ভ্যাম্পায়ার,পর্ব: ০৪,৫

0
2300

ভ্যাম্পায়ার,পর্ব: ০৪,৫
Writer: Asstha Rahman
পর্ব-৪
(১৮+ কন্টেট আছে, সো পিচ্চিরা দূরে থাকো)

আলেস সাদা কাপড়টা আবার ঠিক করে মুচকি হেসে আমার দিকে ফিরল।
.
আমার কুমারীত্ব কেড়ে ফেলায় সে আর ভ্যাম্পায়ার হয়ে উঠতে পারলোনা।
এই জন্য সে আমার চোখ উপড়ে নেয় আর শরীর ছিন্নভিন্ন করে ফেলে। সে মারা যাওয়ার পর থেকে এখনো এই মহলেই ঘুরছে ভ্যাম্পায়ার বেশে।
— তুমি না বললা, ও ভ্যাম্পায়ার হতে পারেনি।
— পেরেছে কিন্তু পূর্ণ শক্তি সে পায়নি।
একবার যদি শক্তি পেয়ে যায় তবে তাকে থামানো কিংবা বিনাশ করা কঠিন।
— এসবের সাথে আমার যোগসূত্র কি?
— তুমিই ওর ভবিষ্যৎ শিকার। তোমার স্তনের মাংস আর রক্ত ও পূর্নিমারাতে খেতে পারলে সে শক্তি লাভ করবে।
শুনে কেপে উঠলাম। আমাকে এই ভ্যাম্পায়ার নৃশংস হত্যার শিকার হতে হবে।
— তুমি যুবতী এবং কুমারী, তাই তার শিকারের জন্য তুমি উপযুক্ত। সেদিন অয়েস তোমার কুমারীত্ব লুটে নিতে গিয়ে গোমেজের ক্রোধের শিকার হয়েছে।তাই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
ও কিছুতেই তোমাকে কুমারীত্ব হারাতে দিবেনা, মরতেও দিবেনা।
.

এইবার বুঝতে পারলাম সেদিন গাড়িটা কেন গাছের সাথে ধাক্কা খেলোনা, কেনই বা বাদুড়টা আমার সাথে লেগে থাকে!
— তাহলে উপায়?
— তোমাকে খুঁজে বের করতে হবে।
— আমি কি করে বের করব?
— চেষ্টা করো। এখন শেষ ভরসা তুমি, আমার আত্মাকে মুক্তি দেওয়ার আর শয়তানটাকে শেষ করার!
সামনের পূর্ণিমাতিথি অব্দি তুমি নিরাপদ, এর মধ্যেই উপায় বের করতে হবে। বাদুড়বেশে ও তোমার আশে পাশেই থাকবে।
তাই খুব সাবধানে করো।
বলেই সে অদৃশ্য হয়ে গেল। শুধু ভাবতেই লাগলাম কি করে শয়তানটাকে ধ্বংস করব?
অফিসের কাজে মন দিতে পারলামনা। অফিস শেষ করে বাসায় ফিরে এলাম। দেখলাম প্যালেসের দরজা খোলা। আমি তো লক করে গিয়েছিলাম। ধীরপায়ে উপরে গেলাম। রুমে ঢুকে দেখি একটা মেয়ে বসে আছে আমার বেডে।
এই মেয়েটা কে? আলেস না তো?
সাত পাচ ভাবতে ভাবতে মেয়েটির কাধে হাত রাখলাম।
— আরেহ, রুজিনী। জড়িয়ে ধরে বলল,
— কিরে দোস্ত? কি খবর?
— ভালোই, কিন্তু কোনো খবর না দিয়ে এলি যে?
— শুনলাম হ্যারি তোকে প্যালেস গিফট করল, তাই দেখতে চলে এলাম। তোর সাথেই থাকব তোর বিয়ে অব্দি।
— আচ্ছা থাকিস। ফ্রেশ হ, আমি ডিনার রেডি করি।
.
আমি ড্রেস আপ চেঞ্জ করে কিচেনে আসলাম। রান্না করতে করতে ভাবলাম, যাক একজন পাওয়া গেল। একা এই ভয়ানক প্যালেসে থাকতে হবেনা।
রুজিনী আমার ছোট্টকালের বান্ধবী।এক সাথেই সব করেছি। ফ্রান্স এসে বিছিন্ন হলেও ও ঠিকিই খোজ রাখত।
ওর একটু ভিন্ন টাইপের। পার্টি, সেক্স এসব খুব পছন্দ করে। এইজন্য বিয়েটাই করলনা।
রাত টা গল্প করেই কাটালাম। হঠাৎ চোখ পড়ল ব্যালকুনিতে বাদুড়টা বসে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
মনে হচ্ছে গোমেজ তার লালসার দৃষ্টিতে রুজিনীকে দেখছে। উঠে গিয়ে ব্যালকুনীর ডোর লক করে দিলাম।
চিন্তায় পড়লাম রুজিনীর উপর যদি ও ঝাঁপিয়ে পড়ে। রুজিনীকে ব্যাপারটা শেয়ার করলে হাসিতেই উড়িয়ে দিবে।
হয়তো বলেই বসবে, দেখি ভ্যাম্পায়ার কেমন খেলতে পারে?
এসব নিয়ে ও মোটেও সিরিয়াসনা।

(চলবে)

ভ্যাম্পায়ার
পর্ব: ০৫
Writer: Asstha Rahman
(১৮+ কন্টেন্টযুক্ত, পিচ্চিরা দূরে থাকো)

ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে রুজিনী বলল,
— তোর প্যালেসটা তো ঘুরেই দেখা হলনা।
— দেখ, কিন্তু স্টোররুমের দিকে যাসনা.
— কেন, গেলে কি হবে? এই ভুত টুত আছে নাকি? বলেই উচ্চস্বরে হেসে উঠল। আমি জানি ওইখানে কি আছে না আছে! অয়েসের লাশটাও সরানো হয়নি, অই জলসা ঘরেই আছে। কত্ত মেয়ের দুর্ভাগ্যের কারণ সেই রুমটা। রুজিনীকে তো এসব বলাও যাবেনা।
— না, কিচ্ছু নেই।
— থাকলে তো ভালো, এক চান্সে ভুতের সাথে সেক্স করে যাব।
— তোর ফাজলামিটা গেলনা। আমাকে অফিস যেতে হবে, তুই থাক। কোনো প্রোবলেম হলে জানাবি।
— আমি আসলাম কোথায় আমাকে টাইম দিবি তা না অফিসে যাচ্ছিস!
— খুব ইম্পোর্টেন্ট মিটিং আছে। খুব তাড়াতাড়ি ফিরব। ফ্রিজে সব আছে ক্ষিদে লাগলে খেয়ে নিস।
.
অফিসের ছোটাছুটিতে ক্লান্ত হয়ে কেবিনে রেস্ট নিচ্ছি। অয়েসের কেবিনটা এখনো খালি। পুলিশ দুইদিন খোঁজাখুঁজি করে ডায়েরী অফ করে দিয়েছে। ভালোই হয়েছে, আমাকে ছুতে এসেছিলে না এখন উপ্রে বসে গডকে ডাকো।
কিন্তু এখনো কোনো উপায়ই ঠাহর করতে পারলামনা। আজ গীর্জা গিয়ে পূর্নিমা তিথির তারিখ জানতে হবে। সাড়ে ৬টা বেজে গেল, গাড়ি নিয়ে প্যালেসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এসে দেখি রুজিনী নেই, প্যালেসের কোথাও ওকে পেলামনা।
তাহলে কি গোমেজ ওকে….
অহ গড! আমার জন্য আমার বেস্টুর জীবন চলে গেল। জলসাঘরে যাওয়ার কথা ভাবলাম, কিন্তু সাহস পেলামনা। রুমেই বসে রইলাম, কয়েকবার আলেসের নাম ধরে ডাকলাম কিন্তু ওর সাড়া পেলামনা।
.
” এই, ব্রেনি” ডাকে ঘুম ভেঙে গেল। কাল ফ্লোরে বসে থাকতে থাকতে কখন যে চোখ লেগে এসেছে। চোখ মেলেই তড়িঘড়ি করে উঠে বসলাম
— রুজি, কই ছিলি তুই সারারাত?
— নাইটক্লাবে গিয়েছিলাম, অইখানে এক হ্যান্ডসামের সাথে মিট হইছে। ওর সাথেই সারারাত সুখের সাগরে ভেসে গেলাম। একটু আগে ও ই ড্রপ করে গেল।
— কি যে পাস এইগুলা করে?
— তুই কি বুঝবি রে! একবার খেলে তো দেখ। ভার্জিনই রয়ে গেলি, এটা কোন লাইফ!
— আমার জন্য আমার হ্যারি আছে। সামনেই বিয়ে।
— বিয়ে অবধি বসে থাক তবে। আয়, আমিই তোকে সুখ দিয়ে দিব। অনেক আদর করব তোকে, পুরুষের থেকেও বেশি ইনজয় করবি।
ওর হাত আমার মুখ থেকে সরিয়ে দিয়ে বললাম, এসব আমার ভালোলাগেনা। যা, তুই ফ্রেশ হয়ে নে। আমি ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসছি।
বলেই বেরিয়ে এলাম। মনে হল হাফ ছেড়ে বাচলাম।
.
বিকেলের দিকে গীর্জা গেলাম। প্রার্থনা শেষ করে ফাদারের সাথে কথা বললাম, সামনের মাসের শেষেই পূর্নতিথি।
— আচ্ছা ফাদার দুস্ট আত্মার বিনাশ কি করে ঘটাব?
— মনের জোর দিয়ে। তুমি যদি মন থেকে চাও তাকে বিনাশ করতে, তবেই তোমার মনের জোরই তোমার প্রধান সহায়ক।
শুনে স্বস্তি পেলেও ভরসা পেলামনা।ফাদারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বের হয়ে গেলাম। যেহেতু বাসার কিছুটা কাছেই গীর্জা, তাই গাড়ি আনিনি। হেটে হেটে ফিরছি, সূর্য প্রায় হেলে গেছে।হঠাত মাথার উপর বাদুড়টাকে ঘুরতে দেখলাম। সে ঘুরপাক খেতে খেতে আমার গায়ে কয়েকটা আচড় কেটে দিল।
একটা গাড়ি আসতে দেখে দ্রুত গাড়িটাতে উঠে পড়লাম। বাদুড়টা হঠাত আমার উপর আক্রমণ করল কেন? হাতের আচড়কাটা জায়গা গুলো থেকে এখনো রক্ত ঝরছে।
.
রুজিনী খুব যত্নের সাথে কাটা জায়গায় ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছে। বার বার জিজ্ঞেস করছে কি করে হল? আমি মিথ্যে একটা কিছু বলে দিলাম। ওর বোধহয় বিশ্বাস হলনা। রুজিনী আসার পর থেকে আলেসের সাথে একবারও কথা হয়নি। আলেসও সামনে আসেনি একবারের জন্য। ওর সাথে কথা বলাটা ভীষন জরুরি।
রাতের দিকে কাপুনি দিয়ে জ্বর এসে গেল। রুজিনী জলপট্টি দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তাতেই ঘুমিয়ে পড়লাম। ঠোটে কারো গভীর স্পর্শ পেয়ে জেগে গেলাম। রুজি আমার ঠোটগুলো বেশ সুন্দরভাবে যত্নের সাথে চুষে চলেছে। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে ওকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলাম।
ও মেঝেতে পড়ে গেল, কপালের এক পাশ বেডটেবিলের সাথে লেগে ছড়ে গেল।
বেড থেকে নেমে ওকে ছুতে গেলাম, ও হাত সরিয়ে দিল।
— রুজি অনেকটা ছড়ে গেছে। আমি ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছি।
— লাগবেনা, আমি লাগিয়ে নিতে পারব। বলেই ওয়াশরুমে ঢুকে গেল।
আমি ব্যালকুনিতে চলে এলাম। ওকে এভাবে ধাক্কা মারাটা ঠিক হয়নি। কিন্তু আমার কি করার? ওর অবস্থা অয়েসের মত হোক সেটা আমি চাইনা। গোমেজ যদি বুঝে ফেলে তবে রুজির নিস্তার নেই।
অনেকক্ষণ ব্যালকুনিতে কাটানোর পর রুমে এসে দেখি রুজি ঘুমিয়ে পড়েছে।কপালে রক্ত জমে কালশেটে হয়ে গেছে।মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম কিচ্ছুক্ষণ।

( চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here