#Love_With_Dragon
#Episode_23[End](২য়_খন্ড)
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]
— বিয়া যে কত্ত মজা খালি খাওন আর খাওন।
পিছন থেকে মেয়েলি কন্ঠ শুনে তিনজন পিছনে তাকালো। পিছনে তাকাতেই তিনজন একসাথে ব্রু কুঁচকে একজন আরেকজনের দিকে তাকায়। আদর নীলের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,,,
— কাহিনী কি বল তো নীল জোহরা মেম এখানে কি করছে এই ডাইনী নিশ্চয়ই ঝামেলা লাগাতে এখানে এসেছে। (আদর)
— আগে দেখ কি হয়।(নীল)
— তোমরা কানে মুখে কি ফিসফিস করছো।জোরে বলো আমি ও শুনি একটু। (জোহরা)
আকাশ ঠাট্টা করে বলে,,,
— তা মেম আপনি কি সারাজীবন সিঙ্গেলই থাকবেন। (আকাশ)
— যাকে ভালোবেসেছি তাকে যেহেতু পাব না তাই ঠিক করেছি সারাজীবন সিঙ্গেল কাটিয়ে দিব।যাক এইসব বাদ দেও তোমাদের হবু বউয়েরা কোথায় ওদের দেখতে পাচ্ছি না যে…(জোহরা)
— এইতো মেম আমরা আপনার পিছনেই আছি।
— ওহ্ ভালোই হলো এসেছ চলো সবাই মিলে একসাথে আড্ডা দেওয়া যাক। (জোহরা)
— আমাদের ফেলে আড্ডা দিতে বসে গেলে…..
— আরে রোহিত – রাহুল, মিহি-রিদিয়া তোমরা আসো একসাথে গল্প করি। (জোহরা)
[রোহিত রাহুল আর মিহিকে বাড়ি থেকে রাজ্যে নিয়ে আসল।মাস্টার যে একসাথে সবার বিয়ে দিবে সেসব জানাল রোহিত রাহুলকে]
রাত বারোটা পর্যন্ত সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিল।আড্ডার মাঝে জোহরা ছাড়া সবগুলো মেয়ে ঘুমিয়ে গেলো। সবাই সবার হবু বউদের কোলে তুলে নিয়ে কক্ষে শুইয়ে দিল।
__________________________
দেখতে দেখতে সকাল হয়ে গেল। মিসেস মেহের সবার কক্ষে গিয়ে সবাইকে ঘুম থেকে ওঠালো।
স্পর্শিয়া,মিহি,মেঘলা,অনিমা,রিদিয়াকে একটা বিশাল কক্ষে নিয়ে আসা হলো সাজানোর জন্য। সবাইকে এক কালারের লেহেঙ্গা পরানো হলো।মিসেস মেহের মানা করেছিলেন এক কালারের লেহেঙ্গা না পরতে। কিন্তু সবাই মানা করলো বললো এক কালারের লেহেঙ্গা পরবে তারা। মিসেস মেহের আর কিছু না বলে সবগুলোর কান মলে দিয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে গেলেন।
___________________________
মাস্টার আদর,নীল,আকাশ,রোহিত,রাহুলকে নিজ হাতে সেরোয়ানি পড়াচ্ছেন। কিন্তু এরা একজন এক কালারের সেরোয়ানি পরেছে।
____________________________
ছেলেরা আগে থেকেই তাদের হবু বউদের জন্য অপেক্ষা করছে।
— কিরে এখনো আসছেনা কেন আর কত অপেক্ষা করবো ?….(নীল)
— আমার তো তর সইছে না ভাই। (আকাশ)
— আর আমার কপাল দেখ দ্বিতীয়বার বিয়ে করছি?।(আদর)
রোহিত আর রাহুল তিনজনের কথায় হেসে দিলো। কিন্তু কিছু বললো না।
— বধূরা আসছে যে?,,,,,,,(নীল)
নীলের কথায় সবাই সামনে তাকালো।সকলের মুখ আপনাআপনি হা হয়ে গেল সামনে তাকাতেই । পাঁচ জনকেই অসম্ভব সুন্দর লাগছে । কেউ কারো থেকে কম যাচ্ছে না।সবাই ব্লাক কালারের লেহেঙ্গা পড়েছে।
ওদের থেকে চোখ সরানোই যাচ্ছে না। পাঁচজন নিচে নামতেই তাদের হবু বরেরা তাদের সামনে হাত এগিয়ে দিল । তারা যার যার হবুবরের হাত ধরলো।তারপর আংটি বদল হলো বিয়ে সম্পন্ন হলো।
____________________________
সবাই ব্লাক কালার লেহেঙ্গা পরাতে এখন পিছন দিক থেকে কে কার বউ কেউই বুঝতে পারছে না।
— ভাই আমার বউ কোনটা ?…(নীল)
— ভাই আমিও বুঝতে পারছি না। আমার বউ কোনটা…. ?…(আকাশ)
— ফুলসজ্জার সময় তো পেরিয়ে যাচ্ছে ভাই ?….(আদর)
— এরা ইচ্ছে করে এমনটা করেছে আমাদের হয়রানি করার জন্য ?….(রোহিত)
— আমার কাছে একটা আইডিয়া আছে…(রাহুল)
— তাড়াতাড়ি বলে পেল না হয় সারারাত এইভাবে থাকতে হবে।(রোহিত)
— (………………………….)…(রোহিত)
— এই ব্যাপার আগে বললে কি হতো। আগে বললে তো এতক্ষণ ফুলসজ্জা ও সেরে যেত..?….(নীল)
রাহুল, রোহিত,নীল,আকাশ, আদর ডান দিকে গিয়ে ছয় -সাতটা মেয়ের কাছে দাঁড়ালো।
— কেমন আছো সোনামণিরা…☺️…(নীল)
নীল ইচ্ছে করে জোরে বলেছে যেন ওনাদের বউয়েরা শুনতে পায়।
মেয়েগুলো ওদের দেখে খুশিতে গদগদ হয়ে উঠলো। মেয়েগুলো তাদের কানের পাশে তাদের ছোট চুলগুলো গুঁজে দিয়ে লজ্জা লজ্জা ভাব নিচ্ছে।
— আহা সুইটহার্টরা কথা বলো…. (আকাশ)
এইদিকে ওনাদের বউরা এইসব দেখে রেগে ওনাদের সেরোয়ানির কলার ধরে টেনে রুমে নিয়ে গেল।
____________________________
অনিমা নীলের পেটের ওপর বসে আছে।
— “আরে কি করছো অনিমা আমাকে মেরে ফেলবে নাকি ওঠো আমার ওপর থেকে”।(নীল)
— “সোনামণি বলা হচ্ছে না দারা আজকে তোর হচ্ছে”….(অনিমা)
বলে অনিমা নীলের বুকে কামড়াতে লাগল।
— “আর বলবো না ছাড় আমার ব্যাথা লাগছে”?…(নীল)
— “মনে থাকবে তো৷ যদি এইসব আর করতে দেখেছি তাহলে দেখিস কি হাল করি তোর”…(অনিমা)
— “ঠিক আছে বউ আর এমন করবো না। তোমরা এক কালারের লেহেঙ্গা পরে আছো কে কোনটা বুঝতে পারছি না পিছন থেকে।আর আমাদের এড়িয়ে চলছো তোমরা তাই বাধ্য হয়ে এমনটা করেছি।এখন এইসব বাদ দাও আমার বুকে আসো বউ”….?…।(নীল)
অনিমা লজ্জা পেল নীলের কথায়।আসলে তারা ইচ্ছে করেই তাদের বরদের হয়রানি করেছে। নীল অনিমাকে বুকে টেনে নিল।তারপর নীল চোখ বন্ধ করে একটা স্পেল পড়লো সাথে সাথে একটা গিফট বক্স চলে আসল তাদের সামনে ।
— “অনিমা এইটা তোমার জন্য”। (নীল)
— “কি আছে এটাতে”।(অনিমা)
— “খুলে দেখ”….(নীল)
গিফট বক্স খুলতেই অনিমার রাগ ওঠে গেল।
— “এইটা কি নীল….তুমি আমায় বাসর রাতে পটেটো গিফট করলে”….?…(অনিমা)
— “এটাকে পেটেটো বলছো এইটা সাধারন পটেটো না”?…(নীল)
— “মজা করছো আমার সাথে?”…(অনিমা)
— “তুমি পটেটোর দিকে তাকিয়ে মনে মনে যা চাইবে তাই পাবে”।(নীল)
অনিমা পটেটোটির দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে মনে মনে কিছু বললো সাথে সাথে নীলের মতো দেখতে আরেকটা নকল নীল সামনে চলে আসলো।অনিমা চোখ বড় বড় করে নকল নীলের দিকে তাকিয়ে আছে ।
— “এইসব কি অনিমা তুমি এত কিছু থাকতে আমার মতো দেখতে আরেকজন চাইলে?”….(নীল)
— “বউকে তার বরের মতো না হলে চলে বলো। যেমন বরের তেমন বউ”?… (অনিমা)
বলে অনিমা নীলের বুকে মাথা রাখলো।
___________________________
— “কি হলো বউ কথা বলছো না কেন বললাম তো সরি আর কোনোদিন কোনো মেয়েকে সুইটহার্ট বলবো না প্লিজ কথা বলো বউ”?…..(আকাশ)
মেঘলা কিছু না বলে চুপ করে অন্যদিকে মুখ করে রেখেছে। আকাশ মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে আবার সরি বললো।
— “মনে থাকবে তো”…. (মেঘলা)
— “থাকবে জীবনে ও এই কথা কাউকে বলবো না”।(আকাশ)
আকাশ মেঘলাকে একটি গিফট বক্স দিল।মেঘলা গিফট বক্স খুলে ভীষণ খুশি হলো।বক্সটিতে রুপার নুপুর, গ্রিন কালার শাড়ি সাথে মেচিং করা সবকিছু রয়েছে। মেঘলা খুশি হয়ে আকাশকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,
— “লাভ ইউ জামাই”…(মেঘলা)
____________________________
— “আরে পাখি রাগ করে আছো কেন আমি তো ওই মেয়েদের কিছু বলিনি”…(আদর)
— “বলোনি তো কি হয়েছে ছিলে তো ওদের সাথে”। (স্পর্শিয়া)
— “মাপ করে দেওয়া যায় না। আজ একটা স্পেশাল রাত কেউ এইভাবে রাতটাকে নষ্ট করে দেয়”।(আদর)
বলেই একটু মন খারাপের অভিনয় করে সেখান থেকে চলে যেতে নিবে পিছন থেকে স্পর্শিয়া জড়িয়ে ধরে বলে….
— “যাও মাপ করে দিলাম”।(স্পর্শিয়া)
— “লাভ ইউ মাই সুইটহার্ট”। (আদর)
আদর স্পর্শিয়াকে একটি ম্যাজিকেল আংটি গিফট করলো।
— “তোমার যখন কোনো বিপদ আসবে তখন এই আংটির কাছে সাহায্য চাইবে”। (আদর)
স্পর্শিয়া মুচকি হয়ে আদরের বুকে মাথা রাখলো।
______________________________
রাহুল মিহিকে জড়িয়ে ধরে বসে আছে।
— “ইরাকে নিয়ে আসলে কি হতো। বাচ্চা মেয়েটা ভয় পাবে একা একা”।(মিহি)
— “আজকে তো আমাদের ফুলসজ্জা এখানে মেয়েকে আনা কি ঠিক হবে।আর ফুপিমণি সামলে নিচ্ছে ইরাকে তুমি চিন্তা করো না”।(রাহুল)
— “একটা সিক্রেট জানো”…(মিহি)
— “কি”…. (রাহুল)
— “আমাদের রিদিয়াকে যে ম্যাজিকম্যান বাঁচিয়েছিল সে কে জানো”…(মিহি)
— “ওহ্ এই ব্যাপার ওইটা আকাশ ছিল?….।ভাই আকাশকে বলে রেখেছিল রিদিয়াকে দেখে দেখে রাখতে।কিন্তু রিদিয়ার কাছে আজ ও এইসব অজানা।অবশ্য ভাই মানা করেছিল না বলতে”।(রাহুল)
রাহুল মিহিকে একটি ম্যাজিকেল ডায়েরি গিফট করলো।
— “এই ডায়েরিতে তুমি যা লিখবে সাথে সাথে তাই ঘটবে “। (রাহুল)
রাহুল রিদিয়াকে ভুলে গিয়ে মিহির সাথে আবার নতুন করে সব শুরু করবে বলে ঠিক করেছে। রাহুল মিহির মাথা নিজের বুকের ওপর রাখলো।
_____________________________
রিদিয়া রোহিতের বুকে মাথা রেখে বলে,,,,
— “স্যার আমার একটা কথা রাখবেন”..?..(রিদিয়া)
— “বল শ্যামবতী”….?…(রোহিত)
— “আপনার পিঠে বসে পুরো মনস্টার ওয়ার্ল্ড ঘুরে দেখতে চাই”…?….(রিদিয়া)
— “শুধু এইটুকু ঠিক আছে “MY BRUNETTE” (আমার শ্যামবতী)
রোহিত রিদিয়াকে চোখ বন্ধ করতে বললো।
— “চোখ খুলবে না কিন্তু”… (রোহিত)
— “ঠিক আছে”….(রিদিয়া)
— “চোখ খুলো এইবার”..(রোহিত)
চোখ খুলতেই রিদিয়া অবাক হলো।
— “ও..য়া..ও এইটা কি স্মল হোয়াইট ড্রাগন”… (রিদিয়া)
— “হ্যাঁ এই হোয়াইট স্মল ড্রাগনটি তোমার জন্য”।(রোহিত)
— “ধন্যবাদ ধন্যবাদ ধন্যবাদ এওগুলো ধন্যবাদ আপনাকে। কত সুন্দর ড্রাগনটি তাও আবার হোয়াইট আমার খুব পছন্দ হয়েছে। এবার আমাকে মনস্টার ওয়ার্ল্ড ঘুরিয়ে দেখান”।(রিদিয়া)
রোহিত রিদিয়াকে প্রাসাদের বাহিরে নিয়ে আসল।রোহিত ড্রাগন রূপে আসলো।রিদিয়া খুশি খুশি তার হোয়াইট ড্রাগনের পিঠে ওঠে বসলো। রোহিত তার পাখা ঝাপটে আকাশে উড়াল দিল। রিদিয়া ভালো করে রোহিতের পিঠে বসে তার দুই হাত দুই দিকে মেলে ধরে চিৎকার করে বললো,,,,,,,,
— ” I Love U My Cute Dragon “…. ?…..
— ” I Love U Too My Brunette “…. ?…..
~ সমাপ্ত …… ?