আমার হৃদয়ে তুমি,পর্বঃ৩
Tanisha Sultana (Writer)
“হেলো
” মারু কেমন আছো?
“ভালো। তুমি
” ভালো
“বিয়ে হয়ে গেছে আমার
” জানি
“এখন হয়ত বলবে একটা বিবাহিত মেয়ের সাথে আমার রিলেশন রাখা পসিবল না। আমাকে ভুলে যাও মারু। এটা বলতেই ফোন দিয়েছো? ইটস ওকে তোমার মুক্তি আটকাবে না তোমায়
রাফিন একটু হেসে বলে
” ভালোবাসি তোমায়। #আমার হৃদয়ে তুমি। তোমায় কি করে হৃদয় থেকে বের করে দেয় বলো তো। তাছাড়া আমি জানি তুমি ইচ্ছে করে বিয়ে করো নি। জোর করে দেওয়া হয়েছে। তোমার মা আর বোনকে আমি ছাড়বো না দেখে নিও
“রাফিন ওদের দোষ নেই। আমারই কপাল খারাপ
” ভাবি
তিশার কন্ঠ শুনে মারু ফট করে ফোন কান থেকে সরিয়ে ফেলে।
“কিছু বলবে
তিশা মারুর কাছে এসে বলে
” খুব খিদে পেয়েছে কিন্তু কোনো খাবার নেই। চলো রান্না করি আমি আর তুমি মিলে
“হুম চলো
মারু ফোনটা লাগেজে ঢুকিয়ে তিশার সাথে চলে যায়।
প্রথমে ওরা রুম পরিষ্কার করে মানুষের বসবাসের উপযোগী করে। মারু পান্তর রুম পরিষ্কার করার সময় এলটা ডাইরি পায়। ডাইরিটা পাসওয়ার্ড দিয়ে খুলতে হবে। বইয়ের উপরে লেখা #আমার হৃদয়ে তুমি। মারু ডাইরিটা উলট পালট করে দেখে। ডাইরির পেছনে মারুফা ইয়াসমিন মারু নামটা লেখা।
” ডাইরিতে আমার নাম লেখা কেনো? আর কি ছাতার মাথা পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখছে। ধুর। কিছু তো গন্ডোগোল আছে।
মারু ডাইরিটা টেবিলে রেখে দেয়।
সন্ধার আগেই রান্না শেষ হয়। খাবার খেয়ে তিশা আর শশুর মশাই চলে যায়। মারুর এবার ভীষণ একা একা লাগছে। ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে টিভি দেখছে তখন কলিং বেল বাজে। মারু দরজা খুলে দেখে পান্ত আর একটা মেয়ে।
মেয়েটা পরনে হাতা কাটা হাঁটু পর্যন্ত একটা ড্রেস।
“কাম ইন বেবি
পান্ত মেয়েটার হাত ধরে রুমে চলে যায়। মারু দরজা আটকে দেয়।
” মারু
পান্ত রুমে থেকে মারুকে ডাকে। মারু যায়। গিয়ে দেখে মেয়েটা পান্তর কোলে বসে আছে। আর এক গ্লাসে জুস খাচ্ছে
“ডাকছিলেন
” আমাদের জন্য দুকাপ কফি দিও তো। আমার টাই বেশি করে চিনি দিয়ে
মারু পান্তর দিকে তাকিয়ে আছে
“আই নো আমি ভীষণ স্মার্ট তাই বলে এভাবে তাকিয়ে থাকার কিছু নেই ?
মারু মনে মনে পান্তর চোদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে চলে যায়
” তোমাকে বেশি করে চিনি দিয়ে কফি খাওয়াবো। জন্মের মতো কফি খাইয়ে দেবো। মারুফাকে অর্ডার করা। বউয়ের সামনে গার্লফ্রেন্ডের সাথে রোমাঞ্চ করছে। ধুর কি ভাবছি। আমার বর তো হবে রাফিন। শালা লুচ্চা। পান্তাভাত
মারু চিনির বদলে লবন দিয়ে কফি বানিয়ে নিয়ে যায়।
“আসবো পান্তা ভাত থুক্কু পান্ত ভাইয়া
” পারমিশন নেওয়ার কি আছে
মারু রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে
“আপনারা যেভাবে করোনা ভাইরাস আদান প্রদান করছেন তারপর আবার আজ কিছ ডে তো আসতে ভয় করে। আপনাদের তো কান্ডব ঙ্গান নেই। একটা বাচ্চা মেয়ের সামনেই ছি ছি
” তোমারও কি কিছ ডে ইনজয় করতে ইচ্ছে করছে না কি
“একদম ই না।
পান্ত একটা কফি মেয়েটার হাতে দেয় আর একটা নিজে নেয়।
” আমি যাচ্ছি হ্যাঁ
মারু যেতে নেয়
“এক মিনিট
মারু পেছন ঘুরে বলে
” আবার কি
“কফি কেমন হয়েছে শুনে তো যাও
” আমি জানি খুব ভালো হয়েছে
“ওয়েট
পান্ত কফির মগে চুমুক দেয়। মারু বিশ্ব জয়ের হাসি দেয়। পান্ত কোনোরকম কষ্টে মষ্টে মুখের কফিটা গিলে মারুর সামনে যায়। মারু পান্ত কে বলে
” আমার সাথে লাগতে আসছিলেন না নমুনা দেখলেন। এটা তো উদাহরণ। এরপরও আসলে এর চেয়েও খারাপ কিছু হবে
মারু যেতে নেয় পান্ত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে
“আর আমার সাথে পাঙ্গা নেওয়ার ফল ভোগ করবে না মারুফা ইয়াসমিন
” ছাড়ুন আমায়
পান্ত মারুর দুগালে হাত দিয়ে মারুর ঠোঁটে কিছ করতে শুরু করে দেয়। (কিছ ডে তে কিছ না হলে জমে?) মারু ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। মেয়েটা তো হা হয়ে গেছে।
প্রায় পাঁচ মিনিট পরে পান্ত মারুকে ছেড়ে দেয়। দুজনই হাঁপাচ্ছে।
মারু পান্তর গায়ে কয়েকটা কিল ঘুশি মারে পান্ত মারুর হাত ধরে জড়িয়ে নেয়।
“আপনি একটা বাঁজে মানুষ।
“এখানে কি ফিল্মস হচ্ছে পান্ত
মেয়েটা রেগে চিৎকার করে বলে। পান্ত মারুকে ছেড়ে মেয়েটারে জড়িয়ে ধরে বলে
” বেবি কুল ডাইন। আজ তো কিছ ডে এটা হতেই পারে।
মারুর ঠোঁট থেকে রক্ত পড়ছে। মারু দৌড়ে বেরিয়ে যায়। অন্য রুমে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ায়। ঠোঁট থেকে রক্ত মেছে শাড়ির আচল দিয়ে
“এই ছেলেটার সাথে আমি হার্ট অ্যাটাক করে মরবো। ইস আমার এতো সুন্দর ঠোঁটের কি অবস্থা করছে। অনেক হইছে আর না। এবার আমি এই পান্তা ভাতের মুখোশ সবার সামনে খুলবো। আল্লাহ একটু হেলেপ করো। তোমার নিষ্পাপ বান্দাটাকে বাঁচাও।
পান্ত রুমে আসে। মারু কোমরে হাত দিয়ে পান্তর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়
” আপনি আমাকে কিছ করলেন কেনো?
“আমি আর কিছ তাও আবার তোমাকে। ওই তো সাদামাটা ঠোঁট তাতে আমি কিছ করবো এটা তোমার মনে হয় কি করে? আমার কিছ করার জন্য হাজারটা ঠোঁট আছে।
ওহহ বুঝেছি তুমি ভাবো আমি তোমায় কিছ করবো। কখনো না। কিছ এ আমার এলার্জি আছে।
পান্ত ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
” মানুষ মিথ্যা বলে কিন্তু এরকম সেকেন্ডে সেকেন্ডে মিথ্যা বলা মানুষ বাপের জন্মে দেখি নি। তোমার বিরুদ্ধে প্রশান জোগাড় করা শুরু করবো আজ থেকেই। সবার সামনে তোমার মুখোশ টেনে খুলে দেবো। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি
মারুর ফোন বেজে ওঠে। মারু রিসিভ করে
“হেলো
” হ্যাপি কিছ ডে
“হুম
” কি করো
“কিছু না। তুমি
” আমিও
সময় হবে মিট করতাম
“হুম হবে
” কবে
“কাল
” কখন কোথায়
“মেসেজ করে জানিয়ে দেবো
” জানু সোনা তামা বাবু কার সাথে কথা বলো
পান্ত মারুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে।
“ছাড়ুন আমায়
” একটু আগে তুমি সেচ্ছায় কাছে আসলে কিছ করে আরও কি কি করলে। আর এখন আমাকে বারণ করছো। ইটস নট ফেয়ার জান
পান্ত শব্দ করে মারুর গালে চুমু দেয়। রাফিন রেগে ফোন কেটে দেয়।
মারু রেগে পান্তকে বলে
“সমস্যা কি আপনার
” কোনো সমস্যা নেই
“তাহলে এমন করছেন কেনো? আমার অপরাধ কি?
” বেইমানরা সব সময় তাদের বেইমানির কথা ভুলে যায়। বাট দ্যা গ্রেট পান্ত চৌধুরী কারো বেইমানি ভুলে না
“কি সব বলছেন
” তুমি বুঝবা না। খাবার রেডি করো আমি খাবো।
মারু যেতে নেয়।
“খাবারে কিছু মিশালে আজকেই ভ্যালেন্টাইন ডে টাও সেরে ফেলবো
মারু ভেৎচি কেটে চলে যায়। পান্তকে খাবার বেরে দেয় পান্ত খেতে থাকে। খেতে খেতে বলে
” কাল তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে
“সরি
পান্ত খাওয়া বাদ দিয়ে বলে
” কেনো?
“আমার কাজ আছে
” রাফিনের সাথে মিট করা তাই তো
“আপনি রাফিনের নাম জানলেন কেমনে
পান্ত বাঁকা হেসে বলে
“আমি আবার বেইমানদের খবর বেশি রাখি
” কি তখন থেকে বেইমান বেইমান বলছেন
“কাল ঠোঁটে বেশি করে লিপস্টিক লাগাবে যাতে কিছু বোঝা না যায়।
” আমার ইচ্ছে
“ঠাটিয়ে একটা চর মারবো কথা না শুনলে
পান্তর ধমকে মারু কেঁপে ওঠে।
” পাঁচ মিনিটের মধ্যে খাওয়া শেষ করে আমার রুমে এসো কিছু দেখাবো
পান্ত উঠে চলে যায়। মারু বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেয়।
“এই মুহুর্তে আমার একটা ক্যামেরা প্রয়োজন প্রমাণ জোগাড় করার জন্য। এখন কথা হলো টাকা কই পামু। পান্তর রুম থেকে চুরি করমু। উফ মারু কতো বুদ্ধি তোর। উম্মা
মারু নিজেই নিজেকে বাহবা দেয়
চলবে