বিনিময়ে তোমায় চাই?,পার্ট_০৬

0
2566

বিনিময়ে তোমায় চাই?,পার্ট_০৬
লাবিবা ওয়াহিদ
,
?
,
আনাফ নিজের কেবিনে কাজ করছে এমন সময়ই নাহিদ আনাফের কেবিনে প্রবেশ করলো। আনাফ রেগে বললো,

আনাফ- তুমি এখানে কি করছো??(রেগে)

নাহিদ- আ..আ..সলে কালকের জন্য আমি লজ্জিত তাই তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি।

আনাফের রাগ মুহূর্তোে চলে গেলো তারপর মুচকু হেসে বললো,

আনাফ- সমস্যা নেই তুমি যে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছো এটাই অনেক।

নাহিদ- থ্যাংকস কেন উই ফ্রেন্ডস?

আনাফ- হ্যা তা তো অবশ্যই।

তারপর দুইজন দুইজনকে হাগ করলো।

আনাফ- এখন আসো বসো কথা বলি।

নাহিদ- হ্যা নিশ্চয়ই।

তারপর দুইজন বসে কথা বলতে লাগলো। কথায় কথায় নাহিদ আনাফকে জিজ্ঞেস করলো,

নাহিদ- তা ডিল টা কি পাবো না?

আনাফ- সরি ব্রো কাল একজন ফাইনাল করে দিয়েছে।

নাহিদ- ওহ গুড। তা কোন কোম্পানি?

আনাফ- আর এক্স কোম্পানি।

নাহিদ- ওয়াও কংগ্রেস।

আনাফ- থ্যাংকস।

নাহিদ- শুনেছি এই কোম্পানি সহজে কাউকে ডিল দেয়না আর বাংলাদেশে তো কাউকেই না। এই ফাস্ট টাইম দিলো আর সেটা তুমিই পেলে সত্যি অনেক গর্বের বিষয়।

আনাফ- হুম সবটাই আমার স্টাফস আর আমার পরিশ্রমের ফল। প্রথমে বাবাই তো এই কোম্পানি কে এতোটা এগিয়ে এনেছে দিনরাত পরিশ্রম করে। আজ হয়তো বাবার পরিশ্রম স্বার্থক হবে।

নাহিদ- হুম ইনশাল্লাহ তবে তুমিও কম পরিশ্রম করোনা।

আনাফ- কিছুটা।(হেসে)

এমন সময়ই রিফা নক করলো,
রিফা- স্যার মে আই কাম ইন?
,
আনাফ- ইয়েস কাম।
,
রিফা ফাইল চেক করতে করতে ভেতরে ঢুকলো।
,
রিফা- স্যার এই……

বলেই থেমে গেলো নাহিদকে দেখে। নাহিদকে দেখে ভেতরে ভেতরে রিফা ভয় পাচ্ছে সেটা নাহিদ বুঝতে পারলো।
,
নাহিদ- সরি আপু কালকের ব্যবহারের জন্য। আসলে এতোদিন এক অন্ধকারে ছিলাম যেখানে আমার চোখ খুলে দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না।
,
রিফা মুচকি হেসে বললো, সমস্যা নেই ভাইয়া এখানে আপনার কোনো ভুল বা দোষ নেই।

রিফার কথাগুলো কেন জেনো আনাফের খুব ভালো লাগছে। সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রিফার দিকে। এতোদিন রিফার দিকে তেমন ভালো করে লক্ষ্য করেনি আজ মন ভরে রিফাকে দেখছে। সেই কাজল কালো চোখ, গোলাপের পাপড়ির ন্যয় চিকন ঠোঁট, মায়াভরা চেহারা কে দেকজে যে কোনো ছেলেই পাগল হয়ে যাবে। এককথায় আনাফ ক্রাশিত রিফার উপর।

নাহিদ- হ্যা জানো আমার তোমার মতোই একটা বোন আছে তা তুমি আমার বোন হবেতো?

রিফা- এ কেমন কথা আমিতো আপনারই বোন।

নাহিদ- হুম তা তো অবশ্যই। (হেসে)

রিফা- হ্যা এখন স্যার এখানে আপনার একটা সাইন লাগবে।

আনাফের হুস নেই। আনাফকে আনমনে দেখে রিফা জোরে চিল্লিয়ে বললো,

রিফা- স্যায়ায়ায়ায়ায়ারররর?(চিল্লিয়ে)

আনাফ- হুম হ্যা কি হয়েছে?

রিফা- এখানে আপনার সাইন লাগবে।(ফাইলটা দেখিয়ে)

আনাফ- কোথায় দেখাও।

রিফা- এখানে…

তারপর যে যে জায়গায় সাইন লাগবে আনাফ করে দিলো। সাইন হতেই রিফা বলে উঠলো,

রিফা- স্যার আমি এখন আসি, আর ভাইয়া পরে এক সময় কথা হবে এখন কাজ আছে।

বলেই রিফা চলে গেলো নিজের কেবিনে। নাহিদ তো অবাক রিফার ব্যবহারে।

নাহিদ- কিছু না বলেই চলে গেলো?

আনাফ- কাজ পাগলি কাজ ছাড়া কিছুই বুঝে না।

নাহিদ- ভালোই তো।

আনাফ- হুম যবে থেকে এসেছে কাজ আর কাজ কোনো খুত ধরতে পারিনি ওর। এতোটাই নিখুত কাজ করে।

নাহিদ- ওরে বাবা এমন পিএ পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার।

আনাফ- হুম আগের টা তো পুরোই ফাকিবাজ ছিলো।

নাহিদ- হাহা কি করেছে?

আনাফ- কি বলবো…

বলেই আনাফ সবটা খুলে বললো নাহিদকে। নাহিদ তো হাসতে হাসতে শেষ।

আনাফ- দেখ একদম হাসবি না।

নাহিদ- ওকে ওকে কুল আমি তো জাস্ট ইমাজিন করছিলাম তোর কি অবস্থা হয়েছিলো।(হাসতে হাসতে)

আনাফ- এখন বেশ আছি।

নাহিদ- হুম তা মনের মানুষ কেউ আছে?

এই কথাতে কেন জানিনা হঠাৎ আনাফের রিফার কথা মনে পড়লো। কিন্তু কেন সেটা বুঝতে পারলো না আনাফ।

আনাফ- (নাহিদ মনের মানু্ষ বলতেই কেন রিফার কথা মনে পড়লো?হয়তো ভুল ধারণা আমার। ওহ গড কিযে হচ্ছে আমার সাথে ধুরররর।)

নাহিদ- কি হলো বল?কোথায় হারিয়ে গেলি?

আনাফ- হুম না কেউ হয়নি এখনো।(হেসে)

নাহিদ- আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছিস নাতো?

আনাফ- ওহ কাম অন লুকাবো কেন?

নাহিদ- ওকে ওকে দেখা যাবে।

আনাফ- হুম দেখিস।

নাহিদ- তা তো অবশ্যই। এ বাবা অনেক বেলা হয়ে গেছে আমার যেতে হবে।

আনাফ- ওকে আরেকদিন সময় করে আসিস।

নাহিদ- ওকে বাই।

আনাফ- বাই।(মুচকি হেসে)

নাহিদ কেবিন থেকে বেড়িয়ে পড়লো। ফোনে কথা বলতে বলতে বেরোচ্ছিলো এমন সময়ই নিধির সাথে ধাক্কা খেলো। এতে তো নিধি চরম রেগে গেলো।

নিধি- কোন কানা রে আসোস ধাক্কা দিতে?(রেগে)

নাহিদ- মাইন্ড ইউর লেঙ্গুয়েজ মিস।

নাহিদ সানগ্লাস পড়া তাই নিধি বললো।

নিধি- চোখে চশমা দিয়া হাটলে আশেপাশের মানুষ যদি নাই দেখতে পান তাহলে পড়েন কেন?

নাহিদ- ওয়াট দ্যা হেল।(ভ্যাবাচেকা খেয়ে)

বলেই নাহিদ চোখের সানগ্লাস টা খুললো।সাথে সাথে নিধির মনেও লাড্ডু ফুটলো। নিধি অনেকক্ষণ হা করে দেখলো নাহিদকে। নাহিদ নিধির সামনে তুড়ি বাজিয়ে বললো,

নাহিদ- ও হ্যালো মিস কোনো কথা বলছেন না কেন?

নিধি বেক্কলের মতো বললো,

নিধি- আর ইউ সিঙ্গেল?

নাহিদ- ওয়াট নন্সেস এগুলো কি ধরণের কথা স্টুপিড মেয়ে।

বলেই নাহিদ চলে গেলো কারণ তার কাছে এগুলো সবই আজাইরা মনে হচ্ছে। আর নিধি সেখানে দাড়িয়েই হাসছে + কাদছে। মুক্তা সেখান দিয়েই যাচ্ছিলো নিধির এই অবস্থা দেখে শক খেলো।

মুক্তা- কিরে এমন হ্যাবলার মতো মুখ করে রেখেছিস কেন?

নিধি- এ্যা এ্যা এ্যায়ায়া আমার ওকে ভাল্লাগছে আমার ওকে চাইই চাই।(বাচ্চাদের মতো কেদে)

নিধির কান্না দেখে তো মুক্তা অবাকের শেষ পর্যায়ে।

মুক্তা- কাকে চাস?(অবাক হয়ে)

নিধি- ওই ছেলেটাকে ইসসস কত্তো কিউট।(বুকে হাত দিয়ে)

মুক্তা- কোন ছেলে? দিনেও কি স্বপ্ন দেখা শুরু করলি নাকি?(অবাক হয়ে)

নিধি- ইয়েস ইয়েস স্বপ্ন দেক্ষা সুল্লু হপ্পে তাও দিনে।?

বলেই মুক্তা কে ছেড়েই চলে গেলো। নিধির এহেম কান্ডে মুক্তা অনেক অবাক কারণ নিধি এমন কখনোই করেনি তার সাথে।

,
,
চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here