Deewana (A crazy lover)Part:47

0
4806

Deewana (A crazy lover)Part:47

Writer: urme prema (sajiana monir)

সকালে…..

কাল রাত থেকে আরসালকে ফোন করছি ফোন ধরছেনা কয়েকবার ফোন রিং হবার পর ফোন অফ বলছে কতবার তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি কিন্তু প্রত্যেকবারই সে ইগনোর করছে ।আমি জানি আমি অনেক বড় ভুল করেছি উনাকে বিশ্বাস করিনি উনার ভালোবাসাকে সন্দেহ করেছি উনাকে অপমান করেছি উনার ভালেবাসাকে অপমান করেছি আমি মানছি আমার তাকে বুঝার দরকার ছিলো তার কথা শুনার দরকার ছিল একবার কিন্তু আমি তা কিছুই করিনি ।এখন একবার আমার কথাটা শুনুক আমাকে একটা সুযোগ দেক ।আমি যে খুব অনুতপ্ত ।

কিছুসময় পর দরজা খোলার শব্দে সেদিকে তাকালাম তাকিয়ে দেখি আম্মু লেহেঙ্গার বক্স আর গহনার বক্স নিয়ে ডুকছে ।আমি ফোন পাশে রেখে আম্মুর দিকে মুচকি হাসি দিয়ে তাকালাম আম্মু আমার পাশে বসে বেডে তা হাতের বক্স গুলো রেখে আমার গালে হাত রেখে ছল ছল চোখে বলতে লাগে

আম্মু :আমার মেয়ে কত বড় হয়ে গেছে আজ তার বিয়ে বিশ্বাসই হচ্ছেনা মনে হচ্ছে সেদিন তো আমার কাছে আবদার করতে যে তোমাকে বউ সাজিয়ে দেই আজ সত্যি সত্যি বউ সাজিয়ে বিদায় করতে হবে ।বছর গুলো যেন চোখের পলকে চলে গেল সেদিনের সেই ছোট সায়রা আজ কত বড় হয়ে গেছে আজ বিয়ে ।আজ সে অন্য কারো বাড়ির বউ হবে ।

আম্মু এইসব বলতে বলতে হু হু করে কান্না করে দেয় আমি ও নিজের কান্না আটকিয়ে রাখতে পারলাম না অনেক চেষ্টার পর আমিও আম্মুকে কে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলাম ।অনেক কষ্ট লাগছে মনে হচ্ছে সত্যি সত্যি হয়তো পর হয়ে যাবো ।আম্মু মাথায় হাত রেখে বলতে লাগে

আম্মু:আমাকে ক্ষমা করে দিও মা তোমাকে এ কয়েকদিন ‌অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমার দোষ না থাকার পর ও শাস্তি পেয়েছো তোমাকে বুঝতে ভুল করেছি ।

আমি:(সে ভাবে জরিয়ে ধরেই কান্না করতে করতে)না আম্মু এতে তোমার কোন দোষ নেই রিসা পরিস্থীতি এমন করেছিল যে তোমরা ভুল বুঝেছো তুমি কেন ক্ষমা চাচ্ছো ।

আমি কান্না করছি আম্মু আমাকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে আমার চোখ মুছে দিয়ে গালে হাত রেখে বলতে লাগে

আম্মু :উহু আর কান্না না ।আজ আমার প্রিন্সেসের জন্য বিশেষ দিন জিবনের সবচেয়ে বড়দিন আমি তাই না আমার প্রিন্সেস কান্না করে নিজের চোখ মুখ ফুলিয়ে রাখুক ।আর কান্না না যা কষ্ট পাবার যা ঝড় হবার তা তোমাদের জিবনে হয়েছে এখন আর না এখন শুধু হাসবে ।আরসাল তোমাকে খুব ভালোবাসে আমি জানি আরসাল সারাজিবন তোমাকে খুব সুখে রাখবে ।তোমাকে ভালোবাসবে সব সময়ে তোমার পাশে থাকবে তোমাকে সাপোর্ট করবে ।এই কয়েক দিনে আমার তা বেশ ভালো করে ধারনা হয়ে গেছে যে আরসালের চেয়ে বেস্ট কেউ তোমার জন্য হতে পারে না ।আমি আরসালের হাতে তোমাকে তুলে দিয়ে নিশচিন্ত হবো ।এখন ফ্রেশ হয়ে আসো কিছু সময় পর মেকআপ আর্টিস্টরা আসবে ।

আম্মু নিচে চলে গেল আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি আম্মু ব্রেকফাস্ট নিয়ে বসে আছে আমাকে আম্মুর পাশে বসিয়ে আম্মু নিজ হাতে খায়িয়ে দিচ্ছে আম্মুর চোখ ছল ছল করছে আমার সামনে লুকানোর চেষ্টা করছে আমি তা ঠি কই বুঝছি ।ব্রেকফাস্ট শেষে বাড়ির ছাদে নিয়ে গেল সেখানে মাওয়া ,সানজিদা ,রিদ্ধি দি ,রশ্নি ,দিয়া ,মুন বাড়ির সব মহিলারা আম্মু দাদীমা সবাই রয়েছে ছাদে আমাকে হলুদ দুধ আর গোলাপের পাপড়ি দিয়ে গোসল করালো ।এটা নাকি আবশ্যক একটা নিয়ম ।আমি নিচে নিজের ওয়াশরুমে এসে আবার গোসল করে নিলাম ।কিছুসময় পর মেকআপ আর্টিস্টরা আসে ।ঠি ক তার মনের মত করেই সাজি যে ভাবে উনি আমাকে বিয়ের দিন দেখতে চেয়েছে সে ভাবেই সেজেছি ।চুল খোপা করা খোপায় লাল গোলাপ ব্রাইডাল মেকওভার লাল খয়রি লেহেঙ্গা গোল্ডের জুইলারী একহাতে চুড়ি আর অন্য হাতে মানতাশা দুপায়ে আলতা আর মোটা পায়েল পড়া ।সব কিছুই মিলিয়ে অসাধারন লাগছে ।সবাই অনেক আগেই চলে গেছে সন্ধ্যায় আমি মাওয়া আর দিয়ার সাথে সেন্টারের জন্য রওনা হলাম ।

সেন্টারে……

গাড়ি গেটের সামনে নামলো গাড়ি থেকে নামলাম পুরো সেন্টার লাল সাদা গোলাপে আর মরিচ বাতিতে সাজানো অসম্ভব সুন্দর লাগছে ।মাওয়া আর মুন আমাকে ধরে নামালো লেহেঙ্গা আর গহনার ভারে ঠি ক করে হাটঁতে পারছিনা ।তারা ধরে নিয়ে যাচ্ছে ।সেন্টারে ভিতরে গেলাম গিয়ে দেখি অনেক মানুষ আত্নিয়রা সবাই আম্মু এসে কপালে চুমু দেয় বলতে লাগে

আম্মু :অনেক সুন্দর লাগছে

আমি উওরে শুধু মুচকি হাসি দেই ।সামনে দিকে তাকিয়ে দেখি আরসাল স্টেজে দাড়িয়ে আছে চাপ দাড়ি চুলগুলো সুন্দর করে ব্রাশ করা আমার লেহেঙ্গার সাথে মেচিং সেরোয়ানী হাতে ব্রেন্ডেড ঘড়ি সব মিলিয়ে পুরো হিরো লাগছে উনি একবার আমার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিলো আস্তে আস্তে স্টেজের দিকে আগাতে লাগলাম সাথে মাওয়া আর মুন বুকটা ধুক ধুক করছে সাহস নিয়ে আস্তে আস্তে তার দিকে পা বাড়াচ্ছি ।আমাকে তার পাশে বসানো হলো আড়চোখে উনাকে দেখছি আর উনি সামনের দিকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে একবারের জন্য তাকাচ্ছে না ।photography র সময় সেই আগের মত সেই রকম ঘুমড়া মুখ করে ।একবারো আমার দিকে তাকাচ্ছেনা উনার এমন ব্যবহারে বেশ কষ্ট হচ্ছে ।তার পর আবার সবার সামনে বিয়ে পড়ানো হলো আজ খুব খুশি লাগছে অবশেষে আমার ভালোবাসা আমাদের বিয়ে স্বিকৃতি পেল সবার সামনে আমার খুব কষ্ট ও লাগছে নিজের পরিবার বাবা মা ভাই বোন সবাইকে ছেড়ে যেতে হবে ১৯ বছরের সম্পর্ক গুলো ছেড়ে যেতে হবে ।বিয়ের পড়ানোর পর আয়নায় মুখ দেখার সময় উনি আমার দিকে একবারের জন্য ও তাকালো না হঠাৎ আমার চোখ থেকে দু ফোটা পানি আয়নায় পড়ে আচ্ছা উনি কি বুঝছে না তার এমন ব্যবহারে আমার বেশ কষ্ট হচ্ছে ?

বিদায়ের সময়ে আম্মু আব্বুকে ধরে অনেক কান্না করি ।আব্বু সবচেয়ে বেশি কান্না করেছে আব্বুর চোখের মনি ছিলাম সবসময়ে কখনো উচু স্বরে ধমক ও দেয়নি আজ আব্বুর কাছ থেকে দূরে চলে যাচ্ছি আব্বু খুব কান্না করছে ।আব্বু আমার হাত আরসালের হাতে তুলে দিয়ে বলতে লাগে

আব্বু:আমার মেয়েকে সারাজিবন সুখে রেখ বাবা কখনো কষ্ট দিও না ।ওর খেয়াল রেখো

আরসাল:(আমার দিকে তাকিয়ে)আমি সারাজিবন ওর পাশে থাকবো ওর খেয়াল রাখবো ।

তারপর আমাকে গাড়িতে তার পাশে বসিয়ে দেয় গাড়ি স্টার্ড দেয় আমি জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে থাকি যতক্ষন পর্যন্ত সবাইকে দেখা যাচ্ছে ।গাড়ি মেইন রোডে উঠতেই আরসাল গম্ভির কন্ঠে আমাকে বলে -মাথা ভিতরে আনো পিছনে গাড়ি আছে ।আমি তার কথা শুনে মাথা ভিতরে নিয়ে আসি কিন্তু কান্না থামাতে পারছিনা ।হঠাৎ উনি নিজের হাত আমার হাতের উপর রাখে আমি তার দিকে অবাক চোখে তাকাই উনি আমার দিকে টি স্যু এগিয়ে দেয় আমি তার হাত থেকে তা নিয়ে নিয়ে চোখের জল গুলো মুছি ।গাড়ি গেটের ভিতর প্রবেশ করে বাড়ির সামনে থামতেই দেখি সবাই আগের থেকে দাড়িয়ে আছে বড়মা বরন করে আমাকে নিয়ম অনুযায়ী আরসালকে আমাকে কলে করে ভিতরে নিয়ে যেতে হবে ।আরসাল আমাকে কলে করে ভিতরে নিয়ে সোফায় বসায় উনার কাজিন গুলো সবাই আসে গল্প করতে লাগে এটা ওটা বলতে লাগে আমি বেশি একটা কথা বলছিনা চুপ করে আছি ।আরসাল চলে যায় ।

রাতে ১২:৩০ টা…..

রুমে বসে আছি পুরো রুম লাল সাদা গোলাপ ,কেন্ডেলে সাজানো ।ফুলের ঘ্রানে পুরো রুম ভরে আছে অসম্ভব সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে ।এত রাত হয়ে গেছে এখনো উনি রুমে আসে নি ।বেশকিছুসময় পর দরজা খোলার শব্দ পেয়ে তাকাই দেখি উনি রুমে এসেছে ।আমি বেড থেকে নেমে তার দিকে যাই তার সামনে গিয়ে দাড়াই উনি আমার পাশ কেটে যেতে নিলে আমি উনার হাত ধরে আটকাই উনার দিকে ছল ছল চোখে তাকাই উনি থেমে যায় আমার দিকে তাকায় আমি কান্না করতে করতে বলতে লাগি

আমি:আমি ভুল করেছি তাই আমাকে এই ভাবে শাস্তি দিবেন আপনি জানেন আমি আপনার ইগনোর সয্য করতে পারিনা সব সয্য করতে পারলেও এটা আমার সয্য হয় না ।আপনি আমাকে বকেন মারেন তার পর এই ভাবে ইগনোর করবেন না প্লিজ ।আমি সয্য করতে পারছি না ।আমাকে এত বড় শাস্তি দেবার আগে আমাকে একটা সুযোগ দেন আমার কথা গুলো একবার শুনেন প্লিজ আ…

উনি আমাকে আর বলতে দেয়না উনি রেগে বলতে লাগে

আরসাল:কি বলবেন আপনি ?আপনি তো আমাকে ঘৃনা করেন তাই না ।আমিতো আপনার বিশ্বাস ভেঙ্গেছি তাই না ?আপনার উপর কোন জোর নেই আর জোর করবো ও না ।অনেক করেছি আর নিজের অধিকার দেখাবোনা ।আপনি মুক্ত যা ইচ্ছা করতে পারেন কোনো জোর খাটাবো না ।

এসব কথা বলেই কাবার্ড থেকে টাউজার নিয়ে হন হল করে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে আমাকে আর কথা বলার সুযোগ দেয় না ।আমি তার এইসব কথা শুনে স্থব্দ হয়ে যাই বেডে দপ করে বসে পরি আমি উনার কাছে এত পর হয়ে গেছি যে উনি আমাকে আপনি করে বলছে ?চোখের পানি বাধঁ মানচ্ছেনা ।কান্না করছি কান্না করতে করতে সেখানেই কখন যে ঘুমিয়ে গেছি খেয়াল নেই ।শরীর খুব দূর্বল +মেডিসিনের সাইড এফেক্টের জন্য এমন হচ্ছে ।

হঠাৎ ঘুমের ঘোরে অনুভব করছি আমি হাওয়ায় ভাসছি তারপর মনে হচ্ছে আমার শরির থেকে কেউ গহনা খোলছে তারপর আমার কপালে গালে ঠোটেঁ। গলায় হাতে অনবরত কারো ঠোটেঁর স্পর্শ পাচ্ছি তা খুব গভির ভাবে করছে হঠাৎ মুখের উপর গরম নিশ্বাস পড়তেই চোখ খুলার চেষ্টা করি আদো আদো চোখে দেখি উনি আমার দিকে ঝুকেঁ আছে গভির ভাবে আমাকে দেখছে আর কি জানো বলছে আমার চোখে ঘুমের কারনে চোখ খুলে রাখতে পারছিনা চোখ বন্ধ হয়ে আসে কিন্তু ঠি কই অনুভব করতে পারছি মনে হচ্ছে উনি আমাকে তার বুকে জরিয়ে ধরেছে আমিও ঘুমের মধ্যে মুচকি হেসে উনাকে জরিয়ে ধরি খুব শক্ত করে …..

চলবে…

❤️❤️❤️❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন???

Thanks for supporting me ❤️❤️❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here