#Love_With_Dragon
#Episode_06,07
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]
06
— কি……..কি করছেন স্যার আমাকে জড়িয়ে ধরলেন কেন।আপনাকে ভালো ভেবেছিলাম কিন্তু এখন দেখছি আমার মতো অবলা একটা মেয়েকে একা পেয়ে জড়িয়ে ধরলেন ছিঃ ছিঃ। তাহলে আপনার কাছে যে কোনো মেয়ে আসলে আপনি…..(রিদিয়া)
রিদিয়া আর কিছু বলতে যাবে রোহিত রিদিয়াকে ছেড়ে দিয়ে বলে,,,,
— আর একটাও উল্টাপাল্টা কথা বললে থাপ্পড়িয়ে গাল ফাটিয়ে দিবো। তোমার চোখে কান্না দেখে আমার খারাপ লাগছিলো তাই আমি….(রোহিত)
— তাই আপনি আমায় জড়িয়ে ধরলেন।আপনার চরিত্রে দোষ আছে।আর হ্যাঁ শুনুন আমি আপনার আরেকটা ব্যাপার জেনে গেছি?। (রিদিয়া)
— আমার চরিত্রে দোষ দিলে আর কিসে দোষ দিতে চাও।দেখো আমি তোমায় ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরিনি।তোমাকে কাঁদতে দেখে আমার কেন জানি কষ্ট হচ্ছিল তাই তোমাকে….. (রোহিত)
— হয়েছে হয়েছে আর বলতে হবেনা।জোহরা মেডামের সাথে আপনার কি চলছে স্যার?।ওই মহিলা আমায় আপনার জন্য অনেক বাজে কথা শুনিয়েছে।(রিদিয়া)
— ওর হয়ে আমি তোমায় সরি বলছি।ওর কথায় কিছু মনে করো না। ও আমার বোন হয়।(রোহিত)
— কত বড় মিথ্যে বলছেন স্যার আপনি?।এখন ধরা পরে বোন বলছেন।(রিদিয়া)
— ফালতু কথা বলে মেজাজ খারাপ করো না।ও আমার ছোট কাকাই এর মেয়ে সে হিসেবে ও আমার বোন। আর একটা উল্টাপাল্টা কথা বললে ওপর থেকে নিচে পেলে দিব।(রোহিত)
ঝগড়াঝাটি করে দুজন হাঁপিয়ে গেছে।এখন দুজন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
রোহিত রিদিয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
— পাগলিটা এত দুষ্ট কেন। সেই প্রথম দিন পাগলিটাকে আমার ভালো লেগে গেছে।উজ্জ্বল শ্যামবর্নের মেয়েটার মুখটা এত মায়াবী কেন।আমি তার মায়ায় ফেঁসে গেছি। মৃত্যু ছাড়া এই মায়া ত্যাগ করা সম্ভব নয়।(রোহিত মনে মনে বললো)
— দেখ ব্যাটা কেমন লুচুদের মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কেন আসতে বলেছে তাও বলছে না।ভয় ও লাগছে অনেক আস্ত এক হোয়াইট ড্রাগনের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।যদি সত্যি সত্যি মেরে দেয়?।তখন দরজায় উঁকি দিয়ে ওনার রহস্য উদঘাটন করেছি। ওনি ড্রাগনের রূপে এসে খাবার গুলো একমিনিটে শেষ করে দিলো। না এখন বলমু না ওনাকে কিছু। আগে আমার প্রেমে ফেলমু তারপর সবকিছু ?।(রিদিয়া মনে মনে বললো)
— স্যার কিছু বলছেন না কেন আমার ক্লাস আছে আমি যাই।(রিদিয়া)
রিদিয়ার কথায় রোহিতের ধ্যান ভাঙ্গে।
— কিছু বলছিলে,,,
……দেখো তুমি যখন আমার একটা গোপন ব্যাপার জেনেই গেছ তাহলে আর লুকিয়ে রেখে কোনো লাভ নাই?।(রোহিত)
— ক…..কি স্যার আ….আমি কিছু জানি না।আর কিসের কথা বলছেন আপনি।(রিদিয়া)
— আমি যে কোনো সাধারন মানুষ নই সেটা তুমি প্রথম দিনই জেনে গেছ।তখন তুমি শিউর ছিলেনা আজ তুমি সব জেনে গেছ। (রোহিত)
রিদিয়া ভয় পেয়ে গেল। ভয় পেয়ে পিছনে যাওয়া শুরু করে।
— আ….আমাকে মারবেন না প্লিজ স্যার।আ….আমি আরো অনেক বছর বাঁচতে চাই। আমাকে মেরে ফেললে আমার জামাই বউ হারা হয়ে যাবে আর আমার বাচ্চাগুলো মায়ের মুখ দেখা থেকে বঞ্চিত হবে প্লিজ স্যার আমাকে মারবেন না?।(রিদিয়া)
রিদিয়ার কথা শুনে রোহিত বেকুব হয়ে গেল।
— এই মেয়ে তোমার মাথায় সমস্যা আছে।কি সব বলে যাচ্ছো তখন থেকে একটা বাচ্চা মেয়ে ও তোমার থেকে ভালো।(রোহিত)
রিদিয়া কিছু না বলে রোহিতের দিকে তাকিয়ে আছে।
— এখন কথা বলছো না কেন। এমনিতে তো বকবক করতে ভালো পার।এক্ষুনি বেরিয়ে যাও এখান থেকে। আর শুনো আমার ব্যাপারে কেউ যেন কিছু না জানে তাহলে কিন্তু সত্যি সত্যি তোমায় মেরে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখবো।(রোহিত)
— বলবো না কাউকে স্যার আপনি আমাকে না মারলেই হলো।বেচারা জামাই আর বাচ্চাগুলো একা হয়ে যাবে আমায় মারলে।(রিদিয়া)
— স্টুপিড মেয়ে যাও এখান থেকে। (রোহিত)
— যাচ্ছি যাচ্ছি…..(রিদিয়া)
বলেই রিদিয়া রোহিতকে একটা ফ্লায়িং কিস? দিয়ে দিলো দৌঁড়।রিদিয়া আর সেখানে নাই।
রোহিত মুচকি হাসল রিদিয়ার কাজে।
____________________
রিদিয়া রোহিতের কথা ভেবে মুচকি হাসছে আর হাঁটছে। হঠাৎ করে কিছুর সাথে উষ্ঠা খেয়ে মাটিতে পরে যায় রিদিয়া। হাতের কিছু অংশ কেটে যায়।
— আ…হ্ আমার হাতটা গেল রে?।(রিদিয়া)
ঝড়ের গতিতে কেউ তার সামনে আসলো । রিদিয়া ভয় পেয়ে যায় এমনভাবে কেউ সামনে আসাতে।
রিদিয়া লোকটির পা থেকে শুরু করে মাথা পর্যন্ত দেখছে।লোকটির চাহনি ভালো ঠেকছে না রিদিয়ার কাছে।
— কে….আপনি….(রিদিয়া)
লোকটা রিদিয়ার হাতের দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
— তোর রক্ত চাই….
— আ….আমার রক্ত মানে।কে আপনি… (রিদিয়া)
— সেটা জেনে তুই কি করবি। রক্ত দেখলে মাথা ঠিক থাকে না আমার। এখন তোর শরীরের সব রক্ত খেয়ে নিজেকে শান্ত করবো আমি।
— আমায় যেতে দিন প্লিজ আমার শরীরে তেমন রক্ত নেই।আমার….(রিদিয়া).
রিদিয়াকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রিদিয়াকে জঙ্গলে নিয়ে আসে লোকটা।
রিদিয়ার অনেক কান্না পাচ্ছে। রিদিয়া ভালো করেই বুঝতে পেরেছে এইটা একটা মনস্টার।
— মনে হচ্ছে আজকেই আমার শেষ দিন।মা, মিহি আপুর কথা খুব মনে পরছে।আর ফ্রেন্ডদেরও খুব মনে পরছে?।আমায় যদি কেউ বাঁচাতে আসতো।(রিদিয়া)
রিদিয়া কান্না করছে। রিদিয়ার চোখের পানি দেখে ও লোকটার দয়া হলোনা।লোকটা একটা ভয়ংকর ভাম্পায়ারে পরিনত হলো। রিদিয়া আঁতকে উঠল লোকটার ভাম্পায়ার রূপ দেখে।
(ভাম্পায়ারটি মানুষের রক্ত খাওয়ার জন্য রিদিয়াদের কলেজে ডুকে পরে।কোনো ছাএ বা ছাএী একা হলেই ভাম্পায়ারটি তার সুযোগ নিবে বলে ওঁৎ পেতে ছিল।দুর্ভাগ্য বশত রিদিয়া তার শিকার হলো)
— এইজন্য স্পর্শিয়া আদরকে দেখে ভয় পেয়েছিল।কত ভয়ানক লাগছে ভাম্পায়ারটাকে।আজকে আমার সব রক্ত খেয়ে ফেলবে।আমার লাশটা ও আমার বাড়ির লোক খুঁজে পাবে না?।(রিদিয়া মনে মনে বলে)
— আমায় ছেড়ে দিন প্লিজ।আমি….. (রিদিয়া)
রিদিয়ার ঘাড়ে দাঁত বসাতে যাবে তার আগেই কেউ ভাম্পায়ারটাকে রিদিয়ার কাছে থেকে সরিয়ে ওপরে তুলে আছাড় মারলো।
রিদিয়া হা করে সামনে তাকিয়ে আছে। রিদিয়াকে যে বাঁচিয়েছে সে আর কেউ নয় রোহিত।ড্রাগনের রূপে এসে ভাম্পায়ারটাকে আছড়ে আছড়ে হাড়গোড় সব ভেঙে দিয়েছে। ঘাড় মটকে দিয়েছে।
রিদিয়ার সামনে ভাম্পায়ার টাকে মারতে থাকে।
আর রিদিয়া বসা থেকে উঠে খুশিতে চিৎকার করে হাততালি দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বলতে থাকে,,,,,
— ইয়ে মাই সুপারহিরো….. না না মাই কিউট ড্রাগন? আরো মারো মারতে মারতে ব্যাটার হাড়গোড় সব ভেঙে পেল?।আমাকে খেতে এসেছিলি না নে এবার মজার মজার মার খেয়ে নে।আহ্ কি আনন্দ আকা….শে বাতা……..সে….আহা…(রিদিয়া)
আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই রোহিত ড্রাগন রূপেই বলে উঠে,,,,,,
— কাকের মতো কা কা বন্ধ করো?।(রোহিত)
রিদিয়া আঙুল ঠোঁটে চেপে ধরলো।
— মনে হচ্ছে রেগে আছে আজব আমি কি বলেছি নাকি আমাকে বাঁচাতে। (রিদিয়া)
— ও এখন বাচিঁয়েছি দেখে বড় বড় কথা বলছো।(রোহিত)
— ওমা আমার মনের কথা শুনলো কিভাবে। (রিদিয়া)
— তুমি যেভাবে বলছো সবাই শুনবে তোমার কথা।পাজিল মেয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো।সাবধানে হাঁটলে হাত ও কাটতো না আর এতবড় বিপদও হতো না।(রোহিত)
রিদিয়া চুপ মানে পুরোই চুপ মনে মনেও কিছু বলছেনা।কারণ কিছু বললেই রোহিত শুনে পেলে তাই মনে মনে কথা বলছে না।মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো।
রোহিত ভাম্পায়ারটাকে মারার সাথে সাথে সেখানে আরো কয়েকশো ভাম্পায়ার চলে এসেছে। ভাম্পায়ারগুলো রোহিতের ওপর ক্ষেপে আছে।তাদের একজন ভাম্পায়ারকে মারাতে তারা দল নিয়ে এসেছে রোহিতকে মারার জন্য।
রিদিয়া একসাথে এতগুলো ভাম্পায়ার দেখে ভয় পেয়ে যায়।
— আমার জন্য ওনাকে বিপদে পরতে হলো।এখন কি হবে ওনি কি একসাথে এতগুলো ভাম্পায়ারকে শায়েস্তা করতে পারবে।(রিদিয়া)
— তুমি লুকিয়ে পর রিদিয়া। তুমি এখানে থাকলে আমি ওদের কিছু করতে পারবো না।(রোহিত)
— না আমি যাবনা আপনাকে ছেড়ে ?।(রিদিয়া)
— প্লিজ রিদিয়া যাও এখান থেকে। তুমি আমার দুর্বলতা তোমাকে দিয়ে ওরা আমায় আঁটকে ফেলবে। (রোহিত)
রিদিয়া অবাক হলো রোহিতের কথায়।
— আমি ওনার দুর্বলতা কেন…….(রিদিয়া)
— যেতে বলছি যাও..(রোহিত)
রিদিয়া লুকাতে যাবে তার আগেই দুটো ভাম্পায়ার রিদিয়াকে ধরে ফেললো।
রিদিয়া ছুটবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে কিন্তু এদের শক্তির কাছে রিদিয়ার শক্তি কিছুই না।
রোহিত বাকি ভাম্পায়ারদের সাথে প্রাণপনে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। রোহিতের কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। রিদিয়ার যদি কিছু হয়ে যায় রোহিত নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবে না।আপনাআপনি রোহিতের চোখ দিয়ে পানি পরতে শুরু করলো।
রোহিত ভাম্পায়ারদের সাথে যুদ্ধ করে অনেক আহত হয়েছে। এখনো তার কিছু শক্তি ব্লক হয়ে আছে যার জন্য তার এতগুলো ভাম্পায়ার এর সাথে লড়তে কষ্ট হচ্ছে।
রোহিত ভাম্পায়ার গুলোর কাছ থেকে সরে রিদিয়ার কাছে এসে ভাম্পায়ার দুটোকে দু’দিকে ছুড়ে মেরে রিদিয়াকে নিয়ে পালিয়ে গেল।
রোহিতকে এইভাবে পালিয়ে যেতে দেখে ভাম্পায়ারগুলো অনেক রেগে গেল।
— পালিয়ে কোথায় যাবে ড্রাগন কিং। তোমার দুর্বলতা খুঁজে পেয়ে গেছি আমরা হা হা হা।তোমার ভালোবাসাই তোমার দুর্বলতা।
_______________________
এইদিকে রোহিত রিদিয়াকে নিয়ে একটি বাগানে এসে পরলো।রোহিত ড্রাগন রূপেই আছে।শরীরের বেশিরভাগ অংশ কেটে গেছে। কাটা অংশ থেকে রক্ত ঝরছে। রিদিয়া রোহিতের অবস্থা দেখে কান্না করতে থাকে । এখানে সে কিছুই চিনে না যে কারো কাছে সাহায্য চাইবে।
হোয়াইট ড্রাগনটার(রোহিতের)মাথার কাছে এসে রিদিয়া হাত দিয়ে মাথায় স্পর্শ করে।
রোহিত নড়েচড়ে ওঠে চোখ বন্ধ করে ফেলে।
— স্যার স্যার চোখ খুলুন….. (রিদিয়া)
রিদিয়া চিৎকার করে কান্না করতে থাকে।
তখনি বাগানে বাতাস বইতে লাগল।রিদিয়া সামনে তাকাতেই আশ্চর্য হলো।
চলবে……..
#লেখনীতে__ফিহা
#Love_With_Dragon
#Episode_07
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]
রিদিয়া সামনে তাকাতেই আশ্চর্য হলো।
— আপনি…….(রিদিয়া)
— আমার ভাইয়ের কি হয়েছে ও এতো আহত হয়েছে কিভাবে।দেখে মনে হচ্ছে ভাম্পায়ারদের সাথে কিছু হয়েছে।
রিদিয়া অবাক হয়ে শুনছে রাহুলের কথা।
— আপনার ভাই রোহিত স্যার……..(রিদিয়া)
— এসব কথা পরে হবে এখন আমি আমার ভাইকে নিয়ে যাই তুমি বাড়ি চলে যাও।(রাহুল)
— আমি ও আপনার সাথে যাব প্লিজ আমাকে নিয়ে যান।(রিদিয়া)
— না তোমাকে নেওয়া যাবে না।তোমাকে ড্রাগন রাজ্যে নিয়ে গেলে অনেক সমস্যা দেখা দিবে কারন তুমি একজন সাধারণ মানুষ। (রাহুল)
— কিন্তু আমি বাড়ি যাব কি করে…….(রিদিয়া)
— আমি দেখছি কি করা যায়।(রাহুল)
— আমি সমস্যার সমাধান পেয়ে গেছি আপনি স্যারকে নিয়ে যান।(রিদিয়া)
— পারবে তো যেতে….. (রাহুল)
— হ্যাঁ পারবো?।(রিদিয়া)
রিদিয়া ম্যাজিকম্যানকে মনে মনে ডাকলো।
সাথে সাথে ম্যাজিকম্যান তার সামনে হাজির।
— তুমি এখানে কেন রিদিয়া। কোনো সমস্যা হয়েছে। (ম্যাজিকম্যান)
রিদিয়া সম্পূর্ণ ঘটনা এড়িয়ে গেল ম্যাজিকম্যানের কাছ থেকে।
— কিভাবে জানি এখানে চলে এসেছি এখন বাড়ি যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পাচ্ছি না। আমায় আমার বাড়ি নিয়ে যাও প্লিজ। (রিদিয়া)
ম্যাজিকম্যানের রিদিয়ার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না। কিন্তু রিদিয়াকে আর কিছু বলেনি।রিদিয়াকে বাড়ির সামনে রেখে ম্যাজিকম্যান চলে যায়।
____________________
রাত এগারোটা বিশ মিনিট বাজে রিদিয়া দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিভাবে ঘরে ঢুকবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে।
— আম্মুকে কি জবাব দিব আমি।(রিদিয়া)
রিদিয়া ভয়ে ভয়ে দরজায় হাত দেয় সাথে সাথে দরজা খুলে যায়।
— দরজা খোলা কেন। আম্মু আর মিহি আপু কোথায়।(রিদিয়া)
রিদিয়ার ভয় লাগতে শুরু করে।
কোনো কিছু পরে যাওয়ার শব্দে রিদিয়া পিছনে তাকায়। পিছনে তাকাতেই রিদিয়া ভয় পেয়ে যায়।
(??”ড্রাগন রাজ্য”??)
— মাস্টার এখন কি হবে ভাইয়া অনেক বেশি আহত
হয়েছে। (রাহুল)
— রোহিত মেয়েটাকে বাঁচাতে নিজের ক্ষতি করে ফেললো। ওই সাধারণ মেয়েটাই রোহিতের ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।(মাস্টার)
— এইটা কিভাবে সম্ভব মাস্টার ও একটা সাধারণ মেয়ে…….(রাহুল)
— ম্যাজিকেল বইয়ে কি লিখা ছিল তুমি দেখনি….ম্যাজিকেল বইটাতে স্পষ্ট লিখা আছে রোহিতের সর্বনাশের কারন হবে সাধারণ কোনো মেয়ের দ্বারা। (মাস্টার)
— এখন উপায়…….(রাহুল)
— উপায় একটাই ওই মেয়েকে রোহিতের থেকে দূরে রাখতে হবে আর না হয় শেষ করে দিতে হবে।(মাস্টার)
রিদিয়াকে শেষ করে দেওয়ার কথা শুনে রাহুল কলিজা কেঁপে উঠল। কেন জানি তার বুকে প্রচন্ড যন্ত্রণা শুরু হলো।
— মাস্টার মেয়েটাকে না মেরে অন্য কোনো উপায় বলুন। ওই বেচারির কি দোষ। দোষ তো নিয়তির।মেয়েটাকে নিয়ে পরে ভাববো এখন ভাইকে কিভাবে সুস্থ করবো তার উপায় বলেন মাস্টার।(রাহুল)
— ঠিক আছে আমার কক্ষে নিয়ে নিয়ে আসো।(মাস্টার)
রাহুল রোহিতকে মাস্টারের কক্ষে নিয়ে গেল।
— এবার তুমি যেতে পারো।আগামী দশদিন আমাকে যেন কেউ বিরক্ত না করে। এই দশদিন দরজার বাহিরে তুমি পাহারায় থাকবে।কেউ যেন ভুলেও প্রবেশ করতে না পারে।আমি আমার সব শক্তি দিয়ে রোহিতের ক্ষতস্হান গুলো ঠিক করার চেষ্টা করবো।(মাস্টার)
— ঠিক আছে মাস্টার। (রাহুল)
বলে রাহুল ভাইয়ের দিকে একপলক তাকিয়ে কক্ষের বাহির চলে গেল পাহারায়।
(? ভাম্পায়ার রাজ্য ?)
ভাম্পায়ার রাজ্যের রাজা পিটাস সিংহাসনে বসে আছে কিভাবে ড্রাগন কিংকে জব্দ করতে পারবে। সাথে নেকড়ে রাজ্যের রাজা হিউগো হাত মিলিয়েছে রাজা পিটাস এর সাথে।
— কিং জাফর ( ড্রাগন রাজ্যের প্রাক্তন রাজা) এর ছেলে রোহিতকে কিভাবে জব্দ করা যায় তার উপায় পেয়েছি বন্ধু। (পিটাস)
— কি উপায় পেয়েছিস পিটাস…..(হিউগো)
— একটা সাধারণ মানুষের মেয়ের ওপর রোহিত দিওয়ানা হয়ে গেছে…. (পিটাস)
— মানে কি বলছিস এইসব তুই পিটাস। তুই জানিস তুই কি বলছিস।যদি এইরকমটা হয় তাহলে আমাদের বিজয় নিশ্চিত। ম্যাজিকেল বুকে এই কথাটি আমি দেখেছি।
— তুই কিভাবে দেখেছিস হিউগো?…..(পিটাস)
— না মানে চুরি করে দেখেছি?…..(হিউগো)
— তোর এই চোরা চুরি অভ্যাস আর গেল না।(পিটাস)
— যখন কিং জাফরের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল তখন।একদিন কিং জাফরের গোপন কক্ষে চুরি করে ডুকেছিলাম।তখন কিং জাফর ও ছিলেন কক্ষে তখন তিনি ম্যাজিকেল বুকটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করছিলেন। ওই সময় সেই গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠাটি চলে আসে।কালো রঙের কালির লেখাটি ছিল।(হিউগো)
— শুন হিউগো আমাদের কৌশলের সাথে সামনে এগোতে হবে।কিন্তু মেয়েটিকে চিনবো কি করে….. (পিটাস)
তখন মন্ত্রী বলে,,,,,
— আমি মেয়েটিকে ভালোভাবে চিনি মহারাজ। আমাদের অনেক ভাম্পায়ারদের ড্রাগন কিং হত্যা করেছে মেয়েটির জন্য সেখানে আমি আর আপনার ছেলে রবিনও ছিলাম। (মন্ত্রী)
— তাহলে সব হলো এখন মেয়েটিকে যেভাবেই হোক নিয়ে আসতে হবে।(পিটাস)
ড্রাগন কিং কে কিভাবে শেষ করবে এই নিয়ে রাজসভায় আলোচনা চলছে।
____________________
— নীল তোমার আসল রূপে আসো তো একবার কতদিন হয়েছে তোমার ভয়ানক নেকড়ের রূপ দেখিনি…..(অনিমা)
— অনিমা তুই এখানে কি করছিস বাড়ি যা তোর।
কাজের বুয়া দেখলে জামেলা হবে।(নীল)
— দেখ নীল তোকে আমি অনেক ভালোবাসি আর তুই আমাকে পাওাই দেছ না।আমার কোনদিক দিয়ে কম আছে বল।(অনিমা)
— তোর সাথে এইসব নিয়ে পরে কথা বলবো প্লিজ অনিমা তুই এখান থেকে যা।(নীল)
অনিমা নীলের কোনো কথা শুনলো না।অনিমা নেকড়ের রূপ ধারণ করে নীলের ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো।
নীল এবার বাধ্য হয়ে নেকড়ের রূপ ধারণ করলো।
— অনিমা তোর জন্য যদি আমার এইখানে থাকা সমস্যা হয়ে পরে তাহলে দেখিস তোর কি হাল করি।(নীল)
— আচ্ছা তুই এমন কেন রে প্রথম যখন বলেছি তখন তো আমার কথা শুনিস নি।(অনিমা)
— দেখ আমার কাকা হিউগো একটা বাজে লোক।আমি ওই অভিশপ্ত রাজ্যে থাকতে চাইছি না।তাই শান্তির জন্য আমি মানুষের সাথে বসবাস করি।তুই কি আমার সে শান্তিও কেঁড়ে নিতে চাস।(নীল)
— দেখ তোর কাকা আমাকে পাঠিয়েছে তোকে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আছে সভায়।(অনিমা)
— আমি কিছুতেই যাব না। নিশ্চয়ই আবার করো ক্ষতি করার কল্পনা- জল্পনা করছে হিউগোর বাচ্চা। যদি আমার কাছে সুপার পাওয়ার থাকতো তাহলে হিউগোকে শেষ করে দিতাম?।কখন কার
ক্ষতি করবে এই নিয়ে পরে থাকে।রিদিয়ার খবর পেয়েছিস….(নীল)
— না রে এই মেয়েটা কখন কোথায় হারিয়ে যায়।একে খুঁজতে খুঁজতে আমার পুরো দিন শেষ।(অনিমা)
— হয়তো কোনো বিপদে ফেঁসে গেছে বেচারি। চল ওকে খুঁজে বের করি…(নীল)
নীল আর অনিমা রিদিয়াকে খুঁজতে বের হয়ে গেল।
_____________________
আকাশ আর মেঘলা কলেজের বাহিরে থাকা বেঞ্চে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।
— এখন কি হবে আকাশ রিদিয়াকে এত জায়গায় খুঁজলাম কোথাও পেলাম না।(মেঘলা)
— দুপুরে ওর বাড়িতে গেলাম আন্টি বললো আসেনি।ভয়েও বলিনি রিদিয়াকে যে পাচ্ছিনা।(আকাশ)
— আমাদেরই ভুল হয়েছে ওকে একা ছাড়া। আমরা তো নিজেদেরকে নিজেরা সুরক্ষিত করতে পারবো। কিন্তু ও তো সাধারণ মানুষ ও কিভাবে পারবে নিজেকে রক্ষা করতে।(মেঘলা)
— তুই বাড়িতে চলে যা আমি দেখছি কি করা যায়…..(আকাশ)
মেঘলা বসা থেকে ওঠে দু-তিন হাত সামনে গিয়ে হাঁটা থামিয়ে আবার পিছনে ফিরে তাকালো।
মেঘলা দৌঁড়ে এসে আকাশকে জড়িয়ে ধরলো।
হঠাৎ এমন হওয়াতে আকাশ ভয় পেয়ে গেল।
— কি হলো আমার ভাম্পায়ার রানী রক্ত খাওয়ার শখ জেগেছে নাকি?।(আকাশ)
মেঘলা লজ্জা পেয়ে সেখান থেকে চলে গেল।
_____________________
— আ……..আপনি এখানে কিভাবে আসলেন আপনি ওই ভাম্পায়ারদের সাথের ….(রিদিয়া)
— সেটা জেনে তুমি কি করবে জানপাখি…..
— একদম বাজে কথা বলবেন না আমায়…..(রিদিয়া)
— এখানে শুধু আমি আর তুমি আর কেউ নেই জানপাখি…
রবিনের মুখ থেকে জানপাখি শুনে রিদিয়ার রাগ ওঠে গেল।
— আমার মা আর বোনকে কি করেছেন আপনি?…(রিদিয়া)
— কিছু করিনি শুধু ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি।(রবিন)
— ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিস মানে কি করেছিস আমার মা বোনের সাথে…. (রিদিয়া)
বলেই রিদিয়া পাশে থাকা ফুলদানি হাতে নিয়ে রবিনের মাথায় আঘাত করলো।
রবিন ও ক্ষেপে গেল।
— ভেবেছিলাম তোকে মারবো না আমার রানী করবো। না এখন তোকে পুরো শেষ করে দিব।তোর রক্ত খেয়ে আমার পিপাসা মিটাবো?।(রবিন)
রিদিয়া ভয় পেয়ে গেল রবিনের কথায়।
রবিন এক পা এক পা করে সামনে এগোচ্ছে রিদিয়া পিছনে যাচ্ছে।
রবিন একটানে রিদিয়াকে নিজের কাছে নিয়ে আসলো। আর রিদিয়া চটপট করছে ছাড় পাওয়ার জন্য। রবিন রিদিয়ার ঘাড়ে দাঁত বসাতে যাবে তখনই কেউ রবিনের ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো।
চলবে……
#লেখনীতে__ফিহা