ভিনদেশি_তারা
পর্ব-২৮
#লেখনীতে-ইশরাত জাহান ফারিয়া
৮৬.
দ্বিতীয়বারের মতো পাড়ি দিলাম আটলান্টিকের ওপারে। পনেরোদিনের এই অসম্ভব মিষ্টি স্মৃতিগুলো নোটবুকে জায়গা পেয়েছে। এতোটা আনন্দ কোনোদিন করিনি। আসার সময় সবার কান্নাভেজা মুখটা দেখেও আমার ঠোঁটে ছিলো হাসি। সবাই আমাকে কত ভালোবাসে। ওখানকার স্মৃতিগুলোর কিছু অংশ জায়গা পেয়েছে আমার ফোনে।
এবার এয়ারপোর্টে ছিলো আমার শ্বেতাঙ্গ বন্ধুরা, সবার মুখে কী দারুণ সেই হাসি। নিঝুম-মারোলাও ছিলো। কিন্তু এবার আমার গতিপথ উল্টোদিকে। আমার জায়গা হলো ক্লেভের ওই ভুতুড়ে বাড়িটাতে। এটা যে আমার নিজের বাড়ি, নিজের সংসার তখনো বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
কোনো এক শরৎের সকালে এই বাড়িটাকে বাইরে থেকে দেখেছিলাম, ক্লেভ নামক যুবকটিকে দেখে অনেকটা বিমোহিত হয়েছিলাম, এটিটিউড দেখে রাগও করেছিলাম। আর আজ পাঁচবছর পর, বয়সের কোঠা যখন ঊনত্রিশে! আমি তখন এই বাড়িরই বউ হয়ে এলাম, অদ্ভুত। বাড়িটাকে এক-আধটু ঠিকঠাক করা হয়েছে। নতুন রং ঘষা হয়েছে।
সবাই রাতের ডিনার সেরে বাড়ি ফিরে গেলো। দাদী নেই বাড়িতে। আমরা দুজন ক্লান্ত ছিলাম। কিছুক্ষণ নিচতলায় বসে বসে টিভি দেখলাম। কোন ঘরে থাকবো জানলেও কেমন আনইজি, লজ্জ্বা লাগছিলো আমার। ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসছিলো। পাশে বসে ছিলো ক্লেভ। ওর কাঁধে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে দেখলাম ক্লেভের ঘরে শুয়ে আছি। পাশে ও আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমুচ্ছে। শুয়ে শুয়েই ঘরটাকে দেখতে লাগলাম। সবকিছু পাল্টানো হয়েছে। ঘরটা অবশ্য বেশ বড়, জানালাগুলোকে ভেঙে বড় করা হয়েছে। বেডটা পশ্চিমে, ড্রেসিং টেবিল একটু দূরে। কাবার্ডটাও নতুন। সোফাসেটগুলো ঘরটার বিশাল একটা জায়গা দখল করে আছে। আরও নানা আসবাবপত্র এদিক-ওদিক রাখা। ঘরের দেয়ালে যেখানে খ্রীস্টান ধর্মের চিহ্ন ছিলো, সেগুলো খালি। সব পরিবর্তন করা হয়েছে।
‘ ঘুমুচ্ছোনা কেন তুমি?’
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম ক্লেভ। মাথাটা হালকা তুলে বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে। আমি ইতস্তত করে বললাম, ‘ঘরে কে এনেছে? তুমি?’
‘ হুম।’
‘ কীভাবে আনলে?’
‘ কোলে তুলে। বাট তুমি অনেকটা ভারী হয়ে গিয়েছো চিট!’
আমি অভিমানী গলায় বললাম, ‘তাহলে আনলে কেন? ডেকে দিলে আমিই হেঁটে আসতাম।’
‘ আমার পা থাকতে নিজের পায়ে হাঁটবে কেন চিটু?’
‘ আমি ভারী তাই।’
‘ এবার থেকে নিয়মিত ওয়াক আউট করবে, তাহলে ফিট হবে। ব্যাঙলাদেসে গিয়ে তো একদম বার্গারের মতো ফুলে গিয়েছো!’
‘ ক্লেভ!’
‘ উহু, আহনাফ!’
‘ আমার মনে থাকেনা তোমার নাম।’
‘ অ্যামার নিজেকে অপরিচিত লাগে।’
আমি কিছু বললাম না। ও বললো, ‘রাগ করেছ?’
‘ আমি রাগিনা!’
‘ ট্যাহলে এভাবে কতা বলছ কেন? বার্গার বলেছি টাই?’
‘ জানিনা।’
‘ উহু..চিট। সট্যি কতা ন্যাহ বললে অ্যামি কিন্তু রেগে যাবো।’
‘ তো তুমি আমাকে এভাবে বললে কেন?’
‘ দেখো অ্যামি অলওয়েজ সট্যি কতা বলি। টোমি আসলেই একটু মোটা হয়েছো। অ্যামি কারো মন রাখার জন্য মিথ্যে বলিনা, টুমি ভালো করেই জানো। মিথ্যে বলে টোমাকে খুশি করে কী লাভ? এর চেয়ে সট্যি জানলে টুমি নিজের প্রতি আরেকটু কেয়ারিং হবে। অ্যামি কী ভুল কিছু বলেছি?’
সত্যিই তো। আমি নিজেও জানি আমি মুটিয়ে যাচ্ছি। পঞ্চাশের ওজনটা আর নেই। বাংলাদেশের হাওয়া লেগেছিলো গায়ে, যা পাই তা-ই গাপুসগুপুস খেয়েছি। তাও বললাম, ‘বাংলাদেশি মেয়েরা মোটা হলেও ওদেরকে মোটা বলা অন্যায়, জানোনা হে ভিনদেশি বালক?’
ও হেসে বললো, ‘নো কুইন! এই ঘুরুতর অপরাধ করার দায়ে কী অ্যামাকে শূলে চড়ানো হবে?’
‘ অবশ্যই হবে।’
‘ সাস্তির জন্য রেডি কুইন!’
আমি হাসি চেপে বললাম, ‘এই গুরুতর অপরাধ করার দায়ে আপনাকে বাকি রাত ফ্লোরে ঘুমাতে হবে। শূল যেহেতু নেই, তাই এটাই সই।’
ক্লেভ মুখটা গম্ভীর করে বললো, ‘বাট অ্যামি তো অ্যামার কুইনকে না জড়িয়ে ধরে ঘুমুতে পারিনা!’
‘ সেটা আপনার প্রবলেম।’
‘ যেতেই হবে?’
‘ অভিয়েসলি।’
‘ আপনার আডেশ শিরদার্য কুইন।’
ও কালো মুখ করে ফ্লোরে গিয়ে শুয়ে পড়লো। ফ্লোর ঠান্ডা বিধায় আমি কিছুক্ষণ পরে হাসি চেপে অনেক কষ্টে বললাম, ‘হে ভিনদেশি বালক! আপনি এক্ষুনি গিয়ে কাউচে শুয়ে পড়ুন। নয়তো আরও বড় শাস্তি অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।’
ক্লেভ উঠে কাউচে শুতে শুতে বললো, ‘অ্যামার দিনও আসবে। তখন চাইলেও অ্যামাকে জড়িয়ে ধরতে পারবেনা হুহ।’
‘ দরকার নাই আমার।’
‘ ডেখা যাবে।’
৮৭.
ঘুমটা ভাঙার পর কোথায় আছি সেটা বুঝতে অনেক সময় লাগলো। প্রায় দেড়বছর দেশে কাটিয়ে আসলাম। সেই টাইমজোনে আটকে আছে শরীর-মন। কত দূরে এখন আমি! পৃথিবীর আরেক প্রান্ত। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি দশটা বেজে পাঁচ। ক্লান্ত থাকায় ঘুম গাঢ় হয়েছে। নামাজও মিস হয়ে গিয়েছে। কাউচে ক্লেভ নেই। হয়তো অন্যকোথাও বা ব্যলকুনিতে ভেবে আমি ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে গেলাম।
একটা দারুণ শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এলাম। চুল মুছতে মুছতে খেয়াল করলাম ক্লেভ এখনো আসেনি। আমি অন্যান্য ঘরগুলো চেক করলাম। কোথাও কেউ নেই। বাড়িটা মরুভূমি ন্যায় খাঁ খাঁ করছে। আমার হঠাৎ ভয় করতে লাগলো। নিচতলা অন্ধকার। ডিশ ওয়াশারে পানির শব্দ হচ্ছে। কিন্তু কেউ নেই। হঠাৎ যেন একরাশ কুয়াশা এসে সবকিছু ঘোলাটে করে দিলো। ওহ মাই গড!
আমি ভয়ে, আতংকে জমে গেলাম। আমি কী শেষমেশ কোনো ভূতকে বিয়ে করলাম নাকি?
কাঁপতে কাঁপতে ঘরের দিকে দৌড় দিতে যাবো তখনই কে যেন পেছন থেকে আমার ওড়না টেনে ধরলো। মুহূর্তেই জমে গেলাম। পেছনে তাকানোর সাহসটা অবধি হলো না। ভূতের খাবার হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম। তখনই গলায় ঠোঁটের ছোঁয়া পেলাম। ভূত নয় ভ্যাম্পায়ার!
আয়াতুল কুরসি পড়তে লাগলাম। ভ্যাম্পায়ারটা মাদক মাদক গলায় বললো, ‘টুমি ঠিকঠাক চুলও মুছতে পারোনা চিট?’
বুক থেকে বেরিয়ে আসলো ভয়ংকর নিঃশ্বাস। ঘুরে তাকিয়ে রাগের বশে ওকে ধাক্কা মেরে দিলাম। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘হোয়াট?’
‘ তু ত তুমি কোথায় ছিলে?’
‘ আ অ্যামিতো জঙ্গলে গিয়েছিলাম?’
‘ কেন?’
‘ ওয়াক আউট করতে।’
এতক্ষণে নজরে এলো ওর উপর। ব্যায়ামের পোশাক পরিহিত। ঘাড়ে তোয়ালে ঝুলানো, ঘেমে লাল হয়ে আছে। আমি বললাম, ‘তুমি জানো আরেকটু হলে ভয়েই মরে যাচ্ছিলাম।’
‘ কেন?’
‘ কোথাও তুমি নেই, রান্নাঘর থেকে শব্দ আসছে। এসে দেখি চারদিক অন্ধকার। জানো কী ভয় পেয়েছিলাম? আর তখনই তুমি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলে। আরও ভয় পাইয়ে দিলে। তোমার বাড়িটা কী ভয়ংকর। মাই গড!’
ক্লেভ হাসতে হাসতে বললো, ‘বাড়িটা টোমার, থাকতে রাজি হয়েছো টুমি। চাইলে এক্ষুনি আসতে পারো এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাই। আর ভূতটূত কেউ নেই এ বাড়িতে।’
দাদীর কথা মনে আসতেই চুপ করে ভাবলাম। বললাম, ‘ না। এখানেই থাকবো! কিন্তু ডিশ ওয়াশারের শব্দটা?’
‘ ওটা আমিই ভুল করে ছেড়ে এসেছিলাম!’
আমি কাঁদোকাঁদো স্বরে বললাম, ‘সব আমাকে ভয় দেখানোর ধান্ধা!’
‘ টুমি না চিট!’
‘ আমি কী?’
‘ একটা বাচ্চা।’
‘ তোমার কল্লা।’
‘ দুঃখিত ইউর হাইনেস। “কল্লা” কী?’
‘ তোমার মাথামুন্ডু।’
তারপর বিজ্ঞের মতো ক্লেভ বললো, ‘টুমার ওয়াক আউট কাল থেকে শুরু? ওখে? আজ দিনটা রিল্যাক্স করো!’
আমি বিষন্ন গলায় বললাম, ‘দাদী আসবেনা? আমি এই বাড়িতে একা থাকবো কীভাবে? তুমি কী অফিস জয়েন করছো?’
‘ জয়েন করবো পরশু থেকে, হ্যানসনকে জানিয়ে দিয়েছি। আর গ্র্যানির শরীরটা কদিন যাবৎ খুব খারাপ করেছে, জানিনা ঠিক হবে কিনা। আপাটট মমের কাছেই থাকবে। জানো, মম ইসলাম নিয়েছে!’
আমি অবাক হলাম।
‘ মম গ্র্যানিকে খুব বালোবাসে। গ্র্যানি ঠিক করেছিলো মুসলমান হয়ে অ্যামাদের সঙ্গেই থেকে যাবে। বাট মম রাজি হলোনা, গ্র্যানি মুসলমান ছাড়া থাকতে চাইলোনা। টাই মমও ইসলাম গ্রহণ করেছে।’
‘ গ্রেট নিউজ। মমের নাম কী?’
‘ ফাতিমা। গ্র্যানির নামটা তো জানোই, আছিয়া।’
‘ খুশি হলাম।’
‘ ঠিক আছে। এখন চলো, নাস্তা কিছু বানাবো?’
‘ চিকেন হলেই চলবে, সাথে কফি।’
‘ চলো।’
ব্রেকফাস্ট দেরিতেই করতে হলো। সবকিছু তৈরি করে, খেয়ে মারোলার বাড়ি থেকে ঘুরে এলাম। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেলো। কোনোমতে ডিনার সেরে বিছানাতে গা এলিয়ে দিলাম।
৮৭.
পরদিন খুব সকালেই ঘুম ভাঙলো। ভোরে হাটতে বেরোনো আমার পুরনো অভ্যাস। বাংলাদেশে ভোরে হাঁটতে বের হওয়ার জো নেই। ক্লেভ ওয়াক আউটে যাবে। আমিও তৈরি হয়ে নিলাম।
দুজন মিলে হাঁটতে হাঁটতে আজ চলে গেলাম পাহাড়ের ওদিকটায় ঘন বনের কাছে।
ঘন বনটাতে পাইনের সারি। সিডার, ওক গাছগুলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তার পাশের জংলাবৃত জায়গাটার পাশে ফুটে আছে ঘাসফুল। হলুদ, সাদা, নীল রঙের সব। একপাশের কিছু গাছে ভার্জিনিয়ার বিখ্যাত ব্লুবেলস ভার্জিনিয়া ব্লুবেলস চোখে পড়লো। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে নীল ফুলগুলো নজর কাড়ার মতো। সবকিছু খুব সুন্দর। কিন্তু রাস্তাঘাট খালি, মানুষজন নেই। এলাকাটা যেন ভৌতিক কোনো এলাকা।
বিশাল গাছগুলো যেন একাকী চেয়ে চেয়ে দেখছে আমাদের। উইক এন্ডে হওয়ায় লোকজন বাড়িতে ঘুমুচ্ছে। কাল ইস্টার সানডে ছিলো। সারারাত জেগে থেকে সবাই অবাধে ঘুমুচ্ছে।
জঙ্গলের সামনের রাস্তাটা কুয়াশায় ভেজা ভেজা। শুকনো ম্যাপলের পাতারা বিছিয়ে আছে মাটিতে।
রাস্তায় ফুলের মত করে ছড়িয়ে আছে লাল-খয়েরি পাতাগুলো। শিশিরে ভেজা। আমি জুতো খুলে ক্লেভের সাথে হাঁটতে লাগলাম।
আজকের দিনের শুরুটা অনেক ভাল লাগলো। কালকের মতো ভয়াবহ নয়। ক্লেভ জিজ্ঞেস করলো, ‘ভালো লাগছে?’
‘ বেশ ভালো।’
‘ প্রতিদিন হাঁটতে বেরুবে আমার সঙ্গে।’
‘ আমরা ওই জঙ্গলে যাই, চলোনা।’
ক্লেভ বিষন্নমুখে বললো, ‘না। ওখানে যাওয়া বারণ।’
‘ কেন?’
‘ ওখানে জিন থাকে!’
আমি ভয় পেয়ে বললাম, ‘সত্যি?’
‘ হুম।’
‘ কে বলেছে তোমাকে?’
‘ নিঝঝুম বলেছে, অ্যামি নিজেও দেখেছি।’
আমি ভয় পেয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। সামনে পা বাড়ানোর সাহস হলোনা। ক্লেভের টি-শার্টের কলার পেছন থেকে শক্ত করে ধরে কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। কাঁপতে কাঁপতে বললাম, ‘আমাকে নিয়ে এলে কেন তুমি?’
‘ হাঁটটেই টো বেরিয়েছি। ফরেস্টে তো ঢুকিনি।’
‘ আমি যাবোনা। বাড়ি চলো।’
‘ মানে কী চিট? টেন মিনিটস ও হয়নি এসেছি। টুমি অযথাই ভয় পাচ্ছো, অ্যামি আছি তো।’
‘ তুমি কী জিন থেকে আমাকে বাঁচাতে পারবে? যদি আমাকে নিয়ে যায়?’
‘ নিবেনা।’
‘ তুমি শিওর?’
‘ ডেফিনেটলি চিট। চলো তো।’
‘ তোমাকেও আমার কাছে রহস্যময় লাগছে।’
ক্লেভ ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর কিছু না বলে গাছ থেকে কয়েকটা ব্লুবেলস ছিঁড়ে নিয়ে এলো। হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে একটা অদ্ভুত সুন্দর হাসি দিয়ে ফুলগুলো আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো, ‘অ্যামি টোমাকে বালোবাসি চিট। অ্যামি টোমার কোনো খতি করবো ন্যা। অ্যামি মোটেই রহসশময় ন্যা। অ্যামি কোনো জিনও ন্যা, ভূতও ন্যা। অ্যামি মানুশ এন্ড আই লাভ হার।’
ওর উল্টাপাল্টা কথায় আমি শুধু হাসলাম। হাত থেকে ফুলগুলো নিয়ে ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে বললাম, ‘আমিও তোমাকে ভালোবাসি।’
‘ ট্যাহলে অযথাই সন্দেহ করবেনা। অ্যামি কোনো জিন-ভূত নই।’
‘ হয়েছে। আমিতো এমনিই বলছিলাম।’
এভাবেই কথাবার্তা বলতে বলতে পুরো রাস্তা হেঁটে বেরুলাম। অদ্ভুত স্বপ্নময় জগৎ ঘুরে ঘুরে দেখে এলাম। বাড়ি ফিরলাম আটটার দিকে।
দুপুরে নিউইয়র্ক থেকে ক্লেভের মা ফোন করলো। জানা গেলো ওর দাদী আর বেঁচে নেই। তৎক্ষনাৎ আমাদের ওখানে যেতে হবে।
এই খবর শোনার পর ক্লেভ খুব ভেঙ্গে পড়লো। শেষ দেখাটাও হলো না ওনার সাথে, ভেবেছিলাম ওনাকে এখানে নিয়ে আসবো। কিন্তু আমার করা উইশটা পূর্ণ হলোনা। একাশি বছরের জীবনটা ফুড়ুৎ করেই উড়াল দিলো পরপাড়ে, কেউ জানতেও পারলোনা।
চলবে….ইনশাআল্লাহ! ভুল ত্রুটি মাফ করবেন। গল্প বিচ্ছিরি হচ্ছে কেন জানি!