Deewana (A crazy lover)Part:43

0
4470

Deewana (A crazy lover)Part:43

Writer: urme prema (sajiana monir)

সকালে……

ফোনের রিং বাজছে খুব বিরক্ত লাগছে এত সকালে ইমু তে কে ফোন দিলো?অসয্যকর আমার শান্তি ঘুম নষ্ট করছে ।ঘুম ঘুম চোখে ফোনটা রিসিভ করলাম চোখ বুজে আসছে ঘুমের জন্য চোখ খুলে রাখতে পারছিনা নিভু নিভু চোখে তাকিয়ে দেখলাম আরসাল ফোন করেছে মুখে আমাকে পাগল করার জন্য সেই কিলার হাসি পরনে কালো টাউজার আর গায়ে হুডি পড়া অসাধারন লাগছে ।উনি মুচকি হাসি দিয়ে বলতে লাগেন

আরসাল:গুডমর্নিং জাননননননন।

আমি:(ঘুম ঘুম কন্ঠে )গুড মর্নিং

আরসাল:ঘুম হয়েছে

আমি:না ঘুম হয়নি ।আমি আর একটু ঘুমাবো (চোখ বন্ধ করে ঘুম ঘুম কন্ঠে )

আরসাল:ঘুম হয়নি ?আল এতটু ঘুমাবা(বাচ্চাদের মত করে)

আমি:হুম

আরসাল:না জানননন অনেক ঘুম হয়েছে ।এখন উঠো ব্রেকফাস্ট করে নেও জান ।আমি আর আম্মু আসছি ২ ঘন্টার মধ্যে ।উঠো পরে বাসায় এসে আবার ঘুমিও

আমি:প্লিজজজজ আর একটু ঘুমাতেন দিনননননন(কপাল কুচঁকিয়ে চোখ বন্ধ করে )

আরসাল:উঠবে নাকি বাসায় এসে আমার স্টাইলে ঘুম ভাঙ্গাবো জাননননন (বাকাঁ হেসে)

লাফ দিয়ে উঠে বসে চিৎকার করে

আমি:নাাাাাাাাাাাা

আরসাল হাসতে হাসতে বলতে লাগে

আরসাল:আমি জানি তো জান তোমার ঘুম ভাঙ্গানোর ঔষধ কি ।এখন উঠো ,উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে রেডি হয়ে নেও

আমি:(মন খারাপ করে মুখ ভেংচি দিয়ে )হুম বুঝেছি উঠছি তো ? আমার ঘুমের ১২ টা বাজিয়ে দেওয়ার জন্য আপনি মাহির ?শয়তান লোক

আরসাল:আমাকে পরে সামনাসমনি বকে দিও এখন উঠো

আমি:ওকে বায়

আরসাল:বায় জাননননননন।লাভ ইউ জানননননন?

আমি:হুম হয়েছে বায়

উনি ফোন কেটে দিলো আমি ফোন সাইডে বেড বক্সের উপর রেখে বেড থেকে নেমে ওয়াশ রুমে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ।ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখি পাখি বেডে বসে আছে ।আমি বলতে লাগলাম

আমি :পাখি তোর স্কুল নেই ?

পাখি:আছে দি কিন্তু আমি যাই নি

আমি:কেন ?

পাখি :আমি তোমাদের সাথে যাবো তাই আম্মুকে বলেছি আজ স্কুলে যাবো না

আমি:আম্মু রাজি হয়ে গেল ?

পাখি:প্রথমে না করেছে কিন্তু আমি অনেক কান্না করেছি কান্না না মানে কান্নার একটিং করেছি আর কি (ভাব নিয়ে)

আমি পাখির কানে ধরে বলতে লাগলাম

আমি :খুব একটিং শিখে গেছো তাই না ???

পাখি :ও দি লাগছে তো এত শক্ত করে কেউ কান ধরে ! ছাড়ো না দি প্লিজজজজ

আমি :জানি এটাও একটিং

পাখি :না দি সত্যি

আমি পাখির কান ছেড়ে দিয়ে

আমি:যাহ্ ছেড়ে দিলাম এখন এখান থেকে যা

পাখি চলে যেতে নিলো আবার দরজার সামনের থেকে ফিরে এসে বলতে লাগে

পাখি :ও হো দি একটা কথা বলতে তো ভুলেই গিয়েছি !যার জন্য এখানে আসা

আমি :কি কথা

পাখি:আম্মু তোমাকে একে বারে রেডি হয়ে নিচে নামতে বলেছে ব্রেকফাস্ট করেই আমরা সবাই বের হবো আরসাল ভাইয়া আর আন্টি আসছে ।

আমি:ওকে তুই আম্মুকে বল আমি রেডি হয়ে নিচে আসছি

পাখি নিচে চলে গেল ।আমি রেডি হতে লাগলাম কাবার্ড থেকে সাদা গ্রাউন বের করলাম সাথে আকাশি কালারের মেচিং উড়না আর সেলোয়ার ।যদিও আম্মু ড্রেসটি অনেক আগে নিজের পছন্দে কিনে দিয়েছিল কিন্তু কখনো পরা হয়নি কারন আমাকে সাদা কালার খুব একটা মানায় না কেমন যেন লাগে ।‌অনেক কে দেখি সাদায় বেশ সুন্দর লাগে বাট আমি সাদা পড়লে আমাকে আরো কালো লাগে কিন্তু আজ কেন যেন এই ড্রেসটা পড়তে বেশ ইচ্ছে করছে ।তাই এই ড্রেসটা পড়লাম ।কানে সিলভারের ঝুমকা ঠোঁটে সব সময়ের মত হালকা গোলাপি লিপস্টিক আর চোখে মোটা করে কাজল ।চুল গুলো ছেড়ে সামনে কিছুটা এনে নিলাম হাতে বড়মার দেওয়া সেই চুড়ি আর নাকে ডাইমন্ডের নোস পিন ।আয়নায় নিজেকে দেখলাম না ততটাও খারাপ লাগছে না বেশ ভালোই লাগছে ।রেডি হয়ে নিচে চলে গেলাম নিচে গিয়ে ডাইনিং এ বসলাম আম্মু আমার দিকে একবার তাকিয়ে নিজের রুমে চলে গেল আম্মুর এমন বিহেবে বেশ খারাপ লাগছে মনটা খারাপ হয়ে গেল না জানি আম্মু কবে বুজবে ? দিয়া পাশে নাস্তা করেছে এতক্ষন তারা সব খেয়াল করেছে ।নিয়া আমাকে বলতে লাগে

দিয়া:আরে চিল সব ঠিক হয়ে যাবে কিছু সময় নে দেখবি সবার রাগ কমে যাবে আবার সব কিছু আগের মত হয়ে যাবে

আমি:হুম তাই যেন হয় ।

কিছুসময় পর আরসাল আর বড়মা চলে আসে আরসালকে একদিন দেখিনি তাই মনে হচ্ছে যে না জানি কত সময় পর দেখছি ইচ্ছে করছে তার দিকে ছুটে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরি ।বড়মাকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করে তার দিকে আড়চোখে তাকালাম ,তাকিয়ে দেখি উনি কেমন জানো ঘোর লাগা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।তার পর সবাই শপিং এ যাবার জন্য বাড়ি থেকে বের হলাম গাড়িতে উঠে পড়লাম ।আম্মু, বড় মা ,পাখি ,মুন ,দিয়া এক গাড়িতে উঠে পড়লো আর আমি আর আরসাল এক গাড়িতে উঠলাম ।গাড়িতে উঠতেই উনি গাড়ি স্টার্ড না করে আমার দিকে বেশ কিছুসময় তাকিয়ে রয়েছে ঘোর লাগানো চোখে ।আমি নিজের দিকে কিছুক্ষন ভ্রু কুচকিয়ে তাকিয়ে আবার উনার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম

আমি:কি হয়েছে ?এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন ??

হঠাৎ করে উনি আমাকে হেটকা টান দিয়ে নিজের সাথে জরিয়ে ধরে ঘাড়ে মুখ গুজেঁ বলতে লাগে

আরসাল :কেন জান তুমি বোঝনা ? নিজের বউকে দেখছি কতদিন পর দেখছি

আমি:কালই তো আসলাম আর সকালে তো ভিডিও কলে কথা বললাম

আরসাল:এখন তোমার থেকে দূরে থাকা খুব কষ্টকর এখন কয়েক ঘন্টার ও দূরত্ব আমার কাছে হাজার বছরের মত লাগছে ।এভাবে দূরে থাকতে পারছিনা তেমার কাছ থেকে

আমি:আর তো মাত্র ৩ দিন তার পর সারাজিবনের জন্য তো আপনার কাছে চলে যাবো(নিচু স্বরে )

আরসাল:তখন নিজের কাছ থেকে কখনো তোমাকে দূরে যেতে দেব না ।

আমি:ওকে(মুচকি হেসে)

আরসাল:বাসায় সব ঠিক আছে তো??

আমি তার কি উওর দিব বুজতে পারছিনা তার সামনে মিথ্যা বলার সাহস আমার নেই ।তার পর ও অনেক কষ্টে সাহস জুটিয়ে মিথ্যা বললাম

আমি:হুম সব ঠিক আছে

আরসাল:সত্যি ?

আমি:সত্যি

তার পর উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমার গালে হাত রেখে কপালে চুমু দিয়ে গাড়ি স্টার্ড দেয় ।কিছু সময়ের পর গাড়ি ডিজাইনার হাউজের সামনে পৌছে গেল আমাদের আগেই আম্মুরা পৌছিয়ে গেছে আমরা ভিতরে চলে গেলাম ভিতরে গিয়ে দেখি আম্মু বড়মা ড্রেস দেখছে আমি ও তাদের কাছে চলে গেলাম আরসাল ও তার জন্য শেরোয়ানী চুজ করছে ।আমি হঠাৎ একটা লেবেঙ্গা চুজ করে মাথায় ঘুমটা দিয়ে আরসালকে দেখালাম আয়নায় সে আয়নাতে তাকিয়ে আমার দিকে মুচকি হাসি দিয়ে আর চোখের ইশারায় বুজিয়ে দেয় যে তার পছন্দ হয়েছে ।আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে খুশি হয়ে বলতে লাগলাম

আমি:আম্মু দেখ তো এটা কেমন লাগছে

আম্মু:তুমি এখন যথেষ্ট বড় হয়েছ তোমার তো আর আমাদের মতামতের প্রয়োজন নেই তুমি সব সিদান্ত নিতে পারো তো জিগাসাটা করার কোন মানে হয় না ।(শান্ত ভাবে)

আম্মুর কথায় মুখের হাসিটা গায়েব হয়ে গেল ।আম্মু শান্ত ভাবে কথাটা বললেও এর মানে আমি ঠিক ই বুজছি ।আমি জানি আম্মু আমার উপর রেগে আছে রাগ করারই কথা কারন আমি তাদের না জানিয়ে তাদের সবার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়েটা করেছি কিন্তু এছাড়া আমাদের কাছে কোন রাস্তা ছিল না যদি তখন বিয়েটা না করতাম তাহলে দাদাজী আমাকে রিসাদের সাথে বিয়েটা দিয়ে দিত আর আমি আরসালকে সারাজিবনের জন্য হারিয়ে ফেলতাম ।বিয়েটা আরসালের জিদের কারনে হলেও পরে ঠান্ডা মাথায় ভেবে তা বুজতে পেরেছি যে কতটা জরুরী ছিল বিয়েটা ।যদি রিসাদকে বিয়ে করতাম তাহলে ৩টা জিবন নষ্ট হতো আমি রিসাদকে কখনো মেনে নিতে পারতাম না কারন আমার মনে সব সময় আরসাল বাস করতো তাই বিয়েটা যেভাবেই হোক না কেন যা হয়েছে ভালোর জন্য হয়েছে কিন্তু আম্মুকে তা কি করে বোঝাবো ?বাড়ির সবাই কে কি করে বোঝাবো আরসাল নির্দোষ সব রিসার চাল ছিলো ।আমি জানি সবাই মন থেকে বিয়েটা মনে নি শুধু ফেমেলি রিপুটেশনের জন্য এত আয়োজন আর মেনে নিচ্ছে।এসব ভাবতে ভাবতে চোখে পানি এসে গেল চোখের পানি সবার আরালেই মুছে ফেললাম ।

‌অন্যদিকে …..

সায়রার আর সায়রার মায়ের সব কথা আরসাল শুনছিলো ।আরসাল সায়রার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগে

আরসাল:আমি জানতাম সব কিছু ঠিক হয়নি ।বাসায় সবাই সব মেনে নেয়নি কিন্তু আমাকে মিথ্যা বলেছো ।আমি জানি তুমি চাপা স্বভাবের মেয়ে কোন কিছু হলে কখনো সহজে বলবেনা ।আর এটাই আমার ভয় তুমি সব কিছু নিজের মধ্যে গুটিয়ে রেখে সব কষ্ট নিজে একাই পাও কাউকে বুজতে ও দেও না।প্রমিজ জান আমার জন্য তেমার পরিবার তোমার থেকে দূর হয়েছে আমিই সব ঠি ক করে দেও আর ২ টা দিন তার পর সবার সামনে রিসার সত্যি আসবে ।আর তোমার পরিবার ও মন থেকে আমাদের সম্পর্ক মেনে নিবে এভাবে আর তোমাকে কষ্ট পেতে হবে না জান ।সবার সব ভুল বোঝাবুঝি শেষ হয়ে যাবে আমাদের নতুন জিবন নতুন ভাবে পথ চলা সব কিছু নতুন করে শুরু হবে সবার দোয়ায়।

সায়রার দৃষ্টিকোন থেকে….

আমি চুপ করে এক কনায় বসে আছি হঠাৎ উনি আমার হাত ধরে বাহিরে নিয়ে আসে আর আম্মুদের বলে আসে আমাদের বাড়িতে যেতে দেরি হবে ।হঠাৎ তার এমন আচরনে আমি পুরো বোকা হয়ে যাই ।তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি উনি আমার হাত ধরে ডিজাইনার হাউজ থেকে বের হয়ে গাড়ির গেট খুলে গাড়িতে বসায় ।গাড়ি নিজ গতিতে চলতে লাগে ।আমি তার দিকে ভ্রু কুচঁকিয়ে তাকিয়ে আছি তার চেহারা দেখে ভালো মন্দ বোঝার চেষ্টা করছি কিন্তু আফসোস কিছুই বুজতে পারছিনা ।তিনি সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে আমি তার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম-আমরা কোথায় যাচ্ছি ?উনি সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে বলতে লাগে

আরসাল:গেলেই বুজতে পারবে

তার এমন বিহেবের কিছুই বুজতে পারছিনা হঠাৎ উনার কি হলো কেন এমন করছে ?সবার সামনে হাত ধরে নিয়ে গেল আবার বললো ফিরতে দেরি হবে !কোথায় যাবে উনি ?গাড়ি চলছে নিজ গতিতে আমি তার দিকে ফিরে তাকে দেখছি আর তার মনে কি চলছে তা বোঝার চেষ্টা করছি ।বেশ কিছু সময় পর গাড়ি থামলো সামনে তাকিয়ে হা করে রইলাম ।উনি এই জায়গায় কেন হঠাৎ নিয়ে আসলো ?….

চলবে…..
❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন???

Thanks for supporting me ❤️❤️❤️❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here