অশুভ খেলা,পর্ব: 01

0
4356

অশুভ খেলা,পর্ব: 01
লেখায়: সাদিক হাসান

সামনের সিটে বসা নীল চোখের মেয়েটার দিকে আরেকবার তাকালাম। ভালো মতো খেয়াল করে দেখলাম, মোটামুটি ভালোই দেখতে মেয়েটা। কিন্তু যেই জিনিসটা আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করছে সেটা হলো মেয়েটার নীল চোখ জোড়া।
ট্রেনের একই কেবিনে আমার ঠিক সামনেই মেয়েটা বসে রয়েছে। আর কোন যাত্রী নেই ভিতরে। এসি বার্থ, তিন যাত্রীর জায়গা রয়েছে শুধু রাতের বেলা দেখে। কিন্তু কোন কারণে হয়তো তৃতীয়জন আসেনি। ট্রেনে ওঠার আগে স্টেশনে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখলাম। হয়তো কোন কিছু ঘটেছে! আর এ কারণেই শুধু আমি এবং সেই মেয়েটা এখন একা। মেয়েটা খুলে রাখা একটা বইয়ের দিকে ঝুঁকে আছে। অদ্ভূত দর্শনের একটা বই। বইটার আবার আজব নাম। রিডার হান্টিং।
এখনকার যুগে এইসব বই-ই বেশি চলে।
মনে মনে ভাবলাম আমি। তাতে আমার কী! ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছি। রাতের ট্রেন। ঘুমিয়েই পার করে দেওয়া যাবে। রাতের বেলা আবার ট্রেনে ছিনতাইয়ের ভয় থাকে। কিন্তু সামনে বসা মেয়েটাকে দেখে সেইরকম মনে হলো না। ভদ্র লোকের মতো বই পড়ছে। আমার মতো আধা শিক্ষিত মানুষেরাই পারে এইরকম করে ঘুমিয়ে কাটাতে।
হঠাৎ করে মেয়েটা আমার দিকে তাকালো। বুকের মধ্যে কেমন যেনো ধক করে উঠলো আমার। ভেবেছিলাম আমাকে কিছু বলবে। কিন্তু কিছুই বললো না। আবারো পড়ায় মন দিলো।
এমন সময় দরজায় কে জানি নক করলো।
-“স্যার কিছু কী লাগবে আপনাদের?” বললো লোকটা।
-“আমার একটা বালিশ লাগবে।” বলে লোকটাকে বিদায় করে দিলাম।
মনে মনে চিন্তা করলাম, মেয়েটা আবার কী না কি মনে করে। তবুও আমার কাছে ঘুম আগে।
সিটের পাশেই টেবিল লাইট জ্বালানো ছিল। বাশি খবরের কাগজ পড়ার মধ্যে একটা আনন্দ আছে। তাই শুয়ে থেকে লাইটের আলোয় পেপারের হেডলাইন গুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম।
হঠাৎ একটা খবরে এসে চোখ আটকে গেলো আমার।
শিরোনামে লেখা ছিল, “কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে আবারো উদ্ধার ঠোঁট সেলাই করা লাশ।”
ট্রেনে উঠে এইরকম খবর পড়ে মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করলো। তবুও কৌতুহল নিয়ে পড়তে শুরু করলাম লেখাটা,
“গত এক সপ্তাহে তিনটা মরদেহ পাওয়া গিয়েছে কমলাপুর স্টেশন থেকে কিছুদূরের রেললাইনের উপর। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে প্রত্যেককে। তাদের মধ্যে সবাই ছিল ট্রেনের যাত্রী। পরিচয় নিশ্চিত হবার পর জানা গেছে সবাই তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করছিল। লাশ গুলোর মধ্যে দুইজন ছেলে এবং অপরজন মেয়ে। কিন্তু সবাইকে খুন করার পদ্ধতি একই। সবার মুখ সেলাই করে দেওয়া হয়েছে এবং সেলাইয়ের উপর দেওয়া হয়েছে গাঢ় লাল লিপস্টিক। এছাড়াও লাশ গুলোর বুক থেকে হৃৎপিন্ডটা উধাও।
পুলিশ তদন্তে নেমেছে এবং নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুসারে, তিনটা লাশেরই যাত্রাপথ ছিল চট্টগ্রাম। ট্রেন থেকে তারা কী করে লাইনের ওপর এলো আর কিসের ভিত্তিতে এই খুন গুলো হচ্ছে সেটা এখনো জানা যায়নি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া করা হয়েছে। যাত্রীদেরও জানানো হয়েছে যদি সন্দেহজনক কাউকে চোখে পরে তাহলে অবশ্যই যেনো পুলিশকে অবগত করা হয়।”
পেপারটা রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। তাহলে আসল ঘটনা হলো এই! আর আমি এইসবের কিছুই জানি না। সামনে বসা মেয়েটাও হয়তো সব কিছু জানে, অথচ আমি জানি না। আমার নাম শাওন আহমেদ। একটা খুবই জরুরী কাজে যাচ্ছি চট্টগ্রাম। বিষয়টা একই সাথে ভয়ানকও। আমি না গেলে হয়তো কারো জীবন নিয়েও টানাটানি হয়ে যাবে। শুধু যাবো, একদিন থাকবো, আবার রাতের ট্রেনে ফিরে আসবো। দুনিয়ার এত খবর রাখার মতো সময় নেই আমার।
-“চট্টগ্রাম যাচ্ছেন?” হঠাৎ করে মেয়েটা আমাকে বলে উঠলো।
-“ট্রেনটা নিশ্চয় চট্টগ্রামই যাচ্ছে।” জবাব দিলাম আমি।
মেয়েটার চেহারা দেখে মনে হলো কিছুটা বিব্রতবোধ করছে এইরকম উত্তর শুনে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে একটা হাসি দিলাম আর বললাম,
-“হ্যাঁ চট্টগ্রামেই যাচ্ছি। আপনিও তো সেখানেই যাচ্ছেন!”
-“হ্যাঁ।”
-“আচ্ছা খবর কি শুনেছেন? এই ট্রেনের যাত্রীদের নাকি খুন করা হচ্ছে? তাও আবার বীভৎস ভাবে!” প্রশ্ন করলাম আমি। দেখলাম মেয়েটার মুখে কোন পরিবর্তন হলো না। মেয়েটা বললো,
-“হ্যাঁ শুনেছি। কিন্তু এই ট্রেনেরই যাত্রী ছিল এটা ঠিক না। হতে পারে তারা ফিরছিল ঢাকা থেকে আবার অন্য কোথাও থেকে মরদেহ এনে ফেলে রাখা হচ্ছে ট্রেনের লাইনের ওপর।”
যা ভেবেছিলাম! মেয়েটাও জানে। আর সুন্দরী নীল চোখের মেয়েটা যেচে কথা বলায় আমিও খুশি। অন্তত সাত ঘণ্টার জার্নি ফাঁকা ফাঁকা যাবে না।
ঘুম পাচ্ছিল না আমার। বালিশটা মিছেমিছি নেওয়া হয়েছে সেটা এখন বুঝতে পারছি। কিন্তু তবুও দিনে অনেক কাজ, শক্তি ক্ষয় যাবে। মেয়েটাকে উপেক্ষা করে ঘুমাতেই হবে আমাকে। যা মনে করার করুক মেয়েটা তাতে। কিন্তু হুট করেই কেনো জানি ঠান্ডা লাগছে। কেবিনটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। কোন একটা অশুভ সংকেত বারবার হুমকি দিচ্ছে যেনো। মনের ভিতর কে জানি অনবরত বলেই চলেছে, পালা। পালা এখান থেকে। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব পালা। কিন্তু কোথায় পালাব আমি? কোথায়? চট্টগ্রাম যেতেই হবে আমাকে যে করেই হোক না কেন।

অধ্যায়- ১;
যাত্রার শুরু।

ট্রেনের সিটে বসে রয়েছে সালমা হক। সামনেই বসে রয়েছে একটা ছেলে। রাতের বেলা এইরকম ফার্স্ট ক্লাস কোচে একা একটা ছেলের সাথে জার্নি করা আসলেই একটু বিব্রতকর। কিন্তু সালমার কোন ভয় নেই। কেননা ভয় পাওয়ার সময় অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে তার। এখন যা আছে সেটা হলো অফুরন্ত সাহস। তাই নিজেই সামনের সিটের যাত্রীর সাথে ভাব জমাতে চাচ্ছে আগ বাড়িয়ে। এই কাজে অবশ্য নিজেকে অনেকটাই পরিবর্তন করতে হয়েছে তার। নিজের উদ্দেশ্যর সাথে নিজেকে পরিবর্তন করতে একটু বেগই পেতে হয়েছে সালমাকে। আর কতো আড়াল করবে নিজের আসল রূপ! চোখে যে নীল রঙের লেন্স লাগিয়েছে এইবার, সেটাও খুব একটা ভালো লাগছে না নিজের কাছেই। মুখের মেকআপ আর জামা পড়ার ধরন প্রায় সব কিছুই পাল্টে ফেলেছে। কখনো বা বোরকা কখনো বা হেজাব। আবার কখনো কামিজ। এইরকম করেই নিজেকে আড়াল করে যাচ্ছে সালমা। কিন্তু খুব বেশিদিন নয়। আর কয়েকটা দিন হলেই অন্য রাস্তায় এগোবে সে।
সালমা খেয়াল করেছে সামনে বসা লোকটা তার চোখের দিকে তাকাচ্ছিল বারবার। তারমানে টোপ গিলছে ধীরে ধীরে। ঠোঁটের কোণায় ফুটে উঠলো এক ক্রুর হাসি। যেটা সাধারণ কোন মানুষের হতেই পারেনা। কিন্তু সেও জানে না যে সে ঠিক কার সামনে বসে রয়েছে।
রাত সাড়ে বারোটা বাজে। এখনো পাঁচ ঘণ্টা সময় আছে হাতে। কিন্তু এই বিরতিহীন যাত্রায় এক ঘন্টার মধ্যেই তাকে যা করার করতে হবে এবং খেলা শুরু হবে এখুনি।
সালমা খেয়াল করলো সামনে বসা লোকটা ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই বেশি কথা আর না বাড়িয়ে বললো,
-“আপনার হয়তো ঘুম পাচ্ছে। আপনি রেস্ট করুন আমিও ঘুমাই। পৌঁছানোর পর আবার কাজ আছে।”
কাজ হলো তার কথায়। সে দেখলো সামনে বসা লোকটাও শুয়ে পড়লো ধীরে ধীরে। কিন্তু সালমা যে ঘুমানোর নয়! তার কাজ করতে হবে। এক অন্যরকম কাজ।

অধ্যায়- ২;
ট্রেনে আতঙ্ক।

নিজের আসনে বসে রয়েছে আমজাদ আলী। একজন টিটিই সে। বয়স বেশি হলে পঞ্চান্ন হবে। আজকে তার মুখের হাসি দেখে কে! ট্রেন ছাড়ার আগে স্টেশনের পাশের হোটেল, মুনলাইটে গিয়ে শরীর আর মন দুটোই চাঙ্গা করে এসেছে বলে কথা। বিউটি নামের মেয়েটাকে প্রচুর মনে ধরেছে তার। ভালো সার্ভিস দেয়। আবারো তার কাছে যাবে একদিন।
মনে মনে ঠিক করলো আমজাদ।
একজন ট্রেনের টিটিই হয়ে তার যা লাভ হয় সেটা ভাবতেও পারবে না কেউ। অনেক টাকা কামাই করে প্রতিদিন। আর রাতের বেলা নিজের শরীরের চাহিদা মেটাতে টাকা উড়ায় বিভিন্ন নারী দেহের পিছনে। প্রতিদিন ট্রেনে যাতায়াত করে অনেক লোক, তাদের মধ্যে অনেকেরই টিকেট কাটা থাকে না। এবং সেইসব লোকদের কাছ থেকে বিনা রশিদে টাকা আদায় করেই দিন পার করে আমজাদ আলী।
বাহিরে থেকে একটা বোতলে করে বাংলা নিয়ে এসেছে সে। রাতের বেলা এখন যাত্রী কম সাথে কাজও নেই। ঠান্ডাও পড়তে শুরু করেছে একটু একটু। এইরকম অবস্থায় শরীরটা গরম করার থেকে ভালো আর কী হতে পারে!
নিজের জায়গায় বসে ধীরে ধীরে বোতল ফাঁকা করে দেয়। এরপর বোতলটা লুকিয়ে রাখে এক জায়গায় এবং বেরিয়ে পড়ে রাউন্ডে।
ঘুরতে ঘুরতে যখন বাথরুমের কাছে সে আসে তখন হালকা হওয়ার জন্য ঢুকে পরে সেখানে।
শিস দিতে দিতে হালকা হচ্ছিল আমজাদ আলী। কিন্তু হঠাৎ করেই তার ঘাড় বেয়ে নেমে যায় এক শীতল হাওয়া। শরীর শিরশির করে ওঠে তার। কিন্তু তার কাজ তখনও শেষ হয়নি।
হুট করেই তার কানের কাছে ফিসফিস করে কেউ বলে, “আজকে তোর শেষ রাত।”
চমকে উঠে পিছনে ফিরে তাকায় আমজাদ। কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলো না। টয়লেটে সে ছাড়া আর কেই বা থাকবে! কিন্তু বেশ ভয় পেয়ে গেলো সে। রেললাইনের উপর পরে থাকা লাশের কথা সেও শুনেছে। কিন্তু তেমন গুরুত্ব দেয়নি। এখন কেনো জানি খুব ভয় করছে তার। তাই মদের প্রভাব মনে করে সেই ভয়কে দূরে রাখার চেষ্টা করলো।
কাজ শেষ করে যেই টয়লেটের দরজা খুলতে যাবে তখন দ্বিতীয়বারের মতো ভয় পেয়ে যায় আমজাদ।
কেননা দরজা খুলছিল না। অনেকবার চেষ্টার পরেও দরজা খুলতে পারেনা সে। মনে হচ্ছিল বাহিরে থেকে কেউ হয়তো দরজা লক করে দিয়েছে।
ভয়ের একটা ঠান্ডা স্রোত পুরো শরীর জুড়ে নেমে যায়। দরদর করে ঘামতে শুরু করে সে।
বারবার দরজা ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু স্টিলের দরজা ভাঙা এতটা সহজ নয়। এদিকে আমজাদের শরীর অবশ হয়ে আসতে চাচ্ছে। মদের নেশা কেটে গেছে অনেক আগেই।
সে দরজার ধাক্কা দিচ্ছিল আর চিৎকার করছিলো এমন সময় পিছনে আবার একটা জোরে হাসির আওয়াজ আসে। একটা পুরুষের হাসির আওয়াজ।
পুরো টয়লেট কেঁপে উঠছিল সেই আওয়াজে।
আমজাদের চিৎকার চাপা পড়ে যায় হাসির শব্দের আড়ালে।
“এদিকে তাকা।” মোটা, এবং কর্কশ একটা কন্ঠ নির্দেশ দেয় তাকে।
চলন্ত ট্রেনের ঝিকঝিক শব্দ, বন্ধ টয়লেটে চারদিকে হাসির আওয়াজ এবং এই নির্দেশ শুনে যেনো আমজাদ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যায়। অনেক কষ্টে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকায় সে।
পিছনে তাকিয়ে যেই দৃশ্য দেখে সেটা দেখার সাথে সাথে সেখানেই জমে যায় ট্রেনের টিটিই আমজাদ আলী।
নিজের পঞ্চান্ন বছরের জীবনে এইরকম ভয়ানক দৃশ্য সে কখনো দেখেনি।
ট্রেনের টয়লেটে একটা ফ্যান লাগানো থাকে। আর সেই গোল ফ্যানটাই ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।
একটা মানুষের আকৃতি ধারণ করছে সেটি। মানুষ বললে ভুল হবে, কারণ মাথাটা পশম ওয়ালা ছিল।
আমজাদ যেদিকেই তাকায় সেদিকেই দেখে দেয়াল ফুরে বের হচ্ছে অসংখ্য কালো পশম ওয়ালা হাত।
প্রতিটা হাতে ধরে রাখা একটা করে সুই।
হৃৎপিন্ড যেনো বের হয়ে আসতে চাইছিল আমজাদের। কিন্তু তার পুরো শরীর অবশ হয়ে আসতে চাইছে। এক দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে রয়েছে সদ্য সৃষ্টি হওয়া এক পিশাচের মুখের দিকে।
পুরো মুখে জানোয়ারের মতো পশম। পশমগুলো চামড়া বিহীন মাংসে উঠেছে। লাল মাংস থেকে টপটপ করে রক্ত মেঝেতে পড়ছিল আর একটা বিশ্রী গন্ধ বের হচ্ছিল।
সাথে সাথে আমজাদ আবারো সেই কণ্ঠস্বর শুনতে পায়।
“ওকে চাই আমার। ওকে দিয়ে নিজের তৃপ্তি মেটাতে চাই আমি। আর কারো সাথে ওর মিলন হতে দিবো না। যদি তা হয় তবে মরতে হবে। মরতে হবে সবাই কে।”
কথাটা শোনার সাথে সাথে আমজাদ খেয়াল করলো চারদিক থেকে হাত গুলো তার দিকেই এগিয়ে আসছে। প্রতিটা সুইয়ের মাথায় পাতলা সুতো স্পষ্ট দেখতে পারছিল সে।
নিজের পরিণতির কথা আর চিন্তা করতে পারলো না আমজাদ। চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে আসে এবং মেঝেতে পরে যায় তার দেহ।
মাটিতে পরার সাথে সাথে টয়লেটের দরজা আলতো করে খুলে গেছে সেটাও দেখার সৌভাগ্য আমজাদের আর হয়ে উঠলো না।

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here