বিনিময়ে তোমায় চাই?,পার্ট_০৪
লাবিবা ওয়াহিদ
,
?
,
জয়- হ্যা ডিস্টার্ব করলাম নাকি?
রিফা- আরে না বলুন কি বলবেন?
জয়- বিশেষ কিছু না জাস্ট একটা সাইন লাগবে।
রিফা- ওহ আচ্ছা তো দিন করে দিচ্ছি।
জয় রিফার দিকে ফাইল টা এগিয়ে দিলো। রিফাও মুচকি হেসে ফাইল তা নিলো। লেখা গুলো পড়ে সাইন করে দিলো।
জয়- থ্যাংক ইউ মেডাম।
মেডাম বলাতে রিফা হেসে দিলো। জয়ও হাসলো।
এইদিকে আনাফ ওদের হাসাহাসি দেখে রেগে আগুন হয়ে আছে। আনাফ ল্যান্ডলাইনে রিফাকে ফোন করে ডেকে পাঠালো। রিফাও তড়িগড়ি করে আনাফের কেবিনের দিকে ছুটলো। জয় রিফার যাওয়ার দিকে হ্যাবলার মতো তাকিয়ে কিছুক্ষণ পর চলে গেলো নিজের ডেস্কে।
রিফা- মে আই….
আনাফ- ইয়েস প্লিজ।(রেগে)
রিফা- স্যার…..
আনাফ- চুপপপ অফিসে কি অন্য ছেলের সাথে ঘেষতে আসেন?(রেগে)
রিফা- ছিহ স্যার আপ…..
আনাফ- শাট আপ তোমাকে কথা বলার অনুমতি দিয়েছি?(রেগে চিল্লিয়ে)
রিফা আর কিছু বললো না।
আনাফ- অফিসে আসেন যে জন্যে সেটা করুন ছেলে দের সাথে এতো মাতামাতি করবেন না নইলে এই জব আপনার থাকবে না নাও গেট লস্ট।
রিফা দৌড়িয়ে চলে গেলো ওয়াসরুমে। সেখানে গিয়ে জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো। কি করবে বুঝতে পারছে না। প্রায় কিছুক্ষণ কেদে বাসায় চলে গেলো।
রাতে,
আনাফ- (ইসস মেয়ে টাকে বেশি বেশি বলে ফেলেছি কাজটা মটেও ঠিক হয়নি, এখন কি করবো?)
আনিফা- কাকে নিয়ে ভাবা হচ্ছে শুনি?
আনাফ- ককককই কাকে নিয়ে ভাববো?
আনিফা- আমি তো রহস্য রহস্য গন্ধ পাচ্ছি।
আনাফ- ধুর তেমন কিছু না।
আনিফা- ওহ তাই নাকি আচ্ছা এখন বল রিফার কি অবস্থা?
আনাফ- ওর আর কি হবে?
আনিফা- কাজ ভালোভাবে করছে তো?
আনাফ- হ্যা করছে ঠিকমতোই বাট…
আনিফা- বাট কি?
আনাফ- বকে ফেলেছি ওকে।
আনিফা- আর ইউ ম্যাড? বকলি কেন ওকে শুধু শুধু?
আনাফ- সেটাই তো ভাবছি একটু বেশি রকমই করে ফেলেছি।
আনিফা- ওকে নেক্সট এ জেনো এমন না হয় আর হ্যা ক্ষমা চেয়ে নিবি।
আনাফ- ওকে।
আনিফা- এখন অনেক রাত হয়ে গেছে ঘুমিয়ে পড়।
আনাফ- হুম গুড নাইট।
আনিফা- গুড নাইট।
তারপর আনিফা চলে গেলে আনাফও ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন,
রিফা ইমনের সাথে দেখা করে অফিসে চলে যায়।
রিফা নিজের কেবিনে যেতেই একজন পিয়ন এসে বললো,
পিয়ন- ম্যাম স্যার আপনাকে ডেকে পাঠিয়েছে।
রিফা- আচ্ছা যাচ্ছি।
পিয়ন- ওকে ম্যাম।
তারপর পিয়ন চলে গেলো। রিফাও আনাফের কেবিনে নক করে বললো,
রিফা- আসবো স্যার?
আনাফ- হ্যা প্লিজ।
রিফা কেবিনে ঢুকে বললো,
রিফা- কিছু দরকার স্যার?
আনাফ রিফার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখলো চোখ গুলো ফুলে গোল আলু হয়ে আছে। আনাফ ভাবছে কি বলবে বুঝতে পারছে না।
আনাফ- সরি।
রিফা অবাক হয়ে আনাফের দিকে তাকালো এবং বললো,
রিফা- কেন স্যার?
আনাফ- ওভাবে বলার জন্য। সত্যি আমি দুঃখিত আসলে রাগ উঠলে আমি কখন কি বলে ফেলি বুঝতেই পারিনা।
রিফা- ইটস ওকে স্যার কোন ব্যাপার না। তবে চরিত্র নিয়ে কথা না উঠালেই হয়তো বেশি ভালো হতো।
আনাফ- সরি বললাম তো।
রিফা- হুম কোন সমস্যা নেই স্যার।
আনাফ- মাফ করেছো তো?
রিফা- হুম।(মুচকি হেসে)
আনাফ- তো চলো।
রিফা- কোথায় স্যার?
আনাফ- রেস্টুরেন্ট প্লিজ কাম।
রিফা- বাট স্যার আমি এসব লাইক করি না।
আনাফ- কোন সব?(ভ্রু কুচকে)
রিফা- আপনার সাথে কেন যাবো আমি? নিধি বা মুক্তা কে বলুন আমি তাদের সাথে যাবো।
আনাফ- জাস্ট শাট আপ। আমি খেতে যাচ্ছি না সেখানে ডিলের জন্য যাচ্ছি। আর ডিল এ ওদের মতো সাধারণ স্টাফ কেন নিবো? তুমি আমার পিএ তাই তুমিই একমাত্র যেতে পারবে সো কোনো কথা না বলে চলো স্টুপিড।
রিফা- ও..ও..ওকে স্যার।
তারপর রিফা আর আনাফ আফিস থেকে বেরিয়ে গেলো। আনাফ ড্রাইভিং সিটে বসলো আর রিফা কনফিউজড হয়ে গেলো। রিফাকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে আনাফ বললো,
আনাফ- কি হলো এভাবে হ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন?
রিফা- ইয়েএ মানে স্যার আমি কোথায় বসবো??
আনাফ- কেন সামনের সিটে।
রিফা- বাট স্যার আমি কি করে বসতে পারি আপনি আমার বস আর…
আনাফ- নো মোর এক্সকিউজ উঠো তাড়াতাড়ি।(চোখ গরম করে)
আনাফের চোখের দিকে তাকাতেই রিফা ভয়ে চুপসে গেলো।এবং কিছু না বলে গাড়িতে উঠে গেলো।
আনাফ- সিট বেল্ট লাগাও।
রিফা- আসলে স্যার…
আনাফ- বলো।
রিফা- আমি সিট বেল্ট লাগাতে পারিনা।
আনাফ- এইটা পারোনা ওহ গড।
রিফা মাথা নিচু করে ফেললো। আনাফ রিফার সিট বেল্ট লাগিয়ে দিলো। এতে তো রিফা অনেকটাই শকড।
আনাফ- তুমি কি ভেবেছিলে আমি তোমায় অপমান করবো? নাহ তা নয় সম্মান করি ছোট বড় সবাইকে। এমনকি তোমাকেও।(রিফার চোখের দিকে তাকিয়ে)
রিফা আনাফের কথায় আনাফের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকালো। এই প্রথম রিফা আনাফের দিকে ভালো ভাবে তাকালো। চোখগুলা বেশি বড়ও না আবার ছোটও না, লম্বা নাক, চুলগুলো এলোমেলো মনে হচ্ছে, নেভি ব্লু শার্ট কনুই পর্যন্ত ফোল্ড করা আর কালো কোটি। চেহারায় অদ্ভুত মায়া। অবাক দৃষ্টিতে দেখছে রিফা আনাফকে। ইমনের কথা মনে পরতেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলো।
রিফা-(উফফফ কিসব ভাবছি আমি। না ইমনের আমি অন্য কারো না। আমি ইমন কে ভালোবাসি। অনেক বেশি ভালোবাসি।)
আনাফ আর কিছু না ভেবে গাড়ি স্টার্ট দিলো এবং বড় ফাইভ স্টার হটেলের সামনে এসে গাড়ি থামালো। রিফা এতোবড় হোটেল দেখে অনেকটাই অবাক কারণ সে কখনোই এতো বড় হোটেলে আসেনি। বলতে গেলে বাস্তবে কখনোই দেখেনি শুধু টিভিতে দেখেছে।
আনাফ- আসুন এভাবে হা হয়ে আছেন কেন?
রিফা- না কিছুনা চলুন।
তারপর দুইজন একসাথে ভেতরে প্রবেশ করলো। আনাফকে দেখে তো সব মেয়েরা চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে মরছে। তাদের আনাফের বডিগার্ডস আটকিয়ে রেখেছে। রিফা এদের কান্ডে অনেকটাই অবাক এটা ভেবে যে এতো মেয়ে একটা ছেলের জন্য কি করে এতো পাগল হয়?
আনাফের এগুলা তে কোন মাথাব্যথা নেই সে তো সামনের দিকে তাকিয়েই হাটছে। আনাফ রিফাকে নিয়ে একটা বড় রুমে গেলো সেখানে আরও অনেক মানুষজন আছে, ওয়েটারস রাও আছে।
,
,
,
,
,
চলবে❤
(কেমন লাগলো জানাবেন?)