I_Love_U #part_5,6

0
1325

#I_Love_U
#part_5,6
#sarika_Islam
05

ভাইয়া হঠাৎ আমাকে একা কেন ডাকলো এইসব ভাবতে ভাবতে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে,,ভাইয়া বলে উঠলো,,

‘আসলে সরি,,’

আমি হঠাৎ ভাইয়ার এমন কথায় শকড হয়ে গেলাম,,সরি বলল কেন?ভাইয়া আবার বলল,,

‘ওইদিন ফোনে আমি যা বলেছি আসলে আমি নিজে বলিনি,,’

‘অন্য কেউ বলেছে?'(ভ্রু কুচকে)

‘নাহ আমিই বলেছি কিন্তু,,মানি কিভাবে বলবো?’

‘কেন লজ্জা লাগছে?’

আমার এই কথায় হঠাৎ ভাইয়া চিৎকার করে উঠলো,,

‘চুপ বেয়াদপ,,যাহ এইখান থেকে,,’

আমি ভাইয়ার ধমকে কেপে উঠলাম,,উল্টো দিকে ঘুরেই বেরিয়ে পরলাম,,আল্লাহ সাইকো নাকি লোকটা?কখনো ভালো কখনো রাগী কখনো নরম কখনো কঠোর,,আমি আজ পর্যন্ত বুঝতে পারলাম না,,সরিই যখন বলেছেন সুন্দরভাবে নরমভাবে বলুক না হুংকার করতেই হবে,,বাদর কোথাকার,,

মনে মনে বকতে বকতে মাহির রুমে ঢুকলাম,,আপু আর মাহি বসে বসে কথা বলছে আর হাসছে,,এইখানে যে আমার কি অবস্থা তার দিকে খেয়াল নেই,,,আমি তাদের সামনে গিয়ে বললাম,,

‘এই এভাবে দাত কেলাচ্ছিস কেন তোরা?’

আপু মাঝদিয়ে বলল,,

‘তুই কেলা কে না করেছে?’

আমি কিছু না বলে বিরক্তি হয়ে বসে পরলাম, আপু আর মাহি আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,

‘কিরে রাহু ভাই কি বলল?’

‘সরি,,’

‘কিহ,,’

‘জি,,’

‘কেন?’

পরে আমি তাদের ঘটনা টা খুলে বললাম,,ভাইয়ার চিৎকারের কথা শুনে দুইটায় হাসতে হাসতে কাত,,আমি মুখ ফুলিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম,,সবাই আমরা সোফায় বসে আছি,,তখন নিহান ভাইয়া সিড়ি দিয়ে নামছে নিহান ভাইয়াকে দেখে রিমা আপু বলল,,

‘নিহান চল বাহিরে যাই,,আগের মতো আর একসাথে হই না,অনেক দিন বাদ হলাম,,,’

নিহান ভাইয়া শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বলল,,

‘কই যাবি?’

‘চল কোথা থেকে ফুচকা আইস্ক্রিম খেয়ে আসি,,’

ফুচকা আইস্ক্রিমের কথা শুনে আমি দিলাম লাফ,,আমার এইগুলো অনেক ফেবারিট,,আমি আর মাহি বললাম,,

‘আমরাও যাবো কিন্তু!!’

‘আচ্ছা চল,,’

বলেই নিহান ভাইয়া আমাদের নিয়ে গেল,,রুহি কেও সাথে নিল,,পিচ্চিটা একা থাকেই না,,বাহিরে ঘুরার নামে একদম পাকা,,আমরা খালি রাস্তায় হাটছি,,লেম্পপোস্টের আলো পরছে রাস্তার মধ্যে,,ভাইয়া রুহিকে কোলে নিয়ে একেক কথা বলছে আর হাটছে,,,লেম্প পোস্টর আলোতে ভাইয়ার মুখটা আরো মায়াবী আরো সুন্দর দেখাচ্ছে,,আমি এক ধ্যানে তাকিয়েই আছি,,যেন পলক পরলেই কোন এক জিনিস মিস হয়ে যাবে,,কিছুক্ষন হাটার পর একটা ফুচকার স্টোরে আসলাম,,আমরা ভিতরে বসে ফুচকা অর্ডার দিলাম,,,ফুচকা খেয়ে বেশ ভালো লাগলো,,এখন আইস্ক্রিম টাইম,,বাহিরে এসে দোকান থেকে ভাইয়া সবাইকে আইস্ক্রিম কিনে দিল,,আমরা খাচ্ছি আর হাটছি,,এখন রুহি আমার কোলে পিচ্চিটা আইস্ক্রিম খেতে খেতে আমার ওড়নায় ফালিয়ে দিয়েছে,,রিমা আপু আর মাহি একটু আগে হাটায় খেয়াল করেনি,,কিন্তু নিহান ভাইয়া আমার পিছে ছিল সে এসে একটা টিস্যু বের করে হাতে দিল,,এখন আমি কিভাবে মুছবো?এক হাতে আইস্ক্রিম আরেকহাতে রুহি,,

আমি অসহায়ভাবে ভাইয়ার দিকে তাকালাম,,ভাইয়া ফাস্টে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিলেও পরে এসে ঠিকি মুছে দিয়ে গেল,,আমি এক গাল হাসলাম,,রুহি ঘুমিয়ে গেছে আমি আপুর কোলে ওকে দিয়ে দিলাম,,মাহি আর আমি কথা বলতে বলতে হাটছি,,,তখনি কতগুলো কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো,,আমার কুকুর অনেক ভয় লাগে,,ইভেন আমার একা না আপু আর মাহি ও,,তারা দুইজন যে যেজায়গায় পারলো দিল দৌড় আমি বোকার মতো দারিয়ে আছি,,ভয়ে আমার দ্বারা দৌড়ও হচ্ছে না,,আর কুকুর গুলো তেড়ে আমার দিকেই আসছে,,,আমি “আয়ায়া” করে জোরে একটা চিৎকার দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলাম,,চোখ বন্ধ হতেই কেউ আমার হাত ধরে টান মারলো,,আমি আরো জোরে চিৎকার করলাম,,

‘আয়ায়ায়ায়া,,,বাচাও,,,’

কেউ আমার মুখ চেপে ধরলো,,আমি এখন না পারছি চিল্লাতে না পারছি নড়তে,, এমনভাবে ধরে রেখেছে আমাকে আমি এক ফোটাও নড়তে পারছি না,,আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখি নিহান ভাইয়া!!!নিহান ভাইয়া আমাকে বাচালো?থেংক গড,,নিহান ভাইয়া এক হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে আছে আরেকহাত আমার পিছে রাখা,,আমার মুখ একদম তার মুখের নিকটে,,আমি মুখটা হাল্কা উচু করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম,চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকালাম একটা চিপা গল্লি পুরো অন্ধকারে ভরা,,বাহিরের লেম্প পোস্টের হাল্কা আলোতে ভাইয়াকে একটু বুঝা যাচ্ছে,,

নিহান রাহার মুখ চেপে ধরায় রাহা ভয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে রাখাটা বেশ ভালো লাগলো,,কেন জানি এই প্রথম কোন ফিলিং হলো রাহাকে এত কাছে পেয়ে,,এক ধ্যানে রাহার দিকে তাকিয়ে আছে,,

আমার এদিকে দম যায় যায় অবস্থা,, সেই কখন থেকে মুখটা চেপে ধরেছে ছারার নামই নেই,,আমি আমার হাত দিয়ে ভাইয়ার হাত সরিয়ে দিলাম,,

‘এভাবে কেউ ধরে রাখে আর একটু হলে মরেই যেতাম,,’

জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে বললাম,,ভাইয়া আমাকে রেখেই চিপা গল্লিটার থেকে বের হয়ে গেল,,আমি দৌড় দিলাম ভাইয়ার পিছু,,যদি আবার এসে পরে?বাহির হয়ে দেখলাম আপু আর মাহি দারিয়ে আছে,,,আমি তাদের কাছে গিয়ে বললাম,,

‘তোরা এত খারাপ কেন?আমাকে রেখেই দৌড় দিলি?’

আপু তাড়া দিয়ে বলল,,

‘হয়েছে তোর বাকুয়াস?এখন চল,,’

আমরা সবাই বাড়ির দিকে হাটা ধরলাম,,বাসায় চলে আসলাম,,

সকালে আন্টির ডাকে ঘুম ভাংগলো,,

‘এই মাহি রাহা উঠ তোরা আর কত ঘুমাবি?’

মোচরামুচরি করতে করতে উঠলাম,,ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম নাস্তা করতে,,নাস্তা শেষে আন্টি বলল,,,

‘আজ তোরা কি খাবি?’

আমি আর আপু বললাম,,

‘আন্টি বিরিয়ানি,,তোমার হাতের বিরিয়ানি যা জোস না,,’

আন্টি হাল্কা হেসে “আচ্ছা” বলে রান্নাঘরে চলে গেল রান্না করতে,,আমরা সোফায় বসে বসে গল্প করছি,,তখনি সিড়ি বেয়ে নিহান ভাইয়া নামছে,,নীল টি-শার্ট তার উপর জেকেট আর সাদা পেন্ট,,,উফফফ কাতিল ওয়ালা লুক,,ভাইয়া কি আমাকে মারার প্লানিং করছে নাকি?আচ্ছা আমি যে ভাইয়াকে নিয়ে এত ভাবী এত ভালোবাসি ভাইয়াও কি সেম?নাকি আমাকে নিয়ে তার কোন অনুভুতিই নেই?এইসব ভাবছি তখন বাড়িতে একটা লোক আসলো,,ভাইয়া লোকটাকে দেখে বসতে বলল,,হয়ত অফিসের কেউ হবে,,লোকটা বলল,,

‘স্যার নিহা ম্যাম আমাকে ফোন করে আপনার কথা জিজ্ঞেস করেছে,,আপনি নাকি…….’

আর কিছু বলতে পারলো না বেচারা,,ভাইয়া বাঘের মতো গর্জন করে উঠলো,,

‘নিহা আপনাকে ফোন করলে আপনি ধরবেন কেন?আমি না বলেছি নিহা রিলেটেড কিছু হলে বা থাকলে আমাকে না জানাতে?আমার জাস্ট সহ্য হয় না ওর নাম,,’

চিৎকার করে বলে সামনে থাকা কাচের টি-টেবিলটা হাত দিয়ে বারি বারলো টেবিলটা ভেংগে চুরচুর হয়ে গেল,,উপস্থিত আমরা সবাই ভাইয়ার এই ভয়ংকর রুপ দেখে ভয়ে কুকরে গেছি,,রুহি তো ভয়ে কেদেই দিল,,নিলা আন্টি দৌড়ে রান্নাঘর থেকে আসলো,,এসে এইসব দেখে নিহান ভাইয়াকে ধমকিয়ে বলল,,

‘এইসব কেমন বিহেব নিহান?দেখ পিচ্চিটা কান্না করছে!!দিন দিন আরো রাগ চটা হয়ে যাচ্ছিস,,’

নিহান ভাইয়া হাত উচু করে আঙ্গুল দেখিয়ে লোকটাকে বলল,,

‘আমি লাস্ট বারের মতো বলছি নিহার কথা আমার সামনে বলবে না একদম,,’

লোকটা ভয়ে মাথা ঝাকালো,,নিলা আন্টি ইশারায় তাকে চলে যেতে বলল,,লোকটা চলে গেল,,আন্টি ভাইয়াকে বলল,,

‘নিহান বিহেবে থাকো,,এইসব কেমন ব্যাবহার?বড় হয় সে তোমার থেকে,,আর নিহার কথা বললেই কি হয়?’

নিহান ভাইয়া কিছু বলল না হাত ঝারা দিয়ে উপরে চলে গেল,,আমি হঠাৎ খেয়াল করলাম ভাইয়ার হাত কেটে রক্ত বের হচ্ছে,,নিলা আন্টিকে বললাম,,,

‘আন্টি ভাইয়ার হাত কেটে গেছে,,’

আন্টি ভাইয়াকে থামালেও ভাইয়া থামলো না,,আমার এখন কেমন জানি লাগছে ভাইয়ার হাত কেটে গেছে বেন্ডেজ তো করতে হবে,,না হলে যদি কিছু হয়ে যায়?আমি উসখুস করতে লাগলাম,,নিলা আন্টি বেন্ডেজ বক্স আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,,

‘বাচ্চা একটু বেন্ডেজ করে দিয়ে আয়,,’

আমি ভয় চোখে আন্টির দিকে তাকিয়ে বললাম,,

‘আন্টি ভাইয়া বকবে আপনি বরং যান,,’

‘আরে নাহ তোকে কিছুই বলবে না,,’

কোনমতে সাহস জুগিয়ে মাহিকে সাথে নিয়ে ভাইয়ার রুমে গেলাম,,দরজা খুললাম ভাইয়া এক হাত মাথায় দিয়ে বসে আছে,,আমরা ভিতরে ঢুকলাম,,ভাইয়া মাথা তুলে আমাদের দেখে বলল,,

‘দেখ তোরা এখন যা নাহয় উল্টা পালটা কিছু বলে দিব তারপর খারাপ লাগবে,,’

আমার তার কথায় কোন ধ্যায়ান নেই এখন শুধু এক্টাই কাজ আগে তার হাতে বেন্ডেজ করতে হবে,,আমি ভাইয়ার কাছে বসে বললাম,,

‘হাতটা দেন দেখি,,’

ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে কিছুটা চিল্লিয়ে বলল,,

‘আমার হাতে কি মধু আছে যে দেখবি?যা এইখান থেকে,,’

আমি শান্ত দৃষ্টিতে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি,,মাহিকে আন্টি ডাক দেওয়ায় সে চলে গেল,,এখন তো আমি একা যদি ভাইয়া আমাকে এই সুযুগে মেরে দেয়?এইসব ভাবনা সাইডে রেখে ভাইয়াকে বললাম,,

‘নিহা আপুকে আজও ভালোবাসেন?’

ভাইয়া আমার কথা শুনে আমার মুখের দিকে আজবভাবে তাকালো,,হয়ত ভাবার চেষ্টা করছে আমি কিভাবে জানলাম?

চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?)

#I_Love_U
#part_6
#sarika_Islam

নিহানকে রাহা হঠাৎ এমন কথা জিজ্ঞেস করায় সে কিছুটা অবাক হয়ে রাহার দিকে তাকায়,,রাহা কি করে জানলো,,?রাহা নিহানের মুখের একপ্রেশন দেখে জিনিসটা বুঝতে পারে তাপর বলে,,,

‘আপনি আপুর নাম শুনলে যা রিয়েক্ট করেন যে কেউই বলে দিতে পারবে,,’

আমি এই কথাটা বলার পর ভাইয়া আমার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিল,,আমি আস্তে করে তার হাতটা নিজের হাতে নিলাম,,ভাইয়া আর কিছু বলল না শান্ত ভাবেই থাকলো,,আমি ড্রেসিং করে বেন্ডেজ করে দিলাম,,তারপর বললাম,,

‘কি হলো উত্তর দিলেন না যে?’

তখন ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,

‘তোর কাজ শেষ তুই যেতে পারিস,,’

আমিও আর কিছু না বলে উঠে যেতে নিলে ভাইয়া বলল,,

‘নিহাকে ভালোবাসতাম,,এখনও বাসি কিনা তা জানি না,,’

আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে হাল্কা হাসলাম,,আমার খুব কষ্ট হচ্ছে বুকের বা পাশ টায় চিনচিনে ব্যাথা হচ্ছে,,ভাইয়া তাহলে এখনও নিহা আপুকেই ভালোবাসে?আমি অযথাই ভাইয়াকে ভালোবেসে গেলাম,,ভাইয়া তো কখনই আমাকে ভালোবাসবে না!!এইসব ভাবতে ভাবতে সিড়ি কাছে চলে আসলাম,,কেউ আমাকে পিছন থেকে টান দিল,,আমার ভাবনা কাটলো,,সামনে সিড়ি আর একটু হলে পরেই যেতাম,,,মাহি আমাকে টান দিল,,

‘কিরে ধ্যায়ান কোথায় তোর?’

মাহিকে দেখে আমার চোখ ছলছল হয়ে গেল,,চোখে পানি চলে আসলো,,মাহি আমার চোখে পানি দেখে তাহাহুরো করে পানি মুছতে লাগলো আর চিন্তিত স্বরে বলল,

‘কিরে কি হয়েছে?ভাই তোকে আবার বকেছে?’

‘নাহ,,’

‘তাহলে?’

‘ভাইয়া এখনও নিহা আপুকেই ভালোবাসে মাহি,,তাহলে আমার ভালোবাসা?’

মাহি আমার কথা শুনে হাল্কা হাসলো,,আমি কান্না করছি আর ও হাসছে,,আমার মাথায় হাল্কা ধাক্কা দিয়ে বলল,,,

‘আরে বোকা ভাইয়াকে বলেই দেখ,,তোর মনের কথা ভাইয়াকে বলে দেখ তারপর কি হয়?’

‘যদি না করে দেয়?আমি ভাইয়ার না নিয়ে বেচে থাকতে পারবোনা,,আর না বলেও শান্তি পাবো না,,’

‘তাহলে বলেই দেখ পরের টা পরে দেখা যাবে,,’

আমরা বেশ কয়েদিন আন্টিদের বাসায় বেরালাম,,ভাইয়া একটু কমই রাগ দেখিয়েছে আবার অনেকিই,,আজ বাড়ি চলে যাবো আমরা,,সবার থেকে বিদায় নিয়ে আমরা বের হলাম,,কাছেই বাড়ি তাই হাটা ধরলাম,সাথে নিহান ভাইয়াও আছে,,প্রত্যেক দিনের মতো আজও তাকে অনেকটাই হ্যান্ডসাম আর ডেসিং লাগছে,,কিন্তু তাকাচ্ছি না আবার না রেগে যায়,,তখন একটা মেয়ে আমাদের পথের মাঝে এসে দারিয়ে গেল,,আমাদের হাটা বন্ধ হয়ে গেল,,মেয়েটা ঠিক ভাইয়ার বরাবর দারালো,,ভাইয়ার সামনে একটা ফুল নিয়ে বলল,,,

‘আই লাভ ইউ নিহান,,আই রেয়লি লাভ ইউ,,’

আমি আর আপু হা হয়ে মেয়েটা আর ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি,,ভাইয়া মেয়েটার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে দিল এক চিল্লান,,

‘এইসব কেমন অসভ্যতা হ্যা?রাস্তা ঘাটে ছেলেদের এইভাবে প্রপস করে?আরেকবার যদি তোমাকে আমার সামনে দেখি এক চড় দিব বেয়াদপ কোথাকার,,’

মেয়েটা ভাইয়ার হুংকারে কেপে উঠলো,,সাথে আমরাও,,,মেয়েটা ভয়ে ভয়ে বলল,,

‘স,,,সরি,,আমি সত্যিই ভালোবাসি তোমাকে,,’

‘এই তুমি না আমাদের বাড়ির পাশের বাড়ির?রিয়া রাইট?’

‘হুম,,’

‘ভালো ঘরের মেয়ে হয়ে এমন ছেসরা পানা কাজ কেন করো?প্রেম তো করতে পারবো না,,’

‘আচ্ছা তাহলে ফ্রেন্ড!?’

‘ওকেহ,,’

বলেই আবার হাটা ধরলাম আমরা,,আমাদের বাড়ি পৌছে দিয়ে ভাইয়াও চলে গেল ভিতরে আসল না,,আপুও সন্ধ্যার দিকে ভাইয়ার সাথে চলে গেল,,এখন আমি পুরো একা হয়ে গেলাম,,রাতে খাবার খেয়ে রুমে গেলাম বারান্দায় দারালাম,,খোলা বারান্দা আকাশে থালার মতো একটা চাঁদ উঠেছে অনেকগুলো তারাও দেখা যাচ্ছে,,আর ঠান্ডা বাতাস বইছে,,কিন্তু আমার মন উতলা হয়ে আছে শান্তি পাচ্ছি না আমি কোন ভাবেই,,আজকে বিকেলে ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে পরতেই বুকটা ধুক করে উঠে,,

ভাইয়ার কাছে কারো ফিলিংসের কোন মুল্য নেই,,আমার মনটাও ভাইয়া এভাবেই ভেংগে দিবে,,কেন কেন গেলাম আমি এত্ত ভালোবাসতে?কেন দুনিয়াতে তাকেই আমার মন দিতে হলো?যার কাছে কারো ফিলিংসের কোনই দাম নেই,,সবার মন ভাংগার আগে এক মিনিটও চিন্তা করে না,,ওই মেয়েটা তো ফ্রেন্ডে রাজি হয়ে গেল কিন্তু আমি?আমি কখনোই পারবোনা ভালোবাসাকে ফ্রেন্ড হতে,,বন্ধু হয়ে ভালোবাসা যায় কিন্তু ভালোবাসার পর আর বন্ধু হওয়া যায় না,,

এইসব ভেবেই আমার অনেক কান্না পাচ্ছে,,তাহলে কি আমার মনের কথা মনেই রয়ে যাবে?কখনো কি বলা হবে না?বারান্দায় বসে পরলাম কান্না করতে করতে,,মন চাইছে চিল্লান দিয়ে কান্না করি,,মন ভাংগার এত্ত কষ্ট জানলে কখনোই মন দিয়ে ভালোবাসতাম না,,

সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম ভাংগলো,,কাল রাতে কান্না করতে করতে বারান্দায় ঘুমিয়ে পরেছিলাম,,আম্মু আমাকে উঠিয়ে বলল,,

‘কিরে এভাবে বারান্দায় শুয়ে আছিস কেন?কিছু কি হয়েছে?’

আমি সামান্য হাসার চেষ্টা করে বললাম,,

‘কই নাতো কি হবে আবার?’

‘আচ্ছা উঠ ফ্রেশ হতে যা,,আজ নাকি তোকে দেখতে আসবে,,’

বলেই আম্মু উঠলো,,দেখতে আসবে আমাকে?শুনে আবার মনটা ভেংগে গেল,,তাও কিছু বললাম না এখন ভাইয়ার সাথে তো আর বিয়ে করতে পারবো না,,,তা নাহয় অন্য জনের সাথেই হোক,,আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম,,

বিকেলের দিকে মাহি আর নিলা আন্টি আসলো,,মাহি আমাকে দেখে বলল,,

‘কিরে কি হয়েছে?কান্না করেছিস?এমন ফোলা ফোলা কেন চোখ?’

আমি হাল্কা হেসে বললাম,,

‘কই নাতো,,লেট নাইট শোয়ার ফলে হয়ত এমন হয়েছে,,’

সন্ধ্যার দিকে ছেলে পক্ষরা আসলো,,আমাকে সাজগোজ করিয়ে তাদের সামনে বসালো,,আমি মাথা নিচু করে আছি ছেলের আম্মু আমাকে দেখে বলল,,

‘মাসাল্লাহ,, আমাদের মেয়ে অনেক পছন্দ হয়েছ,,’

আম্মু আব্বু আন্টি আংকেল হাল্কা হেসে বলল,,

‘আমাদেরও ছেলে পছন্দ হয়েছে,,’

ছেলের মা বলল,,

‘তাহলে ডেট ফিক্সড করে ফেলি কি বলেন?’

‘জি জি যত শিগ্রই করতে পারেন,,,’

কেউ ভিতরে আস্তে আস্তে বলল,,সবাই সেই দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখলো নিহান ভাইয়া বলল,,আমার গা জ্বলে গেল এখন,,কি দরকার ছিল বলার যত যলদি?কেন রে আমি কি তোর কাছে বোঝা?তোর কাছে হলে হই আম্মু আব্বুর কাছে তো না,,শালা শয়তান নিজে করবে না কিন্তু অন্যের ঘারে ঠিকি চাপাতে চায়,,,নিহান ভাইয়াকে দেখে আম্মু বলল,,

‘আরে নিহান,, দেখ তো ছেলেটা কেমন?’

নিহান ভাইয়া ছেলের দিকে তাকিয়ে বলল,,

‘কি নাম?’

ছেলের মা বলল,,

‘রুদ্র,,’

নিহান ভাইয়া ছেলের মার দিকে তাকিয়ে বলল,,

‘বর কি বোবা নাকি?সব উত্তর আপনিই দিয়ে যাচ্ছেন?’

ছেলের মা কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেল,,আন্টি আংকেল ভাইয়ার এমন কথা শুনে হাসিতে উরিয়ে দিয়ে বলল,,

‘আমাদের ছেলে,,রাগ একটু বেশিই কিছু মনে করেন না,, ‘

ছেলের বাবা মা হেসে দিল,,বিয়ের ডেটও ফিক্সড হয়ে গেল,,আমাকে ভিতরে নিয়ে গেল মাহি,,আমি মাহিকে ধরে কান্না করে দিলাম,,মাহি আমাকে শান্তনা দিতে দিতে বলল,,

‘কান্না করিস না,,যা ভাগ্যে আছে তাই হবে,,’

নিহানরা বাড়ি চলে গেল,,নিহান রুমে বসে বসে রাহার কথা চিন্তা করছে,,ওর কেমন যেন নিজেকে ফাকা ফাকা লাগছে,,রাহার বিয়ে হয়ে যাবে?তাহলে আমার এমন লাগছে কেন?নিহান নিজেকে ঠিক করে এইসব কি ভাবছিস?রাহা জাস্ট তোর আংকেলের মেয়ে আর কিছুই না,,

এইসব নিজে নিজেই ভাবে নিজেকে শান্ত করে শুয়ে পরলো,,

চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here