Mr. Devil
Part 05,06,07
Writer: Aruhi khan
Part 05
আজ পুরো অফিসটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে
চারদিকে বেলুন, ওয়েলকাম ব্যানার,স্ট্রিমার দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজানো
আর সফ্ট মিউজিকটা যেন পার্টির শোভা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে
সানা: ডেকোরেশন টা সত্যিই সুন্দর হয়েছে তাই না রে?
রশ্নি: হুম অনেক সুন্দর
সানা: জানি না আজ কি সারপ্রাইজ পেতে চলেছি আমরা সবাই
রশ্নি: হুম আমার তো খুবই এক্সাইটেড লাগছে
সানা: আমারও একই অবস্থা
রশ্নি: ?
সানা: দোস্ত দেখ ম্যানেজার স্যার স্টেজে তাও আবার হাতে মাইক নিয়ে
রশ্নি: কেউ এই হাতিরে স্টেজ থেকে নামা মনে হইতাছে এখনই স্টেজটা ভাইঙ্গা পড়বো আর হাতে মাইক কেন হাতিটার? গান টান গাইবো নাকি
দোস্ত দেখ আমি বেট লাগায়া বলতে পারুম জিয়ান এর থেকে ভালো গান গায় আর আমি এর গা,,,,,
সানা: বইন আমার একটু থাম
রিলেক্স নিঃশ্বাস নে
এত কথা একসাথে কিভাবে বলা ইয়ার
তখনই মিস্টার হাতিম মাইকে কিছু বলে উঠলেন
মিস্টার হাতিম: গুড ইভিনিং এভরিওয়ান
আশা করি সবাই ভালো আছেন
যাক বেশি কথা বলবো না তো মূল কথায় আসি
আজকের এই বিশেষ সন্ধ্যা টা যার জন্য আয়োজিত
যিনি এত বছর এই দেশে না থেকেও এই বিজনেসটাকে খুব ভালো ভাবে পরিচালিত করেছেন তাকে স্টেজে ডেকে নিতে চাই
সো গাইজ আপনাদের অপেক্ষার পালা এবার শেষ হলো
আপনারা যারা জানতে চাচ্ছিলেন কে আমাদের অফিসের বস সো এখন আমরা তাকে স্টেজে আসার অকুল আবেদন জানছি
ওয়েলকাম দা ওনার অফ মায়াবতী
মিস্টার ইয়াশ আহমেদ
সবাই একসাথে হাত তালি দিয়ে উঠলো
সবার সামনে একটা লোক স্টেজে উঠে আসলো
বয়স ২৭-২৮ এর মত হবে
গায়ের রং ধবধবে ফর্সা, হাইট ৬ ফুট, চুল গুলো স্পাইক করে এক সাইডে সেট করা, কানে কালো টপ,
পরনে সাদা প্যান্ট, সাদা কোর্ট, কালো শার্ট
আর মুখে একটা বাঁকা হাসি
সব মেয়েরা হা করে তাকিয়ে আছে
সানা: দোস্ত দেখ পুরাই আগুন
রশ্নি: মাম্মা কস কি? কই আগুন? আল্লাহ আগুন লাগলো আবার কই
দোস্ত ভয় লাগতাসে চল দৌড় দেই
সানা: চুপ থাক গাধী, আমি ঐ আগুন না এই আগুনের কথা বলছি
রশ্নি: কোন আগুন
সানা:দেখ (বলেই রশ্নি মুখটা স্টেজের দিকে ঘুরিয়ে দিলো)
রশ্নি কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে সানার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো
রশ্নি: কি অবস্থা দেখসস? পোলারাও আজকাল কানে টপ পইড়া ঘুরে
কি যুগ যে আইল
সানা: ধ্যাত তুই যে কি বলস না
এটা তো আজকালকার ফ্যাশন
রশ্নি: আজাইরা ফ্যাশন, আর রং দেখ কি ফর্সা
পুরাই বিদেশি ব্যাঙ, আর চুলের অবস্থা দেখ
কেমনে দাঁড়ায় আছে চুল গুলা, মনে হয় মাথায় ঠাডা পড়ছে
সানা: বইন তুই মহান, পোলাটারে পুরাই পচায় দিলি
রশ্নি: হুহ এই নাকি আবার আমাদের মায়াবতীর বস
ভাবা যায়
সানা:?
রশ্নি: আর এক মিনিট উনাকে তো আমি আগেও দেখেছি
সানা: মানে? কোথায়?
রশ্নি: মানে অফিসেই দেখেছিলাম
সকালে তোকে বলেছিলাম না আমি ভুলে একজনের উপর কফি ফেলে দিয়েছিলাম
সানা: হুম
রশ্নি: এই লোকটাই সে যার উপর কফি ফেলেছিলাম
সানা: আইলা, তুই বসের ফার্স্ট ডে তে তার উপর গরম কফি ফেলে তাকে স্বাগতম করলি, বাহ
রশ্নি: আরেহ আমি কি ইচ্ছে করে ফেলেছিলাম নাকি
মিস্টার হাতিম আবার বলা শুরু করলেন
মিস্টার হাতিম: সো গাইজ ইনি হলেন আমাদের মায়াবতীর ওনার এবং আমাদের সবার সিক্রেট বস ইয়াশ আহমেদ
আমি চাইবো এখন মিস্টার আহমেদ যেন কিছু বলেন
এই বলে তিনি ইয়াশ আহমেদ এর হাতে মাইক দিয়ে স্টেজ থেকে নেমে আসলেন
ইয়াশ: গুড ইভিনিং এভরিওয়ান, কেমন আছেন সবাই
সবার প্রথমে আমি অফিসের সব স্টাফদের ধন্যবাদ জানাতে চাই কারন আপনারা না থাকলে আজ আমাদের এই ভালোবাসার মায়াবতীটি এশিয়ার নাম্বার ওয়ান পজিশন এ আসতে পারতো না
তাই ধন্যবাদ সকলকে
এবং ধন্যবাদ আমাকে সুন্দর ভাবে স্বাগতম জানানোর জন্য
সবাই একসাথে হাত তালি দিয়ে উঠলো
তারপর ইয়াশ স্টেজ থেকে নেমে আসলো
আর কিছু পারফরম্যান্স আর স্পিচও হলো
যে যার মতো ইনজয় করছে
কেও খাচ্ছে তো কেও ডান্স করছে আবার অনেকে ছবি তুলছে
রশ্নি আর সানা ফুড কর্নারে দাঁড়িয়ে খাচ্ছে আর নানান রকম কথা বলে হাসাহাসি করছে
সানা: দোস্ত তোরে তো আজ পুরাই জোস লাগতাছেড়ে বাট শাড়িটা কেমনে পড়লি
রশ্নি: আরেহ আর বলিস না
সেই সকাল ৫ টা বাজে উইঠা ইউটিউবে এত্তগুলা শাড়ি পড়ার টিউটোরিয়াল দেইখা তারপর পড়লাম
সানা: একটি মেয়ের শাড়ি পড়ার সাহসী গল্প?
রশ্নি: হাসিস না কুত্তি
সানা: দোস্ত তুই একটু দারা আমি আসতেছি
রশ্নি: আবার কই যাস, আচ্ছা তাড়াতাড়ি আয়
সানা যাওয়ার পর রশ্নি নিজের মতো দাঁড়িয়ে খাচ্ছিল
বাট হঠাৎ কে যেন তার মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে সবার থেকে আড়ালে নিয়ে আসলো
হঠাৎ এমন একটা ঘটনায় রশ্নি পুরো চমকে উঠলো
তার মুখের থেকে হাত টা সরে আসলো
রশ্নি জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে সে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল
সে তার সামনের বেক্তিটাকে দেখে আরো অবাক হয়
কারন সামনে আর কেও না আমাদের #Mr_Devil ইয়াশ আহমেদ
রশ্নি: স্যার আপনি আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেন
ইয়াশ: বাহ বাহ ডেভিল,মনস্টার,ডাইনোসর থেকে ডাইরেক্ট স্যার?
ভালোই বাট উন্নতিটা কার হয়েছে হয়েছে ঠিক বুঝলাম না
আমার নাকি আপনার(বাঁকা হাসি দিয়ে)
রশ্নি: আপনি আমাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন সেটা বলুন
ইয়াশ আচমকায় রশ্নির কোমরে এক হাত রাখলো
আর অন্য হাত দিয়ে রশনির মুখে এসে পড়ে থাকা চুল গুলো কানের পিছনে গুঁজে দিচ্ছে আর ধীরে তার মুখের দিকে আসছে
রশ্নি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ইয়াশের দিকে
আর সে এগিয়েই আসছে
যেই না ইয়াশ, রশ্নিকে কিস করতে যাবে তার আগেই রশ্নি ইয়াশকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল
রশ্নি: কি করছেনটা কি আপনি
হঠাৎ ইয়াশ এসে রশ্নির চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে তার মুখটা উঁচু করে তার ঠোটে কিস করতে শুরু করলো
রশ্নি চোখ বড় বড় করে দাঁড়িয়ে আছে সে একটু নরতেও পারছে না
ইয়াশ এমন ভাবে কিস করছে যেন কত বছরের তৃপ্তি মেটাচ্ছে
প্রায় পাঁচ মিনিট হয়ে গিয়েছে কিন্তু সে এখন ছাড়ছে না
রশ্নি নড়াচড়া করা বন্ধ করে দিয়েছে
তাই ইয়াশ এখন হালকা করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে
এই সুযোগে রশ্নি ইয়াশকে ধাক্কা নিজের থেকে সরিয়ে টাশ করে তার গালে বসিয়ে দিল
আর ইয়াশ গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
রশ্নি: কি মনে করেনটা কি আপনি নিজেকে? এই অফিসের বস বলে যা খুশি তাই করবেন? আমাদের কি নিজের হাতের পুতুল পেয়েছেন নাকি?
আজ আপনার এই রূপ টা না দেখলে হয়তো জানতামই না জানোয়ার রা মানুষের রূপ নিয়েও ঘুরে
বলেই রশ্নি সেখান থেকে চলে আসতে নিলো
কিন্তু ইয়াশ তার হাত ধরে আটকে নিলো
রশ্নিকে তার কাছে নিয়ে এসে চোখে চোখ রেখে বললো
ইয়াশ: আজ পর্যন্ত কেও এই ইয়াশ আহমেদ এর গায় হাত তুলার সাহস পায়নি আর তোমার মতো একটা ক্লাসলেস চিপ মেয়ে কিনা আমাকে থাপ্পড় মারলো ইয়াশ আহমেদ দা নাম্বার ওয়ান বিজনেস ম্যান অফ এশিয়া
তার গায়ে হাত তুললো তোমার মত একটা মেয়ে
মনে রেখো তোমার এই থাপ্পড় এর জবাব তুমি প্রত্যেকটা সেকেন্ডে সেকেন্ডে পাবে
এটা মাথায় রেখো,, ছাড়বো না তোমায়
বলেই ইয়াশ সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ল
তাকে পুরো আহত বাঘের মতো লাগছিলো
পুরো মুখ অসম্ভব লাল হয়ে ছিল
যে কেউ এই অবস্থায় ইয়াশকে দেখলে ভয় পেয়ে যাবে
রশ্নিও সেখান থেকে বেরিয়ে আসলো
কোথায় না তাকিয়ে ডাইরেক্ট বাসার জন্য রওনা দিলো রশ্নি এবং ইয়াশ
চলবে,,,
Mr. Devil
Part_06
Aruhi khan
রাত 12:17am
একটা মানুষ কতটা জঘন্য হলে একটা অচেনা অজানা মেয়ের সাথে এমন আচরণ করতে পারে
জাস্ট ভাবতে পারছি না
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে এসব ভাবছিল রশ্নি তখনই তার মনে হলো কে যেন তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো
এই স্পর্শটা তার অচেনা নয়
রশ্নি: তোমাকে কত বার বলেছি নাহিদ, এভাবে হঠাৎ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরবে না (পিছনে ঘুরে)
নাহিদ: আচ্ছা সরি, এবার বলো আজকে ফিরতে এত লেইট হলো কেন
রশ্নি: আজকে অফিসে একটা সারপ্রাইজ পার্টি ছিল তাই
নাহিদ: ওহ আচ্ছা
রশ্নি: হুম
নাহিদ: ভালোবাসি (হঠাৎ)
রশ্নি: সারাদিন অফিসে ডেকোরেশন জন্য অনেক কাজ করতে হয়েছে তাই খুব টায়ার্ড লাগছে, আসি
রশ্নি নাহিদের পাশ কাটিয়ে তার রুমে চলে গেল
বাসায় এসে মেইন গেইট টা খোলা দেখে কিছুটা অবাক হলো ইয়াশ
বেশি কিছু না ভেবে ভিতরে ঢুকলো ইয়াশ
ভিতরে প্রবেশ করে দেখে পুরো বাড়িটা অন্ধকার
ইয়াশ লাইট অন করে দেখে তার পাশের টি টেবিলটার উপরে একটা ছোট কাগজের টুকর ভাঁজ করে রাখা
ইয়াশ কাগজ টা খুলে দেখে
সেটাই লিখা: উপরে এসো, তোমার অপেক্ষায় আছি।
ইয়াশ এর কেমন যেন একটা সন্দেহ হচ্ছে
ইয়াশ: ভাবি তো বলে ছিল আজ ভাইয়াকে নিয়ে বাহিরে যাবে সো এটা ভাইয়ার জন্য তো না, তাহলে কার জন্য
সে আর বেশি কিছু না ভেবে উপরে চলে গেল
উপরে গিয়ে দেখে তার রুমের দরজা টা হালকা খোলা
ইয়াশ রুমে প্রবেশ করে লাইটটা অন করলো আর সাথে সাথে তার চোখ যেন চড়ক গাছ
কারন সারা রুম লাভ শেইপ এর লাল আর সাদা বেলুন এবং ছোট ছোট মম বাতি দিয়ে ভরা
আর রোমান্টিক গান ও চলছে লো ভলিউমে
সব মিলিয়ে পরিবেশটা খুব রোম্যান্টিক লাগছে
ইয়াশ পুরো রুমটা দেখছিল ঠিক তখনই কে যেনো রুমের দরজা টা খুব জোরে বন্ধ করে দিল
দরজা টা কে লাগালো তা দেখার জন্য দরজার দিকে তাকাতেই ইয়াশের মাথা গরম হয়ে গেল সাথে অবাকও হলো
ইয়াশ: এ কি নেহা তুমি এখানে কেন? বাসায় কখন এসেছ, আর আমার রুমেই বা কি করছো? আর দরজা তা লাগলে কেন, এসব ডেকোরেশন কি তুমি করেছ?
নেহা: আরেহ আরেহ নিঃশ্বাস নাও, এত গুলো প্রশ্ন কেও একসাথে করে নাকি,
আর আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি নাকি এখন থেকে? তুমি যখন খুশি যত্ত খুশি কোয়েশ্চেন কোরো, কেমন।
ইয়াশ: আগে আমার প্রশ্ন গুলোর উত্তর দাও
নেহা: হুমমম, সো মিস্টার চার্ম, আমি আজ সকালে এখানে এসেছি আর হ্যাঁ তোমার রুমের ডেকোরেশনও আমিই করেছি
ইয়াশ: কেন? তোমাকে এসব ফালতু কে করতে বলেছিল? আর তুমি এখানে কত দিনের জন্য আছো?
নেহা: আমার এত কষ্টে করা ডেকোরেশন তোমার ফালতু লাগছে? আর আমি আজই তো মাত্র এলাম আর এখনই যাওয়ার কথা বলছো
ইয়াশ: এত নেকমি না করে যা জিগ্গেস করেছি তার সোজা সোজা উত্তর দাও তো আমার মাথা টা আর খেও না প্লিজ
নেহা: আরেহ আরেহ তুমি এত হাইপার হচ্ছ কেন
সো ইয়াশ বেইবি শুনে রাখো এবার আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত আমি এখানেই থেকে স্টাডি করবো কারন তোমাদের বাসা থেকে আনার ভার্সিটি খুব কাছে
ইয়াশ: হোয়াট,,,,,,
নেহা: উফ এতে এতটা অবাক হওয়ার কি আছে? আমি জানি তো তুমি অনেক খুশি হয়েছ এই নিউজ টা শুনে (৩২ টা দাঁত বের করে হাসি দিয়ে)
ইয়াশ: খুশি না ছাই ধ্যাৎ এই নেকমির বস্তাটাকে আমার সহ্যই হয় না ছেসরা মেয়ে কোথাকার (মনে মনে)
নেহা: আচ্ছা মিস্টার চার্ম বলো তো আমাকে আজকে দেখতে কেমন লাগছে
ইয়াশের নজর এখন গেল নেহার দিকে
নেহা লাল আর কালো কম্বিনেশন করা একটা নেটের শাড়ি পড়েছে আর ব্ল্যাক স্লিভলেস ব্লাউজ
নেটের শাড়ি হওয়ায় নেহার পেট স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে
আর সেই লেভেলের হেভি মেকআপ
আজ নেহাকে দেখতে অসম্ভব সুন্দরী লাগছে
যে কোনো ছেলে আজ নেহাকে এভাবে দেখলে গোলে মম হয়ে যেত বাট ইয়াশের কাছে এসব বিরক্ত লাগছে
ইয়াশ: ছি নেহা এটা তুমি কি পড়েছে?
নেহা: কেন আমাকে সুন্দর লাগছে না
ইয়াশ: ভীষন বাজে লাগছে, যায় চেঞ্জ করে আসো এটা
নেহা: আচ্ছা এসব বাদ দাও,, শুনো না ইয়াশ বেইবি,, আমার কাছে না তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে
ইয়াশ: দেখো নেহা আমি আগেও তোমাকে বলেছি আমাকে বেইবি বলবে ন!!!,,,,
ইয়াশের কথা শেষ হওয়ার আগেই নেহা গিয়ে স্পিকারে “আশিক বানায়া” গান চালু করে দিলো
আর ইয়াশের কাছে এসে ওকে ধরে নাচতে শুরু করলো
ইয়াশ এক ঝটকায় নিজেকে নেহার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ওকে একটা থাপ্পড় মারল
নেহা সামলাতে না পেরে মাটিতে যেয়ে পড়লো
ইয়াশ: নেক্সট টাইম আমার সাথে এসব নেকমি করতে এসো না ফল ভালো হবে না, বেহায়া মেয়ে কোথাকার
বলেই ইয়াশ সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ল
চলবে,
Mr. Devil
Part_07
Aruhi khan
পরের দিন:–
রশ্নি নিজের রুমের ভিতর এখান থেকে ওখানে আর ওখান থেকে এখান করছে (মানে round round)?
রশ্নি: আজকে অফিসে যাবো কি যাবো না? কালকে যা হলো তার পর তো ওই লুচু Devil টার জন্য অফিসে যেতেও ভয় লাগছে?? (মনে মনে)
রশ্নি এসব নিয়ে ভাবছিল তখনই তার ফোন টা বেজে উঠলো
রশ্নি phone টা recive করে কানের কাছে ধরলো
সানা: জান্টু শোন না আমি বলছি কি চল না আজ আমরা আমাদের সেইম ব্ল্যাক কালারের ড্রেস টা পরে যায়??
রশ্নি: কেন তোর নানীর বিয়া লাগসে নাকি?
সানা: ???
রশ্নি: আচ্ছা ঠিকাছে আয়
সানা: that’s like my jantush ???
রশ্নি: হুহ?
.
বোনটি আমার একটা বার দরজা টা খুল
কি হয়েছে তোর কেন এমন করছিস বল আমায়
এই নেহা খুল না দরজা টা
সেই কখন থেকে নিশা কাঁদছে আর দরজা ধাক্কাচ্ছে কিন্তু নেহা কিছুতেই খুলছে না
কালকের রাতের পর নেহা আর দরজায় খুলেনি
রাফি: কি যে হলো মেয়েটার
নিশা: আমার না খুব ভয় হচ্ছেগো, যদি ও উল্টা পালটা কিছু করে ব,,,,
নিশার কথার মাঝে চোখ গেল সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামতে থাকা ইয়াশের দিকে
ইয়াশ নিজের ঘড়ির বেল্ট লাগাচ্ছে আর নীচে নামছে
নিশা ছুটে গেল ইয়াশের দিকে
গিয়েই জোরে চেচিয়ে বলতে শুরু করলো
নিশা: কি মনে করো তুমি নিজেকে? দেখতে পাচ্ছ তোমার জন্য আমার বোনের কি অবস্থা হয়েছে? কাল রাত থেকে দরজা খুলেনি ও
রাফি:কিন্তু এতে ইয়াশ কি করেছে?
নিশা: একদম চুপ থাকো তুমি
রাফি: ?????????
ইয়াশ Damn care ভাব নিয়ে খাবার টেবিলে গিয়ে বসলো
টেবিলের উপর থাকা ফ্রুট বাস্কেট থেকে একটা আপেল আর নাইফ নিয়ে সেটাকে কেটে ব্রেড দিয়ে খাওয়া শুরু করলো
(আজব লাগলেও আপেল দিয়ে ব্রেড খাওয়াটা ইয়াশের ছোট বেলার অভ্যাস)??
ইয়াশের কোনো রেসপন্স না পেয়ে নিশা আরো রেগে গেল
নিশা, ইয়াশের খাবার প্লেইট টা নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলো
কিন্তু ইয়াশ স্বাভাবিক ভাবেই বসে আছে
নিশা এবার ইয়াশের সামনা সামনি এসে
বললো: কিসের এত ভাব তোমার? সেদিন যদি বাবা তোমাকে তোমার নানুর বাসা থেকে না নিয়ে আসত তাহলে তো আজ তোমার নানুর বাড়ির লোকদের মতো তুমিও থার্ড ক্লাস চিপ বস্তিই থাকতে
ইয়াশের এবার মাথা গরম হয়ে গেল
সে টেবিলে থাকা কাচের জিনিষ গুলো এক হাত দিয়ে সব ফেলো দিলো আর
বলল: জি একদমই ঠিক বলেছ তুমি ভাবি আমি তো ভিকারীই ছিলাম কিন্তু তোমার বোন তো ভালো বাড়িয়ে মেয়ে দেখতেও ভালোই তার পিছে তো কত ছেলে ঘুরে বাট সে আমার পিছে ছ্যাসরার মতো ঘুরে কেন একটু বলবেন প্লিজ? আর আপনার বোনই কালকে রাতে আমার রুমে এসে নেকমো করছিল আমি ডাকিনি তাকে
নিশা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে
ইয়াশ আবার বলা শুরু করলো:-
আর একটা কথা কি জানো তো আমি না কখনোই থার্ড ক্লাস ছিলাম না আমার পরিস্থিতি আমাকে বানিয়ে ছিল আর সেটা শুধু দুই জন লোকের কারণেই আর তাদেরকে তো আমি কখনোই ছাড়বো না শাস্তি তো তাদের পেতে হবেই,,,,, যাই হোক বরং তোমার বাবা বিয়েতে মিস্টার আহমেদ (ইয়াশের বাবা) থেকে এক কোটি টাকা নিয়েছে আর মিস্টার আহমেদ ও তার ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে একটা লোভীর মেয়েকে ঘরে ছেলের বউ করে এনেছে তাও যদি তুমি ভালো হতে আর তোমার মত হয়েছে তোমার বোনটা
বলেই ইয়াশ বেরিয়ে যেতে নিয়েছিল সেখান থেকে কিন্তু তখনই আবার পিছিয়ে এলো
আর নিশাকে আবার বললো:
আর হ্যা ভাবি যাদেরকে তুমি চিপ থার্ড ক্লাস বস্তি বলেছিলে না
তারা যদি আজ না থাকতো না তাহলে তুমি আর সবার সামনে মিস্টার এশিয়ার ভাবীর খেতাব টা নিয়ে শো অফ ও করতে পারতে না
আমি যে মজবুদ মই টা বেয়ে এই আসন টা পেয়েছিনা সেই মইটাকে মজবুদ বানিয়েছে আমার থার্ড ক্লাস নানু বাড়ির মানুষগুলোই, আসছি
বলেই ইয়াশ বেরিয়ে পড়ল
নিশা সেখানে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে রাফি এসে নিশার পিছনে দাঁড়ালো
রাফি: তোমরা কি নিয়ে ঝগড়া করছিলে আমি তো কিছুই বুঝলাম না
নিশা চোখ গরম করে রাফির দিকে তাকালো
রাফি: ??
নিশা নিজের রুমে গিয়ে ঠাস করে দরজা টা লাগিয়ে দিল
রাফি: বাহ দুই বোনে কত মিল, দুজনেই দরজা বন্ধ করে বসে আছে??
.
আজ রশ্নি আর সানা সেইম গেটআপে অফিসে যাচ্ছে
ব্ল্যাক চিকেন থ্রিপিস, লম্বা স্ট্রেইট চুল গুলো এক বাঁকা সিঁথি দিয়ে ছেড়ে রাখা, মুখে পাউডার, ঠোটে হালকা রেড লিপস্টিক আর চোখে কাজল
সব মিলিয়ে আজ রশ্নিকে খুব সুন্দর লাগছে
সানাও একই ভাবে সেজেছে
দুজনকেই বেশ লাগছে
সানা: হালি? এটা কি বেল পুরী খাওয়ার টাইম নাকি
রশ্নি: ধুর বেল পুরী খাওয়ার আবার নির্দিষ্ট টাইম হয় নাকি?
সানা: যদি অফিসে যেতে লেইট হয়ে যায় তখন কি করবি? আজ অফিসে বসের প্রথম দিন আর আজকে লেইট করলে মান সম্মার আর থাকবো না আর ম্যানেজার স্যার বলেছেন আমাদের বস নাকি খুবই রাগী, আমার তো খুবই ভয় করছে রে
রশ্নি: উফ তুই থামবি প্লিজ
সানা: ?
রশ্নি: আরে মাম্মা তুমি তো বহুত কিপটা বেল পুরীতে একটু বেশি কইরা ঝাল দিতে কইলাম তুমি তাও দিলানা,, সত্যি কইরা কও তো এমন কিপ্টামি কইরা কয়টা বাড়ি করসো? ??
বেল পুরী ওয়ালা মামা: কি সাংঘাতিক মেয়েরে বাবা?
সেই কখন থেকে মরিচ নিতেই আছে কিন্তু মেয়ের নাকি ঝালই লাগে না
(বেল পুরী ওয়ালা মামার সাথে তাদের অনেক পুরোনো পরিচিতি তাই এভাবে ফ্রিলি কথা বলছে)
সানা: আরেহ ভাই তোমরা কি শুরু করলা, আর রশ্নি তুই থাম তো
রশ্নি হঠাৎ আতঙ্কের সাথে সানাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বললো
রশ্নি: সানা বাচ্চাটা (সামনের দিকে আঙ্গুল তুলে)
সানা সামনে তাকিয়ে দেখে একটা ৩-৪ বছরের বাচ্ছা রাস্তা দিয়ে একা একা পার হয়ে যাচ্ছে আর একটা গাড়ি খুব স্প্রিডে আসছে
যে কোনো সময় বাচ্চাটাকে ধাক্কা লাগতে পারে
সানা: দারা আমি কাউকে ডাক দিচ্ছি
সানা পাশে তাকিয়ে দেখে রশ্নি নেই
রশ্নি দৌড়ে গিয়ে বাচ্চাটাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে নিরাপদ এক সাইডে ফেলে দিলো
আর সামনে তাকিয়ে দেখল গাড়িটা খুবই কাছে তাই সে আর বাঁচার কোনো রাস্তা না দেখে দুই হাতের আঙ্গুল ক্রস করে চোখ বন্ধ করে নিলো
বাট অনেকক্ষণ এভাবে থাকার পরও কিছু অনুভ না করতে পেরে চোখ খুললো
চোখ খুলে দেখে গাড়িটা তার সামনেই কিন্তু স্থির অবস্থায়
আর রাস্তার চার পাশের লোকজন দূর থেকে গাড়িটাকে আর ওকে দেখছে আর কি যেন ফিস ফিস করছে
হঠাৎ গাড়িটা থেকে একটা ছেলে বেরিয়ে আসলো
ফুল ব্ল্যাক ড্রেসেড। পুরাই dairy milk ??
এসেই রশ্নির গালে ঠাস করে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিল
আর হঠাৎ এমনটা হওয়াতে রশ্নি গালে হাত দিয়ে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো
সামনে থাকা লোকটা: ইউ ফুল, কেউ এভাবে একটা গাড়ির সামনে আসে, যদি কিছু হয়ে যেত তখন ব্লেম টা তো আমার উপরই আসতো
রশ্নি এতক্ষনে সামনে লোকটির দিকে তাকালো
রশ্নি: আপনি
সে: তুমি
(ডিয়ার রিডার্স তোমরা সবাই নিশ্চই এতক্ষনে বুঝে গেছো যে সামনে থাকা লোকটি আর কেউ না সে আমাদের একমাত্র (ভিলেইন অর হিরো)মিস্টার ডেভিল ইয়াশ আহমেদ☺️)
ইয়াশ: ওহ তো তুমিই এই সমাজ সেবী মাদার তেরেসা,
যদি আজ তোমার কিছু হয়ে যেত তখন কি হতো
রশ্নি: হলে হতো তাতে আপনার কি? আর আপনি দেখে শুনে ড্রাইভ করতে পারেন না যদি ঐ বাচ্চাটার কিছু হয়ে যেত তখন?
ইয়াশ: ওহ প্লিজ, আমাকে জ্ঞান দিতে এসো না
আর হলেও তাতে আমার কি
রশ্নি: ছি, একটা মানুষ কতটা নিচ আর খারাপ হলে এমন একটা জঘন্য কথা বলতে পারে
ইয়াশ: হুহ (হালকা হেসে)
ইয়াশ নিজের মুখটা রশ্নির মুখের একদম কাছে নিয়ে গিয়ে চোখের goggles টা নিচে করে
বললো: তুমি এখনো ইয়াশ আহমেদকে চিনইনি,
শুনে রাখো আমি সব কিছু করতে পারি তাই আমার সাথে পাঙ্গা নেওয়ার আগে একশো বার ভেবে নিও
বলেই চোখের goggles টা চোখে ঠিক মতো লাগিয়ে
গাড়িতে উঠে চলে গেল
রশ্নি: সত্যিই আস্ত একটা ডেভিল? (মনে মনে)
চলবে,