তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_২৫

0
1642

তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_২৫
লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্মনাম)

নিবিড়ের হাতের চাপ আমার গালে খাচ্ছি। সাথে ঠোঁটের ও। এত বিরক্ত লাগছে। আমার ক্ষমতা থাকলে এই ছেলেকে সরিয়ে হাতে কামড় লাগিয়ে দিতাম। আমার ডান গালে ওর বাম হাতের চার আঙ্গুলের ছাপ বসে পরেছে এতক্ষণে নিশ্চয়ই। আর আমার বাম গালে ওর বুড়ো আঙ্গুল। সাথে আমার সেই বাম গালেই নিবিড় এর ঠোটঁ চেপে ধরে চুমু। পাক্কা পাঁচ মিনিট এ অবস্থায় আছি। এখন গাল ব্যথা করছে।নিজেকে যে ছোটাবো তার উপায় ও নেই। নিবিড় এর ডান হাত আমার পিঠ বেয়ে কোমড়ে নিয়ে চেপে নিজের সাথে মিশিয়ে রেখেছে। মনে হচ্ছে আর ১ সেকেন্ড এভাবে থাকলে আমি ব্যথায় মরেই যাবো। আর সবুর করতে পারলাম না। নিবিড় এর বুড়ো আঙ্গুল ছুটিয়ে দিলাম এক কামড় বসিয়ে।

-উফফ মায়াবিনী! (বলে আঙুল নিজের মুখের ভিতর দিয়ে রাখলো)

মুখ বারবার নাড়াচ্ছি। নিজের হাত দিয়ে নিজের গাল ধরে রেখেছি।

-এই মায়াবিনী। খুশি হয়ে চুমু খেলাম আর তুমি কামড় দিলে?

-খুশি হয়ে চুমু? বাপরে আমার গালটায় দাগ করে ফেলেছো আঙ্গুলের। (বলে আয়না দেখতে নিলাম)

-গালে যে ভালোবাসার দাগ৷ তা তো দেখবে না?।

-প্রচুর ভালোবাসা তোমার, কচুর রুপ দিলে?। তা এত খুশি কি ভেবে?

-তুমি এক লাগেজে সব আটাতে পেরেছো তাই আর কি?।

-বিরক্তিকর। (বলে আয়নায় দাগ দেখছি)

নিবিড় আমার পিছনে এসে দাড়ালো। আয়না দিয়ে আমাকে দেখছে।

-মায়াবিনী তোমাকে এমন দাগ আরো পেতে হবে। আর কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা।

আয়না দিয়ে বড় বড় করে তাকালাম। এই ছেলে অনেক অসভ্য। সাথে নিলজ্জ ও।

একটা দিন কি করে পার হলো কি জানি। রাত কেটেছে আমার বাসায়। আমি ও বাসায় যেতে চাইলাম। নিবিড় বলল না যাওয়া যাবে না। একবারে কাল সকাল সকাল যেন চলে যাই। মা বাবা কতবার নিতে চাইলেন। আমার ঘাড়ত্যাড়া জামাই আমাকে ছেড়ে দিব্যি চলে গেল। মা বাবাকেও এই ওই বুঝিয়ে। ভেংচি কেটে দিছি। কিন্তু যাওয়ার আগে আবার ওর সেই পুরোনো কাজ। যা আমার শরীরে কম্পন সৃষ্টি করে।হোটেল থেকে বের হওয়ার আগে সবার অগোচরে কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলল,

-কালকে সন্ধ্যার পর থেকে আমাদের নব জীবনের সূচনা হবে, দ্বিতীয় বিয়ে তো কি হয়েছে? বাসর হবে না? প্রথম বাসর ফুল ছাড়া করেছি বলে এবারও কি তাই করব? তা হবে না। আর আজ রাত বন্ধ ঘরে আমার পাশে এক বিছানায় শুলে পরে হয়ে যাবে যে…৷

বলে কানের থেকে মুখ সরিয়ে উৎসকে বলল,
-বুঝছো না ভাই সবুরের ফল মিষ্টি।

-হ্যা দুলাভাই ঠিক বলছো।কিন্তু কেন এখন এটা বললা?

-বাইরে চলো বুঝিয়ে দিচ্ছি। (উৎসের কাঁধে হাত দিয়ে বাইরে নিয়ে চলে গেল)

কথাটা যে আমাকে বলেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অসভ্য ছেলে। কোনদিন লজ্জায় আমার মেরে ফেলবে। ভাবতেই ওর ফিসফিসিয়ে বলা কথা মনে পরে গেল। লজ্জায় নাকি শিউরে ওঠাতে এমন হলো জানি না তবে এ জানি হটাৎ ঘামতে শুরু করেছি। নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। এভাবে কেউ শ্বাসরোধ করতে পারে?

সকালে নাস্তা করে আমি, উৎস আর শশী আপু আমার শ্বশুর বাড়িতে যাচ্ছি। ভাইয়া নয়তো বাবা আমাকে দিয়ে আসতো। ভাইয়া বাংলাদেশে এসে নতুন জব নিয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠান করে তিনদিনের ছুটি শেষ করে ফেলেছে। আজকে অফিস চলে গেছে। শশী আপু রুশমিকে আনতেই যাবে তাই আর একটা বড় ভাই উৎস তো আছেই। তাই একেই নিলাম। মৌ তিন্নি থেকে উৎস অনেক বেটার। ওই দুইটা গেলে আমার দেবরটাকে জ্বালিয়ে মারবে। সব দিক থেকে আমার উৎস ভাই ভালো।

-চল ভাই চল। এত রেডি হতে হবে না। আমর কোনো ননদ নেই।

-আরে মায়াবী একটাকে নে।

তাও আমি দুইজনকেই নিয়ে নিতাম। আমার কাছে কয়েকদিন থাকতো তিন্নি মৌ। কিন্তু নিজেই আজ শহরের বাইরে যাবো। মেয়ে দুইটাকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে যাওয়া যায় না। একটা বড় ছেলে আছে বাসায়। তাই রেখেই গেলাম।

-মৌ, তিন্নি আমি তোদের নিয়ে এক সপ্তাহ ওই বাসায় রাখব। কিন্তু আজকে না। ভাবীপুর সাথে কয়েকদিন কাজ কর। বিয়ে বাড়ি ছিল সব অগোছালো । প্লিজ বোন রাগ করিস না।

-আরে আপি চিল। রাগ করবো কেন। তুই না নিলেও আমরা কারন টা বুঝেছি। আমরা বেহায়া কিন্তু নাক কাটা না। তুই যাহ।?

-হ্যা রে আপি। ভাবীর সাথে আমরাও কাজ করবো। ওকে একা করে যাওয়া ঠিক না।?

-লক্ষী বোন গুলো আমার।( বলেই ফ্লাইং কিস করলাম)

ওরা দুইটাও সেম দিল। এরা ভীষণ দুষ্ট কিন্তু মন টা খুবই ভালো। হেসে ওদের বিদায় দিয়ে এলাম।

শ্বশুর বাড়িতে পৌঁছে দেখি বাবা, নিবিড়, নীরব কেউ নেই। মা আর খালা এখন বাসায়। রহিমা খালা আমাকে দেখেই খুশি হয়ে গেলেন।
বউমা আইছে বউমা আইছে বলে রান্নাঘর থেকে মাকে ডেকে এনেছে।
মাকে উৎস আর শশী আপুর কাছে বসিয়ে রেখে এলাম। নাস্তা রেডি করলাম চা বানালাম আর রহিমা খালার সাথে কথা বললাম। এই দুইদিন অনেককিছু হয়ে গেছে।

-নিবিড় আর নীরবের ঝগড়া হয়েছে?

-হ বৌমা। অনেক ঝগড়া হইছে৷ নিবিড় বাবা তো নীরব বাবা রে মাইর দিতে চাইছিল। পরে ভাইজান ফিরাইচ্ছে।

-কবে হয়েছে?

-কালকের আগে হ পরশু রাতে।

-বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পর?

-হ। জানো বৌমা আমি এত বছর এইনে আছি কোনোদিন দুইবাবারে ঝগড়া করতে দেহি নাই। নিবিড় বাবা নীরব বাবা রে কোনোদিন মারব আমি বিশ্বাসই হয় না।

-কি নিয়ে হয়েছিল তুমি জানো খালা?

-অতো বুঝি নাইকা। তবে হ নিবিড় বাবা একটা কথা অনেক বেশি কইছে। দূরে থাকবি, ওর থিকা দূরে থাকবি।

ভাবতে লাগলাম ওর থেকে মানে কার থেকে? হিসেব মিলচ্ছে না। কিছুক্ষণ চুপ ছিলাম। খালা আবার বললেন,

-নতুন যে মাইয়াডা আইছে আমার একটুও ভালা লাগে না। বেশরম মাইয়া।

-রুশমির কথা বলছো?

-দূরু নাম জানি নাকি আমি।

-আচ্ছা আচ্ছা বলো কেন খালা কি করেছে?

-তুমি যাওয়ার পর থাইকাই নিবিড় বাবার রুমে যায় মাইয়াডা। অনেকটা সময় পার কইরা আসে। বাবা বাসায় থাকলে মাইয়াডা বাবার কাছেই বেশি থাকছে। তুমি যাওয়ার পর তিনদিনই মাইয়াডা নিবিড় বাবার লগে বাইরেও গেছে।ভাবীজান পরশু রাতে ঝগড়া থামানোর সময় কইছিল আগে নিজে ঠিক হ। বাইরের মেয়ে যখন তখন তোর রুমে কেন ঢুকে? আরো অনেক কিছুই এমন কইলো।

সকাল থেকে খুব এক্সাইটেড ছিলাম। শরীর বারবার কেঁপে উঠছিল। নিবিড় এর সাথে হানিমুনে যাওয়া বলে কথা। কত রকম চিন্তা অনুভুতি গুলো দানা বেঁধে ছিল মনে। খালার কথা শুনে এসব আপাতত ভুলে গেলাম। আমার আর নিবিড় এর বেডরুমে অন্যকেউ যাবে? আমার অনুপস্থিতিতে? তাও আমারই হাসবেন্ডের কাছে? রাগ হলো ভীষণ রাগ হলো। শুধু খালার সামনে স্বাভাবিক রইলাম।

-খালা মেয়েটার নাম রুশমি। আর সে অনেক অসুস্থ। সারাদিন ওকে অনেকখানি সময় দিতে হয়। আর রুশমি তো নিবিড় এর পুরোনো বন্ধু। ও ছাড়া ওকে কে সময় দিবে বলো?

-তাই বইলা একটা পোলা আর মাইয়া একঘরে থাকবো কেন?

-আচ্ছা আমি তোমাকে বোঝাচ্ছি।শশী আপু ও তো নিবিড় এর বন্ধু। ওইদিন শশী আপুর স্বামী মানে আমার ভাইয়া ড্রয়িং রুমে ছিল আবার আমি ও ছিলাম। অথচ দেখো শশী আপু আর নিবিড় আমাদের রুমে দরজা আঁটকে কথা বলছিল।কেউ কিছু মনে করেছিল? তোমার কাছে খারাপ লেগেছিল?

-না।শশী তো ছোট কাল থিকা আসে। ওই মাইয়া আর শশী এক? শশী বাবার ভটভটিতে বসে না। মাইয়াডা বসে।(মুখ ফুলিয়ে বলল)

-(একটু হেসে দিলাম) দুইজনই তো বন্ধু। আচ্ছা এটা শোনো আমিও তো নীরবের বন্ধু। আমি যে ওর রুমে যাই। ওর বাইকে চড়ি। এটা কি তোমার খারাপ লাগে?

-(কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে রেখে বলল) তুমি আর মাইয়াডা এক না। আমি কইয়া দিলাম। তুমি মিলায়া নিও।

আমি হাসি মুখে রহিমা খালার দিকে তাকিয়ে বললাম,
-আচ্ছা মিলাবো। তুমি এসব নিয়ে ভেবো না। আগে তুমি বলো তোমার আর মজিদ খালুর জন্য আমি দুইদিনই খাবার পাঠিয়েছিলাম।খেয়ে ছিলে তো?

-হ বৌমা। অনেক মজা হইছিল। তোমার খালুর মেলা পছন্দ হইছে।

(শুনে হাসি দিলাম।তারপর নাস্তা নিয়ে ড্রয়িং রুমে এলাম)

আমি রুমে আসার পর দেখলাম সবাই গল্পে মেতেছে।

-এত নাস্তা আনছিস কেন? মাত্র আমরা খেয়ে না বের হলাম।

-তোমার জন্য না ভাবীপু৷ আমার পেটুক ভাইয়াটার জন্য আনছি।

-হ আমাকেই দে?।

আমরা সবাই হাসলাম।

-আন্টি আমাদের যাওয়া উচিত। তার আগে রুশমিকে ডেকে দিন।

-ওহ বলতেই ভুলে গেছি। নিবিড় ওকে সকাল সকাল নিয়ে গেছে বাইরে। বলে গেছে শশী আসলে একটু অপেক্ষা করতে। তাড়াতাড়ি নাকি ফিরবে।

শশী আপু আমার মুখের দিকে তাকালো। আমি এখন সত্যি রাগে ফেটে যাবো। উৎসকে দেখলাম উঠে গেল ভিতরের দিকে। ফোনে কল এসেছে বলে।

-ও মায়াবী শোন মা। তোকেও নিবিড় বলতে বলেছে যে কাজ দিয়েছে তা করে ফেলতে। তারপর একবার অফিস যেতে বলেছে।ও বাসায় আসার আগে যেন হয়ে যায়। একবারে তোকে নিয়ে নাকি অফিস যাবে।

বুঝলাম না আগা মাথা কিছু। ভাবছি কি বলল। ওহ আচ্ছা আমার বেলায় অফিসের কাজ। নিজে যে বেরিয়েছে ওই মেয়েকে নিয়ে। আজকে কি যাবে না নাকি? অফিস যাবো কেন? রাগে নিজের মাংস নিজের চিবাতে মন চায় আমার। নিবিড়ের কাছে থেকে সব শুনতে হলেও আমার ওর সাথে যেতে হবে। তাই নিজের রুমে আসলাম ফোন করতে হবে নিবিড়কে।

রুমে ঢোকার আগে দেখি উৎস ফোনে কথা বলছে ছাদের সিড়ির কাছে।নিঃশব্দে পা টিপে টিপে ওর পিছনে দাড়ালাম।এত কি সিক্রেট কথা। চুপি চুপি ফিসফিসিয়ে কথা বলছে। বুঝলাম ছেলে প্রেম করছে। ভাবটা নেয় কি। প্রেম করে না। মজার করার কথা মাথাটায় চারা দিয়ে উঠলো।ওর পিছনে দাড়িয়ে আছি। কিন্তু প্রেমের ঠেলায় শুনতেই পাচ্ছে না। কানের সামনে গিয়ে

-আআআআআআআআআ

-আআআআআ মায়াবী

-এই চুপ কর।

-কানে তুই তালা লাগিয়েছিস। ফাজলামো করিস? কি সমস্যা তোর?

-এই একদম চিৎকার করবি না। চোরের মায়ের বড় গলা।

এখন উৎস থতমত খেয়ে ফেলল।
-কি বুঝাতে চাস মায়াবী।

-Janeman You know what I am hearing??

-Wwhat….?

-I love you jaan. Miss you too. কেউ ফোনে এসব বলছিল?।

-দেখ মায়াবী তুই ভুল শুনছিস।

-ওহ তাই না? আমি আগেই জানতাম এমন কিছু হবে। ভার্সিটি কমপ্লিট ছেলের রিলেশন নেই? তা লুকাচ্ছিলি কেন?

-তোকে বলবো কেন?

-তুই আমার থেকে ছোট। পাক্কা ১বছরের। বলবি না মানে?

-এ্যাঁ? কিসের একবছর? ৯মাস ২৭ দিনের। আর তোকে কে বড় মানে? একক্লাসে পড়ছি। যাহ এখান থেকে।

-ওই ১ বছরই। চাচ্চুকে বলি গে তবে।

-আরে না না হানি৷ তুই না আমার সব। আমার কুড়ুমুড়ু বোন।সব বলবো তোকে। কয়েকটা দিন সময় দে।

-কুড়ুমুড়ু বোন? কি যে বকিস। এসব তেলে কাজ হবে না। কখন বলবি তাই বল।

-তুই ফিরে আয়। বলবো। আগে প্যাকিং করে নে।দুলাভাই চলে আসতাছে।

চোখ চোখ বড় বড় হয়ে গেল।
-মানে? কই যাবো আমি?

-হইছে হইছে নাটক করা লাগবে না। তুই আর দুলাভাই হানিমুনে যাচ্ছিস আমি জানি। আমাকে দুলাভাই ফোন দিয়েছিল। তোর নাকি ফোন নট রিচেবেল। আন্টির কথার মানে বুঝবিও না তাই তোকে ইনফর্ম করতে বলল। প্যাকিং করে নে। দুলাভাই আসলে বের হবে তোকে নিয়ে।

-তোর মাথা। আমার ফোনের চার্জ ছিল না। বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু তুই বলবি তো আমি ফিরে এলে??

-হ্যা বলবো। সত্যি। এখন যাহ তো। দুলাভাই এসে পরলো বলে।

– ওকে।তা তোর রিলেশন ছিল তাও নিবিড় এর কথা শুনে আমার খেয়াল রাখছিলি কেন?

-তুই আমার বোন মায়াবী। তোর খেয়াল রাখবো না যেখানে অসুস্থ হয়ে সেন্সলেস হয়ে গেছিলি?

-তাই বলে এত?

-মায়াবী দুলাভাই তোকে বড্ড ভালোবাসে রে। এসে বার বার আমাদের রিকোয়েস্ট করছে তোর খেয়াল রাখতে। কেমন যে করছিল। পুরো সময় অস্থির অস্থির করছিল। আমরা কেউ লোভে না রে। দুলাভাই এর জন্য তোর এক্সট্রা কেয়ার করেছি।

-সত্যি? তোর বোন বলে না?

-হ হ। আর তুই তো আমার পিঠাপিঠি বোন। তুই অসুস্থ থাকলে কার চুল ধইরা টানবো?

-হারামি?।

বলে চলে আসছিলাম উৎস পিছন থেকে আবার বলল।
-আর হিংসুটে শোন দুলাভাই এর টাও গোছাস।

ভেংচি কেটে চলে এলাম। কিন্তু আমি জানি ছেলেটা আমাকে অনেক ভালোবাসে। যতই আমাদের চুলোচুলির সম্পর্ক হোক।তবে মন টা আবার কাল রাতের ন্যায় হয়ে গেল। লজ্জায় মিশ্রিত মুখটা আয়নায় দেখতে পেলাম না। নিজেরই নিজের কাছে লজ্জা লাগছে।
এসে প্যাকিং করে নিলাম। নিবিড় আর আমার জামা কাপড় একটা লাগেজেই প্যাক করছি। অমনি ওই ছেলে রুমে ঢুকে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলো আবার কিছুক্ষণ লাগেজের দিকে। কি হলো কে জানে। আমায় ফ্লোর থেকে একটানে তুলে গাল চেপে ধরে চুম্বন শুরু করে দিলো।

আয়না দিয়ে নিজেকে দেখছি আর নিবিড়কে গালি দিচ্ছি। শেষে নিবিড় আয়না দিয়ে পিছনে এসে দাড়িয়ে বলল,

-মনে মনে গালি দাও আর যাই করো। মনে করো আগের কথা। আমি আগেই বলেছিলাম দাগ নিয়ে?।

আমি আয়না দিয়ে নিবিড়কে ভেংচি কাটলাম। নিবিড়কে দেখি আমার দেওয়া কামড় লাগানো আঙুলটা মুখে দিয়ে রেখেছে। পেছন ফেরে ওর মুখ থেকে আঙুল বের করে দেখতে লাগলাম। চার দাঁতের দাগ স্পষ্ট। ঠোঁট নিচের উল্টিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,

-খুব লেগেছে তোমার?

-যদি বলি হ্যা তবে কি করবে?

-(চোখ ছলছল হয়ে এলো) কি করলে কমবে?

-ক্ষত স্থানে ফু দিয়ে আদর করে দিলেই চলবে আপাতত?।

সুযোগে কি করে সদ্ব্যবহার করতে হয় এই ছেলে খুব ভালো মতো জানে। রাগ হয়েছে আমার অনেক। তার চেয়ে নিজের করা কৃতকাজে আপস লাগছে বেশি। তাই কথা না বলে নিবিড়ের আঙুলটায় একমনে ফু দিচ্ছি। নিবিড় আমার দিকে পলকহীন চোখে তাকিয়ে আছে। আমার চুলগুলো মুখে এসে পরেছে। নিবিড় অন্যহাত দিয়ে আমার মুখের উপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে কানের পেছনে গুঁজে দিল। ঈষৎ কম্পন আমার শরীরে জেগেছে। নিবিড়ের আঙুলটায় বেখেয়ালি হয়ে আমার ঠোঁট এঁটে দিলাম। নিবিড় আমার কর্মকান্ডে অবাক। কি হলো কে জানে নিবিড়ের। আঙুলটা একঝটকায় সরিয়েই….

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here