আমি শুধুই তোমার❤️,পর্ব-০৮,০৯

0
1708

আমি শুধুই তোমার❤️,পর্ব-০৮,০৯
Writer:- আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৮

সবে কলেজ শেষ করে আদিলা, নাহীদা আর ফারিদা বের হয়েছে আর সাথে সাথে ঝড়ের গতিতে ইভান ফারিদার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ফারিদা এমন কাহিনীতে অবাক, আদিলা আর নাহীদা পিছন পিছন আসছে। ইভান পিছনে ঘুরে বলে

—-শালিকারা দুলাভাই আর বান্ধবীকে একা ছেড়ে দাও। আদিলা আর নাহীদা ইভানের কথা শুনে আর আসে না। ফারিদা ইভানকে কিছু না বলে নিজের হাত ছাড়াতে ব্যস্ত। ইভান ফারিদকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয়, ফারিদা গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে ইভান দেয় এক রাম ধমক

—-এক পা বের করলে ঠ্যা ভেঙে বাসায় বসিয়ে রাখবো। ইভানের ধমক শুনে ফারিদার বেচারা মুরগী ছানা হয়েগেছে। তাই সে কিছু না বলে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে অন্য দিকে। ইভান তা দেখে ক্রাশ খেলে। মুচকি হাসি দিয়ে বসলো ড্রাইভিং সিটে। দেখে ফারিদা সিটবেল্ট লাগায়নি। ইভান সেটা লাগিয়ে দিতে গেলে ফারিদা হাতটা ধরে ফেলে, আর নিজে লাগাতে গেলে ইভান বলে

—-বেশি বেশি হচ্ছে না? ফারিদা তাও চুপ। ইভান ফারিদার দুই বাহু চেপে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে

—-এই মেয়ে তুমি কথা বলতে পারো না নাকি?আগে তো কতো কথা বলতে,১ সপ্তাহে চুপসে গেলে? ফারিদা বিরক্ত হয়ে অন্য দিকে তাকায়। ইভান বলে

—-তোমার কি আমাকে ভয় করে না? ফারিদা আড় চোখে ইভানের দিকে তাকিয়ে বলে

—-আপনার ফালতুকথা হলে,আমি বাসায় যাই? ইভান বলে

—-হ্যা যাবা শুশুড় বাড়ি, ১ সপ্তাহে হইছে আমি আর পারবো না, আই এম সরি প্লিজ বাসায় চলে আসো। আমার যে তোমাকে ছাড়া ভালো লাগেনা। তোমার সেই পাগলামি গুলো খুব মিস করি প্লিজ ফারিদা। ফারিদা মনে মনে বলে

—–এইবার লাইনে আসছো তুমি, হুতুম পেঁচা তাও তো বলেনা আই লাভ ইউ ?? যাই হোক তাকে বুঝতে দেওয়া যাবে না আমার রাগ ভ্যানিলা আইসক্রিম এর মতো গলে গেছে।ফারিদা রাগী ভাব নিয়ে বলে

—–কেনো মিরা কোথায়? চলে গেছে নিশ্চয়ই? ইভান রাগে কারের জানালয় পান্ঞ্চ মারে তারপর ফারিদার বাহু চেপে ধরে বলে

—–এই মেয়ে শুনো,মিরা আমার খালাতো বোন আর সে মেন্টালি সিক, আর ওকে আমি খালাতো বোনই মানি বুঝতে পারছো?আর ওর কথা কেনো আসছে এখানে? ফারিদা এবার রেগে গিয়ে ইভানের শার্টের কলার ধরে নিজের কাছে নিয়ে এসে বলে

—-চড় টাও তো তার জন্যই মারা তাই না? ইভান অনুতপ্ত চোখে তাকিয়ে বলে

—–সরি মাফ করে দাও। ফারিদা ভেংচি কেটে শার্টের কলার ছেরে অন্য দিকে তাকায়। ইভান মুচকি হাসি দিয়ে তার মুখটা তার দিকে ঘুরিয়ে বলে

—–লক্ষ্মী সোনা চাদঁরে কোনা,রাগ করেনা। ফারিদা বলে

—–আল্লাদে একবারে আট খানা। ইভান বলে

—-না বাবু ১০০খানা একটু হাসো প্লিজ। ফারিদা কিছু বলেনা। ইভান বলে

—-রাগ কর আর যাই কর তোমার আমার সাথেই থাকতে হবে। কালকে ইরিন এর জন্মদিন,বাড়িরে অনেক মেহমান আসবে আর তুমি বাড়ির বড় বউ হওয়াতে থাকতে হবে,মা বাবা তোমাকে বাসায় নিয়ে যেতে বলছে। ফারিদা বলে

—-বাড়ির বউ তো আমি একাই এর মানে অংশ বিয়ে করে নিয়েছে,আর আমাকে বললো পর্যন্ত না। ইভান কপালে হাত দিয়ে বলে

—-তোমাকে বুঝা আর এভারেস্ট পাহাড় চড়া সেম। ফারিদা বলে

—-জীবনে প্রথম শুনলাম যাওয়ার দরকার যাবো। কাল যাবো পরশু চলে আসবো। ইভান মনে মনে বলে আসোতো তুমি দেখি কে তোমাকে যেতে দেয়। তারপর ইভান ফারিদাকে তাদের বাসায় দিয়ে আসে। আর তার মা-বাবার কাছে ফারিদার গায়ে হাত তুলার জন্য ক্ষমাও চায়, তারাও সবটা মেনে নেয়।আর বলে কালকে সে ফারিদাকে নিতে আসবে,তারাও আপত্তি করেনা।

তারপরের দিন ফারিদা ওয়াইট কালারের একটা সিল্কের শাড়ি পরে চুলগুলো মাঝখানে সিঁথি কেটে খোঁপা করে খোঁপায় বেলীফুলের গাজরা লাগায় আর সামনে তার কাটা চুলগুলো রেখে দেয়। চোখে কাজল, আইলাইনার আর ঠোঁটে রেড কালারের লিপস্টিক। কানে বড় ওয়াইট ইস্টনের ঝুমকা। একহাতে গোল্ডেন কালারের চুড়ি আরেক হাতে ঘড়ি, আর গলায় পড়ে নেয় সুন্দর দেখে একটা লকেট সহ চেন। (কেমেন লাগছে ফারিদাকে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না)
ফারিন আসে ফারিদাকে ঢাকতে

—-আপু ভাইয়া,,,,, আর কিছু বলতে পারলো না সে তাকিয়ে আছে ফারিদার দিকে। অনেক সুন্দর লাগছে। ফারিদা বলে

—-ভাইয়া কি? ফারিন বলে

—-আজ শেষ। ফারিদা বলে

—-কেনো কি শেষ আচ্ছা বাদ দে ,এই আমাকে কেমন লাগছে বললি না তো? ফারিন বলে

—-মরন লাগছিস মন চাচ্ছে কাফান পরিয়ে দাফন করে ফেলি!!! ফারিদা অবাক হয়ে বলে

—-কি বাজে বকছিস? ফারিন বলে

—-হাইড্রারাবাদি স্টাইলে তারিফ করলাম। ইভান ভাইয়া আসছে তোকে নিতে। ফারিদা আর ফারিন নিচে নামছে,ইভানের চোখ উপরে যেতেই বেচারা হার্ট এ্যাটাক খায়, নিজের হাতটা বুকে নিয়ে বলে

—-বুক চিন চিন করছে হায়, মন তোমায় কাছে চায়,বুক চিন চিন করছে হায় মন তোমায় কাছে চায়। ফারিদা ইভানের সামনে এসে বলে

—- চলেন যাওয়া যাক। ইভান তো তাকিয়ে আছে, ফারিদা বলছে

—-চলেন। ইভানের হুশ আসতেই বলে

— আম্মু বাবাই, ফারিন ভালো থাকো আবার দেখা হবে। ফারিদা তার আম্মুকে বলে

—-আম্মু বাবা আসি। ফারিদার আম্মু এসে ফারিদার চোখের নিচে কাজল থেকে একটু হাতে লাগিয়ে ফারিদার কানের পিঠে লাগিয়ে দিয়ে বলে

—নজর না লাগুক। ফারিদা মুচকি হাসি দিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে বিদায় দিয়ে গাড়িতে বসে। এতখন ভালোভাবে ইভানের দিকে তাকায়নি, ইভানকে দেখে ফারিদা তো ফিদা। ব্লাক ব্লেজার,হুয়াইট শার্ট, ব্লাক পেন্ট, হাতে ব্রেন্ডর গড়ি, ব্লাক সু। চুলগুলো স্পাইক করা সেই লাগছে। ইভান গাড়ি চালাচ্ছে আর বার বার ফারিদাকে দেখছে। ফারিদা সেটা দেখে আনইজি লাগছে। তাই সে বাইরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। ইভান গান ধরে

—-এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলতো? ফারিদা বলে

—-অনেক কিছু হতো। আপনার গাড়ির গ্যাস/প্রেটোল শেষ হয়ে যেতো, ইরিনের বার্থডে ও শেষ হয়ে যেতো।ইভান মনে মনে বলে

—-নিরামিষ একটা।এতো সুন্দর মুডটার মুন্ডি চটকে মুন্ডির সষ্ঠি করে দিলো। ফারিদা আবার বলে

—আর সামনে একটা ফোনের দোকান আছে গাড়িটা থামিয়েন। ইভান বলে

— কেনো? ফারিদা বিরক্ত হয়ে বলে

—-ফেশন করতে আজব!!! অবশ্যই ফোন কিনতে যাবো ইরিনের জন্য। ইভান বলে

—-দরকার নেই, কিছু মাস আগেই একটা কিনে দিয়েছি। ফারিদা বলে

—-আপনার কাছে জানতে চেয়েছি। গাড়ি থামাতে বলসি গাড়ি থামাবেন ব্যস কথা শেষ। ইভান কারটা থামায় তারপর ফারিদা একটা ফোন কিনে ইরিনের জন্য। তারপর আবার চললো তারা তাদের মতো। বাসায় ঢুকার সাথে সাথে সবাই ফারিদাকে ঝেকে ধরে মিরাও আসে আর বলে

—-কেমন আছো? ফারিদা মুআকি হাসি দিয়ে বলে

—-এইতো আলহামদুলিল্লাহ আপনি? মিরাও বলে

—-ভালো। ইরিন দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে ফারিদাকে আর ফারিদার হাত ধরে ঘুরতে ঘুরতে বলে

—–ভাবি ভাবি, তোমাকে সেই কিউট লাগছে। পুরাই জোস। তারপর ইরিনকে ফারিদা তার জন্য গিফ্টটা দিলো,সবাই ফারিদাকে নিয়ে ব্যস্ত মনে হচ্ছে অনেক বছর পরে আসছে। ইভান বেচারতো মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে অংশ ইভানের কানের কাছে এসে বলে

—–বুকটা ফাইটা যায় বুকটা ফাইটা যায়। ইভান অংশের পিটে হালকা একটা চাপড় দিয়ে বলে

—-তোর বড় ভাইয় লাগি, শয়তান। ভালো হইয়া যা। অংশ বলে

—-আমি ভালো হুমু না। কেক কাটার আগে হঠাৎই লাইট বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ব্লু লাইটের আলোয় দেখা যায় অংশ আর ইভানের হাতে গিটার এর মানে দুই ভাই গান গাইবে। অংশ গিটারে টুংটাং সুর তুলতে লাগলো আর ইভান গাইতে লাগো,আর পিছনে ভেসে ওঠছে ইরিন,ইভান,অংশের কিউট কিউট ছবি।

——
o behna meri tu nanni si tere anese gol cehek outha…

Tu peyrisi ek guria hain fowl

mehek khusbo ki tarah

অংশ গান ধরলো

oh behna meri muskan teri

Sath rangose bhi pearai hain

Fekana pare kabvi rang tera

Tu sabki lad dulali hain…. ইভান

tere khusiya ban main jiba tera ansu sab main piba itnisi hain dilki arzo…

Tu hasti jab main khil jaba

Tu rondi main rehbala itnisi hain dilki arzo

Ohoho ohhhooh ohohow

o behna meri tu hasti rahe

Teri akh ghadi bhar naam na ho

Tu jaan meri arman mera

Teri lad dulali kam na hoo… ইভানের পর অংশ গাইতে লাগলো

o behna meri tu mera janha

Tujhe dekhe bina mujhe cain kaha ইভান আর অংশ একসাথে গাইতে লাগলো

Ek dor jo bandhi hae rab ne

Asi bandhan kahi or kaha…. গান শেষ হওয়ার সাথে সাথে ইরিন দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে ইভান আর অংশকে বাড়ির একমাত্র মেয়ে হওয়াতে ভালোবাসাটা অনেক। সবার চোখের কোনে পানি ভাই বোনদের ভালোবাসা দেখে। তারপর কেক জাটা হলো রাতে খাওয়া হলো। ইরিন নিজের গিফ্ট আনবক্সিং করলো, রাতের বেলা সবাই সবার রুমে। ইভান এখনো নিচে আর ফারিদা টিক টিক করছে

—–উফফফফ আমি কি যে জোস আয়নার সামনে দাড়াই মারি জোস জোস পোজ। তখনই ইভান রুমে আসে দেখে ফারিদা টিক টিক করছে, কিন্তু ফারিদা এখনো তার হুতুম পেঁচাকে দেখে নাই,সে ব্যাস্ত টিকটক করতে।

চলবে

আমি শুধুই তোমার❤️
Writer:-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৯

ফারিদার সেদিকে খেয়াল নেই সে তার মতো টিকিট করছে, আর ইভান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে তার বউটাকে আজ কত সুন্দর লাগছে, পুরাই ফিদা ইভান আজ। ইভান ধীরে পায়ে ফারিদার কাছে গিয়ে দাঁড়ায় আয়নায় ইভানকে দেখে ফারিদা চমকে যায় কখন এলো সে, যাই হোক এখন ফারিদা এখন ফোনটা রেখে দিলো আর ইভানের পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে ইভান নিজের ডান হাতটা আয়নার মধ্যে রেখে ফারিদার যাওয়া আটকায়। ফারিদা বা দিকে যেতে চাইলেও সেম কাজটাই করে ইভান। ফারিদার তো অবস্থা খারাপ এসি চলছে তাও ঘামছে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে কপালে।ইভান তা দেখে সে বাঁকা হাসি দিয়ে বলে

—-ঘামছো কেন?গরম লাগছে বুঝি? ফারিদার মুখে আলতো করে ফু দিয়ে, ফারিদার কাটা চুলগুলো ফারিদার মুখে এসে পরে। ফারিদা অন্য দিকে তাকিয়ে বলে

—-হাতির মতো যদি কেউ সামনে দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে তো গরম লাগবেই তাই না? ইভান অবাক হয়ে যায়, ইভান মনে মনে বলছে বলে কি,আল্লাহ্ এতো রাগ কিভাবে কি করবে। ফারিদা ইভানের হাতের নিচ দিয়ে বের হয়ে যায় আর বলে

—-আমি ঘুমাবো, বলেই ওয়াশরুম চলে যায় আর ফ্রেশ হয়ে আসে দেখে ইভানও চেন্জ করে নিয়েছে। ফারিদা এসির পাওয়ারটা লো করে ব্লাইনকেট টা নিয়ে সোফায় চলে যায় আর সাথে একটা বালিশ নেয়। ইভান তা দেখে বিছান ছেড়ে এসে দাড়ালো ফারিদার সামনে ফারিদা ভ্রু-উচুঁ করে ইশারায় বলে কি হয়েছে? ইভান ফারিদাকে কিছু না বলে কোলে তুলে নিল। ফারিদা বলে

—-এই এই কি করছেন,ছাড়ুন, ছাড়ুন বলছি। ইভান কিছু না বলে ফারিদাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজে, ফারিদাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে আর বলে

—-নড়াচড়া করলে খবর আছে আমি ঘুমাবো। ফারিদা নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললো

—–ঘুমান আমাকেও ঘুমাতে দিন। ইভান বলে

—-ঘুমাও,বারণ করছে কে? ফারিদা বলে

—-কমপক্ষে একটা বালিশতো আনতে দিবেন। ইভান বলে

—-হ্যা আমি তোমাকে ছাড়ি তারপর আবার যাও সোফায় আমি আবার তোমায় কোলে করে নিয়ে আসি। লাগবেনা বালিশ আমার হাতে ঘুমাও।

ফারিদাও কিছু বলেনা মুখে বিরক্তের ভাব নিয়ে শুয়ে পরে ইভান তা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে সেও ঘুমিয়ে পরে। সকাল মিষ্টি রোদের আলো চোখে পরতেই ঘুম ভাঙলো ফারিদার, কিন্তু ঘুম ভেঙে যাবার পর যা দেখে তা দেখে অবাক হয়ে গেলো,সম্পূর্ণ রুম বেলুন দিয়ে সাজানো, তারপর বড় করে লেখা সরি, আর সামনে ইভান কান ধরে দাড়িয়ে আছে, ইভানের পরনে ওয়াইট কালারের টিশার্ট আর গ্রে কালাররে টাউজার, চুলগুলো এলেমেলো দেখে মনে হচ্ছে একটা বাচ্চা যে গ্লাস ভেঙে ফেলছে আর ভয়ে আম্মু সামনে কান ধরে দাড়িয়ে সরি বলছে। ফারিদা সেটা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়, ইভান বলে

—-যাই হোক একটু তো হাসলো।

ইভান নিচে গিয়ে সবাইকে বললো কার কি কাজ,বাসার সবাই জানে ইভান ফারিদাকে মানানোর চেষ্টা করছে, সাথে আছে ফারিদার মা বাবা আর ফারিন ও হেল্প করছে ইভানকে । কিন্তু এইসব দেখে একজন রাগে ফুলছে সে আর কেউ না মিরা, কারণ তার এতো দিনের প্ল্যান ইভানকে নিজের করে পাওয়ার আশায় আজ জল ঢেলে দিল ইভান নিজেই। তারপর খাবার টেবিল ফারিদা যখন নাশতা করতে বসে। ইভান আসে খাবার হাতে পরনে তার সার্ভেন্ট এর পোশাক। তার হাতের পেলেট টা রাখে ফারিদার সামনে, ফারিদা দেখে ২টা টোস্ট একটায় সেড ফেস আরেকটায় সরি লেখা। তার একটু পর আসে ইরিন, হাতে তার কফি মগ।মুখে মিষ্টি হাসি সেটা রাখে ফারিদার সামনে ফারিদা ভালোকরে খেয়াল করে দেখে কফি মগেও সেড ইমোজি। ফারিদার তো ইচ্ছে করছে ইভান কে জড়িয়ে ধরতে কিন্তু সবার সামনে যে সেটা সম্ভব না।
তাই সে চুপচাপ খেতে লাগলো। খাওয়ার পর উঠে ফারিদা যখন সামনে ঘুরতে যাবে দেখে আস্ত একটা মিকি-মাউস সেটা ভিতরে অংশ, মিকি মাউস টা একটা টেডিবিয়ার নিজের পিছন থেকে এনে ফারিদার হাতে দেয় সেখানেও লেখা সরি। ফারিদা টেডিবিয়ারটা নিয়ে ওপরের দিকে ওঠতে গেলো দেখে ইভান আর ইভানের মা ঝগড়া করছে। একসময় ইভানের মা অন্য দিকে মুখ ফিরে নিয়ে চলে যেতে নিলে ইভানের বাবা তার সামনে গিয়ে এক কান ধরে সরি বলে আর তাকে জড়িয়ে ধরে। ফারিদা সেটা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে ওপরে উঠছে তখনই সামনে দাঁড়িয়ে দেখে ইভান এক কান ধরে সরি বলছে। কিন্তু ফারিদা ভেংচি কেটে চলে গেলো। ইভানের চাচি আসে সাথে ইভানের চাচাও ইভানের চাচি রাগ করে বলছে বাড়ি চলে যাবে আর ইভানের চাচা বলছে

—–বউ গো তুমি রাগ কইরা বাপের বাড়ি যাইয়ো না,যাইয়ো না। বউগো তুমি রাগ কইরা বাপের বাড়ি যাইয়ো না। ফারিদা আর নিজের হাসি চেপে রাখতে পারলো না হুহুহু করে হেসে দিল। ইভানের চাচা চাচি নিচে চলে গেলো। ফারিদা নিজের রুমে যায় গিয়ে দেখে একটা নিল চিরকুট। সেখানে লেখা

—- সরি প্লিজ আমার লক্ষ্মী বউটা। ফারিদা সেটা দেখে, মুচকি হাসলো। তার আর সকালে যাওয়া হলোনা নিজের ইচ্ছেতেই যায়নি। কিন্তু সারিদিনে ইভানকে সে কোথাও দেখেনি, আর বাসার সবাইও তেমন কথা বলেনি। প্রতিদিনের মতো ফারিদা খাওয়ার পর ঘুমায়, যখন ওঠে দেখে সন্ধ্যা ৭ টা বাজে তাড়াতাড়ি ওঠে, দেখে ইভান এখনো ফিরেনি, রুমের লাইট ওফ তাই সে ওন করলো আর দেখে সামনে একটা পারপাল কালারের গাউন অনেক সুন্দর কারুকাজ হুয়াইট আর গোল্ডেন ইস্টোনের, আর তার পাশেই মেচিং করা জুয়েলারি। সাথে একগুচ্ছ লালা গোলাপ আর একটা চিরকুট তাতে লিখা। জলদি পড়ে তৈরি হয়ে ছাঁদে চলে আসো। ফারিদা সেটা পরে নেয় আর হালকা সাজে ইভানের পছন্দ আছে বলতে হয়। ফারিদা সেটা পরে বেড়হয় দেখে বাসা সম্পূর্ণ অন্ধকার। ফারিদা ছাঁদের দিকে যাচ্ছে। অংশ ইভানকে কল দিয়ে বলে

—-ভাইয়া ভাবি ছাঁদের দিকে কেনো যাচ্ছে? ইভান বলে

—-জানিনা তো, আমিতো মিরাকে বলেছিলাম চিরকুটটা আর ড্রেসটা রুমে রেখে আসতে। মিরাকেও তো দেখছি না তুই অপেক্ষা কর আমি আসছি। ফারিদা ছাঁদে চলে যায়। অংশ এসেছিলো ফারিদাকে নিয়ে যেতে নিচে কিন্তু সে দেখে ফারিদা হাতে গোলাপ আর চিরকুটটা নিয়ে যাচ্ছে ছাঁদের দিকে তাই সে ইভানকে কল দেয়। ফারিদা ছাঁদে গিয়ে দেখে ছাদেঁ ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে আছে ফারিদার কেনো জানি খুব ভয় করছে। ফারিদা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে

—-ইভান কোথায় আপনি। কোনো আওয়াজ না পাওয়াতে সে এগিয়ে যায় সামনে যেতেই দেখে একটা ছায়া। ফারিদা ভাবে হয়তো ইরিন তাই সে তার কাছে যায়। ফারিদা বলে

—ইরিন। আর কিছু বলতে যাবে ছায়াটা ফারিদাকে টান দিয়ে ছাদের রেলিঙের দিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় আর তাল সামলাতে না পেরে ফারিদাও রেলিঙের দিকে ঝুঁকে যায়। আর মিরা বলে

—-ইভান আমার শুধুই আমার বুঝলি, আর তুই থাকতে আমি ইভানকে পাবোনা তাইতোকে মরতে হবে, ফারিদা। ফারিদা ঘুরতে যাবে তখনই মিরা ফারিদাকে আরেকটা ধাক্কা দেয় আর ফারিদা আরো নিচের দিকে ঝুঁকে যায়। ফারিদা বলে

—-দেখো ভালো হচ্ছে না, ইভান জানতে পারলে। মিরা বলে

—-ইভানের নাম তুই তোর মুখে নিবি না ইভান শুধুই আমার বুঝলি তুই। বলেই মিরা ফারিদাকে অনেক জোরে ধাক্কা দেয় আর সাথে সাথে ছাঁদের লাইট ওন হয়ে যায়। ফারিদা। ইভান বলে চিৎকার করে। আর তখনই ফারিদা বলে দৌড়ে আসে ইভান কিন্তু লাভ হয়নে। কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যেই সব যেনো শেষ হয়ে যায় ফারিদা নিচে পরে যায় মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে মাথা থেকেও। ইভান নিজের মধ্যে নেই পাগলের মতো দৌড়ে নিচে নামছে। ফারিদা আর ইভানের চিৎকার শুনে সবাই একসাথে ওপরে চলে আসে আর দেখে ইভান পাগলের মতো নিচে নামছে। সবাই ইভানকে কিছু বললেও সে কিছু বলে না বাগানে আর সবাই ইভানকে ফলো করে যায় দেখে ফারিদার রক্তাক্ত দেহ পড়েআছে। ইভান দৌড়ে গিয়ে ফারিদাকে কোলে তুলে নিলো। বাসার সাবই অবাক ফারিদাকে এই অবস্থায় দেখে। ইাভান পাগলের মতো ডাকছে

—-এই এই এই ফারিদা, এই ওঠো বলছি, ভালো হচ্ছে না কিন্তু, এই মেয়ে। অংশ এসে বলে

—-ভাইয়া ভাবিকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। সবার কথা শুনে ইভান ফারিদাকে কোলে তুলে নিলো অংশ গাড়ি বের করে ফারিদাকে হসপিটালে নিয়ে। এলো আর ঐদিকে মিরা বাঁকা হাসছে আর মিথ্যা চোখের পানি ফেলছে।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here