ভ্যাম্পায়ার,পর্ব: ০২,৩

0
2555

ভ্যাম্পায়ার,পর্ব: ০২,৩
Writer: Asstha Rahman
পর্ব-২

সকালে উঠেই প্রচন্ড মাথা ধরা অনুভব করলাম। চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। সবি ঠিকঠাক, কিন্তু কাল যে ল্যাম্পটা নিচে পড়ে গিয়েছিল সেটা বেডের পাশেই আছে। অয়েসও কোথাও নেই।
ভাবতে ভীষন খারাপ লাগছে এই ছিল ওর মনে? বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে আগে ঠোট টা ভালো করে ধুয়ে নিলাম।
কাল রাতে এই ঠোটে খারাপ স্পর্শ লেগেছে, ইচ্ছে করছে ঠোটটাই কেটে ফেলে দিতে। একবার পাই অয়েসকে, এমন অবস্থা করব যাতে কখনো কোনো মেয়েকে ছোঁয়ার সাহস না দেখায়। মুখে পানি দিয়ে আয়নায় তাকাতে দেখলাম একটা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
কি ভয়ংকর দেখতে! দুটো চোখের স্থানে শুধু কালো গর্ত, মুখের একপাশ ক্ষতবিক্ষত। যেন কেউ কামড়ে মাংস ছিঁড়ে নিয়েছে। ভয়ে চিৎকার করে পিছু নামলাম।
পরে আবার আয়নায় উকি দিয়ে দেখলাম কিছু নেই
ওয়াশরুমটাও চেক করলাম। নেশাটা তাহলে এখনো কাটেনি। তাও ভয় লাগছে তাই দেরী না করে বেরিয়ে এলাম।

অফিসে আজ যাবনা তা জানানোর জন্য অফিসে কল দিলাম। কলিগ মনিকা জানালো, অয়েস নাকি নিখোঁজ। কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা তাকে।
ইচ্ছে করেই কাল আমার বাসায় আসার ব্যাপারটা চেপে গেলাম। রাতের ঘটনাগুলো আমি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছিলাম।
কফি বানাতে বানাতে ভাবছিলাম, অয়েস তো আমাকে ভোগ করার জন্য নেশা করিয়েছিল, কিন্তু ও তা না করে কেন চলে গেল?
ঘুমিয়ে পড়ার আগে আমি যেন ওর চিৎকার শুনলাম।
চুলোয় যাক, ওর কথা আর ভাববনা।
মন ফ্রেশ করার জন্য হ্যারিকে কল দিয়ে অনেকক্ষণ কথা বললাম। বিকেলে বাহিরে বের হলাম ঘুরার জন্য। তাতে অয়েসের কথা প্রায় মাথা থেকে আউট হয়ে গেছিল।

শপিং, খাওয়া- দাওয়া এবং ঘোরাঘুরি শেষে গাড়ি ড্রাইভ করছি বাসার উদ্দেশ্যে। ততক্ষনে প্রায় সন্ধে হয়ে এসেছে। ড্রাইভিং টা বেশ ভালোই পারি, কিছুমাস আগে রেডকার কিনেছি। উঁচু রাস্তায় আসতেই দেখি একটা বড় গাড়ি আমার দিকে ফুলস্পীডে আসছিল। আমি পাশ কাটিয়ে নিয়ে দেখে আমার গাড়িটা নিশ্চিত গাছের সাথে ধাক্কা খেতে যাচ্ছে।
ব্রেক করার ট্রাই করছি, হচ্ছেনা। ধাক্কা খাওয়ার আগমূহুর্তে গাড়ি নিজেই অন্য সাইডে মোড় নিল।
অবাক হয়ে গেলাম।অহ গড যেভাবেই হোক মৃত্যুর হাত থেকে তো বাঁচলাম।
আবার স্বাভাবিক হয়ে ড্রাইভ করার জন্য গীয়ার অন করতে গিয়ে দেখি গাড়ীর পিছনের জানালা দিয়ে একটি বাদুড় গাড়ির ভেতর থেকে উড়ে বের হয়ে গেল।

বাসায় এসে বেডে গা এলিয়ে দিয়ে সব ঘটনা মিলিয়ে বুঝলাম, যা হয়েছে সব কাকতালীয় নতুবা আমার মনের ভুল।
লাইট অফ করে ঘুমাতে গিয়ে শুনলাম কিছু নারীকন্ঠের চিৎকার। মনে হচ্ছে কেউ তাদের উপর জুলুম করছে। এই প্যালেসে মেয়ে আসবে কোথা থেকে?
ভুল শুনলাম না তো। না ঠিকি শুনছি, এখনো আওয়াজ ভেসে আসছে।
আচ্ছা অয়েস কি এখনো প্যালেসে রয়ে গেছে? আমাকে জব্দ করার জন্য লুকিয়ে ভয় দেখাচ্ছে? হতেও পারে।
উঠে গিয়ে ড্রায়ার থেকে টর্চ আর রিভলবার টা বের করে রুম থেকে বের হলাম। শব্দটা নিচে স্টোররুমের থেকে আসছে মনে হয়। নিচে নেমে স্টোররুমে ঢুকলাম।কিচ্ছু তো নেই।দেখলাম পাশে একটা ছোট্ট দরজা, সেতা খুলে ঢুকলাম। একটা সরু লন আছে। লন টা সোজা একটা বদ্ধ দরজার অব্দি এসেছে। অই ছোট্ট দরজা আমি আগে খেয়াল করিনি। যাই হোক, অই বদ্ধ দরজার ভেতর থেকে আওয়াজ পাচ্ছিলাম।

দরজাটা সর্বশক্তি দিয়ে কয়েকবার ধাক্কানোর পর খুলল।ভেতরে ঢুকে টর্চ জ্বালালাম, পুরোনো ধুলো আর মাকড়সার জাল ভর্তি, রুমটা অনেক বড়। দেয়ালে অনেক অর্ধনগ্ন মেয়েদের ছবি আকা। মেঝেতে ছোপ ছোপ শুকনো রক্তের দাগ।কিন্তু কোনো শব্দ নেই।
দেখে মনে হচ্ছে কোনো জলসা ঘর।
দু’পা এগোতেই হুট করে দরজা বন্ধ হয়ে গেল। দৌড়ে এসে দরজা টানতে লাগলাম। কিন্তু খুলছেনা। শব্দগুলো আবার শুরু হল। মেয়েদের সরু গলার কান্না, বাচার আকুতি, ভয়ে গুটিসুটি হয়ে বসে গেলাম।
ওহ, গড হেল্প মি! প্লীজ হেল্প..বিড়বিড় করছিলাম!
তখনি…..

(চলবে)

ভ্যাম্পায়ার
পর্ব: ০৩
Writer: Asstha Rahman

( ১৮+ কন্টেটযুক্ত, পিচ্চিরা দূরে থাকো)

দেখলাম অয়েস শুন্যে ভাসছে। আমি উঠে গিয়ে ভয়ে ভয়ে ওকে ছুঁয়েছি, সাথে সাথে ওর লাশটা ফ্লোরে পড়ে গেল। দেখলাম ওর ঠোট দুটো কাটা। যে হাত দিয়ে আমার বুক ছুয়েছিল সেই হাত ছিন্নভিন্ন। গলার কাছে ২টো সরু ফুটো, রক্তশুন্য ফ্যাকাশে মুখে তখনো আতংকের ছায়া।
কে খুন করলো অয়েসকে? শুধুমাত্র আমার কারণেই ওকে মেরে ফেলা হয়েছে! কোথা থেকে একটা বাদুড় এসে আমার ঘিরে ঘুরপাক খেতে লাগল।
এখন বাদুড়টাও আমার ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে। যতটা জোরে সম্ভব দরজা ধাক্কাতে লাগলাম। হঠাৎ দরজা খুলে গেল। দৌড়ে রুমে চলে এলাম।
কি হচ্ছে এসব আমার সাথে? আমি কি এই প্যালেস ছেড়ে চলে যাব?
সারারাত চোখের পাতা এক হয়নি। ওয়াশরুমে গিয়ে চোখেমুখে পানি দিলাম তখন খেয়াল করলাম আয়নার ধুলোতে পোলিশ ভাষায় লেখা আছে,
” এই প্যালেস থেকে তুমি সহজে বের হতে পারবেনা!”
কে লিখলো এসব? ভাবতেই একটা মেয়ের হাসি শুনতে পেলাম।
— কে তুমি? সামনে এসো।
— অনেক প্রশ্ন তোমার মনে তাইনা?
— হুম, আমি সবটার উত্তর চাই। সামনে এসো তুমি।

সেইদিন যে মেয়েটাকে আয়নায় দেখেছিলাম, সেই মেয়েটাই সামনে এসে দাঁড়াল। এইবার আর আগের মত ভয় পাচ্ছিনা। একটু সাহস ভর করে বললাম,
— কে তুমি?
— আমি আলেস। সাধারণ একটা মেয়ে।
— তুমি কি চাও? আমার সাথে কেন এমন করছো?
— সবটা শুনলে বুঝতে পারবে। এই প্যালেসটা ১২০০বছর আগের। এই অঞ্চলটা একটা রাজ্য ছিল।তার জমিদার ছিল গোমেজ। ভীষণ অত্যাচারী ছিল সে। অবাক হয়ে বললাম
— কেমন অত্যাচারী?
— এই রাজ্যের প্রতিটা মেয়েকে ধরে নিয়ে সে ভোগ করত। এক রাতে চার-পাঁচ বার মেয়েদের ধর্ষণ করত।
তার একটা অভ্যাস ছিল মেয়েদের স্তনের একটুকরো মাংস কামড়ে রেখে দেওয়া।
কেউ তার ভয়ে কিচ্ছু বলতো না, প্রতি সপ্তাহে তার একটা মেয়ে চাই ই!

আমি ঢক গিললাম। এত্তটা ভয়ানক কাজ কেউ করতে পারে। ভয়টা ক্রমশ বাড়ছে। মেয়েটার চোখ নেই তাও বুঝতে পারল আমি ঘামছি।
— ভয় পাচ্ছো?
— ভয়ের মতই তো।
— ভয়কে দূর করো। ওর মুখোমুখি তোমাকেও হতে হবে!
— মানে?
— বুঝতে পারবে, পুরোটা শুনো।গোমেজের বেশ অসুখে ধরল। কেউ তাকে আশ্বাস দিতে পারলনা যে সে বাচবে।
তার গুরুসাধক বলল, সে আবার ফিরে আসতে পারবে ভ্যাম্পায়ার হয়ে। তার জন্য তার মৃত্যুর আগে ৭জন কুমারী মেয়ের রক্ত পান করতে হবে।

বাবার হাত ধরে প্রথম এসেছিলাম এইখানে ভাগ্যের সন্ধানে। ওরা আমার বাবাকে হত্যা করে আমাকে তুলে নিয়ে এসেছিল।
৭জনের মধ্যে আমিও ছিলাম। এক এক করে চোখের সামনে সব মেয়েকে মরতে দেখেছি। যখন ছুরি হাতে আমার সামনে এল। আমি ভয়ে গুটিয়ে ছিলাম, কিন্তু ও আমাকে না মেরে ভোগ করে। নিজের লালসাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনি।
ছিঁড়ে নিয়ে ছিল আমার স্তন। বলেই বুকের সাদা কাপড়টা সরিয়ে দেখায়। অনেক বড় একটা ক্ষত।
দেখেই কেপে উঠি……

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here