বিনিময়ে তোমায় চাই?,পার্ট_১২,১৩ অন্তিমপর্ব?
লাবিবা ওয়াহিদ
পার্ট_১২ ১ম অন্তিম পর্ব?
.
?
.
আনাফ যখনই বিছানায় বসতে নিবে রিফা একটা নাইফ আনাফের দিকে ধরে বললো,
রিফা- একদম বিছানায় বসবেন না আমার থেকে ১৮ হাত দূরে থাকবেন পাইসেন টা কি আমাকে খেলনার পুতুল? যে যেভাবে বলছে সেভাবেই করতে হচ্ছে। আর আমাকে বিয়ে করে এতো মহান ভাববেন না আমি ইমনের ছিলাম ইমনের আছি & থাকবো সেই জায়গায় আপনি কে কেউ থাকবে না।
আনাফ ছুরি টা দেখে হাসলো।
আনাফ- ফল কাটার ছুরি দিয়ে মানুষ কাটবা হাউ ফানি।(হাসতে হাসতে)
রিফা- কে বলেছে যে ফল কাটা ছুরি দিয়ে মানুষ কাটা যায়না? আমি চাইলে সব পসিবল।
আনাফ- ওহ রিয়েলি?
বলেই একটান মেরে নাইফ টা হাত থেকে নিয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দিলো।
আনাফ- এবার ইমপসিবল পসিবল করে দেখাও।(রিফার দিকে এগোতে এগোতে)
রিফা ভয়ে ভয়ে পিছোচ্ছে আর কাপা কাপা গলায় বলতে লাগলো,
রিফা- দে.. দে.. দেখুন একদম আমার কা.. কা.. কাছে আসবেন না আ.. আমি এই বিয়ে মানি।
আনাফ- তোমার মানো বা না মানো আই ডোন্ট কেয়ার আর আল্লাহও ডোন্ট কেয়ার বিয়ে তো হয়েছেই সো…
বলেই ডেবিল হাসি দিয়ে রিফাকে একটা চোখ টিপ মারলো। রিফা ভয়ে ভয়ে বারবার ঢোক গিলছে আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। একসময়ে খাটের এক কোণায় গিয়ে থামলো রিফা কারণ আরেকটু পিছে এগোলেই পুছে ধরাম করে পড়ে কোমড় ভাঙ্গবে। আনাফ মুচকি হেসে রিফাকে একটান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।
পরদিন সকালে,
?
রিফা আস্তে আয়াতে টিপ টিপ করে চোখ খুললো। চোখ খুলে দেখে সে আনাফের খালি বুকে। রিফার তো কাল রাতের ক্তহা মনে পড়তেই রেগে লাল হয়ে গেলো আর উঠে যেতে চাইলে আনাফ টান দিয়ে আবার রিফাকে নিজের বুকে ফেলে দিলো। রিফা এতে আরো রেগে গেলো এবং বললো,
রিফা- কি হচ্ছে টা কি?(রেগে)
আনাফ- তোমার মেয়ে।(দাত কেলিয়ে)
রিফা- উফফফ মাথার তাড় কি সব ছিড়েছে আপনার ছাড়ুন বলছি আর কাল রাতে আমাকে টাচ করার সাহস কি করে হলো আপনার আপনাকে আমি দেখে নিবো ছাড়ুনন।(চিল্লিয়ে)
আনাফ- প্রথমত তুমি আমার বউ তোমাকে টাচ করার রাইট আমার আছে এন্ড এখনো টাচ করেই আছি তো প্রব্লেম কিসের?এখনই আমায় দেখে নাও না সমস্যা কোথায়?(দাত কেলিয়ে)
আনাফের এই দাত কেলানো টা রিফার একদম সহ্য হচ্ছে না। তার রিফার নিজের ডান হাতের কনুই দিয়ে আনাফের পেটে গুতা দিলো আর আনাফও সাথে সাথে ছেড়ে দিলো। রিফাও এই সুযোগে ভৌ দৌড় দিয়ে সোজা ওয়াশরুম ঢুকে পড়লো আর আনাফ খিটখিটিয়ে হাসতে লাগলো।
আনাফ- বাব্বাহ আমার বউ টা এত্তো পাজি জানতাম না তো। ইমন তোমার দেওয়া কথা আমি রাখবো খুব শীঘ্রই তোমার নামটা ওর মন থেকে মুছে ফেলবো।
রিফা শাওয়ার শেষ করে দেখলো সে কোনো জামা আনেনি।
রিফা- এমায়ায়া জামা আনতে তো ভুলেই গেছি ধুর সব দোষ ওই বজ্জাত টার এহহহ বিয়ে করেছে বলে মনে হচ্ছে হিরের কারখানা পাইসে হুহ। এখন জামা চাইবো কি করে বজ্জাত টার কাছে? উমমম….ধুর ধুর ভালো লাগে না এসব অত্যাচার।
এভাবেই নিজের মনে বকবক করছিলো ওমনি আনাফ দরজা ধাক্কাতে লাগলো।
আনাফ- কি হলো ম্যাডাম বেলা তো গড়িয়ে যাচ্ছে আপনি কি বাথরুম পরিষ্কার করছেন নাকি যে এতো লেট হচ্ছে??(কিছুটা রেগে)
রিফা- দেখুন একদম বাজে কথা বলবেন না আমি জামা আনতে ভুলে গেছি আপনার জন্য তআই বের হতে পারছি না।
আনাফ- ওহ এই ব্যাপার তা যেভাবে আছো সেভাবেই চলে আসো মানা করেছে কে আমরা আমরাই তো।(দাত কেলিয়ে)
রিফা- এই এই একদম চুপ লুচি থুক্কু লুচু কোথাকার।
আনাফ- হুম এখানকার এখন আসবা নাকি দরজা ভাঙ্গবো???
রিফা- এই না না আপনি জাস্ট একটা জামা দিন প্লিজ।
আনাফ- ওকে।
বলেই আনাফ আলমিরা থেকে তার একটা পছন্দের ড্রেস আনলো। আর রিফা ভাবতে লাগলো ” কি ব্যাপার বলার সাথে সাথে রাজি হলো কেন কোনো মতলব নেই তো?”
আনাফ- নাও।
রিফা আস্তে দরজা ফাক করে দেখলো একটা শাড়ি। আপাতত কোনো উপায় না পেয়ে ছো মেরে শাড়ি টা নিয়ে আনাফের মুখের উপর ঠাস করে দরজা টা বন্ধ করে দিলো। রিফার কান্ডে আনাফ হাসছে। এমন সময়ই দরজায় কেউ নক করলো। আনাফ একটা টিশার্ট পড়ে দরজা খুলে দেখলো আনিফা আর তার কিছু কাজিন।
আনিফা- কি এতো বউএর সাথে থাকলে হবে খেতে হবে তো নাকি?
আনাফ- আমি বউএর সাথে নেই। সেই ওয়াশরুমে যে ঢুকে বসে আছে বের হওয়ার নাম নেই।
আরিফা- ঢং এর শেষ নেই।(মুখ বাকিয়ে)
ঠিক তখনই রিফা ওয়াশরুম থেকে বের হলো। মিতা আরিফা কে চিমটি কেটে বললাম,
মিতা- চুপ কর তো তোর সমস্যা কোথায়??
আরিফা- আমার কোনো সমস্যা নেই।
আনাফের আরিফার উপর খুব রাগ উঠছে কিন্তু কিছুই বলছে না। আনিফা পরিস্থিতি সামলাতে বলে,
আনিফা- আচ্ছা তোরা আয় আমরা যাই কেমন?
আনাফ- ঠিক আছে।
তারপর আনিফা মিতা আরিফা সবাই চলে গেলো।
রিফা- ওই মেয়েটা কে যে আমাকে ঢং বলছে? সাহস তো কম না।(রেগে)
আনাফ এই এক সুযোগ পেলো রিফাকে জেলাস করানোর।
আনাফ- ওর সাথে আমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো এন্ড ছোট থেকে আমায় ভালোওবাসে। নেয়েটা কিউট না??(দাত কেলিয়ে)
রিফা- তো জান না ওই মেয়েটার কাছে এতো যেহেতু কিউট।(এহহহ কি কিউট রে.. পুরোই ইন্দুরের চেহারা। কে জানে এরে কি করে এই লিচুর পছন্দ হলো। আর পছন্দ হলে ওরে বিয়ে করতো আমাকে কেন করবো আজব।)(রেগে)
আনাফ দরজা বন্ধ করে রিফাকে নিজের কাছে টেনে রিফার চুলের ঘ্রাণ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আর রিফা বারবার নিজেকে ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করছে। প্রায় কিছুক্ষণ রিফার ভেজা চুলের ঘ্রাণ নিয়ে একটা কিস করে ওয়াসরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। রিফা আনাফের কান্ডে অবাক। তারপর তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আনাফকে রেখেই নিচে চলে গেলো কারণ সে এখন আনাফকে বিশ্বাস করতে পারছে না। নিচে গিয়ে দেখতে পেলো আনিফা, আরিফা আর মিতা বসে কথা বলছে। মিতা রিফাকে দেখতেই বলে উঠলো,
মিতা- আরে ভাবী আসো বসো আনার সাথে ভাইয়া কোথায়?
রিফা – ফ্রেশ হয়ে আসছে।
আনিফা- ওও আচ্ছা।
এমন সময়ই রায়হান এসে হাজির।
রায়হান- কি শালিকা রা কি করছো আমার বউএর সাথে আর উনিই(রিফাকে দেখিয়ে) ও হ্যা উনিতো আমার সালার বউ রিফা।
আনিফা- এই দিন দিন তুমি এতো ভুলাক্কার কেন হচ্ছো বলোতো?
রায়হান – কোথায় ভুলাক্কার হলাম বউ তোমাকে তো দিব্বি মনে আছে আর আমার শালিকাদেরও কি বলো শালিকা রা।
মিতা,আরিফা একসাথে- হ্যা জিজু তা তো অবশ্যই।
রায়হান- দেখলে কি বললো।(ভাব দেখিয়ে)
আনিফা- হয়েছে আর ভাব দেখানো লাগবে না।
এমন সময়ই আনাফ শিরি দিয়ে নামতে নামতে রিফাকে বললো,
আনাফ- ইটস নিট ফেয়ার বউ তুমি আমাকে রেখে নিচে এসে আড্ডা দিচ্ছো?
মিতা- আরেক বউ পাগলা হাজির।
বলতেই সবাই হাসতে লাগলো শুধু আরিফা বাদে। সে তো ভেতরে ভেতরে রেগে ফুলে ফেপে রয়েছে।
রায়হান- সাবাস শালা আমার সাবাস তুইও আমার মতো বউ পাগলা হবি ভাবতে পারিনি।
আনাফ- বউ পাগলি হলে তো বর পাগল হবেই তাইনা বউ?(রিফাকে উদ্দেশ্য করে দাত কেলিয়ে)
রিফা চোখ রাঙিয়ে আনাফের দিকে তাকালো। আনাফ সাথে সাথে দাত কেলানো অফ করে হালকা কাশি দিলো। দুইজনের কান্ডে সবাই হু হু করে হেসে দিলো। এবারও আরিফা জ্বলছে।
ওদের হাসাহাসির আওযাজে রনিয়া ওয়াহিদ এসে বললো,
রনিয়া- হিয়েছে অনেক মাতামাতি হাসাহাসি হয়েছে এখন আয় খেতে আয় সবাই। রিফা মা আমার সাথে এসো।
রিফা- জি আন্টি সরি আম্মু।
,
,
,
,
চলবে?
বিনিময়ে তোমায় চাই?
লাবিবা ওয়াহিদ
13 অন্তিম পর্ব
.
?
.
রনিয়া ওয়াহিদ কিছুটা হাসলো। তারপর সবাই এক সাথে খেতে বসলো। রিফা আনাফের সাথে বসতে নিলে আরিফা কোথা থেকে এসে আনাফের পাশের চেয়ারে বসে পড়লো। তাই রিফা মনে মনে আনাফ আর আরিফাকে ইচ্ছেমতো গালাগাল করে মিতার পাশে গিয়ে বসলো। রিফার এমন ফেস দেখে আনাফের খুব হাসি পাচ্ছে। খাওয়ার সময় আরিফা আনাফকে বিভিন্ন ভাবে জ্বালাচ্ছে। এতে আনাফ বিরক্ত হলেও রিফাকে এমন রেগে থাকা দেখে খুবই আনন্দ পাচ্ছে৷ আর রিফা সে তো মনে মনে আরিফাকে গনধোলাই দিয়ে দিচ্ছে। এসব আর সহ্য করতে না পেরে রিফা তাড়াতাড়ি খাবার শেষ করে উঠে চলে গেলো। রিফার এতো তাড়াতাড়ি খাওয়া দেখে আনাস ওয়াহিদ অবাক হয়ে বললো,
আনাস- কি হলো আনাফ বউমা এতো তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে চলে গেলো কেন?(অবাক হয়ে)
আনাফ- তা তো জানিনা বাবা হয়তো ওর এটা অভ্যাস।
আরিফা- এতো কুরুচির অভ্যাস ছিহ বড়দের সম্মান কি করে দিতে হয় সেটাও জানেনা দেখছি।
আরিফার কথায় আনাফ রেগে বললো,
আনাফ- ওহ তুই বুঝি সম্মান দিয়ে উল্টিয়ে ফেলেছিস। তোর আমার সাথে এতো ঘেষাঘেষির জন্যই চলে গেছে।
রনিয়া- কি বলছিস তুই আর আরিফা তোকে আমি আগেও বলেছি এখন আনাফ বিবাহিত ওর বউ আছে আনাফের সাথে বেশি মিশবি না আর তুই কিনা? আরেকবার যদি এসব শুনি আমি ভুলে যাবো তুই আমার বোনের মেয়ে মনে রাখিস।(রেগে)
বলেই রনিয়া ওয়াহিদও উঠে চলে গেলো।
মিতা-(ঠিক হয়েছে বারবার শুধু ভাইয়ার সাথে লাগিস তাইনা এখন বোঝ কেমন লাগে হুহ।)
তারপর খাওয়া শেষে যে যার রুমে চলে গেলো। আর আনাফও কিছু কাজে বাইরে চলে যায়। রিফা রুমে বসে বসে ভাবছে কখন আনাফকে শায়েস্তা করবে। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও আনাফ আসে না।
রিফা- ওহ না আসার কারণ বুঝেছি ওই কুত্তির সাথে ঢলাঢলি কুরতে ব্যস্ত দাড়া দেখাচ্ছি মজা।
তখনই মিতা রুমে ঢুকলো। মিতার সামনে রিফা নিজের রাগ প্রকাশ করলো না মুচকি হেসে বললো,
মিতা- কি হলো ভাবি একা একা কি করছো?
রিফা- নাহ তেমন কিছু না। ওহ তোমার নামটাই তো জানা হলোনা।
মিতা- ওহ কাম অন ভাবি এতো কথা হলো অথচ নাম জানো না??
মুক্তা- ওকে বলে লাভ নেই যেই বসের পিএ ছিলো তার নাম পর্যন্ত জানেনি।
মুক্তার কথা শুনে রিফা আর মিতা দুজনেই দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো নিধি আর মুক্তা দাঁড়িয়ে আছে।
মিতা- কি বলো আপু ভাইয়ার নামই জানতো না??(অবাক হয়ে)
নিধি- হ্যা তা আর কি বলবো।
রিফা- তোরা এখানে?(অবাক হয়ে)
মুক্তা- উমমম হুম আমরাই।(হেসে)
রিফা- কিন্তু….
আনাফ নিধি আর মুক্তার পেছন থেকে বললো,
আনাফ- আমি এনেছি এই রাগি বউ টাকে শান্ত করার জন্য।
আনাফের কথায় সবাই হেসে দিলো সাথে রিফাও। হাসি থামিয়ে নিধি বললো,
নিধি- রিফা এগুলো কি শুনি তুই নাকি খিটখিটে মেজাজি হয়ে গেছিস।
রিফা- এই বজ্জাত টার জন্য বাধ্য হয়েছি।(ভেঙচি কেটে)
আনাফ রেগে বললো,
আনাফ- কি বললা আমি বজ্জাত??(রেগে)
রিফা- বজ্জাতের কারখানা পুরোই।
আনাফ অনেক রেগে গেলো এবং সেখান থেকে চলে গেলো। আনাফ চলে যেতেই চারজন মিলে অনেক গল্প করতে লাগলো আর আরিফা কে শায়েস্তা করার প্লেনও করলো।
রিফা- তাহলে এইটাই ফাইনাল।
মিতা- হুম ভাবি একদম।
মুক্তা- আমার কাছে আছে জিনিস টা।
রিফা- ওয়াও দোস্ত তুই তো কাজের কাজ করে দিলি।
মুক্তা- হু দেখতে হবে তো শালিটা কার।(ভাব দেখিয়ে)
রিফা- হইসে এতো দরদ দেখানোর প্রয়োজন নেই।
তারপর ৪জন মিলে আরিফার রুমের সামনে আসলো। আরিফা ফেসিয়াল করছে আর বলছে,
আরিফা- আজ তো আমায় আনাফ দেখে হার্টফিল করবে এতো সুন্দর করে সাজবো না সবাইকে পাগল করেই ছাড়বো আর ওই মেয়েকে উচিত শিক্ষা দিবো লা লা লা।(গান গাচ্ছে)
রিফা-(আগে নিজে তো বাচ তারপর আমার সাথে লাগতে আসিস।)
বলেই হাসতে লাগলো মনে মনে। তারপর যখন আরিফা চোখে শশা গুলো রাখলো ওমনি রিফা পা টিপে টিপে আরিফার রুমে ঢুকলো আর বিছানার কাছে যেয়ে হাতের রাবারের সাপ টা আস্তে করে বিছানায় বসিয়ে দিলো।
রিফা-(ব্যাস এর দিন দুনিয়া ক্ষতম আমার সাথে লাগা তাইনা এবার বুঝবা এই রিফা ওয়াহিদ কি জিনিস।)
ভেবেই চারজন মিলে রুমে চলে আসে। প্রায় ঘন্তা খানিক অপেক্ষা করতেই চিৎকার শোনা গেলো আরিফার। রিফারা তো এই সময়ের অপেক্ষা তেই ছিলো। ওরাও বেরিয়ে আসলো রুম থেকে। আরিফা নিচে গিয়ে চিল্লাচ্ছে সাপ সাপ বলে। মুখে সেই ব্লেক ফেসিয়াল তো আছেই। রিফারা চারজন মিলে আরিফার অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে ফ্লোরে বসে পড়েছে। তারপর অনেক
কষ্টে হাসি থামিয়ে চারজনই নিচে চলে গেলো।
রনিয়া- সাপ কোথা থেকে আসবে পাগল নাকি তুই?
আরিফা- খালামনি বিশ্বাস করো সত্যি আমি সাপ দেখেছি সেটা আমার বিছানাতেই।
আনাফ- আর ইউ ম্যাড?এ বাড়িতে তাও তোর রুমে সাপ মজা নিচ্ছিস??(রেগে)
আরিফা- আনাফ বিশ্বাস করো আমি সাপ দেখেছি প্লিজ চলো আর সাপটাকে বের করো।
আনাফ- ওকে চল দেখা সাপ কোথায়।
বলেই সবাই মিলে উপরে গেলো আরিফার রুমে। রুমে গিয়ে কোনো সাপ না পেলো না। এতে আনাফ রাগাম্বিত হয়ে বললো,
আনাফ- ফাজলামো ভালো কিন্তু অতিরিক্ত কোনো কিছুই না।
বলেই আনাফ চলে গেলো নিজের রুমে। আর রিফা ভেতরে ভেতরে খুশিতে মরে যাচ্ছে। রনিয়া ওয়াহিদ যেতেই চারজন আরিফাকে ঘিরে ধরলো।
নিধি- সত্যিই সাপ ছিলো?
আরিফা- হ্যা সত্যিই ছিলো কিন্তু এখন কেন নেই?
রিফা- হয়তো সেটা সাপরূপি ভূত ছিলো।
আরিফা- ক..ক..কি ভূ..ভূত??
রিফা- হুম আবার আসতে পারে তাই যত তাড়াতাড়ি পারো এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাও নইলে আজই তোমার শেষ দিন।
আরিফা- নায়ায়ায়ায়া আমি এই বাড়িতে আর থাকবো না এক্ষুণি আমি সব গুছিয়ে বাসায় চলে যাবো।
মুক্তা- হু তাড়াতাড়ি।
বলেই ৪জন রুম থেকে বেরিয়ে আসলো।তখন আরিফা নিচে যেতেই মুক্তা আরিফার রুমে গিয়ে সাপ টা সরিয়ে ফেলেছিলো তাই কেউ পায়নি।তারপর চারজন মিলে লাঞ্চ করে যে যার রুমে চলে গেলো। আরিফাও কোনো রকমে বাড়ি থেকে বিদায় হয়েছে।রিফা রুমে ঢুকতেই আনাফ রিফাকে হেচকা টান মেরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।
রিফা- কি হচ্ছে টা কি ছাড়ুন আমায়।
আনাফ- উহু আমাকে বজ্জাত বলার শাস্তি দিবো।
রিফা- বাজে কথা কম বলুন।
আনাফ- বাজে কিথা তাইনা বোঝাচ্ছি মজা।
সাথে সাথেই আনাফ রিফাকে কিস করে বসলো।
,
,
?
এভাবেই কাটতে লাগলো দিন রিফাকে সারাক্ষণ জ্বালিয়ে মারে আনাফ। একবারের জন্যেও সে ইমনের কথা রিফাকে মনে করতে দেয়না। রিফাও ভুলে যায় ইমনকে আর ভালোবাসতে শুরু করে আনাফকে। প্রায় ৩মাস অতিবাহিত হওয়ার পর বুঝতে পারে সে আনাফকে ভালোবেসে ফেলেছে তখন থেকে ভাবতে শুরু করে কিভাবে তাকে বলবে। এইদিকে নিধিকেও নাহিদ ভালোবেসে ফেলে এবং তাদের বিয়েও সম্পূর্ণ হয়।
একদিন,
আনাফ বাসায় এসে দেখলো সারা বাসা অন্ধকার। বারবার ডাকার পরেও কেউ সাড়া দেয়নি।তাই সে আস্তে আস্তে শিরি দিয়ে উঠে দেখতে লাগলো সব রুমই ফাকা। নিজের রুমে গিয়ে দেখলো বিছানার উপর একটা চিরকুট রাখা আর সেটার পাশে কেন্ডেল যেটা রুমকে কিছুটা আলোকিত করেছে। আনাফ গিয়ে চিরকুট টা নিলো। সেটাতে লেখা আছে “ছাদে এসো”। আনাফও আর দেরি না করে ছাদে চলে গেলো। আনাফ যেতেই একটা ঘন্টা বেজে উঠে আর সাথে সাথে লাইট জ্বলে উঠে চারপাশে। সকল আলোর মাঝে রিফা একটা লাল জর্জেট শাড়ি পড়ে দাঁড়িয়ে আছে হাতে লাভ বেলুন নিয়ে। রিফার পেছনে আনাফ খেয়াল করে দেখলো বিশাল আকারে লেখা হেপি বার্থডে মাই লাভ। আনাফ এতো বড় সারপ্রাইজ দেখে স্তব্ধ। সে ভাবতে পারেনি রিফা এভাবে তাকে উইশ করবে। রিফা আস্তে আস্তে এগিয়ে আসলো,
রিফা- জানিনা আপনাকে কিভাবে বলবো তবে এটা বলবো আপনায় আমি আমার হৃদয়ে স্থান দিয়েছি। আমার সমগ্র জুড়ে শুধু আপনিই আছেন। ভালোবাসি আপনাকে আনাফ। খুব বেশি ভালোবাসি এই সব কিছুর বিনিময়ে তোমায় চাই আমি কি তোমার হতে পারি?? হেপি বার্থডে ভালোবাসা।
আনাফ তো খুশিতে রিফাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আনাফ- হ্যা আমার ভালোবাসা আমি যে শুধুই তোমার। আজ আমি জিতেছি আমি আমার ভালোবাসার মর্যাদা পেয়েছি। শুকরিয়া তোমাকে আমার জীবনে আসার জন্য। আই লাভ ইউ রিফা।
রিফা- টু।
রিফার টু বলাতে আনাফ রিফাকে ছেড়ে দিয়ে ভ্রু কুচকে বলে,
আনাফ- টু মানে?
রিফা- পুরোটা বলতে শরম করে।?
রিফার কান্ডে আনাফ হাসলো এবং বললো,
আনাফ- পাগলি।
রিফা- আপনার।
এভাবেই বেচে থাকুক রিফা আর আনাফের ভালোবাসা।ভালো থাকবেন সবাই।
সমাপ্ত❤