Black Rose?Season_03,Part_04,5
The Dark king of my kingdom♚
Lamiya Rahaman Meghla
Part_04
গাড়িটা এসে থামলো ভার্সিটির থেকে কিছুটা দুরে এখান থেকে ভার্সিটি দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু এখানে থামানোর কারন টা বুঝলাম না।
–একটা কথা কান খুলে শুনে নেও ভার্সিটি তে আমি তোমার প্রফেসর তা ছাড়া অন্য কিছু নই তুমি আমাকে চেনো না আমি তোমাকে চিনি না চুপচাপ নিজের পড়ালেখা করবা৷
আর হ্যা এই কথা গুলো যেন মা জানতে না পারে বি কেয়ার ফুল।
আমি মথা নিচু করে উত্তর দিলাম,
–জি।
–নামো।
আমি নেমে পরলাম।
হাঁটা ধরলাম সামনের দিকে,
–আচ্ছা আমি কি এতোটাই খারাপ। আমাকে কি এতোটাই বাজে মনে যে উনি এমন ব্যাবহার করেন৷ কেন কেউ জদি এটা জানতে পারে উনি আমার ফুপাতো ভাই তাহলে কি সমস্যা ।
হয়তো আগে থেকেই এমন৷ ফুপি তো বলেছে আমি এই ভার্সিটিতে পড়াশুনা করতাম তাহলে আমাকে কেউ ওনার কাজিন বলে হয়তো চিনেই না।
মনে মনে এগুলা ভাবছি আর হাঁটছি কিন্তু যাচ্ছি কই৷
আমি তো কিছুই চিনি না৷
আজ একটু চিনিয়ে দিলে কি হতো।
আচ্ছা ওই মেয়েটার কাছে শুনি।
আমার সামনে থাকা একটি মেয়ের কাছে হেঁটে গেলাম,
–আসসালামু আলাইকুম।
–ওলাইকুমাসলাম।
–আপু আপনি কি অনার্স ১ম বর্ষের ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট এর ক্লাস রুমটা কোথায় বলতে পারবেন।
— তুমি ইংরেজি ডিপার্টমেন্ট এ।
–জি৷
–আমিও তো৷ আমি কেয়া।
–আমি মেঘ।
–সুন্দর নাম৷
–তোমার টাও৷ আচ্ছা তুমি কি আমার মতো নতুন।
–হ্যা নতুন তবে ১ দিন আসছিলাম৷
–ওহ আচ্ছা চলো ক্লাসে৷
আমি আর কেয়া ক্লাসে চলে গেলাম৷
ক্লাসের সামনে থাকা একটা বেঞ্চ এ বসে পরলাম৷
স্যার এখনো আসে নি৷
–আচ্ছা মেঘ তোমার বাসায় কে কে আছেন?
–আমি ফুপি আর ফুপাতো ভাই৷
–মানে,
–মানে ফুপি বলেন আমার মা বাবা আমাকে অনেক ছোট রেখে মারা গেছেন ?।
–ও সরি৷
–ইট’স ওকে।
–এই মেয়ে কলেজে আসো কি গল্প করতে।
হটাৎ আমানের কন্ঠ শুনে আমি কেঁপে উঠি।
দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি রাগি চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
–স্যান্ড আপ৷ (রেগে)
আমি উঠে দাঁড়ায়।
উনি ভেতরে এসে আমার সামনা সমানি দাঁড়ায়।
–তুমি ক্লাসে আসো পারিবারিক গল্প করতে। আমার ক্লাসে এসব চলবে না নেক্সট টাইম এই ভুল করলে তোমায় বের করে দিবো আমি৷
–(আমি কি ওনার কথা বলেছি যে এমন করলো৷ আমি কি এমন বলেছি যে এতো রেগে গেছে মনে, মনে )
আমান সামনের দিকে এগোতে আমি বসে পরতে গেলাম৷
–এই মেয়ে বসতে বলেছি তোমাকে।
এবার আসহায় চোখ নিয়ে মেঘ তাকিয়ে পরলো আমানের দিকে।
–বসতে বলি নি পুরোটা ক্লাস দাঁড়িয়ে কাটাবে।
এবার মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছে সত্যি অনেক বেশি করতেছে লোকটা৷
কিছু না বলতে পেরে চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলাম৷
পুরো ক্লাসে দাঁড়িয়ে ছিলাম তবে একটা বিষয় খেয়াল করলাম সবাই কেমন হা করে তাকিয়ে ছিলো আমনের দিকে যেটা দেখে আমার একটু রাগ বোধ হচ্ছিল কিন্তু কেন৷ এই হনুমান কে ছিড়ে খেয়ে ফেল্লেই বা আমার কি হুহ৷
আমান ক্লাস থেকে চলে যেতে কেয়া আমার হাত ধরে আমাকে বসিয়ে দেয়।
–স্যার কে আগে যে-দিন এসেছিলাম এতো রাগি দেখি নি৷
–বাদ দেও।
–তুমি না তুই বলবা ওকে৷
–আচ্ছা।
–তোর পায়ে ব্যাথা হচ্ছে না৷
–হুম ঠিক হয়ে যাবে।
–হুম।
বাকি ক্লাস গুলো করে আমি আর কেয়া হাঁটছিলাম। বাসার উদ্দেশ্যে,
–আচ্ছা মেঘ তোকে একটা কথা বলি৷
–হুম বল৷
–আজ ফুচকা খাবি বাইরে থেকে।
–না ফুপির বারন আছে।
–কেন?
–আমার এগুলাতে সমস্যা আছে আমার একটা এক্সিডেন্ট হয় কিছু দিন আগে।
–ও আল্লাহ।
–হুম৷
–আচ্ছা বাসায় চল তাহলে।
–তুই যা আমার ভাই আসবে। ।
–শিওর।
–হুম।
কেয়া চলে গেল।
আমি তো কিছুই চিনি না উনি না নিতে আসলে কি করে যাবো। কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু আমানের কোন দেখা নেই৷ এমন কেন৷
উফ আল্লাহ এই জল্লাদ টা জদি না আসে তবে আমি কি করবো৷
ভেবেই কান্না পাচ্ছে।
–এই মেয়ে কলেজে নতুন৷
হটাৎ পেছন থেকে কোন ছেলের কন্ঠ শুনতে পাই আমি৷ কিন্তু পেছনে ফিরি না৷
–কি হলো বোবা নাকি কথা বলতে জানো না৷
এবার আমার সামনে এসে,
–আমি যা-ই হই আপনার কি৷ ।
–আমার কি মানে ভদ্র ভাবে একটা প্রশ্ন করেছি আর তুমি বেয়াদবি করছো৷
–হ্যা নতুন আর কিছু।
–তা তুমি তো দেখি সেই লেভেলের,
–ওতো দেখি সেই লেভেলের কি।
হটাৎ আমান আমার সামনে এসে হাত ভাজ করে বললো।
–কিছু না স্যার সরি।
–কেন এখন বলতে সমস্যা কি।
–সরি স্যার ভুল হয়ে গেছে।
ছেলেটা দৌড়ে দেয়।
আমান হটাৎ আমার হাত ধরে টানতে থাকে।
আজব এমন করছে কেন আমাকে টেনে গাড়িতে বসিয়ে ফুল স্প্রিডে গাড়ি চালাতে শুরু করে৷
এতো রাগের মানে কি,
চলবে,
Black Rose?
Season_03
The Dark king of my kingdom♚
Lamiya Rahaman Meghla
Part_05
আমান বাসায় এসে আমাকে ঘরে যেতে বলে হন হন করে নিজের রুমে চলে গেলেন৷
দেখেই বুঝা যাচ্ছে প্রচুর রেগে আছেন এই রাগের কারনটা আমার অজানা।
আমি নিচেই দাঁড়িয়ে এগুলা ভাবছিলাম আমার রুমে যেতে গেলে আগে ওনার রুমটা আসে তার পর আমার টা প্রায় পাশাপাশি বলা চলে।
উপরে উঠে ওনার রুম অতিক্রম করবো এমন সময় প্রচুর ভাঙাচুরার শব্দ ভেসে আসছে কানে।
মনে হয় ঘরের মধ্যে উনি ভাঙচুড় করেছে।
আমি ভয়ে ভয়ে দরজার সামনে দাঁড়াতে দেখি পুরো রুম কাচ ভাঙা টুকরো পরে আছে এর মধ্যে হটাৎ উনি একটা ফুলদানি ছুঁড়ে ফেলতে ওনার হাতে কাঁচের টুকরো ঢুকে রক্ত পরতে আছে একাধারে।
ওনার হাতে রক্ত দেখে নিজেকে সামলাতে পারলাম না৷ দৌঁড়ে গিয়ে হাত ধরে বসলাম৷
–কি করছেন কি এগুলা আপনি৷
–এই মেয়ে তুমি এখানে কেন ঘরে যা-ও ছাড়ো আমাকে৷
–একটা কথা বললে থাপড়ায় তোর ৩২ টা দাঁত ফেলে দিবো আমি চুপচাপ বস।
মেঘের ধমকে আমান এক দম চুপ হয়ে যায়৷
এদিকে মেঘ আমানকে বসিয়ে হাতের রক্ত পরিস্কার করতে শুরু করে।
কেটেছে আমানের কিন্তু ব্যাথা মেঘের হচ্ছে
মেয়েটার মুখ দেখে এমন মনে হচ্ছে৷
–এতো কি হইছে যে এসব ভাঙচুর করতে হচ্ছে হুম কি হইছে টা কি৷
মেঘ নিজে বক বক করছে আর ব্যান্ডেজ করছে।
আমান হা করে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমানের সামনে একটা নীলপরি বসে বক বক করছে এই মুহুর্তে আমানের সেটা মনে হচ্ছে।
আমানের হাতে ব্যান্ডেজ করা শেষ হলে আমানকে বসিয়ে মেঘ ঘর পরিস্কার করতে শুরু করে।
সব গুছিয়ে দেয়।
তার পর আমানের দিকে তাকিয়ে দেখে নিজের রুমে চলে আসে।
–আমি ওর ধমকে চুপ হয়ে গেলাম কেন কিছু বললাম না কেন৷ কি হচ্ছে এগুলা আমার সাথে ওকে অন্য কোন ছেলে কিছু বললে আমার কেন রাগ হচ্ছে।
এমন কেন হচ্ছে আমার সাথে।
।
আমি রুমে এসে ভাবছি আমি কতো সাহসী হয়ে গেছি কেমন একটা ধমকে চুপ করিয়ে দিলাম হা হা৷
কিন্তু উনি এভাবে ভাঙচুর করছিলো কেন ওনার হাত কাটাতে আমার কেন কষ্ট হচ্ছিল কি হচ্ছে এগুলা।
এগুলা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।
★
আমানও মেঘের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমের দেশ পাড়ি দিলো।
।
।
–কিরে রোজ তুই এখানে।
–আকাশ ভাইয়া আসলে আমার ভালো লাগছিলো না তাই ছাঁদে।
–ওহ৷
–তুমি কখন এলে।
–মাত্র।
–একটা কথা বলবো ভাইয়া।
–হুম বল৷
–এদিকে এসো।
আকাশ রোজের কাছে এগিয়ে গেল।
–কি হইছে।
–দেখ ভাইয়া আপু চলে যাবার পর বাবা অনেক ভেঙে পরেছে কেউ সুখী নেই আমি জানি তুমিও না। এক মাত্র তোমার কথায় মা বাবা শান্ত হয় কিন্তু কিছু দিন পর যখন দেখবে তাদের শান্ত দেওয়া ছেলেটা নিজের অবস্থা বেহাল করে ফেলেছে তখন কি হবে।
–তুই কি বলতে চাস রোজ।
–আমি বলতে চাইছি তুমি আপুর থেকে সরে এসে নিজেকে গুছিয়ে নেও।
–তুই কি পাগল হইছিস।
–পাগল কেন হবো বলো যা হবার তা তো হলো এখন সেটা নিয়ে পরে থাকলে কি আর দুনিয়া চলবে।
–রোজ তোর তো আপু ছিলো তুই এভাবে বলতে পারছিস৷
–তুমি ভুল
–চুপ কর আর একটা কথাও বলিস না তুই মেঘের ছোট বোন তাই মাফ করে দিলাম এর পর এমন কথা যেন না শুনি৷
আকাশ কথা গুলো বলেই চলে এলো।
–তুমি কেন বুঝো না আকাশ ভাই আপুকে হারানোর হাজার বেদনা এক সমান তোমায় ভালোবাসি তোমাকে এভাবে দেখতে পারছি না আমি৷
।
।
আমান ঘুমাচ্ছে এমন সময় হটাৎ ফোন বেজে উঠে,
ঘুমের ঘোরে ফোনটা পিক করে,
–হ্যালো।
–আমান তুই ঘুমোচ্ছিস।
–হুম মা কেন।
–তোকে না বলেছিলাম ডক্টর এর সাথে দেখা করতে মেঘের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবে।
এবার আমান শোয়া থেকে উঠে বসে৷
তার মাথায় এক দম এই কথাটা ছিলো না।
–কিরে।
–মা এক্ষুনি যাচ্ছি।
–আর শোন৷
–হ্যা।
–আমি আজ বাসায় আসতে পারবো না মেঘ একা হয়তো ভয় পাবে সন্ধ্যার পর তুই বাসায় থাকবি৷
–হুম ঠিক আছে।
–হুম রাখি।
আমান উঠে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে পরে।
মেঘ এখনো ঘুম।
ডক্টর এর কাছে,
–মি.আমান।
–ড. বলুন কি খবর।
–মেঘের সব রিপোর্ট এখন বর্তমান সময়ের জন্য ভালো। এখন ঔষধের উপর থাকলে সে সুস্থ হবে৷ এক সময় সবটা মনে পরার চান্স আছে। কিন্তু,
–কিন্তু?
–কিন্তু মি.আমান যেদিন মেঘের সব মনে পরবে সেদিন উনি স্মৃতি হারানোর পর কি কি ঘটেছিলো তা সম্পূর্ণ ভাবে ভুলে যাবে।
আপনাদের কাউকে হয়তে মনে থাকবে না।
ডক্টর এর কথা শুনে আমানের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেল৷
কি বললো ডক্টর এগুলা৷
তবে যে মেঘের সব মনে পরলে আমান মেঘকে হারিয়ে ফেলবে।
–ড. ওর কি সব মনে পরবে মানে ঔষধ এর উপর চলতে থাকলে।
–দেখুন ওনার মাথায় আঘাত এর কারনে একটা হইছে আবার জদি ওনার কোন এক্সিডেন্ট হয় তাহলে পুনোরায় আঘাতের ফলে মনে পরতে পারে আর এই ঔষধ ঠিক মতো চললে আস্তে আস্তে মনে পরতে পারে৷
–ধন্যবাদ ডক্টর।
আমান বেরিয়ে এলো।
কেন জানি না আজ মেঘকে হারাবার ভয় হচ্ছে।
–তবে কি আমি ওকে ভালোবাসি।
হ্যা এটা ভালোবাসা ছাড়া কিছুই না৷
আমান সবটা ভেবে বাসায় আসে।
নিস্তব্ধতা বিরাজমান পুরো বাড়িতে।
আমানের বুকের বা পাশে কেমন যন্ত্রণা অনুভব হচ্ছে।
এক মিনিট ও নিচে না থেকে উপরে মেঘের রুমে চলে আসে।
ঘুমন্ত মেঘকে দেখে আমার দেহে প্রান আসে৷
বিছনার মাঝে নিজেকে গুটিয়ে শুয়ে আছে মায়াবী।
আমান ধির গতিতে মেঘের কাছে গিয়ে ওর কপালে চুমু আঁকে।
জীবনে প্রথম কোন মেয়েকে সে চুমু দিলো।
কিন্তু এ ভালোবাসা কি হবে স্থায়ী নাকি হবে মরিচিকার মতো কোন ধোঁকা৷
–তুই হারাতে পারিস না মেঘ আমি ভালোবাসি আজ যখন ডক্টর বললো তোর সব মনে পরলে তুই আমাকে ভুলে যাবি তখন বুঝতে পারছি আমি কতোটা ভালোবাসি তোকে৷ হারাতে দিবো না তোকে তার জন্য জদি তোকে সারা জীবন অতিত থেকে লুকিয়ে রাখতে হয় আমি তাই রাখবো।
চলবে