সেই_মেয়েটি,পার্টঃ6
লেখক_সাব্বির আহাম্মেদ
পরের দিন মেহেদিরা মাধুরির বাসায় গেলো,
অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে মেহেদি আর মাধুরির বিয়েটা হয়ে গেলো । মেহেদির মা বোন ছাড়া এই বিয়েতে মোটামোটি সবাই রাজি ।
– বাসর রাতে একা বসে আছে মাধুরি, এই তানহাটা যে এমন সময় উধাও হয়ে গেলো তা ভেবে রাগ উঠছে তার । বাসায় একপ্রকার মেহেদির সাথে যুদ্ধ চলছে তার মায়ের । অনেকক্ষণ কথা কাটি করার পর সে রুমে আসলো । মেহেদিকে দেখে মাধুরির মনে কিছুটা ভয় ডুকে গেলো, সে ঘামতে শুরু করলো । তার বিয়েতে তেমন অনুষ্ঠান হয় নি, আর সেও তেমন অহামারি সাজ দেই নি, হালাকা সেজেছে। মেহেদি অব্যশই অপত্তি করেছে ,
তবে এইবার চলুন মূল গল্পে আসা যাক মেহেদি আর মাধুরির ফ্লাসব্যাক তো শুনলেন
মাধুরির ইচ্ছা ছিলো সে তার বরের সাথে এমন সুন্দর রাতে হাত ধরে হাটবে মন খুলে কথা বলবে ছোটাছোটি করবে , তার বর তার পিছে দৌড়াবে তাকে ধরার জন্য তাকে ধরতে না পারলে বরের কানে কষে একটা চুম্মা দিবে সরি চুম্মা না মৃদ্যু চড় দিবে ।
এইসব স্বপ্ন আস্তে আস্তে পূরণ হচ্ছে তার । রাতের ডিনার শেষে অনেকক্ষণ তারা ঘোরাঘোরি করলো, মাধুরি আজকে তার পছন্দের অনেক জিনিস কিনলো মেহেদিও মাধুরি যেটা চায় কিনে দিলো ।
_রাত 12টা বাজে বাসায় আসলো তারা, মাধুরির শাশুড়ি আড়াচোখে তাকিয়ে মেহেদিকে জিজ্ঞাসা করলো,
– কিরে কোথার থেকে এসেছিস,
এই তো মা একটু বাহির থেকে আসলাম অনেকদিন যাবত মাধুরিকে নিয়ে কোথাও যাওয়া হয় না । তাই ভাবলাম আজকে যখন সময় পেলাম ঘুরে আসি একটু , আর এতে মাধুরির মনটাও ফ্রেশ হবে।
মেহেদির আম্মুঃ- বাহ ভালোই তো বউকে নিয়ে ভালোই ঘুরাঘুরি করা হচ্ছে, এইদিকে তর মা যে একা একা সব কাজ করে বাসায় সেইদিকে কি তর খেয়াল নেই, কাজ করতে করতে আমি শেষ আর কতকাল কাজ করবো আমার কি কেনো সুখ নেই, এই বলে কান্নার অভিনয় করলো ওনি ।
মেহেদি বললো, কি বলো মা বাসার সব কাজই তো মাধুরি করে দেয়, আর আজকে এতদিন পর তাকে একটু বাহিরে নিয়ে গেলাম তাতেই তোমার আপত্তি মাধুরি আজকে কাজ করতে করতে হাত কেটে ফেলছে সেইদিকে খেয়াল আছে তোমার, একটা মেয়ে কত কত কষ্ট সহ্য করতে পারে তা মাধুরিকে দেখলে বুজা যায় ।
মাধুরি মেহেদির হাত ধরে বলে, আপনি দয়া করে থামুন আমি এখন সব কাজ করে দিচ্ছি, আমার ভুল হয়েছে বাহিরে যাওয়াটা,
মাধুরির শাশুড়ি রেগে গিয়ে বলে, হয়েছে হয়েছে আর অদিখ্যেতা দেখাতে হবে না আপনাকে । আপনি কেনো কাজ করতে গেলে সেখানেই বিপদ ডেকে আনেন, বেছে বেছে আমার ছেলের কপালে কেনো আসলি হুম, এখন আসছে অদিখ্যতা দেখাতে ।
– মাধুরি আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে গেলো,
মেহেদির তার মায়ের কথায় আর সহ্য হচ্ছে না, মা তুমি থামবে, তুমি যে এতই রুপের অহংকার করো, কই তুমার আদরের মেয়ে যে এতো সুন্দর সে এইখানে পড়ে আছে কেনো, তার শশুর বাসায় একটা কাজ করতে গেলে সে এখানে চলে আসে কেনো, আর তাদের নামে কত কথা বলে, রাসেল বেচারা কত ভালো ছেলে ছিলো কি অভাব ছিলো তাদের বলতে পারো তুমি হুম, তুমার আর তুমার মেয়ের এমন অহংকার একদিন দেখবে পতন ডেকে আনবে । একটা কথা শুনে রাখো মা, আজকের পর থেকে মাধুরির সাথে যে খারাপ ব্যবহার করবে তার খবর আছে ।
আর এই সৌন্দর্যের বড়াই সব সময়ে থাকে না, যদি থাকতো তাহলে তুমার মেয়ে আজ তার নিজের সংসার ছেড়ে এখানে পড়ে থাকতো না । এই বলে মেহেদি চলে গেলো,
– দেখলে মা তুমার ছেলে আজ, ওই ফকিন্নীটার জন্য তুমার মুখে মুখে কথা বলে তুমাকে শাসিয়ে গেলো । আর আমাকেও ছাড়লো না ।
চিন্তা করিস না, দেখ এই ফকিন্নীটার কি হাল করি দেখিস আমি তাকে এই বাড়ি থেকে বিদায় করবো চললল এখন,
এতক্ষণ পুরো ঝগড়া পর্যবেক্ষণ করছেন মেহেদির বাবা, ওনি এইসব ঝগড়া ঝাটি ঝামেলা থেকে দূরে থাকেন । সে এখন নিজেকে দোষ দিচ্ছে এমন ঝগড়াটে মহিলাকে কেনো বিয়ে করলো ।
মেহেদি ঘরে এসে দেখলো, মাধুরি ব্যালকনিতে দাড়িয়ে রয়েছে চোখ থেকে পানি পড়ছে, মাধুরিকে এমন অসহায় দেখে মেহেদি মনে খুব কষ্ট পেলো । সে কাছে গিয়ে ডাক দিলো মাধুরি ।
মাধুরি মেহেদির ডাক শুনে মেহেদির দিকে তাকালো, মেহেদি তার দিকে দুটি হাত ম বাড়িয়ে দিলো মূহর্তে মাধুরি আর দেরি না করে মেহেদির বুকে ঝাপিয়ে পড়ে, কান্না করতে করতে বললো, জানেন ছোটবেলা থেকে আমি কখনো এমন ভালোবাসা পাই নি যেটা আপনি আমায় দিচ্ছেন, আমার মনে হয় আমি আপনাকে হারাবো !!
মেহেদি মাধুরির চেহারাটা তার বরাবর এনে চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে বলে, এইভাবে ভেঙ্গে পড়ো না লক্ষী আমার । আমি তুমার সাথে আছি না হুম, আর তুমার জন্য একটা গুড নিউজ আছে।
গুড নিউজের কথা শুনে মাধুরি চোখে তুলে মেহেদির তাকিয়ে বললো কি সেটা ?? মেহেদি বললো তোমাকে একটা ভার্সিটিতে এডমিশন নিয়ে দিছি আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে তুমি এখন থেকে সংসারের পাশাপাশি পড়ালেখাটা চালিয়ে যাবে, তাহলে কখনো যদি আমি না থাকি তাহলে তুমি এই শিক্ষা দিয়ে চলতে পারবে । তখন কারো কাছে মাথা নিচু করে থাকতে হবে না ।
মাধুরি মেহেদিকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে, এহ্হ আপনি থাকবেন না কেনো, আপনি সারা জিবন আমার সাথে থাকবেন আপনাকে কোথাও যেতে দিবো না । এই বলে মেহেদির বুকে মাধুরি না ঘষতে লাগলো ।
মেহেদিঃ- আরে কি করছো, আমার খুব হাসি পাচ্ছে, বাব্বাহ তুমার ভিতরে যে এতো রোমান্টিকতা আছে আগে জানতাম না তো, তো মেডাম চলুন আপনার রোমান্টিকতা, একটু যাচাই করি,
মাধুরি খুবইই লজ্জা পেয়ে বলে যাহ্হ দুষ্টু…..
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মেহেদি দেখলো ঐশি আর তার মা তাদের বাসায় এসেছে, তাদের দেখে হাব ভাব ভালো ঠেকছে না নিশ্চয়ই কেনো মতলবে এসেছে তারা । মেহেদি মাধুরিকে ডেকে বলে দিলো ঐশির থেকে দূরে দূরে থাকতে আর কেনো সমস্যা হলে তাকে ফোন দিয়ে জানাতে ।
আজকে কেনো কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে এই বাসায় মাধুরি তা বুজতে পারছে । কিন্তু সেটা কি….
চলবে….