Deewana (A crazy lover)Part:32
Writer: urme prema (sajiana monir)
রাত ১০ টা
সায়রা অন্ধকার রুমে ফ্লোরে বসে আছে বেডের সাথে হেলান দিয়ে চুল গুলো এলো মেলো শাড়িটা অগোছালো হাতের চুড়ি গুলো নিচে পরে আছে ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অর্ধেকচুড়ি হাতে তার মধ্যে কিছু চুড়ি ভেঙ্গে হাতে ডুকে আছে টপ টপ করে হাত থেকে রক্ত ঝরছে কিন্তু তার সেই দিকে কোন খেয়াল নেই সে মাথাটা বেডে ঠেকিয়ে রেখে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে চোখ থেকে অনবরত পানি ঝোড়ছে
সায়রা:কে বলেছে মৃত্যু যন্ত্রনা একবার কেবল মৃত্যুর সময়ই হয় ?নিজের ভালোবাসার মানুষকে নিজের থেকে দূরে সড়ানো ও কোন মৃত্যু যন্ত্রনা থেকে কম না ।এমন ভালোবাসা হয়তো খুব কম মানুষ পায় কারো কারো ভাগ্য হয়তো থেকেও না আর আমি পেয়েও তাকে হারাচ্ছি নিজের থেকে তাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছি ।অনেক সময় পরিবারের দায়িত্বের কাছে ভালোবাসা গুলো মাটি টাপা দিতে হয় আর নিজের পরিবারের জন্য তাই করছি হয়তো খুব ভালো মেয়ে,ভালো নাতনী ,ভালো বোন হব কিন্তু সারাটা জিবন নিজের ভালোবাসার মানুষটির কাছে অপরাধী হয়ে থাকবো ।আচ্ছা সব কিছু এভাবে শেষ হওয়াটা কি খুব জরুরি ছিল ?তার কাছে সারাজিবনের জন্য কেন থাকতে পারলাম না ভালোবাসাটা তো কম ছিল না তাহলে কেন এমন হলো?তার কাছ থেকে দূরে থেকে যে আমি তিলে তিলে মরছি তা কি সে বুজবে ?আচ্ছা সেও কি এমন কষ্ট পাচ্ছে আমার মত ?হয়তো আমার চেয়ে কয়েক গুন বেশি কষ্ট পাচ্ছে ।আজ দুদিন হলো না তাকে দেখতে পারছি? না পারছি তার সাথে কথা বলতে ,কতটা কষ্ট পাচ্ছি শুধু নিজে বুজছি ।আচ্ছা বাসার সবাই কেন বুজছে না যে আমি তাকে ছাড়া থাকতে পারবো না আমি তাকে ছাড়া তিলে তিলে শেষ হচ্ছি ।তারা কেন বুজছে না আমি অন্য কারো সাথে থাকতে পারবো না প্রত্যেকটা মূহুর্ত তিলে তিলে মরবো কারন আরসাল যে আমার অস্তিত্ব জুরে আছে মনে প্রানে পুরোটা জুড়ে যে শুধু সেই আছে আর সারাজিবন শুধু সেই থাকবে ।যত যাই হোক আমার হৃদয়ের মাঝে সারাজিবন সে ই থাকবে ।
প্রত্যেকটা দিন কল্পনায় বাচঁচ্ছি ,আর বাস্তবে মোরছি
সায়রা এসব কথা ভাবতে ভাবতে দুদিন আগের কল্পনায় ডুব দেয়
২ দিন আগে….
সায়রার দৃষ্টিকোন থেকে…..
আজ নিজের ভালোবাসার সাথে অনেক দিন পর সময় কাটিয়েছি আজ আবার আমাদের সম্পর্ক আগের মত নরমাল হয়েছে মান অভিমান সব কিছু শেষ হয়েছে ।এখন থেকে আমাদের মাঝে আর কোন বাধা আসতে দিবো না জিবনের প্রত্যেকটা মূহুর্ত তার সাথে কাটাতে চাই তার ভালোবাসার চাদরে সারাজিবনের জন্য জরিয়ে থাকতে তাই ।(বাড়িতে ডুকতে ডুকতে মুচকি হেসে মনে মনে )
হঠাৎ ড্রইং রুমে ডুকে মুখের হাসি গায়েব হয়ে গেল সামনে দাদাজি রাগি গম্ভির মুখ দেখে মাথা নিচু করে নিজের রুমে যাওয়ার জন্য সিড়ির দিকে পা বাড়ালাম
দাদাজী:সায়রাাাাা(গম্ভীর কন্ঠে )
দাদাজীর গম্ভীর কন্ঠ শুনে থেমে গেলাম
আমি:জি দাদাজী (ভয়ে ভয়ে মাথা নিচু করে )
দাদাজী:এত রাত পর্যন্ত কোথায় ছিলে ???
আমি :দা….দাজী পিঠা উৎসবের পর মা…মাওয়ার সাথে তার বা….বাড়িতে গিয়েছিলাম
দাদাজী:মিথ্যা বলছো তুমি(জোরে ধমক দিয়ে )
আমি :স…সত্যি দাদাজী
দাদাজী :তুমি আরসালের সাথে ছিলে আমি তোমাকে এখন আরসালের সাথে আসতে দেখেছি ।কেন তার সাথে গিয়েছিলে ???
আমি চুপ করে আছি
দাদাজী :কেন গিয়েছিলে ?তোমাকে না বলেছি ওক থেকে দূরে থাকতে কেন গিয়েছিলে ওর কাছে ?ওর জন্য তোমাকে হারাতে বসেছিলাম ও মেন্টালি সিক তাছাড়া ওর কেরেক্টারে ও ভালো না ।এসব ব্যপার আগে জানলে কখনোই ওর সাথে কখনই Engagement হতে দিতাম না (রেগে গিয়ে )
দাদাজীর কথায় খুব রাগ হচ্ছে মানছি তার রাগ বেশি কিন্তু তার চরিত্র নিয়ে কথা বলাটা আমি কখনোই সয্য করবো না চাই রেগে বলতে লাগলাম
আমি:দাদাজী মানছি তার রাগ বেশি কিন্তু আপনি কখনোই তার চরিত্র নিয়ে কথা বলতে পারেন না তার কেরেক্টার যথেষ্ট ভালো তার চরিত্র নিয়ে কথা বলার আপনার কোন অধিকার নেই
দাদাজী:ও তাই তাহলে এসব কি হুম
দাদাজী ফোন সামনে ধরে আমি ফোনের স্কিনে ছবি দেখে স্থব্দ হয়ে যাই আরসালের সাথে রিসার ঘনিষ্ট ছবি ।কিন্তু আমি জানি আমার আরসাল কখনোই এমন কিছু করতে পারে না এই সব কিছু আমাকে আর আরসালকে আলাদা করার কোন একটি চাল ।তাই দাদাজির কাছে যেয়ে দাদাজির হাতে ধরে বলতে লাগলাম
আমি :দাদাজি এসব কিছু মিথ্যা আরসাল কখনোই এমন কিছু করতে পারেনা ।এগুলো রিসার কোন চাল আমাকে আর আরসালকে আলাদা করার জন্য এগুলো ইডিট করা ছবি
দাদাজী:তোমার চোখে ভালোবাসার চাদর বাধাঁ তাই এসব মনে হচ্ছে আরসাল এসব কিছু সত্যি আরসাল তোমাকে ধোকা দিচ্ছে
আমি :দাদাজী এসব মিথ্যা এগুলো রিসার কোন বাজে প্লান
দাদাজী :ব্যসসস আমি কোন কথা শুনতে চাইনা আরসালকে তোমার ভুলতে হবে
আমি:স্যরি দাদাজী আমি তা পারবো না (মুখ শক্ত করে)
দাদাজী:তাহলে আমাদের ছাড়তে হবে (রেগে)
দাদাজীর কথায় অবাক হয়ে কান্নাজরিত কন্ঠে
আমি:দাদাজী…..
আমার আর দাদাজীর কথার আওয়াজে বাড়ির সবাই ড্রইং রুমে জড়ো হয়ে গেছে আমি দাদাজীর কাছে যেয়ে কান্না করতে করতে বলতে লাগলাম
আমি :দাদাজী প্লিজ এমন বলবেন না আমি না আপনাদের ছাড়া বাচবো না আরসালকে ছাড়া বাচবোঁ
দাদাজী :তোমাকে তো যে কেউ একজনকে বাছাই করতেই হবে তোমার পরিবার নাকি আরসাল ?যদি আরসালকে বাছাই কর তাহলে সারাজিবনের জন্য তোমার জন্য এই বাড়ির দরজা বন্ধ
আমি:কিন্তু দাদাজী(কান্না করতে করতে )
দাদাজী:কোন কিন্তু না তোমার পরিবার নাকি আরসাল
এই মুহূরত্বে নিজেকে খুব অসহায় লাগছে কি করবো কোন কিছু বুজছি না দোটানায় পরে গিয়েছি পরিবারের জন্য ভালোবাসাকে ছাড়বো ?নাকি ভালোবাসার জন্য পরিবার ?এই মুহূরত্বে নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে ।নিজের ভালোবাসার জন্য কি ১৯ বছরের সম্পর্কটাগুলো বাবা মা ভাই বোন সবাইকে ছাড়বো ? তা কি উচিত হবে ?নাকি এই ১৯ বছরের সম্পর্ক গুলোর জন্য নিজের ভালোবাসা ?আমি যে কোনটাই ছাড়া বাচবোঁ না ।
দাদাজি :কি সিদ্ধান্ত নিলে ?পরিবার নাকি আরসাল?
নিচের দিকে তাকিয়ে কান্না করতে করতে নিচু স্বারে
সায়রা:পরিবার
দাদাজী :তাহলে তোমাকে আমার কথা মত বিয়ে করতে হবে রিসাদ হায়দার কে
দাদাজীর কথা শুনে অবাক চোখে তার দিকে রেগে চিৎকার করে বলতে লাগলাম
আমি:পারবো না আমি অন্য কাউকে বিয়ে করতে আমি আরসালকে ছাড়া অন্য কাউকে নিজের জিবনের কল্পনাও করতে পারিনা
দাদাজী :তাহলে আমার মরা মুখ দেখবে
দাদাজীর পা জরিয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলতে লাগলাম
আমি:প্লিজ দাদাজী এমন কিছু করবেন না আপনি আরসাল থেকে দূরে থাকতে বলেছেন আমি তার থেকে দূরে থাকবো কিন্তু প্লিজ আমাকে অন্যকারো হতে বলবেন না প্লিজ দাদাজী ,আমি তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবো
দাদাজী:তুমি রাজি না হলে আমার মরা মুখ দেখবে
আমি:দাদাজীীীীী….
দাদাজী:এখন তোমার কাছে আমার এই ডিসিশন খারাপ লাগলেও একসময় তুমি তা বুজবে ।পরশু তোমাকে রিসাদের পরিবার দেখতে আসবে আমি চাই তুমি তাদের সামনে সুন্দর ভাবে যাও তারা যাতে কোন কিছুর আবাশ না পায় যদি তুমি কিছু কর তাহলে আমার মরা মুখ দেখবে
দাদাজী নিজের রুমে চলে যায় ।দাদাজীর কোন দোষ নেই রিসা তাকে যেভাবে বুজিয়েছে আরসালকে তার সামনে যে ভাবে খারাপ বানিয়েছে তার এসব করা অস্বাভাবীক না ।বাড়িতে দাদাজীর কথার উপর কেউ কোন কথা বলার কোন সাহস নেই । ফ্লোরে ধপ করে বসে চিৎকার করে কান্না করছি সবাই তাকিয়ে দেখছে ইচ্ছা থাকার শর্তেও কেউ কাছে আসছেনা কারন বলার মত কিছুই নেই কি বা বলবে ?এক এক করে সবাই যার যার রুমে চলে যাচ্ছে ।সবাই রুমে যাবার পর দিয়া মুন ধরে আমাকে রুমে নিয়ে যায় ।সে রাতের পর থেকে নিজের রুম থেকে আর বের হই নি আরসালের ফোন ও রিসিভ করিনি ।আজ দুপুরে মা রুমে আসে এসে শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে রিসাদের পরিবারের সামনে নিয়ে যায় সবকিছু মরা লাশের মত হয়ে করছি নিজের দেহ তে প্রানটাই নেই থাকবেই কি করে তাকে ছাড়া অন্য কাউকে যে ভাবতে পারছিনা ।প্রতিটা মূহুর্ত মরছি ।তারাদের সামনে যাওয়া সব কিছু অসয্য লাগছে রিসাকে দেখে খুন করতে ইচ্ছা করছে ওর জন্য আজ আমার জিবনের এই অবস্থা আমি আমার আরসালকে হারাচ্ছি ।কিন্তু ওকে কিছু বলতে ও পারছিনা কারন আমি দাদাজীকে কথা দিয়েছি আমি সবকিছু তার কথামত করবো এই বিয়েটা ও ।তারা চলে যেতেই রুমে এসে দরজা আটকিয়ে দেই এই সাজগোজ সব কিছু অসয্য লাগছে যার জন্য সাজার কথা ছিল তার জন্য না সেজে আজ অন্য কারো জন্য সাজতে হচ্ছে সবকিছু খুলে ছুড়ে ফেলে দেই
বর্তমানে…
সায়রা:কেন এমন হলো ?কেন আমি আমার আরসালকে পাবো না ?আমি তো তাকে খুব ভালোবাসি তাহলে তাকে কেন হারাতে হচ্ছে ? এই মৃত্যুর মত অসয্য যন্ত্রনা কেন সয্য করে হচ্ছে ?পারছিনা তো সয্য করতে ।আরসাল আপনাকে অনেক ভালোবাসি অনেককককক
হঠাৎ ফোনের রিং টন বাজতে লাগলো স্কিনে লিখা arsal is calling… সায়রা রিভিভ করতে নিলে ফোন কেটে যায় ফোনের নটিফিকেশনে ২ দিনে ৫০০+ মিসকল আরসালের ২০০+ মেসেজ কিছুক্ষনের মধ্যে আর ১ টা মেসেজ আসলো সায়রা ওপেন করে দেখে
-অনেক হয়েছে আমার ধর্য্যের সিমানা ভেঙ্গে গেছে আমি উপরে আসছি ।
সায়রা মেসেজ দেখে ভয় পেয়ে যায় সাথে আরসালের নাম্বারে ফোন দেয় আরসাল ফোন রিসিভ করে আরসাল কিছু বলার আগেই সায়রা বলতে লাগে
সায়রা:প্লিজ আপনি আসবেন না দাদাজী দেখলে অনেক রাগ করবে
আরসাল:আমি এত কিছু বুঝিনা আমি আসছি (রেগে চিৎকার করে)
সায়রা:না প্লিজ
আরসাল:তাহলে তুমি নিচে আসো এখনই নাহলে আমি উপরে আসবো (শান্ত কন্ঠে)
সায়রা:এখন কি করে আসবো ?
আরসাল:আমি এত কিছু জানিনা আমি আসতে বলেছি তুমি এখনই আসবে (রেগে ধমক দিয়ে)
সায়রা ভয়ে কেপেঁ উঠে
সায়রা:আমি আসছি
আরসাল সাথে সাথে ফোন কেটে দেয় সায়রা যেভাবে আছে সেভাবেই দৌড় দিয়ে নিচে চলে যায় নিচে গিয়ে আস্তে আস্তে দরজা খুলে বাহিরে চলে যায় ।বাড়ি বাম পাশের গলিতে আরসাল দাড়িয়ে আছে গাড়িতে হেলান দিয়ে সিগারেটের ধোঁয়া উড়াচ্ছে চুল গুলো এলো মেলো চোখ গুলো ভয়ংকর লাল হয়ে আছে ।সায়রা আরসালকে কখনো সিগারেট খেতে দেখে নি আজ তাকে এভাবে দেখে বেশ ভয় পাচ্ছে কেমন যেন অপরিচীত লাগছে আরসালকে ।দুদিনে নিজের কি হাল করেছে সায়রা ভয়ে ভয়ে আরসালের দিকে আগায় আরসাল সায়রাকে দেখে সায়রার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকায় হাতের মুঠটা আরো শক্ত করে ধরে কপালের রগ গুলো ফুলে উঠে ।সায়রা আরসালের এমন রুপ দেখে ভয়ে কাপঁতে কাপতেঁ আরসালের কাছে যায়…
চলবে….
❤️❤️❤️❤️
Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন???
জানি কালকে এমন রোমান্টিক পার্ট পড়ার পর এমন একটি পার্টের আশা করেনি আমাকে চাইলে বোকতে পারেন আমি রাগ করবো না ??? কিন্তু নেক্সট পার্টে ধামাকা থাকবে ???খুব তারাতারি crazy lover crazy husband হবে ???গল্পে নতুন মোর আসছে স্টোরি আরো বেশি রোমান্টিক হবে + টুইস্ট আসবে❤️❤️❤️আরসালের দিওয়ানাগিরী পাগলামো ভালোবাসা শুরু হবে ???