তোর উঠানে বিকাল ছায়া?,অষ্টম খন্ড
লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
নির্ঝর এর বুকের উপর ছায়ার মাথাটা চুল গুলোর একটা দুটো নির্ঝর এর মুখের উপর পরেছে।
মিষ্টি একটা ঘ্রাণ আসছে নির্ঝর এর নাকে।
নির্ঝর আনমনে হেসে দেয়।
সে চোখ বন্ধ করেও ছায়ার চুলের ঘ্রাণ চিনতে এক বিন্দু ভুল করে নি।
সকাল হয়েছে,
তাই নির্ঝর চোখ খুলে ছায়াকে বুকের থেকে বালিশে নামিয়ে দিলো।
ছায়ার কপালে দিলো ভালোবাসার পরশ।
তার পর উঠে ওয়াসরুমে চলে গেল।
আজ অনেক প্লান নির্ঝর এর।
ছায়াকে আজ একটা অসম্ভব সুন্দর দিন উপহার দিতে চায় নির্ঝর।
তাই নিজেকে প্রস্তুত করছে সে
কিছু সময় পরে ছায়া ও ঘুম থেকে উঠে যায়।
দু’জনে সকালের খাবার শেষ করে।
নির্ঝর ছায়ার সামনে দাঁড়ায়।
হটাৎ নির্ঝর এর এমন সামনে দাঁড়ানো তে ছায়া ভ্রু যুগল কুঁচকে বলল,
–কি?
নির্ঝর পেছন থেকে একটা প্যাকেট এনে ছায়ার হাতে ধরিয়ে দিলো,
ছায়া প্যাকেট হাতে নিয়ে বলল,
–কি করব।
–পরে রেডি হয়ে বাইরে এসো অপেক্ষা করছি।
কথাটা বলে ছায়ার থেকে পাল্টা কথা না শুনে নির্ঝর চলে গেল বাইরে
ছায়া প্যাকেট টা হাতে করে খুলে দেখলো ভেতরে একটা হালকা বাসন্তী রঙের শাড়ি।
কাতান শাড়ির উপর স্টোনের কাজ।
এ মনে হয় এক অদ্ভুত সুন্দর শাড়ি।
তার সাথে কিছু গয়না।
ছায়া মৃদু হেসে তৈরি হয়ে নেয় ঠিক নির্ঝর এর মনের মতো।
তার পর নির্ঝর এর কথা মতো বাইরে আসে
নির্ঝর ছায়াকে দেখে চোখ ফেরাতে পারছে না।
পরিটাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে।
নির্ঝর ছায়ার পেছনে গিয়ে ছায়ার চোখ বেঁধে দেয়।
ছায়া চুপচাপ নির্ঝর এর কর্মকান্ড উপভোগ করছে
,
কিছু সময় পর নির্ঝর ছায়াকে সমুদ্রের এক দম কাছে একটা জায়গায় নিয়ে আসে।
যেখানে চারিদিকে শুধু সমুদ্র আর সাদা বালি।
তারি পাশে একটা টেবিল আর দুটো চেয়ার।
তার উপরে আছে একটা কেক যাতে ছায়া আর নির্ঝর এর বিয়ের ছবি
নির্ঝর ছায়াকে কেকের সামনে এনে ছায়ার চোখটা খুলে দেয়।
ছায়া চোখ মেলে তার সামনে এতো সুন্দর দৃশ্য দেখতে পেয়ে ভিশন খুশি হয়।
ছায়া নির্ঝর কে জড়িয়ে ধরে
তার পর দুজন মিলে কেক কেটে দু’জন দু’জন কে খাইয়ে দেয়।
তার পর তারা সেখানে বেশ অনেকটা সময় ঘুরাফেরা করে।
নির্ঝর ছায়াকে মাঝে মাঝে এক একটা উপহার দিতে আছে
আর ছায়া অবাক হতে আছে
সত্যি আজ নির্ঝর ছায়াকে এক অদ্ভুত সুন্দর দিন উপহার দিলো
বেশ কিছু সময় সেখানে থাকার পর তারা তাদের রিসর্টে ফিরে আসে।
রিসর্টে ফিয়ে ছায়া গোসল সেরে নির্ঝর এর বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে পরে।
,
,
,
,
চৌধুরী বাড়িতে,
তমা কাল থেকে আবিরের সাথে এক দন্ড কথা বলে নি।
(বিঃদ্রঃ প্রথম খন্ডে তমার হাসবেন্ড এর নাম ছিল নিরব আসলে নিরব ই আবির নিরবের নাম পরিবর্তন করে আবির রেখেছিলাম কিন্তু সেটা আমারি ভুলের জন্য লিখে দেওয়া হয় নি।
বিভ্রান্ত হলে ক্ষমা করবেন)
আবির বেশ বুঝতে পারছে তমার কিছু হয়েছে
আবির তমার কাছে এসে তমাকে কিছু বুঝাতেও পারছে না।
তমার চোখেমুখে চিন্তার বিশাল এক কালো ছায়া।
যেন তমাকে গ্রাস করে আছে গ্রহণের মতো করে।
আবিরের কাছে তমার এই চিন্তার কোন ব্যাখা নাই ।
আবির চুপচাপ তমার কর্মকান্ড দেখে চলেছে
আজ সকালে খাবার না খেয়ে আবির বেরিয়ে যায় অফিসের উদ্দেশ্য।
চৌধুরী বাড়িতে তমা নিজের রুমে বসে বসে কিছু ভাবছিল ঠিক তখনি হটাৎ তার চোখ পড়ে টেবিলে থাকা আবিরের ফোনের উপর।
তমা খেয়াল করলো তার ফোন বাজছে
হয়ত আবির ভুলে গেছে অফিসে ফোন নিতে।
ফোনটা কয়েকবার বাজা শেষ হলে তমা সেটা তুলতে যায় কিন্তু ফোনটা কেটে যায়।
তমা স্ক্রিনে থাকা নাম্বার টা দেখে কিছুটা অবাক হয় এমন নাম্বার সে আগে দেখে নি।
তমা ফোনটা হাতে নিয়ে পাসওয়ার্ড দিয়ে লক খুলে হাসবেন্ড এর ফোনের সব তার জানা।
আবার নাম্বার টা ভালো করে দেখে বুঝতে না পেরে Google এ সার্চ দেয়।
আর তখনি সে বুঝতে পারে নাম্বার টা মালদ্বীপ এর।
তমার বুঝতে দেরি হয় না তাহলে কে ফোন করেছে।
আর নির্ঝর আর ছায়া কোথায় আছে
–এবার কি হবে নির্ঝর তোমায় আমার হতেই হবে
ছায়া তোকে এবার মোরতেই হবে।
কথাটা বলে বিকট এক হাসি হাসলো তমা।
যেন সে দুনিয়া কে জয় করে ফেলেছে।
তার পর সে অন্য কাউকে ফোন করে।
,
,
,
,
–নির্ঝর নির্ঝর নির্ঝর এবার তোমায় কে বাঁচাবে। তুমি সেই ভুকটা আবার করলে।
আগের বার বেঁচে গেছিলে কিন্তু এবার আর বাঁচবে না আমি কথা দিলাম।
চেয়ারে হেলায় দিয়ে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে কথাটা বলছে অচেনা লোকটি।
–আদনান চৌধুরী যা চায় তা হাসিল করেই ছাড়ে।
আমি চাই ছায়াকে আর ছায়া শুধু আমার।
তুমি জানো কি ছায়া কতো অপেক্ষার পর তোমায় কাছে পাবো।
তুমি কিন্তু ভয় পাবা না হুম।
তুমি শুধুই আমার।
–এতো পাগল হস না বাবা ওই একটা মেয়ের জন্য।
পাশ থেকে এক মহিলা কন্ঠ ভেসে আসতে অচেনা লোকটা মুখ তুলে তাকায়।
একটা মহিলা যার চোখ দুটো শুধু বার করা আর সমস্ত শরীর কালো কাপড়ে ঢাকা।
মহিলাকে দেখে অচেনা লেকটা উঠে দাঁড়ায়।
–মা তুমি।
–হ্যা আমি তুই নাকি খাওয়া দাওয়া ছেড়েই দিয়েছিস।
–ছায়াকে নিজের কাছে না পাওয়া পর্যন্ত একটা দানা আমি মুখে তুলবো না মা।
–আদনান বাবা আমার এমন করিস না। তুই খেয়ে দেয়ে প্লান কর।
তা ছায়া খোঁজ ত পেয়ে গেছিস ছায়া ত তোর শুধুই তোর কেন তুই নিজের ক্ষতি করছিস বাবা৷
–আমি নিজের ক্ষতি করছি না মা।
আমি জানি আমি কি করছি তুমি চিন্তা করো না।
আদনানের কথা শুনে তার মা তার হাতের ভাজে ছেলের মুখ এনে বলে,
–তুই আমার এক মাত্র ছেলে বাবা এমন করিস না খেয়ে নে তুই না খেয়ে অসুস্থ হলে আমার কি হবে বল
–মা তুমি চিন্তা করো না আর কিছু সময়ের মধ্যে ছায়া আমার কাছে থাকবে তার পর আমি খেয়ে নিবো।
–এমন করিস না বাবা তোকে আল্লাহর দোহায় লাগি খেয়ে ঔষধ খেয়ে তার পর কাজ কর।
আদনান মায়ের জোড়াজুড়ি তে খাবার খেয়ে ঔষধ খেয়ে নেয়।
এই দুনিয়াতে তার মা ছাড়া আপন কেউ নেই।
তাই মায়ের কথায় তাকে সব করতেই হবে
মা ছেলের কুশল বিনিময় শেষ হবার পর আদনান সবাইকে ডেকে জড়ো করে,
–আমাদের এখনি মালদ্বীপ এর উদ্দেশ্য রওনা হতে হবে।
আর সেখানে গিয়ে কি করোনিয় তা তোমরা জানো।
–জি বস।
আদনানের ইসারায় সবাই বেরিয়ে পরে। আর আদনান ও।
,
,
,
,
ছায়া বসে বসে নির্ঝর এর মুখ পর্যবেক্ষণ করছে।
নির্ঝর ফোনে কাজ করছে কিন্তু ছায়ার কর্মকান্ড তাকে বাঁধা দিচ্ছে।
নির্ঝর মাঝে মাঝে ছায়াকে সরিয়ে দিচ্ছে আবার মাঝে মাঝে বিরক্ত একটা শব্দ করছে। কিন্তু কিছুতে কিছু হচ্ছে না।
ছায়া তার বাচ্চামি চালিয়ে যাচ্ছে।
নির্ঝর ছায়ার দিকে তাকিয়ে একটা ডেভিল হাসি দিয়ে ছায়াকে টেনে নির্ঝর এর নিচে ফেলল
–কি আদর লাগবে নাকি হুম।
–এই না না ছাড়ুন।
–এমন করছিলা কেন শাস্তি ত পাবাই।
কথাটা বলে নির্ঝর ছায়ার ঠোঁটের দিকে অগ্রসর হয়।
যখন ছায়ার ঠোঁট দুটো আবদ্ধ করবে ঠিক তখনি,
,
,
,
চলবে,