ভালোবাসি,পর্বঃ৬,৭

0
3739

ভালোবাসি,পর্বঃ৬,৭
Tanisha Sultana (Writer)
পর্বঃ৬

আজ তুলির শরীরটা খুব খারাপ লাগছে। স্কুল থেকে আসার পরেই নিজের রুমে শুয়ে ছিলো। আজ আর রান্না করতে যায় নি। ওভাবেই ঘুমিয়ে পরে।
সায়ান অফিস থেকে ফিরে রান্না করে। তারপর গোছল করে ডিনার করে নিজের রুমে গিয়ে কাজ করতে থাকে।
রাত দশটায় তুলির ঘুম ভাঙে কিন্তু খুব খারাপ লাগছে। শরীর গরম। তুলি বিছানা থেকে নেমে সায়ানের রুমে যায়। দাঁড়ানোর শক্তি নেই। তুলির উপস্থিতি টের পেয়ে সায়ান পেছনে না তাকিয়ে বলে

“তুই আমার রুমে কেনো এসেছিস? যা এখান থেকে।

” আমার খুব খিদে পেয়েছে কিছু খেতে দেন না

অসুস্থ কন্ঠে বলে তুলি। সায়ান তুলির দিকে তাকায়। তুলি ঢুলে পরছে

“কি হয়েছে তোর?

তুলি কিছু বলতে পারে না। পরে যেতে নেয় সায়ান ধরে ফেলে

” এর তো প্রচন্ড জ্বর।
সায়ান তুলিকে সায়ানের বিছানায় শুয়িয়ে দেয়। তুলির মাথায় জলপট্টি দেয়। জ্বরটা একটু কমলে খাবার নিয়ে আসে। তুলিকে খায়িয়ে ঔষুধ খাইয়ে দেয়।

সায়ান তুলির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। অপুর্ব সুন্দর মেয়েটা। এর চোখে মুখে প্রচন্ড মায়া। তখন সায়ানের ফোন বেজে ওঠে

“হেলো

” কি করো

“কিছু না

” আমাকে জিজ্ঞেস করবে না

“জানার প্রয়োজন মনে করি না

” সায়ান তুমি

“মায়া আমার লাইফ থেকে চলে যাও প্লিজ। একটু ভালো থাকতে দাও না আমায়। একটু শান্তিতে থাকতে চাই আমি

সায়ান ফোন কেটে দেয়। ফোনটা আছার মেরে ভেঙে ফেলে। তারপর আবার তুলির মুখের দিকে তাকায়।

সকালে তুলির ঘুম ভাঙতে নিজের ওপর ভারি কি অনুভব করে তুলি। চট করে চোখ খুলে দেখে সায়ান তুলিকে ধরে শুয়ে আছে। সায়ানের মুখটা তুলির মুখের খুব কাছে। তুলি তারাহুরো করে সরে যায়। সায়ানের ও ঘুম ভেঙে যায়।

” আপনি আমাকে কেনো টাচ করলেন?

সায়ান বসে বলে

“তোকে বলতে হবে

” হ্যাঁ হবে

“তোর জ্বর হয়েছিলো

” তো

“তো মানে

” আমার জ্বর হোক বা আমি মরে যায় তাতে আপনার কি? আপনাকে সিনপেথি দেখাতে কে বলছে

এটুকু কথা বলে তুলি সায়ানের দিকে তাকিয়ে ভয় পায়। কারণ সায়ান অসম্ভব রেগে গেছে

“কি বললি তুই আমার কি

দাঁতে দাঁত চেপে বলে সায়ান। তুলি ঢোক গিলে সাহস জুগিয়ে বলে

” ঠিক ই তো বললাম আপনার কি

সায়ান বিছানা থেকে নেমে তুলির দিকে এগিয়ে যায়। তুলি দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। সায়ান দরজা ধাক্কিয়ে বলে

“খোল বলছি

” আমারে কি পাগল পাইছেন না কি? স্বেচ্ছায় সিংহের সামনে দাঁড়াবো

সায়ান দরজার আড়ালে একটু দাঁড়িয়ে চলে যায়। একঘন্টা পরে তুলি বের হয়। ততোখনে সায়ান অফিসে চলে যায়।

আজ আর তুলি স্কুলে যায় না। বাড়িতে বসে আছে। একা একা ভালো লাগছে না। পুরো বাড়ি ঘুরে দেখছে। পরে সায়ানের রুমে যায়। সায়ান আজকে ভুলে আলমারি খুলে রেখে গেছে। তুলি সায়ানের আলমারির সামনে একটা ওড়না দেখে এগিয়ে যায়। ওড়নায় মুরানো অনেক অনেক ছবি একটা খাতা অনেক গুলো চিঠি। তুলি ওগুলো বিছানায় রাখে।

সায়ান আর মায়ার ছবি সব। দুজনের মুখেই হাসি। সায়ানের হাসি মুখ দেখে তুলির ভালো লাগে। তারপর চিঠি গুলো দেখে। সব গুলো চিঠি মায়ার লেখা। আর খাতাটা দশ বছর আগের। সায়ানের লেখা মায়াকে নিয়ে কত কথা।

“সায়ান ভাইয়া মায়া আপুকে এতো ভালোবাসে। তাহলে মায়া ওনাকে ঠকালো কেনো? এরকম একটা মানুষের সাথে কেনো এমন করলেন?

তুলি সব কিছু সুন্দর করে গুছিয়ে রাখলো। তারপর নিজের রুমে চলে গেলো

” সায়ান আসবো

“হুম আয়

আকাশ সায়ানের পাশে চেয়ার টেনে বসে। সায়ান ফাইল দেখায় বিজি

” সায়ান মায়াকে কিছু বলছিস না কেনো?

“কি বলবো?

” কি বলবি মানে? তুই মেরিড। তুলি তোর বউ। মায়ার পাগলামিতে তুই কেনো সায় দিচ্ছিস

“আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে শুনতে চায় না

” সায়ান

“তুই আসতে পারিস

আকাশ বেরিয়ে যায়। সায়ান কাজে মন দেয়। তখন মায়া ঢোকে

” সায়ান

“তুমি এখন এখানে কেনো?

” আমি একটু শপিং এ যাবো। তাই তোমাকে নিতে এসেছি

“আমি বিজি

” প্লিজ চলো না। আমরা তো বেস্টফ্রেন্ড। চলো না।

মায়া জোর করে সায়ানকে নিয়ে যায়।

প্রভা আসে তুলির কাছে। একসাথে শপিং এ যায়।

শপিং মলে এসে তুলি সায়ান আর মায়াকে দেখে আড়ালে যায়। মায়া হাজারটা ড্রেস দেখছে আর সায়ানকে দেখাচ্ছে

“এই তুলি এদিকে আসলি কেনো?

” প্রভা আমি বাসায় যাবো

“কিন্তু

” প্লিজ ভাল্লাগছে না

ওরা বাসায় চলে যায়।

আজ বিকেলেই সায়ান বাসায় আসে। তিনজন ফ্রেন্ড নিয়ে আসে। বাড়ির সামনে তুলি ওর সমবয়সী কয়েকজন ছেলের সাথে ফুটবল খেলছে। থ্রীকোয়াটার প্যান্ট আর টিশার্ট পরা।সায়ান বাসায় ঢোকার আগে তুলিকে দেখে দাঁড়িয়ে পরে।

“সায়ান কি হলো? (শুভ)

” তোরা ভেতরে যা আমি আসছি।

সায়ান তুলির কাছে যায়।

“ওই

সায়ানের ধমক মারা ডাকে তুলি থেমে যায়।

” বাসায় যা

তুলি দৌড়ে চলে যায়। সায়ান ওর পিছনে যায়। সায়ানের ফ্রেন্ডরা দাঁড়িয়ে দেখছিলো।

সোফায় বসে আছে সায়ান আর ফ্রেন্ডরা

“সায়ান তোর বউ তো বাচ্চা (রনি)

” বউ তো বউ ই। আর সায়ান আমাদের বড় তো ওর বউকে আমাদের সম্মান দিয়ে ভাবি বলা উচিৎ (আকাশ)

ওরা হেসে ওঠে

“এই পিচ্চিকে ভাবি বলবো ইম্পসিবল (শুভ)

তুলি ওদের জন্য কফি নিয়ে আসে। সবাই তুলির দিকে তাকিয়ে আছে। সায়ানের খুব রাগ হচ্ছে। ওর ফ্রেন্ড দের কিছু বলতে পারছে না। কারণ ওদের কি দোষ। ওড়না ছাড়া টিশার্ট আর থ্রিকোয়াটার প্যান্ড পরে ওদের সামনে এসেছে।

” ওই তোকে কফি বানাতে কে বলেছো

চেচিয়ে বলে সায়ান। তুলি আমতাআমতা করে

“আসলে

সায়ান ঠাস করে তুলির গালে চর বসিয়ে দেয়। তুলি ছিটকে পরে যায়। টেবিলের সাথে লেগে মাথা কেটে যায়। ওর বন্ধুরা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে

” ওকে মারলি কেনো তুই?

আকাশ বলে। আকাশ তুলিকে ধরে ওঠায়। তুলি কান্না করছে। সায়ান মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আকাশ ওর রুমাল দিয়ে তুলির কপাল মুছাতে যায়। তুলি বাধা দেয়

“তুলি আমি তোমার ভাইয়ের মতো। সায়ানকে আমি ভাইয়া বলি তো তুমি আমার ভাবি। ভাবির একটু যত্ন তো করতেই পারি।

আকাশ কপালটা পরিষ্কার করে দেয়। তুলি নিজের রুমে চলে যায়। ওভাবেই কান্না করতে থাকে। সায়ান তুলিকে দেখতে আসে না।

পরেরদিন তুলি হেঁটে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছে। একটা গাড়ি তুলির খুব কাছ দিয়ে ঘেসে যায়। তুলি চিৎকার দিয়ে বসে পরে। গাড়িটা থেমে যায়। গাড়ি থেকে একটা লোক নেমে আসে।

লোকটা তুলির সামনে দাঁড়িয়ে স্তব্ধ হয়ে যায়। মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলে। কি বলবে বুঝতে পারছে না। লোকটা তুলির কাছে হাটু গেরে বসে তুলির মুখে হাত দিতে গেলে তুলি তারাহুরো করে উঠে ওরে। লোকটাও উঠে দাঁড়ায়।

” কেমন আছো তুলি?

তুলি লোকটার দিকে তাকিয়ে আছে। এই মানুষটাই তুলির বাবা। দশ বছর বয়সে শেষ দেখেছিলো তুলি তুলির বাবাকে। পাঁচ বছর পরে আবার দেখছে। তুলির কান্না পাচ্ছে। ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকায় তুলি।

“খুব ভালো আছি।

তুলি চলে যেতে নেয়

” মামনি

“স্টপ। আমি আপনার মামনি না। আমি তুলি। শুধু আমার মায়ের তুলি। আমার বাপি মারা গেছে। আর কখনো আমার সামনে আসবেন না। আই হেট ইউ

চলবে

ভালোবাসি
পর্বঃ৭
Tanisha Sultana (Writer)

“তুলি দাঁড়াও। আমার কথাটা শুনো

তুলি আর পেছন ঘুরে তাকায় না। দাঁড়ায় ও না। হাত দিয়ে চোখের পানি মুছছে আর হাঁটছে। আজ আর ক্লাসে যেতে ইচ্ছে করছে না। তাই স্কুলের পাশে একটা পুকুর পারে বসে আছে তুলি।

” তুলি

পেছনে ঘুরে দেখে রিক দাঁড়িয়ে আছে। তুলি আবার পুকুরের দিকে তাকায়। রিক তুলির পাশে এসে বসে। তুলির হাত ধরে

“কি হয়েছে তুলি? আমাকে বলতে পারো

“……..

” আমি তো ফ্রেন্ড। আর ফ্রেন্ডের সাথে সব শেয়ার করায় যায়।

“…….

” তুলি তোমার কপালে কি হয়েছে? বলো না আমায়।

তুলি এবার শব্দ করে কেঁদে ফেলে। রিক তুলিকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। তুলি ইচ্ছে মতো কাঁদছে। রিক বাধা দিচ্ছে না। কাদুক না। কাঁদলে কষ্ট কমে।

“তুলি কি হয়েছে? কেউ কিছু বলেছে? কাল তো তোমাদের গার্ডিয়ান নিয়ে আসতে বলেছে স্কুল থেকে। তা নিয়ে কোনো পবলেম

তুলি এবার রিকের বুক থেকে মাথা তুলে। হেঁচকি তুলে বলে

” আমি বাড়ি যাবো

“বলো না কি হয়েছে তোমার?

” কিছু হয় নি

তুলি উঠে দাঁড়ায়।

“তুলি

” প্লিজ স্যার ভালো লাগছে না আমার

তুলি চলে যায়। রিক বুঝতে পারছে না মেয়েটার কি হয়েছে।

বাসায় ফিরে তুলি দেখে সায়ান রান্না করছে আর মায়া আকাশ শুভ ওরা সায়ানকে হেল্প করছে। তুলি সেদিকে না তাকিয়ে নিজের রুমের দিকে হাঁটা শুরু করে

“তুলি

সায়ানের ডাকে তুলি দাঁড়ায়।

” এতো তারাতাড়ি স্কুল থেকে চলে এলি যে। আর তোর চোখ মুখ এমন ফোলা ফোলা লাগছে কেনো? কি হয়েছে তোর?

তুলি রুমে ঢুকে জোরে দরজা আটকে দেয়। সায়ানের সাথে কথা বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই তুলির। আয়নার সামনে দাঁড়ায় তুলি।

“আমি কেনো কাঁদবো? একদম কাঁদবো না আমি। আমার বাবা মারা গেছে। আমাকে বড় হতে হবে। নিজেকে তৈরি করতে হবে।

একা একা কথা গুলো বলে। ওয়াশরুমে চলে যায় তুলি। একঘন্টা সাওয়ার নেয়। নীল একটা থ্রি পিছ পরে। খুব খিদে পেয়েছে। কিন্তু রান্না না করলে তো আর পেটে খাবার যাবে না। কিচেনে চলে যায়। সায়ান আর ওর ফ্রেন্ডরা কিছু একটা নিয়ে আলোচনা করছে আর খাচ্ছে। তুলি ওদিকে পাত্তা না দিয়ে রান্নায় মনোযোগ দেয়।

তুলির ফোনটা বেজে ওঠে। ফোন বাজার শব্দে সবাই তুলির দিকে তাকায়। তুলি ফোনটা নিয়ে ছাঁদের দিকে চলে যায়

” হেলো স্যার বলেন?

“কি করে আমার বিউটিকুইন

“কিছু না। আপনি

” তোমার কথা ভাবছি।

“আমার কথা

” হুম

“বাট কেনো?

” তুমি বুঝো না কেনো?

“নাহহহ

” আই লাভ ইউ

“আই লাইল ইউ বাট ডোন্ট লাভ

” তুমি তো এখনো ছোট। তাই লাইক ই ঠিক আছে। বড় হও তারপর না হয় লাভ করো

“স্যার আমি মেরি

” তুলি

পেছন থেকে সায়ানের কন্ঠ শুনে তুলি পেছনে তাকায়।

“পরে কথা বলছি

রিকের ফোন কেটে দেয় তুলি। সায়ানকে পাশ কাটিয়ে যেতে নেয়। সায়ান তুলিকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে

” ছাড়ুন আমাকে

“কার সাথে কথা বলছিলি

” যার সাথেই বলি তাতে আপনার কি?

কথাটা শেষ হওয়ার আগেই সায়ান তুলিকে ছাঁদের শেষ পান্তে নিয়ে আসে।

“আর কখনো বলবি আমার কি?

তুলি ভয় পেয়ে যায়।

” নাাা

“মনে থাকে যেনো

সায়ান তুলিকে ছেড়ে দেয়। তুলি হাফ ছেড়ে বাঁচে

” কার সাথে কথা বলছিলি

“কাল আমার স্কুলে গার্ডিয়ান নিয়ে যেতে বলেছে। তো আপনি যদি

” তোর মনে হয় আমি যাবো তোর সাথে? কখনো না। নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে শেখ

তুলি মাথা নিচু করে বলে

“সরি।

তুলি চলে যায়।

নিচে নামতেই আকাশ ডাক দেয়

” তুলি ভাবি

তুলি এগিয়ে যায়

“হুম ভাইয়া বলেন

” বসো না আমাদের সাথে আড্ডা দেই

“নাহহহ। ওর আড্ডা দিতে হবে না। রুমে যা তুই

পেছন থেকে সায়ান কথাটা বলে

” আকাশ ভাইয়া পরে কোনো সময় আমরা দুজন আড্ডা দেবো ঠিক আছে

তুলি হাসি মুখে বলে আকাশকে। আকাশ ও একগাল হেসে তুলির কাছে নাম্বার চায় তুলিও দিয়ে দেয়। সায়ান তো রেগে আগুন হয়ে আছে।

রাতে তুলি পরছে। তখন কোথা থেকে সায়ান এসে তুলির হাত থেকে বই ফেলে দেয়

“পবলেম কি আপনার

” তোর সমস্যা কোথায়? আকাশের সাথে কিসের এতো কথা তোর।

“কোথাও পোরা পোরা গন্ধ পাচ্ছি

” বাজে কথা বন্ধ কর

“বাজে কথা কই বললাম।

” আকাশের সাথে বেশি কথা বলবি না

“কই আমি তো আপনাকে বলি না মায়া আপুর সাথে কথা বলবেন না

” আমি মায়ার সাথে কথা বলি তাতে তোর কি

“সেম টু ইউ। তাছাড়া ও আকাশ ভাইয়া খুব ভালো মানুষ

” তোর কাছে আকাশের সার্টিফিকেট চাই নি।

“দিচ্ছি ও না। আমি পড়বো আপনি যেতে পারেন।

সায়ান তুলির দিকে ঝুকে বলে

” আমার কথার বাইরে যাবি না। তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে

সায়ান তুলির হাতে বই দিয়ে চলে যায়। তুলি পরায় মনোযোগ দেয়।

সন্ধায় তুলি কফি খাচ্ছে বেলকনিতে বসে। তখন সায়ান হাতে একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে তুলির রুমে ঢোকে

“তুলি

” কান খোলা আছে

“তৈরি হয়ে নে। বেরোবো

” আমি যাবো না

“তুলি

” চিৎকার করছেন কেনো? আপনি খুব বাজে। আমাকে আবার একা ফেলে চলে আসবেন।

“তুলি আমি টেন কাউন্ট করবো। এরমধ্যে যদি রেডি হতে না যাস তো তোর একদিন কি আমার একদিন

” সব সময় এমন পেচা হয়ে থাকেন কেনো? করলার মতো কথা বলেন সব সময়। বলি একটু কি হেসে কথা বললে কি আপনার ফাঁশি হয়ে যাবে না কি? যত সব

তুলি শপিং ব্যাগটা নিয়ে সায়ানকে ভেংচি কেটে চলে যায়।

হলুদ লেহেঙ্গার কাঁচা ফুলের গহনা দারুণ লাগছে তুলিকে। সায়ান চুল ঠিক করছিলো

“চলুন

সায়ান তুলির দিকে চেখ আটকে যায়। এতো সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে

” এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?

“এতো সেজেছিস কেনো?

” সেজেছি তো

“সাজতে কে বলেছে

” সাজতে কারো পারমিশন লাগবে জানা ছিলো না

“আর কখনো সাজবি না

” ঠিক আছে যাবো না

“চল

সায়ান তুলির হাত ধরে যায়।

আজ শুভোর গাঁয়ে হলুদ। বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। সায়ান আর তুলি শুভোদের বাড়িতে ঢুকছে তখন কোথা থেকে মায়া এসে সায়ানকে জড়িয়ে ধরে।

তুলি বিরক্ত হয়ে মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে। মায়া পাতলা একটা হলুদ শাড়ি পরেছে। শরীরের পঞ্চাশ ভাগ দেখা যাচ্ছে

” আমাকে কেমন লাগছে সায়ান?

“মায়াপু এভাবে জাপটে ধরে থাকলে দেখবে কি করে? আর না দেখলে বলনে কি করে

মায়া সায়ানকে ছেড়ে দেয়। তুলি দাঁত কেলিয়ে সায়ানের দিকে তাকায়।

” এবার বলো সায়ান

“ভাইয়া ভালো করে দেখে বলেন

সায়ান রাগী চোখে তুলির দিকে তাকায়।

” ভালো

“শুধু ভালো

“অনেক ভালো

” তুলি তোমাকে জাস্ট ওসাম লাগছে। আমি তো চোখই ফেরাতে পারছি না।

কারো কথায় তুলি সায়ান মায়া পেছনে তাকায়। মানুষটাকে দেখে তুলির মুখে হাসি ফোটে। কিন্তু সায়ানের খুব রাগ হয়। হাত মুঠ করে ফেলে সায়ান।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here