#Love_With_Dragon
#Episode_05
[গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না]
রিদিয়া নিজের রুমে এসে মিসেস মেহেরকে নিয়ে ভাবতে শুরু করলো।
— আম্মু কি সাধারণ মানুষ নাকি অন্য কিছু। নীল ড্রাগনটা তো বললো এই আংটি শুধু ড্রাগন রাজ্যে পাওয়া যায়।তাহলে আম্মু কিভাবে পেল।আম্মু বলেছিলো আব্বু আমায় দিয়ে গেছে। আমার মাথায় কিছুই ডুকছে না। এখন থেকে আম্মুকে চোখে চোখে রাখতে হবে। আম্মু কি সাধারণ মানুষ নাকি কোনো মনস্টার।(রিদিয়া)
এইসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে রিদিয়া ঘুমিয়ে গেলো।
_______________________
স্পর্শিয়া ভীতু চেহারা নিয়ে ক্লাসে আসে আছে।আদরকে দেখলেই স্পর্শিয়া ভয় পায়।
— সমস্যা কি তোর স্পর্শিয়া আমাকে দেখলে এমন বিহেভ করছিস কেন তুই। (আদর)
— অনেকক্ষণ ধরে তুই আদরকে এড়িয়ে যাচ্ছিস হয়েছেটা কি তোর বল।(অনিমা)
— ক……কি…কিছু হয়নি অনিমা। আদরকে বল আমার থেকে দূরে থাকতে।ও….ওকে দেখলে আমার ভয় লাগে।(স্পর্শিয়া)
— আদরকে দেখলে তোর ভয় কেন লাগে বল।(মেঘলা)
— এ…..এমনি মেঘলা। (স্পর্শিয়া)
বলে স্পর্শিয়া দৌঁড়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেল।
— সত্যি করে বল আদর তুই স্পর্শিয়ার সাথে কি করেছিস। স্পর্শিয়া তোকে দেখে হঠাৎ ভয় পাচ্ছে কেন।(নীল)
— আমি সত্যিই জানি না নীল ও কেন আমার সাথে এমন বিহেভ করছে।আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে ও আমাকে দেখলেই দূরে চলে যায়।(আদর)
— তুই স্কুল লাইফ থেকে ওকে ভালোবাসিস তাহলে এখনও বলছিস না কেন।(আকাশ)
— আমার যে হাত-পা বাঁধা আকাশ। বলার হলে আগেই বলে দিতাম।(আদর)
— কি এমন সমস্যা বল আমাদের আমরা তোকে সাহায্য করব।(নীল)
— কিছু না দোস্তরা?।(আদর)
কান্না করতে করতে আদর ক্লাস থেকে বের হয়ে যায়।
— আদরের কি হয়েছে বল ও এমন অদ্ভুত বিহেভ করছে কেন।(মেঘলা)
— জানিনা মেঘলা ওর কি হয়েছে। রিদিয়া এখনো আসছে না কেন।গিয়ে দেখ এখনো পরে পরে ঘুমাচ্ছে। (অনিমা)
— হেই গাইস,, আমি চলে এসেছি। (রিদিয়া)
— এতক্ষণে তোর আসার সময় হলো না আসলে ও পারতি।(অনিমা)
— সবাই এখানে আদর আর স্পর্শিয়া কোথায়।
— ওদের মাঝে কোনো সমস্যা হয়েছে হয়তো।স্পর্শিয়া কলেজে আসার পর থেকে কেমন অদ্ভুত বিহেভ করছে। আদরকে দেখলেই ভয় পাচ্ছে। স্পর্শিয়ার বিহেভে আদর অনেক কষ্ট পেয়েছে। এই ফার্স্ট আদরকে কারোর জন্য এমনভাবে কাঁদতে দেখলাম।(আকাশ)
— তোরা থাক আমি স্পর্শিয়াকে খুঁজে নিয়ে আসি।(রিদিয়া)
নিশ্চয়ই লাইব্রেরীতে গিয়ে বইয়ে মুখ গুঁজে বসে আছে।
— ঠিক আছে যাহ্।ওকে নিয়ে আয়।ও তুই ছাড়া কারোর কথা শুনে না। এখন তোর ওপর সব নির্ভর করছে।(নীল)
আমরা আদরকে নিয়ে আসি।
__________________________
রিদিয়া লাইব্রেরীতে গিয়ে দেখে স্পর্শিয়া গালে হাত দিয়ে মন খারাপ করে বসে আছে।
— কি হলো তোর এমন ভাবে বসে আছিস কেন…(আদর)
— কিছু হয়নি আমার আমাকে একটু একা থাকতে দে প্লিজ। (স্পর্শিয়া)
— না কিছুতেই না।তোর কি হয়েছে আমাকে বলতেই হবে না হলে….. (রিদিয়া)
— না হলে কি রিদিয়া।আমার কিছু ভালো লাগছে না। আমি কোনোদিন ভাবিনি এমন একটা সত্যির মুখোমুখি আমায় হতে হবে?।(স্পর্শিয়া)
স্পর্শিয়া কান্না করে দিলো রিদিয়া স্পর্শিয়াকে জড়িয়ে ধরলো।
— কান্না করিস না দোস্ত। কি হয়েছে আমাকে বল তোর মনটা হালকা হবে।(রিদিয়া)
— তুই কাউকে বলবি না বল। প্রমিজ কর আমায়।(স্পর্শিয়া)
— ওরা সবাই আমাদের বন্ধু ওদের থেকে কোনো কিছু লুকালে ওরা কষ্ট পাবে।(রিদিয়া)
— থাক তাহলে শুনা লাগবে না।(স্পর্শিয়া)
— আচ্ছা ঠিক আছে কাউকে বলবো না আমি এবার বল।(রিদিয়া)
— দোস্ত আ…..আদর কোনো সাধারণ মানুষ না।ও……ও একটা ভাম্পায়ার।(স্পর্শিয়া)
— কি…….কিহ্ তোর মাথা খারাপ স্পর্শিয়া। এটা কিভাবে সম্ভব আমি বিশ্বাস করি না আদর ভাম্পায়ার।(রিদিয়া)
— আমি সত্যি বলছি আ…আমি নিজের চোখে দেখেছি রিদিয়া।এভাবে ঠকে গেলাম আমি?।(স্পর্শিয়া)
— ঠকে গেছিস মানে….(রিদিয়া)
— আমি ওকে স্কুল লাইফ থেকে ভালোবাসি আদরকে।কিন্তু সাহস হয়নি ওকে বলার।নিজের মনকে আর মানাতে পারছিলাম না।তাই কাল রাতে ওর বাড়িতে গিয়ে মনের কথা বলবো ভেবেছি কিন্তু,,,,(স্পর্শিয়া)
…… কান্নার জন্য স্পর্শিয়া কথা বলতে পারছে না।
— কিন্তু কি দোস্ত কান্না করিস না।ও ভাম্পায়ার তাতে কি হয়েছে ওকে ভালোবাসা পাপ নয়। (রিদিয়া)
— আমি কি বলেছি এইজন্য আমি ওর কাছে যাচ্ছি না….(স্পর্শিয়া)
— তাহলে কেন ওর থেকে দূরে দূরে থাকছিস।(রিদিয়া)
— আমি ওর বাড়িতে ডুকবো তখন ওর বাড়ির পাশে যে বাগানটা রয়েছে ওইখান থেকে একটা মানুষের চিৎকার শুনে আমি দৌঁড়ে বাগানে গেলাম। দোস্ত চোখের সামনে যা দেখেছি এখনো ভয়, ঘৃণা হচ্ছে ওর প্রতি আমার। দোস্ত আদর একটা নির্দোষ মানুষকে মেরে ফেলেছে। লোকটার ঘাড়ে দাঁত বসিয়ে পুরো শরীর থেকে রক্ত শুষে নিয়েছে। লোকটা চটপট করতে করতে মারা গিয়েছে। আমি ভয় পেয়ে সেখান থেকে চলে আসি।গিয়েছি ওকে সারপ্রাইজ দিতে বাহ্ দোস্ত আমি সেখান থেকে সারপ্রাইজড হয়ে এসেছি। আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে দোস্ত এমন একটা ছেলেকে ভালোবেসেছি।ও ভাম্পায়ার তাতে আমার কিছু যায় আসে না।কিন্তু নির্দোষ মানুষদের ও মারবে এইটা আমি মানতে পারছিনা আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। (স্পর্শিয়া)
— হয়তো লোকটা কোনো বাজে কাজ করেছে তার জন্য আদর তাকে শাস্তি দিয়েছে। চোখের দেখা অনেক সময় ভুল হয়।তুই কান্না করিস না।আমি আদরকে জিজ্ঞাস করে দেখবো আসলে ব্যাপারটা কি।(রিদিয়া)
— না দোস্ত প্লিজ ওকে কিছু বলিস না তাহলে আমাকে আর তোকে ও মেরে ফেলবে। (স্পর্শিয়া)
— তুই কি পাগল স্পর্শিয়া।আমাদের যদি মারতো আরো আগেই মেরে ফেলতে পারতো।না জেনে আদরকে ভুল বুঝিস না। ক্লাসে চল একদম মন খারাপ করে থাকবি না।আদরের সাথে কথা বলবি ঠিক আছে । (রিদিয়া)
— না আমি পারব না দোস্ত.. (স্পর্শিয়া)
— পারতে হবে। (রিদিয়া)
রিদিয়া স্পর্শিয়ার হাত ধরে টেনে লাইব্রেরী থেকে ক্লাসে নিয়ে গেল।
__________________________
— দেখ স্যার এসে গেছে। এখন কি করি…(রিদিয়া)
— আসতে পারি স্য……স্যার…..(রিদিয়া)
— ক্লাসের সময় অলরেডি পাঁচ মিনিট শেষ তুমি এখন কি করতে এসেছ না আসলে ও পারতে আমার অলরেডি এক মিনিট নষ্ট করে দিলে।(স্যার)
— স্যার আর হবেনা এইবারের মতো মাপ করে দেন?।(রিদিয়া)
— ঠিক আছে একটা সুযোগ দিচ্ছি।ক্লাস শেষ করে আমার সাথে দেখা করবে।(স্যার)
— ঠিক আছে স্যার?।(রিদিয়া)
স্পর্শিয়া পুরো ক্লাসে চুপ ছিল।বন্ধুরা কিছু বললে শুধু হ্যাঁ-হু জবাব দিয়েছে।আদরের দিকে একবারও ফিরে তাকায়নি। স্পর্শিয়ার ব্যবহারে আদর অনেক কষ্ট পেয়েছে। আদর প্রথম ক্লাস করে বাড়ি চলে যায়।
_________________________
রিদিয়া ক্লাস শেষ করে রোহিতের কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভিতরে যাবে কিনা ভাবছে।
— ভিতর থেকে কেমন অদ্ভুত শব্দ বের হচ্ছে। (রিদিয়া)
রিদিয়া দরজা হালকা ফাঁক করে উঁকি দিল। যা দেখলো মাথা ঘুরে পরে যওয়ার মতো অবস্থা।
— এ……এইটা কি করে সম্ভব রোহিত স্যার….ড্রা…(রিদিয়া)
— এই মেয়ে স্যারের কেবিনে উঁকি মারছো লজ্জা করে না অসভ্য মেয়ে একটা।যাও এখান থেকে। (জোহরা মেম)
— স্যার আমাকে আসতে বলেছে মেম।(রিদিয়া)
— মিথ্যে বলছো কেন সুন্দর ছেলে দেখলে কিভাবে হাত করবে….. (জোহরা)
আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই রোহিত চলে আসে কেবিনের বাহিরে।কেবিনের ভিতর থেকে সব শুনেছে রোহিত।রিদিয়ার সাথে খারাপ ব্যবহার করাতে রোহিত রেগে জোহরাকে বলে,,,,,
— জোহরা তুই এখন যা আমার ওর সাথে কাজ আছে।(রোহিত)
— কিন্তু রোহিত…..(জোহরা)
— যেতে বলেছি তোকে?….।আর বাচ্চাদের সাথে কিভাবে বিহেভ করতে হয় শিখে কলেজে ক্লাস করাতে আসবি। (রোহিত)
— এই মেয়েটার জন্য তুই আমার সাথে এইভাবে কথা বললি রোহিত।(জোহরা)
— তোকে যেতে বলেছি এখান থেকে।(রোহিত)
জোহরা রেগে চলে গেল।রোহিত রিদিয়ার হাত ধরে কেবিনে নিয়ে আসলো।
__________________________
— মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছো কেন।মাথা ওপরে তুলে আমার দিকে তাকাও।(রোহিত)
জোহরার কথায় রিদিয়া অনেক কষ্ট পেয়েছে।চোখে পানি টলমল করছে। রোহিতের থেকে কান্না লুকানোর জন্য রিদিয়া মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
রোহিত ধমক দিয়ে বলে,,,
— সমস্যা কি তোমার আমার দিকে তাকাতে বলছি।(রিদিয়া)
রোহিতের ধমক খেয়ে রিদিয়া ছোট বাচ্চাদের মতো শব্দ করে কান্না করে দেয় ?।রিদিয়ার চোখে পানি দেখে কেন জানি রোহিতের বুকে চিনচিন করে ব্যাথা হতে লাগলো।
— কান্না করা বন্ধ করো রিদিয়া…..(রোহিত)
রিদিয়া রোহিতের কথা না শুনে কান্না করতে থাকে।
রোহিতের কি হলে সে নিজেও জানে না।রিদিয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
রিদিয়া রোহিতের কাজে হতভম্ব হয়ে গেল। রোহিত যে এমন কাজ করে বসবে সে ভাবতেও পারছেনা।
চলবে……..