অপেক্ষা ১

0
4817

ভার্সিটির গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি।আজকের দিনটা আমার জন্যে অনেক স্পেশাল।নিজের স্বপ্নের ভার্সিটিকে প্রথম বারের মত সামনাসামনি ভাবে দেখতে পারব।সেই সাথে হালকা একটা ভয়ও কাজ করছে।খুব বেশি সময় নেই আর হাতে। মাত্র মাস খানেক বাকি আর।তারপর এডমিশন টেস্ট নামক অগ্নিপরীক্ষা। জানিনা ভাগ্য আমাকে কোথায় নিয়ে যাবে কিন্তু আমি যথাসাধ্য চেস্টা করেছি।রাত দিন এক করে পড়াশুনা করেছি যাতে এই ভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পাই।
বই খাতায় মাথা গুজে যখন আমি জ্ঞান চর্চায় ব্যস্ত বাবা রুমে এসে বললেন
-মা জনিস তো শুধু বই পড়লেই জ্ঞান বাড়ে না। কখনো চোখে দেখা জিনিসও জ্ঞান বাড়ায়।এইভাবে শুধু বই পড়া মানে মরিচীকার পেছনে ছোটা।তার চেয়ে বরং চল ভার্সিটি ঘুরে আসি।নিজের বহুদিনের লালন করা স্বপ্নকে পূরনের সুযোগ তাই আর হাতছাড়া করতে পারিনি।নির্ধারিত দিনে বাবা মা আর দুই বান্ধবীমিলে হাজির হলাম সেই স্বপ্নের ঠিকানায়। ঠিক যতটা ভেবেছিলাম তার চেয়েও অনেক বেশি সুন্দর জায়গাটা পুরোটাই যেন স্বপ্নের মত। সদ্য ফোটা ফুলের উপর মৌমাছির মত নেচে বেরাচ্ছি আমরা। কখনো বা মুগ্ধ চোখে দেখছি কখনো বা ছবি তুলা নিয়ে পাগলামি করছি।ঘুরতে ঘুরতে আব্বু আম্মু এক পর্যায়ে হাপিয়ে উঠলেন।তবুও আমাদের দেখা যেন শেষই হয় নি।এক পর্যায়ে আম্মু বলে উঠলেন
-এই তোরা যা বাকিটা ঘুরে আয়।আমরা একটা টং এ বসে ততক্ষনে চা খাই।
আম্মুর কথা শুনে আমাদের যেন খুশি আর ধরে না!একটা বিল্ডিং এর সামনে গিয়ে দেখি বড় হল রুমে একজন টিচার ভাষন দিচ্ছেন।হয়তো বা কোন সম্মেলন বা কোন সমাবেশ হচ্ছে।সবাই যে যার মত গিয়ে বসে যাচ্ছে।কোন বাধ্য বাধকতা নেই।জিনাত আমার হাত ধরে বলল
-এই কায়া চল ভেতরে যাই।
আমি চোখ বড়বড় করে বললাম
-মাথা খারাপ!এইটা ভার্সিটির স্টুডেন্টদের জন্যে।ধরা পরলে শেষ সব।
আনি বলল
– আরে ধরা কেন পরবি?বলব যে আমরা এই ভার্সিটিরই স্টুডেন্ট।
-আর আইডি কার্ড দেখতে চাইলে?
ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলাম আমি।
জিনাত হালকা বিরক্তি নিয়ে বলল
-বলব যে বাসায় রাখে আসছি তাড়াহুড়োয়।এখন তো চল।
আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে দুজনেই রেগে গেল।
-তুই যাবি না তো?থাক তাহলে এখানে।এই আনি চল তো।
বলেই জিনাত আনির হাত ধরে সুন্দর রুমের ভিতর ঢুকে গেল।
আমি এখনো দোটানায় পড়ে আছি ভেতরে যাব কিনা।জিনাত আর আনির পরে অনেকেই আমাকে ক্রস করে রুমে ঢুকেছে।সবাই গিয়ে সুন্দর মত বসে যাচ্ছে।ধীরে ধীরে পুরো রুমটাই লোকারন্য হয়ে যাচ্ছে।জিনাত আর আনি আমাকে ইশারা করছে ভেতরে যাওয়ার জন্যে।চোখে বন্ধ করে বুক ভরা নিশ্বাস নিলাম আমি।এখন হালকা সাহস আসছে মনে।জিনাত আর আনি আমার জন্যে জায়গা রেখেছিল।কিন্তু আমি গিয়ে পৌছানোর আগ মুহুর্তেই একজন এসে সেই জায়গায় গিয়ে ধুপ করে বসে পড়ল।মাথা তুলে দেখি প্রায় সবগুলো সিটই ফিলাপ হয়ে গেছে।লাস্টের দিকে কোনে একটা সিট এখনো ফাকা আছে।কেউ বসার আগেই আমি এগিয়ে গিয়ে সেখানে বসে পড়লাম।তবে বসাটা খুব বেশিক্ষন স্থায়ী হল না। মিনিট পাচেক এর মধ্যেই এক দলছেলে লাঠি চাকু নিয়ে রুমে ঢুকল।চারদিকে হই হই রৈ রৈ পড়ে গেল।ছেলেগুলো চেয়ার টেবিল ভাঙা শুরু করেছে।সবাই যে যার মত ছুটে চলছে।কে কোন দিকে যাচ্ছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। আমি হা হয়ে নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি।মাথা উচিয়ে দেখি জিনাত আর আনি তাদের জায়গায় নেই। ভীড়ের মধ্যে তারা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।চোখ ফিরিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি একজন গুন্ডা টাইপ ছেলে হকি স্টিক হাতে এগিয়ে আসছে আমার দিকে।পেছনে ফিরতে গিয়ে দেখি দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।ছেলেটা আমাকে মারার জন্যে হকি স্টিক তুলতেই আমি দুহাতে মুখ ঢাকলাম।
কয়েক সেকেন্ড নিরবতার পর শুনতে পেলাম কেউ একজন বলে উঠলেন
-কতবার বলছি মেয়ে আর বাচ্চাদের গায়ে হাত তুলবি না! যা এখান থেকে৷
চোখ খুলে দেখি আমার সামনে সাদা পাঞ্জাবী পড়া একজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছেন।আমার দিকে ফিরে বললেন
-সবাই পালাচ্ছে আর তুমি বলদের মত এইখানে দাঁড়ায় আছ কেন?ভয় পাওয়ার দরকার নাই। চল এখান থেকে।
ছেলেটা আমার হাত ধরে সুন্দরমত হল রুম থেকে বের করে আনল।কিন্তু সেই হাত ধরা গেট পর্যন্তই স্থায়ী হল।গেটের বাইরে আসা মাত্রই এমন একটা ভাব যেন আমাকে সে চিনেই না।আমার হাত ছেড়ে দিয়ে সে বুক পকেট থেকে একটা সানগ্লাস চোখে এটে সামনের দিকে পা বাড়াল।তার পিছু নিল দুজন চামচা টাইপ ছেলে।
আশেপাশের সবাই ছোটাছুটি করছে।জিনাত আর আনি কোথায় আছে জানি না। আব্বু আম্মুকে খুজতে হবে আমার।তার আগে আমাকে এই বিল্ডিং থেকে বের হতে হবে।কিন্তু কোনদিকে যাব তাও জানিনা।অগ্যতা সেই সাদা পাঞ্জাবী পড়া ছেলেটার পিছু নিলাম। কিছুদূর এগোতেই সিড়ি দেখতে পেলাম।এই সিড়ি বেয়েই আমরা বিল্ডিং এ ঢুকেছিলাম।চুপচাপ হাটছি এমন সময় কানে ভেসেএল একজন চামচা টাইপ লোক ছেলেটাকে বলছে
-বস সাদা পাঞ্জাবীতে আপনাকে পুরাই হিরো লাগতাছে।
পাশের কালো মত ছেলেটা আরেকটু মাখন মেরে বলে উঠল
-আরে কি বলিস বসরে সব রংগেই হিরো লাগে।
ছেলেটার কথা শুনে খুব হাসি পেল আমার।কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলাম।
-সব রঙ সবাইকে মানায় না।হলুদে ক্ষ্যাত লাগবে কালোতে পার্ফেক্ট মানাবে।
খুব আস্তে সাদা পাঞ্জাবী পড়া ছেলেটার কাছ ঘেষে শুধু এতটুকু বলেই পাশ কাটিয়ে চলে আসলাম।
.
.
সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে দেখি একই অবস্থা।চারদিক জুড়ে হৈচৈ চিল্লাচিল্লি।প্রধান ফটকের দিকে আগাতেই দেখি সেখানে বড় একটা তালা ঝুলছে।তার মানে এখন বের হবার কোন উপায় নেই।কি করব এখন আমি!কোথায় যাব?আমার কাছে ফোনো নেই ।
নানা রকম চিন্তায় যখন আমি সন্ধিহান কাধের মধ্যে কারো স্পর্শ পেয়ে আমি পেছন ফিরে তাকালাম।একজন হিজাব পড়া আপু আমার দিকে কৌতুহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
-এই মেয়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছ কেন?এখানে থাকা সেফ না। চল আমার সাথে।
আমি কিছু বলার আগেই আপু আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলেন।
.
.

হোস্টেলে আপু আমাকে নিজের রুমে নিয়ে আসলেন।রুমটা ছোট আর জিনিসপত্রে ঠাসা হলেও বেশ গোছানো।আপু আমাকে উনার ্বেডের উপরে বসতে বললেন।
-কোন ডিপার্টমেন্ট এ তুমি?ফার্স্ট ইয়ার?
হিজাব খুলতে খুলতে জিজ্ঞেস করলান আপু।
আমি কিছু বলার আগেই একদল লোক হুরমুড় করে রুমে ঢুকে গেল।হঠাত করে মানুষজনকে আসতে দেখে আমি আর আপু দুজনেই চমকে গেলাম।চোখ তুলে তাকিয়ে দেখি সেই সাদা পাঞ্জাবি পড়া ছেলেটা তার তার চামচা দুজন এসেছেন।তখন ভীড়ের মধ্যে উনাকে ভালো করে দেখতে পারিনি।কিন্তু এখন সামনাসামনি দেখে আমি পুরোই হা হয়ে গেলাম।দুধে আলতা চেহারা।চোখ দুটোর উপরে কালো চশমার পাহারা বসানো।চশমাটা খুলে সরু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে সে।
পেছন থেকে আপু বলে উঠলেন
-রেওয়াজ তুই এখানে কি করছিস?
-দিপা তুই একটু বাইরে যা।ওর সাথে আমার একটু কথা আছে।
-কিন্তু রেওয়াজ….।ওকে এইভাবে একা….?
-চিন্তা করিস না।মেয়েদের সম্মান করতে জানি আমি।
আপু কোন কথা না বলে চুপচাপ বের হয়ে গেলেন।উনি এখনো এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন ।এখন খানিকটা ভয় লাগছে আমার।উনি তো আমাকে চিনেন না ।তাহলে আমার সাথে উনার কি কথা থাকতে পারে!
-তখন কি বলেছিলে জানি?
বাম হাতে পাঞ্জাবির বোতমগুলো খুলতে খুলতে আমার দিকে আসছেন উনি।
আমি ভয়ে জড়সড়ো হয়ে কাপা কাপা গলায় উত্তর দিলাম
-ক…ক…..কই??কিছু বলিনি তো।
-হলুদে আমাকে মানায় না তাই না?
-না…না…না…তো।মানায়।মানে আমি জানি না।
উনি হালকা হেসে নিজের পাঞ্জাবিটা খুলে ফেললেন।আমার দিকে বাড়িয়ে বললেন
-ধর এটা।
আমি কোন কথা না বলে চুপচাপ হাত বাড়িয়ে পাঞ্জাবিটা নিলাম।উনি পেছনে হাত বাড়াতেই একজন চামচা টাইপ লোক উনার দিকে একটা হলুদ পাঞ্জাবি বাড়িয়ে দিল।চোখের নিমিষেই পাঞ্জাবিটা পড়ে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালেন।এদিক ওদিক ঘুরে আয়নায় নিজেকে ভালো করে দেখে বললেন
-মন্দ বল নি।Yellow doesn’t suit me.
কথাটা বলেই আবার হলুদ পাঞ্জাবীটা খুলে ফেললেন।হাত বাড়াতেই আবার আগের লোকটা হলুদ পাঞ্জাবিটা নিয়ে একটা কালো শার্ট এগিয়ে দিল।
উনি শার্টটা পড়ে আরেক দফা আয়নায় নিজেকে দেখলেন।আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে বললেন
-মানতে হবে চয়েস আছে তোমার।কোন ইয়ারে তুমি?আর কোন ডিপার্ট্মেন্ট?
উনার কথার কোন জবাব আমার কাছে নেই।আমি সুন্দরমত মাথা নামিয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকলাম।
-কি হল কথা বলছ না কেন?
-জ্বি…জ্বি…আমি আসলে…..
-তোতলামি ছাড় সোজা সুজি উত্তর দেও।
-আমি এই ভার্সিটির না।আমি এডমিশনের স্টুডেন্ট।এই ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা ছোট থেকেই তাই আব্বু আম্মু আর ফ্রেন্ডদের সাথে ভার্সিটি ঘুরতে এসেছি।
এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে থামলাম আমি।
চোখ তুলে দেখি উনি হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
-চল আমার সাথে।
বলেই উনি আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলেন।আমি জানি না কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন উনি আমাকে ।কিন্তু উনার সাথে যেতে মন্দ লাগছে না ।উনি একে একে আমাকে পুরো ভার্সিটি ঘোরালেন।হঠাত করে চোখ পড়ল একটা পুকুরের কাছে।পুকুরের ঘাটটা বাধানো আছে অনেকগুলো সিড়ি দিয়ে।দূর থেকেও দেখা বোঝা যাচ্চগে পুকুরটা বেশ গভীর।আমি এগিয়ে যেতেই একজন দারোয়ান গোছের লোক আমার পথ আগলে বললেন
-এই দিকে যাওয়া যাবে না।
মন খারাপ করে ঘুরে তাকাতেই উনি আবার আমার হাত ধরে নিয়ে গেলেন।বেশ খানিকক্ষন সময় কাটালাম পুকুড় পাড়ে।পা ডুবালাম পুকুরের শীতল জলে।উনি আমাকে ছোটখাটো প্রশ্ন করছেন আর আমি উত্তর দিচ্ছি।কখনো ছোট কখনো বা বড় ।উনি খুব মনযোগ সহকারে আমার প্রতিটি কথা শুনছেন।ঘুরতে ঘুরতে কখন যেসময় পেরিয়ে গেছে টেরই পাইনি।বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।আমি যেন এতক্ষন অন্য এক দুনিয়ায় ছিলাম।ভুলেই গিয়েছিলাম আমি কোথায় আছি।সন্ধ্যার আওয়াজ কানে আসতেই যেন সম্মতি ফিরে পেলাম।সময়ের সাথে সাথে বাড়তে লাগল অস্থিরতা।প্রচন্ড ভয় লাগছে এখন আমার।নিজের জায়গায় যেন জমে গেলাম আমি।
কথা বলতে বলতে অনেকটা দূরে এগিয়ে গিয়েছিলেন উনি।পাশ ফিরে আমাকে দেখতে না পেয়ে পিছনে ফিরে তাকালেন তিনি।
-কি হল?থামলে কেন?
আমি ভয়ে ভয়ে উনার দিকে চোখ তুলে তাকালাম।আমার অবস্থা আন্দাজ করতে পেরে উনি মুচকি হেসে বললেন
-ভয় পেয়ো না।আজকের রাতটা হোস্টেলে থাক দিপার সাথে।কাল সকালে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।দেখবে তোমার বাবা মা তোমাকে ঠিকি খুজতে আসবেন।
উনার কথার জবাবে আমি শুধু মাথা নাড়ালাম।
.
.
উনার কথা কাটায় কাটায় সত্য হয়েছিল।সকালে উঠে সত্যিই সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে।গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।পুরো ক্যাম্পাস গিজগিজ করছে।আমি দেরী না করে সেই টংগ এ গেলাম যেখানে আব্বু আম্মুর সাথে শেষ দেখা হয়েছিল।
আমার অনুমান ঠকই ছিল।উনারা ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন যাতে আমরা তাদেরকে খুজে পাই।ভীর ঠেলে কাল আনি বের হয়ে গেলেও জিনাত্ত আর আমি আটকা পরে যাই ভিতরে।প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছিলেন কিছু দুষ্কৃতিকারী হঠাত হামলা করে ক্যাম্পাসে।তাই তাদের ঠেকাতে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ সকালেই আবার ভার্সিটীর গেট খুলে দেওয়া হবে।তাই আব্বু আম্মু দেরী না করে সকালেই চলে এসেছেন ।বের হয়ে আসব তখনি জিনাত বলে উঠল সে ভুলে তার ব্যাগ হলে ফেলে রেখে এসেছে।আমি ওর সাথে যাওয়ার বাহানায় এদিক ওদিক দেখছি আর রেওয়াজকে খুজছি।
কাল রাতের পর থেকে ছেলেটার কোন পাত্তাই নেই।এটা কোন কথা হল!একটূ খোজও নিবেন না!কেনই বা নিবেন!উনি তো আমাকে চিনেন ও না।ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।আচ্ছা আমি উনাকে নিয়ে এত ভাবছি কেন?
কথাগুলো ভাবছি আর আগাচ্ছি হঠাত করে কেউ আমার হাত ধরে টান দিল।চেচানোর আগেই মুখ চেপে ধরে বলল
-শশশশহহহহহহ……।আমাকে খুজছিলে বুঝি!
আমি নিজেকে সামলে বললাম
-না….না.. নাতো আপনাকে কেন খুজব?
আমার কথায় হেসে ফেললেন উনি।আলতো করে আমার গাল টেনে বললেন
-মিথ্যে বললে বেশ কিউট লাগে তোমাকে।
কথাটা বলেই উনি চলে যাচ্ছিলেন।তখনি আমি পেছন থেকে বলে উঠলাম
-আবার কবে দেখা হবে!
উনি আমার কাছে ফিরে এসে বললেন
-দেখ কায়া এটা তোমার পড়াশুনা করার সময়।বছরের পর বছর যে স্বপ্নটাকে নিজের করে রেখেছ সেটা পূরনের সময় ।আমি চাই না আমার জন্যে তোমার কোন ক্ষতি হোক।মন দিয়ে লেখাপড়া কর তোমার স্বপ্ন পূরন কর।তারপর না হয় দুজন দুজনের মাঝে হারানোর স্বপ্ন বুনব।ততদিন অপেক্ষায় থাকো ।আমি অপেক্ষা করব তোমার জন্যে।
কথাটা বলেই সে আমার কপালে আলতো করে চুমু একে চলে গেলেন।
.
.
৪ মাস কেটে গেছে।আমি রেওয়াজের কথা রেখেছি।পূরন করেছি নিজের স্বপ্নকে।আজকে আমার ভার্সিটির প্রথম দিন।যে প্রাঙ্গনে আমি একদিন আগন্তুক ছিলাম আজ আমি তার অংশ।রেওয়াজের কোন খোজ আমি জানি না।খোজ বললে ভুল হবে ওর নামটূকু ছাড়া কিছুই জানিনা।তবে এবার জানবো।গলায় ওড়না পেচিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ভার্সটির উদ্দেশ্যে।আজকে অবসান ঘটোবে রেওয়াজ আর আমার অপেক্ষার।

অপেক্ষা ১
আফরিন_ইনায়াত_কায়া
{অসুস্থতা আর ব্যস্ততা দুই মিলায় যেন গল্প লিখা ভুলেই গেছি।অথচ আমার গল্পের খাতা এখনো দুইতিনটা সিরিজ গল্পে ঠাসা।এই গল্পটা আমার অনেক পছন্দের তাই এটা দিলাম।ইন শা আল্লাহ কালকে থেকে নতুন গল্প কন্টিনিউ করব}

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here