কৃষ্ণচূড়ার দিনে,পর্ব:২
Writer_Asfiya_Islam_Jannat
— আপনি চাইলে ভিতরে এসে অপেক্ষা করতে পারেন, মিস।
কথাটা কর্ণগোচর হতেই রুপ থমকায়। ঘাড় ঘুরিয়ে নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে তাকায় তনয়ের দিকে। তার ভাব-ভঙ্গি প্রায় স্বাভাবিকই, দৃষ্টিও শীতল। রুপ কিছু প্রহর চুপ থেকে অস্ফুটস্বরে বলে,
— না, থাক।
তনয় হয়তো রুপের সংশয়টা বুঝতে পারে। তাই বিষয়টা সহজ করতে সে নিজ থেকেই বলে উঠে,
— আপনি যেমনটা ভাবছেন, তেমন কিছুই না।
পরিস্থিতি যা, বাহিরে থাকলে নির্ঘাত কোন অঘটন ঘটাবেন। তাই, ভিতরে আসতে বলেছি।
রুপ কৌতূহল দৃষ্টিতে তাকাতেই তনয় নিজের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে গলা ঝেড়ে বলে,
— বুঝদার মানুষের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। আশা করি, আমাকে ভেঙে কিছু বলতে হবে না।
রুপ কথাটার ধাঁচ ধরতে পেরে একপলক নিজের দিকে তাকায়। পরক্ষণে নিজের ওড়নাটা গায়ে আরও ভালোভাবে জড়িয়ে নিয়ে শীতল কন্ঠে বলে,
— ভিতর যে বাহিরের মত বিপদজনক নয় তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? নিরাপদতা তো দুই জায়গাতেই বিলাসিতা।
রুপের কথা শুনে তনয় থমকায়, নয়ন দু’টির অক্ষিকাচে অপার বিস্ময়তা নিয়ে তাকায় রুপের পানে। কতটা সাবলীলভাবেই মেয়েটা তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফেললো। পরোক্ষভাবেই বুঝিয়ে দিল, সে বিশ্বাস করে না কাউকে। কথা বলার ধাঁচও কি সূঁচালো। নিজের ঊনত্রিশ বছরের জীবনে এমন ধাঁচের মেয়ে তনয় খুব কমই দেখেছে। কিন্তু, এই মুহূর্তে সে তার এই রুপে অভিভূত হতে পারছে না, উল্টো রাগে তার শরীর রি রি করছে। রাগ হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু না, অহেতুক নিজের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠলো যে কেউ রাগবেই। তনয় নিজের হাতের মুঠো শক্ত করে ধরে নিজের রাগ সংযত করার ক্ষীণ চেষ্টা করে, তিক্ত কন্ঠে বলে,
— নিউটন ব্যাটা ঠিকই বলেছে, ‘For every action, there is an equal and opposite reaction.’ কারো জন্য ভালো করো বা ভাবো দিনশেষে খারাপের ট্যাগটা নিজের ঘাড়ে এসেই চাপে। ধ্যাৎ!
রুপ থমথমে দৃষ্টিতে তনয়ের দিকে তাকায়, এক মুহূর্তের জন্য ভাবলো অতিরিক্ত করে ফেলেছে কি-না। না ভুল বলেনি সে, কিন্তু তাও কথাটা হয়তো সে একটু বেশি রুড হয়ে বলেছে, তাই পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক করতে ইতস্তত সুরে বলে,
— বিষয়টা তেমন নয়। আসলে, খালি বাসায়..
অর্ধেক কথাটা বলেই রুপ চুপ করে যায়, সম্পূর্ণ কথাটা শেষ করতে তার কেমন জড়তা কাজ করছে। তনয় অন্যদিকেই মুখ করে রেখেই বলে,
— বিষয় এমন হোক আর তেমনই হোক। কারো বাহির দেখে কখনো কাউকে জার্জ করা ঠিক নয়। এই রাইট আপনাকে কেউ দেয়নি।
রুপ কথা বাড়ালো না। এতক্ষণে মানবটি কথার ধাঁচেই রুপ বুঝে গিয়েছে, মানবটির আত্মাদর প্রচন্ড প্রখর। সে যেমনই হোক খারাপ না। উপরন্তু, পরিস্থিতি এখন যা এই মানুষটি বাদে তাকে সাহায্য করার মতও কেউ নেই৷ শরীর তো ইতিমধ্যে জবাব দিতেও শুরু করে দিয়েছে। এইভাবে বাহিরে থাকলে হয়তো ফিট-ফাট হয়ে লাশও হয়ে যেতে পারে। তাই সে কথা মিটমাট করার উদ্দেশ্যে মিনমিনে স্বরে বলে উঠে, “ওকে, সরি! ”
তনয় একনজর রুপের দিকে তাকিয়ে কিছু না বলে দরজা বন্ধ করে দিতে নেয়, রুপ তা দেখে চেঁচিয়ে বলে উঠে,
— আরেহ!
তনয় আবার থমকায়। ভ্রু কুঞ্চিত দৃষ্টিতে তাকায় রুপের দিকে, “আবার কি?”
রুপ দুই হাত একত্রে করে ঘর্ষণ চালাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, দৃষ্টি অবিন্যস্ত রেখেই ইতস্তত করে বলে,
— না মানে..
রুপের হাবভাব দেখেই বুঝা যাচ্ছে, সে তার মত পাল্টিয়েছে কিন্তু বলতে দ্বিধাবোধ করছে৷ তনয় এইবার ভালো করে তাকালো, রুপ একটু আঁটসাঁট হয়েই দাঁড়িয়ে আছে। মুখ-চোখ কেমন নীল বর্ণ ধারণ করেছে। শরীরও বোধহয় মৃদু পরিমানে কাঁপছে। বৃষ্টিতে ভিজে এসেছে, ব্যাপারটা অস্বাভাবিক না। তনয়ের একটু মায়া হলো, রাগটা একধাপ নিভলো ঠিকই কিন্তু গেল না। আনমনে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো, ” এই নারীজাতি, ভাঙবে কিন্তু মচকাবে না।” পরক্ষণে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে তীক্ষ্ণ কন্ঠেই বলে,
“আসেন!”
রুপ প্রথমে একটু সংকোচবোধ করলেও পরবর্তীতে এক-দুই পা এগিয়ে যায়। রুপকে আসতে দেখে তনয় আগে-ভাগেই দরজার কাছ থেকে সরে দাঁড়ায়। রুপ ভেজা জুতোজোড়া খুলে রেখে ঢুকে পড়ে ভিতরে। ড্রয়িংরুমের সামনে এসে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়ায়। তনয়ও দরজা ভিজিয়ে ড্রয়িংরুমে চলে আসে, “দরজা লক করিনি, খোলাই আছে।”
কথাটা শুনে রুপ চোখ তুলে তাকায় তনয়ের দিকে। তনয়ের কথার মাঝে কিছুটা তাচ্ছিল্য ভাব ছিল। আর সেটা কেন ছিল তা রুপ ভালোভাবেই বুঝতে পারছে, কিন্তু তাও সে প্রত্যুত্তর করলো না। পুনরায় নতজানু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো সেই একই জায়গায়। সারা শরীর ভেজা হওয়ায় কোথাও গিয়ে বসার ইচ্ছা হলো না তার। তনয় রুপের পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেল, টি-টেবিলের পুরোটা জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অজস্র কাগজ। তনয় সেগুলোই এখন গুছাচ্ছে। মৃদু গতিতে ফ্যানের পাখা ঘুরছে, কিছু কাগজ মাটিতেও গড়াগড়ি খাচ্ছে। রুপ নিষ্প্রভ চোখে সবটাই দেখছে। জামা থেকে এখন আর পানি পড়ছে না, সিক্ত ভাবটা শুষে নিচ্ছে শরীর। শিথিল হয়ে পড়ছে স্নায়ুগুলো, হিমশীতলতা চলাচল করছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে। ফ্যানের মৃদু বাতাস কাঁপন ধরাচ্ছে শরীরে। শুধু দাঁতে দাঁত লেগে আসাটাই বাকি বোধহয়। রুপ থাকতে না পেরে বলল, “ফ্যানটা বন্ধ করা যাবে?”
তনয় একপলক রুপের দিকে তাকালো৷ রুপের বর্তমান অবস্থা আঁচ করতে পেরে দৃষ্টি নামিয়ে গলা পরিষ্কার করে বলল, “তা না-হয় করা যাবে,মিস। কিন্তু আপনি কি এইভাবেই ঘন্টা খানিক থাকতে পারবেন? মা তো মনে হয় না বৃষ্টি থামার আগে আসবে।”
রুপ মুখ ছোট করেই বলে, “জানি না।”
তনয় কাগজ গোছাতে গোছাতে বলে,
— চাইলে মায়ের রুমে গিয়ে চেঞ্জ করতে পারেন, মার কাপড় আছে সেখানে।
— না! না! থাক দরকার নেই৷
অকপটেই বলে উঠলো রুপ৷ তনয় পুনরায় একপলক রুপের দিকে তাকিয়ে বলে, ” আর ইউ সিউর? ফরমালিটি করতে গিয়ে শহীদ হয়ে যেয়েন না আবার। অবশ্য, শহীদ হলেও এরপর আসামী আমাকেই হতে হবে।”
সরাসরি খোঁচা মেরেই কথাটা বলল তনয়। রুপ একটু ইতস্তত করলেও প্রত্যুত্তর দিল না। সেখানে দাঁড়িয়ে দু’হাত মুঠোয় পুরে ঘর্ষণ চালাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো, অবস্থা যে শোচনীয় তা কিন্তু নয়। ইতিমধ্যে প্রবলবেগে হাঁচির দলেরা আক্রমণ করতে শুরু করে দিয়েছে, একটু পর হয়তো সর্দি-জ্বরও সঙ্গ দিতে চলে আসবে অসুখ পরিবারের সদস্য হতে। তনয় বলল,
— আমাকে আসামী বানানোর ফন্দী না এঁটে যান গিয়ে চেঞ্জ করে নিন।
রুপ মিইয়ে যাওয়া স্বরে জিজ্ঞেস করে, “রুমটা কোনদিকে?”
— বা দিকের রুমটা মার, ওয়ারড্রব খুললে জামাকাপড় পেয়ে যাবেন। আর রুমেই ওয়াশরুম আছে।
রুপ মাথা দুলিয়ে, হাতে থাকা কদম ফুলগুলো সোফার উপর রাখে। কাঁধের ব্যাগটা সোফার পাশেই মেঝেতে রেখে চলে যায় রুমটির দিকে। রুমে গিয়েই দরজা আঁটকে দিল রুপ, তা দেখে তনয় বিরবির করলো, “সেই তো ঘুরে ফিরে আমার কথাই শুনলো, হুদ্দাই এতক্ষণ ঢঙ করলো।”
ক্ষণে কদম ফুলের দিকে নজর যেতেই তার ভ্রুকুটি কুঞ্চিত হয়ে আসে, সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকায় সেদিকে। অতঃপর দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে টেবিলের উপর থেকে কাগজপত্র সব গুছিয়ে নিয়ে চলে যায় রুমে।
অর্ধাংশ প্রহর গড়াতেই রুপ ছোট ছোট পায়ে বেরিয়ে আসে রুম থেকে। গায়ে তার কুচি বিহীন শাড়ি, কোনমতে তিন-চার প্যাঁচ দিয়ে পড়েছে সে। সাথে বেমানান রঙের ব্লাউজ, যা কি-না মিনিট দুই-এক যেতেই কাঁধ থেকে গড়িয়ে পড়ছে নিম্নের দিকে। তিন-চারটে সেফটিপিন মারার পরও ঢিলে রয়েই গিয়েছে। নিপা বেগমের স্বাস্থ্য বেশি নাহলেও রুপ তুলনামূলক একটু রোগা-সোগা, তাই এই অবস্থা। উপরন্তু, নিপা বেগম সর্বদা শাড়িই পরিধান করেন বলে, রুপ বাধ্য হয়ে শাড়িই পড়লো। রুপ পিছন থেকে আঁচলটা টেনে সামনে আনলো, ভালোভাবে জড়িয়ে নিল গায়ে। ড্রয়িংরুমে আসতে দেখা মিললো তনয়ের, ল্যাপটপ নিয়ে বসেছে সে। রুপ একটু এগিয়ে যেতে তনয় ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে চোখ তুলে তাকায়, রুপের বেহাল অবস্থা দেখে পেট ফেটে হাসি পেলেও তা চেপে বসে রইলো। ঠোঁটের কোনে দেখা দিল সরু এক হাসি রেখা। কার্টুন লাগছে মেয়েটিকে। মেয়েটি হয়তো শাড়ি পড়তে জানে না বা কুচি করতে।
রুপ এদিক-সেদিক বেশি না তাকিয়ে চুপচাপ গিয়ে বসে তনয়ের বিপরীতমুখী সোফায়। একপলক তাকালো তার দিকে, উদোম গা এখন ঢাকা পড়েছে বাদামী টি-শার্টের অন্তরালে। দৃষ্টি নামালো রুপ, সোফার কিনার থেকে ব্যাগটা টেনে এনে ফোনটা বের করলো। ব্যাগটা ওয়াটারপ্রুফ হওয়ায় বই আর ফোন দু’টোয় শুষ্ক আছে। একবার সময় দেখলো, দশটা বাজে প্রায়। ড্রয়িংরুমের উত্তর দিকে থাকা বারান্দার দিকে তাকালো সে, সামনে থাইগ্লাস থাকায় নিজের প্রতিবিম্ব বাদে দেখা গেল না কিছুই৷ বৃষ্টির রিনিঝিনি শব্দ আর অকস্মাৎ বিদ্যুৎ চমকানোর ফলে শুধু আঁচ করা গেল, বর্ষণের লীলাখেলা এখনো চলছে। দীর্ঘশ্বাস ফেললো রুপ, রাতটা আজ কত দীর্ঘ হয় কে জানে?
বৈঠকখানা জুড়ে পিনপতন নীরবতা। দুই পৃথক সত্তার মানুষ মগ্ন আপন কর্মে। কেউ কাজে ব্যস্ত তো, কেউ কাউকে দেখতে। কিন্তু শব্দ নেই কারো মুখেই। তনয় কাজ শেষে ল্যাপটপ অফ করে পাশে রাখলো, তাকালো রুপের দিকে। মুহূর্তেই দুইজনের দৃষ্টি এক সুতোয় এসে মিলিত হতে, রুপ দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নেয়। তনয় বিষয়টা আমলে না নিয়ে বলে,
— আপনার কি কোন সমস্যা হচ্ছে মিস?
রুপ না-সূচক মাথা নাড়িয়ে বলে, “না।”
তনয় কোন ভূমিকা ছাড়াই বলে উঠে, “তাহলে এতক্ষণ ধরে আমার দিকে তাকিয়ে কি দেখছিলেন? এম আই টু হ্যান্ডসাম?”
রুপ এইবার খানিকটা থমথম খেয়ে যায়। তনয় যে সরাসরি এমন কিছু বলে বসবে তা ভাবনারও বাহিরে ছিল তার। কান গরম হয়ে আসলো রুপের, সে কোনমতে বলে উঠলো,
— তেমন কিছুই না। আমি তো..তো.. এমনি।
তনয় এইবার শব্দ করে হেসে উঠে। ঠোঁটের কোনে সেই হাসিটুকু বুজিয়ে রেখেই বলে,
— স্বাভাবিক হন, মজা করছিলাম।
তার চুরি যে ধরা পড়েনি তা ভেবেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো সে। অতঃপর বলল,
— আন্টির ফোন কি এখনো অফ তনয় ভাইয়া?
— আপনি আসার আগে দিয়েছিলাম, তখনও অফই ছিল৷
— অহ আচ্ছা।
— আপনি এইখানে নতুন?
— হ্যাঁ, একমাস হলো আমরা এইখানে শিফট করেছি।
তনয় রুপের দিকে তাকিয়ে বলে,
— তাই আমি প্রথমে চিনতে পারি নি আপনাকে। তা আপনি কি আমায় আগে থেকে চিনতেন? সে সময় নাম ধরেই তো সম্মোধন করলেন।
রুপ মাথা নিচু করে বলে,
— চিনি বলতে, এক দু’বার দেখেছিলাম আপনাকে। আর আন্টির মুখে আপনার নাম শুনেছিলাম।
— আপনি আমার নাম জানলেও, আপনার নাম কিন্তু এখনো আমার অজানা মিস?
— রুপকথা! আপনি এই নামেই ডাকতে পারেন।
তনয় ঠোঁট নাড়িয়ে নামটা উচ্চারণ করলো,
— রুপকথা! তা আপনি কি কাল্পনিক নাকি বাস্তবিক রুপকথা?
রুপ হেসে বলে,
— কাল্পনিক কিছুর বাস বাস্তবে না হলেও, মানুষ কিন্তু বাস্তবিকই হয়।
তনয় প্রত্যুত্তর না করে কিঞ্চিৎ হাসে। কৃষ্ণবর্ণের অক্ষিকাচে খেলা করে যায় অন্যরকম মাধুর্য। যা সাধারণের মাঝেই ছড়িয়ে দেয়, কিঞ্চিৎ অসাধারণের ছোঁয়া। রুপ দ্রুত দৃষ্টি নামালো। এই দৃষ্টির মাধুর্যে সে বহু আগেই আহত হয়েছে, আজ পুনরায় হলো। নীরবতা ভেঙে তনয় আবার বলে,
— আপনি মনে হয় মেডিক্যাল স্টুডেন্ট, রাইট?
— হ্যাঁ, তৃতীয় বর্ষে পড়ছি।
— অহ!
এরপর আবার নীরবতা। প্রতিবারের মত এইবারও তনয় এই নীরবতা ভঙ্গ করে বলে উঠলো,
— চা খাবেন মিস রুপকথা?
রুপ চোখ তুলে তাকায়। ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ঘটলো এক অঘটন। রুপের কাঁধ থেকে ব্লাউজের কাঁধটা গড়িয়ে পড়লো নিম্নের দিকে। তনয় দ্রুত অন্যদিকে ঘুরে নিজের দৃষ্টি সরালো, কিছু না বলে উঠে সোজা হাটা দিল রান্নাঘরের দিকে। কথার বলার সময় কখন যে হাত থেকে আঁচল ছুটে গিয়েছিল তা রুপ বুঝতেই পারেনি। বুঝতে পারলে হয়তো এই অপ্রীতিকর পরিবেশে সৃষ্টি হতো না। রুপ ব্যস্ত হলো নিজেকে ঠিক করতে। তখনই উচ্চস্বরে ট্রান্সমিটার ব্লাস্ট হওয়ার শব্দ প্রতিধ্বনিত হলো, মুহূর্তেই কারেন্ট গেল চলে। পুরো নগরী ডুব দিল আঁধারের গহীনে। রুপ বিরবির করলো,
— শালা কারেন্টের বাচ্চা, আমার সাথে মীরজাফর গিরি করলি? আরেকটু আগে গেলে কি হতো? আমার মান-ইজ্জত সব ডুবাইয়া গেলি তুই। বেদ্দব একটা!
চলবে