রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ১৩,১৪

0
2250

রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ১৩,১৪
লেখিকা: সুলতানা তমা

দরজায় সবাই ধাক্কাধাক্কি করছে শুনে হঠাৎ হুশ ফিরলো, এতোক্ষণ কি অজ্ঞান হয়ে ছিলাম নাকি বুঝতে পারছি না। সবাই দরজার অপর পাশ থেকে ডাকছে আর দরজায় ধাক্কাচ্ছে শুনে আস্তে আস্তে উঠে দরজা খুললাম। সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ভাবি: নিজের কি অবস্থা করেছিস।
আমি: তোমরা যাও তো এখান থেকে আমাকে একটু একা থাকতে দাও।
অয়ন: এতোক্ষণ তো একাই ছিলে প্রায় আধা ঘন্টা ধরে ডাকছি দরজা খুলোনি।
আমি: যাবে তোমরা।
পিছন ফিরে চলে আসতে চাইলাম তখনি মাথা ঘুরে গেলো, কাব্য এসে তাড়াতাড়ি আমাকে ধরলো। ও ধরেছে দেখে রাগ আরো বেড়ে গেলো, ধাক্কা দিয়ে ওকে ছাড়াতে চাইলাম, ও জোর করে কোলে তুলে এনে বিছানায় বসালো।

কাব্য’র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চুপচাপ বসে আছি। চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছে।
অয়ন: ভাবি আর কতো কাঁদবে আমাদের বাসাটা তো সাগর বানিয়ে ফেলবে।
আমি: অয়ন ঠাট্টা ভালো লাগছে না।
অয়ন: ঠিক আছে কান্না থামাও আমরা ভাইয়ার বিচার করবো।
আমি: হুহ বিচার যার চরিত্র এমন তাকে আবার…
কাব্য: তিলো আ…
আমি: একদম চুপ আমার নাম তুমি মুখে নিবে না।
ভাবি: তোরা যা তো এই রুম থেকে আমি ওকে দেখছি। (কাব্য আর অয়ন বেড়িয়ে যেতেই ভাবি এসে আমার পাশে বসলেন। ভাবিকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলাম)
ভাবি: কাব্য এমনটা কেন করেছে আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। তুই কান্না থামা এভাবে কাঁদতে থাকলে অসুস্থ হয়ে পরবি তো।
আমি: ওকে তো আমি ভালোবেসেছিলাম ও বললে আমি ওর কাছে চলে আসতাম ও এই কাজ করতে গেলো কেন। আর করেছে তো একবারো আমাকে বলেনি সব লুকিয়ে রেখেছে।
ভাবি: তুই শুনলে কষ্ট পাবি তাই হয়তো লুকিয়ে রেখেছিল।
আমি: যে কাজে আমি কষ্ট পাবো সেই কাজ ও করলো কেন..?
ভাবি: সেটাই তো বুঝতে পারছি না, অনেক বার জিজ্ঞেস করেছি কিছু বলছেও না।
আমি: বলতে পারো আমার মামি আর কাব্য’র মধ্যে পার্থক্য কোথায়, একজন বিক্রি করেছে আর অন্যজন কিনেছে। আমি ওদের কাছে বাজারের পণ্য হয়ে গেছি ভাবি।
ভাবি: চুপ এসব বলবি না সব ঠিক হয়ে যাবে তুই একটু ঘুমানোর চেষ্টা কর।
ভাবি আমাকে শুয়ে দিয়ে চলে গেলেন। চুপচাপ শুয়ে শুয়ে কাঁদছি। কাব্য এমন করেছে বিশ্বাসই করতে পারছি না, কেন করলো ও এমনটা। মামি না মানলে আমাকে বলতো আমি চলে আসতাম ওর কাছে আর যদি মামিকে টাকা দিতেই হতো আমাকে বলে দিলে কি হতো..?

হঠাৎ কপালে ঠান্ডা অনুভব হতেই ঘুম ভেঙে গেলো, চোখ মেলে তাকাতে পারছি না মাথা যন্ত্রণা করছে। চোখ বন্ধ রেখেই কপালে হাত দিলাম, কপালে তো জলপট্টি দেওয়া। আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম, পাশে কাব্য মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। আমি নড়াচড়া করছি বুঝতে পেরে আমার দিকে তাকালো।
কাব্য: তিলো এখন একটু ভালো লাগছে..? যা জ্বর উঠেছিল আমি তো… (কপাল থেকে জলপট্টি এনে ছুড়ে ফেলে দিলাম, সবকিছুর জন্য ও দায়ী আর এখন আসছে ডাক্তারি করতে)
কাব্য: ভুল তো আমি করেছি নিজেকে শাস্তি দিচ্ছ কেন।
আমি: (নিশ্চুপ)
কাব্য: একটু বসো আমি খাবার আর ওষুধ নিয়ে আসছি
আমি: আমার কিছু প্রয়োজন হলে ভাবির থেকে নিয়ে নিবো, আমাকে নিয়ে আপনার এতো ভাবতে হবে না।
কাব্য: ভাবি বাসায় নেই আর আমি না ভাবলে কে ভাববে শুনি।
আমি: ভাবি কোথায়..?
কাব্য: হসপিটালে গেছে, ভাবির আম্মু অসুস্থ। (দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকালাম সন্ধ্যা সাতটা বাজে তারমানে আজকে আর তিশার কাছে যাওয়া সম্ভব না)
কাব্য: চুপচাপ শুয়ে থাকো আমি আসছি।
আমি: বললাম তো আমাকে নিয়ে আপনার এতো চিন্তা করতে হবে না।
কাব্য: আবার আপনি করে বলছ।
আমি: হ্যাঁ কারণ আমি তো আপনার কেনা…
কাব্য: তিলো তুমি অসুস্থ এসব নিয়ে এখন কোনো কথা বলতে চাই না আগে সুস্থ হও সব ঠিক করে নিবো।
আমি: আর কিছুই ঠিক হবে না কাব্য চৌধুরী।
কাব্য: ডাক্তারবাবু থেকে কাব্য… বাদ দাও চলো।
আমি: কোথায় যাবো..?
কাব্য: তোমাকে রুমে একা রেখে যেতে পারবো না।
আমি: মানে..?
আমার কথার উত্তর না দিয়ে আমাকে কোলে তুলে নিলো, কি অদ্ভুত মানুষ।

কাব্য খাবার গরম করছে আর আমাকে ওর কাছে একটা চেয়ারে বসিয়ে রেখেছে, ও হয়তো ভাবছে আমি পালিয়ে যাবো। যাবো তো ঠিকি তবে পালিয়ে না ওকে ছেড়ে চলে যাবো আর সকালেই।
কাব্য: তিলো বসে থাকতে কষ্ট হচ্ছে..?
আমি: আমার কষ্ট নিয়ে ভাবতে হবে না, খাবার কার জন্য গরম করছেন..?
কাব্য: তোমার জন্য।
আমি: খাবো না আমি।
কাব্য: তুমি অসুস্থ তাই ওষুধ খেতে হবে আর ওষুধ খেতে হলে আগে খাবার খেতে হবে (আসছে এখানে দরদ দেখাতে ইচ্ছে হচ্ছে ওকে…)
কাব্য: চলো।

টেবিলে মাথা রেখে বসে আছি, কাব্য খাবার নিয়ে বার বার খেতে বলছে। অসহ্য লাগছে ওর এসব ভালোবাসা।
কাব্য: তিলো মাথা তুলো তাকাও আমার দিকে।
আমি: (নিশ্চুপ)
কাব্য: খেয়ে নাও প্লিজ।
আমি: বলেছি তো খাবো না।
কাব্য: খাইয়ে দিচ্ছি চুপচাপ খেয়ে নাও।
আমি: বললাম না খাবো না (খাবারের প্লেট ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলাম)
কাব্য: তিলো…(থাপ্পড় দেওয়ার জন্য হাত উপরে তুলে আবার নামিয়ে নিলো)
অয়ন: বাহ্ ভাইয়া বাহ্ এইটাও দেখতে হলো (অয়নের কথা শুনে দরজায় তাকালাম, রাগি চোখে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে)
অয়ন: একে মেয়েটা অসুস্থ তার উপর আবার তুমি এমন করছ।
কাব্য: কি করবো ও আমার কোনো কথাই শুনছে না।
অয়ন: যা করেছ তারপর কি ভাবির রাগ করাটা স্বাভাবিক না..?
কাব্য: (নিশ্চুপ)
অয়ন: আর ভাবি কি শুরু করেছ দুজনে..? একটা ভুল হয়ে গেছে দুজনে কথা বলে মিটিয়ে নাও। তা না করে এভাবে কান্নাকাটি করে নিজেকে শাস্তি দিচ্ছ কেন..? এই কয়েক ঘন্টায় জ্বর বাধিয়ে নিজের কি অবস্থা করেছ দেখেছ একবার..? ভাইয়া ভাবিকে নিয়ে রুমে যাও, বড় ভাইয়া আর ভাবি আজকে বাসায় ফিরতে পারবে না (অয়ন নিজের রুমে চলে গেলো, কাব্য’র জন্য আজ এতো গুলো কথা শুনতে হলো আমাকে)
কাব্য: হয়েছে শান্তি ছোট ভাইয়ের থেকে আমাকে বকা শুনালে, চলো এবার।
আমি: একাই যেতে পারবো আমি।
কাব্য: হ্যাঁ যাও আর সিড়ি থেকে পড়ে গিয়ে…
আমি: মারা যাবো তাই তো।
কাব্য: তিলো প্লিজ আমি ভুল করেছি যা শাস্তি দিতে হয় দাও তবুও এসব কথা বলোনা, তোমাকে হারানোর কথা তো আমি ভাবতেও পারিনা। (ওর কথার কোনো জবাব না দিয়ে আস্তে আস্তে রুমে চলে আসলাম)

বিছানায় শুয়ে আছি আর কাব্য সোফায় বসে ল্যাপটপ টিপছে। হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো, তাকিয়ে দেখলাম আমার ফোন।
কাব্য: তোমার উঠতে হবে না আমি দেখছি। (কাব্য ফোন হাতে নিয়ে একবার আমার দিকে তাকালো তারপর ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো। অনেকক্ষণ পর কাব্য রুমে আসলো)
আমি: কে ফোন দিয়েছিল..?
কাব্য: তিশা।
আমি: তো ফোন নিয়ে বারান্দায় যেতে হলো কেন..?
কাব্য: এমনি। (আর কিছু না বলে চুপচাপ শুয়ে রইলাম)

কাব্য: খাবার, ওষুধ কিছুই তো খাওনি রাতে যদি জ্বর বেড়ে যায় তখন বুঝবে আমি কতোটা খারাপ হতে পারি (আমার পাশে এসে শুয়ে পড়লো)
আমি: যে টাকা দিয়ে মেয়ে কিনে এনে বিয়ে করে সে কোতোটা ভালো তাতো বুঝতেই পারছি।
কাব্য: কতোবার বলবো এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না তুমি সুস্থ হও আগে তারপর নাহয় ইচ্ছেমতো ঝগড়া করো। (কিছু না বলে বিছানার এক পাশে এসে শুয়ে রইলাম)

সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখি কাব্য’র বুকে ঘুমিয়ে আছি আর ও আমাকে দুহাত দিয়ে জরিয়ে ধরে রেখেছে। ওর ঘুমন্ত মুখটা দেখতে কি মায়াবী কিন্তু ও…
কাব্য’র হাত দুটু সরিয়ে দিয়ে উঠে পড়লাম। একটু ফ্রেশ হয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়লাম।

তিশার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, ও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি: তোর আবার কি হলো..?
তিশা: তুই কান্নাকাটি বন্ধ কর বলছি।
আমি: ওহ ও তোকে সব বলে দিয়েছে।
তিশা: আসলে তমা আমি সবকিছু জানতাম।
আমি: কি..?
তিশা: প্লিজ রাগ করিস না পুরো কথাটা আগে শুন।
আমি: তিশা তুইও আমাকে ঠকালি।
তিশা: এইটাকে ঠকানো বলে না তুই…
আমি: থাক আর কিছু শুনতে চাই না।
তিশা: কোথায় যাচ্ছিস..? একটা কথা শুনে যা প্লিজ তোর ফোনটা একবার দেখিস (তিশার ডাকে সাড়া না দিয়ে দৌড়ে বাসায় চলে আসলাম। কলিংবেল চাপতেই মামি দরজা খুলে দিলো)
আমি: এমন হা করে তাকিয়ে আছ কেন, আশা করনি আমি যে আসবো।
মামি: না মানে…
আমি: সবাই তো ঠকালে আমাকে শান্তি পেয়েছ তো।
মামি: (নিশ্চুপ)
আমি: ওহ হ্যাঁ আমাকে বিক্রি করে কতো টাকা পেয়েছ মানে কাব্য চৌধুরী তোমাকে কতো টাকা দিয়েছে..?
মামি: (নিশ্চুপ)
আমি: বলছ না কেন, আমি শুনতে চাই কতো টাকার বিনিময়ে তোমরা আমাকে কেনাবেচা করেছ।
মামি: তমা…
আমি: বলো কতো টাকা…
মামি: এক কোটি (আমার ধমকে ভয়ে বলে দিলো। বাহ্ কাব্য’র কাছে আমার মূল্য এক কোটি টাকা)
আমি: মামি আর মায়ের মধ্যে পার্থক্য কি বলতো..? মা হয়ে মেয়েকে বিক্রি করতে পারলে তুমি..?
মামি: ভুল হয়ে গেছে মা মাফ করে দে।
আমি: আব্বুর রেখে যাওয়া সম্পত্তির দলিল গুলো দাও।
মামি: কেন..?
আমি: সবকিছু বিক্রি করে এই শহর ছেড়ে চলে যাবো, না তোমার কাছে থাকবো না কাব্য’র কাছে।
মামি: পাগলামি করিস না ঠান্ডা মাথায় আমার কথাটা শুন।
আমি: চুপচাপ আমার কথা শুনো নাহলে আমাকে কেনাবেচা করার কারণে তোমাকে আর ওই কাব্য চৌধুরীকে জেলে পাঠাবো।
মামি: তমা…
আমি: যাও দলিল গুলো নিয়ে এসো।

জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছি, কতোদিন পর নিজের রুমে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু আজ কোনো কিছুই নিজের মনে হচ্ছে না কারণ আমি যে…(হঠাৎ কাব্য এসে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো, ওর স্পর্শ যে খুব চেনা তাই না দেখেই বুঝতে পারি এখন। কিন্তু কাব্য কোথা থেকে আসলো)
আমি: ছাড়ুন।
কাব্য: না আগে বলো আমাকে না বলে চলে এসেছ কেন..?
আমি: ইচ্ছে হয়েছে তাই।
কাব্য: জানো তোমাকে না পেয়ে কতোটা ভয় পেয়েছিলাম, সারা বাসা খুঁজেছি কিন্তু পাইনি তারপর তিশা ফোন করে বললো তুমি এখানে।
আমি: তিশার সাথে দেখছি আপনার ভালোই যোগাযোগ আছে।
কাব্য: তিশার জন্যই তো তোমাকে আমার করে পেয়েছি।
আমি: হ্যাঁ দুজন মিলেই তো আমাকে মামির থেকে কিনলেন।
কাব্য: উফফ তিলো…
আমি: ছাড়ুন বলছি (ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম, মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে)
মামি: তমা এইযে দলিল।
কাব্য: দলিল দিয়ে কি করবে..?
মামি: ও বলছে সবকিছু বিক্রি করে এই শহর ছেড়ে চলে যাবে।
কাব্য: মানে, তিলো পাগল হয়ে গেছো তুমি।
আমি: পাগল তো এতোদিন ছিলাম তাই তো তোমাদের কাউকে চিনতে পারিনি।
কাব্য: তাই বলে এমন সিদ্ধান্ত নিবে..?
আমি: হুম। (কাব্য আর মামি চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে গেলো)

কিছু ভালো লাগছে না একবার বিছানায় বসছি তো আবার জানালার কাছে যাচ্ছি খুব অস্থির অস্থির লাগছে। ফোনটা হাতে নিয়ে শুভ্রাকে ফোন দিলাম।
শুভ্রা: কি ব্যাপার তিলোত্তমা আমাকে নিজে থেকে ফোন করেছে।
আমি: আমার নাম্বার তুমি চিনো..?
শুভ্রা: আমি জানবো না তোমার নাম্বার তা কি কখনো হয়।
আমি: ওহ আমার উপকার করেছ তো তাই তোমাকে কিছু গিফট করতে চাই।
শুভ্রা: আমার তো গিফট চাই না চাই শুধু কাব্য’কে।
আমি: কাব্য’কেই তো গিফট দিবো।
শুভ্রা: মানে?
আমি: কাব্য’কে আমি ডিভোর্স দিবো আর আজকেই। তুমি তো আমার এতো বড় উপকার করেছ তাই নিজের হাতে কাব্য’র হাতটা তোমার হাতে তুলে দিতে চাই।
শুভ্রা: সত্যি বলছ তুমি..?
আমি: হ্যাঁ আমাদের বাসায় চলে আসো, মামির বাসায় কিন্তু।
শুভ্রা: আমি এক্ষণি আসছি।

ফোন রেখে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখি কাব্য দাঁড়িয়ে আছে।
কাব্য: এই সিদ্ধান্ত তুমি নিতে পারলে তিলো (কাব্য কাঁদতে কাঁদতে ফ্লোরে বসে পড়লো)
যতো খুশি কাঁদো কাব্য চৌধুরী আমি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা তো করবোই। তোমাদের মতো মুখোশ পড়া আপন মানুষদের চেয়ে একা থাকা অনেক ভালো।

চলবে?

রোমান্টিক ডাক্তার
পার্ট: ১৪
লেখিকা: সুলতানা তমা

জোহরের নামাজ পড়ে জায়নামাজ এই বসে ছিলাম হঠাৎ ভাবির চেঁচামেচি শুনে ড্রয়িংরুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম। রুমের বাইরে আসতেই ভাবি সামনে এসে দাঁড়ালো, ভাবি খুব রেগে আছে বুঝতেই পারছি। আমার হাত ধরে টেনে ড্রয়িংরুমে নিয়ে আসলো। ভাইয়া, অয়ন, তিশা, কাব্য, মামি সবাই বসে আছে। বাহ্ কাব্য তো দেখছি সবাইকে ফোন করে এখানে নিয়ে এসেছে।
ভাবি: তিলোত্তমা এসব কি শুনছি..?
আমি: কি?
ভাবি: ডিভোর্স এর কথা আসছে কেন (কলিংবেল বাজছে, জানি শুভ্রা এসেছে)
মামি: তিশা দেখতো কে এসেছে।
আমি: শুভ্রা এসেছে আমি খুলছি দরজা।

দরজা খুলে শুভ্রার দিকে তাকিয়ে আছি, শাড়ি পড়ে খুব সুন্দর করে সেজেছে পুরাই পরী।
আমি: ভিতরে এসো।
শুভ্রা: কাব্য কোথায়..?
আমি: ওইতো বসে আছে। (শুভ্রা গিয়ে কাব্য’র পাশে দাঁড়ালো, কাব্য উঠে আমার কাছে চলে আসলো)
শুভ্রা: তিলোত্তমা কাব্য’কে ডিভোর্স দিবে বলেছিলে সব রেডি তো।
কাব্য: আমি আমার তিলো পাগলীকে ছাড়া থাকতে পারবো না প্লিজ তুমি আমায় এতো বড় শাস্তি দিও না। আমি যা করেছি শুধুমাত্র তোমাকে আমার করে পাওয়ার জন্য করেছি। (কাব্য আমার হাত ধরে কাঁদতেছে দেখে শুভ্রা এসে ওর হাত ধরলো)
শুভ্রা: কাব্য তুমি আমার কাছে এসো ও তোমায় কাঁদাচ্ছে কিন্তু আমি তোমায় কখনো কাঁদাবো না (শুভ্রার হাত ধরে টান দিয়ে আমার সামনে এনে ওর দুগালে কয়েকটা থাপ্পড় দিলাম। ও গালে হাত দিয়ে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে)
তিশা: আমি জানতাম তুই আমার মেসেজটা পড়বি। হিহিহি দারুণ হয়েছে।
আমি: তোর মেসেজ পড়েই তো শুভ্রাকে এখানে ডাকলাম।
শুভ্রা: এসব কি করছ তিলোত্তমা, তুমি তো বলেছিলে কাব্য’কে ডিভোর্স… (আরো কয়েকটা থাপ্পড় দিলাম)
আমি: বিয়ে নামক সম্পর্কটার জোড় কতোটা বেশি তুই হয়তো সেটা জানিস না। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক এতো ঠোনকো না যে তোর মতো কোনো নষ্টা মেয়ে এসে একটা ঠোকা দিলেই সম্পর্কটা ভেঙে যাবে।
শুভ্রা: তুমি আমাকে ডেকে এনেছ এভাবে অপমান করার জন্য..?
আমি: তো তোর কি মনে হয় কাব্য’কে তোর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ডেকে এনেছি..? বৌভাত এর দিন কি বলেছিলাম ভুলে গেছিস..? ভুলে গিয়ে থাকলে আবারো বলছি “কাব্য আমাকে আর আমি কাব্য’কে দুজন দুজনকে ভালোবাসি। কাব্য আমার আর শুধু আমারই থাকবে” তোর মতো কোনো নষ্টা মেয়ে আমাদের আলাদা করতে পারবে না।
শুভ্রা: ডিভোর্স এর কথা বলে তুমি আমার সাথে নাটক করেছ..?
আমি: তুই যেমন সবকিছু প্ল্যান করে করেছিস আমিও সবকিছু প্ল্যান করে তোর কাজের পাল্টা জবাব দিলাম।
শুভ্রা: তোকে তো আমি…(শুভ্রা আমাকে থাপ্পড় দিতে আসছিল, কাব্য শুভ্রার হাত ধরে ফেললো)
কাব্য: এতোদিন তোর সবকথা মুখ বোজে সহ্য করে গেছি কিন্তু আমার তিলোর গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে তোর হাত আমি ভেঙে ফেলবো।
আমি: তোর পাতানো ফাদে কাব্য আটকে গিয়েছিল তাই ভুল করে ফেলেছে, ও যদি নিজে থেকে এমন করতো তাও আমি ওকে ডিভোর্স দিতাম না কারণ ও আমাকে ভালোবাসে আর ও যা করবে আমার ভালোর জন্যই করবে।
শুভ্রা: আজ যতো গুলো থাপ্পড় দিয়েছিস আর যতোটুকু অপমান করেছিস সবকিছুর প্রতিশোধ আমি নিবো।
আমি: যা খুশি কর শুধু এইটুকু মনে রাখিস কোনো স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ভাঙ্গা এতো সহজ না। (শুভ্রা রাগে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে গেলো)
কাব্য: ডিভোর্স এর কথাটা শুনে অযতাই ভয় পেয়েছিলাম ভুলেই গিয়েছিলাম আমার তিলো পাগলী আমাকে ভালোবাসে তাই কখনো আমাকে ডিভোর্স দিবে না।
আমি: আমাকে জানিয়ে যদি সবকিছু করতেন তাহলে আজ দুজনকে এতো কষ্ট পেতে হতো না। নিজের বউয়ের থেকে কথা লুকানোর শাস্তি তো আপনি পাবেনই।
কাব্য: যা খুশি শাস্তি দাও শুধু ছেড়ে যাওয়ার কথা বলোনা মরে যাবো।
অয়ন: ভাবি বিষয়টা কি হলো বলতো।
ভাবি: কাব্য তো ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল তুই নাকি ওকে ডিভোর্স দিবি বলেছিস তাই তো আম্মুকে হসপিটালে রেখেই ছুটে আসলাম কিন্তু এখন তো সবকিছু উল্টো হলো।
ভাইয়া: আমি জানি তিলোত্তমা কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতেই পারে না।
আমি: ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তো, তোমাদের সবাইকে ছেড়ে এই শহর ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু হঠাৎ ফোন হাতে নিয়ে তিশার মেসেজ দেখে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি।
অয়ন: একটা মেসেজে সবকিছু ঠিক হয়ে গেলো, তিশা আপু তুমি কি জাদু করে মেসেজ পাঠিয়েছিলে..?
তিশা: জাদু না সবকিছু খুলে বলেছিলাম। আসলে দোষটা আমারই তমাকে আগেই সব জানানো উচিত ছিল।
কাব্য: জানাইনি তো ভয়ে যদি আমাকে ভুল বুঝে।
ভাবি: আচ্ছা মেসেজে কি লিখা ছিল..?
আমি: বলছি “তমা আমি জানি তুই রেগে আছিস আর একবার রেগে গেলে যে তুই কারো কথা শুনিস না সেটাও আমি জানি তাই তো মেসেজে সব বলছি। এসবে কাব্য’র কোনো দোষ নেই, দোষতো তোর মামি আর শুভ্রার। কাব্য তোকে ভালোবাসে এইটা শুভ্রা মেনে নিতে পারেনি তাই দুজন লোককে ও তোর মামির কাছে পাঠিয়েছিল। আন্টি রাজি না হওয়াতে ভয় দেখিয়েছিল তখন আন্টি ভয় আর কিছুটা লোভে রাজি হয়ে যায়। তুই আমার কাছ থেকে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর কাব্য হঠাৎ হন্তদন্ত হয়ে আমার কাছে আসে আর বলে তোর মামি তোকে পতিতালয় এর দুজন লোকের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। আসলে আমার কাছে আসার আগে কাব্য তোদের বাসায় গিয়েছিল আর দরজা থেকে ওদের কথা শুনেই আমার কাছে চলে এসেছিল। তারপর আমরা তোদের বাসায় যাওয়ার পর অনেক কথা কাটাকাটি হয়, ওদের সাথে জামেলা করে লাভ হবে না বুঝতে পেরে কাব্য ওই দুজন লোকের থেকে তোকে কিনে নেয়। এছাড়া আর কোনো রাস্তা ছিল না আমাদের কাছে কারণ আমরা জামেলা করলে লোকগুলো তোর ক্ষতি করতো। কাব্য ওদের এক কোটি টাকার চেক দেওয়ার পর ওরা চলে গিয়েছিল। তারপর তোর রুমে গিয়ে আমরা তোকে পাইনি, কাব্য তোকে পাগলের মত খুঁজেছে পরে তো রাস্তায় তোকে অজ্ঞান অবস্থায় পেয়েছিল। লোক দুটু তোকে সাথে নিয়ে যায়নি বরং দ্বিগুণ টাকায় তোকে কাব্য’র কাছে বিক্রি করে শুভ্রার সাথে বেঈমানি করেছিল তাই শুভ্রা কিছু লোক ভাড়া করে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে জামেলা করেছিল। ওদিকে তোর জ্ঞান ফেরার পর যখন তুই আন্টির দোষ ঢাকার চেষ্টা করলি তখন কাব্য ভয়ে আর কিছু তোকে বলেনি। কাব্য তোকে ভালোবাসে তাই তোকে বাঁচানোর জন্য এমন করেছে আর তোর থেকে সবকিছু লুকিয়েছে শুধুমাত্র তোকে হারানোর ভয়ে। একটা মেয়েকে টাকা দিয়ে কেনাটা তো ভালো কাজ না। তুই এসব শুনে যদি কাব্য’কে ভুল বুঝিস তাই ও ভয়ে কিছু বলেনি, আমাকেও বলতে নিষেধ করেছিল। ভালোবাসার মানুষকে হারানোর ভয় পাওয়াটা তো স্বাভাবিক। কাব্য’কে আর ভুল বুঝিস না প্লিজ” এটাই ছিল তিশার মেসেজ।
অয়ন: এখন সব বুঝলাম, তাও আমি বলবো ভাইয়া ভুল করেছে। তখন যদি ভাইয়া ভাবিকে সব বলে দিতো তাহলে শুভ্রার কাছ থেকে ভাবিকে এসব শুনতে হতো না আর ভাবি এতো রাগ করতো না।
কাব্য: আমি তো ভয়েই বলিনি। (চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে)
মামি: সব ভুল আমার তমা আমাকে ক্ষমা করে দে মা।
আমি: ক্ষমা..(হাসলাম)
মামি: ওরা আমাকে ভয় দেখিয়েছিল আর কিছুটা লোভে পরে… কিন্তু তুই বাসা থেকে চলে যাওয়ার পর আমি বুঝতে পেরেছি তোকে আমি কতোটুকু ভালোবাসি। শুভ্রাকে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে।
তিশা: তমা আন্টি তো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন ক্ষমা করে দে।
আমি: হুম।
কাব্য: তিলো এবার বাসায় চলো।
মামি: তোমরা সবাই প্রথম এসেছ আমার বাসায়, খাওয়া দাওয়া করে রাতে যাবে।
ভাইয়া: ঠিক আছে।

জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছি আর বিকেলের প্রকৃতি দেখছি হঠাৎ তিশা এসে পাশে দাঁড়ালো।
আমি: ব্যাপার কি..?
তিশা: কিসের..?
আমি: আদনান ভাইয়ার সাথে মনে হচ্ছে সামথিং সামথিং।
তিশা: তেমন কিছু না এমনি একটুআধটু কথা বলি।
আমি: বিয়ের দাওয়াত কবে পাবো..?
তিশা: তমা তুই না…
কাব্য: তোমরা বললে আমি হেল্প করতে পারি (কাব্য এসে আমার অন্যপাশে দাঁড়ালো)
তিশা: কাব্য তুমিও…
কাব্য: বুঝেছি ব্যাপারটা আমাকেই দেখতে হবে তাই তো তিলো..?
আমি: আপনার ইচ্ছে।
কাব্য: এখনো আপনি..?
তিশা: আমি যাই এই সুযোগে রাগটা ভাঙিয়ে নাও। (তিশা চলে যেতেই কাব্য আমাকে টান দিয়ে ওর বুকের সাথে জরিয়ে ধরলো)
কাব্য: এতো অভিমান আমার তিলো পাগলীর জানতাম নাতো।
আমি: (নিশ্চুপ)
কাব্য: সব তো মিটেই গেলো তাহলে এখনো রেগে আছ কেন..?
আমি: উঁহু মিটেনি, আপনি আমার থেকে কথা লুকিয়েছেন এইটার শাস্তি তো আপনাকে পেতেই হবে।
কাব্য: আমি তো ভয়ে বলিনি প্লিজ বুঝার চেষ্টা করো।
আমি: শুভ্রা যে বাজে ভাবে বলেছে আপনি তো সেভাবে বলতেন না অবশ্যই বুঝিয়ে বলতেন। আগে বলে দিলে কি শুভ্রা আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করার সুযোগ পেতো আর আমি কি এতো কষ্ট পেতাম।
কাব্য: (নিশ্চুপ)
আমি: ভালোবাসেন অথচ সবকিছু শেয়ার করতে পারেন না, কেন?
মামি: তমা খেতে আয়।
আমি: আসছি।

খাওয়াদাওয়া করে সন্ধ্যার দিকে অয়ন, কাব্য আর আমি বাসায় চলে আসলাম। ভাইয়া আর ভাবি আবার হসপিটালে চলে গেলেন।

আজ তো ভাবি নেই তাই আমিই রাতের খাবার রান্না করছি, আর ভুয়া আমাকে হেল্প করছে। কাব্য বার বার ড্রয়িংরুম থেকে কিচেনে উকি দিচ্ছে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে। হুট করে কাব্য কিচেনে চলে আসলো, মতলব কি ওর।
কাব্য: বুয়া রান্না কতোদূর।
বুয়া: এইতো আর কিছুক্ষণ।
কাব্য: বাকিটুকু তিলো করে নিতে পারবে তুমি সারাদিন একা একা কতো কাজ করেছ আর করতে হবে না বাসায় চলে যাও। (কাব্য’র দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালাম, ও মিটিমিটি হাসছে। বুঝলাম না ও হঠাৎ বুয়াকে পাম দিচ্ছে কেন)
বুয়া: তাইলে আমি যাই।
আমি: ঠিক আছে। (বুয়া চলে যেতেই কাব্য এসে আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো)
কাব্য: খুব তো এতোক্ষণ আমার উকি মারা দেখে হাসছিলে এখন কি হবে, বুয়াকে তো পাঠিয়ে দিলাম।
আমি: কি হচ্ছে এসব, অয়ন বাসায় আছে।
কাব্য: থাকুক।
অয়ন: ভাবি (অয়নের কন্ঠ শুনে তাড়াতাড়ি দূরে সরে গেলো, ওর দিকে রাগি চোখে তাকালাম। কান ধরে আস্তে বললো সরি)
অয়ন: খিদে লেগেছে তো।
আমি: বসো।

খাওয়াদাওয়া করে রুমে আসতেই কাব্য পিছন পিছন আসলো।
কাব্য: তিলো নামাজ পড়বে না? (ওর প্রশ্ন শুনে কিছুটা না অনেক অবাক হলাম)
কাব্য: চলো দুজন একসাথে নামাজ পড়ি।
আমি: আপনি নামাজ পড়বেন?
কাব্য: সকালেও পড়েছি আর এখনো রেগে আছ, আপনি করে বলছ? (কাব্য’র কথার উত্তর না দিয়ে ওযু করতে চলে আসলাম। কাব্য’র উপর রেগে থাকলেও মনে মনে অনেক খুশিই হয়েছি কাব্য নিজে থেকে নামাজ পড়ার কথা বলেছে)

দুজন একসাথে নামাজ পড়ে নিলাম। আমি বিছানায় বসে আছি আর কাব্য জায়নামাজে বসে আড়চোখে আমাকে দেখছে।
কাব্য: ও আল্লাহ্‌ আমার তিলো পাগলীর রাগটা কমিয়ে দাও প্লিজ (কথাটা বলে কাব্য আমার দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে, ওর কথা শুনে আর রাগ করে থাকতে পারলাম না ফিক করে হেসে দিলাম)
কাব্য: যাক বাবা শেষ পর্যন্ত রাগটা কমলো তাহলে।
আমি: হু কমেছে কিন্তু যদি আর কখনো আমার থেকে কিছু লুকিয়েছ তখন আর রাগ কমবে না। (নিশ্চুপ হয়ে কি যেন ভাবছে, তাহলে কি কাব্য এখনো
আমার থেকে কিছু লুকুচ্ছে)
আমি: হলো কি এতো কি ভাবছ?
কাব্য: ভাবছি তিলো পাগলীর রাগটা যখন কমেই গেছে এখন তাকে আদর করবো।
আমি: মানে কি? (কিছু না বলে আমার কাছে এসে আমাকে বসা থেকে শুয়ে দিলো। জোর করে ওকে সরাতে চাইলাম উল্টো আমাকে জরিয়ে ধরলো)
আমি: কি করছ ডাক্তারবাবু..?
কাব্য: উহ প্রাণ ফিরে পেয়েছি মনে হচ্ছে কতো বছর পর ডাক্তারবাবু বলে ডাকলে।
আমি: তাই বুঝি।
কিছুনা বলে ডান হাতটা আমার ঘাড়ের কাছে নিয়ে রাখলো, বাম হাত দিয়ে আমার একটা হাত ওর মুখের কাছে নিয়ে গিয়ে আমার হাতে আলতো করে চুমু খেলো, ওর ঠোঁটের স্পর্শে কেঁপে উঠে চোখ দুটু বন্ধ করে ফেললাম। ও হাত ঘুরিয়ে আমার পেটের উপর দিয়ে নিয়ে আমার হাতের উপর ওর হাত রাখলো। আমার হাতের আঙ্গুলের ভাজে ভাজে ওর হাতের আঙ্গুল গুলো আটকে দিলো।
আমি: ডাক্তারবাবু প্লিজ ছাড়ুন।
কাব্য: চুপ, কথা তো বলতে পারছ না ঠোঁট দুটু কাঁপছে তাও এতো কথা বলো কেন।
আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওর ঠোঁট গুলো আমার ঠোঁটের উপর আলতো করে রাখলো।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here