তুমি কে?,পর্বঃ ০৪
লেখকঃ আবির খান
তুবা চুপচাপ উঠে উপরে রোহানের রুমে ঢুকতেই হঠাৎ করে রোহান ওকে পিছন থেকে টান মেরে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে। ওদের মাঝে বিন্দু পরিমাণ দূরত্ব নেই। দুজন একে অপরের সাথে একদম আষ্টেপৃষ্ঠে মিশে আছে৷ এদিকে তুবা ত পুরো আশ্চর্য হয়ে যায় রোহানের এই কান্ড দেখে। রোহান এসব কি করছে ওর সাথে? তুবা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বলে,
~ মানে কি এসব কি করছেন আপনি? ছাড়ুন আমাকে।
— তুমি রাগলে তোমাকে আরও অনেক বেশি সুন্দরী লাগে জানো?
~ আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরে আছেন কেন? এটা কেমন অভদ্রতা? পাগল হয়েছেন নাকি?
— হ্যাঁ হয়েছি। তবে তোমাকে মারার জন্য৷ তুমি কি ভেবেছো আমি তোমার উদ্দেশ্য জানতে পারবো না? তুমি কেন এখানে এসেছো?
~ মানে! কি সব যাতা বলছেন আপনি? মাথা ঠিক আছে? আর আমি কেন এখানে এসেছি মানে কি? (ভীতু আর অস্থির কণ্ঠে)
— তুমি আমাকে খুন করতে এসেছো। আমি একটু আগে জানতে পেরেছি। আমার কোন এক শত্রু তোমাকে এখানে পাঠিয়েছে আমাকে মেরে ফেলার জন্য, তাই না? তুমি খুব ভালো, অসহায় মেয়ে সাজার অভিনয় করছিলে। কি ভেবেছো আমি কিছুই বুঝতে পারবো না? এখন তোমাকে কে বাঁচাবে হ্যাঁ? (তুবাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)
তুবা রোহানের কথা শুনে ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কিছুই বলছে না। রোহান ওকে চুপ দেখে আবার বলে,
— কি হলো চুপ কেন? ধরা খেয়েছো তাই?
রোহানকে পুরো অবাক করে দিয়ে তুবা খুব ইন্টেন্স মুখ করে হঠাৎই ওর গলা চেপে ধরে বলে,
~ হ্যাঁ। আপনি ঠিকই ধরেছেন। আপনাকে মারতেই আমি এখানে এসেছি। অনেক বড়ো মাস্টার প্ল্যান করে এসেছিলাম। ভেবেছি আজ রাতে আপনি ঘুমালে আপনাকে খতম করে ফেলবো। কিন্তু ধরা খেয়ে গেলাম। এবার আপনাকে আর বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। তুমি শেষ চান্দু।
তুবার হঠাৎ এই পরিবর্তন দেখে রোহানের গলার পানি শুকিয়ে যায়। আরে ওতো একটা মুভি দেখে তুবার সাথে একটু মজা করছিল। কিন্তু সেই মজা যে এভাবে সত্যি হয়ে যাবে রোহান কল্পনাও করে নি। ও ভয়ে তুবাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। আর বলে,
— এসব কি বলছো তুমি? আমি তো মজা করছিলাম।
তুবা আবার রোহানের কাছে এসে ওকে ধরে বলে,
~ কিন্তু চান্দু আমি তো মজা করছি না। এখনি আপনাকে গুলি করবো। আমার কাছে একটা লুকানো পিস্তল আছে। এই যে… আপনি এবার শেষ। হাহা।
বলেই তুবা রোহানের পেটে আঙুল দিয়ে পিস্তলের মতো করে একটা গুতো দেয়। আর মুখ দিয়ে ডিস্কাও ডিস্কাও করতে থাকে। রোহান ভয়ে নায়ায়ায়া বলে চিৎকার দেয়৷ ও ভাবে তুবা ওকে সত্যি সত্যিই গুলি করেছে। কিন্তু পরক্ষণেই ও পেটে হাত দিয়ে দেখে ওর কিছুই হয় নি। ও অবাক হয়ে তুবার দিকে তাকিয়ে দেখে, তুবা পাগলিটা অট্টো হাসতে হাসতে আঙুল দিয়ে ডিস্কাও ডিস্কাও করছে। রোহান এই দৃশ্য দেখে স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। ওর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামও চলে এসেছিল ভয়ে। আসলে ও পুরো অপ্রস্তুত ছিল। খুব তাড়াতাড়িই সব কিছু হয়েছে। তাই নিজেকে সামলাতেই পারে নি ও। আর এদিকে আমাদের তুবামনি তো হাসতে হাসতে কাহিল প্রায়। ও শুধু প্রাণ খুলে হাসছে আর আঙুল দিয়ে পিস্তলের মতো করে ডিস্কাও ডিস্কাও করছে রোহানের দিকে তাকিয়ে। রোহান খুব লজ্জা পায়৷ ও তুবার সাথে একটা মুভির মতো মজা করতে যাচ্ছিল। কিন্তু ও নিজেই ভীষণ ভাবে বোকা হয়ে যায়। লজ্জায় ছেলেটার মাথাকাটা যাচ্ছে। তুবা হাসতে হাসতে বলে,
~ আমার সাথে মজা করেন হ্যাঁ? কেমন লাগলো আমার মজাটা? ডিস্কাও। হাহা।
— তবে রে দাঁড়াও, তোমার আজ খবর আছে। রোহানকে ভয় দেখানো না? দাঁড়াও একবার…
রোহান তুবাকে ধরার জন্য ওর পিছনে দৌড় দেয়। তুবা হাসতে হাসতে নিজেকে বাঁচাতে এদিক ওদিক ছুটতে থাকে যাতে রোহান ওকে ধরতে না পারে। কিন্তু একটা ছেলের সাথে কীভাবে তুবা পেরে উঠবে৷ তাই তুবা যখন বেডের উপর উঠতে যায় ওমনি রোহান ওকে খপ করে ধরে ফেলে। কিন্তু ধরতে গিয়ে একটা বিপত্তি হয়৷ রোহান তুবাকে ধরতে গিয়ে ওর উপর পড়ে যায়। এখন তুবার ঠিক উপরেই রোহান। দুজন একে অপরের সাথে আবার মিশে আছে। নেই একফোঁটাও দূরত্ব। রোহান তুবাকে ধরতে পেরে শয়তানি হাসি দিয়ে ওর হাত দুটো চেপে ধরে বলে,
— আমি চান্দু না? এখন তো ধরা পড়েই গেলে। এখন কই পালাবে? হুম?
~ ছাড়েন তো লাগছে।( লজ্জায় অন্যদিকে তাকিয়ে বলল)
— আমার সাথে এমন করলে কেন আগে সেটা বলো?
তুবা রোহানের দিকে তাকাতেই পারছে না৷ কারণ রোহানের গরম নিঃশ্বাস বারবার ওর মুখের উপর পড়ছিল। তুবার পুরো শরীরে অজানা এক অনুভূতি অনুভব হচ্ছে। ওর পুরো মুখখানা লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে। ও আস্তে করে লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে বলে,
~ আপনি প্রথমে শুরু করেছেন। আমি না।
— তাহলে শেষটাও আমি করি।
~ মানে?
তুবা দেখে রোহান ওর মিষ্টি গোলাপি ঠোঁটটার দিকে খুব নেশালো একটা মুচকি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে৷ মনে হচ্ছে এই বুঝি রোহান ওর ঠোঁটটাকে নিজের করে নিবে৷ তুবার হৃদস্পন্দন এতই বেড়ে গিয়েছে যে ও স্পর্শ শুনতে পাচ্ছে ওর প্রতিটি হার্টবিট। শুধু ও না হয়তো রোহানও শুনতে পাচ্ছে। এদিকে রোহান তুবার নেশা লাগানো মিষ্টি ঠোঁটটার ঘোরে পড়ে যাচ্ছে ক্রমশ। কেন জানি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না৷ রোহান অজান্তেই তুবার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তুবাও কেন জানি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে৷ অজানা একটা অনুভূতির কারণে এর নয়ন জোড়া আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে আসে। তার মানে ও রোহানের পরম স্পর্শ চাচ্ছে। রোহান তুবার চোখ বন্ধ করা দেখে আরো নিজেকে হারিয়ে ফেলে। ও বুঝতেই পারছে না জেদের বসে ও কি করতে যাচ্ছে। ও যেই তুবার ঠোঁটটা নিজের করে নিতে যাবে ওমনি দরজায় কড়া পড়ে।
~ ও ভাইয়া…আপুর রাগ কি কমেছে? (নিলু)
সাথে সাথে তুবা চোখ মেলে তাকায়। আর রোহানের ঘোরও কেটে যায়। দুজনেই লজ্জায় মরে যাচ্ছে। রোহান এক লাফে উঠে বসে। আর তুবা উঠে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায়। যাওয়ার সময় একটা নতুন ড্রেস সাথে নিয়ে যায়। রোহান থতমত খেয়ে গিয়েছে। ও কি করতে যাচ্ছিলো একটু আগে! হায়! হায়! এদিলে নিলু বাইরে ডাকছে বলে ও কোন রকম নিজেকে সামলে দরজা খুলে হাসি মুখে বলে,
— হ্যাঁ বোন ভেঙেছে। ও ফ্রেশ হতে গিয়েছে।
~ ওহ! যাক তাহলে তো ভালো। আমি যাই তাহলে।
— আচ্ছা শোন, ধন্যবাদ তোকে।
~ কেন ভাইয়া? (অবাক হয়ে)
— এই যে বোনের মতো ভাইয়ের খেয়াল রাখছিস তাই।
~ হাহা তুমিও নক ভাইয়া। আমি আসি।
নিলু হাসতে হাসতে চলে গেলে রোহান ওর বুকে হাত দিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে। ও মাথায় হাত দিয়ে এদিক ওদিক পায়চারী করতে করতে ভাবছে,
— হায় আল্লাহ! এ আমি কি করেছি। তুবা তো আমার সাথে আর কথাই বলবে না৷ ও নিশ্চিত আমাকে খারাপ একটা ছেলে ভাববে৷ ধুর! আমিও বা কি করবো, ওর মতো এরকম একটা নেশাকাতর মেয়ে কাছে থাকলে নিজেকে কন্ট্রোল করা যায় নাকি! তার উপর ওকে আবার ভালোও লাগে। নাহ! আমি ভুল করেছি। ও বের হলে আগে মাফ চাইবো। হ্যাঁ এটাই করতে হবে। লাগলে কান ধরে মাফ চাইবো।
রোহাম এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎই তুবা ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসে। রোহান পিছনে ঘুরে ওর কাছে মাফ চাইবে বলে যেই ওর দিকে তাকায় ও পুরো স্তব্ধ হয়ে যায়। তুবা মিষ্টি কালারের একটা বাসার ড্রেস পরেছে। রোহান সব ভুলে আস্তে আস্তে করে হেঁটে ওর আশেপাশে ঘুরে ওকে দেখে বলে,
— ওয়াও তুবা, তোমাকে তো হুরের মতো লাগছে। একটা মেয়ে যে কখনো এতটা মায়াবী আর অপরূপা হতে পারে আমার জানাই ছিল না। মাশাল্লাহ।
বলেই যেই রোহান তুবার দিকে তাকায় ও সাথে সাথে ওর মুখ চেপে ধরে। ও আবার ভুল করেছে। ওর ত সরি বলার কথা। তুবা রোহানের কান্ড দেখে যেমন লজ্জা পাচ্ছে তেমন অস্বস্তি বোধও করছে। রোহান দ্রুত বলে উঠে,
— সরি।
~ সরি।
রোহানের সাথে সাথে তুবাও সরি বলে। রোহান অবাক হয়। ও আবার জিজ্ঞেস করে,
— তুমি সরি বলছো কেন?
~ আপনি সরি বলছেন কেন?
ওরা আবার দুজন একি সাথে সেইম প্রশ্ন করে। পরে দুজনেই হেসে দেয় এই অবস্থা দেখে। তুবা লজ্জায় লাল হয়ে আছে। রোহানও ভীষণ লজ্জা পেয়েছে। ওরা কথা বাড়ায় না। রোহান আস্তে করে বলে,
— আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
~ জি।
বলেই রোহান আলমারি থেকে ওর পরনের বাসার ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমের দিকেই যাচ্ছিল। তুবা যেই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে ওমনি পিছন থেকে রোহান ওর কানের কাছে এসে আস্তে করে বলে,
— গোলাপ ফুল।
বলেই ও দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। তুবা রাগী ভাবে রোহানের দিকে তাকালেও ওর চলে যাওয়া দেখে খিলখিল করে হেসে দেয়। খুব হাসছে ও। বিগত এত বছরগুলোতে তুবার মুখে এরকম হাসি কখনো আসে নি। কখনো ওর এত ভালো লাগে নি। কখনো এই অজানা মিষ্টি অনুভূতি ওকে এত আনন্দ দেয় নি। কিন্তু রোহানের কাছে আসার পর থেকেই ওর শূন্য জীবনটা কেমন পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। তুবা এসব ভাবতে ভাবতে হেঁটে জানালার কাছে যায়৷ জানালা দিয়ে রোহানের বাগানটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে খুব সুন্দর একটা বাগান। তুবা ঠিক করে একবার বাগানে যাবে ও। তবে রোহান যদি ওর সাথে থাকে ওর ভালো লাগাটা হয়তো আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। তুবা গালে হাতে দিয়ে মুচকি একটা হাসি নিয়ে একটু আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো মনে করছে আর বেশ লজ্জা পাচ্ছে।
অন্যদিকে,
— এতগুলো সময় হয়ে গেল আর তোরা একটা মেয়েকে এখন পর্যন্ত খুঁজে বের করতে পারলি না? তাহলে তোদের টাকা দিয়ে পেলে লাভটা কি আমার হ্যাঁ? (খুব রাগী ভাবে)
— বস আরেকটু সময় দেন৷ আমরা অবশ্যই আপনার বোনরে খুঁজে বের করমু
— যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওকে খুঁজে বের কর। নাহলে তোদের খবর আছে।
— জি বস। ওই তোরা আয়।
— তুবা তুই কোথায় পলাবি? তোকে আমি খুঁজে বের করবোই। আমার সম্পত্তি ভোগ করা না? শুধু পেয়ে নি তোকে।
রোহানের বাসায়,
রোহান ফ্রেশ হয়ে আসলে তুবাকে নিয়ে লাঞ্চ করতে বসে ওরা। নিলু ওদের জন্য অনেক কিছু রান্না করেছে। তুবার কাছে নিলুর রান্না অসম্ভব ভালো লাগছে। ও একদম মন ভরে খায়৷ ওদের খাওয়া দাওয়া শেষ হলে তুবা আর রোহান আবার ওদের রুমে চলে আসে। রোহান খুব ক্লান্ত থাকায় ওর বেডে এসে বসে পড়ে৷ কিন্তু তুবা চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। রোহান বুঝতে পারে না তুবার আবার কি হলো। ও ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলে,
— কি হলো এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন? কি হয়েছে?
তুবা রোহানের দিকে তাকিয়ে বলে,
~ আপনি জানেন না কি হয়েছে?
— না তো। কি হয়েছে বলো আমাকে?
~ আমার বিকালে ঘুমানোর অভ্যাস। আমি ঘুমাবো।
— ওও। এই কথা। তো ঘুমাও, না করেছে কে। এই যে বালি….(রোহান ওর বেডের বালিশটা ঠিক করতে করতে বলতে গিয়ে থেমে গেল)
রোহান বোকার মতো মুখে যা আসছে তা বলেই যাচ্ছিল। পরক্ষণেই ওর জ্ঞান হয় যে ও কি বলছে। ও আস্তে আস্তে শুষ্ক একটা হাসি দিয়ে তুবার দিকে তাকিয়ে দেখে, ম্যাম রাগী ভাবে ভ্রুকুচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। রোহান এবার বড়ো করে একটা হাসি দিয়ে উঠে তুবার কাছে গিয়ে বলে,
— তুমি কি শুনেছো আমি তোমাকে আমার বেডে ঘুমাতে বলেছি?
তুবা রাগী ভাব নিয়ে ইশারায় মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে। রোহান হাসতে হাসতে বলে,
— হাহা। তুমি ভুল শুনেছো। আমি বলেছি পাশের রুমটা তোমার জন্য। এখন থেকে তুমি ওই রুমেই থাকবে। আসো আমার সাথে।
~ জি চলুন৷
রোহান তুবাকে পাশের রুমটা বুঝিয়ে দিয়ে ওর নিজের রুমে চলে এসে জিহবায় কামড় দিয়ে মনে মনে বলে,
— ছিঃ ছিঃ কি বললাম আমি ওকে। ও আমাকে মনে হয় এবার ঘৃণাই করবে৷ নাহ! আর ভালো লাগে না। আমিও একটু ঘুমাই।
এই বলে রোহানও ঘুম দেয়। এখন ঘড়িতে দুপুর তিনটা নাগাদ বাজে। রোহানের ঘুম ভাঙে বিকেল ৫ঃ১৬ মিনিটে৷ ও আস্তে আস্তে উঠে বসে আড়মোড়া দিচ্ছে। তার ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে বেশ ভালোই বিকেল হয়েছে। তাই ও ঠিক করে তুবাকে গিয়ে দেখে আসবে ও উঠেছে কিনা৷ আসলে রোহান তুবাকে দেখে না অনেকক্ষণ হয়েছে বলেই ও অস্থির হয়ে যাচ্ছে। রোহান পাশের রুমে গিয়ে নক দেয়। তিন চার বার নক দেয়। কিন্তু কোন সারা শব্দ নেই। রোহান বলে,
— কি হলো তুবা দরজা খুলো না কেন? নাহলে কিন্তু আমি চলে আসবো। এই তুবা…
কোন পাত্তা নেই৷ রোহান চিন্তায় পড়ে যায়৷ তাই ও আর দেরি না করে দরজা খুলে ভিতরে গিয়ে দেখে পুরো রুম ফাঁকা। বেডটাও ঘুছানো। রুমে একটা পিঁপড়াও নেই। রোহানের হার্টবিট বেড়ে যায়। তুবা কই? ও দ্রুত নিচে চলে আসে। এসে দেখে নিলু হলরুমে টিভি দেখছে। ওর কাছে এসে রোহান অস্থির কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
— নিলু নিলু তুবা কই?
~আমি ত জানি না ভাইয়া। আপনার সাথে না উপরে ছিল।
— কি বলিস তুই জানিস না মানে! তুবাকে তো আমি আমার পাশের রুমে ঘুমাতে দিয়েছিলাম। এখন উঠে দেখি ও নাই৷
~ হায়! হায়! তাহলে আপুমনি কই গেল?
রোহান অন্য সার্ভেন্টদের ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করে তুবাকে দেখেছে কিনা৷ কিন্তু সবার উত্তর একটাই, না। রোহান ধপ করে সোফায় বসে পড়ে। তুবা তাহলে কোথায় গেল! রোহানের খুব অস্থির আর চিন্তা হচ্ছে। ওর মাথা একদম কাজ করছে না। তুবা কই?
চলবে..?