ভালোবাসি❤️,পর্বঃ১
Tanisha Sultana (writer)
খান বাড়ির সব লোকজন চুপচাপ বসে আছে। কারো মুখে কোনো কথা নেই। সবার মুখে চিন্তার ছাপ। আজ খান বাড়ির বড় ছেলে সায়ান খানের বিয়ে ছিলো। দশ বছর রিলেশন করার পরে সায়ান খান আর তার পালিয়ে যাওয়া প্রেমিকা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। তাদের এই সম্পর্ক দুই পরিবারের সবাই মেনে নিয়ে ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করেছিলো। কিন্তু শেষ মুহুর্তে মেয়েটা নিখোঁজ হলো।
বাড়ির সবার মাঝে সায়ানও বসে আছে। পুরো বাড়িতে মেহমান গিজগিজ করছে। নিরবতা ভেঙে আরমান খান (সায়ানের দাদা) উঠে দাঁড়ায়। তিনি বলেন
“তুলির সাথে সায়ানের বিয়ে হবে
ওনার কথায় সবাই ওনার দিকে তাকায়। ওনার এই কথাটা কেউ হজম করতে পারছে না। কারণ তুলির মাএ পনেরো বছর আর সায়ানের সাতাইশ বছর। এটা কি করে হয়।
বাবা আপনি এটা কি বলছেন (তুমির মা তাহমিনা বলে)
তুলির বাবা নেই। তুলির মা আর তুলির দায়িত্ব তুলির বড়বাবা (সায়ানের বাবা সাদাত খান) নিয়েছে।
” আমি ঠিকি বলছি বউমা। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই
“কি বাবা তুলি তো (সায়ানের মা সাইমা বলে)
” আহহ বউ মা। আর কেনো কথা নয়। তুলিকে সাজিয়ে নিয়ে আসো।
“দাদু আমি ওকে বিয়ে করবো না (সায়ান)
” আমিও একে বিয়ে করবো না (তুলি)
“আমি কারো সিদ্ধান্ত জানতে চাই নি। আমি যা বলেছি তাই হবে
আরমান খান চলে যায়। সায়ান ওর বাবাকে বলে
” বাবা তুমি কিছু করো
“সায়ান প্লিজ৷ যা করার তুমি করেছো এবার অন্তত একটু শান্তি দাও
সাদাত খানও চলে যায়। তুলিকে নিয়ে যায় সাজাতে।
খুব ভালোভাবে সায়ান আর তুলির বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়। বাসর ঘরে বসিয়ে দিয়ে গেছে তুলিকে সায়ানের বোন আর কিছু কাজিন মিলে।
একা বসে তুলি বোর হচ্ছে তার ওপর আবার ভারি ভারি গহনা আর লেহেঙ্গা।
” এগুলো এবার খুলে ফেলা উচিৎ। কিন্তু এগুলো খুলে কি পরবো? আর মা আজ আমাকে একা ছাড়লো। আমি একা ঘুমোবো কিভাবে?
এসব ভাবছে আর পরার মতো কিছু খুজছে। অবশেষে সায়ানের একটা সাদা শার্ট পরে আর টাইস। গহনা লেহেঙ্গা একপাশে রেখে ঘুমানোর জন্য বেডে বসে তখন দরজা খোলার শব্দ পায়। তুলি উঠে দাঁড়ায়।
সায়ান ভেতরে ঢুকে তুলির দিকে তাকিয়ে দেখে ওর শার্ট পরে আছে। এমনিতেই সায়ানের মাথাটা গরম তার ওপর আবার নিজের শার্ট তুলির গায়ে দেখে আরও রেগে যায়। তুলি তো ভয়ে শেষ। কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
“তুই আমার শার্ট কেনো পরেছিস?
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সায়ান। তুলি তুতলিয়ে বলে
” আআআআসলেে
সায়ান ধমক দিয়ে বলে
“আসলে নকলে বুঝাতে আসবি না। তোর সাহস হয় কি করে আমার শার্ট পরার। আর কখনো যদি দেখি তো মেরে ফেলবো। আর তুই আমার ঘরে কেনো??
” আআআমাকে এখানে থাকতে বলেছে
“তোকে এখানে থাকতে বললো আর তুই ও নাচতে নাচতে চলে এলি
” আমি তো নাচতে নাচতে আসি নি। হেটে হেঁটে এসেছি
“চুপপ। খুব বেয়াদব হয়েছিস। মুখে মুখে আবার তর্ক করছিস।
তুলি এবার কেঁদে ফেলে। কিন্তু শব্দ না করে কাঁদে। সায়ান বালিশ নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়। তুলি মুখ ভেংচি কেটে বিছানায় শুয়ে পরে।
বেলকনির দোলনায় আধশোয়া হয়ে সায়ান সিগারেটের ধোয়া উরাচ্ছে।
সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভেঙে তুলির। গুম ঘুম কন্ঠে বলে
” কি হয়েছে মা ডাকছো কেনো?
“ডাকছি কেনো? কতো বেলা হয়েছে সে খেয়াল আছে। সায়ান তো কখন উঠে বেরিয়ে গেছে
” ধুর মা ওই সায়ান ফায়ানের কথা বলো না তো।
“কেনো বলবো না? ও তোর স্বামী
” আমার থেকে গুনে গুনে তেরো বছরের বড়। ওই বুইরা খাটাশ কি করে স্বামী হয়
“তুলি এমন কথা যেনো আর কখনো না শুনি। স্বামীকে সম্মান করতে শেখো
তুলির মা চলে যায়। তুলি ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়। সবাই যে যার কাজে বিজি। তুলি খাবারের থালাটা নিয়ে টিভি অন করে মটুপাতলু কার্টুন দেখছে আর খাচ্ছে। হঠাৎ দেখে সায়ান বড় একটা লাকেজ হাতে নিয়ে বেরুচ্ছে
” কোথায় যাচ্ছ?
চলবে….