#Love_With_Dragon
#Episode_12,13
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]
12
— রাহুল তোমায় আমি যে দায়িত্ব দিয়েছি তুমি সে দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করনি কেন…(মাস্টার)
— কি হয়েছে মাস্টার আমি তো সব….(রাহুল)
— চুপ করো তুমি ড্রাগন রাজ্যে মানুষ কিভাবে প্রবেশ করলো।নিশ্চয়ই তাকে কেউ এখানে আসতে সাহায্য করছে। (মাস্টার)
— মাস্টার আপনার ভুল হচ্ছে এখানে কোনো মানুষ নেই…(রাহুল)
— আমার চোখ ফাঁকি দেওয়া এতো সহজ নয়। আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি কোনো মানুষ রাজ্যে প্রবেশ করেছে।কতবড় সাহস এত পাহারাদার থাকা সত্বেও কিভাবে কোনো সাধারণ মানুষ রাজ্যে প্রবেশ করে।(মাস্টার)
— মাস্টার…. (রাহুল)
— তোমার কোনো কথা আমি শুনতে চাইছি না।আমার কক্ষে পর্যন্ত সে প্রবেশ করেছে। তার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি।আমার কক্ষের সামনে এত কড়া পাহারাদার থাকা সত্বেও কিভাবে সম্ভব ভিতরে প্রবেশ করা।(মাস্টার)
রাহুল কি করবে বুঝতে পারছে না। রিদিয়াকে লুকিয়ে রেখেছে নিজের কক্ষে। মাস্টার যদি পুরো কক্ষটা দেখে তাহলে যে কি হবে মেয়েটার।
— আমি আলোচনা সভায় যাচ্ছি তুমি তাড়াতাড়ি আসো ।(মাস্টার)
— জ্বি মাস্টার…. (রাহুল)
মাস্টার রাগারাগি করে রাহুলের কক্ষ থেকে বের হয়ে গেল।
রাহুল রিদিয়াকে খাটের নিচে লুকিয়ে রেখেছে।
রাহুল খাটের নিচে মুখ দিয়ে দেখে রিদিয়া চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।
— বাহ্ এইটুকু সময়ে মেয়েটা কিভাবে ঘুমিয়ে গেল। মেয়েটা অদ্ভুত প্রকৃতির। মাস্টার যে বুঝতে পেরেছে মানুষ রাজ্যে প্রবেশ করেছে সেদিকে মেডামের কোনো খেয়ালই নেই। কি আরাম করে ঘুমাচ্ছে খাটের নিচে।(রাহুল)
রাহুল রিদিয়াকে খাটের নিচ থেকে বের করে খাটের ওপর শুইয়ে দিলো।রাহুল রিদিয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
— সত্যিই এই উজ্জ্বল শ্যামবর্নের মেয়েটা সাধারণ হলেও মেয়েটার ভিতর কাউকে মায়ার জড়িয়ে পেলার পাওয়ার আছে।যে কেউ তার মায়ায় পরতে বাধ্য। (রাহুল)
রাহুল রিদিয়ার মুখের কাছাকাছি নিজের মুখ আনল।রিদিয়ার কপালে চুম্বন দিতে গিয়ে আবার মুখ সরিয়ে নিল।
— এইসব কি করছিস তুই রাহুল। আমার ভাই তার শ্যামবতীকে আমার কাছে আমানত হিসেবে রেখেছে।আমি কি করে এর সুযোগ নিতে পারি।(রাহুল মনে মনে বলে)
((*ফ্ল্যাশব্যাক……?
রিদিয়াকে বাঁচাতে ভাম্পায়ারদের সাথে রোহিতের লড়াই হওয়ার পর রোহিত প্রচুর আঘাত পেয়েছিল।অতিরিক্ত আঘাতে রোহিত জ্ঞান হারিয়েছিল।রাহুল যখন রোহিতকে রাজ্যে নিয়ে যাচ্ছিল তখন রোহিতের কিছুসময়ের জন্য জ্ঞানে ফিরে এসেছিল।তখন রোহিত বলেছিল….
— ভাই আমি যতদিন অসুস্থ আমার শ্যামবতীকে তোর কাছে আমানত হিসেবে রাখছি।তুই আমার শ্যামবতীকে সবরকম বিপদ থেকে রক্ষা করিস। আমি আমার শ্যামবতীকে ভালোবাসি।আমার ভালোবাসাকে তুই দেখে রাখিস যতদিন আমি সুস্থ না হবো।(রোহিত)
বলেই রোহিত আবার অজ্ঞান হয়ে যায়।ভাইয়ের মুখ থেকে এসব শুনে রাহুল সেদিন অনেক কান্না করেছিল।সে ও যে তার ভাইয়ের শ্যামবতীকে মন দিয়ে ফেলেছে। রাহুল ইচ্ছে করলে রোহিতের থেকে রিদিয়াকে কেড়ে নিতে পারতো কিন্তু রাহুল তা করেনি।সে তার ভাইকে ভীষণ ভালোবাসে। ভাইয়ের জন্য রাহুল নিজের জীবন দিতে ও প্রস্তুত। সেখানে সে কিভাবে প্রতারণা করে।))
রাহুল কক্ষ থেকে বের হয়ে আলোচনা সভায় গেল।সবাই অপেক্ষা করছে মাস্টারের জন্য।
— আজব সবাইকে অপেক্ষা করতে বলে মাস্টারেরই এখন খবর নেই। (রাহুল)
__________________________
— কি করে সম্ভব হলো।আমার সব প্লানিং নষ্ট করে দিলো। কে করলো এই কাজটা। ম্যাজিকেল বুক থেকে আমি উনিশ নাম্বার পৃষ্ঠাটি ছিঁড়ে পেলেছিলাম।
রোহিতের যে বিপদ সেটা শুধু ওই মেয়ের দ্বারা সম্ভব রোহিতকে বিপদ থেকে উদ্ধার করা। কিন্তু কিভাবে রোহিতের জ্ঞান ফিরলো।তাহলে কি অন্য কোনো উপায় আছে।আমার উদ্দেশ্য রোহিতকে শেষ করা।এত কষ্ট করে সব ঠিক করেছিলাম।আজই রোহিতকে শেষ করে দিতাম।কি থেকে কি হয়ে গেল।তবে কেউ তো তাকে বাঁচিয়েছে।তবে কি ওই মেয়েটি আমাদের রাজ্যে আছে।ওই মেয়েই শুধু রোহিতকে বাঁচাতে পারে আর কেউ না।কারো হাতে পরার আগে ওই মেয়েকে আমার খুঁজে বের করতে হবে যে করেই হোক।ওই মেয়েকে আগে শেষ করতে হবে তারপর ড্রাগন কিংকে শেষ করে দিব।(মাস্টার)
নিজ কক্ষে এইসব বলছে আর চিন্তিত হয়ে পায়চারি করছে মাস্টার। তখন একজন রক্ষী আসলো মাস্টারের কক্ষে।
— মাস্টার সবাই আপনার জন্য রাজসভায়। অপেক্ষা করছে। (রক্ষী)
— সবাইকে বলে দেও চলে যেতে। আজকে আমার শরীরটা ভালো নেই। রোহিত সুস্থ হয়ে গেছে রাহুলকে খবরটা দিয়ে এসো।রাহুলকে আমার কক্ষে আসতে বলবে।(মাস্টার)
— আপনি যেমনটি বললেন মাস্টার। (রক্ষী)
রক্ষী চলে গেল রাজসভায়।
___________________
— মাস্টারের শরীর অসুস্থ তাই মাস্টার সবাইকে আজ চলে যেতে বললো। (রক্ষী)
রক্ষীর কথায় সবাই চলে গেল। রক্ষী রাহুলকে বললো মাস্টারের কক্ষে যেতে।রক্ষীর কথামতো রাহুল মাস্টারের কক্ষে গেল।
____________________
— আসবো মাস্টার…. (রাহুল)
— আসো…..(মাস্টার)
— কেন ডেকেছেন মাস্টার… (রাহুল)
— রোহিত কিছুটা সুস্থ হয়েছে ওকে ওর কক্ষে দিয়ে আসো।(মাস্টার)
রোহিতের সুস্থতার কথা শুনে খুশিতে রাহুল মাস্টারকে জড়িয়ে ধরলো।
মাস্টার রেগে গেল রাহুল জড়িয়ে ধরাতে।রেগে বলে ফেললো,,,,,
— এতে খুশি হওয়ার কি আছে রোহিতকে নিয়ে এখান থেকে যাও আর আমায় একা থাকতে দেও।(মাস্টার)
মাস্টারকে হঠাৎ রেগে যেতে দেখে রাহুল আশ্চর্য হলো।কারন মাস্টার এই প্রথম তার সাথে এমন রেগে কথা বলেছে।আগেও রেগে কথা বলেছিল কিন্তু এমনভাবে কোনোদিন বলেনি।
রাহুল কিছু না বলে রোহিতকে নিয়ে রোহিতের কক্ষে চলে গেল।
রোহিত এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি।এখন ঘুমিয়ে আছে। আরো কিছুদিন লাগবে সুস্থ হতে।রোহিতকে রেখে রাহুল নিজের কক্ষে গেল।
— পাগলিটা এখনো ঘুমাচ্ছে….. (রাহুল)
— এই পুচকি আর কতো ঘুমাবি উঠ। আমাদের হোয়াইট রোজ আনতে যেতে হবে।(ম্যাজিকেল আংটি)
মিট্টুর কথায় রিদিয়া নড়েচড়ে উঠলো।
— কি হলো কানের কাছে এমন বকবক করছো কেন একটু শান্তিতে ঘুমাতে দেও তো।(রিদিয়া)
রিদিয়াকে নিজে নিজে কথা বলতে দেখে রাহুল কিছুটা অবাক হলো।
— এই যে মিস আর কতো ঘুমাবেন উঠুন।আমাদের যেতে হবে।(রাহুল)
রিদিয়া উঠে বসলো।রিদিয়া রাহুলের দিকে তাকালো।রিদিয়ার চোখে চোখ পরতেই রাহুলের বুক ধুকপুক করা শুরু করলো। রাহুল চোখ সরিয়ে পেললো।
__________________________
রাহুল আর রিদিয়া চললো ড্রাগন রাজ্যের ম্যাজিকেল ফুলের বাগানের উদ্দেশ্যে…..
রাহুল ড্রাগন রূপে আকাশের দিকে পাখনা উড়িয়ে সামনে দিকে অগ্রসর হচ্ছে আর রিদিয়া রাহুলের পিঠে বসে সবকিছু উপভোগ করছে।রিদিয়া ওপর থেকে নিচে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেল।
— যদি আমি একবার পরে যাই তাহলে আমার শরীরের একটা হাড়গোড় আর থাকবে না।(রিদিয়া)
— তুৃমি নিচে তাকিও না ভয় পাবে।বেশি ভয় লাগলে আমায় শক্ত করে ধরে চোখ বন্ধ করে রাখ। (রাহুল)
কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা ম্যাজিকেল ফুলের বাগানের সামনে হাজির হলো।
রাহুল ওপর থেকে নিচে নামার সময় রিদিয়া অনেক ভয় পেয়ে যায়। ভয় পেয়ে রাহুলকে জড়িয়ে ধরে।
রিদিয়ার স্পর্শে রাহুল যেন থমকে গেলো।অনেক কষ্টে সে নিজেকে সামলে নিল।নিজেকে সামলে রাহুল বলে,,
— ভয় পেয়ো না আমি আছি তো।(রাহুল)
— আ…আসলে সরি ভাইয়া আমি বেশি ভয় পেয়ে এই কাজটা করেছি সরি….(রিদিয়া)
ভাইয়া শব্দটা রাহুলের ভালো লাগেনি।মন খারাপ হয়ে গেল রাহুলের। মন খারাপ করে বললো,,,,
— ইটস’ ওকে মিস’……(রাহুল)
রিদিয়া আর রাহুল ম্যাজিকেল ফুলের বাগানে প্রবেশ করলো।রিদিয়া বাগানে প্রবেশ করতেই আপনাআপনি মুখ হা হয়ে গেল।
— ওয়াও এত সুন্দর ফুলের বাগান আমি কোথাও দেখিনি।(রিদিয়া)
— চল হোয়াইট রোজ নিয়ে আসি।(রাহুল)
দুজন হোয়াইট রোজ গাছের সামনে গেল।রিদিয়া একটি রোজ নিতে যাবে তার আগেই রাহুল বাঁধা দিল।
— তুমি এইভাবে নিতে পারবে না৷ ফুলটি ম্যাজিকের সাহায্যে নিতে হবে। (রাহুল)
রিদিয়া সরে দাঁড়ালো। রাহুল মনে মনে একটি স্পেল পড়লো।সাথে সাথে একটি হোয়াইট রোজ রাহুলের হাতে চলে আসলো।
রিদিয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রাহুল রিদিয়ার হাতে হোয়াইট রোজটি দিল।রিদিয়া রোজটিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে।
— ওয়াও এত সুন্দর রোজ তাও আবার হোয়াইট আমার ফেভারিট কালার।অসম্ভব সুন্দর রোজটি।(রিদিয়া)
— এবার চল এখান থেকে তোমায় প্রাসাদে নয় সোজা বাড়িতে দিয়ে আসবো।(রাহুল)
— কিন্তু…. (রিদিয়া)
— কোনো কিন্তু নয় এখানে তোমার অনেক বিপদ। আমি চাই না তুমি কোনো বিপদে পরো।(রাহুল)
রিদিয়ার মন খারাপ হয়ে গেল রাহুলের কথায়।রিদিয়া চেয়েছিলে তার কিউট ড্রাগনকে আর একটি বার দেখতে। তা আর পূরন হলো না।রিদিয়া মন খারাপ করে বলে,,,
— আচ্ছা ঠিক আছে চলুন☹️…..(রিদিয়া)
চলবে…….
#লেখনীতে__ফিহা
#Love_With_Dragon
#Episode_13
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]
রাহুল রিদিয়াকে নিয়ে রিদিয়ার বাড়ি আসলো।
— তোমার আম্মু আর বোনের কাছে আমায় নিয়ে চলো।(রাহুল)
— চলুন….(রিদিয়া)
রিদিয়া গেস্ট রুমে নিয়ে গেল রাহুলকে।গেস্ট রুমে আগে থেকেই নীল-অনিমা,আকাশ-মেঘলা,আদর-স্পর্শিয়া বসে ছিল রিদিয়ার মা-বোনের পাশে।
রিদিয়াকে দেখে স্পর্শিয়া,মেঘলা ও অনিমা জড়িয়ে ধরে।
— দোস্ত তুই এসে গেছিস।কত চিন্তায় ছিলাম আমরা সবাই। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ তোকে সুস্থভাবে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। (মেঘলা)
— তোমাদের যত কথা আছে সব পরে বলবে এখন আমাকে…….. (রাহুল)
কথার মাঝে মিসেস মেহের কে রাহুল দেখে থমকে গেল।
— ফুপিমণি…… (রাহুল)
— কে আপনার ফুপি….(রিদিয়া)
— এই যে যিনি অজ্ঞান হয়ে আছেন।তুমি কি তাহলে ফুপিমণির মেয়ে….(রাহুল)
— আপনি কি বলছেন কিছুই বুঝতে পারছি না।(রিদিয়া)
— পরে বলবো বুঝিয়ে আগে ওদের জ্ঞান ফিরাতে হবে।(রাহুল)
রাহুল মিসেস মেহের আর মিহির মাথায় ম্যাজিকেল হোয়াইট রোজ স্পর্শ করালো।আস্তে আস্তে দুজন চোখ খুললো। মিসেস মেহের চোখ খুলতেই চমকে গেলেন।
অবাক হয়ে রাহুলের দিকে তাকিয়ে আছেন।
— রা…রাহুল তুই এখানে কি করছিস।(মিসেস মেহের)
সবাই অবাক হয়ে দুজনকে দেখছে।সবার মাথায় একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে ওরা কি দুজন দুজনকে আগে থেকেই চেনে।
মিসেস মেহের কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলেন।রাহুল টলমল চোখে মিসেস মেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে।
— ফুপিমণি বাবা – ভাইয়া আমি তোমায় অনেক খুঁজেছি কিন্তু পায়নি।তুমি কেন আমাদের ছেড়ে চলে আসলে। বাবা নিজের কাজের জন্য অনুতপ্ত ছিল।প্লিজ ফিরে চল রাজ্যে।(রাহুল)
— আম্মু কি বলছে এইসব ছোট রাজা।তোমাকে আজ সব বলতেই সব।প্লিজ আম্মু বলো।(রিদিয়া)
মিসেস মেহের কান্না করে দিলেন।
— আমি মেহের নই রিদিয়া।আমি ড্রাগন রাজ্যের রাজকুমারী লিনিয়া।তোর বাবা একজন সাধারণ মানুষ। তোর বাবা আর আমি দুজন দুজনকে ভালোবেসে বিয়ে করে ফেলি।একজন সাধারণ মানুষকে বিয়ে করাতে আমার ভাই আমাদের বিয়েটা মেনে নেয়নি। আমাকে আর তোর বাবাকে শাস্তি দিবে বলে ঠিক করে।পরে আমি তোর বাবাকে নিয়ে পালিয়ে চলে আসি এখানে। সবার থেকে দূরে যেন কেউ আমাদের আর না খুঁজে পায়।(মিসেস মেহের)
সবাই মিসেস মেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে।
— তার মানে আন্টি আপনি ড্রাগন কিং এর বোন। (অনিমা)
— হ্যাঁ অনিমা….।আমি তোমাদের ব্যাপারে সবকিছুই জানি।স্পর্শিয়া আর আমার মেয়ে রিদিয়া ছাড়া সবাই মনস্টার তোমরা। (মিসেস মেহের)
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মিসেস মেহেরের কথা শুনে।
— আপনি সব জানতেন আন্টি?….(অনিমা)
— হ্যাঁ আমি সব জানতাম। তোমরা আমার মেয়ের কোনো ক্ষতি চাওনি কোনোদিন।বরং ওকে সবসময় সাহায্য করে গেছ ওর পাশে থেকেছ।তাই আমি তোমাদের কোনোদিন এইসব নিয়ে কিছু বলিনি।(মিসেস মেহের)
— আন্টি মিহি আপু কি সাধারণ মানুষ…..(অনিমা)
— না মিহি আমার মতো মনস্টার আর রিদিয়া তার বাবার মতো হয়েছে।(মিসেস মেহের)
রিদিয়া চুপচাপ শুনে যাচ্ছে সব কথা। রিদিয়ার মন খারাপ হয়ে গেল। তার কাছে থেকে তার মা এত বড় সত্যি লুকিয়েছে। রিদিয়া গেস্ট রুম থেকে বের হয়ে ছাঁদে চলে গেল।ছাঁদে গিয়ে দরজা বন্ধ দিল।
— রিদিয়ার থেকে আমি সবসময় চেষ্টা করতাম এইসব কথা লুকিয়ে রাখতে।কিন্তু সেটা আর হলো না। সত্যিটা ঠিকই ওর সামনে প্রকাশ পেল।(মিসেস মেহের)
— আন্টি ও আমাদের সবার ব্যাপারে জানে।(মেঘলা)
— তোমাদের ব্যাপারে সব জানে ওর ভয় লাগেনি… (মিসেস মেহের)
— না আন্টি বরং ও রাগ করেছে জানার পর অনেক কষ্টে বুঝিয়েছি।আন্টি রিদিয়া এইসবে ভয় পায় না।বরং ও দুষ্টামি করে… (মেঘলা)
— রিদিয়া প্রচুর দুষ্ট এই মেয়েকে নিয়ে আর পারি না।রাহুল রোহিতের কি অবস্থা। (মিসেস মেহের)
রাহুল মিসেস মেহেরকে রোহিতের অসুস্থতার বিষয়ে সবকিছু জানালো।
মিসেস মেহের থমকে গেলেন সব শুনে।
— এত কিছু হয়ে গেল আর আমি কিছুই জানি না।(মিসেস মেহের)
— আন্টি রিদিয়া আমাদের ও কিছু বলেনি।(আকাশ)
— ফুপিমণি রিদিয়ার হাতে যে আংটিটা….(রাহুল)
— এই আংটিটা আমি আসার সময় সাথে করে নিয়ে এসেছি। কারন আমার স্বামী একজন সাধারণ মানুষ। ওনি নিজেকে কিভাবে রক্ষা করবেন নেকড়েদের কাছ থেকে।যদি কোনো নেকড়ে আক্রমণ করে।তাই আমি ওনাকে দিয়েছিলাম আংটিটা।আকষ্মিক ভাবে মৃত্যু হয় ওনার।তারপর রিদিয়ার হাতে আংটিটি দেই আমি যেন সে নেকড়েদের থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।(মিসেস মেহের)
— এখন আমি যাচ্ছি ফুপিমণি। মাস্টার যদি জানতে পারে অনেক সমস্যা হবে।(রাহুল)
রাহুল চলে গেল মিসেস মেহেরকে বিদায় জানিয়ে। যাওয়ার আগে রিদিয়াকে আড়ালে একবার দেখে গেছে।
(?? নেকড়ে রাজ্য ??)
— ড্রাগন রাজ্যের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা হোক কিং হিউগো। (মন্ত্রী)
— ঠিক বলেছ মন্ত্রী। এখন ড্রাগন কিং অসুস্থ এই সুযোগ যুদ্ধ ঘোষণা করা। তার আগে ওই সাধারণ মেয়েটাকে খুঁজে নিয়ে আসো। (হিউগো)
— কিং হিউগো আমার মনে হয় ভাম্পায়ার রাজা পিটাস এর সাথে এইসব নিয়ে কথা বললে ভালো হয়। (মন্ত্রী)
— ওর সাথে কথা হয়ে গেছে আমার। দুজন একসাথেই যাব যুদ্ধে।ড্রাগন রাজ্য জয় করে দুজন একসাথে রাজ্য পরিচালনা করবো।ভাম্পায়ার রাজার ছেলে রবিনকে নিয়ে যেও মেয়েটির খুঁজ করতে।(হিউগো)
— যথা আজ্ঞা মহারাজা…..(মন্ত্রী)
(?? ভাম্পায়ার রাজ্য ??)
— কিং পিটাস নেকড়ে কিং হিউগো আমায় পাঠিয়েছেন। আপনার ছেলে রবিনকে আমার সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য। (মন্ত্রী)
— মেয়েটি কোথায় থাকে আমার ছেলে ভালো করেই জানে।আশা করি খালি হাতে ফিরবে না।মেয়েটাকে নিয়ে আসতে না পারলে কঠিন শাস্তি পাবে।আমার ছেলেকেও আমি ছাড়ব না।পিটাস)
— আমরা মেয়েটিকে না নিয়ে ফিরব না কিং পিটাস।(মন্ত্রী)
________________________
— রিদিয়া মামনি দরজাটা খুল।তোর ভালোর জন্য কিছু বলিনি আমি।(মিসেস মেহের)
এত ডাকাডাকি করার পরও মেয়েটা দরজা খুলছে না।
— আন্টি ও যতটা না দুষ্ট তার চেয়ে ও অনেক রাগী(নীল)
— আমি দেখছি…. (আকাশ)
আকাশ ম্যাজিকের সাহায্যে দরজা খুলে পেললো।কিন্তু কেউ নেই ছাঁদে।
— আম্মু বোন তো নেই ছাঁদে। তাহলে ভিতর থেকে বন্ধ ছিল কিভাবে।বোনের কিছু হয়ে যায়নি তো আবার।(মিহি)
— আন্টি চিন্তা করবেন না। হয়ত কোথাও লুকিয়ে আছে আমাদের ভয় দেখাচ্ছে।(স্পর্শিয়া)
— কিন্তু এইটা কেমন ধরনের দুষ্টামি আমার মন অন্য কিছুর ইঙ্গিত করছে। আমার মেয়ের সাথে খারাপ কিছু হতে চলেছে।(মিসেস মেহের)
_________________________
— ছাড় আমাকে গুন্ডার বাচ্চা। না না কি বলে ফেললাম। ভাম্পায়ারের বাচ্চা ছাড় আমায়।(রিদিয়া)
— জানপাখি তোমার এতো তেজ কেন।আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার রাজ্যে তোমায় নিয়ে যাব।(রবিন)
— আমার কিং আমায় ঠিক বাঁচিয়ে নিবে দেখিস।ছাড় আমায় শয়তান।(রিদিয়া)
— তুমি নিজে বাঁচলে তো… (রবিন)
— কি বলতে চাইছিস তুই… (রিদিয়া)
— তুৃমি হলে আমাদের ড্রাগন কিং এর প্রাণভোমরা। তোমাকে দিয়ে কিংকে হত্যা করবো।তারপর তোমাকে মেরে ফেলবো।আরেকটা অপশন আছে তুমি যদি রাজি থাকো তাহলে……(রবিন)
রিদিয়া চটপট করছে ছাড় পাওয়ার জন্য। রবিন রিদিয়ার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে।রবিনের স্পর্শে রিদিয়ার ঘৃণা লাগছে। প্রচন্ড খারাপ লাগছে রিদিয়ার।কিছু করতেও পারছে না।
— আংটিটা কিছুক্ষণের জন্য খুলে রেখেছিল।তাহলে মিট্টু কোনো উপায় বলতো আমায়। এখন আমার কি হবে। আমি কি করে নিজেকে বাঁচাবো আর আমার কিং কে কিভাবে রক্ষা করবো।আমি তো একজন সাধারণ মানুষ।আর আমার দ্বারা কিং এর মৃত্যু কিভাবে সম্ভব এইটা………(রিদিয়া)
?________________________?
— ভাই আমার শ্যামবতী ঠিক আছে তোহ্।(রোহিত)
— হ্যাঁ ভাই সব ঠিক আছে তুই চিন্তা করিস না।মাস্টার বলেছে আর কিছুদিন বিশ্রাম নিতে।(মাস্টার)
— আমি সুস্থ হয়ে গেছি ভাই।আমার শ্যামবতীকে দেখতে চাই। (রোহিত)
তখনই একজন রক্ষী আসলো রোহিতের কক্ষে।
— কিং প্রতিবেশী রাজ্য থেকে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।দু’দিন পরই যুদ্ধ। (রক্ষী)
রোহিত যুদ্ধের কথা শুনে উওেজিত হয়ে গেল।
— কিহ্ কিং হিউগো আর পিটাস কেন জামেলা করতে চাইছে।মানছি ওদের সাথে আমাদের শএুতা। কিন্তু আমি চাই না এইসবে জড়াতে।(রোহিত)
— কিন্তু কিং ওরা মানবে না। ওরা জোর দিয়ে বলেছে যুদ্ধ হবেই।(রক্ষী)
— ভাম্পায়ার – নেকড়ে একসাথে হওয়াতে ওরা শক্তিশালী হয়ে গেছে।আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে।তুমি যাও সবাইকে প্রস্তুতি নিতে বলো যুদ্ধের জন্য। (রোহিত)
রক্ষী চলে গেল।
— ভাই তুই অসুস্থ। এখন এইসব জামেলায় তোর থাকার দরকার নাই।যা করার আমি করবো।ভাই মাস্টারের ব্যাপারে রিদিয়া আমায় সব বলেছে।রিদিয়ার কথা মতো মাস্টার আমাদের শএু। কিন্তু কোনো প্রমান ছাড়া কিছুই করতে পারছি না।(রাহুল)
— মাস্টারের ওপর নজর রাখ।রিদিয়া দুষ্ট হতে পারে কিন্তু মিথ্যা বলবে না। (রোহিত)
— ঠিক আছে ভাই।(রাহুল)
চলবে………
#লেখনীতে__ফিহা