#I_Love_U
#part_3,4
#sarika_Islam
03
পরের দিন সকালে কলেজ গেলাম আজ নিয়া আসলো না আমার সাথে,, আজ নাকি সে কলেজ যাবে না,,বুঝলাম না কি হলো?কাল নিহা নামের মেয়েটার কথা শুনার পর কেমন চুপচুপ থাকছে ব্যাপারটা বুঝতে হবে,,
কলেজ শেষ করে বাড়ি আসলাম,,বিকেল দিকে নিয়াদের বাড়ি গেলাম,,দরজায় বেল বাজালাম একজন মহিলা এসে দরজা খুলে দিল,,মহিলাটা বাড়ির কাজের বুয়া,,,আমি মিনা খালাকে জিজ্ঞেস করলাম,,
‘খালা নিয়া কই?’
‘নিয়া মা তো তার রুমে মা,, ‘
‘আচ্ছা খালা,,,’
আমি উপরে গেলাম,,নিয়ার রুমের দরজায় নক করলাম কিন্তু কোন সারা নেই,,দরজা হাল্কা ধাক্কা দিলাম খুলে গেল,, দরজা চাপানো ছিল,,ভিতরে গিয়ে নিয়াকে রুমে পেলাম না,,বারান্দায় হবে হয়ত কিন্তু না বারান্দায় ও নেই,,ওর রুম থেকে বের হয়ে সামনে গেলাম নিহান ভাইয়ার রুম থেকে নিয়ার শব্দ পাচ্ছি,,দরজাটা খুলে ভিতরে ঢুকলাম,,তারা দুইজন সম্ভবত কিছু বলছিল আমাকে দেখে চুপ হয়ে গেল,,নিয়া হাসার চেষ্টা করে আমার কাছে এসে বলল,,
‘আরে রাহা তুই কখন এলি?’
‘এইত এখন,,'(খানিকটা ভ্রু কুচকে)
‘আচ্ছা আয় রুমে যাই,,’
আমাকে নিহান ভাইয়ার রুম থেকে নিয়ে এলো,,,ভাইয়া পিছে ফিরেও তাকালো না,,এভাবে নিয়ে আসার মানেটা আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না,,নিয়া আমাকে রুমে নিয়ে বসালো,,আমি জিজ্ঞেস করলাম,,
‘আজ কলেজ এলি না কেন?’
‘এভাবেই ভালো লাগছিল না,,’
‘ভাইয়া অফিস যায়নি?’
‘নাহ,,আজ নাকি ভাইয়ারও ভালোলাগছে না,,’
বলেই আলগা হাসি দিল,,আমার কেমন যেন ব্যাপারটা ভালো ঠেকলো না,,আমি নিয়াকে আমার পাশে বসিয়ে বললাম,,
‘কি হয়েছে আমাকে বল?’
‘আরেহ কি হবে কিছুই না,,’
‘আমাকে বলবি না?’
কিছু বলতে যাবে নিয়া তখন রুমে আন্টি আসে,,আমি তাকে সালাম দিলাম, নিলা আন্টি আমার মাথায় হাত রেখে বলল,,
‘কিরে বাচ্চা কখন এলি?’
‘এইতো আন্টি এখন,,’
‘আচ্ছা তোরা কথা বল আমি খাবার পাঠাই,,’
বলেই আন্টি চলে গেল,,নিয়া আর কিছু বলল না আমিও জিজ্ঞেস করলাম না,,হয়ত বলতে চাচ্ছে না নাহয় ভুলে গেছে,,আমরা অন্যান্য কথা বললাম,,সন্ধার দিকে বাসায় এসে পরলাম,,
দুই দিন পর,,
এই দুই দিনে তারা দুই ভাইবোন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে,,নিয়াও এখন কলেজ আসে ভাইয়াও অফিস যায়,,কলেজ শেষে বাড়ি গেলাম,,কয়েকদিন পর এক্সাম,,পড়াশোনার চাপ পরে গেছে অনেক,,আজ আমাদের আন্টিদের বাড়ি যাওয়ার কথা তারা ছোট একটা পার্টি রেখেছে,,চিনাজানা মানুষরা শুধু ইনভাইটেড,,,বিকেলের দিকে তাদের বাড়ি গেলাম আজ আমি শাড়ি পরেছি সাদা শাড়ি লাল পার,,চুলগুলো খোপা করে নিলাম,,আর কানের দুল ঠোঁটে নুড কালার লিপ্সটিক ব্যাস হয়ে গেছে,,
নিলা আন্টিদের বাড়ি আসলাম,,বাড়িটা হাল্কার মধ্যে সুন্দর করেই ডেকুরেট করেছে,,নিয়াও আজ শাড়ি পরেছে আমার মতোই,,সন্ধ্যার দিকে আস্তে আস্তে সব মেহমান চলে আসলো,,নিহান ভাইয়া সাদা সুট পরেছে,,খুবি ডেসিং লাগছে,,নিহান ভাইয়া ড্রিংক সাইডে ফ্রেন্ডদের সাথে কথা বলছে দারিয়ে দারিয়ে,, আমি আর নিয়া কিছুটা দূরে দারিয়ে আছি,,আমি ভাইয়ার দিকেই তাকিয়ে আছি এত্ত সুন্দর ছেলে হয় নাকি?তখনি তাদের সাথে একটা মেয়ে জয়েন করলো,,মেয়েটাকে দেখে ভাইয়ার চেহারার রঙ পালটে গেল,,হাসি মুখটা পুরো চুপসে গেল,,মেয়েটা আরেকটা ছেলের হাতে হাত দিয়ে হেসে হেসে কথা বলছে,,আরেকটা ফ্রেন্ড ওই মেয়েটার উদ্দেশ্য বলল,,,
‘আরে নিহা তোর মেরিড লাইফ কেমন চলছে?’
নিহা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে বলল,,
‘আমার আর নিহালের লাইফ খুব ভালোই চলছে,,আমরা দুইজন খুবি হ্যাপি,,’
‘ওয়াও,,’
তাদের জুটি দেখে সবাই খুশি শুধু মাত্র নিহান ভাইয়া ছাড়া,,বুঝলাম না এতে এত্ত আপ্সেট হওয়ার কি আছে?আমি নিয়াকে মেয়েটাকে দেখিয়ে বললাম,,
‘এই নিয়ু ওইটাই কি নিহা আপু?’
নিয়া আমার কথা শুনে তাদের দিকে তাকালো,,নিহা আপু আর তার হাসবেন্ড নিহালকে দেখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
‘হুম,,তুই কিভাবে জানলি?’
‘আরে তাদের বলতে শুনলাম,,’
‘এত দূর থেকে শুনে গেলি?’
‘এত দূর কই কাছেই তো?আচ্ছা এই নিহা আপুকে দেখে নিহান ভাইয়ার চেহারার রঙ এমন পালটে যায় কেন?’
‘আসলে,,,,’
কিছু বলতে যাবে তখনি নিলয় আংকেল মাঝখান দিয়ে আমাদের কাছে এসে বলল,,
‘কিরে তোরা এখানে দারিয়ে কি করছিস?’
‘এইতো আংকেল এভাবেই দারিয়ে আছি,,’
‘সেকি সেটা কি হবে নাকি?আয় আয়,,’
বলেই আমাদের মাঝে নিয়ে গেল,,সবাই ডান্স করছে,,আমরাও হাল্কা নাচতে লাগলাম,,কিন্তু আমার নজর নিহান ভাইয়ার দিকেই তাকে কেমন জেন দেখাচ্ছে অনেকটাই দুঃখী,,নিহা আপু আর নিহাল ভাইয়া কাপল ডান্স করছে কি সুন্দর লাগছে তাদের একসাথে,,কিন্তু নিহান ভাইয়ার হয়ত তাদের একসাথে মটেও ভালো লাগছে না,,নিহান ভাইয়া ড্রিংক এর গ্লাস হাতে নিয়ে নিহা আপুর দিকে তাকিয়ে গটগট করে খেয়ে ফেলল,,একের পর এক প্যাক গিলেই যাচ্ছে আমি শুধু তাকিয়ে দেখছি আর শকড হচ্ছি,,এই সিরিয়াস বান্দা মুডি নিহান খান ড্রিংকস ও করে?আমি নিয়াকে নিয়ে সাইডে গিয়ে বললাম,,
‘নিয়া!!নিহান ভাইয়া দেখ কিভাবে ড্রিংক করছে?’
নিয়া ঘুরে নিহান ভাইয়াকে দেখলো,,নিহান ভাইয়ার দৃষ্টি অনুসরন করে দেখলো নিহা আপুর দিকে তাকিয়ে প্যাক গিলেই যাচ্ছে,,নিয়া দীর্ঘ শ্বাস ছেরে বলল,,
‘ভাইয়া দুঃখে থাকলে মাঝে মাঝে খায়,,যখন দুঃখ কান্ট্রল না করতে পারে,,’
আমি চিন্তায় পরে গেলাম এই সুখের দিনে ভাইয়ার আবার কিসের দুঃখ নাড়া দিল?তখনি নিহা আপুর কথা মনে পরলো,,ভাইয়ার এই দুঃখের কারন নিহা আপু তো নয়?
নিহান সব সময়ের থেকে বেশি ড্রিংক করে ফেলেছে,,সে এখন নিজের কান্ট্রলে নেই,,লাস্ট প্যাক ফিনিশ করে হেলেদুলে মাঝে গিয়ে দারালো,,হাতে মাইক নিয়ে,,
‘এট্যানশন গাইস,,এখন সবাই কাপল ডান্স করবে,,’
সব কাপলরা এক এক করে মাঝে এসে ডান্স করতে লাগলো,,নিহান ভাইয়া হেলেদুলে আমার কাছে এসে এক হাত পিছে দিয়ে আরেক হাত সামনে মাথা হাল্কা ঝুকিয়ে বলল,,
‘শেল উই?’
আমি আশেপাশে তাকালাম,,আম্মু আমাকে চোখ দিয়ে ইশারা করলো,,আমি ভাইয়ার হাতের উপর হাত রাখলাম,,আমরা ডান্স করছি,,হঠাৎ ভাইয়া খুব জোরে জোরে টান মেরে ডান্স করতে লাগলো,,নিহা আপুর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে আমাকে টার্চ করছে,,আমার তার দৃষ্টি দেখে বুঝা হয়ে গেছে সে এত ড্রিংক কেন করেছে আর এখনি বা এমন কেন করছে?আমি ভাইয়াকে কোনমতে ছারিয়ে নিয়ার পাশে এসে দারালাম,,ভাইয়া কেমন পাগলের মতো সবার মাঝেই একা একা কাপল ডান্স করছে,, নিলা আন্টি নিয়ার কাছে এসে আস্তে করে বলল,,
‘নিয়া নিহান কখন এত ড্রিংক করলো?নিহার জাদু ওর উপর থেকে এখন অব্দি কাটে নি?’
‘আমি কিভাবে বলবো আম্মু?’
‘আচ্ছা যা ভাইকে নিয়ে রুমে যা,,নাহয় তামাশা করবে নিহান,,’
‘ঠিক আছে আম্মু,,’
নিলা আন্টি আমার উদ্দেশ্যেও বলল,,
‘বাচ্চা তুইও নিয়াকে একটু হেল্প কর,,’
‘জি আন্টি,,’
নিয়া নিহান ভাইয়াকে মাঝ থেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ভাইয়া ডান্স করেই যাচ্ছে,,কখনো ভাবিনি ভাইয়ার এমন পাগলামির সম্মুখীন হবো,,ভাইয়া কথাই বলে সবার সাথে কম এমন করবে ভাবি ও নি,,নিয়া আর আমি ভাইয়াকে ধরে তার রুমে নিয়ে গেলাম,,ভাইয়াকে ওয়াশ্রুমে নিয়ে গেলাম মুখে পানির ছিটা দিতে,,নিয়া বলল,,
‘রাহা তুই একটু ছিটে দে আমি টাওয়াল নিয়ে আসি,,’
‘হুম,,’
নিয়া টাওয়াল নিতে চলে গেল,,আমি বেসিং এর সামনে ভাইয়াকে ধরলাম,,ভাইয়া বারেবারে ঢলে পরে যাচ্ছে অনেক কষ্টে সামলাতে হচ্ছে,,এই পাঠান দেহকে যে আমি কিভাবে সামলাবো আল্লাহ,,কল ছেরে ভাইয়ার মুখে পানি ছিটা দিলাম,,পানির ছিটা দেওয়ায় ভাইয়া খিলখিল করে হেসে উঠলো,,আমি বুঝলাম না এভাবে হাসার কি আছে,,কিন্তু হাসায় ভাইয়াকে খুব সুন্দর লাগছে,,গায়ের ব্লেজারটা খুলে ফেলল সাদা শার্টের উপরে দুইটা বোতাম খুলে দিল,,ভাইয়া পানি নিয়ে আমার মুখে ছিটা মারলো,,আহহহহহ!!এইটা কি করলো ভাইয়া?আমি দুই এক পা পিছে চলে গেলাম,,ভাইয়ার সাদা শার্ট পুরো ভিজে গেছে,,একদম গায়ের সাথে লেপ্টে আছে,,এই নিয়ার বাচ্চা টাওয়াল আনতে গিয়ে কি নিজেই টাওয়াল হয়ে গেল নাকি আল্লাহই জানে,,
কিছুক্ষন পর নিয়া টাওয়াল নিয়ে আসলো,,ভাইয়া একদম আমার সাথে লেপ্টে ছিল,,পুরো ভিজা শরির আমিও ভিজে গেছি অনেকটা,,নিয়া আমাদের এভাবে দেখে হা হয়ে কিছুক্ষন দারিয়ে রইলো,,
‘এই তুই এইভাবে কি দেখছিস?তোর দামরা ভাইকে ধর,,’
‘কি বললি তুই?’
কোমরে হাত দিয়ে বলল,,আমি অর্ধেক কাত হয়ে গেছি ভাইয়া পুরো ভার দিয়ে আমার শরিরের উপর পরে আছে,,নিয়া তারাতারি এসে ভাইয়াকে সরালো আমার উপর থেকে,,ভাইয়াকে রুমে নিয়ে আসলাম বিছানায় বসালাম,,নিয়া কাবার্ড থেকে টি-শার্ট নিয়ে আসলো,,শার্ট খুলে ভাইয়াকে মাথা মুছে দিতে লাগলাম,,হঠাৎ ভাইয়া আমার কোমর ধরে টান দিয়ে একদম নিজের কাছে নিয়ে নিল,,আমার চোখ অটোমেটিক বড়বড় হয়ে গেল,,নিয়াও হা করে তাকিয়ে আছে,,,,,
চলব,,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?)
#I_Love_U
#part_4
#sarika_Islam
কিছুটা ডিস্টেন্স বজিয়ে ভাইয়ার চুল মুছে দিতে লাগলাম,,,এই মাহির (নিয়া নাম চেঞ্জ করে দিসি) বাচ্চাকে বললাম তুই মুছে দে না সে পারবে না,,হঠাৎ ভাইয়া আমার কোমর ধরে টান দিল,,একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নিল,,আমার বুকের মধ্যে নিহান ভাইয়ার নিশ্বাস আচরে পরছে,, কেমন এক অজানা অনুভুতি নারা দিচ্ছে,,আমার শ্বাসের গতি বেরে যাচ্ছে বুক ধকধক করছে,,আমি ঘুরে মাহির দিকে তাকালাম মাহিও হা হয়ে আছে,,নিহান ভাইয়া বলে উঠলো,,
‘নিহা,নিহা কেন দিলে আমায় ধোকা?কি এমন করেছি আমি?’
বলেই ভাইয়া আমার কোমর ছেরে দিয়ে ধপ করে বিছানায় পরে গেল,,ভাইয়ার চোখ দিয়ে গরিয়ে পানি পরতে দেখে বুকটা কেমন বিচলিত হয়ে উঠলো,,আমি মাহির কাছে গিয়ে বললাম,,
‘মাহি,, নিহা আপুর সাথে ভাইয়ার রিলেশন ছিল?’
‘হুম,,ভাইয়া অনেক ভালোবাসতো আপুকে রাহা,,কিন্তু আপু ওই নিহাল ভাইয়ার সাথে বিয়ে করে নিল,,তারপর থেকেই ভাইয়া এত্ত সিরিয়াস থাকে অনেক রাগ করে,,আব্বু আম্মু ও জানে এই কথা,,’
‘ওহ আচ্ছা,,’
আমি আর কিছু বললাম না,,বাহিরে চলে গেলাম,,নিহা আপু নিহান ভাইয়ার মন ভেংগেছে তাই সে এমন বদমেজাজী হয়ে গেছে?তাই সে রাগ চটা থাকে?
পরের দিন সকালে,,
ঘরির এলার্ম বেজ উঠলো,,এলার্ম টা বন্ধ করে দিলাম,,কাল রাত তো ঘুমুই নেই তো আর এলার্ম আমাকে কিভাবে উঠাবে?আমি উঠে বসলাম তারাতারিই ফোন করলাম মাহিকে,,অনেকক্ষন পর মাহি ফোন ধরলো,,
‘কিরে এতক্ষন ধরলি না কেন?’
‘আরে ঘুমাচ্ছিলাম,,’
‘আচ্ছা শুন নিহান ভাইয়ার এখন কি অবস্থা?’
‘আমি কিভাবে বলবো?’
‘যা উঠে দেখে আয়,,’
‘আচ্ছা,,’
মাহি উঠে নিহানের রুমে গেল,,রুমটা খোলা দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখলো নিহান রুমে নেই,,নিচে গিয়ে নিলা খানকে জিজ্ঞেস করলো,,,
‘আম্মু ভাই কই?’
‘এইতো মাত্র অফিস গেল,,’
ওপাশ থেকে আমি শুনে সাথে সাথে ফোন রেখে দিলাম,,যাক তাহলে কাল রাতের আসার কেটেছে,,আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজের জন্য বের হলাম,,মাহি আর আমি কলেজ শেষ করে একটা পার্কে গেলাম একটু খোলা হাওয়া অনেক দরকার,,জায়গাটা খুব সুন্দর,,,নৌকা চলাচল করছে পানির উপর একটু এখানে থেকে রিলেক্স হওয়া যায়,,আমি মাহিকে বললাম,,
‘এই মাহি নিহান ভাইয়াকে ফোন করে এখানে আস্তে বল,,ভাইয়া একটু প্রকৃতির হাওয়া খেলে ভালো লাগবে,,’
‘আসবে ভাই?’
‘তুই বললে অবশ্যই আসবে,,’
‘আচ্ছা দেখি বলে,,’
মাহি ভাইয়াকে ফোন করলো,,ভাইয়া সাথে সাথেই ফোন ধরলো,,মাহি স্পিকারে ফোন রাখলো আমিও শুনছি,,মাহি বলল,,
‘ভাই আমরা পার্কে আছি তুই আয়!?’
‘এখন তুই সেখানে কি করছিস?’
‘আরে ভাই আমি একা না রাহা ও আছে,,’
‘ওই রাহাই তোর মাথা খেয়েছে,,ওই তোকে ওখানে যাওয়ার জন্য ফোর্স করেছে তাই না?’
‘আরে নাহ ভাই,,এইসব কি বলছিস তুই?আরো ও তোকে এইখানে আস্তে বলছে তোর একটু ভালোলাগবে তাই,,’
‘আমার ভালোলাগা না লাগা রাহার ভাবতে হবে না বলে দে,,’
বলেই ফোন কেটে দিল,,আমার খুব কষ্ট লাগলো,,আমি কই চাইলাম একটু ভাইয়ার মাইন্ডটা যেন ফ্রেশ হোক আর ভাইয়া উল্টো আমাকে এতগুলো শুনালো?ভাইয়ার সাথে আর কথাই বলবো না,,তার সামনেও যাবো না,,খুব কান্না পাচ্ছে,,মাহি আমার হাত ধরে বলল,,,
‘রাহু তুই মাইন্ড করিস না ভাইয়ের কথায়,,ভাইয়ের মাথা ঠিক নেই হয়ত তাই এমন বলেছে,,’
আমি মুখে জোর করে হাসি আনার চেষ্টা করে বললাম,,
‘আরেহ নাহ আমি বুঝেছি ভাইয়ার সিচুয়েশন,,চল বাড়ি যাই,,’
‘কেন থাকি কিছুক্ষন?’
‘নাহ চল ভালোলাগছে না,,’
মাহিও আর কিছু বলল না আমরা বাড়ি চলে আসলাম,,
এক মাস পর,,
এই এক মাস আমি যত পেরেছি ভাইয়ার থেকে ডিস্টেন্স বজিয়ে চলেছি,,ভাইয়াও আমাদের বাসায় এত আসেনি আমিও যাইনি,,দরকার কি যে চায়না তার কাছে যাবো না,,আমাদের এক্সামও শেষ হয়ে গেছে আর কোন প্যারা নেই,,আজ এক্সামের লাস্ট ডে আমি আর নিয়া ডিসাইড করেছি এক্সামের শেষে কোথাও ঘুরতে যাবো,,এক্সাম শেষ করে কলেজ থেকে বের হলাম,,
‘মাহু চল সেই পার্কে যাই,,’
‘আচ্ছা চল,,’
আমরা সেখানে চলে আসলাম,,যায়গাটা বেশ সুন্দর মনোরম পরিবেশ,,আমি আর নিয়া নৌকায় উঠলাম,,কতশত ছবি তুললাম,,পাশেই রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খেয়ে নিলাম,,বিকেল দিক দিয়ে আমরা বাড়ি চলে আসলাম,,
সন্ধ্যার দিকে নিলা আন্টি আর মাহি আসলো আমাদের বাড়ি,,নিলা আন্টি আম্মুকে বলল,,
‘কলি ভাবী রাহা আর রিমাকে আমাদের বাড়ি নিয়ে যেতে এসেছি,,রাহার তো এখন আর এক্সামের প্যারাও নেই,,কিছুদিন বেড়াক আমাদের বাড়ি?’
আমি আর আপু আম্মুর মুখের দিকে তাকালাম,,,আম্মু আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল,,
‘নিলা ভাবী ওর বাবার থেকে জিজ্ঞেস করলে?’
‘আরে ভাবী ভাইজান কিছু বলবে না,,আমি নিলয়কে দিয়ে বলিয়ে দিব নে,,’
‘আচ্ছা,,’
আমি আর মাহি চিল্লান দিয়ে উঠলাম,,আমরা ওদের বাড়ি যাবো কত মজা হবে,,রিমা আপু আমি আর রুহি বেরিয়ে পরলাম আন্টিদের বাসার উদ্দেশ্য,,কিছুক্ষন পর বাড়ি চলে আসলাম,,দেখলাম নিহান ভাইয়া সোফায় বসে বসে চিপ্স খাচ্ছে আর টিভি দেখছে,,আপু নিহান ভাইয়াকে দেখে বলল,,
‘কিরে নিহান কেমন আছিস?’
‘ভালোই তুই?’
‘হুম ভালোই,,’
আপু আর নিহান ভাইয়া বেশি বড় না তাই তারা তুই করেই সমোন্ধন করে,,,নিহান ভাইয়ার সবে পচিশ আর আপু তেইশ,,এদের তুলনায় আমরা অনেকটাই ছোট মাত্র উনিশ,,ভেবেই হেসে দিলাম,,
আমরা সবাইও সোফায় গিয়ে বসলাম,,নিহান ভাইয়ার দিকে আমি ভুলেও তাকাচ্ছি না সেদিন আমাকে কইকিছুই না বলল,,,কিন্তু না তাকিয়েও পারছি না কালো একটা টি-শার্ট পরেছে আর হাফ পেন্ট,,উফফফ কতই না কিউট লাগছে,,,চুলগুলো বারবার হাত দিয়ে নেড়ে দিচ্ছে,,আমি আর তাকালামই না,,হঠাৎ ভাইয়া সবার সামনে বলল,,
‘রাহা রুমে আয়,,’
বলেই ধপাধপ পা ফেলে রুমে চলে গেল,,হায় আল্লাহ আমাকে ডাকলো কেন ভাইয়া?তাও আবার সবার সামনে?কি বলবে?আমি উঠতেও চাইছিনা তখন নিলা আন্টি বলল,,
‘রাহা তোকে না নিহান ডাকলো গিয়ে দেখ?’
‘আন্টি কেন ডেকেছে?’
‘সেতো গেলেই জানতে পারবি,,’
আমি মাহিকে নিয়ে উপরে গেলাম,,ভাইয়ার রুমের দরজা নক করতেই ভাইয়া বলল,,
‘আয়,,’
মাহিকে সাথে দেখে বলল,,
‘তোকে আস্তে বলেছি?’
মাহি মাথা ঝাকিয়ে বাহিরে চলে গেল,,আমি ভয়ে হাল্কাহাল্কা কাপছি ভাইয়ার কি হলো?আমাকে একা ডেকেছে কেন?কি ব্যাপার হতে পারে?
চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?)