রুম নাম্বার ২২২,তৃতীয় পর্ব

0
4418

রুম নাম্বার ২২২,তৃতীয় পর্ব
লেখাঃ- হিমু জামান

হঠাৎ চোখ খুলে যা দেখতে পেলাম তা কল্পনার বাহিরে ছিলো। চোখ খুলে দেখি আকাশ ভাইয়াকে দেখা যাচ্ছে না।আমি একা একটা রুমে বন্দী অবস্থায় আছি।কিছুই বুঝতে পারছি না কি করবো।আমার মনে নানান চিন্তা ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে। আমাকে কি এখানে আটকিয়ে রাখা হয়েছে মেরে ফেলার জন্য নাকি অন্য কোনো চিন্তা ভাবনা আছে।খুব ভয় করছিলো একা একা এই রুমটায়।প্রায় ঘণ্টা খানেক সময় যাওয়ার পর একটা শব্দ পেলাম।বাহিরে কেউ আসছে।দরজা খুলছে কেউ।দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই দেখি আকাশ ভাইয়া যে লোকটার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো সেই লোকটাই।আমি ভয়ে ভয়ে বললাম ভাইয়া আপনি আমাকে এখানে আটকে রেখেছেন কেনো?
আমাকে যেতে দিন।ভর্তি হবো না আমি।প্লিজ আমাকে যেতে দিন।লোকটা কিছু না বলে হাসছে।আর দরজাটা লক করে দিলো।
আমি বললাম কি ব্যাপার আপনি দরজা লক করে দিলেন কেনো।প্লিজ আমাকে বাহিরে যেতে দিন।আমি বাসায় যাবো।লোকটা তখন হেসে হেসে বললো তুই বাসায় যাবি কি করে।তোকে যে তর আকাশ ভাই আমার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তর আকাশ ভাই এক লক্ষ দশ হাজার টাকা নিয়েছে আমার কাছ থেকে।এখন থেকে আমি যা বলবো তুই তা শুনবি।নইলে তোকে মেরে ফেলবো।
কি বলছেন এইসব উল্টাপাল্টা। কথাবার্তা ঠিক করে বলুন।আমি একটা ভদ্র পরিবারের মেয়ে।প্লিজ আমাকে যেতে দিন ভাই।আপনিই না বললেন আমি আপনার বোনের মতো।এখন এইসব কেনো বলছেন।
রাখ তোর বোন।নিজের আপন বোন ছাড়া আবার কোনো মেয়ে বোন হয় নাকি।আমি যা বলবো তাই শুনবি।আর একটুও চিল্লাপাল্লা করবি না।তোর চিল্লাচিল্লি কেউ শুনবে না।আর এখন লক্ষী মেয়ের মতো বিছানায় শুয়ে যা।তোকে এখন ভোগ করবো।প্লিজ ভাইয়া আমার সর্বনাশ করবেন না প্লিজ।আপনি আমাকে ছেড়ে দিন।আমি আপনার ছোট বোনের মতো।
লোকটা আমার গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো চুপ কর।তুই এখন শুধু আমার ভোগের জন্যই। এই বলে আমাকে বিছানায় ফেলে দিলো।আমি খুব জোড়াজুড়ি করলাম কিন্তু আমার হাত পা বেধে দিলো খাটের সাথে। আমি কান্নাকাটি শুরু করলাম। আমাকে আরেকটি থাপ্পড় দিয়ে আমার শরীরের সমস্ত কাপড় খুলে দিলো।আর বুঝি পেড়ে উঠলাম না এই জানোয়ার টার সাথে।আমার সর্বনাশ করে দিলো।আমি কান্নাকাটি করতে লাগলাম আর এইদিকে লোকটা আমাকে তার সমস্ত পুরুষালি শক্তি দিয়ে আমার উপর অত্যাচার করতে লাগলো।কিছুক্ষণ পর দেখলাম আমার লজ্জাস্তান থেকে অনেক রক্ত বেরুচ্ছে।
লোকটা রক্ত দেখে হাসতে লাগলো আর বলতে লাগলো সলিড মাল পাইছি।আমি বললাম প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।আমার কথা না শুনে অনবরত অত্যাচার করে যাচ্ছে আমার উপর। কতোটা পাষাণ হইলে মানুষ এমন করতে পারে আরেকটা মানুষের সাথে। লোকটার রাক্ষুসে চাহিদা মিটিয়ে আমার উলঙ্গ দেহটা ফেলে চলে যাচ্ছিলো। এমন সময় পেছনে ফেরে ব্যাগ থেকে এক সেট জামা বের করে আমার উপর ছুড়ে দিয়ে বলে গোসল করে এটা পড়ে নিস।আমি আবার আসবো।খুব মজা পাইসি তোর সাথে ফুর্তি করে।আর আমি খুব খুশি তোর ভার্জিনিটি আজকেই আমি নিজে শেষ করলাম। যা গোসল করে নে।আমি সন্ধ্যায় এসে খাবার দিয়ে যাবো।এই বলে লোকটা বাহিরে তালা লাগিয়ে চলে গেলো। আমি গোসল করে শয়তানটার দেয়া কাপড় পড়ে নিলাম।সন্ধ্যায় আবার তালা খোলার আওয়াজ পেলাম।মনে হয় জানোয়ারটা এসেছে। তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো আর বলছে বাহ আমার কেনা কাপড়ে তোকে তো বেশ সুন্দর লাগছে।সত্যিই তুই অনেক সুন্দরী। তোর বাবা মা অনেক ভালো চাকরিজীবী ছেলের সাথে তোর বিয়ে দিতে পারতো। কিন্তু তোর ভাগ্য খারাপ তুই আমার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছিস।যাইহোক তোর জন্য খাবার নিয়ে এসেছি।এখন তোকে ভোগ করবো তারপর ভোগ করা শেষ হলে খেয়ে নিবি।
লোকটার কথা শুনে মনে হচ্ছে যদি আমার কাছে একটা ছুরি থাকতো তাহলে ছুরিটা এখনি ওর পেটে বসিয়ে দিতাম।
আমি খুব আকুতি মিনতি করে বললাম প্লিজ আমার উপর আজ আর অত্যাচার করবেন না,খুব ব্লিডিং হইসে,শরীর অনেক দূর্বল। আজকের মতো মাফ করে দিন।আর আগামীকাল আমাকে বাসায় যেতে দিন।এটা বলার পর আমাকে সজোরে থাপ্পড় দিয়ে বললো চুপ।আর কখনো বাসায় যাওয়ার কথা বলবি না।বললাম না তোকে আমি কিনে নিয়েছি।এই বলে আমার উপর ঝাপিয়ে পড়লো।আমার ঠোঁট গুলোতে অত্যাচার করতে লাগলো ওর দাঁত দিয়ে।ঠোঁটের একপাশে কেটে গিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। তবুও ওর মনে দয়া হয় নি।আমার উপর অত্যাচার করতেই থাকলো।শয়তানটার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাওয়ার সময় বললো একা থাকবি ভয় করলে লাইট অন করেই ঘুমাবি।এই বলে বাহিরে তালা লাগিয়ে চলে গেলো।
খুব ভয় করছে আমার।রাতে একা একটা নির্জন জায়গায় ঘুমাতে হবে।সারাদিনে শরীরের ওপর দিয়ে অনেক জুলুম অত্যাচার গেসে।শরীর দূর্বল হয়ে গেছে খুব।খাওয়ার কোনো ইচ্ছেই ছিলো না।কিন্তু কিছু খেতে হবে বেঁচে থাকার জন্য।দেখি প্যাকেট খুলে কি নিয়ে আসছে জানোয়ার টা।
প্যাকেট খুলে দেখি শুকনো দুইটা রুটি আর আলু ভাজি।ক্ষুধার পেটে এগুলোই খেয়ে নিলাম।খেয়ে শুয়ে শুয়ে চিন্তা করছি জানিনা আগামীকাল দিনটা আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে।ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যাই।
পরের দিন ঘুম হতে উঠে দেখি দেয়ালে লাগানো ঘরিটায় ৯ টা ৩০ মিনিট বাজে।তার মানে বুঝা গেলো যে রাত পেরিয়ে দিন হয়েছে।জানোয়ারটা হয়তো কিছুক্ষণ পরই আসবে।আবারও আমার শরীরের উপর ঝাপিয়ে পড়বে।ইচ্ছে করছে নিজেকে শেষ করে দেই।শেষ করে দেই নিজের জীবনটাকে।কিন্তু আত্মহত্যা মহাপাপ। এই ভেবে যতদিন বেঁচে থাকা যায় আমাকে বাঁচতে হবে।
কিছুক্ষণ পর তালা খোলার শব্দ শোনতে পেলাম।জানোয়ারটা এসেছে বোধহয়। ভেতরে ঢুকে বললো এই নে তোর জন্য খাবার।খেয়ে নে।আমি বললাম খাবো না আমি।উনি একটা থাপ্পড় দিয়ে বললেন খেয়ে নে বলছি নইলে এখনি মেরে ফেলবো।আমি ভয়ে খেয়ে নিলাম।খেয়ে বললাম আচ্ছা আপনি আমার সাথে জোরপূর্বক এইসব করছেন আমি তো একজন নারী।আপনার ঘরে কি মা বোন নেই?.
লোকটি বললো মা মারা গেছেন। বোন আছে বিয়ে হয়ে গেসে।আর আমার বিয়ে করা বউ আছে।আর ছোট ছোট দুইটা মেয়ে আছে।
আমি বললাম ছিঃ ঘরে বিয়ে করা বউ রেখে অন্য একটা মেয়েকে আটকে রেখে এইসব কেনো করছেন। আপনার তো ছোট দুইটা বাচ্চাও আছে।ছিঃ লজ্জা করে না আপনার? আপনি একটা অমানুষ।

এটা বলার পর সজোরে আমাকে থাপ্পড় দিয়ে বিছানায় ফেলে শুরু হয়ে গেলো আমার উপর তার অত্যাচার।আমি বাধা দিলাম। আমার হাত পা ওড়না দিয়ে বেধে দিলো।আর আমার উপর অত্যাচার শুরু করলো।আমি শুধু কান্না করে যাচ্ছিলাম। কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো।জোরে কান্না করলে আবার থাপ্পড় কিল ঘুষি দেয়।
এইভাবেই যেতে লাগলো দিনগুলো। কখনো কখনো দুই তিন দিন আমাকে খেতে দেয় দিতো না। কারণ জানোয়ারটা কোথায় যেনো যেতো।আর আমাকে না খেয়ে থাকতে হতো।বেঁচে থাকার জন্য শুধু পানি খেতাম।মাঝেমধ্যে নিজের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখি আস্তে আস্তে আমি শুকিয়ে যাচ্ছি।মনে হয় মৃত্যু খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবে আমার জীবনে। এইভাবে বেঁচে থাকার থেকে আল্লাহ তুমি আমার মৃত্যু দাও।প্রতিটি দিন আমার কাছে একেকটা বছরের ন্যায় মনে হতো।
এইভাবে যেতে যেতে আজ তেইশতম দিন অতিবাহিত হচ্ছে। এই মূহুর্তে দিনের ২ টা বেজে ২৫ মিনিট। বাহিরে তালা খোলার শব্দ পেলাম। জানোয়ারটা রুমে প্রবেশ করে দরজা লক করে দিলো। আর বললো তোকে ভালো কিছু খাওয়াতে পারছিনা। আর মাঝেমধ্যে শহরের বাহিরে যাই।তাই দুই তিনদিন তোকে না খেয়ে থাকতে হয়।অনেক শুকিয়ে যাচ্ছিস দিনের পর দিন।তোর প্রতি চাহিদা কমে যাচ্ছে। কি যে করি তোকে।
আমার মনে একটা ভয় কাজ করছিলো। আজকে আর আমার উপর অত্যাচার করে নি।বিছানায় শুয়ে বললো মাথাটা টিপে দে একটু।আমি ভাবলাম একটা সুযোগ নেয়া যেতে পারে।আমি খুব ভালো করে মাথাটা টিপে দিলাম। আর লোকটা ঘুমিয়ে গেলো।
আমি ভাবলাম আমাকে এই সুযোগে বাহিরে বের হতে হবে।কিন্তু দরজা খোলার সময় যদি টের পেয়ে যায় তাহলে আমাকে মেরেই ফেলবে।আমাকে যা করতে হবে কোনো শব্দ না করে।উনার মোবাইলটা দেখলাম বালিশের কাছে।আমি আস্তে করে মোবাইলটা নিয়ে বাথরুমে চলে যাই।আর আম্মুর নম্বর এ কল দেই।
আমি শুধু আম্মুকে বলে ছিলাম আম্মু আমি অনু। আমাকে এখানে একটা রুমে বন্দী করে রেখেছে। আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও।তারপর থেকে শুরু হলো আমার জীবনের আরেকটা কালো অধ্যায়।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here