তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি?,পর্ব_২০

0
2210

তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি?,পর্ব_২০
Anika Fahmida

পল্লবদের পরিবার সেই সকাল বেলাতেই অনুর বাসা থেকে চলে গেছে। অনু সারাদিন ধরে নিজের রুমে চুপ করে বসে জানালার বাহিরে তাকিয়ে আছে। এখন আর অনু কাঁদছে না৷ অনুর চোখের জল শুকিয়ে গালে দাগ হয়ে বসে আছে। আদ্রকে অনু অনেকবার ফোন করেছিল কিন্তু আদ্রের ফোনটা অনু বন্ধ পায়। অনু কোনো কিছুই আদ্রকে জানাতে পারলো না যে আজ অনুর এনগেজমেন্ট হয়েছে তাও পল্লবের সাথে। এখন রাত। তাও গভীর রাত। তবুও অনুর চোখে ঘুম নেই। অনু এখনও আশা করে বসে আছে আদ্র ফোন দিবে। তাই অনু চোখ বন্ধ করে আদ্রের কথাই ভাবছিল। অনুর মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে আছে। এমন সময় অনুর ফোনটা বেজে উঠল। আদ্র ফোন দিয়েছে। অনুর মনটা এখন একটু হালকা হলো। ফোন রিসিভ করে বলল,

–হ্যালো আদ্র তুমি তোমার ফোনটা অফ করে রেখেছিলে কেন? আমি কতবার তোমায় ফোন দিয়েছি তুমি জানো? আমার কত চিন্তা হচ্ছিল তোমার জন্য।

ওপাশে আদ্র কোনো কথা বলছে না। চুপ করে আছে।শুধু আদ্রের নিশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে যা অনুর কানে ভেসে আসছে। আদ্র কথা বলছে না কেন অনু বুঝতে পারল না। অনুর ভীষণ রাগ হলো। তাই অনু আদ্রকে আবার জিজ্ঞেস করল,

–কি হলো আদ্র মজা নিচ্ছো আমার সাথে? কথা না বললে ফোন দিয়েছ কেন?

আদ্র এবার শান্ত স্বরে অনুকে বলল,

–এমনি কথা বলি নি। তোর নিশ্বাসের শব্দটা শুনছিলাম। ভীষণ ভালো লাগছিল তোর নিশ্বাসের শব্দটা শুনতে।

আদ্রের এই কথা শুনে অনু অবাক হলো। শরীর কেঁপে উঠল।অনু নিজেকে স্বাভাবিক করে আদ্রকে বলল,

–হ্যা হ্যা আমার নিশ্বাসের শব্দটাই তুমি শুনো। আজ আমার এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে। আর কয়েকদিন পর আমার বিয়েটাও হয়ে যাবে। তুমি তখন আমার এই নিশ্বাসের শব্দটাও শুনতে পাবে না। কখনো কথাও বলবো না তোমার সাথে।

আদ্র অবাক হয়ে অনুকে জিজ্ঞেস করল,

–মানে?তোর এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে? কি বলছিস তুই? কার সাথে হয়েছে তোর এনগেজমেন্ট?

অনুর এবার কান্না পেল। কান্নায় কথা আটকে যাচ্ছে। তবুও কান্না থামিয়ে অনু অনেক কষ্টে আদ্রকে বলল,

–পল্লবের সাথে আজ আমার এনগেজমেন্ট হয়েছে। আগামী শুক্রবার পল্লবের সাথে আমার বিয়ে।

অনুর মুখে এই কথাটা শুনে আদ্রের মাথায় আগুন ধরে গেল। সব কিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে। আদ্র দাঁতে দাঁত চেপে অনুকে বলল,

— এতো কিছু হয়ে গেল আর তুই আমাকে জানালি না? ঐ পল্লবের বাচ্চাটা না তোর বন্ধু হয়? তাহলে এমন একটা কাজ করতে তোর বন্ধুর বিবেকে আটকালো না? তোর আর আমার ভালোবাসার সম্পর্কটা পল্লব জেনেও কি করে এমন করতে পারল? আমাদের ভালোবাসায় আগুন লাগানোর ওর সাহস হয় কি করে? তোর বাসা চিনলো কি করে? বদমাশটা আংকেল খালামনিকে বিয়ের জন্য রাজি করালো কি করে? আর তুই আমাকে ফোন করে বলিস নি কেন? তাহলে তো আমি এসে এনগেজমেন্টটা আটকাতে পারতাম।

অনু মন খারাপ করে আদ্রকে বলল,

–তোমাকে ফোন করার সুযোগটাও তো আমি পাই নি আদ্র। তখন আমার সামনে আম্মু ছিল। তাই আমি তোমাকে ফোন করতে পারি নি। আর আমি তো জানতাম না পল্লব আমাকে ভালোবাসে। আমি তো বন্ধু ভাবতাম পল্লবকে কিন্তু পল্লব আমাকে ভালোবাসার নজরে দেখতো আমি কি করে জানতাম বলো? পল্লব আমাদের বাসা চিনতো। একদিন আমাকে আমার বাসায় পৌঁছে দিয়েছিল। আমি বাসায় না থাকাকালীন হয়তো পল্লব আব্বুর সাথে কথা বলে ভাব জমিয়েছে। আর আমাকে বিয়ে করার কথাও বলেছে। তাই তো পল্লবের কথায় আব্বু পল্লবের সাথে আমার বিয়ে দিতে রাজি হয়ে গেল। আম্মুও রাজি হয়ে গেছে আদ্র। সবাই পল্লবকে পছন্দ করে ফেলেছে। আব্বু তো তোমাকে কিছুতেই মানবে না বলছে। কারণ আব্বু বলেছে তোমার বাবা মানে আংকেল নাকি টাকা নিয়ে ভীষণ অহংকার দেখায়। তোমার আর আমার বিয়ে নাকি কিছুতেই আংকেল হতেও দিবে না আর মেনেও নিবে না। তাই আব্বু চায় আমাকে অন্য কারও সাথে বিয়ে দিতে যাতে আমি তোমাকে ভুলে যাই।

আদ্র অনুর সব কথা শুনে হেসে অনুকে বলল,

–আংকেলের ইচ্ছেমতো চাইলেই যে সব হয়ে যাবে তাতো হয় না। আমি হতে দিব না।

অনু আদ্রকে বলল,

–মানে? কি বলতে চাইছো?

আদ্র গম্ভীর স্বরে অনুকে বলল,

–তুই তোর বাসার নিচে আয়। আমি দাঁড়িয়ে আছি।

অনু অবাক হয়ে বলল,

–আদ্র তুমি আমার বাসার নিচে?

আদ্র বিরক্তি স্বরে অনুকে বলল,

–হ্যা রে ইডিয়ট। আমি তোর বাসার নিচেই আছি। এতো কথা বলিস কেন? যা বলছি তাই কর। নিচে আয়।

অনু ভয় পাওয়া স্বরে আদ্রকে বলল,

–কিন্তু আদ্র আব্বু যদি আমাকে রুম থেকে বের হতে যেতে দেখে ফেলে তখন আমার কি হবে?

–কেউ দেখবে না। আর কেউ জানবেও না। সাবধানে নিচে নেমে আসবি।

অনু শান্ত স্বরে আদ্রকে বলল,

–আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসছি৷

অনু আদ্রের ফোন কেটে দিয়ে আস্তে করে নিজের রুমের দরজাটা খুলে ফেলল। তারপর ধীরে ধীরে ড্রইং রুমে চলে গেল। অনুর আব্বু আম্মু সবাই নিজের রুমে ঘুমিয়ে আছে। মেইন দরজাটা খুলেই অনু সিঁড়ি বেয়ে তাড়াতাড়ি করে নিচে নামতে লাগল। একসময় রাস্তায় এসে অনু এদিক ওদিক তাকিয়ে আদ্রকে খুঁজতে লাগল। আদ্র মাথা নিচু করে অনুর বাসার গেটের পাশের দেয়ালে হেয়াল দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পায়ের শব্দ শুনে আদ্র মাথা তুলে তাকিয়ে অনুকে দেখতে পেয়ে অনুর দিকে দ্রুত এগিয়ে আসলো। অনু আদ্রের মুখের দিকে তাকাল। আদ্রকে দেখতে এমন অগোছালো লাগছে কেন? আদ্র অনুর একদম কাছে চলে এসে অনুকে দ্রুত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। অনু আদ্রের এমন কাজে অবাক হলো। কিন্তু পরমুহূর্তে অনুও আদ্রকে জড়িয়ে ধরল। আদ্র অনুকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় বলল,

–তোকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না অনু। আমার প্রতিটা মুহূর্ত তোকে ছাড়া বিষের মতো মনে হয়। আমি নিজেকে তোর থেকে যতই দূরে রাখার চেষ্টা করি না কেন আমি তোকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।

অনুও আদ্রকে বলল,

–আমিও যে তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না আদ্র।

আদ্র অনুকে ছেড়ে দিয়ে অনুর মুখের দিকে তাকাল। অনুর চোখের কাজল চোখের জলে লেপ্টে চোখের আশেপাশে ছড়িয়ে আছে৷ নীল শাড়িতে এই এলোমেলো অনুকে আদ্রের খুব ভালো লাগছে। আদ্র অনুর কপালে হঠাৎ করেই চুমু দিল। অনু অবাক হয়ে আদ্রের দিকে তাকাল। আদ্র অনুর দুই গালেও চুমু দিয়ে দিল। অনু চোখ বন্ধ করে রইল। শেষে আদ্র অনুর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে গেলে অনু চোখ খুলে দেখে আদ্র অনুর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে আসছে তাই অনু ভয়ে পিছিয়ে গিয়ে আদ্রকে বলল,

–তুমি এভাবে বার বার আমাকে ছুঁবে না আদ্র।

আদ্র অনুর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল,

–কেন অনু?এর আগেও তো তোকে আমি অনেকবার ছুঁয়েছি তাহলে এখন এমন করে বলছিস কেন?

অনু কান্নাজড়িত কন্ঠে আদ্রকে বলল,

–আমাকে ছোঁয়ার অধিকার তোমার কি আছে আদ্র? তুমি তো আমাকে বিয়ে করবে না। তাহলে কেন আমাকে এভাবে চুমু দিতে আসো? লজ্জা নাই তোমার? শুধু বেহায়ার মতো আমার কাছে আসো। আমি তো কয়েকদিন পর অন্যের বউ হয়ে যাবো।আমাকে তো বিয়ে করতে পারবে না তুমি। সব পথই তো বন্ধ। তাহলে কেন এতো কাছে আসো আমার?

অনুর মুখে অনুকে অন্য কারও বউ হওয়ার কথা শুনে আদ্রের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।আদ্র অনুর কোমড় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অনুকে নিজের আরও কাছে নিয়ে আসল।অনু ভয় পাওয়া দৃষ্টিতে আদ্রের দিকে তাকাল। আদ্র অনুর কোমড় থেকে একটা হাত সরিয়ে অনুর পেটের কোণায় এমন শক্তভাবে আঙুল দিয়ে চেপে ধরল যে অনুর পেটে ব্যথা হতে লাগল। অনুর পেটের পাশে জ্বলছে ভীষণ। অনু কান্না করে দিয়ে আদ্রকে বলল,

–আমার পেটে ব্যথা লাগছে আদ্র। জ্বলছে খুব। ছাড়ো আমাকে।

আদ্র গম্ভীর স্বরে রেগে দাঁতে দাঁত চেপে অনুর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,

–ব্যথা লাগছে? জ্বলছে খুব? আমারও বুকে ভীষণ ব্যথা লেগেছে। বুকের ভিতর ভীষণ জ্বলছে তোর মুখে তুই অন্য কারও বউ হয়ে যাবি কথাটা শুনে। ছাড়ার জন্য তো তোকে আমি ধরি নি অনু। ছাড়ার জন্য তোকে আমি স্পর্শও করি নি। তোকে আমি ভালোবাসি বলেই তোকে আমি ছুঁই। নাহলে তোকে আমি ছুঁতাম না। তোর কি মনে হয় তোর এই আদ্র তোকে বিয়ে না করে অন্য মেয়েকে বিয়ে করবে? আর তোর বিয়েও অন্য ছেলের সাথে হতে দিবে? তুই ভুল ভাবছিস অনু। বড়ই ভুল ভাবছিস। আদ্রকে এখনও তুই চিনিস না। আমার বাবা বড় বড় গুন্ডা মাস্তানদের সাথে ভালো সম্পর্ক আছে তা আমি জানতাম না। জানলে হয়তো আরও সতর্ক হতে পারতাম। বাবাকে আমি একজন সহজ সরল ভালো মানুষ ভাবতাম৷ কিন্তু বাবার সহজ সরলের আড়ালে এতোটা ভয়ংকর রূপ লুকিয়ে আছে তা আমি জানতাম না। সেদিন তোর মাথায় পিস্তল ঠেকানো দেখে আমার মাথা কাজ করছিল না। শুধু একটা কথাই মনে হয়েছিল তোকে আগে বাঁচাতে হবে। আমাদের বিয়েটা ভাঙলে ভেঙে যাক। বিশটা গুন্ডার সাথে বেশিক্ষণ টিকতে আমি পারতাম না। বাবা তাদের টাকা দিয়ে ভাড়া করে এনেছিল। আমার কাছে কোনো হাতিয়ার ছিল না। বাধ্য হয়ে সেদিন বাবার সাথে চলে যাই। তোকে আমি একা ছেড়ে চলে আসি। নাহলে তোর ক্ষতি হতে পারতো। বাসায় গিয়ে ফোন বন্ধ করে রেখে অনেক ভেবেছি কি করা যায় বা কি করব আমি! ভেবেও ফেলেছি আমি। আর এর মাঝে তোর এনগেজমেন্টটাও হয়ে গেল? আমি জানতেও পারলাম না! তুই আমাকে জানাতেও পারলি না! থাক এনগেজমেন্ট হয়েছে তো কি হয়েছে? বিয়েটা তো হয় নি। তোর বিয়ে আমি কারও সাথে হতে দিব না। তোর বিয়ে আমি ভেঙেই ছাড়বো। তোকে বিয়ে তো আমিই করব। জোর করে করব। যেভাবেই হোক সেভাবেই বিয়ে করব।

অনু অবাক হয়ে আদ্রের দিকে তাকিয়ে শুধু আদ্রের কথাগুলো শুনতে লাগল। অনুর পেটে যে আদ্রের নখ লেগে ব্যথা করে জ্বালা করছিল সেই সব ব্যথা, জ্বালা যেন হাওয়ায় চলে গেছে। অনু শুধু অবাক হওয়া স্বরে আদ্রকে একটা কথাই জিজ্ঞেস করল,

–তুমি আমার বিয়েটা কি করে ভাঙবে আদ্র?

আদ্র মুচকি হেসে অনুকে বলল,

–ম্যাজিক করে। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি অনু।

আদ্রের কথা শুনে অনুর মুখেও হাসি ফুটে উঠল। খুশি হয়ে অনু আদ্রকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। আদ্র অনুর এমন হঠাৎ জড়িয়ে ধরায় একটু অবাক হয় কিন্তু তারপর আদ্রও অনুকে জড়িয়ে ধরল। কিছুক্ষণ পর অনু আদ্রকে ছেড়ে দিয়ে ভয় পাওয়া স্বরে বলল,

–আদ্র আমি এখন বাসায় যাই। আব্বু যদি জেগে গিয়ে দেখে আমি বাসায় নেই তাহলে আবার অশান্তি করবে।

আদ্র শান্ত স্বরে অনুকে বলল,

–ওয়েট যাবি। আগে বল পল্লবের বাসার ঠিকানা তুই জানিস?

অনু আদ্রকে বলল,

–হ্যা জানি। আমার বান্ধবী নেহার ভাই পল্লব। আমি নেহার বাসায় আগে একবার গিয়েছিলাম কিন্তু পল্লবকে তখন দেখি নি।

আদ্র বাঁকা হেসে অনুকে বলল,

–গুড। তাহলে মেসেজ করে পল্লবের বাসার ঠিকানাটা আমাকে পাঠিয়ে দে।

–ঠিক আছে আমি ঠিকানা পাঠিয়ে দিব। এবার তো যেতে দাও আমাকে? খুব দেড়ি হয়ে যাচ্ছে?একটু পর ভোর হয়ে যাবে তো।

আদ্র অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে মুচকি হেসে অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,

–আচ্ছা যা।

অনু দৌড়ে বাসায় চলে গেল।মেইন দরজাটা খোলাই ছিল। তাই অনু মেইন দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেল। তারপর অনু মেসেজ করে পল্লবের বাসার ঠিকানা আদ্রকে পাঠিয়ে দিল। আদ্র রাস্তায় এখনও দাঁড়িয়ে ছিল। আদ্রের ফোনে মেসেজ এলো। আদ্র মেসেজে পল্লবের ঠিকানা পেয়ে হাসল। হেসে নিজের বাসার পথে আদ্র রওনা হলো। অনুর খুব খুশি লাগছে। আদ্র যখন বলেছে বিয়েটা আটকাবে তারমানে যেভাবেই হোক বিয়েটা আটকিয়েই ছাড়বে।

পরেরদিন দুপুর বেলা। পল্লবের বাবা রেদোয়ান আহমেদ সোফায় বসে নিউজপেপার পড়ছিল। এমন সময় সোফার সামনের সেন্টার টেবিলে কতগুলো ছবি ছুঁড়ে ফেলা হলো। রেদোয়ান আহমদের চোখের চশমা ঠিক করে টেবিলের ছবিগুলোর দিকে তাকিয়ে চোখ বড়বড় করে অবাক হয়ে তাকাল। নিজের হাতের মধ্যে ছবিগুলো তুলে নিয়ে ভালো করে দেখতে লাগল। ছবির মধ্যে একটা মেয়ে আর একটা ছেলের ঘনিষ্ঠ দৃশ্য। ছবির মধ্যে একটা ছেলে একটা মেয়েকে চুমু দিচ্ছে। রেদোয়ান আহমদে অবাক হলেন কারণ ছবির মধ্যে মেয়েটি হলো অনু। এতক্ষণ রেদোয়ান আহমেদের খেয়ালও ছিল না যে সামনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। তিনি সামনে তাকিয়ে দেখল একটা লম্বা সুদর্শন ছেলে চোখে সানগ্লাস পড়ে ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রেদোয়ান আহমেদ ছবির ছেলেটির সাথে সামনে দাঁড়ানো ছেলেটিকে মিলিয়ে দেখল এটাই সেই ছবির ছেলেটা যে অনুর সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে ছবি তুলেছে। রেদোয়ান আহমেদ রেগে গিয়ে বলল,

–এই ছেলে কে তুমি? আর তুমি অনুর সাথে এমন ঘনিষ্ঠ ছবি তুলেছো কেন?

চোখের সানগ্লাস খুলে ছেলেটি হাসিমুখে রেদোয়ান আহমেদকে বলল,

–আংকেল আমার নাম সম্রাট হোসেন আদ্র। আমি অনুর বয়ফ্রেন্ড +অনুর স্বামী। তাই আমি অনুর সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে ছবি তুলতেই পারি। অনুর সাথে সব কিছু করার অধিকার আমার আছে।

রেদোয়ান আহমদের বসা থেকে উঠে চেঁচিয়ে বলল,

–কি সব বলছো তুমি?

আদ্র মুচকি হেসে বলল,

–আমি ঠিকই বলছি আংকেল। আমি হলাম অনুর একমাত্র বয়ফ্রেন্ড + অনুর একমাত্র স্বামী। কিন্তু আমার বউ অনুকে আপনার ছেলে পল্লব কেন বিয়ে করতে চাইছে আংকেল? শেষমেষ একটা বিবাহিত মেয়েকে কিনা আপনার ছেলের পছন্দ হলো?

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here