অপেক্ষা
পার্ট_০৮ এবং সমাপ্ত
#আফরিন_ইনায়াত_কায়া
.
.
অপেক্ষার প্রহর সর্বদাই দীর্ঘকায় হয়। অপেক্ষার প্রতিটা মুহুর্ত ব্যক্তির কাছে হাজার বছর সমান মনে হয়।রেওয়াজের সাথে প্রথম দেখার পর থেকে প্রতিটা মুহুর্ত আমার কাছে বছর খানেক সময় মনে হয়েছে।প্রতিটা সকাল এই আশায় দিন শুরু করেছি আজ হয়তো বা তার দেখা পাব।#অপেক্ষা করেছি ঊষ্ম ঠোটের গাঢ় ছোয়া পাওয়ার।কিন্তু ভার্সিটির প্রথম দিন ওর অবস্থা দেখে যেন আমার পুরো দুনিয়াই পাল্টে গেল।
প্রথমদিন ভার্সিটি থেকে ফিরে এসে মনে হচ্ছিল সব কিছুই ঠিক আছে কিন্তু কোথায় যেন একটা ফাকা আছে।আবেগকে দূরে ঠেলে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে বসলাম।
যে ছেলেটা ভীড়ের মাঝে অজানা অচেনা একটা মেয়েকে বাচাতে এগিয়ে আসবে সেকিনা জঘন্যভাবে একটা মেয়েকে রেপ করেছে ব্যাপারটা শুধু আমার না যে কারোরই হজম করতে সমস্যা হবে। রেওয়াজ যদি এতটাই হিংস্র হতো তাহলে সেদিন গার্লস হোস্টেলে ঢুকে যখন সে দিপা আপুর রুম থেকে আমাকে ডেকে নিয়ে গেল তখন কেন দিপা আপু তাকে আটকালো না!?কেন আমাকে পুরোটা দিন হাতের কাছে একা পেয়ে ক্ষতি করা তো দূরের কথা চোখ তুলেও তাকাল না!
সব কিছুর ওপারে না হয় মানলাম না হয় পরে রেওয়াজের পশুবৃত্তি জেগে উঠেছিল তাই সে রাফিয়ার সাথে এরকম একটা জঘন্য কাজ করেছে।তাহলে সে রাফিয়াকে বা মেরে কেন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল?যখন সে জানতো যে রাফিয়াকে মেরে ফেললে সব ঝামেলা শেষ বরং রাফিয়া বেচে থাকলেই তার ঝামেলা বাড়বে।সব কিছুর বাইরে কোথাও না কোথাও একটা কিন্তু একটা ফাকা থেকেই যাচ্ছিল।আমি কোন ভাবেই হিসাব মেলাতে পারছিলাম না।তাই ঠিক করলাম আমি আবার রেওয়াজের কাছে যাব।
.
.
রেওয়াজ হয়তো আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিল যে আমি আসব।যে মেয়ে একদিনের আলাপ চারিতাকে ভালোবাসা মেনে ৪ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে প্রতিটা মুহুর্তে তাকে খুজতে পারে সেই মেয়ে এত সহজে হাল ছাড়বে না।টানা তিন দিন ওর বাসায় গিয়ে নিরাশ হলাম।আমি জানতাম রেওয়াজ ইচ্ছা করেই বাসায় থাকে না যাতে তাকে আমার মুখোমুখি না হতে হয়।কিছুদিন পরে ওর দেখা পেলাম।লুকিয়ে আড়ালে দেখছিল আমাকে।চোখে চোখ পড়তেই ভাবখানা এমন দেখাল যেন আমাকে চিনেই না।বুঝলাম ছেলেটা বড্ড ঘার ত্যাড়া এভাবে মানবে না।দুপুরের ক্লাস বাংক দিয়ে লুকিয়ে থাকলাম ওর ঘরের সামনে। তালা চাবি খুলে ঘুরে ঢুকে দরজা লাগাতে যাবে তখনি আমাকে দেখে চমক গেল সে।মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি দরজার ফাকে হাত এগিয়ে দিয়ে আটকালাম ওকে। ওকে ঠেলে দিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলাম।রেওয়াজ হচকচিয়ে গেলেও কন্ঠে রাগী ভাব ফুটিয়ে বলল
-তুমি এখানে কি করছ? তোমার না এখন ক্লাস চলছে?ক্লাস ছেড়ে এখানে এসেছ কেন?
রেওয়াজের কথা শুনে আমার সব সন্দেহ দূর হয়ে গেল।আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলাম।আমাকে হাসতে দেখে ভ্রু কুচকে ধমক দিল
-এখানে দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে হাসছ কেন?
-আমার সব খবর রাখো দেখছি!
আমার কথায় রেওয়াজ কিছুটা দমে গেল। কিন্তু সাথে সাথেই নিজেকে সামলে নিয়ে দ্বিগুণ তেজে বলল
-আমি কি ভার্সিটির নতুন স্টুডেন্ট নাকি যে কখন কোন ক্লাস হয় জানব না!
-জানার কথা না। কারন এখন আমাদের রুটিন ক্লাস হয় এক্সট্রা ক্লাস চলছে।স্যার গতদিন ব্যস্ততার কারনে ক্লাস নিতে পারেন নি তাই তা কভার দিচ্ছেন।খুব বেশি সচেত
-দেখো এখানে আসাটা তোমার উচিত হয়নি। এখান থেকে চলে যাও।
-চলে যাব। তার আগে একটা প্রশ্নের জবাব দেও।
-দেখ কায়া প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে আমি ক্লান্ত। আমি কার কাউকে কিছু বলতে চাই না কোন জবাব দিতে চাই না। তুমি চলে যাও এখান থেকে।
কথা বলেই রেওয়াজ গিয়ে বিছানার উপরে ধপ করে বসে পড়ল।
আমি ওর সামনে গিয়ে হাটু গেড়ে বসে বললাম
-আমার কোন ক্লাস কখন তা তুমি জানো। অথচ আমার ৪ মাসের অপেক্ষার খবর তোমার অজানা!
-কায়া অযথা জেদ করো না।চলে যাও প্লিজ।কেউ তোমাকে এখানে দেখে ফেললে তোমার সমস্যা হবে।তোমার সামনে এখনো সুন্দর একটা ভবিষ্যত পড়ে আছে।মাত্র এক দিনের আলাপ চারিতাকে তুমি ভালোবাসা মেনে বসে আছ? কায়া তুমি…..
রেওয়াজকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আমি তার ঠোট দুটোকে আকড়ে ধরলাম।কথায় কথা বাড়ে। কথায় কথা বাড়ে।আমি আর কোন কথা বাড়াতে চাই না।আমি শুধু রেওয়াজকে চাই।ওকে ভালোবাসতে চাই।
ঠোট ছেড়ে সামনে দাড়াতেই রেওয়াজের নিষ্প্রান চোখদুটো দেখতে পেলাম। রেওয়াজ আমাকে সরিয়ে দিয়ে সবটুকু খুলে বলল।সেদিন ঠিক করেছিলাম সব সত্যকে উন্মোচন করে রেওয়াজকে নির্দোষ প্রমান করেই ছাড়ব।কিন্তু কিভাবে তা নিয়ে অনেক চিন্তায় ছিলাম।তবে সেই সাথে বেশ খু্শি ছিলাম কারন আমি ভুল করিনি।
কোমড় বেধে লেগে পড়লাম।সব কিছু খুব সুন্দর ভাবে গোছানো হয়েছিল।তাই সামান্য ভুলে রেওয়াজের উপকারের জায়গা ক্ষতি বেশি হতে পারে।তাই শুরুতেই সময় নিলাম যাতে সবাই রেওয়াজের কথাটা ভুলে যায়।সেই সময় টুকু লাগালাম প্লানিং এ। ঘটনা যেহেতু রাফিয়াকে ঘিরে তাই ঠিক করলাম ওকে দিয়েই শুরু করব।আমার কাজিন আবিদ ভাইয়াকে জানাতেই সে হেল্প করতে রাজী হয়ে গেল।কোন মেয়ে যতই খারাপ হোক না কেন তার সামনে কেউ আরেকটা মেয়ের সম্মানে হাত দিলে সে চুপ করে থাকবে না।হলোও তাই।প্লান মোতাবেক আবিদ ভাইয়ের হাত থেকে আমাকে বাচাতে রাফিয়া এগিয়ে এল।শুধু পরিচয়টাই নাটকীয়ভাবে শুরু হয় নি নাটক ছিল পরের সব কটা ঘটনাই।রেওয়াজ মিলে একটা ফেক আইডি খুলে সেখান থেকে আমাকে রিকুয়েষ্ট দেয়। পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড দেখিয়ে রাফিয়ার মনে ভয় ক্রিয়েট করে।আবিদ ভাইয়া আর রেওয়াজ বেশ কয়েকটা ফেক আইডি খুলে আমার টাইমলাইনে পোস্ট আর কমেন্ট করতে থাকে।রাফিয়ার ভয় তীব্র রুপ নেয়।সে ছুটে আসে আমার কাছে। নিজের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে যাতে আরেকটা মেয়েকে না পরতে হয় সেই শুভকামনা নিয়ে। কিন্তু সে জানতো না সেটা ছিল তার জন্যেই বানানো ফাদ।
.
.
রাফিয়া যখন আমাকে অন্ধ বিশ্বাস করে তার বিষাদময় রোমহর্ষক অতীত বর্ননা করছিল তখন আমার জামায় লাগানো হিডেন ক্যামেরায় সব রেকর্ড হচ্ছিল।আমার ফোন তার হাতে থাকায় সে ভুলেও কখনো ভাবেনি যে আমি কোনভাবে তার কথা রেকর্ড করব।আবারো তার বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে আমি স্বার্থ হাসিল করলাম।তবে এবার ভালোর জন্যে।
কিন্তু তাতেও খুব একটা কাজ হত না।এই মামলার আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ মোহরা ছিল দিপা আপু।দিপা আপু খুব ভালোভাবেই জানতেন আমি রেওয়াজের জন্যে পাগল।উনি ভুল করেও আমার সামনে তাই মুখ খুলবেন না।সেজন্যে রাজীবের নাম করে উনাকে একটা উড়োচিঠি পাঠাই যেখানে লিখা ছিল যদি এবার সে রেওয়াজের পক্ষ নেওয়ার চেস্টা করে তবে তার পুরো পরিবারকে মেরে ফেলা হবে।আমরা জানতাম দিপা আপু অল্পেই ঘাবড়ে যাওয়ার মানুষ।তার এই তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভ্যাস তাকে এইদ্বারে এনে পৌছিয়েছে।দিপা আপু চিঠি পেয়ে ক্লাস শেষ করে সোজা বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।আমিও সুযোগ বুঝে আপুকে ফলো করে তার বাসায় পৌছে তার সব কথা রেকর্ড করে ফেলি৷
তারপরের কাজটা খুব সোজা ছিল। রাজীবের ফোন চুরি করা। রাজীব প্রতিদিন রাতে পার্টি করে বাসায় ফিরত। মদ নেশা গাঞ্জায় বুদ হয়ে থাকত।এক গভীর রাতে সুযোগ বুঝে ওর গাড়ির সামনে গিয়ে দাড়ালাম।মেয়ে দেখে রাজীব নিজেকে সাম্লাতে পারল না।মাঝ রাতে জনশূন্য রাস্তায় আমাকে দেখে গাড়ি থামায় তার ড্রাইভার।রাজীবকে প্রলোভন দেখিয়ে ওকে অজ্ঞান করে ফোন চুরি করাটা আমার বাম হাতের ব্যাপার ছিল। প্রতিটা ঘটনায় রেওয়াজ প্রত্যক্ষভাবে আমার সাথে ছিল। দিপা আপুর বাসা থেকে শুরু করে প্রতিটা মুহুর্তে রেওয়াজ আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
এতটুকু বলেই থামলাম আমি।
আমার সামনে বসে আছেন প্রক্টরিয়াল বডি।সবাই আমার কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে আছেন। কারো মুখে কোন ভাষা নেই।আমি জানি আমি কিছু আবেগী কথা বলে ফেলেছি। কিন্তু এই পুরো সত্যটাই আমার আবেগ আর ভালোবাসার উপরেই টিকে আছে।প্রক্টর স্যার চশমাটা খুলে ধীরে সুস্থে সামনে এগিয়ে এসে বললেন
-তুমি কি সব ঠিক বলছ?
আমি হেসে জবাব দিলাম
-স্যার এত কিছুর পরেও আপনি এই প্রশ্ন করছেন?
প্রক্টর স্যার দম ফেলে বললেন
-ঠিক আছে তুমি এখন যেতে পারো।
.
.
সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যানে এখন যেকোন ঘটনা ভাইরাল হওয়া চোখের পলকের কাজ।রাজীবের ফোন থেকে পাওয়া ম্যাসেঞ্জার আর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ছাড়াও আরও কিছু প্রমান ভাইরাল করে দেওয়া হয় ফেক আইডি থেকে। তারপরেই আসে দিপা আপুর ভিডিও।সেই সাথে ভাইরাল হয় রাফিয়ার কনফেশন। একসাথে সব প্রমান দেখে যেন সব মাথায় আকাশ ভেঙে পরে।শুরু হয় আন্দোলন। একজন নিরপরাধ মানুষকে বিনা দোষে কাষ্ঠে ঝুলানোর শাস্তির বিরোধীতা।পরিস্থিতি শান্ত করতে কতৃপক্ষ জরুরি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উপস্থাপন করা হয় সব প্রমান। কিন্তু এত দিন পর এসব নিয়ে কে ঘাটাঘাটি করল এ নিয়ে তারা সন্দিহান ছিলেন।তাই আগ বাড়িয়ে নিজ মুখেই সব কিছু জানিয়ে এলাম তাদের।
.
.
সন্ধ্যা নেমে এসেছে চারদিকে। গোলাপী আভা ধীরে ধীরে বেগুনী রুপ ধারন করে আধারে মিলয়ে যাচ্ছে।পাখি ফিরে যাচ্ছে নীড়ে।দূর মসজিদ থেকে মুয়াজ্জিনের সুরেলা কন্ঠে আযান শোনা যাচ্ছে।উযূ করে নামাজটা সেরে নিলাম। রেওয়াজের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে প্রতিটা মোনাজাতেই আমি রেওয়াজকে চেয়েছিল।তবে আজ চাওয়ার তীব্রতা বেশি কারন রেওয়াজ বলেছিল সে আমাকে হেল্প করবে যদি সে নির্দোষ প্রমান হয় তবে সে আমাদের সম্পর্কের কথা চিন্তা করবে নয়তো আমাকে চিরদিনের জন্যে তাকে ভুলে যেতে হবে।রেওয়াজকে কাছে পাওয়ার অদম্য ইচ্ছা থেকে সেদিন আমি তার শর্তে রাজী হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আজকে তীব্র ভয় জেকে বসেছে মনের মধ্যে। ফোনের টুংটাং নোটিফিকেশনের শব্দে ধ্যান ভাঙল।ছোট্ট একটা ম্যাসেজ
-আসতে পারবে জরুরি কথা আছে।
ফোনটা পকেটে গুজে বেরিয়ে পড়লাম গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।
.
.
লেক পাড়ে এসে হাজির হয়েছি।আজকে জায়গাটা অন্যদিনের তুলনায় আধারাচ্ছন্ন।এক পা দুপা করে এগিয়ে যাচ্ছি সামনে।যতবার এখানে এসেছি আমি রেওয়াজ কে চুমু একেছি।সে পাথরের মুর্তির মত নির্লিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকত। আজকেও তার ব্যতিক্রম হবে না জানি।কাছে এগিয়ে কাধে হাত রাখতেই রেওয়াজ পেছনে ফিরে আমার কোমড় জড়িয়ে ঠোটে ঠোট ডুবাল।খুব যত্নসহকারে আমার ঠোটদুটোকে নিজের আয়ত্ত্বে করে নিল। তারপর শুষে নিতে থাকল ভালোবাসা।
-তীব্র প্রতিবাদ,সব প্রমান আর তোমার সাক্ষীর পর কতৃপক্ষের কাছে আমার শাস্তি মউকুফ করা ছাড়া কোন উপায় ছিল না।তাদের ভুলের জন্যে তারা লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা করেছে।আমি যেসব পরীক্ষা দিতে পারিনি সেগুলো আবার নেওয়া হবে।তুলে নেওয়া হয়েছে সব নিষেধাজ্ঞা। রাফিয়া আর দিপাকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সত্য জানা সত্ত্বেও তা গোপন করায় ছয় মাসের বহিষ্কার করা হয়েছে।রাজিবের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে আরো কয়েকটি ধর্ষন আর অনৈতিক কাজের অভিযোগ।
সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে কায়া।
একনাগাড়ে কথা গুলো বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরল সে।
আমি হেসে বললাম
-রেওয়াজ একটা জিনিস চাইব দিবে?
-তোমার জন্যে তো জানও হাজির।
-আমার কপালে একটা চুমু খাবে?
রেওয়াজ হেসে আমার কপালে ঠোট ডুবাল।এত দিন পর আমি আবার রেওয়াজকে হাসতে দেখলাম ওর প্রানোচ্ছ্বলতাকে অনুভব করলাম।
রেওয়াজ আমাকে পাশ ফিরিয়ে চোখ চেপে ধরল।
কানে কানে ফিসফিস করে বলতে লাগল
-প্রথম দেখায় কাউকে ভালোলাগা ব্যাপারটা স্বাভাবিক কিন্তু ভালোবাসা ব্যাপারটা অতিরঞ্জিত। তোমাকে প্রথম দেখায় ভালোলেগছিল আমায়। তোমার সাথে দিন কাটিয়ে বুঝলাম তুমি মেয়েটা ঠিক তেমন যেমন আমি চেয়েছিলাম। কিন্তু তোমার সামনে এখনো অনেকটা পথ বাকি।তাই তোমাকে #অপেক্ষার ঘড়ি ধরিয়ে দিয়ে সরে পড়লাম তোমার পথ থেকে।ভেবেছিলাম আর হয়তো কখনো তোমার দেখা পাব না।এই কথাটা ভাবতেই হঠাত হঠাত কেমন যেন মন খারাপ হতে শুরু করল।বুঝলাম ভালোলাগা এখন ভালোবাসায় রুপ নিয়েছে।ভেবেছিলাম খুজে বের করব তোমায় কিন্তু তার আগেই একটা ঝর এসে সব এলোমেলো করে দিয়ে গেল।
কায়া আমি হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম।#অপেক্ষার প্রহর আমার জন্য অনন্তকালের ছিল।কিন্তু তুমি আবার আমার জন্যে আশার আলো হয়ে এলে।আমার নিষ্প্রান জীবনে সজীবতা আনলে। আমি চাইলেও আর তোমার থেকে দূরে থাকতে পারব না।পারব না আর #অপেক্ষা করতে।কায়া আমাকে কি তুমি নিজের করে নিবে?
কথাগুলো বলে রেওয়াজ আমার চোখ থেকে হাত সড়ালো। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত সব কিছু দেখছি।চারদিকে আলোয় আলোকিত। সামনে অনেক গুলো মোমবারি দিয়ে লিখা
– I Love You Kaya.
নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছে না আমার।আমি পেছন ফিরে রেওয়াজকে জড়িয়ে ধরলাম।ধীর কন্ঠে উচ্চারন করলাম
-ভালোবাসি।
রেওয়াজ প্রতিউত্তরে আমাকে গভীর ভালোবাসায় জড়িয়ে নিল।
আজ থেকে সব প্রতীক্ষার সমাপ্তি ঘটল।আমার জীবন থেকে বিদায় নিল এক বিষাদময় #অপেক্ষা।
{এক হাতে টিস্যু আরেকহাতে ফোন নিয়ে টাইপ করছি।জ্বরে চোখ ঢুলুঢুলু।আশাকরি দেরী হওয়ার কারন বুঝবেন।গল্পটা এত ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্যে সবাইকে অনেক ধন্যবাদ ?}