রহস্যেঘেরা বাংলো,(পর্ব_০৩)

0
1395

রহস্যেঘেরা বাংলো,(পর্ব_০৩)
লাবিবা ওয়াহিদ

আলভি- কে ছিলো ভেতরে আর তুই এভাবে কাঁদছিস কেন?

মিশু- আলভি ওরা.. ওরা আবার এসেছিলো আমায় মারতে।

আলভি- আল্লাহ…তোকে আর একা রাখা যাবে না। চল ভেতরে ওয়াশরুম গিয়ে মুখ ধুয়ে ওযু করে নে তাহলে হয়তো আর হামলা করতে পারবে না।

মিশু- আচ্ছা।

বলেই মিশু ভেতরে গিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে ওযু করার সময় কেউ বারবার বলছে,”ভুল করছিস মস্ত বড় ভুল করছিস” শুধু এটাই জোরে জোরে বলছে। মিশু এবার বুঝেছে এটা ওই অবয়ক গুলোর চাল তাই আর ভয় না পেয়ে ওযু করে নিলো। ওযুর পরে আর কোনো রকম শব্দ পেলো না। মিশু ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখলো আলভি সোফায় শুয়ে শুয়ে আছে।

মিশু- ওই তুই সোফায় শুয়েছিস কেন? নিজের রুমে যা।

আলভি- নাহ তোকে আর রিস্কে ফেলতে পারবো না। তুই বেডে শুয়ে পড় আমি এখানে শুচ্ছি কোনো সমস্যা হবে না।

মিশু- তবুও….

আলভি- নো মোর এক্সকিউজ মিশু যা শুয়ে পড়।

মিশু আর কিছু বলতে পারলো না গিয়ে শুয়ে পড়ে। আযান দিতেই আবার উঠে গেলো আর আলভি কে ডাকতে লাগে। আলভি ঘুমের ঘোরে বলে,”কি হলো ডাকছিস কেন?”

মিশু- ওঠ তাড়াতাড়ি চাবির গোছা এখনই প্রয়োগ করতে হবে।

আলভি- এখন কেন?

মিশু- আমি শুনেছি আযানের পর কোনোরকম অতৃপ্তিকর ঘটনা ঘটে না তাই এটাই ভালো সুযোগ এখনো চাঁদের আলো আছে অল্প অল্প।

আলভি- আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।

মিশু- না এতো সময় নেই আগে চল।

আলভি- আরে ওযু তো করে নিতে দে কারণ এখানে কোনো কিছুরই বিশ্বাস নেই।

মিশু- হুম তা ঠিক চল আমিও ওযু করবো।

বলেই একে একে ওযু করে নিলো। তারপএ ফোন নিয়ে আবার চলে যায় ওই রুমের দিকে। ফোনের ফ্ল্যাশ অন করে সেই জায়গা থেকে চাবির গুচ্ছো টা নেয়। চাবির গুচ্ছো নিয়ে আগে ছাদের দরজা খুলতে যায়। প্রায় ৫২টা চাবির পরই তালা খুলে। তালা টা খুলতেই সেই গুচ্ছো নিয়ে ছাদের শিড়ি দিয়ে যেতে শুরু করে। চারদিক টা এখনো অন্ধকার। শেষে আলভি আর মিশু ছাদে যেতে সক্ষম হয়। অন্ধকারের জন্য দূর দূরান্তে কি আছে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। শুধু এইটুকু বোঝা যাচ্ছে ছাদে কিছুই নেই আর সব আস্তর ভেঙ্গে পড়েছে আর বেশির ভাগ জায়গায়তেই অনেক শেওলা জমে আছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক অনেক বছরে কেউ এক পাও ছাদে রাখেনি। রাখার কথাও না চাবির খোঁজ কেউ পেয়েছিলো বলে মিশুর মনে হচ্ছে না। তবে ঠান্ডা হাওয়াটা মিশু আর আলভি বেশ উপভোগ করছে ভোরের বাতাস এমনিতেই ঠান্ডা আর মনোরম হয়। আস্তে আস্তে সূর্য উদয় হলো।সূর্যের আলোয় মিশু আর আলভি চারদিক চেক করতে লাগে কিন্তু পশ্চিম সাইডে তাকিয়ে দুজনই অবাক হয়ে যায়। কারণ পশ্চিমের সাইডে একেবারে বাংলোটার পাশেই কবরস্থান। সেখানে প্রায় ১০টা কবর। মিশু আর আলভি ভয় পেয়ে গেলো। এরকম কিছু তারা আশা করেনি।

মিশু- এতোক্ষণ আমরা ছাদে ছিলাম বুঝতেই পারিনি এখানে কবরস্থান আছে।

আলভি- হুম রহস্য বাড়ছে এখন চল এখান থেকে অনেক কিছু জানা লাগবে।

মিশু- হুম চল আগে ওই কারুকাজ করা রুমটায় ঢুকতে হবে।

আলভি- হুম চল।

তারপর ওরা ছাদ থেকে নেমে ওই কারুকাজ করা দরজার সামনে আসলো। সেখানে এসে চাবির গুচ্ছো টা নিয়ে সেখানে চেক করে চাবি দিয়ে দরজার তালা টা খুলে। ঘর টায় ঢুকতেই মিশু চিৎকার দিয়ে উঠে। কারণ পুরো রুমেই রক্ত, কঙ্কাল আর পচা মাংসের বিস্রি গন্ধ। হ্যা এটাই সেই রুম যেখানে মিশু সেন্সলেস অবস্থায় ছিলো।

মিশু- আলভি এটাই সেই রুম যেখানে আমি ছিলাম।

আলভি- কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব রুমটা তো তালাবদ্ধ এখানে ঢোকা বা বেরোনো পসিবল না।

মিশু- আলভি আমার কথা বিলিভ কর আমি সত্যি বলছি সেদিন আমি এই রুমে ওই যে ওখানে ছিলাম(হাত দিয়ে দেখিয়ে) আর রুমে কোনো আসবাবপত্র ছিলো না কিন্তু এখানে তো রাজকীয় আসবাবপত্রে ভরা।

আলভি- এই বাড়ি সম্পর্কে সকল ঘটনা আমাদের জানতেই হবে মিশু চল এখান থেকে।

মিশু- কোথায় এই বাড়ি সম্পর্কে জানবো আমরা?

আলভি- পাবো পাবো এখন আয় সময় বেশি নাই।

মিশু- হুম চল।

বলেই কিছু না খেয়েই বেরিয়ে পড়ে দুজনে। অনেক খোঁজাখোঁজি করে এক মসজিদের ইমামের সাথে ওদের দেখা হয়। উনি আলভি আর মিশুকে চিন্তিত আর ভয় পেতে দেখে জিজ্ঞেস করে, “কি হয়ে তোমাদের এভাবে এতো উতলা হয়ে ছুটছো কেন? কোনো সমস্যা নাকি?”

মিশু- আসলে আমরা ওইযে দক্ষিণের পুরোনো বাংলো টা আছে না সেটার অতীতের ঘটনা জানতে চাচ্ছি আর এই বাংলোর রহস্য টাও।

মিশুর কথা শুনে হুজুরটা মুখটাকে কালো করে ফেলে। ওনার এমন রিয়েকশনে মিশু আলভি দুজন দুজনের দিকে একবার তাকিয়ে আবার হুজুরের দিকে তাকায়।
,
,
,
,
,
,
চলবে!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here