#I_Love_U
#part_2
#sarika_Islam
এভাবেই নিয়া লজ্জায় ফালিয়ে দিল,,আবার নিহান ভাইয়াও,,কিন্তু নিহান ভাইয়াতো সবার সামনেই বলে দিল,,
‘এভাবে তাকিয়ে কি দেখছিস রাহা?ছেলে কি কখনো দেখিস নি নাকি?’
সবার সামনে এই কথাটা বলায় আমি তারাতারি ভাইয়ার থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম,,ছিহ এইভাবে কেউ কাউকে লজ্জায় ফালায়?আস্তাগফিরুল্লাহ,,আম্মু আপু আন্টির দিকে তাকালাম,,তারা মনে হলো ভাইয়ার কথায় কোন প্রকার শকড হলো না,,তারা তাদের মতোই কাজ করে যাচ্ছে,,,যাক বাবা এটলিস্ট তারা তো আর লজ্জা দিল না,,এই ছেলেটার দিকে তাকাবোই না হুহ,,,,নিজেকে নিজে কি মনে করে আল্লাহই জানে!!!নিহান ভাইয়া আন্টির পাশে বসে বেস্ত গলায় বলল,,
‘আম্মু বাসার চাবী দাও বাড়ি যাবো,,’
মাঝদিয়ে আম্মু বলে উঠলো,,,
‘সেকি নিহান তুই বাড়ি যাবি কেন?রাতে একবারে খেয়ে একসাথে যা?’
‘নাহ আন্টি আমি ফ্রেশ হবো তারপর খাবো,,নাহলে আজ আমি শান্তি পাবো না অনেক গরম লাগছে,,’
বলে শার্টের আরেকটা বোতাম খুলে দিল,,আমি নিয়ার সাথে কথা বলছি আর আড়চোখে ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছি,,যতই বলি তাকাবো না ততই ছেলেটা বাধ্য করে তাকাতে,,এইযে দেখ এখন আরেকটা বোতাম খোলার কি দরকার ছিল?ধুর,,এভাবেই তো কতবড় ক্রাশ খেয়ে বসে আছি আরো আমাকে পটানোর ধান্দা,,আম্মু বলল,,
‘তাহলে যা উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়?’
আন্টিও বলল,,
‘হ্যা বাবা যা উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়,,তোর বাবা আসলে একসাথে যাবো,,’
‘আচ্ছা’
বলে ভাইয়া উপরে গেল,,আম্মু আমাকে বলল,,
‘রাহা যা গিয়ে নিহান কে টাওয়াল আর ওর রেখে যাওয়া একটা টি-শার্ট আছে সেটা দিয়ে আয়,,’
আমি মচরামুচরি করতে করতে আম্মুকে বললাম,,
‘আম্মু রিমা আপুকে বলো না প্লিজ!!!’
অনুরোধ স্বরে বললাম,,নিহান ভাইয়ার সামনে যেতে চাই না তাও ভাগ্য শুধু শুধু তার সামনেই পাঠায়,,রিমা আপু রুহিকে কোলে নিয়ে বলল,,
‘রুহি কান্না করছে তুই যা রাহা,,’
আমি স্যাড ফেস করে উঠলাম,,নিয়া আমাকে খোচা মারলো,,আমি ফিসফিস করে বললাম,,
‘ধুর এইসব ভাল্লাগে বল?আবার দেখলে আমি আবার ক্রাশ খাবো,,’
‘তুই এত ক্রাশ খাস কিভাবে বলতো?’
‘শুধু তোর ভাইকে দেখেই ক্রাশ খেয়েছি হুহ ভাগ্য তোর ভাইয়ের,,’
মুখ ভেংচি কেটে উপরে গেলাম,,ওয়াশ্রুমের দরজা নক করলাম,,
‘ভাইয়া টাওয়াল,,’
কিছুক্ষন পর ভাইয়া দরজা খুলল,,আমার হাত থেকে টাওয়াল নিল,,টাওয়াল নেওয়ার সময় ভাইয়ার হাত হাল্কা আমার হাতের সাথে লাগলো,,ইসসসস মনে হলো পুরো শরিরে কারেন্ট লেগে গেল,,কাবার্ড থেকে ভাইয়ার টি-শার্ট টা বের করলাম,,আর তখনি ভাইয়া ওয়াশ্রুম থেকে বের হলো,,আমি ঘুরে ভাইয়াকে টি-শার্ট দিবো দেখালাম ভাইয়া শুধু টাওয়াল পেচিয়ে দারিয়ে আছে,,আমি তারাতারি ঘুরে দারালাম,,ভাইয়াকে বললাম,,
‘এ,,এইভাবে এসেছেন কেন?’
‘তাহলে কিভাবে আসবো?আর এমন ঘুরে দারানোর কি আছে?’
ভাইয়া ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলল,,আমার হাত থেকে ভাইয়া টি-শার্ট নিয়ে পরে নিল,,আমি উল্টো ভাবেই দিলাম দৌড়,,নিজের ঘরে এসে বুকে হাত দিয়ে হাপাতে লাগলাম,,নিয়া বসে বসে ফোন টিপছে,,আমাকে এভাবে হাপিয়ে আস্তে দেখে ফোন রেখে আমার পাশে এসে বলল,,
‘কিরে কি হলো?এভাবে হাপাচ্ছিস কেন?’
‘আরে ক্রাশকে আজ দেখে আরেক দফা ক্রাশ খেলাম,,’
বলেই বুকে হাত দিলাম,,
‘এভাবে ক্রাশ খেতে থাকলে তো একদিন হার্ট অ্যাটাক করবোরে,,’
‘তুই আর তোর ক্রাশ সারাদিন খাই খাই করে,,চল নিচে আন্টি খেতে ডাকছে,,’
নিয়া আমাকে সাথে করে নিচে নিয়ে গেল,,খাওয়াদাওয়া শেষ করলাম,, আন্টিরাও চলে গেল,,
পরেরদিন সকালে,,
ঘরির এলার্মে ঘুম ভাংগলো,,পিট পিট করে চোখ খুলে ঘরির এলার্ম বন্ধ করে উঠে বসলাম,,হাই তুলতে তুলতে ওয়াশ্রুমে গেলাম,,ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হয়ে নিচে গেলাম নাস্তা শেষ করে কলেজের জন্য বেরুলাম,,,রাস্তায় এসে নিয়াকে কল করলাম,,
‘কিরে বের হসনি এখনও?’
‘হুম আয়,,’
খানিক্টা হেটে সামনে গিয়ে দেখলাম নিয়া দারিয়ে আছে সাথে কোটসুট পরিহিত নিহান ভাইয়া,,চোখে চশমা দিয়ে ফুল স্টাইলে দারিয়ে আছে,,নিহান ভাইয়া এখানে কেন?সকাল সকাল তাকে ফরমাল লুকে দেখে আরেকদফা ক্রাশ,,নিয়ার পাশে গিয়ে দারিয়ে বললাম,,
‘এই তোর ভাই সাথে কেন?’
‘ভাইয়া নাকি আজ ড্রপ করে দিবে,,,’
‘কেন?’
নিয়া আর কিছু বলতে পারলো না,,ভাইয়ার ফোন আসলো,,ভাইয়া তারাহুরো করে বলল,,
‘নিয়া তোরা চলে যা আমার কিছু আর্জেন্ট কাজ আছে,,’
বলে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরলো,,
‘যাক বাবা ভালোই হলো আমরাই যাই,,’
একটা রিকশা নিলাম,,কিছুক্ষন পর কলেজের গেটের সামনে এসে থামলো,,ভাড়া মিটিয়ে ভিতরে গেলাম,,ক্লাশ শুরু হয়ে গেছে,,
দুপুর 12টার দিকে ক্লাস শেষ হলো,,আমরা গেটের সামনে দারিয়ে আছি রিকশার জন্য,,এভবেই কতো গরম তার উপর কড়ারোদ,,মাথার মগজ গলে গলে পরবে যদি আর কিছুক্ষন এই রোদের মাঝে থাকি,,একটা রিকশা পেয়ে গেলাম,,তারাতারি করে উঠে পরলাম,,হঠাৎ রিকশার সামনে একটা গাড়ি এসে দারালো,,,গাড়িটা দেখে চিনে গেলাম কার?নিহান ভাইয়ার গাড়ি,,আমি নিয়াকে বললাম,,
‘কিরে এখন নিহান ভাইয়া?তাও আমাদের রিকশার সামনে কেন?’
‘আমি কিভাবে জানবো?চল গিয়ে দেখি,,’
রিকশা থেকে নামতে যাবো তখনি আমার ওড়নায় টান পরে,, পিছে ফিরে দেখি রিকশার চাকায় বেজে আছে,,নিহান ভাইয়া এসে ওড়না খুলে দিল,,আমার দিকে রাগিভাবে তাকালো,,আল্লাহ এভাবেই তো সিরিয়াস মুড তারউপর এই রাগীভাব!!ভাইয়া বলল,,
‘গাড়িতে উঠ,,’
আমরা দুইজন চুপচাপ ভাইয়ার গাড়িতে উঠলাম,,ভাইয়া সামনের দিকে তাকিয়ে ড্রাইভ করেই যাচ্ছে একটা কথাও বলছে না,,আমরাও ভয়ে কথা বলছি না,,যদি হুংকার মারে?তাও সাহস জুগিয়ে বললাম,,
‘ভাইয়া এই নিন টিস্যু,,’
ব্যাস এতটুকু বললাম আর দিল চিল্লান,,
‘কি করবো টিস্যু খাবো?’
আমি আর নিয়া কেপে উঠলাম,,ভাইয়া এত রাগ কখনোই করে না,,তাহলে আজ কি হলো?নিয়া বলল,,
‘ভাই চেচাচ্ছিস কেন?’
‘নিহাকে দেখেছি ওর হাসবেন্ডের সাথে,,’
বলেই থেমে গেল,,আমি নিয়ার দিকে তাকালাম নিয়ারও মুখটা চুপসে গেল,,নিহান ভাইয়া জোরে জোরে ড্রাইভ করছে,,এই নিহা টা কে?দুই ভাইবোনই চুপ হয়ে গেল?
চলবে,,