর এই মেয়েটা পিছনে লেগে আছে, ভালো মেয়ে হলে কথা বলে বুঝানো যায় কিন্তু শুভ্রা তো খুব জেদি আর অহংকারী মেয়ে।
আমি: মেয়েটি আপনাকে ভালোবাসে তাই এমন করছে।
কাব্য: এই শোনো আমার শুধু তোমার ভালোবাসা চাই অন্য কারো ভালোবাসা লাগবে না।
আমি: সবসময় এতো রেগে যান কেন।
কাব্য: এই রুমে কথা বললে তিশার সমস্যা হবে চলো তুমি।

সোফায় বসে আছি আর কাব্য আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে শুয়ে ল্যাপটপ টিপছে। কাব্য’র চুলে একমনে হাত বুলিয়ে যাচ্ছি, কাব্য দেখতে ফর্সা স্মার্ট সবকিছু লক্ষ করলেও কাব্য’র চুলগুলো যে এতো সুন্দর আগে লক্ষ করিনি। ইসসস কাব্য সবদিকে সুন্দর আর আমি… মানায় নাকি আমাকে ওর সাথে।
কাব্য: যেভাবে চুলে হাত বুলাচ্ছ কখন জানি ঘুমিয়ে পড়ি (কাব্য’র কথায় লজ্জা পেয়ে হাত সরিয়ে নিলাম)
আমি: আচ্ছা আপনাকে তো আদনান ভাইয়া ডিউটির জন্য রেখে গেছে আপনি ডিউটি রেখে এখানে বসে আছেন কেন।
কাব্য: পাশে বউ থাকলে ডিউটিতে মন বসে নাকি (আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিয়ে বললো, কি দুষ্টুরে বাবা)
কাব্য: অনেক ডক্টর আছে প্রয়োজন হলে আমাকে ডেকে নিবে তুমি এসব নিয়ে ভেবো না। তুমি এখন বলো আমরা কত তারিখ বিয়ে করছি।
আমি: মানে।
কাব্য: ওমা বিয়ে করতে হবে না, নাকি এমনি আমার বউ হয়ে যাবে।
আমি: দ্যাত আপনি খুব দুষ্টু।
কাব্য: বিয়েটা হয়ে যাক আপনি আপনি ডাকা ছাড়াবো।
আমি: মামি যদি রাজি না হন।
কাব্য: আমি রাজি করাবো তুমি এসব নিয়ে চিন্তা করো না তুমি শুধু ভাবো আমাদের বাচ্চা কয়টা হবে (ওর মুখে দেখছি কিছুই আটকায় না, এসব বলে আবার দিব্বি হাসছে)
কাব্য: লজ্জা পেলে তোমাকে আরো বেশি সুন্দর লাগে।
আমি: আপনাকে তো আমি… (ওর চুলে জোরে জোরে কয়েকটা টান দিলাম)
কাব্য: উফফ লাগছে তো।
আমি: আর এসব বলবেন, বললে আরো দিবো।
কাব্য: কেন তুমি মা হতে চাও না (কাব্য’র এমন প্রশ্ন শুনে লজ্জা পেলাম সাথে কেমন যেন একটা অনুভূতি হচ্ছে, মা হতে কে না চায়। প্রত্যেকটা মেয়েই তো মা হতে চায়)
কাব্য: আমরা কিন্তু এই সপ্তাহেই বিয়ে করছি। ফারাবী আর ভাবীকে ফোন করে সব বলে দিয়েছি আর অয়ন তো রীতিমতো সব আয়োজন করা শুরু করে দিয়েছে।
আমি: আপনার পরিবারে আর কে কে আছে…?
কাব্য: আমরা তিনভাই এক বোন সাথে ভাবী, বোন লন্ডনে পড়াশোনা করছে বিয়েতে আসতে পারবে না।
আমি: আর আপনার বাবা মা (কাব্য কেমন যেন চুপ হয়ে গেলো তাহলে কি ওর আব্বু আম্মু বেঁচে নেই)
কাব্য: আমিই তোমার সব তাই আর কখনো বাবা মা শব্দটা যেন তোমার মুখে না শুনি।
কাব্য ল্যাপটপ রেখে নিশ্চুপ হয়ে শুয়ে আছে। কাব্য কাঁদছে সেটা আমি বুঝতে পারছি কিন্তু আব্বু আম্মুর কথা জিজ্ঞেস করাতে কাঁদছে কেন এইটা ভেবে পাচ্ছি না।
যদি কাব্য’র আব্বু আম্মু মারা গিয়ে থাকেন তাহলে তো ওর এতো রেগে যাওয়ার কথা না তাহলে কি ওর আব্বু আম্মু, রেগে যাওয়া এসবের পিছনে কোনো রহস্য আছে…? কিন্তু কি রহস্য…?
কাব্য’র দিকে তাকালাম আমার কোলে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়েছে। ওর চোখের কোণে এখনো পানি জমে আছে, ওর ঘুমন্ত মুখটা কি মায়াবী লাগছে। কাব্য’র চোখের পানি আলতো করে মুছে দিলাম। “জানিনা আব্বু আম্মুর কথা জিজ্ঞেস করাতে আপনি এভাবে রেগে গেলেন কেন আর কাঁদলেনই বা কেন, যদি এসবের পিছনে সত্যি কোনো রহস্য থেকে থাকে তাহলে তা আমি খুঁজে বের করবো আর আপনাকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করবো”

সকালে ঘুম ভাঙতেই তাকিয়ে দেখি কাব্য এখনো ঘুমিয়ে আছে। রাতে কখন যে সোফায় হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। তিশার কাছে যাওয়া দরকার, কাব্য’র মাথা আস্তে সরাতে চাইলাম কিন্তু ও আমার একটা হাত চেপে ধরে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। ওর চুল গুলো আবার আমাকে টানছে ইচ্ছে হচ্ছে চুলে একটা চুমু দেই কিন্তু… কাব্য তো ঘুমে দিলে তো আর দেখবে না। আস্তে করে কাব্য’র চুলে একটা চুমু দিলাম।
কাব্য: আমি কিন্তু ঘুমে না সব বুঝে গেছি (চোখ বন্ধ করে বলছে আর হাসছে। ইসস এইটা কি হলো)
কাব্য: লজ্জা পেলে তো তোমাকে সুন্দর লাগে তাহলে দুহাত দিয়ে মুখটা ডেকে রেখেছ কেন…? (কাব্য উঠে আমার পাশে বসলো তারপর আমার হাত দুটু মুখ থেকে সরিয়ে ওর কোমরে নিয়ে রাখলো)
কাব্য: এতো লজ্জা পাচ্ছ কেন আর তো মাত্র কটা দিন তারপর আমরা স্বামী স্ত্রী হয়ে যাবো আর বিয়ের পর প্রতিটা সকালে তোমার ভেজা চুলের পানি+মিষ্টি একটা চুমুতে আমার ঘুম ভাঙবে (কাব্য আমার একদম কাছে এসে আমার কপালে ওর কপাল ঠেকিয়ে কথা গুলো বললো আর এখন মিটমিটিয়ে হাসছে)
কাব্য: কি ম্যাডাম তোমার ভেজা চুলের পানিতে প্রতিদিন আমার ঘুম ভাঙাবে না…?
আমি: দ্যাত আপনার মুখে কিচ্ছু আটকায় না (লজ্জা পেয়ে কাব্য’র বুকে মুখ লুকালাম। কাব্য এক হাত দিয়ে আমার কোমর জরিয়ে ধরে আছে আরেক হাত দিয়ে আমার ঘাড়ের চুল সরাচ্ছে। চুলগুলো এক পাশে রেখে কাব্য আস্তে আস্তে আমার ঘাড়ে মায়া দেওয়ার জন্য এগুচ্ছে, ওর গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পড়ছে)
“স্যার আপনার পেসে…” (হঠাৎ কারো কন্ঠ শুনে কাব্য আমাকে ছেড়ে দিয়ে দূরে গিয়ে বসলো, তাকিয়ে দেখলাম শুভ্রা মেয়েটা। বাহ্ কাব্য’র মুখটা এখন দেখার মতো হয়েছে)
কাব্য: শুভ্রা কারো রুমে আসলে যে নক করে আসতে হয় এই মিনিমাম সেন্স টুকু কি তোমার নেই…?
শুভ্রা: আমি তো আর জানতাম না আপনি যে আপনার চেম্বারটাকে নিজের বেডরুম ভাবেন।
কাব্য: জাস্ট সেটআপ, আমি আমার চেম্বার বেডরুম বানাবো নাকি ড্রয়িংরুম বানাবো সে কৈফিয়ত কি তোমাকে দিতে হবে…? বেড়িয়ে যাও এক্ষণি।
শুভ্রা: আপনি কিন্তু আবার আমাকে অপমান করছেন।
কাব্য: তো কি তোমাকে কোলে বসিয়ে আদর করবো (মেয়েটা রাগে কটমট করে আমার দিকে একবার তাকিয়ে চলে গেলো। কাব্য রাগে বেলুনের মতো ফুলছে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে)
কাব্য: খুব মজা হচ্ছে তাই না।
আমি: নাতো।
কাব্য: আবার হাসছ।
আমি: ওকে আর হাসবো না।
কাব্য: উহু হাসো তোমার হাসি দেখলে আমার সব রাগ চলে যাবে।
আমি: তিশার কাছে যাচ্ছি।
কাব্য পিছন পিছন ডাকছে তাও তিশার কাছে চলে আসলাম।

তিশা এখনো ঘুমাচ্ছে, এই আদনান ওকে কতো ঘন্টার জন্য ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে আল্লাহ্‌ জানেন। তিশার পাশে বসে ওর মাথায় হাত দিতেই ও জেগে গেলো।
আমি: যাক বাবা অবশেষে তোর ঘুম ভাঙলো।
তিশা: বোন আমি সুস্থ হয়ে গেছি আমাকে এইখান থেকে নিয়ে যা।
আমি: হ্যাঁ একটু পরই চলে যাবো।

তিশাকে রিলিজ করে দিলো, ওকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। কাব্য আমাদের পৌঁছে দিয়ে গেলো। তিশাকে রুমে দিয়েই আমি বাসায় চলে আসলাম। জানিনা আজ কপালে কি আছে।

বাসায় ঢুকতেই মামি সামনে এসে দাঁড়ালো।
মামি: হয়েছে শান্তি ওরা বিয়েটা ভেঙে দিয়েছে।
আমি: আমি তো এই বিয়েতে রাজি ছিলাম না ভেঙে গিয়েছে তো ভালো হয়েছে।
মামি: তোকে কি আমি সারাজীবন এভাবে…
আমি: ভালো লাগছে না পরে কথা বলবো।
রুমে চলে আসলাম, শরীর খুব দুর্বল লাগছে মনে হয় জ্বর হবে। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ক্লান্তিতে চোখ দুটু বুজে আসলো।

হঠাৎ ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো, কাব্য ফোন দিয়েছে। রিসিভ করতেই চেঁচিয়ে উঠলো।
কাব্য: সেই বিকেলবেলা থেকে ফোন দিয়ে যাচ্ছি সন্ধ্যা হয়ে গেছে আর এখন তুমি ফোন রিসিভ করলে।
আমি: আসলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
কাব্য: কেন শরীর খারাপ (জ্বর তো ভালোই এসেছে কিন্তু ওকে তো বলা যাবে না টেনশন করবে)
আমি: নাতো।
কাব্য: ওকে রাতে ফোন দিবো রাখছি এখন।
আমি: হুম।
ফোন রেখে তিশার কাছে চলে আসলাম, বসে বসে মোবাইল টিপছে।
আমি: এই তুই না অসুস্থ তাহলে শুয়ে না থেকে মোবাইল টিপছিস কেন…?
তিশা: আসছে ডাক্তারের বউ ডাক্তারনি।
আমি: কি বললি..?
তিশা: মিথ্যে কিছু বলেছি নাকি..?
আমি: জানিনারে কাব্য তো বললো মামির সাথে কথা বলতে আসবে।
তিশা: হুম সব ভালো ভাবে হবে দেখিস।
তিশার সাথে আরো কিছু সময় গল্প করে বাসায় চলে আসলাম।

দরজায় আসতেই ভিতরে মামির হাসির শব্দ পেলাম সাথে দুজন পুরুষ মানুষের কন্ঠ। রাত প্রায় নয়টা বাজে এতো রাতে আমাদের বাসায় কে আসবে। ভিতরে না গিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছি।
মামি: এই মেয়েকে নিয়ে আর পারছি না। ভেবেছিলাম কোথাও একটা বিয়ে দিয়ে আপদ বিদায় করবো কিন্তু বিয়েটা ভেঙে গেলো।
–এখন একদম ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাহাহা।
মামি: হ্যাঁ অনেক সহ্য করেছি আর না এই মেয়ের জায়গা পতিতালয়েই ভালো মানাবে (পতিতালয় শব্দটা শুনে যেন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো)
–আমরা কি আজকেই ওকে নিয়ে যেতে পারবো..?
মামি: হ্যাঁ তবে সাবধানে।
–ঠিক আছে।
আর শুনতে পারলাম না ওদের কথা। কোনোভাবে হাটতে হাটতে রাস্তায় চলে আসলাম। তিশার কাছে গেলেও ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যাবে কারণ মামি আমাকে ওদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। কাব্য’র বাসা তো চিনি না ফোনটা বাসায় ফেলে এসেছি। আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে অনেক দূর চলে আসলাম। এমনি গায়ে জ্বর তার উপর এভাবে হাটছি এখন আর পারছি না। রাস্তার পাশের একটা ল্যাম্পপোস্ট এর নিচে বসে পড়লাম। মামি আমার সাথে শেষ পর্যন্ত এমন জঘন্য কাজ করতে পারলো ভাবতেই মাথা ঘুরছে, চোখ দুটু অন্ধকার হয়ে আসছে, আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে ওখানেই পড়ে গেলাম।

চলবে?

রোমান্টিক ডাক্তার
পার্ট: ৭
লেখিকা: সুলতানা তমা

চোখেমুখে পানির ছিটা পড়াতে জ্ঞান ফিরলো, আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম। ঝাপসা চোখে তাকিয়ে দেখি কাব্য’র কোলে শুয়ে আছি। এক লাফ দিয়ে উঠে ওকে জরিয়ে ধরলাম।
কাব্য: শান্ত হও প্লিজ (কিছু না বলে শুধু কেঁদেই যাচ্ছি)
কাব্য: তিলো তাকাও আমার দিকে, আমাকে বলো কি হয়েছে। (আস্তে আস্তে কাব্য’র দিকে তাকালাম, কি হয়েছে সেটা কি ওকে বলা ঠিক হবে)
কাব্য: ভয় পেয়ো না আমি তো তোমার কাছেই আছি, বলো আমাকে কি হয়েছে।
আমি: যা হয়েছে সেটা দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যেতে চাই আর মনে করতে চাই না এসব (কাব্য’কে জরিয়ে ধরে বললাম। আজ মামি খারাপ কাজ করেছে কিন্তু এতোদিন তো আমাকে মামিই দেখাশোনা করেছে থাকনা মামির খারাপ চরিত্রটা লুকানো)
কাব্য: ঠিক আছে বলতে হবে না তুমি শান্ত হও। (চারদিকে চোখ বুলালাম, আমি তো একটা বাসায় আছি)
আমি: আপনি আমাকে পেলেন কোথায় আমি তো…
কাব্য: হুম রাস্তাতেই অজ্ঞান অবস্থায় পেয়েছি।
আমি: আপনি…
কাব্য: আমি তোমাদের বাসায় গিয়েছিলাম তোমার মামির সাথে বিয়ের কথা বলতে কিন্তু উনি বললেন সকালে যেন যাই কারণ তুমি এখন ঘুমে। সন্ধ্যায় তোমার কন্ঠ শুনে অসুস্থ মনে হচ্ছিল তাই আমি বিশ্বাস করে চলে আসি। মধ্যে তোমাকে অনেক বার ফোন দিয়েছি কিন্তু তুমি রিসিভ করনি তাই ভেবেছিলাম সত্যি তুমি অসুস্থ আর তাই ঘুমিয়ে আছ। কিন্তু বাসায় ফিরার পথে তোমাকে রাস্তার পাশে এভাবে পড়ে থাকতে দেখি, আর বাসায় নিয়ে আসি। ভাগ্যিস আমি ওই রাস্তা দিয়ে আসছিলাম নাহলে তো তোমাকে আমি হারিয়েই ফেলতাম।
আমি: আরে বাচ্চাদের মতো কাঁদছেন কেন..?
কাব্য: যদি সত্যি তোমাকে হারিয়ে ফেলতাম, জানো আমি কতোটা ভয় পেয়েছিলাম।
আমি: হ্যাঁ বুঝেছি অনেক ভয় পেয়েছিলেন এখন বাচ্চাদের মতো কান্না থামান।
কাব্য: আমার কান্না তোমার কাছে বাচ্চাদের মতো লাগে।
আমি: নাতো কে বললো, আপনি তো বুড়ো মানুষ।
কাব্য: কি আমি বুড়ো..?
আমি: আচ্ছা এই বাসায় কি কোনো মানুষ থাকে নাকি আপনি আমাকে ভুল করে এইটা বাসা ভেবে চিড়িয়াখানায় নিয়ে এসেছেন।
কাব্য: ইসস মানুষ এভাবে লজ্জা দেয়, আমার তো বউ নেই যে সবকিছু গুছিয়ে রাখবে তাই বাসার এই অবস্থা। কিন্তু এখন তো তুমি চলে এসেছ এখন সব গুছিয়ে রাখবে।
আমি: হুম বুঝেছি কিন্তু আপনি তো বলেছিলেন ভাই ভাবী সবাই আছে।
কাব্য: ওরা তো অন্য বাসায় আমি এখানে একা থাকি।
আমি: হ্যাঁ চিড়িয়াখানার…
কাব্য: আবার বলছ।
আমি: ওকে আর বলবো না।
কাব্য: তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি একটু আসছি।
আমি: কোথায় যাবেন..?
কাব্য: আমার এই বাসাটা শহর থেকে একটু দূরে এখানে তেমন কিছু পাওয়া যায় না একটা রেস্টুরেন্ট আছে সামনে ওখান থেকে কিছু খাবার নিয়ে আসি।
আমি: ঠিক আছে।

কাব্য চলে গেলো, আমি বাসাটা ঘুরে ঘুরে দেখছি অনেক বড় বাসা। রাতের বেলা তাই বাইরের কিছু বুঝা যাচ্ছে না কিন্তু কাব্য সবাইকে রেখে শহর থেকে দূরে এমন একটা অদ্ভুত বাড়িতে একা একা থাকে কেন বুঝতে পারছি না। বাসাটা সত্যি খুব অদ্ভুত ভিতরে তেমন কোনো জিনিসপত্র নেই, চারপাশ কেমন যেন খালি খালি লাগছে। হঠাৎ আমার শরীরের দিকে নজর পড়লো, সারা শরীরে ধুলো জামার মধ্যে কাদা কোথা থেকে লাগলো আবার। এক্ষণি গোসল করতে হবে কিন্তু কাপড়চোপড় পাবো কোথায়। রুমের এক কোণে আলমারির দিকে চোখ পড়লো হয়তো কিছু পাবো তাই আলমারি খুলে খুঁজতে শুরু করলাম। কিন্তু কাব্য’র কিছু শার্ট প্যান্ট ছাড়া কিছুই পেলাম না। একটা শার্ট আর একটা প্যান্ট হাতে নিয়ে আলমারি লাগাতে যাবো তখনি আলমারির কোণে পড়ে থাকা একটা ছবির দিকে চোখ পড়লো। হাতে এনে ভালোভাবে দেখলাম, ছবিটাতে কেমন যেন সাদা সাদা দাগ পড়ে গেছে। দেখে মনে হচ্ছে উনারা কাব্য’র মা বাবা। কিন্তু নিজের আব্বু আম্মুর ছবি দেয়ালে না রেখে ও আলমারির এক কোণে এভাবে ফেলে রেখেছে কেন। ইসস ছবিটা কি অযত্ন করে ফেলে রেখেছে।

কাব্য: তিলো কোথায় তুমি..?
আমি: আসছি।
কাব্য: কি করছ তু…
আমি: এইতো। (গোসল করে বের হতেই দেখি কাব্য খাবারের প্যাকেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে তো কাব্য হা করে তাকিয়ে আছে, তাকাবেই তো ওর শার্ট পড়েছি যে। নিজেরই লজ্জা লাগছে কিন্তু কি করবো অন্য কিছু ছিল না তো)
কাব্য: আমি ঠিক দেখছি তো নাকি স্বপ্ন দেখছি (কাব্য’র কাছে গিয়ে ওর হাতে একটা চিমটি দিলাম)
কাব্য: উফফ।
আমি: এবার বুঝেছেন সত্যি যে।
কাব্য: তুমি পড়েছ আমার শার্ট…?
আমি: হ্যাঁ তো কি করবো আর কিছু ছিল নাকি..? আচ্ছা বাসাটা যেহেতু আপনার তাহলে ভবিষ্যৎ বউ এর কথা ভেবে তো কিছু কাপড়চোপড় কিনে রাখতে পারতেন।
কাব্য: যেখানে বিয়ে করার ইচ্ছেটাই মরে গিয়েছিল আবার ভবিষ্যৎ বউ এর কথা ভেবে এতোকিছু করবো (একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আস্তে আস্তে কথাটা বললো)
আমি: বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল না মানে..?
কাব্য: বিয়ে জিনিসটা আর মেয়েদের আমি ঘৃণা করতাম কিন্তু সেদিন হসপিটালে তোমাকে দেখে সবকিছু কেমন যেন উলটপালট হয়ে গেলো। কিভাবে যে তোমাকে এতোটা ভালোবেসে ফেলেছি আর বিয়ে করার জন্য এমন পাগল হয়েছি নিজেই বুঝতে পারছি না।
আমি: একটা কথা জিজ্ঞেস করবো..?
কাব্য: করতে পারো কিন্তু রেজাউল চৌধুরী আর হুমায়রা চৌধুরীর প্রসঙ্গ বাদে।
আমি: উনারা কারা..?
কাব্য: হিয়ার বাবা মা।
আমি: হিয়া…
কাব্য: আমার ছোট বোন।
আমি: আশ্চর্য তো উনারা যদি হিয়ার বাবা মা হন তাহলে তো আপনারো…
কাব্য: না উনারা আমার বাবা মা না, কোনো সন্তানের বাবা মা হবার যোগ্যতা উনাদের নেই।
কাব্য বারান্দায় চলে গেলো। সবকিছু কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে। কাব্য নিজের বাবা মায়ের নাম ধরে ডাকছে, উনাদের নিজের বাবা মা বলে স্বীকার করছে না আবার বলছে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল না মেয়েদের ও ঘৃণা করে। থাক এসব নিয়ে পড়ে ভাববো আগে কাব্য’র কাছে যাই, হয়তো কাঁদছে।

যা ভেবেছিলাম তাই, কাব্য বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে আর কাঁদতেছে। বুঝতে পারছি না আম্মু আব্বুর কথা বললেই ও কাঁদে কেন।
আমি: সরি (কাব্য’কে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম)
কাব্য: সরি।
আমি: আপনি কেন সরি বলছেন..?
কাব্য: তোমার সামনে সিগারেট খাচ্ছি তাই, আমি তো জানি তুমি সিগারেট অপছন্দ করো।
আমি: আমিও সরি আব্বু আম্মুর কথা মনে করিয়ে আপনাকে কষ্ট দিয়েছি। কিন্তু আপনি বুঝলেন কিভাবে আমি যে আব্বু আম্মুর কথা জিজ্ঞেস করবো..?
কাব্য: আলমারি থেকে শার্ট খুলে পড়েছ তারমানে ছবিটা তুমি দেখেছ তাই মনে হলো এইটা নিয়েই কিছু জিজ্ঞেস করবে। (জিজ্ঞেস তো করার ছিল অনেক কিছু, আমার মনে যে একের পর এক প্রশ্ন জাগছে শুধু কিন্তু আপনার কান্না সহ্য করতে পারিনা তাই আর কিছু জিজ্ঞেসও করবো না)
আমি: চলুন খিদে লেগেছে আমার।
কাব্য: হুম চলো।

একটু আগে যে মানুষটা যন্ত্রণায় ছটফট করে কাঁদছিল সে এখন আমাকে খুব যত্ন করে খাইয়ে দিচ্ছে। কাব্য’কে দেখে বুঝার উপায় নেই যে ও একটু আগেই কেঁদেছে।
কাব্য: কি দেখছ এভাবে..?
আমি: উঁহু কিছুনা। (কাব্য আমাকে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে আর বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি একমনে ওকে দেখছি আর ভাবছি আমার মতো একটা মেয়ে যে কিনা দেখতে কালো, বাবা মা নেই আর এখন তো আমার কিছুই নেই, সেই আমাকে কিনা কেউ এতোটা ভালোবাসতে পারে তাও আবার কাব্য’র মতো একজন মানুষ। যে মানুষটা কিনা দেখতে সুন্দর, পেশায় একজন ডক্টর সেকিনা আমাকে এমন নিখুঁত ভাবে ভালোবাসে)
কাব্য: শার্ট পড়লে তোমাকে দারুণ লাগে আমার তো মাথা নষ…
আমি: এই একদম বাজে কথা বলবেন না।
কাব্য কিছু না বলে হাসছে শুধু, আর আমি মুগ্ধ হয়ে ওর হাসি দেখছি। একটা মানুষের হাসি এতো সুন্দর হয় কিভাবে…?

জানালার কাছে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি, কাব্য এসে আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
কাব্য: তোমার জন্য আর একটা খাবার আছে।
আমি: কি..?
কাব্য: পিছনে তাকাও (কাব্য’র কথা শুনে পিছনে তাকালাম)
আমি: এতোগুলো চিপস।
কাব্য: তিশা বলেছে তুমি চিপস পাগলী তাই নিয়ে এসেছি।
আমি: তাই বলে এতোগুলো..?
কাব্য: আমার বউকে আমি সবকিছু বেশি বেশি দিবো তাতে তোমার কি…?
আমি: কিন্তু ভালোবাসাটাই তো কম দিচ্ছেন।
কাব্য: তাই বুঝি।
আমি: এই কি করছেন কোলে নিচ্ছেন কেন আমি তো ফাজলামো করে বলেছি।
কাব্য কিছু না বলে আমাকে কোলে করে বারান্দার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কাব্য’র শার্ট খামচে ধরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ওর দিকে।

বারন্দায় একটা কাউচ রাখা, কাব্য আমাকে কাউচে শুয়ে দিলো। রুমে গিয়ে চিপস এনে আমার হাতে দিয়ে হেসে বললো…
কাব্য: চিপস পাগলী চিপস খাও (অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি ওর দিকে, আমি তো এমন একজন জীবনসঙ্গীই চেয়েছিলাম। শুধু আমি কেন প্রত্যেকটা মেয়েই এমন একজন জীবনসঙ্গী চায়, যে কিনা মেয়েটির ছোট ছোট ইচ্ছে গুলোর মূল্য দিবে)
কাব্য: নাও তিশার সাথে কথা বলো (আমার দিকে ফোন এগিয়ে দিলো)
আমি: হ্যাঁ তিশা।
তিশা: আমাকে একবার বলে তো যাবি আমার টেনশন হয় না..?
আমি: আসলে আমি খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম তাই তোর কাছে আর যাইনি।
তিশা: না এসে ভালোই করেছিস তোর মামি আমাদের বাসায় লোকজন নিয়ে এসে যা কান্ডটাই না করেছে। এখন কাব্য’র কাছে যেহেতু আছিস আমার আর কোনো চিন্তা নেই।
আমি: হুহ।
তিশা: শুন এখানে ফিরে আসার প্রয়োজন নেই কাব্য’র সাথে ওর বাসায় যাবি আর দু-তিন দিনের মধ্যেই তোর আর কাব্য’র বিয়ে হবে, আমি ওদের বাসায় আসবো চিন্তা করিস না।
আমি: ঠিক আছে।
তিশা: রাখছি।

তিশা ফোন রাখতেই কাব্য এসে আমার পাশে বসলো, এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
আমি: কি দেখছেন..?
কাব্য: আমার বউটাকে।
আমি: আপনি যে কি।
কাব্য: আমি একজন ভদ্র মানুষ তাই তো আজ নিজেকে অনেক কষ্টে কন্ট্রোলে রাখছি।
আমি: মানে।
কাব্য: কিছুনা।
আমি: এই এভাবে হাসবেন নাতো। (কাব্য এসে আমার পাশে শুয়ে পড়লো তারপর আমার নাকে ওর নাক ঘষে হেসে বললো…)
কাব্য: আমার হাসি তোমার পছন্দ না বুঝি…?
আমি: উহু আপনার হাসি খুব সুন্দর তাই আপনি যখন হাসেন আমার নিজেরি নিজের প্রতি হিংসে হয়।
কাব্য: কেন কেন..?
আমি: এইযে আমার মতো মেয়ে আপনার মতো একজন মানুষকে পেয়েছে।
কাব্য: আর কখনো যদি নিজেকে ছোট ভেবেছ তাহলে কিন্তু… (কাব্য রেগে গেছে বুঝতে পারছি তাই চুপ হয়ে আছি। হঠাৎ কাব্য আমার বুকের উপর শুয়ে পড়লো)
আমি: ডাক্তারবাবু কি করছেন।
কাব্য: তিলো আমার এই জায়গাটায় না অনেক ব্যথা, অনেক প্রিয়জনদের হারানোর যন্ত্রণা জমা হয়ে আছে এই জায়গায়। সব কষ্ট ভুলে যেতে চাই আমি তোমার ভালোবাসা দিয়ে প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেওনা (আমার ডান হাতটা কাব্য’র বুকের বাম পাশে নিয়ে রেখে কথা গুলো বললো। কাব্য আবারো কাঁদছে কিন্তু কাব্য’র কিসের এতো কষ্ট)
আমি: উহু কখনো যাবো না আমার ডাক্তারবাবুকে ছেড়ে।
কাব্য’কে আমার বুকের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম। কাব্য ছোট বাচ্চাদের মতো নিশ্চুপ হয়ে শুয়ে আছে আর কাঁদছে। আর আমি ওর চুলগুলোর মাঝে হাত বুলিয়ে খেলা করছি।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here