সত্যি ভালোবাসো,part_26 (কিডন্যাপ)

0
3010

সত্যি ভালোবাসো,part_26 (কিডন্যাপ)
writer Fatema Khan

সবগুলো ক্লাস শেষ করে রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছে তাহিয়া।অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর একটা রিক্সাও পেলো না।হঠাৎ তার চোখ গেলো দূরে গাছের দিকে।

তাহিয়াঃওটা আরিশ না,সে এখানে কি করছে?হয়তো আমার সাথে কথা বলতে আসছে।কিন্তু আমি কোনমতেই তাকে ক্ষমা করবো না।আমার ভাইকে গুলি করা।আচ্ছা তাহলে কি আরিশ ভাইয়াকে এতোদিন আটকে রেখেছিলো।কারো সাথে ফোনে কথা বলছে কিন্তু একবারও এদিকে তাকাচ্ছে না।তাহলে কি অন্য কাজে আসছে।যা ইচ্ছা করুক আমার কি।

(তখনই একটা গাড়ি আসলো আর আরিশ গাড়িতে করে চলে গেলো।আরিশ চোখের আড়াল হয়েছে বেশ অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে।একটা রিক্সাও নেই।এমন সময় আমার পিছন দিক থেকে কে যেনো আমার মুখে কিছু একটা চেপে ধরলো।তারপর আর আমার কিছু মনে নেই।)

_________________________________

রেজোয়ানঃহ্যালো,কাজ হয়েছে

মাস্কপরা ব্যাক্তিঃহয়ে গেছে।আপনি অপেক্ষা করুন আমি আসছি তাকে নিয়ে।

রেজোয়ানঃআমার এতোবছরের প্রতিশোধ পূর্ণ হতে যাচ্ছে।

মাস্কপরা ব্যাক্তিঃআমারও।আজ সবকিছুর বদলা নিবো আমি।

রেজোয়ানঃতারাতাড়ি এসো সবকিছু খুব জলদি করতে হবে।

মাস্কপরা ব্যাক্তিঃরাখছি আমি তাহিয়া কে নিয়ে আসছি।

_________________________________

আফসানাঃহ্যালো তূর্য (কান্না করতে করতে)

তূর্যঃহ্যা মা বলো

আফসানাঃতাহিয়া এখনো বাসায় ফিরে নি বাবা

তূর্যঃকি বলছো মা ও তো বললো একলা চলে যেতে পারবে।আচ্ছা তুমি কান্না করো না আমি দেখছি।কোথায় গেলো

________________________________

নীলিমাঃআরিশ তুই কোথায়

আরিশঃকেনো কি হয়েছে বলো

নীলিমাঃতাহিয়াকে পাওয়া যাচ্ছে না।

আরিশঃঅহ আচ্ছা

নীলিমাঃতুই এমন স্বাভাবিক কি করে।তোর একটু চিন্তা হচ্ছে না।

আরিশঃমানে হ্যা কোথায় গেছে কে জানে।

নীলিমাঃতো ওকে খুঁজে বের কর

আরিশঃ হুম দেখছি(কল কেটে দিলো)

________________________________

আরিশঃসব ঠিক মত হচ্ছে তুমি কোথায়

…………

আরিশঃআমিও আসছি।

………..

__________________________________

অন্ধকার একটা রুমে রাখা হয়েছে আমাকে।জ্ঞান ফিরার পর নিজেকে এই অন্ধকার রুমে আবিষ্কার করি।বুঝতে পারছি যে আমার হাত পা একটা চেয়ারের সাথে বাধা।মুখও কাপড় দিয়ে বাধা।কোথায় আছি বুঝতে পারছি না।অনেক ভয় করছে কি হতে চলছে আমার সাথে।গলা শুকিয়ে আসছে এই মূহুর্তে একটু পানি পান করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু তারও উপায় নেই।হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে ওইদিকে তাকালে চোখে আলো পরার সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।আস্তে আস্তে চোখ খুললাম।বুঝতে পারছি একটা পুরুষ অবয়ব আমার দিকে এগিয়ে আসছে,লোকটিকে আমার বড্ড চেনা লাগছিলো কোথাও দেখেছি মনে হয়।লোকটা রুমের লাইট জ্বালালে আমি তাকে দেখে পুরো অবাক

রেজোয়ানঃকি হলো তাহিয়া খুব অবাক হচ্ছো
বুঝি।আমিই তোমাকে এখানে এনেছি।দাড়াও তোমার মুখের বাধনটা খুলে দেই(আমার মুখের বাধন খুলতে খুলতে)

তাহিয়াঃআপনি আমাকে এখানে কেনো এনেছেন আর এভাবে বেধে রেখেছেন কেনো

রেজোয়ানঃকেনো তোমার বাবা মানে ওই বিশ্বাসঘাতক আরমান কিছু বলে নি তোমাদের আমাকে নিয়ে

তাহিয়াঃ হুম কিন্তু আমাকে কেনো তুলে এনেছেন

রেজোয়ানঃ কেনো বলতো,অহ হ্যা তুমি তো জানোই আমি কিসের কাজ করি

তাহিয়াঃআপনি আরিশদের বিজনেস পার্টনার
ছিলেন

রেজোয়ানঃওইটা তো আছেই যেটার জন্য তোমার বাবা আমার জীবন শেষ করে দিলো সেটার কথা বলছি

তাহিয়াঃনারী পাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত আপনি

রেজোয়ানঃকিন্তু এখন আর জড়িত নই নারীপাচার চক্রের লিডার আমি।আর কাল তোমাকে দুবাই নিয়ে পাচার করে দিবো

তাহিয়াঃমানে কি এসবের আমাকে ছাড়ুন,আমি বাসায় যাবো

রেজোয়ানঃতা বললে তো হচ্ছে না ২০বছরের প্রতিশোধের আগুন নিভানোর সময় হয়েছে আর তা আমার হাতের মুঠোয় তুমি বলছো যেতে দিতে।

তাহিয়াঃআপনি জানেন না আপনার কি হাল করবে আরিশ,তাহসিন ভাইয়া আর তূর্য ভাইয়া।যখন জানতে পারবে আপনি নিজেও ধারণা করতে পারবেন না কি হবে আপনার।

রেজোয়ানঃকেউ জানলে তো।

তাহিয়াঃএতোক্ষণে সবাই আমাকে পাগলের মত খুজতেছে।পেয়েও যাবে দেখে নিবেন।

রেজোয়ানঃতাই নাকি।

তাহিয়াঃ হুম আমাকে আজ রাতের মধেই নিয়ে যাবে।

রেজোয়ানঃআচ্ছা দেখা যাবে।

__________________________________

আরিশ সিড়ি দিয়ে নিজের রুমে যাবার পথে নীলিমা তার পথ আটকে ধরে বলে-

নীলিমাঃকি হয়েছে আরিশ তুই এমন হয়ে গেছিস কেনো

আরিশঃকেমন মা আমি তো ঠিক আছি।

নীলিমাঃমেয়েটাকে সারাদিন পাওয়া যাচ্ছে না আর তুই কিনা বাসায় চলে এলি আর তোকে দেখে মনে হচ্ছে কিছুই হয়নি

আরিশঃআমি খুজতেছি মা।

নীলিমাঃতাহলে মেয়েটা কই

আরিশঃ আমার খুব টায়ার্ড লাগছে আমি রুমে যাচ্ছি খাবার পাঠিয়ে দিও আমি খেয়ে ঘুমাবো(বলেই চলে গেলো উপরে)

নীলিমাঃসবাই মেয়েটার জন্য পাগল প্রায় আর এ কিনা ঘুমাতে গেলো।

________________________________

রেজোয়ানঃতুমি কোথায়?

মাস্কপরা ব্যাক্তিঃআমি একটু বাসায় আসছি কেনো কোনো ঝামেলা করে নি তো?

রেজোয়ানঃআরে না ভাবলাম তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই তাই আর কি

মাস্কপরা ব্যাক্তিঃআমি রাতে আসবো,এখন আমার এখানে থাকতে হবে।

রেজোয়ানঃঠিক আছে রাখছি তাহলে।আর তারাতাড়ি এসো কিন্তু।

মাস্কপরা ব্যাক্তিঃ হুম

________________________________

রাত ২ঃ০০ টা,,,

তাহিয়া চেয়ারে বাধা অবস্থায় ঘুমিয়ে রয়েছে।হঠাৎ রেজোয়ানের কন্ঠে তাহিয়ার ঘুম ভেঙে যায়।

রেজোয়ানঃআরে মামনি ঘুমিয়ে ছিলে নাকি।

তাহিয়াঃকি চাই

রেজোয়ানঃআমার আবার কি চাই,সব পেয়ে গেছি বাকিটা কাল দুবাই গেলেই পেয়ে যাবো।তোমাকে কিছু দেখানোর আছে।যে তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছে তাকে দেখতে চাও না।

তাহিয়াঃকে সে?

রেজোয়ানঃতাকে দেখতে প্রস্তুত তো।অনেক বড় সারপ্রাইজ কিন্তু এটা তোমার জন্য।

তাহিয়াঃআর কি সারপ্রাইজ বাকি আছে(তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে)

রেজোয়ানঃআচ্ছা দেখো তাহলে,কই রুমের ভিতরে এসো।

(একটা ছায়া ধিরে ধিরে আমার কাছে আসতে থাকলো।সারাদিন কিছু না খাওয়ার ফলে দূূর্বল লাগছে তাই আবছা দেখতে পাচ্ছি।সামনে আসতেই আমি অবাক।এটা তো মাস্কপরা ব্যাক্তি।লোকটাকে কেমন চেনা চেনা লাগছে।কে হতে পারে)

মাস্কপরা ব্যাক্তিঃআমাকে চেনার চেষ্টা করা হচ্ছে বুঝি।

তার কন্ঠস্বরকে চিনতে আমার একমুহূর্তও সময় লাগে নি।সাথে সাথে বলে উঠলাম-

তাহিয়াঃতুমি

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here