আমার হৃদয়ে তুমি,পর্বঃ২
Tanisha Sultana (Writer)
বিশ মিনিটের বেশি হয়ে গেছে এখনও পান্ত আসার খবর নাই। মারু তো লাগেজের ওপর বসে দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে প্রায় ঘুমিয়ে পরেছে। পান্তর বাবা বিরক্ত হয়ে পান্তকে ফোন করছে কিন্তু রিসিভ করছে না। তিশা গেমস খেলছে।
“বাবা
পান্তর কন্ঠ শুনে মারু ধরফরিয়ে ওঠে।
” এতোখনে আসার সময় হলো? বাবা রেগে বলে। পান্ত কানে এক হাত দিয়ে বলে
“সরি কাজ ছিলো
পান্ত তালা খোলে। বাবা আর তিশা হনহনিয়ে ভেতরে ঢোকে। ওদের পেছনে পান্ত যায়। মারু একটু একটু করে এগোচ্ছে। হঠাৎ মারুর চোখ যায় পান্তর পিঠে। লিপস্টিকের দাগ লেগে আছে। এমনকি হাতে গলায়ও লিপস্টিকের দাগ।
” ওনার গায়ে লিপস্টিকের দাগ এলো কোথা থেকে?
মারু মনে মনে ভাবছে আর হাঁটছে। পায়ের কাছে কিছুর উপস্থিতি টের পেয়ে নিচের দিকে তাকায় মারু। মদের বোতল গ্লাস সিগারেটের প্যাকেট ছাই বাকি অংশ এসব পড়ে আছে পুরো ফ্লোর জুরে।
“এখানে কি মানুষ বাস করে না কি? থাকবো কি করে এখানে?
” মারুফা
মারু চমকে পাশে তাকিয়ে দেখে পান্ত। মারুর তো হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছি। নিশ্চ এখন বকবে এখানে আসার জন্য
“খুব শখ না আমার সাথে থাকার। এতো বারণ করলাম তবুও চলে আসলে
” আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?
মারুর প্রশ্নে পান্ত থমথমে খেয়ে যায়। যদিও সহজ একটা প্রশ্ন তবুও পান্তর কঠিন মনে হচ্ছে। কথা ঘোরানোর জন্য পান্ত বলে
“পাল্টা প্রশ্ন করা আমি পছন্দ করি না। আর হ্যাঁ বাবার সাথে তিশাকে চলে যেতে বলবে না হলে
পান্ত চলে যেতে নেয় তখনই পান্তর বাবা বলে
” এসব কি পান্ত? তোমাকে এখানে থাকতে দিয়েছি বলে তুমি যা খুশি তাই করবে? তুমি সিগারেট খাচ্ছো মদ খাচ্ছো? এতোটা বিগড়ে গেছো
চেচিয়ে বলে বাবা। মারু মনে মনে হাসছে। পান্তকে বকা খেতে দেখে মারুর অতিরিক্ত ভালো লাগছে।
“বাবা তুমি ভুল বুঝছো কাল বন্ধুরা এসেছিলো ওরা খেয়েছে এসব। আমি তো বাড়ি থেকে এসে সোজা হাসপাতালে চলে গেছিলাম এখন আসলাম। ট্রাস্ট মি। আমি তো সিগারেটের গন্ধই সয্য করতে পারি না। সেটা তো তুমি জানো
” তোমার বন্ধুদের বলবা ওরা যেনো এখানে আর না আসে
“ওকে বাবা
মারু বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করছে। কাল রাতে মদ গিলে বাড়ি এলো অথচ এখন বলছে সিগারেটের গন্ধ সয্য করতে পারে না। এটা কি করে পসিবল?
” বাবা
মারু ভাবনা থেকে বেরিয়ে আবার পান্তর দিকে মন দেয়
“বলো
” বলছিলাম তিশাকে তুমি নিয়ে যেও
“কেনো?
” না মানে ভাই ভাবির সাথে কি করে বলি
বুঝে নাও
পান্ত মাথা চুলকে বলে। বাবা মুচকি হেসে বলে
“ঠিক আছে নিয়ে যাবো
বাবা চলে যায়। মারু ভাবছে কি অসভ্য মানুষরে বাবা। তিশা থাকলে ভালোই হতো। এই লোকটাকে বিশ্বাস নেই। সেকেন্ডে সেকেন্ডে রং বদলায়। এখনি কিছ করে বলবে আমার কিছ এলার্জি আছে।
মারু ভাবছে তখনই পান্ত ঠাস করে মারুর গালে কিছ করে। মারু তো চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে। পান্ত বাঁকা হেসে বলে
” আমি আবার কিছও করতে পারি না এলার্জি আছে। আর তুমি স্বেচ্ছায় আমার কাছে এসেছো। এবার দেখো কি কি হয়
পকেটে হাত দিয়ে শিশ বাজাতে বাজাতে চলে যায় পান্ত
“আমার মনের কথা বুঝলো কি করে? আমি কার পাল্লায় পরলাম। আল্লাহ মিঠাইয়ের মতো আমাকেও একটু হেলেপ করো।
এবার মারু ভাবছে কোন রুমে যাবে। মোট তিনটা রুম একটাতে বাবা গেলো আরেকটাতে তিশা অন্যটাই পান্ত এবার কোন রুমে যাবো।
তিশার রুমে যায়।
তিশার রুমে গিয়ে দেখে ভেতর থেকে দরজা লক করা। বাবার রুমে যাওয়া যাবে না। বাকি আছে পান্তর রুম।
পান্তর রুমের দরজা খোলা। মারু মনে মনে আল্লাহকে ডাকছে আর পান্তর রুমের দিকে যাচ্ছে।
পান্ত বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে আছে আর সিগারেট খাচ্ছে। মারু লাগেজটা ছুড়ে কোমরে হাত দিয়ে পান্তর সামনে গিয়ে বলে
” আপনি না সিগারেটের গন্ধ সয্য করতে পারেন না?
পান্ত সিগারেটে একটা টান দিয়ে ধোঁয়া উড়িয়ে বলে
“বাবার সামনে ওটা ড্রামা ছিলো এটা রিয়েল।
পান্ত উঠে বসে মারুকে টান দিয়ে পাশে বসায়। মারুর এলোমেলো চুল কানের পিঠে গুজে দিয়ে বলে
” বাবা আর তিশা একটু পরে চলে যাবে। ওরা বেরিয়ে গেলে বাসাটা সুন্দর করে গুছিয়ে দিও। রাতে আমার গার্লফ্রেন্ড আসবে ওকে ওয়েলকাম জানাতে হবে
মারু পান্তর থেকে দুরে গিয়ে বসে হাত নাচিয়ে বলে
“দেখুন আপনি যেমন স্বেচ্ছায় বিয়েটা করেন নি আমিও তেমন সেচ্ছায় করি নি। আমার বয়ফ্রেন্ড আছে কয়েকদিন পরেই চলে যাবো। সো আমাকে দুর্বল মনে করবেন না
পান্ত মারুর হাতটা ধরে
“বাহহহ নেলপলিশের কালারটা দারুণ
” কিহহহহ
“কোন কোম্পানির
” আমি কি বললাম আপনাকে
“সরি ভুলে গেছি। কি যেনো বলছিলে
মারু চোখ ছোট ছোট করে কপাল কুচকে পান্তর দিকে তাকায়।
“চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছ কেনো?
“আপনি মানুষ তো?
” সন্দেহ আছে
“১০০%
” নাহহ আমি মানুষ না। তুমি তো মানুষ। তো আমি যা বললাম মনে আছে। আমি বেরচ্ছি এসে যেনো সব ঠিকঠাক দেখি। নাহলে
“না হলে
পান্ত মুচকি হেসে বলে
” ছাঁদ থেকে ফেলে দেবো। তারপর ড্রামা করে একটু কাঁদবো আর বলবো বয়ফ্রেন্ডের জন্য সুইসাইড করেছে। অনফরচুনেটলি আমি তোমার হাজবেন্ড সো সবাই আমার কথা বিশ্বাস করবে। তুমি কবরে আর তোমার বফ জেলে ইন্টারেস্টিং না বেপারটা
মারু রেগে বলে
“ইউ
” দ্যা গ্রেট পান্ত চৌধুরী
পান্ত মুচকি হেসে চলে যায়। রাগে মারুর মাথা ফেটে যাচ্ছে
“গার্লফ্রেন্ডের সাথে ফসটিনসটি করবে আর আমাকে সব এরেন্জ করে দিতে হবে। মঘের মুল্লুক পেয়েছে না কি?
মারুর ফোন বেজে ওঠে
চলবে