রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ১৫

0
2186

রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ১৫
লেখিকা: সুলতানা তমা

কাব্য: তিলো আমার ঘড়ি কোথায়..?
আমি: টেবিলের উপর রাখা আছে।
কাব্য: তিলো আমার শার্ট পাচ্ছি না।
আমি: চোখ অন্ধ হয়ে গিয়েছে নাকি, বিছানার উপরই তো রাখা আছে।
ভাবি: রেগে যাচ্ছিস কেন..?
আমি: ভাবি তুমি হাসছ, ওর কান্ড দেখেছ প্রতিদিন হসপিটালে যাওয়ার সময় তিলো আমার এইটা পাই না ওইটা পাইনা বলে চেঁচামেচি করে। প্রতিদিন ভালো লাগে বলো, শান্তিতে কোনো কাজ করতে দিবে না।
কাব্য: তিলো রাতে যে ফাইলটা রেখেছিলাম ফাইলটা কোথায় পাচ্ছি নাতো।
আমি: আমার মাথায় (রান্নাঘরে কাজ করছি আর ও রুম থেকে সমানে চেঁচামেচি করেই যাচ্ছে)
কাব্য: রেগে যাচ্ছ কেন একটু খুঁজে দিয়ে যাওনা।
ভাবি: হিহিহি।
আমি: না হেসে আমার জন্য পাবনা হসপিটালে একটা সিট বুকিং করো তোমার দেবরের জ্বালায় আর পারছি না।
ভাবি: একবার রুমে যা ও সব খুঁজে পেয়ে যাবে চেঁচামেচিও বন্ধ হয়ে যাবে (ভাবি মিটিমিটি হাসছে, জানি তো ও এতো বেশি চেঁচামেচি করেই আমি যেন রুমে যাই)
কাব্য: তিলো আমার মোবাইল খুঁজে পাচ্ছি না।
আমি: একবার যদি রুমে আসি মোবাইলের সাথে তোমাকেও আছাড় দিয়ে ভাঙবো। (ধমক দিয়ে বললাম কাব্য’র চেঁচামেচিও বন্ধ হয়ে গেলো)
ভাবি: তোকে তো কাব্য পুরো জ্বালিয়ে ছাড়ছে।
আমি: এটাই…(আবার কাব্য’র ডাক শুনে থেমে গেলাম এখন তো ওকে আমি…)

রুমে এসে দেখি কাব্য হসপিটালে যাওয়ার জন্য পুরো রেডি। এতোক্ষণ অযতা চেঁচামেচি করেছে ইচ্ছে হচ্ছে এখন…
কাব্য: এতো চেঁচামেচি করতে হয় কেন হু আগেই রুমে চলে আসতে পারো না।
আমি: ঘড়ি, মোবাইল, ফাইল সবকিছু তো এখানে তাহলে এতো চেঁচামেচি করেছ কেন..?
কাব্য: ভাবির সামনে আদর করলে তো তুমি লজ্জা পাবে তাইতো চেঁচামেচি করি যেন তুমি বিরক্ত হয়ে রুমে চলে আসো। আসলে কি বলতো তোমাকে আদর না করে গেলে পুরো দিনটাই আমার খারাপ যায়।
আমি: তাই বুঝি।
কাব্য: বিয়ের এক মাস হয়ে গেলো আর এখনো এইটুকু বুঝতে পারনি (আমার কোমরে ধরে টান দিয়ে ওর একদম কাছে নিয়ে আসলো)
আমি: চেঁচামেচি শুনতে হবে বলে আগেই সব রেডি রাখি তাও এমন করো ভালো লাগে বুঝি।
কাব্য: কতোটুকু ভালো লাগে আর কতোটুকু খারাপ লাগে সেটা তো আমি জানি।
আমি: হয়েছে এবার যাও দেরি হয়ে যাচ্ছে।
কাব্য: হু যাচ্ছি (আমার কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে চলে গেলো। এইটা ওর রোজকার রুটিন হয়ে গেছে, প্রতিদিন হসপিটালে যাওয়ার সময় আমাকে জরিয়ে ধরে কপালে চুমু খাওয়া)
কাব্য: তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে কিন্তু…
আমি: ওরে বাবারে।
কাব্য: আরে এভাবে ভয় পেয়েছ কেন..?
আমি: ভয় পাবো না আবার, অন্যমনস্ক হয়ে ছিলাম হুট করে সামনে এসে কথা বলে উঠলে। চলে গিয়েছিলে তো আবার এসেছ কেন..?
কাব্য: তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে এই কথাটা বলার জন্য।
আমি: কি সারপ্রাইজ?
কাব্য: বলবো না।
আমি: চলে যাচ্ছ যে বলে তো যাও।
কাব্য: আমি জানি রোজ সকালে আমার এমন চেঁচামেচিতে তুমি যতোটা বিরক্ত হও তারচেয়ে হাজারগুণ বেশি খুশি হও কারণ তুমি আমার এই পাগলামি গুলোকে ভালোবাস। (চলে যাচ্ছিল, দরজা থেকে ফিরে এসে আমার কানের কাছে ফিসফিস করে কথাটা বলে হাসতে হাসতে চলে গেলো। পাগল একটা। সত্যিই তো ওর এসব পাগলামিই তো আমার ভালো লাগে। একদিন সকালে চেঁচামেচি না করলেই কেমন যেন সবকিছু ফাঁকাফাঁকা লাগে)

কে যে এতোক্ষণ ধরে ফোন দিয়ে যাচ্ছে। নামাজ পড়ছিলাম কিন্তু ফোনের রিংটোনে শান্তিতে নামাজ পড়তে পারছিলাম না। ফোন হাতে নিয়ে দেখি কাব্য অনেক গুলো ফোন দিয়েছিল, রিসিভ না করাতে মেসেজ করেছে “বাসায় আসছি দুপুরে একসাথে খাবো” যতোটা বিরক্তি লাগছিল তারচেয়ে বেশি খুশি হয়ে গেলো মন মেসেজটা পড়ে।

খাবার গুলো টেবিলে খুব সুন্দর করে সাজাচ্ছি। ভাবি এসে দেখে হা করে তাকিয়ে রইলো।
ভাবি: এতো খাবার কার জন্য বাসায় তো শুধু তুই আর আমি।
আমি: ডাক্তারবাবু আসছে সবাই একসাথে খাবো।
ভাবি: তাই তো বলি তিলোত্তমাকে এতো খুশি খুশি লাগছে কেন। কাব্য দুপুরে বাসায় খাবে আগে বললি না কেন তাহলে ওর পছন্দের খাবার গুলো রান্না করে রাখতাম।
আমি: জানতাম নাকি এখন মেসেজ দিয়ে বললো।
ভাবি: ওহ তাই বল।
আমি: আচ্ছা ভাবি ডাক্তারবাবুর পছন্দের খাবারগুলো কি কি বলতো, পরে নাহয় অন্য একদিন রান্না করে খাওয়াবো।
বুয়া: ওর পছন্দের খাবার কি কি শুনলে তো তুমি হাসবা।
আমি: কেন?
বুয়া: সব বড়লোক দেখি দামী দামী খাবার পছন্দ করে আর মেঝো সাহেব পছন্দ করে গরীবরা যা খায় তা।
আমি: মানে।
ভাবি: ছোটমাছ আর সব ধরনের ভর্তা ওর পছন্দ।
বুয়া: এগুলা তো আমরা রোজ খাই।
ভাবি: হ্যাঁ যাও পারলে কাব্য’র জন্য কিছু একটার ভর্তা করে নিয়ে এসো।
বুয়া: আইচ্ছা।
আমি: ভাবি ডাক্তারবাবুকে খুব ভালোবাস তাই না।
ভাবি: কাব্য আর অয়ন ওরা তো আমার দুভাই। আর কি বলতো কাব্য নিজের কষ্টটা নিজের ভিতরেই রাখে কখনো মুখ ফুটে কিছু বলে না তাই যতোটুকু পারি ওর জন্য নিজে থেকে করার চেষ্টা করি। (কলিংবেল বেজে উঠলো নিশ্চয় আমার ডাক্তারবাবু এসেছে। দৌড়ে এসে দরজা খুললাম, কাব্য আমাকে দেখে মুখে হাসির রেখা টেনে চোখ টিপ মারলো। কি দুষ্টুরে বাবা)

ভাবি, কাব্য আর আমি একসাথে বসে খাবার খাচ্ছি। কাব্য খাবার খাচ্ছে বললে ভুল হবে ও তো খাবার খাওয়ার নামে দুষ্টুমি করছে। ভাবির চোখের আড়ালে টেবিলের নিচে আমার পায়ের উপর ওর পা ঘসছে আর আমি কেঁপে উঠছি দেখে মিটিমিটি হাসছে।
ভাবি: এই তিলোত্তমা কোথায় যাচ্ছিস?
আমি: খাবো না আর।
কাব্য: খাবার রেখে যেতে নেই চুপচাপ বসে খেয়ে নাও।
ভাবি: তুমি কি ওকে চুপচাপ বসতে দিচ্ছ, দুষ্টুমি গুলো বন্ধ কর ও খাবে। (এইরে ভাবি সব লক্ষ করেছে, ওকে নিয়ে আর পারিনা সব জায়গায় শুধু দুষ্টুমি)
কাব্য: ভাবি তুমি সব জায়গায় লক্ষ কর কেন?
ভাবি: দেবর আর জা এর ব্যাপারে একটু লক্ষ করতে হয়।
কাব্য: হু যাও খেয়ে দুজনই রেডি হয়ে নাও শপিং করতে যাবো।
আমি: তারমানে এটাই তোমার সারপ্রাইজ।
কাব্য: জ্বী না সারপ্রাইজটা কাল দিবো। (কালই যখন দিবে তাহলে আজ বলার কি ছিল, সারপ্রাইজটা জানার জন্য মন অস্থির হয়ে আছে)
ভাবি: আমি যাচ্ছি না।
কাব্য: আমি বলেছি তাই যেতে হবে।
ভাবি: না অন্যদিন যাবো আজ ভালো লাগছে না।
কাব্য: ওকে।

রিকশায় দুজন পাশাপাশি বসে আছি। কাব্য’র ইচ্ছেতে গাড়ি রেখে রিকশা দিয়ে যেতে হচ্ছে। একটা হাত দিয়ে কাব্য আমাকে এমন ভাবে জরিয়ে ধরে রেখেছে মনে হচ্ছে আমি একটা ছোট বাচ্চা, ওর হাত সরিয়ে নিলেই আমি রিকশা থেকে পড়ে যাবো। বার বার ওর দিকে তাকাচ্ছি আর ভাবছি “তুমি আমার জীবনে না আসলে কখনো বুঝতেই পারতাম না কেউ যে কাউকে এতোটা ভালোবাসতে পারে এতোটা কেয়ার করতে পারে”
কাব্য: বার বার এভাবে তাকাচ্ছ কেন আমার বুঝি লজ্জা লাগে না। (ইশশ এমন দুষ্টু মানুষের আবার লজ্জা)
কাব্য: একমাস ধরে তো দেখছ আমাকে তাহলে আজ আবার নতুন করে দেখার কি হলো (কাব্য আমার কানের কাছে ফিসফিস করে কথাটা বলতে নিজেই এখন লজ্জা পেলাম। সত্যি আজ ওকে একটু বেশিই দেখছি)
কাব্য: ইসস লজ্জাবতীর লজ্জাময় মুখটা দেখতে পারছি না (বোরকা পড়া তাই ও আমার মুখ দেখতে পারছে না আর তাই এই কথা বলছে। হঠাৎ কাব্য আমার হাতের উপর ওর হাত রাখলো, আমার হাতটা ওর হাতের মুঠোয় পূরে নিলো)।
কাব্য: কি হলো তোমার হাত এভাবে ঘেমে যাচ্ছে কেন আর কাঁপছে কেন (কাব্য’র দিকে তাকালাম শান্তভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমার হাতটা এখনো ওর হাতের মুঠোয়। আমিও কাব্য’র দিকে তাকিয়ে আছি, কি উত্তর দিবো আমি নিজেই তো জানিনা আমার হাত এভাবে কাঁপছে কেন)
কাব্য: আজ সারা বিকেল তোমার সাথে এভাবে হাতে হাত রেখে রিকশা করে ঘুরে বেড়াবো বুঝেছ।
আমি: হু।

সবার জন্য অনেক কিছু কিনলাম শুধু আমার নিজের গুলাই রয়ে গেলো, ইচ্ছে হচ্ছে না কোনো কিছু কেনার। কাব্য নিজেই আমার জন্য শাড়ি দেখছে।
আমি: তোমার ফোন বাজছে।
কাব্য: হুম দেখছি কে, তুমি এই শাড়িটা দেখো ভালো লাগলে নিয়ে নাও (শাড়িটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে ফোন নিয়ে একটু দূরে চলে গেলো)
“হানিমুনে যাওয়ার জন্য শপিং করতে এসেছ” আনমনে হয়ে শাড়ি দেখছিলাম হঠাৎ কে যেন পিছনে এসে কথাটা বললো, সাথে সাথে পিছনে তাকালাম কিন্তু কেউ তো নেই। তাহলে কি ভুল শুনলাম, না না ভুল হবে কেন আমি স্পষ্ট শুনেছি কেউ একজন কথাটা বলেছে। কিন্তু কে?

কাব্য: তিলো কাকে খুঁজছ এইতো আমি।
আমি: হুম।
কাব্য: কি হয়ছে কোনো সমস্যা।
আমি: নাতো।
কাব্য: ঠিক আছে চলো।
আমি: হুম। (কাব্য শাড়ি দেখছে আর আমি চারপাশে চোখ বুলাচ্ছি, খুঁজছি কে বলেছে কথাটা কিন্তু পাবো কোথায়? কন্ঠটা তো কোনো পুরুষের ছিল তা..)
কাব্য: তিলো কি হয়েছে তোমার কিছুই তো কিনছ না।
আমি: অনেক তো কিনেছ আর লাগবে না। বাসায় চলো প্লিজ।
কাব্য: বাসায়, ঠিক আছে চলো।

রিকশায় বসে আছি আর ভাবছি কে ছিল লোকটা..? আচ্ছা কাব্য কি সত্যি হানিমুনে যাওয়ার জন্য শপিং করছে কিন্তু ও তো আমায় কিছু বলেনি। তাহলে কি এই হানিমুন নিয়েই কাব্য আমাকে সারপ্রাইজ দিতে চাইছে। যদি এটাই হয় তাহলে ওই লোকটা জানলো কিভাবে আমরা যে হানিমুনে যাচ্ছি। হঠাৎ মনে হলো আমাদের রিকশাটা কেউ একজন ফলো করছে, তাড়াতাড়ি পিছনে তাকাতে চাইলাম কিন্তু রিকশার হুটে লেগে কপালে ব্যথা পেলাম।
কাব্য: পিছনে কি হ্যাঁ ব্যথাটা পেয়েছ তো। এভাবে জরিয়ে ধরে আছি তাও ব্যথা পেয়েছ যদি না ধরে রাখতাম তাহলে তো মনে হয় রিকশা থেকেই পরে যেতে।
আমি: ব্যথা পেয়েছি তার উপর আবার বকা দিচ্ছ (কিছুনা বলে রিকশা থামিয়ে পাশের দোকান থেকে পানি আনতে চলে গেলো)

কাব্য একটু দূরে যেতেই কে যেন রিকশার পাশে এসে দাঁড়ালো।
–হাই মেম।
আমি: কে আপনি?
–তোমার জম।
আমি: মানে।
–কাব্য হানিমুনে যাওয়ার কথা বলবে কিন্তু তুমি যাবে না যদি গিয়েছ…
কাব্য: তিলো পানি নাও (কাব্য’র কন্ঠ শুনে ভয়ে ওর দিকে তাকালাম)
কাব্য: কি হয়েছে? (আমাকে প্রশ্ন করছে তাহলে কি ও লোকটাকে দেখতে পারছে না। সাথে সাথে তাকালাম কিন্তু লোকটা তো নেই। লোকটার চোখ দুটু ছাড়া কিছু দেখা যাচ্ছিল না কারণ পুরো মুখ রুমাল দিয়ে বাধা ছিল)
কাব্য: কি হলো পানি নাও।
আমি: লাগবে না। (কাব্য রাগে পানির বোতলটা ছুড়ে ফেলে দিলো। আবার পিছনে তাকালাম ওই তো লোকটা, আমি তাকিয়েছি দেখেই একটা আঙ্গুল নেড়ে শাসিয়ে চলে গেলো)
কাব্য: আবার পিছনে তাকাচ্ছ ওখানে কে আছে? (ভয়ে কাব্য’র কাধে মাথা রেখে ওকে জরিয়ে ধরলাম, কাব্য হয়তো বুঝতে পেরেছে আমি ভয় পেয়েছি তাই ও আর কিছু না বলে আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো)

চুপচাপ বিছানায় শুয়ে আছি। লোকটার লাল হয়ে থাকা বড় বড় চোখ দুটু আর আঙ্গুল নেড়ে শাসানো কোনোটাই ভুলতে পারছি না। হঠাৎ কাব্য এসে পাশে বসলো, বিছানাটা আমার গায়ে টেনে দিয়ে আমার মাথায় একটা হাত রাখলো।
কাব্য: সেই সন্ধ্যা বেলায় শুয়েছিলে এখন তো অনেক রাত হলো উঠো। (কিছু না বলে কাব্য’র হাতটা বুকের কাছে এনে জরিয়ে ধরলাম)
কাব্য: কি হয়েছে বলতো এর আগে তো কখনো তোমাকে এতোটা ভয় পেতে দেখিনি। আসার সময় অন্যমনস্ক হয়েছিলে, রিকশায় ছোট বাচ্চাদের মতো আমাকে জরিয়ে ধরে রেখেছিলে। কি হয়েছে আমাকে বলো প্লিজ, তুমি কি কোনো কারণে ভয় পেয়েছ।
আমি: না কিছু হয়নি।
কাব্য: ঠিক আছে উঠে খেয়ে নাও আমি ঘুমাবো খুব টায়ার্ড লাগছে প্লিজ।
আমি: হুম।

খেয়ে এসে দেখি কাব্য ঘুমিয়ে পড়েছে। সত্যি ওর ঘুমন্ত মুখটায় ক্লান্তির চাপ পরে আছে। কাব্য’র চুল গুলোয় আলতো করে হাত বুলিয়ে ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।

মাঝরাতে হঠাৎ ফোনের রিংটোন শুনে ঘুম ভেঙে গেলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখি একটা অচেনা নাম্বার রিসিভ করবো কি করবো না ভাবতে ভাবতেই কেটে গেলো। পরক্ষণেই আবার বেজে উঠলো, কাব্য’র ঘুম ভেঙে যাবে তাই ফোনটা নিয়ে জানালার কাছে চলে আসলাম।
আমি: হ্যালো
–হানিমুনে যাবি না এই কথাটা কাব্য’কে এখনো বলিস নি।
আমি: আপনি কে বলুন তো আমাদের হানিমুন নিয়ে আপনার এতো মাথা ব্যথা কেন?
–বলেছি না তোদের জম আমি। (ধমকের সুরে কথাটা বলতেই ফোন কেটে দিলাম)

শুভ্রা ছাড়াও অন্য কেউ আমাদের শত্রু আছে আমি তো ভাবতেই পারছি না। কে এই লোক আমাদের হানিমুন নিয়ে সে নিষেধ করছে কেন, আর লোকটা জানলো কিভাবে আমরা যে হানিমুনে যাচ্ছি? কাব্য’র দিকে তাকালাম ও গভীর ঘুমে, ভাবছি কাব্য’কে এসব বলবো কিনা। কাব্য আমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিল আমি যদি আগেই বলে দেই তাহলে ওর আনন্দটাই নষ্ট হয়ে যাবে, আমি ওর আনন্দ নষ্ট করতে পারবো না। আচ্ছা লোকটা আমাদের কোনো ক্ষতি করবে নাতো? আমার ডাক্তারবাবুর কোনো ক্ষতি করবে নাতো? আবারো ফোনের মেসেজটোন বেজে উঠলো, আঁতকে উঠলাম মেসেজটা দেখে। “কে বলতে পারে এই হানিমুনে গিয়েই হয়তো তোর বা তোর ডাক্তারবাবুর প্রাণটা চলে যেতে পারে”

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here