রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ২৬

0
2558

রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ২৬
লেখিকা: সুলতানা তমা

কাব্য: তিলো তিলো কোথায় তুমি? (বারান্দায় বসে নিশ্চুপ হয়ে কাঁদছিলাম হঠাৎ কাব্য’র ডাক শুনে তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে রুমে আসলাম)
কাব্য: তিলো তুমি এই সময় বারান্দায় কি করছিলে?
আমি: কিছুনা।
কাব্য: তোমার কন্ঠ এমন শুনাচ্ছে কেন আর তোমার চোখ এতো লাল কেন? (কাব্য আমার দুগালে আলতো করে ধরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, ওর কথার কোনো জবাব না দিয়ে ওর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লাম, খুব কষ্ট হচ্ছে)
কাব্য: এভাবে কাঁদছ কেন কি হয়েছে?
আমি: কিছু হয়নি। (কাব্য’কে ছেড়ে দিয়ে চোখের পানি মুছে নিলাম, ওকে স্বপ্নের কথা বলা যাবে না। এমনিতেই আম্মুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে কাব্য অনেক ভেঙে পড়েছে এখন আবার বাচ্চার জন্য আমি কষ্ট পাচ্ছি শুনলে ও আরো ভেঙে পড়বে)
আমি: চলো আমার সাথে।
কাব্য: কোথায়?
আমি: নামাজ পড়বে আমার সাথে। (কাব্য’র হাত ধরে টেনে ওযু করতে নিয়ে আসলাম। একদিন নামাজ পড়লে দুদিন পড়তে চায় না এতো ফাজিল)

নামাজ শেষে রুম থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলাম তখনি কাব্য আমার হাত ধরে ফেললো।
আমি: কি?
কাব্য: কি লুকুচ্ছ আমার থেকে?
আমি: যা বললে তুমি কষ্ট পাবে সেটাই লুকিয়েছি আমি চাইনা তুমি আরো কষ্ট পাও।
কাব্য: তাই বলে একা কষ্ট সহ্য করবে? (কাব্য’র দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম)

আম্মুকে পাওয়া যাচ্ছে না তাই কাব্য কেমন যেন হয়ে গেছে আগের মতো হাসে না, আমার সাথে দুষ্টুমি করে না, সবসময় চুপচাপ হয়ে থাকে। কাব্য ভাবছে আম্মুকে কখনো পাবো না তাই ও ভেঙে পড়েছে। চিন্তা করোনা ডাক্তারবাবু একবার যখন জানতে পেরেছি আম্মু বেঁচে আছেন তাহলে তোমার তিলো পাগলী আম্মুকে ফিরিয়ে এনে তোমার মুখে আবারো হাসি ফুটাবে।

দু সপ্তাহ পর….

আগামীকাল হিয়ার বিয়ে, কিন্তু এখনো আম্মুর কোনো খুঁজ পাইনি আমি। সেই হসপিটালে আরো অনেক বার গিয়েছি কিন্তু কোনো খুঁজ পাইনি। খুব ভয় করছে হিয়া যদি বিয়েটা না করে তাহলে তো কাব্য খুব কষ্ট পাবে, তাছাড়া সব মেহমানরা আসতে শুরু করেছে এখন হিয়া রাজি না হলে মান সম্মান সব যাবে। আকাশের পরিবার কাব্য আর ভাইয়াকে কথা শুনাতে ছাড়বে না, কিযে করি এখন।
কাব্য: তিলো একা একা দাঁড়িয়ে কি ভাবছ?
আমি: আমি তো হিয়াকে কথা দিয়েছিলাম ওর বিয়েতে আব্বু আম্মু উপস্থিত থাকবেন কিন্তু আম্মুকে তো খুঁজে পাচ্ছি না, খুব ভয় করছে হিয়া বিয়েটা করবে তো?
কাব্য: হিয়ার সাথে কথা বলো, আগামীকাল বিয়ে এখন বিয়ে করবে না বললে হবে নাকি?
আমি: প্লিজ তুমি আবার রেগে যেও না আমি দেখছি।
কাব্য: হুম।

হিয়ার সাথে কথা বলা প্রয়োজন তাই হিয়ার রুমে আসলাম। হিয়া ফোনে কথা বলছে এখন কি ডাকবো কিন্তু না ডাকলে তো হবে না সময় খুব কম।
আমি: হিয়া আসবো?
হিয়া: হ্যাঁ ভাবি এসো। (হিয়া ফোন কেটে দিলো আমাকে দেখে)
আমি: কি ব্যাপার কার সাথে কথা বলছিলে?
হিয়া: আসলে ভাবি আ…
আমি: কি বলো। (হিয়া কি তাহলে আকাশের সাথে কথা বলছিল)
হিয়া: ভাবি…
আমি: আকাশের সাথে কথা বলছিলে নাকি? (হিয়া হেসে দিয়ে মাথা নিচু করে ফেললো)
আমি: কাল তোমাদের বিয়ে তারপর তোমরা এক হয়ে যাবে আর এখন তুমি লজ্জা পাচ্ছ। কথা বলেছ এইটা তো ভালো, বিয়ের আগে কথা বলে একে অপরকে জেনে নিয়েছ।
হিয়া: ভাবি আকাশ খুব ভালো ছেলে তোমরা আমার জন্য একদম ঠিক পাত্র পছন্দ করেছ। (যাক বাবা আকাশকে তাহলে হিয়া ভালোবাসতে শুরু করেছে তারমানে হিয়া এখন বিয়েটা ভেঙে দিবে না)
আমি: ভাগ্য করে এমন তিনজন ভাই পেয়েছ।
হিয়া: হুম সাথে মিষ্টি দুইটা ভাবি।
আমি: হিয়া একটা কথা বলার ছিল।
হিয়া: হ্যাঁ বলো এমন আমতাআমতা করছ কেন?
আমি: আসলে আম্মুকে তো খুঁজে পাইনি বিয়েও তো আগামীকাল, এর মধ্যে আম্মুকে খুঁজে পাবো কিনা জানিনা। বাসায় এতো মেহমান রেখে খুঁজতে যেতেও পারছি না, তুমি প্লিজ…
হিয়া: হুম বুঝতে পেরেছি। কম তো খুঁজনি এই দু সপ্তাহের ভিতরে অনেক বার ওই হসপিটালে গিয়েছ, না খুঁজে পেলে তোমারই বা কি করার আছে। চিন্তা করোনা আমি তীরে এসে তরী ডুবাবো না তবে তোমার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে চেষ্টা করে যেও প্লিজ। জানো তো আমি তোমার উপর অনেক ভরসা করি আমার মন বলে তুমিই পারবে আমাদের পরিবারটাকে আবার এক করতে।
আমি: থ্যাংকস। (হিয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে চলে আসলাম। মেয়েটা আমার উপর এতো ভরসা করে আর আমি কিনা আম্মুকে খুঁজে এনে দিতে পারছি না। বিয়েটা হিয়া করবে শুধু ওর ভাইদের আর আব্বুর সম্মানের কথা ভেবে কিন্তু আম্মু নেই এইটা ভেবে ওর মনে একটা কষ্ট থেকেই যাবে। কি করে আমি ওর এই কষ্ট দূর করবো? আল্লাহ্‌ একটা রাস্তা দেখাও আমাকে প্লিজ)

ভাইয়া: নীরা আজ কি খাবার পাবো না সকাল নয়টা বাজে এখনো নাশতা তৈরি হয়নি?
ভাবি: বিয়ে বাড়ির জামেলা বুঝার চেষ্টা করো একটু তো দেরি হবেই।
অয়ন: আর জামেলা এইটাকে বিয়ে বলে। (টেবিলে খাবার এনে রাখছিলাম, অয়ন কথাটা আস্তে বললেও আমার কান অব্দি এসে পৌঁছে গেছে। সবকিছুর জন্য আমি দায়ী)
আব্বু: আমি বুড়ো মানুষ হয়ে অপেক্ষা করছি আর তোরা পারছিস না?
তিশা: তমা। (একমনে কাজ করছিলাম হঠাৎ তিশা এসে আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো)
আমি: ওরে বাবারে তোর অভ্যাসটা ছাড়িসনি আর একটু হলেই তো পরে যেতাম।
তিশা: এই অভ্যাস ছাড়া যাবে না যতোদিন বেঁচে আছি তোকে এভাবেই জ্বালাবো।
আমি: আর আমি মারা গেলে তখন কাকে জ্বালাবি?
কাব্য: তিলো এসব কি ধরনের কথা? (কাব্য’র ধমক শুনে কেঁপে উঠে সামনে তাকালাম, সবাই আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে। আনমনে কিযে বলে ফেলছি)
আমি: আসলে আগে তো তিশাকে এসব বলতাম তাই বলে ফেলছি।
আদনান: আগের দিনগুলো কি এখনো আছে ভাবি? (আদনান এসেছে দেখে তিশার দিকে তাকিয়ে হাসলাম)
আমি: বাব্বাহ্ দুজন একসাথে।
ভাবি: সবাই বসে পড়ো।
অয়ন: বসেই আছি খিদায় পেটের মধ্যে ইঁদুর দৌড়োচ্ছে। (অয়ন এর কথা শুনে সবাই একসাথে হেসে দিল)
তিশা: তমা এদিকে দেখে যা।

তিশা আমার হাত ধরে সবার থেকে দূরে নিয়ে আসলো।
আমি: কি হয়েছে?
তিশা: আচ্ছা এইটা কি বিয়ে বাড়ি নাকি…
আমি: আস্তে ওরা শুনবে।
তিশা: দ্যাত এইটাকে বিয়ে বলে বাইরে থেকে বিয়ে বাড়ি মনে হয় কিন্তু ভিতরে সবকিছু কেমন যেন নীরব এমনকি মানুষগুলোও। আর কাব্য তো আগে এমন ছিল না সবসময় হাসি খুশি থাকতো।
আমি: আম্মুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তো তাই সবার মন খারাপ। আমি হিয়াকে কথা দিয়েছিলাম আম্মুকে খুঁজে আনবো কিন্তু কথা রাখতে পারিনি। হিয়ার ইচ্ছেতেই এমন সাদামাটা বিয়ে হচ্ছে।
তিশা: ওহ বুঝলাম। (কলিংবেল বাজছে শুনে আমি যেতে চাইলাম তিশা আমাকে আটকে দিয়ে ও গেলো। ভাবি একা সবাইকে খাবার ভেড়ে দিচ্ছেন দেখে আমি এগুলাম তখনি তিশা ডাক দিলো)
তিশা: তমা। (তিশার ডাক শুনে সবাই দরজার দিকে তাকালো। মামি সাথে তিন্নি আপুকে দেখে চমকে উঠলাম, কেন এসেছে ও আবার কোন অশান্তি চায়? কিছু পরে যাওয়ার শব্দ শুনে পাশে তাকালাম, ভাবির হাতে গ্লাস ছিল সেটা পরে গেছে। আশ্চর্য ভাবি আপুর দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন আর ভাবির হাত পা এভাবে কাঁপছে কেন, মনে হচ্ছে ভাবি আপুকে দেখে খুব ভয় পেয়েছে। বাকি সবার দিকে তাকালাম ভাবির মতো কাব্য অয়ন ভাইয়া আদনান ওরা সবাইও আপুর দিকে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে)
মামি: তমা কেমন আছিস?
আমি: ভালো তুমি এখানে?
ভাইয়া: মামিকে আমি ইনভাইট করেছিলাম।
আমি: কিন্তু মামি তোমার সাথে তিন্নি আপু…
মামি: তমা তিন্নি ওর ভুল বুঝতে পেরে ফিরে এসেছে আমি তো মা বল আবার কিভাবে ফিরিয়ে দেই।
আমি: হুম কিন্তু এখানে নিয়ে এসেছ কেন জানোনা ও…
তিশা: তমা চুপ কর। (তিশার কথায় চুপ হয়ে গেলাম কিন্তু তিন্নি আপুকে একদম সহ্য করতে পারছি না ইচ্ছে হচ্ছে ওকে…)
হিয়া: একি তুমি আবার এখানে? (হিয়ার কথা শুনে পিছনে তাকালাম, হিয়া নিচে আসছিল আপুকে দেখে সিঁড়িতেই দাঁড়িয়ে গেছে। তাহলে কি ওরা সবাই আপুকে চিনে)
আমি: হিয়া তুমি আপুকে চিনো? (হিয়া কাব্য’র দিকে তাকালো তারপর মাথা নেড়ে না বললো)
আমি: মামি তোমরা রুমে গিয়ে রেস্ট নাও।
আব্বু: আরে রেস্ট পরে নিবে খাবার সামনে যেহেতু রাখা আছে তাহলে আগে খাবার খাবে। (আব্বুর কথার উপরে আর কোনো কথা বললাম না। মামি এসে চেয়ার টেনে বসতেই আপুও বসতে আসলো, আপু ভাবির পাশ দিয়ে যেতেই ভাবি এক দৌড়ে রুমে চলে গেলো। হিয়া আর নিচেই আসেনি আবার রুমে চলে গেছে, একে একে ভাইয়া কাব্য অয়ন আদনান সবাই উঠে রুমে চলে যাচ্ছে। কি হচ্ছে এসব আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না, সবাই আপুকে দেখে এতো ভয় পেলো কেন)

মামি আর আপুকে একটা রুমে দিয়ে কাব্য’কে খুঁজতে আসলাম, কোথায় যে গেলো। পুরো বাসা খুঁজলাম কিন্তু কাব্য কোথাও নেই।
অয়ন: ভাইয়া বাগানে আছে। (হঠাৎ পিছন থেকে অয়ন কথাটা বলে উঠলো, অয়নের দিকে তাকালাম এখনো ওর চোখে মুখে ভয়ের চাপ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। সবাই এতো ভয়ে আছে কেন সেটাই তো বুঝতে পারছি না)

বাগানে এসে দেখি কাব্য চুপচাপ বসে আছে আর কি যেন ভাবছে। আমি কাব্য’র কাধে হাত রাখতেই ও কেঁপে উঠলো।
আমি: আরে আমি এসেছি এতো ভয় পাচ্ছ কেন?
কাব্য: কোথায় নাতো।
আমি: সবাই আমার থেকে কি যেন লুকানোর চেষ্টা করছ।
কাব্য: তিলো আমাকে একটু একা থাকতে দাও প্লিজ। (কাব্য’র এমন আচরণে বেশ অবাক হলাম, কাব্য তো কখনো আমার সাথে এমন আচরণ করে না। সবাই আপুকে দেখে এতো ভয় পাচ্ছে কেন? আচ্ছা তাহলে কি আপুই…)

দৌড়ে মামির রুমে আসলাম, আপু রুমে নেই মামি কাপড়চোপড় গুচাচ্ছেন।
আমি: মামি।
মামি: কিরে তমা কি হয়েছে তোর এমন হাপাচ্ছিস কেন?
আমি: মামি আপুর কি অন্য কোনো নাম আছে?
মামি: হ্যাঁ আছে তো কিন্তু তুই হঠাৎ…
আমি: প্লিজ মামি বলো আপুর আরেকটা নাম কি।
মাই: আরশি। (নামটা শুনে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো, তারমানে আমি এতোক্ষণ যা সন্দেহ করেছিলাম তাই সত্যি। আপুই আরশি আর তাই সবাই আপুকে দেখে এমন ভয় পাচ্ছে)

আপুর সাথে ফোনে আমার এতোবার কথা হয়েছে কিন্তু একবারের জন্যও আমি আপুর কন্ঠ বুঝতে পারিনি। আপু আমার ক্ষতি চায় জানতাম কিন্তু এতোটা… আনমনে হাটছিলাম আর এসব ভাবছিলাম হঠাৎ কে যেন আমার হাত ধরে টেনে আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেলো, তাকিয়ে দেখি আপু।
আমি: তুমি?
আপু: বেশ অবাক হচ্ছিস তাই না? আপুই কিভাবে আরশি হলো সেটাই তো ভাবছিস?
আমি: তুমি জানতে কাব্য’র স্ত্রী যে আর কেউ নয় আমি?
আপু: উঁহু প্রথম জানতাম না শপিংমলে তোকে একটা লোক ফলো করেছিল মনে আছে? সে আমাকে তোর পিক দিয়েছিল আর সেদিন জানতে পারি তুই কাব্য’র তিলো পাগলী।
আমি: তোমার বোন কাব্য’র স্ত্রী জেনেও তুমি প্রতিশোধ নিতে গিয়ে জেনে বুঝে আমার বাচ্চাটাকে মেরে ফেললে?
আপু: কথায় আছে না এক ঢিলে দুই পাখি মারা, আমিও সেটাই করেছিলাম। তোকে মেরে ফেললে তোর প্রতিও প্রতিশোধ নেওয়া হতো কাব্য’র প্রতিও প্রতিশোধ নেওয়া হতো।
আমি: আমার উপর এতো রাগ তোমার?
আপু: ভুলে গিয়েছিস সেদিনের কথা? শুধু তোর জন্য আব্বু আমাকে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার কথা বলেছিল।
আমি: কারণ তুমি আর তোমার বন্ধু অন্যায় করেছিলে।
আপু: রাখ তোর অন্যায় সবকিছুর প্রতিশোধ নিয়েছি আরো নিবো বুঝেছিস?
আমি: আমার বাচ্চাটাকে মেরে ফেলেছ আর প্রতিশোধ নেওয়ার মতো কিছু বাকি আছে নাকি?
আপু: আছে তো এখন কাব্য’কেও কেড়ে নিবো। (কথাটা শুনে আঁতকে উঠলাম, সত্যি কি ও কাব্য’কে আমার থেকে কেড়ে নিবে)
আরে আপু কোথায় চলে গেলো হুট করে?

সারা বাড়ি খুঁজলাম কিন্তু আপুকে তো কোথাও দেখতে পারছি না, ও কি আবার কোনো কিছু করার প্ল্যান করছে?
মামি: তমা তোর কি হয়েছে বলতো।
আমি: কিছু নাতো।
মামি: এমন দেখাচ্ছে কেন তোকে?
আমি: মামি আপু এতোদিন কোথায় ছিল?
মামি: বললো তো দেশের বাইরে ছিল। (কিন্তু কাব্য তো বললো আরশিকে ওরা জেলে দিয়েছিল)
মামি: কি ভাবছিস?
আমি: আপু কোথায় দেখেছ?
মামি: বলেছিল ছাদে যাচ্ছে।
আমি: হুম।

কাব্য: আরশি প্লিজ আমার কথা বুঝার চেষ্টা করো।
আপু: আমি কিছু বুঝতে চাইনা আমি যা বলি তুমি তাই শুনবে নাহলে আগের চেয়ে ভয়ানক কিছু ঘটাবো এখন।
কাব্য: অনেক করেছ আরশি প্লিজ এবার আমাদের শান্তিতে থাকতে দাও, আমি তিলোকে নিয়ে অনেক ভালো আছি প্লিজ আমাদের ভালো থাকতে দাও।
আপু: কিন্তু আমি যে তোমাকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই। (ছাদের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছিলাম, আপুর এই কথাটা শুনে একটু এগিয়ে আসলাম। এমন কিছু দেখতে হবে আমি তো ভাবতেও পারিনি। কাব্য দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সামনে আপু দাঁড়ানো। কাব্য’র এক হাতের আঙ্গুল গুলোতে আপুর এক হাতের আঙ্গুল গুলো আটকানো, আপুর আরেকটা হাত কাব্য’র বুকে রাখা। এই দৃশ্যটাও আমাকে দেখতে হলো)
কাব্য: আরশি তুমি আমার সব সম্পত্তি চাইছ তো দিয়ে দিবো প্লিজ আমাদের শান্তিতে থাকতে দাও। দেখো আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি তুমি যেহেতু তিলোর মামাতো বোন তোমাকে আমরা জেলে দিবো না প্লিজ তুমি আমাদের থেকে দূরে চলে যাও।
আপু: এসব পুলিশ জেল আমি ভয় পাই না আর সম্পত্তি আগে চাইতাম এখন আর চাই না এখন তো তোমাকে চাই। আর আমি জানি তুমি আমাকে এখনো ভালোবাস তাইতো আমাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছ না উল্টো আমার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় ধরে রেখেছ। (আপু কাব্য’র বুকে মাথা রাখলো আর কাব্য ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে না দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এসব দৃশ্য আর সহ্য করতে পারবো না দৌড়ে নিচে চলে আসলাম)

বার বার এই দৃশ্যটাই মনে পড়ছে আপু কাব্য’র বুকে মাথা রেখেছে আর কাব্য চোখ দুটু বন্ধ করে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ইদানীং কাব্য’র আচরণ গুলো আমাকে বেশ অবাক করে দিচ্ছে। কাব্য আপুকে সরিয়ে না দিয়ে উল্টো নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো তাহলে কি আপুর কথাটাই সত্যি? কাব্য আরশি নামের মেয়েটাকে এখনো ভালোবাসে? আপু যে বললো আমার থেকে কাব্য’কে কেড়ে নিবে সত্যিই কি কেড়ে নিবে তাহলে আমি বাঁচবো কিভাবে? কাব্য ছাড়া যে তিলোত্তমা বাঁচবে না সেটা তো কাব্য জানে…

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here